নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়ন করছি।
এই প্রকল্পের সর্বোচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১৫০০ মেগাওয়াট । ৬টি টারবাইন থাকলেও আসলে কাজ করবে মাত্র দুইটা । মনিপুরের জনগণকে বলা হয়েছে যে,তারা উৎপাদিত বিদ্যুৎের ১২% বিনা পয়সায় পাবে । আসলে সেটা ১৫০০ মেগাওয়াটের ১২% নয় । দুটো টারবাইন চললে ৪৫০ মেগাওয়াটের মাত্র ১২% অর্থাৎ ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মনিপুর ও মিজোরামের জনগনকে প্রকল্পের পক্ষে আনবার জন্য এই প্রতিশ্রুতি । (৭)
বাঁধ মানেই যুদ্ধ ,মানুষ ও প্রকৃতির বিরুদ্ধে । শুধুমাত্র বাংলাদেশ বা দক্ষিণ এশিয়াই নয় সারাবিশ্বে বাঁধ বিপর্যয়ক অভিজ্ঞতার সৃষ্টি করেছে । সে কারণে উন্নত বিশ্বে এখন বড় বাঁধ নির্মাণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে । আর সেই বিপর্যয় রপ্তানি হচ্ছে তৃতীয় বিশ্বে ।
বুকার পুরষ্কার প্রাপ্ত উপন্যাসিক অরুন্ধতি রায় তার "দি গ্রেটার কমনগুড" বইতে বড় বাঁধের বিপর্যয় সম্পর্কে লিখেছেন এভাবে______
"বড় বাঁধের শুরু হর্ষধ্বনিতে আর শেষটা কান্নায় । একসময় ধর্ম,জাতিগোষ্ঠী ,মতাদর্শ নির্বিশেষে সবাই প্রবল উচ্ছাসে বড় বড় বাঁধকে স্বাগত জানিয়েছে । বাঁধকে নিয়ে কাব্যও করা হয়েছে সে সময় । এখন আর হয় না । এখন বড় বাঁধের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়েছে । উন্নত বিশ্বে এগুলো বন্ধ হয়ে গেছে । এগুলো উপকার যা করে তার চাইতে ক্ষতি করে বেশি । বড় বাঁধ সেকেলে ,অগ্রহনযোগ্য ,অগণতান্ত্রিক , সরকারের ক্ষমতা কুক্ষিগত করার, কে কি পাবে ,কতটুকু ফলাবে তা ঠিক করে দেওয়ার হাতিয়ার । কৃষকের জ্ঞান তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার নিশ্চিত পদ্ধতি । গরিবের পানি,সেচ , আর জমি বড়লোকের হাতে উপহার দেবার উদ্ধত পথ । এগুলুর জলাধার মানুষকে করে গৃহহীন,নিঃস্ব । পরিবেশগত বিবেচনায় চরম দুদর্শা সৃষ্টিকারী । এগুলো মাটিকে বানায় আবর্জনা । বন্যা ,জলাবদ্ধতা , খরা , লবণাক্ততা , আর রোগের বিস্তার এগুলোর পরিণতি । বড় বাঁধের ভূমিকম্প প্রবণতা বৃদ্ধিরও যথেষ্ট প্রমান আছে । "(৮)
এই যদি বড় বাঁধের নির্মাণের পরিণতি হয় তাহলে বাংলাদেশের অবস্থা কি হতে যাচ্ছে সহজে অনুমেয় । এই বাঁধ নির্মাণ নিয়ে বৃহৎ দুটি দল পরস্পর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করছে এখনও তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি কি করবে । দেশের প্রয়োজনে তাদের দেশের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে গঠনমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহন এখন শুধু যুগোপযুগি দাবীই নয় সময়েরও দাবী বটে ।
মুনতাসির মামুনের মতে, "টিপাইমুখের মাধ্যমে ক্ষতি কত কমিয়ে বেশি মানুষের বেশি লাভ হবে তা সামগ্রিকভাবে বিচার করতে হবে । "(৯)কথা হচ্ছে বাঁধ নির্মাণ করতে দেওয়ার সিদ্ধান্তটাই বা কতোটা যৌক্তিক /সঠিক ?
ড.আইনুন নিশাত ১৯৯৮ সাল থেকে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ ইউনিয়নের ( IUCN)বাংলাদেশের প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন । তিনি দীর্ঘ সময় ধরে পানিসম্পদ উন্নয়ন ও ব্যাবস্থাপনা,নদী-ব্যাবস্থাপনা ও নদী শাসন ,উপকূলীয় অঞ্চল ও জলাভূমি সংরক্ষণ এ সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে কর্মরত । তাঁর মতে,
"টিপাইমুখ বাঁধের প্রভাব মণিপুর থেকে শুরু করে ভৈরব পর্যন্ত পড়বে । আমার ধারণা ভারতের EIAপ্রতিবেধনে প্রভাব এলাকা মনিপুর থেকে শুরু হয়ে অমলসিদে এসে থেমে গেছে । কিন্তু এর প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের সিলেট হয়ে ভৈরব ,চাঁদপুর পর্যন্ত । বাংলাদেশে যে জলাবদ্ধতা হবে,সে বিষয়টি EIA প্রতিবেদনে যে নেই,এটা আমি নিশ্চিত ।"
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১:২৭
মিতাহামিদা০০৭ বলেছেন: একটা গুরুত্বপূর্ণ লিখা ! এর সারমর্ম হল - এই বাঁধের ফলে উভয় দেশের ই ক্ষতি হবে ! সুতরাং যে যাই লুকান না কেন , দেশের সমুহ ক্ষতি করে অল্প লাভ ,কারো জন্যই ভালো নয় ! অতএব ,প্রকৃতিকে তাঁর নিজস্ব গতিতেই চলতে দেয়া ,মানবতাবান্ধব !