![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হয়েগেছে -সেটা খুব ভালভাবেই টের পাচ্ছি। বাসা ভর্তি পোলাপাইন। ৪ ভাইবোনের বাচ্চা মিলে বাসা পুরা জাতীয় চিড়িয়াখানা। সারাদিন ক্যাও ম্যাও, ঢিসুম- ঢাসুম, কখনও কম্পিটার নিয়ে কখনও ঘরের মধ্যেই ব্যাট-বল নিয়ে যখন যেভাবে ইচ্ছা মজা করছে। কিন্তু রফা দফা যা হবার বাসার খালার হচ্ছে। ইদানিং খালার মেজাজটা ফারেন হাইটে থাকে। কথা বলাই যায় না। সকালটা শুরু হতে না হতেই - এই পোলা পাইন সব ওড্। হাত-মুখ ধুয়ে চলডা মলডা যা আছে খাইয়া ল। আমারে খালাস কর। খালার খ্যারানি শুনে আমারও ঘুম ভাঙল। কী হইছে খালা সাঝ সকালে চেচামেচী করছ কেন? আমার প্রশ্নের জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করল না। উল্টাই বলল খালা ভাইয়ারে উঠতে কন। দেখেন কী সুন্দর বাজার মিলছে, স্তায় একটাও মানুষ নাই। মানুষ নাই ??? মানুষ ছাড়া বাজার মিলল কেমনে?
আমি কী জিজ্ঞাস করি বা না করি কোন কথার জবাব না দিয়াই খালা বিড়বিড় করে বলতে থাকে- সবাইত ঠিকই পার পাইয়া যাবা। আমারে এই বান্দর সান্দর কতগুলো দিয়া রাইখ্যা যাবে-সব মরনের জ্বালান জ্বালায়।
কর্তার মতিগতি ইদানিং বোঝাভার। সকালে বের হওয়ার আগে তুমুল কান্ড ঘটিয়েগেছে। যাউগ্গা। দুজন দুজনের মতে চলে এলাম যার যার কর্মস্থলে।
অফিসে এসে বসতে না বসতেই বাসা থেকে ফোন- খালাম্মা-------ভাইয়া এ কী কাম করছে? মেজাজ এমনিতেই বিলা তারপর আবার ভাইয়ার কাহিনী। মজার ব্যাপার হল- খালা আমাকে বলে খালাম্মা আর কর্তাকে বলে ভাইয়া। কেন খালা কি হয়েছে? ভাইয়া বাজারের সব পচঁা ধচা মাছ আর ম্যান্দা মারা শাক সবজী নছে। মাছের সাথে সাথে মাছিও সেইরম আইছে। কী মছিবত!!!
খালার কথা শুনার পর থেকেই ফোন দিতে শুরু করি কর্তার নাম্বারে। কোন রেসপন্স নাই। কিছুক্ষণ সূরা ইয়াসীনের দু` আয়াত শুনায় আবার কিছুক্ষন মীলার গান কী যেন ব্যাকটি নাচে কোমর দুলাইয়া। মগজ আমার খুবই উত্তপ্ত -কি করি? এভাবে ঘন্টা দুয়েক কেটে গেল। অফিসের ল্যান্ড ফোনে ফোন দিলাম এবং রিসিপশনিস্ট -এর কাছে সাহেবের কথা জানতে চাইলে তিনি জানালেন-ম্যাডাম স্যার মেঘনা ঘাটে গেছে । এর পর সারা দিন আর তার নাগাল পাওয়া যায়নি। সারা দিন হারু সর্দারের মত রাগে খস কস করতে লাগলাম। দাপ্তরিক কাজে মন দিতে পারছি না। কিছু দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, উৎকন্ঠায় সময় আর যেন পার হয় না। কোন বিপদ হয় নি তো? সব চেয়ে অনিশ্চয়তা, অনিরাপদ জায়গা হল - এই ঢাকা মেগা সিটি। জানটারে মানি পার্সে নিয়ে ঘুরতে হয়। যে কোন সময় আজরাইল (আঃ) হ্যাসকা টান পারতে পারে। নানা কিসিমের দুর্ভাবনার ভেতর ঘুর্ণিনাচ নাচতেছি। দিন শেষে মাগরীবের নামায পড়ে জায়নামাজে বসে রাজ্যের দোয়া দুরুদ পড়তে ছিলাম। দোয়া ইউনুস পড়তে পড়তে গলা জিহ্বা কাঠ হয়ে গেছে। এমন সময় ফোন । রিসিভ বাটন প্রেস করতেই অপর প্রান্ত থেকে 'আসসালামু আলাইকুম' এই খাটাশ, রাখো তোমার ওয়ালাইকুম এতক্ষণে বোম বাস্ট হলো। শয়তান কোথায় ছিলে সারাদিন? ফোন বন্ধ ছিল কেন? ফোন এ্যাটেন্ড করোনি কেন? কোমল, এ্যাপেক্স ফোমের মত নরম সুরে বলল 'সোনা বউ' আমাকেও কিছু বলতে দাও। এ্যাটলিস্ট আত্মপক্ষ সাপোর্ট করার একটু সুযোগ দাও। সারাদিন মিটিং -এ ছিলাম। আচ্ছা মিটিংয়ে থাক আর ডেটিংয়ে থাক অন্তত ইনফরমেশন তো আপডেড রাখবে।
সকালে কী সব আেজবাজে বাজার করেছ? বললেন -কেন ? কি হয়েছে? আরে যত্তোসব পচাঁ মাছ, ন্যাতানো ম্যান্দামারা শাক সবজবী। এগুলো মানুষে খায়? জবাবে অট্ট হাসি হেসে বললেন -গিন্নি, তোমার ভাগ্য ভাল পিউর জিনিসটিই তুমি পেয়েছ। তুমি যেটাকে পচাঁ বলছ ওটাই খাঁটি এর মধ্যে কোন ফরমালিন নাই। মাছে ফরমালিন থাকলে এমনভাবে মাছি ভনভন করত না।
কিছুক্ষন পর বাসার টুংটাং করে কলিং বেল বেজে উঠল। এসময় আবার কেডা বলে খ্যারানি দিয়ে খালা দরজা খুলল। এ কী চম্পা আপু দুই বাচ্চা নিয়ে হাজির। পুরা হতবাগ হয়ে জিজ্ঞাস করলাম আপু তুমি কোতথেকে আসলে এই রাতে? আর বলিস না মেয়েদের স্কুল ছুটি। খুব ত্যাক্ত িবরক্ত শুরু করছে তোদের বাসায় আসবে। খালা মনির সাথে সুন্দর বনে ঘুরতে যাবে। আমিই কথা দিয়েছিলাম গ্রিষ্মের ছুটিতে ওদের ঢাকার বাহিরে ঘুরতে নিয়ে যাব।
বললাম আচ্ছা তুমি এই অসময়ে আসলে কেন? বাচ্চাদের নিয়ে একটু সকাল সকাল রওনা করতে। আরে তা-কী আর করিনি। এত রাত হল কি ভাবে?বলছি একটু বিশ্রাম নিতে দে। শোন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিছু দিন আগে 'ডেমু' আন্তঃনগর ট্রেন উদ্বোধন করলেন। তাই ডেমুতে চড়ার একটু খায়েশ হল। শুনে বললাম তাই? সাংঘাতিক মজা হয়েছে িনশ্চয়ই। যতটুকু জানতে পেরেছি এই ট্রেন সম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে চলাফেরা করে। ডাইনে বামে উপরে নীচে সব জায়গায় িডজিটাল। হ্যাঁ সবই ঠিক ছিল। অন্য সব ট্রেনের থেকে এটা সম্পূর্ন আলাদা। এর দরজার হাতলগুলো ভেতরের দিকে, পা দানি গুলো এত উচুঁ, উঠার কিছুক্ষন পরেই দম বন্ধ হয়ে আসে।
ট্রেন নারায়নগঞ্জ থেকে ছাড়ার কথা ১৩.৪০ টায়। সময়ের তেমন হেরফের হয়নি। সমস্যা হলো ট্রেন চলা অবস্থায় হঠাৎ করে ঝাকুনি দিয়ে ঘ্যাঁচ করে থেমে গেল। অনেকক্ষন অতিবাহিত হওয়ার পর এক সফর সঙ্গীকে জিজ্ঞাস করলাম সমস্যা কী? ট্রেন চলছে না কেন? তিনি বললেন ট্রেন বসে গেছে। এভার লোড। প্যাছেঞ্জার বিশী হয়েগেছে। আপুর কথা শুনে আমিতো অবাক! বললাম বসে গেছে??? ট্রেন বসে যায়? বাস, টেম্পু, গরুরগাড়ি, ট্রাক ওভার লোড হলে অথবা উচুঁ নিচু সড়কে অনেক সময় বসে যায়, পলট্টি খায়। কিন্তু দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ট্রেন এটা কেন বসে যাবে? কিছু দিন আগে আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী এই ট্রেন উদ্বোধন করেছেন। বিপু্ল অংকের টাকা খরচ করে সরকার চীন থেকে এই ট্রেন ক্রয় করেছেন। আলোচনা জমে উঠেছে এমন সময় আমার মহামান্য পতি ধনের আগমন। কী নিয়ে আলোচনা চলছে ? সব শুনে বললেন তাহলে সাড়ে ছয়শ কোটি টাকা দিয়ে সরকার এই কাগজের নৌকা আনছে।
শুনে আমি বললাম তা হলে ডেমুতে উঠার আগে কিছু জিনিস নিয়ে উঠা খুবই গুত্বপূর্ণ। েযমন- মই, অক্মি্জেন সিলিন্ডা, দড়ি-কাছি ইত্যাদি। শুনে চম্পা আপু বলল আবার দড়ি-কাছি কেন? বললাম এই যে ট্রেন বসে যায় তখন দড়ি দিয়ে বেধে যাত্রীরা পালা করে টেনে নিয়ে গন্তব্যে চলে যাবে। পাশে বসাছিল আমার এক আদরের ভাগনী। সে বলে উঠল খালামনি এর থেকে ট্রেনের সামনে দুটি ঘোড়া বেধেঁ দিলেইত ভাল হত। আমরা বলতে পারতাম যে, ডিজিটাল টম টমে চড়ে ঢাকায় গিয়েছি।
৬
২| ০৫ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:২৭
ইলা বলেছেন: hmmm. Rikshay motor lagaise
৩| ০২ রা জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:২৩
কৌশিক বলেছেন: হাহাহাহা
৪| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৪৩
ইলা বলেছেন: ato din pore! kothay sile ostad ? kothay sile?
৫| ২৩ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ২:১০
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: হাহাহ! বেশ মজার লেখা ! আগে চোখ পড়েনি।
শুভেচ্ছা রইল
৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ ভোর ৫:৫১
উদাসী স্বপ্ন বলেছেন: ব্লগ ছাড়লা নাকি?
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০
ইলা বলেছেন: না, আ্ছি ।আপনার পোষ্ট দেখিতো। এখন দেশে আছেন?
৭| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫
শায়মা বলেছেন:
এত মজা করে লিখেছো আপুনি তোমার ভাগনী দেখি তোমার মতই।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা জুন, ২০১৩ দুপুর ১:৫০
নন্দনপুরী বলেছেন: চিন্তা নাই ...
ডেমু ট্রেন কাইট্টা সাইজ কইরা ফালাইছে..
এখন অনেক আরামে চড়া যায়।