ফিরে পাওয়া

১৩ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:০৮

কলেজ টাইম ৯টা হলেও বাসস্ট্যান্ডে রোজ ৮.৩০ এ যেয়ে দাড়াতো ছেলেটি..
কালো প্যান্টের সাথে সাদা শার্ট ইন করে পিঠে বইয়ের বোঝা নিয়ে তার চোখ থাকতো রাস্তার ওপাশের যাত্রীছাউনতে..
যাই হোক,ছেলেটির খুব আপসোস ছিলো..
কারন রাস্তার ওপাশের যাত্রীছাউনিতে যাকে দেখতো তার নামটা সে জানতো না,অথচ কোথায় পড়তো তা জানতো.. দুজনের দুদিকের কলেজ,দুটি ভিন্ন গন্তব্য,ভিন্ন দুটি উদ্দেশ্য,ভিন্ন দুটি বাসে ভিন্ন দুটি সিট...
একসাথে পাশাপাশি বসার ইচ্ছা ছেলেটির কখনও পূরণ হবে এই ভেবেই পড়াশুনাতে মন দিতে পারে না.. ক্লাসের তৃতীয় বেঞ্চ থেকে আস্তে আস্তে লাস্ট বেঞ্চে তারপর পুরো ক্লাস জুড়ে টিচারের অনর্গল কথার ফাকে মরিচিকা সেই স্বপ্নের জগতে ভাসতে থাকে ছেলেটি..রোজ তার স্বপ্ন ভাঙ্গে টিচারের বকাতে,বেতের বাড়িতে..
ক্লাস শেষে আবারও অপেক্ষা.. এভাবে আর কতদিন পারা যাই,তাই একদিন সাহস করেই ছেলেটি রাস্তার ওপাশের যাত্রীছাউনিতে দাড়ালো..
কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টি তার ইচ্ছেটাকে ভিজিয়ে দিয়ে গেল.. ভেজা ইচ্ছে নিয়ে একটু দেরি করেই সে নিজ গন্তব্যের বাসে উঠে পড়লো,আর তখনই চোখ পড়লো রাস্তার পাশে গোলাপি ছাতা মাথায় দিয়ে ভেজা নুপুরে তাকে আসতে..
চোখ সেদিন একফোটা জল ঝরালো কিনা বোঝে নি ছেলেটা.
.ক্লাসে সেদিন চুপ করে বসেছিল তারপর ছুটির ঘন্টা পেয়ে অঝরে কেদেছিলো.. তারপর থেকে ছেলেটি তার ব্যার্থতা চেপে রেখে পাল্টে গেলো সময়ের বিপরীতেই.. নেশা নিকোটিনে ছেয়ে গেল তার আকাশ, অচেনা হলো সেই রাস্তার ওপাশের যাত্রীছাউনি,বদলে গেল ভিন্ন পথের ধারা,বেছে নিলো অন্ধকারের পথ একা..
অন্যদিকে,ছেলেটি জানতোই না যে মেয়েটিও তাকে দেখতো.. তার বিপরীত গন্তব্যের পথে যাওয়া,মেয়েটিকে তার কাছে এনে দিলো.. মেয়েটির অনেক শাসন অনুশাসনে ছেলেটি তার নেশা ছেড়ে দিলো.. নিকোটিনে না,হাতে হাত রেখে ভবিষ্যৎ এর পথে বাড়ালো পা... নতুন জীবন,যদিও ভিন্ন গন্তব্য,ভিন্ন সিট,ভিন্ন দুটি উদ্দেশ্য তবুও চোখে চোখ রেখে হাসি মুখে ইশারায় অনেক কিছু,রাস্তার এপাশ থেকে ওপাশ ভালবাসার ফ্রিকুয়েন্সি দিয়ে হতো ভালবাসার আলাপন.. প্রতিক্ষন থেকে অনুক্ষণ...

০ টি +০/-০