নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ড্রিমার

একজন আইটি এক্সপার্ট.....

ড্রিমার › বিস্তারিত পোস্টঃ

জ্ঞান ও বুদ্ধি

১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

জ্ঞান নামের সত্তা আল্লা প্রদত্ত বিশেষ আর্শিবাদ-আলো স্বরূপ। যেমন চোখ অন্ধকারে কিছু দেখাতে পারে না-আলো’র সাহায্যে চোখকে দেখতে হয়। তেমন কোন কিছুর অস্তিত্বে আলোর প্রভাব আসলে বাস্তবতার স্বরূপ। এই যুক্তিতে বলা যায়, আলো যদি আমাদের জ্ঞান নামের আর্শিবাদ বা সহায়ক না হতো, তবে বুদ্ধি দিয়ে আমরা কিছুই আমাদের উপলদ্ধিতে আনতে পারতাম না। হয়তো যুক্তি দিয়ে আমরা অনেক তর্কই প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাইবলে যুক্তিই সব কিছু নয়। আমরা অনেকিছু দেখি-যা যুক্তি দিয়ে বুঝাতে পারি না। যেমন যুগে যুগে অলৌকিক অনেক কিছুই ঘটেছে বা ঘটে। যা যুক্তির মাফকাঠিতে হিসেব করা যায় না। রবীন্দ্রনাথ একজায়গায় লিখেছেন, “আমি কান পেতে রই ও আমার আপনও মনের গহনও দ্বারে।” কবি শুনতে পায় অজানা-অদৃশ্য থেকে। তাঁর ভাষায়, যা সে অদৃশ্য থেকে শুনতে পায়-তাই সে প্রকাশ করে। অর্থৎ দাঁড়ায় কবিত্ব বানানো যায় না-এটা আল্লা প্রদত্ত (God gifted)। এখানে কি কোন যুক্তি ঠাই পাবে?



যদি বলা হয় জ্ঞান কি? তবে তার উত্তর সহজে দেয়া সম্ভব হবে না। যেমন বিজ্ঞানীরা খুব সহজে শক্তির সংজ্ঞা দিতে পারেন না। বালা হয় আলোই হলো শক্তি। বুঝানর জন্য উদাহরণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আলো থেকে তাপ উৎপন্ন হয়। যে অনুভুতিকে আমরা তাপ বলি, তার জন্ম হল আসলে অনুদের নানা দিকে ছুটো-ছুটি, দাপা-দাপি থেকে। চতুর্দিকে ছুটো-ছুটি কে বলা হয় অনির্দিষ্ট গতি। কোন বস্তুর অনুতে এই অনির্দিষ্ট গতি যত দ্রুত হবে তার তাপমাত্র ততো বেশি হবে। এজন্যই অনেকেই বলে থাকেন জ্ঞানই (আলো) শক্তি, মুলত: আলোই জ্ঞান। অন্যদিকে জ্ঞানের কথা মনে হলেই তার সাথে বুদ্ধির কথা এসেই যায়। তবে এটাও সত্য জ্ঞান আর বুদ্ধির ওজন এক হবে না, বুদ্ধি জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল।



সৃষ্টির মধ্যে নিরেট সত্য বলে কিছুই নেই। সব কিছুই আপেক্ষিক। আইনষ্টাইন তার আপেক্ষিক তত্বে তা প্রমান করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সব কিছুই আপেক্ষিক, শুধু আলো’র গতি ছাড়া।’ আজ যা স্বত:সিদ্ধ বা আইনসিদ্ধ, কাল তা নাও থাকতে পারে। সময়ের কারণে এবং স্থানের ক্ষেত্রে তা বদলাতে পারে। যেমন এক সময় দাস প্রথা আইনসিদ্ধ ছিল-কিন্তু এখন তা আর নেই।



একথা ঠিক, যেকোন ধারনা আমরা হঠাৎ করে পাই। সব সময়ই আমরা কোন ধারনা পাই না। এখানে কবিত্বের কথা বলা যায়। রবীন্দ্রনাথ নাকি বলতেন, ভাবের আবেগে যখন আমি তন্ময় হয়ে পড়ি, মৃদু বাতাসে যখন আমার চুল দাড়ি ওরে তখন আমি কবিতা লিখি। তর্থাৎ কবিতার ভাব সব সময় কিংবা সকলের আসে না। বৈজ্ঞানীকরাও হঠাৎ করে পাওয়া ধারনার (আলোর ঝলক) উপর বিশ্বাস করে গবেষণা করে থাকেন এবং কিছু আবিস্কার-ও হয়তো করেন। সে আবিস্কার যুগান্তকারী কিছুও হতে পারে। যেমন আইনষ্টাইনের সেই থিওরি যে থিওরিতে তিনি নোবেল পর্যন্ত পেয়েছিলেন।



বুদ্ধি পশুর ও আছে, যেমন গৃহপালিত পশু-গরুকে গাড়িতে বা জোয়ালে জুরে দিয়ে ডানে যেতে বললে সে ডানে যায়, আর বামে যেতে বললে বামে যায়। এতে প্রমান হয় পশুর ও কিছু বুদ্ধি আছে। তবে পশুর বুদ্ধি আর মানুষের বুদ্ধি সমান নয়। বুদ্ধিকে বুঝতে হলে মানুষের বুদ্ধিকেই দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। মানুষের পশু বুদ্ধি আর মানবিক বুদ্ধি। কারণ মানুষেরই লোভ-লালসা, কাম-ক্রোধ, অহংকার-ভিরুতা ইত্যাদির মধ্যে থেকেও বুদ্ধি বের হয়-যা তাকে পশু বুদ্ধিতে নিয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, রসনা ও ত্বকের এবং স্মৃতীর যাহায্যে বা অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের অনেক বুদ্ধি খুলে যায়। এমনকি পশু বুদ্ধিও ও অভিজ্ঞতার আলোকে মানবিক বুদ্ধিতে রূপন্তরিত হতে পারে। যেমন আগুনে হাত পোড়ার স্মৃতী বা অভিজ্ঞতা আমাদের আগুন থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। অর্থাৎ ‘বুদ্ধির’ দ্বারা পরিস্ফুট ইন্দ্রিয়ানুভুতিও জ্ঞান বলে বিবেচিত হতে পারে। তাই প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের মধ্যেই প্রকৃতির শক্তিসমুহ আয়ত্ত করার উপায় রয়েছে-তাও জ্ঞান বলে বিবেচিত হতে পারে। অন্যদিকে বাস্তবসন্মত উপায়ে জীবন পরিচালনার একটি ভিত্তি সন্ধানের উদ্দেশ্যে দেয়া বস্তুগতজ্ঞান, যা দিয়ে বাস্তবজীবন সমৃদ্ধ হতে পারে। তাহলে ওই জ্ঞান মানবিক জ্ঞান বলে বিবেচিত হবে। তবে তা যেন শুধুই আধিপত্য বিস্তারের অন্যায় আকাঙ্খা চরিতার্থ করার জন্যই না হয়।



আল্লা কুরআনে বার বার বলছেন,“চাঁদ-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, রাত্রি-দিনের পরিবর্তন ইত্যাদি প্রাকৃতিক অনেক কিছুর মধ্যে জ্ঞানী ও চিন্তাশীলদের জন্য ভাববার এবং জ্ঞা্নার্যনের অনেক নির্দশন আছ। অন্যদিকে, মানুষ আত্মীক উপলদ্ধি ও প্রবৃত্তির সাথে লাড়াই করে ও যেন জ্ঞানার্যন করতে পারে-তারও তাগিদ কুরআনের দেয়া হয়েছে। তাই আমাদের যেমন প্রকৃতির রাজ্যে শিক্ষার অনেক কিছু আছে, তেমনই নির্জনে ধ্যান ও সাধনার মধ্যেও জ্ঞানার্যনের পথ আল্লা দিয়েছেন।



আমরা যখন প্রকৃতির দিকে তাকাই তখন আমাদের স্মৃতী আর অভিজ্ঞতা আমাদের এমন উপলদ্ধিতে নিয়ে যেতে পারে; যাতে আমাদের তত্বজ্ঞান-আত্মজ্ঞান বৃদ্ধি পেয়ে সত্যে উপনিত হতে সাহায্য হতে পাবে। মানুষের বুদ্ধি স্রোষ্ঠার সৃষ্টির মধ্যে সর্ব শ্রেষ্ঠ। এখানেই এসে যায় জ্ঞানের কথা। জ্ঞানের সাহায্যেই মানুষের বুদ্ধির শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে। তাই ধারনা-লব্ধ জ্ঞানের হাতিয়ার নিয়ে মানুষ অগ্রসর হয় সত্তার পর্যবেক্ষণ উপযোগী রূপের দিকে। তবে প্রকৃত জ্ঞান (আলো) হলো আল্লা থেকে। তা স্থান ও কালের উর্দ্ধে-যা কখনও বদলায় না, যেমন সূর্য চিরদিন পূর্ব দিকেই উঠে এবং ভবিষৎ-এ ও উঠবে। এজন্যই তত্ব জ্ঞানী না হলে সত্যে উপনিত হওয়া যায় না। এবং আত্মজ্ঞানীও হওয়া যায় না। আর আত্মজ্ঞানী না হলে প্রকৃত জ্ঞানী হওয়া যায় না। তাই হয়তো সক্রেটিস বলেছেন, ‘নিজেকে জান’। প্রকৃত জ্ঞানী তারা-যারা নিজেকে চেনে। আর নিজেকে চেনা মানেই আল্লাকে চেনা। আল্লাকে চিনতে পারলেই মানুষ বুদ্ধি ও জ্ঞান কি-তা উপলদ্ধি করতে পারবে।

###

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.