![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৎ, সাহসী ও বিবেকবান মানুষের কোনো সঙ্গী থাকে না । সে নিঃসঙ্গ বন্ধুহীন, বিরূপ পরিবেশে মৃত্যু তাকে গ্রাস করে। খ্যাতিহীন, প্রতিষ্ঠাহীন, বন্ধুহীন পরিবেশে থেকেও সত্য ও আদর্শের জন্য তাকে সংগ্রাম করতে হয়। তিনি কারও মুখ চেয়ে কিংবা কারও সমর্থন বা বিরূপতার কথা ভেবে কিছু করেন না। তিনি তার বিবেক, আদর্শ এবং বিশ্বাসের জন্য এমনকি সারা বিশ্বের বৈরিতাকেও ভয় পান না। - সক্রেটিস । www.facebook.com/dr.faijulhuq
জিহাদঃ
.
আগে একটু দেখি জিহাদ অর্থ কিঃ
জিহাদ অর্থ প্রচেষ্টা , পরিশ্রম , কষ্ট ইত্যাদি । আল্লাহর বিধান পালন করতে সকল প্রকার প্রচেষ্টাকে আভিধানিক ভাবে জিহাদ বলে ।
.
জিহাদ ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আলোচনার আগে দেখি জিহাদ সম্পর্কে রাসুল সাঃ কি বলেছেন –
.
“সর্বশ্রেষ্ঠ জিহাদ হলো জালিম শাসক বা প্রশাসকের কাছে ইনসাফের কথা বলা” ( তিরমিযী, আস-সুনান ৪/৪৭১; আবূ দাউদ, আস-সুনান ৪/১২৪;ইবনু মাজাহ আস-সুনান ২/১৩২৯ । হাদিসটি হাসান । )
.
“যে নিজ প্রবৃত্তির সাথে জিহাদ করে সে মুজাহিদ”(তিরমিযী , আস-সুনান ৪/১৬৫,হাকিম,আল-মুসতাদরাক ১/৫৪। হাদীসটি সহীহ )
.
“ কষ্ট সত্ত্বেও পরিপূর্ণ ওযূ করা, বেশি বেশি মসজিদে গমন করা এবং এক সালাতের পরে অন্য সালাতের অপেক্ষা করা , এই হলো জিহাদের প্রহরা “ ( মুসলিম, আস-সহীহ ১/২১৯)
.
এই সকল হাদিস ছাড়াও আল্লাহর রাসুল সাঃ পিতামাতার খেদমতকে জিহাদ বলে আখ্যায়িত করেছেন । ( বিস্তারিত জানতে দেখুন , বুখারী , আস-সহীহ ৩/১০৯৪, ৫/২২২৮; মুসলিম, আস-সহীহ ৪/১৯৭৫ )
.
কিতালঃ
.
জিহাদের একটি বিশেষ পর্যায় হলো কিতাল । কিতাল অর্থ পারস্পরিক হত্যা বা যুদ্ধ ।
.
ইসলামী পরিভাষায় কিতালকেও জিহাদ বলা হয় ।পারিভাষিক ভাবে কিতাল হলো সেই জিহাদ যেখানে শত্রুরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সাথে মুসলিম রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর যুদ্ধ । জিহাদ “ধর্মযুদ্ধ” বা “পবিত্র যুদ্ধ” নয় বরং এর অর্থ “রাষ্ট্রীয় যুদ্ধ” ।
.
জিহাদের শর্তঃ
.
জিহাদ বা রাষ্ট্রীয় যুদ্ধের জন্য চারটি শর্ত আছেঃ
১) জিহাদের প্রথম শর্ত হলো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব । রাষ্ট্রপ্রতিষ্ঠার পূর্বে , ইসলাম জিহাদের অনুমতি প্রদান করে নি । রাসুলুল্লাহ সাঃ সম্পুর্ণ শান্তপূর্ণভাবে ধর্ম প্রচার বা দাওয়াতের মাধ্যমে দীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যান এবং এভাবে এক পর্যায়ে মদীনা শরীফের অধিকাংশ মানুষ ইসলাম গ্রহন করেন এবং রাসুল সাঃ কে তারা তাদের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে গ্রহন করেন । এভাবে সেখানে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয় । কাফিরগণ এ রাষ্ট্রটিকে গলাটিপে মেরে ফেলার জন্য চারিদিক থেকে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় । তখন আল্লাহ যুদ্ধের অনুমতি প্রদান করে বলেনঃ “ যুদ্ধের অনুমতি দেওয়া হলো তাদেরকে যারা আক্রান্ত হয়েছে; কারন তাদের প্রতি অত্যাচার করা হয়েছে।“ ( সুরা হজ্জ ২২: আয়াত ৩৯) এ আয়াত থেকেই আমরা জিহাদের ২য় শর্ত জানতে পারি।
.
২) জিহাদের দ্বিতীয় শর্ত হলো আক্রান্ত বা অত্যাচারিত হওয়া । যখন মুসলিম রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রের নাগরিকগণ অন্য কোনো আক্রান্ত বা অত্যাচারিত হবেন অথবা এরূপ হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা প্রকাশিত হবে তখনই কিতাল বৈধ হবে ।
.
৩)জিহাদের তৃতীয় শর্ত হলো রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি ও নেতৃত্ব । কোনো অবস্থাতেই কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জিহাদের ঘোশনা বা অনুমতি প্রদান করতে পারবে না । এ বিষয়ে রাসুল সাঃ বলেন- “ রাষ্ট্রপ্রধান হলেন ঢাল , যাকে সামনে রেখে কিতাল বা যুদ্ধ পরিচালিত হবে” ( বুখারী, আস-সহীহ ৩/১০৮০; মুসলিম, আস-সহীহ ৩/১৪৭১)
.
৪) জিহাদের চতুর্থ শর্ত হলো , শুধু সশস্ত্র শত্রুযোদ্ধাকের সাথেই যুদ্ধ করতে হবে । এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন-“ তোমরা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করো তাদের সাথে যারা তমাদের সাথে যুদ্ধ করেছে। কিন্তু সীমা লঙ্গন করবে না , আল্লাহ সীমালঙ্গনকারীগনকে ভালোবাসেন না “ ( সূরা বাকারা ২: আয়াত ১৯০ )
.
এ নির্দেশের মাধ্যমে ইসলাম যুদ্ধের নামে অযোদ্ধা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করা , অযোদ্ধা মানুষদেরকে হত্যা করা ইত্যাদি রাষ্ট্রীয় বা গোষ্ঠীয় সকল সন্ত্রাসের পথ রোধ করেছেন । এমনকি যোদ্ধা টার্গেটের বিরুদ্ধে সীমালঙ্গন নিষিদ্ধ করা হয়েছে ।
.
রাসুল সাঃ বলেন- “ যুদ্ধে তোমরা ধোঁকার আশ্রয় নেবে না, চুক্তিভঙ্গ করবে না, কোনো মানুষ বা প্রানীর মৃতদেহ বিকৃ্ত করবে না বা অসন্মান করবে না , কোনো শিশু কিশোরকে হত্যা করবে না , কোনো মহিলাকে হত্যা করবে না , কোনো সন্ন্যাসী বা ধর্মজাযককে হত্যা করবে না , কোনো বৃ্দধকে হত্যা করবে না , কোনো অসুস্থ মানুষকে হত্যা করবে না , কোনো জনপদ ধবংশ করবে না , খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া গরু , উট বা কোন প্রানী বদ করবে না , যুদ্ধের প্রজন ছাড়া কোন গাছ কাটবে না ….. “ ( বাইহাকী, আস-সুনানুল কুবরা ৯/৯০)
.
ইসলামে মানুষ হত্যা করা কঠিনতম পাপ। একটি মানুষের জীবন বাচাতে যেমন তাঁর কোনো অঙ্গ সার্জারির মাধ্যমে কেটে ফেলতে হয় , তেমনি মানব সমাজকে বাঁচাতে একান্ত বাধ্য হয়ে দুটি পথে মানুষ হত্যার অনুমতি প্রদান করা হয়েছে ।
১) বিচারের মাধ্যমে
২) যুদ্ধের ময়দানে
এক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি হলো যথা সম্ভব হত্যা পরিহার করা ।
জিহাদের শর্তগুলি পূর্ণ না হওয়া সত্ত্বেও যদি কেউ জিহাদের নামে অস্ত্র ধারন করে বা হত্যা করে তবে সে ব্যক্তি কঠিনতম পাপে লিপ্ত হলো ।
.
আল্লাহ বলেন- “ অন্যায়ভাবে একজন মানুষকে হত্যা করা সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করার সামিল” ( সুরা আল-মায়িদাঃ৩২)
.
“ যে ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করবে তার শাস্তি জাহান্নাম । সেখানেই সে স্থায়ীভাবে অবস্থান করবে । আল্লাহ তার প্রতি রাগান্বিত হবেন, তার উপর লানত করবেন এবং তার জন্য মহাশাস্তি প্রস্তুত করে রাখবেন” ( সূরা নিসা, আয়াত ৯৩)
.
আর জিহাদের সকল শর্ত পূরন হওয়ার পরেও যদি কেউ জীবনেও জিহাদ না করে , তাহলে তাঁর কোনো গোনাহ হবে না । তিনি শুধু জিহাদের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে ।
.
আল্লাহ বলেনঃ “ মুমিনের মধ্যে যারা কোন অসুবিধা না থাকা সত্ত্বেও ( জিহাদ না করে ) ঘরে বসে থাকে এবং যারা আল্লাহর পথে নিজেদের প্রাণ ও স্মপদ দ্বারা জিহাদ করে তারা সমান হন । যারা নিজেদের প্রাণ ও সম্পদ দ্বারা জিহাদ করে আল্লাহ তাদেরকে যারা ঘরে বসে থাকে তাদের উপর মর্যাদা দিয়েছেন । উভয় প্রকারের মুমিনকেই আল্লাহ কল্যাণের ( জান্নাতের ) প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ………. “ ( সূরা নিসা । আয়াত ৯৫ )
.
সন্ত্রাসঃ
.
সন্ত্রাস শব্দটি ত্রাস থেকে উদ্ভূত ।
ত্রাস হলো ভয়, শংকা , ভীতিকর ( সংসদ বাঙ্গালা অভিধানঃ শৈলেন্দ্র বিশ্বাস সংকলিতঃ কলিকাতা, সাহিত্য সংসদ, ৪র্থ সংস্করণ ১৯৮৪,পৃষ্ঠা ৩১৭)
আর , সন্ত্রাস হলো আতন্ত্রগ্রস্ত করা , অতিশয় ত্রাস বা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা। সন্ত্রাসিত-সন্ত্রাসযুক্ত , সন্ত্রস্ত (( সংসদ বাঙ্গালা অভিধানঃ শৈলেন্দ্র বিশ্বাস সংকলিতঃ কলিকাতা, সাহিত্য সংসদ, ৪র্থ সংস্করণ ১৯৮৪,পৃষ্ঠা ৬৬১)
.
যারা সন্ত্রাসী করে তাদের Terrorist বলা হয় । আর সঙ্ঘবদ্ধভাবে ভয় দেখিয়ে বশ মানানোর নীতি হলো সন্ত্রাসবাদ যাকে ইংলিশে Terrorism বলে ।
কুরানের পরিভাষায় সন্তাসিদেরকে “ মুহারিবুন” বলা হয়েছে ( আল-মাআনাশ শরহে লিকারিবীন ১০ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩০৩ )
পবিত্র কুরান ও সুন্নায় সন্ত্রাসবাদ বলতে ফিতনা এবং ফাসাদ শব্দও ব্যবহৃত হয়েছে ।
আল্লাহ বলেন- “ পৃথিবীতে শান্তি শৃঙ্খলা স্থাপনের পর তাতে বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করো না “ (সূরা আরাফ, আয়াত ৫৬ )
“ ফিতনা ( সন্ত্রাস ) নরহত্যা অপেক্ষাও মহাপাপ “ ( সূরা আল-বাকারা , আয়াত ২১৭)
“ ফিতনা ( সন্ত্রাস) হত্যা অপেক্ষাও মহাপাপ “ ( সূরা আল বাকারা, আয়াত ১৯১)
বিদায় হজ্জের ভাষনে রাসুল সাঃ বলেছেনঃ প্রতেক মুসলিমের জন্য অন্য মুসলিমের রক্ত , ধন-সম্পদ ও মান-সন্মান হারাম” ( মুসলিম , ৪র্থ খন্ড , পৃষ্ঠা ১৯৮৬ , ইসলামের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল , বিদায় হজ্জের অভিভাষন অধ্যায় ,প্রকাশকঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২য় সংস্করণ ২০১১)
“ সাবধান ! ধর্মীয় ক্ষেত্রে সীমালংঘন করবে না । কেননা ধর্মের সঠিক বন্ধনসমূহ অতিক্রম করার ফলে তোমাদের পূর্বে বহু জাতি ধ্বংস হয়ে গেছে “ (ইসলামের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল , বিদায় হজ্জের অভিভাষন অধ্যায় ,প্রকাশকঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ২য় সংস্করণ ২০১১)
.
দূর্ভাগ্যজনক ভাবে কিছুলোক মুসলিমদের টেরোরিস্ট বা সন্ত্রাসী আর ইসলামকে টেরোরিজম এর সমার্থক প্রচার করে মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলেছেন । তারা ইসলামের বিধান জিহাদকে সন্ত্রাসের সাথে তুলনা করেছেন । সকলমুসলিমকে ঢালাওভাবে “ সন্ত্রাসী/টেরোরিস্ট” হিসেবে আখ্যায়িত করছে ।
জিহাদ শব্ধটির অপব্যখা করে দীর্ঘদিন থেকে জিহাদকে উম্মাদনার প্রতিশব্দে পরিণত করেছে । অনেকে জিহাদের নাম দিয়েছে “ ইসলামী সন্ত্রাস” !
.
আবার কিছু মুসলিম নামধারী ব্যক্তি ,নিজ গোষ্ঠী জিহাদের অর্থকে সম্পূর্ণ বিকৃ্ত রূপ দিয়ে শান্তির ধর্ম ইসলামকে কলুষিত করছে ।
.
এখন প্রশ্ন হলো , জিহাদ ও জঙ্গিবাদ তথা সন্ত্রাস কি সমার্থক? জিহাদ ও সন্ত্রাস কখোনো সমার্থক হতে পারে না । আল্লাহর বিধান পালন করতে সকল প্রকার প্রচেষ্টাকে আভিধানিক ভাবে জিহাদ বলে । অন্যদিকে সন্ত্রাস হচ্ছে এমন এক নিকৃষ্ট অপকর্ম , যা মূলতঃ হত্যার চেয়েও জঘন্য হিসেবে বিবেচিত ( দেখুন সুরা বাকারা , আয়াত ১৯১)
.
ইসলামের সত্য হচ্ছে , শান্তি প্রতিষ্ঠা , ইসলামের এই সত্যকে মিথ্যা দিয়ে আড়াল করতে মিথ্যার পূজারীরা প্রতিনিয়ত চেষ্ঠা করছে । এর কারন কি ? কারন হলো “ ইসলামের আলো সহজেই মানুষকে আকৃষ্ঠ করছে”
.
১৯৭৯ সালের ১৬ ই এপ্রিল টাইম ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল উল্লেখ করেছিল যে, বিগত দেরশ বৎসরে ইসলামের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্যে ৬০ হাজারেরও বেশি বই লেখা হয়েছে । এছাড়াও টেলিভিশন, সিনেমা ইলেকট্রনিক গেম, ওয়েব সাইট , ব্লগ , ফেসবুক , ইউটিউব , সোশ্যাল মিডিয়ার সকল মাধ্যম ইত্যাদি অগনিত প্রচার মাধ্যমের দ্বারা ইসলামের বিরুদ্ধে যে সকল প্রপাগান্ডা চালান হয় তাঁর অন্যতম বিষয় হলো জিহাদ।
.
জিহাদ বিষয়ে অনেক মিথ্যা প্রপাগান্ডা চালানো হয়। যেমন বলা হয়, ধর্মই সকল হানাহানির মূল, ধর্মের নামেই রক্তপাত হয়েছে সবচেয়ে বেশি । কি জঘন্য মিথ্যাচার। তবে এতা ঠিক যে, অনেক সময় ধর্মকে হানাহানির হাতিয়ার বানানো হয় । তবে ইসলাম ধর্মের নামে সবচেয়ে বেশি রক্তপাত হয়নি ।
.
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ , দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ , কমুনিষ্ট চীনের সাথে কম্যুনিস্ট ভিয়েতনামের যুদ্ধ । আমেরিকার সাথে ভিয়েতনামের যুদ্ধে কোটি কোটি মানুষ মরেছে । মম্পুচীয়ায় খেমার রূজের হাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের ভয়ংকর মৃত্যু , জোসেফ স্টালুনের নির্দেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষের হত্যা , মাওসেতুং-এর চীনে প্রায় দু কোটি মানুষের হত্যা , মুসোলিনির নির্দেশে ইটালির ৪ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ও এরূপ অগনিত মানুষের হত্যা কোন ইসলামের নামে হয়েছে ?
.
তারা বলছে , একমাত্র ইসলাম ধর্মই জিহাদের কথা বলেছে । কি মিথ্যা কথা !! হিন্দুদের মহাভারত ও রামায়ন পুরোটা যুদ্ধ নিয়ে । গীতার যুদ্ধের নির্দেশ রয়েছে । বাইবেলে বারংবার যুদ্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাইবেলার যিশুখৃস্ট তাঁর সকল শত্রুকে ধরে ধরে জবাই করতে নির্দেশ দিয়েছেন (বাইবেলঃ লুক ১৯/২৭) । যুদ্ধে উধবুদ্দ করে তিনি বলেন , আমি তরবারী নিয়ে এসেছিঃ Think not that I am come to send peace on earth: I came not to send peace , but a sword ( বাইবেলঃ মথি ১০/৩৪)।
বাইবেলে যুদ্ধের ক্ষেত্রে বেসামরিক মানুষ হত্যা, বাড়িঘর কৃ্ষিক্ষেত ও প্রাকৃ্তিক সম্পদ ধ্বংস করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, কোনো দেশ যুদ্ধ করে দখল করতে পারলে তাঁর সকল পুরুষ অধিবাসীকে নির্বিচারে হত্যা করতে হবে এবং নারীদের ভোগের জন্য রাখতে হবে । আর সে দেশ যদি ইহুদীদের বসবাসের কোনো দেশ হয় তবে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকল মানুষ এবং প্রানী হত্যা করতে হবে । ( বাইবেল, গননাপুস্তক ৩১/১৭-১৮; দ্বিতীয় বিবরন ২০/১৩-১৬ )
বাইবেলের যিহোশূয়ের পুস্তক , বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরন , শমুয়েলের পুস্তক , রাজাবলির , বংশাবলি ইত্যাদি পাঠ করলে বর্বর গনহত্যা , কল্পনাতীত নিপিড়ন , উন্মাদ ধবংশযজ্ঞের লোমহর্ষক ঘটনাবলি দেখবেন ।
রাষ্ট্র থাকলেই রাষ্ট্রের ও নাগরিকদের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষার জন্য যুদ্ধের ব্যবস্থা থাকতেই হবে । তবে যুদ্ধকে যথাসম্ভব কম ধ্বংসাত্নক করতে হবে এবং সকল অযোদ্ধা মানুষ , দ্রব্য ও বস্তুকে যুদ্ধের আওতা থেকে মুক্ত রাখতে হবে । ইসলামে এ কাজটিই সর্বোত্তমভাবে করা হয়েছে । যেমন থিওরিতে তেমনি প্রাক্টিক্যালে । রাসুল সাঃ সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন সথাসম্ভব কম প্রাণহানি ঘটাতে । শুধু মুসলিম যোদ্ধাদের জীবনই নয় , উপরন্ত তিনি শত্রুপক্ষের যোদ্ধাদেরও প্রাণহানি কমাতে চেয়েছেন । শুধু সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও আগ্রাসন প্রতিরোধের জন্য বাধ্য হয়ে তাঁকে যুদ্ধ করতে হয়েছে এবং তাঁর সারাজীবনের সকল যুদ্ধে মুসলিম ও কাফির মিলে সর্বমোট মাত্র ১ হাজার আঠারজন মানুষ নিহত হয়েছেন ।
যে দেশে প্রতিমাসেই সহস্রাধিক মানুষ মারামারি করে খুন হতো , সে দেশে মাত্র ১ হাজার আঠারজন মানুষের জীবনের বিনিময়ে তিনি বিশ্বব্যাপী চিরস্থায়ী শান্তির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন।
পক্ষান্তরে বাইবেল একেক যুদ্ধেই ৪০/৫০ হাজার থেকে কয়েক লক্ষ “ কাফির” হত্যার গৌরবময় বিবরন লেখা হয়েছে ।
শুধু মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয় , ভিন্নমতাবলম্বী খৃস্টান ও ইহুদীদের বিরুদ্ধেও ক্রুসেড চালিয়েছেন খৃস্টান ধর্মগুরু পোপগন এবং একেক যুদ্ধে লক্ষাধিক মানুষ হত্যা করেছে ।
.
আপনারা যে কোনো এনসাইক্লোপীডিয়াতে ক্রুসেড ( Crusade) , এলবিজেনসিয়ান ক্রুসেড ,সেন্ট বার্থলমিউস দিবসের গণহত্যা (Massacre of saint Bartholomew’s Day) , ইনকুইজিশন , ধর্মের যুদ্ধ ইত্যাদি আর্টিকেল পড়লেই অনেক তথ্য জানতে পারবেন । যদিও আধুনিক এনসাইক্লোপিডিয়াতে বিষয়গুলিকে খুবই হালকা করা হয় এবং নিহতদের সংখ্যা কম করা হয় , তবুও যেটুকু সত্য দেখবেন তাতেই গায়ের লোম শিউরে উঠবে! এ হলো ইহুদী – খৃস্টানদের একেকটি ধর্মযুদ্ধের অবস্থা । মহাভারত , গীতা ও রামায়ণের যুদ্ধেরও কাছাকাছি অবস্থা ।
.
ইসলামের জিহাদ নিয়ে আরেকটি বিভ্রান্তি হলো , মুসলিমরা ধর্মপ্রচার বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য জিহাদ করে বা ইসলাম তরবারীর জোরে প্রচারিত হয়েছে । এটি মিথ্যা ও প্রকৃ্ত সত্যের সম্পুর্ন বিপরীত তথ্য। বস্তুত বাইবেলে ধর্মের কারনে মানুষ হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । বারংবার বিধর্মীদের উপাসনালয় ভেঙ্গে ফেলার , দেশের বিধর্মী নাগরিকদের দাওয়াতের নামে ডেকে এনে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করার ও নিরিহ বিধর্মীদের ধরে হত্যা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ( বাইবেল, ১ রাজাবলি ১৮/৪০,২ রাজাবলি ১০/১৮-২৮) । ৩২৫ খৃস্টাব্দে বাইযেন্টাইন সম্রাট কনস্টান্টাইন খৃস্টধর্মকে রাস্ট্রধর্মের মর্যাদা দেন । সেদিন থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত খৃস্টান চার্চ, পোপ, প্রচারক ও রাষ্ট্রগুলির ইতিহাস হলো রক্তের ইতিহাস । অধার্মিকতা বা heresy দমনের নামে , ধর্ম প্রচারের নামে পরধর্ম অসহিষ্ণুতা , পরধর্মের প্রতি বিষোদগার , জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণ , অন্য ধর্মাবলম্বীদের হত্যা , নির্যাতন বা জিবন্ত অগ্নিদগ্ধ করা খৃস্টান ধর্মের সুপরিচিত ইতিহাস ।
.
পক্ষান্তরে ইসলামে শুধু রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব ও নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্যই যুদ্ধ বৈধ করা হয়েছে , ধর্ম প্রচারের জন্য নয় । ইসলামে যুদ্ধের ময়দান ছাড়া কখনোই অমুসলিম হওয়ার কারনে কাউকে হত্যা করা হয়নি বা জোরপূর্বক মুসলিম বানানোর চেষ্টা করা হয়নি । আল্লাহ বলেন- “ ধর্মের মধ্যে কোনো জোর যবরদস্তি নেই “ ( সূরা বাকারা , আয়াত ২৫৬ )
রাসুল সাঃ বলেন- “ যদি কোনো ব্যক্তি মুসলিম রাষ্ট্রের মধ্যে বসবাসকারী অমুসলিম নাগরিক বা মুসলিম দেশে অবস্থানকারী অমুসলিম দেশের কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করে তবে সে জান্নাতের সুগন্ধও লাভ করতে পারবে না , যদিও জান্নাতের সুগন্ধ ৪০ বৎসরের দূরত্ব থেকে লাভ করা যায় “ ( বুখারী, আস-সহীহ ৩/১১৫৫ , ৬/২৫৩৩; মুসলিম , আস-সহীহ ৪/২২৭৮ )
.
যুইশ এনসাইক্লোপিডীয়া ও অন্য যে কোনো ইতিহাস বা বিশ্বকোষ থেকে আপনারা জানতে পারবেন যে, বিগত দেড় হাজার বছরে ইউরোপের সকল খৃস্টান দেশে ইহুদিদের উপর বর্বর অত্যাচার করা হয়েছে , জোর পূর্বক তাদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছে , নানাভাবে তাদের সম্পদ ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে । অথচ এ সময়ে মুসলিম দেশগুলিতে ইহুদীরা পরিপূর্ণ নাগরিক অধিকার নিয়ে বসবাস করেছে । আজ এ বর্বরতার অনুসারী ও উত্তরসূরীরা তাদের বর্বরতা ঢাকতে ইসলামের জিহাদকে সন্ত্রাস বলে অপ-প্রচার চালাচ্ছে।
.
দেড় হাজার বছর ধরে মুসলিমগণ আরববিশ্ব শাসন করেছেন । সেখানে দেড় কোটিরও বেশি খৃস্ট্রান ও কয়েকলক্ষ ইহুদী এখন পর্যন্ত বংশপরম্পরায় বসবাস করছে ।
.
ভারতে মুসলিমগণ প্রায় একহাজার বছর শাসন করেছেন , সেখানে প্রায় শতকরা ৮০ জন হিন্দু । অথচ খৃস্ট্রানগন যে দেশই দখল করেছেন, জোর যবরদস্তি করে বা ছলে বলে সে দেশের মানুষদের ধর্মান্তরিত করেছেন অথবা হত্যা ও বিতাড়ন করেছেন ।
.
ইসলাম যদি তরবারির জোরেই প্রচারিত হবে তাহলে ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের সর্ববৃহৎ মুসলিমপ্রদান দেশ হয় কি করে ? সেখানে তো কোনো মুসলিম বাহিনী কখনোই যায় নি । বিগত অর্ধ শতাব্দি যাবৎ ইসলাম হলো সর্বাধিক বর্ধনশীন ধর্ম । ইউরোপ আমেরিকা সহ সকল দেশের হাজার হাজার মানুষ ইসলাম গ্রহন করছে । কোন তরবারীর ভয়ে তারা ইসলাম গ্রহন করছেন?
.
জিহাদ বিষয়ে অন্য বিভ্রান্তি হলো , জিহাদ ও সন্ত্রাসকে এক করা । সন্ত্রাস বা টেরোরিজম হলো – অবৈধভাবে সহিংসতা ব্যবহার করে সরকার বা জনগনকে ভীত করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করা হলো সন্ত্রাস । এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা ও অন্যান্য গ্রন্থে এমনই বলা হয়েছে । যেখানে বৈধ ও অবৈধতা খুবই অস্পস্ট । ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে , বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধারা ছিলো দখলদারদের নিকট সন্ত্রাসী । বর্ণবাদী আফ্রিকার বিরুদ্ধে সংগ্রামের নেতা নেলসন মেন্ডেলা আমেরিকার দৃষ্টিতে ছিলেন সন্ত্রাসী । নেপালের মাওবাদিরা ছিলো অন্যদের নিকট সন্ত্রাসী ।
.
সন্ত্রাসের অন্য সংজ্ঞা হলোঃ ” রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে অযোদ্ধা লক্ষ্যের বিরুদ্ধে সহিংসতা । ( premeditated , politically motivated violence perpetrated against noncombatant targets )“ । ইসলাম এরুপ সন্ত্রাসের পথ রুদ্ধ করেছে । যুদ্ধের জন্য রাস্ট্র ও রাষ্ট্রপ্রধানের অনুমতি শর্ত রয়েছে । এছাড়া অযোদ্ধা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত কঠিনতম নিষিদ্ধ ও হারাম করেছে । সর্বোপরি সন্ত্রাসের মূল কারন হলো জুলুম এবং মাজলুমের বিচার পাওয়ার সুযোগ না থাকা । ইসলাম জাতি – ধর্ম – বর্ন নির্বিশেষে সকলের জন্য ন্যায় বিচার ও ইনসাফ নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে ।
.
কিছু মুসলমান বিভিন্ন দেশে নিরাপরাধ অযোদ্ধা ও নিরীহ মানুষ হত্যা করছে বা সন্ত্রাসের আশ্রয় নিচ্ছে বলে যানা যায় । এগুলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রমানিত হয় না । সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী ঘটনা আমেরিকার টুইন টাওয়ার ধ্বংস । লাদেন ও তার বাহিনী তা করছে বলে দাবি করে আমেরিকা এ দাবির ভিত্তিতে আফগানিস্তানের ও ইরাকের লক্ষ লক্ষ নিরীহ নিরস্ত্র অযোদ্ধা নারী-পুরুষ ও শিশুদের হত্যা করেছে । অপরাধীর অপরাদের জন্য নিরীহ মানুষকে শাস্তি দেওয়া যায় না ।
.
ভারতে , আমেরিকায় বা অন্যত্র কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা হলেই প্রথমে মুসলিমদের দায়ী করা হয় এবং প্রচার মাধ্যমে তা ফলাও করা হয় । পরবর্তী তদন্তে অনেক সময় যদি প্রমান হয় এদের সম্পৃক্ততা ছিলনা , বা অন্যরা তা করেছে তখন সাধারনত প্রচারমাধ্যমে তা ফলাও করা হয় না । সন্ত্রাসের ইতিহাস পাঠ করলে দেখবেন এখানে মুসলিমদের ( প্রমান হয়েছে ) এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ১ বা ২ পারসেন্ট ও নয় । তবুও তারা ইসলামের নামে সন্ত্রাস করলেও ইসলাম ধর্ম এই সন্ত্রাস সমর্থন করেনা ।মুসলিম নামের এই সন্ত্রাসীদের কর্মকান্ড ইসলাম ধর্ম ও এই ধর্মের উনুসারীদের কাছে ঘৃর্নার ও পাপের । যা পুর্বের আলোচনায় দেখেছেন ।
.
দেখবেন সন্ত্রাসের উৎপত্তি ও বিকাশে মুসলমানদের অবদান খুবই কম । মানব ইতিহাসে প্রাচীন যুগের প্রসিদ্ধতম সন্ত্রাসী কর্ম ছিলো উগ্রপন্থী ইহুদী যীলটদের ( zealots ) সন্ত্রাস । আধুনিক ইতিহাসে ভারত , ইউরোপে ও অন্যান্য দেশে অগণিত সত্রাসি দল ও সন্ত্রাসী ঘটনা পাবেন । এদের প্রায় সকলে ইহুদী , খৃস্টান , হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী , মাওবাদী বা সমাজতন্ত্রী ।
.
আসাম , মনিপুর, মিজোরাম , বিহার , শ্রীলঙ্কা , আয়ারল্যান্ড , স্পেন, ফ্রান্স বা অন্য কোনো স্থানের হিন্দু , খৃস্টান বৌদ্ধ, ক্যাথলিক , প্রটেসট্যান্ট বা অন্য ধর্মের সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তাদের ধর্ম উল্ল্যেখ করা হয় না বা ধর্মকে দায়ী করা হয়না । কিন্তু কোথাও মুসলিম এরুপ করলে তার ধর্মকে দায়ী করা হয় ।
.
ধর্মের নামে ধর্মীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইহুদীরা সন্ত্রাস করে অগণিত নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করেছে । এদেরকে তখন সন্ত্রাসীও বলা হয়েছে । পরে তাদের শান্তির জন্য নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়েছে । কিন্তু কখোনোই তো তাদের ধর্মকে দায়ী করা হয় নি । ধর্মের নামে ধর্মগ্রন্থের প্রেরনায় উদ্বদ্ধ হয়ে মেনাহেম বেগিনের নে্তৃত্বে ১৯৪৬ সালে যেরুশালেমের কি ডেভিড হোটেলে বোমা হামলা চালিয়ে ইরগুন যাভি লিয়াম (the Irgun Zvai Leumi: National Military Organization ) নামক এক ইহুদি জঙ্গি সংগঠন নিরস্ত্র শিশু ও মহিলা সহ আরব , বৃটিশ ও ইহুদী শতাধিক মানুষকে হত্যা করে এবং আরো অনেক মানুষ আহত হয় । সেই সন্ত্রাসী মেনাহেম বেগিন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী হয়েছে এবং তাঁকে শান্তিতে লোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়েছে । সর্বোপরি এজন্য কখোই ইহুদি ধর্মকে দায়ী করা হয়নি ।
.
১৯৯৫ সালে আমেরিকার ওকলাহোমা সিটির ফেডারেল বিল্ডিং এ গাড়িবোমা হামলা করে প্রায় ২০০ নারী , পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করা হয়। প্রথমে এ জন্য মুসলিমদের দায়ী করা হয়েছিল। পরে জানা গেল খৃস্টান ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা কাজটি করেছিলো । কখোই এদের ধর্মকে এদের সন্ত্রাসের জন্য দায়ী করা হয় নি । অথচ কোনো মুসলিম যদি স্বাধীনতা সংগ্রামে রত হন তবে ইসলামী সন্ত্রাসকে দায়ী করা হয় ।যেমন করা হচ্ছে প্যালেস্টাইনের মুক্তিকামী মানুষদের জন্য ।
.
কিছু মুসলিমও জিহাদ সম্পর্কে বিভ্রান্তিতে আক্রান্ত । আলী রাঃ এর সময়ে খারিজী সম্প্রদায়ের মাধ্যমে জিহাদ বিষয়ক বিভ্রান্তি শুরু। উগ্রতা ও বাড়াবাড়ি ছিলো তাদের বিভ্রান্তির মূল । পাপের কারনে তারা ব্যক্তি মুসলিমকে এবং মুসলিম রাষ্ট্রকে কাফির বলতো । জিহাদের ফিযীলত বিষক আয়াত ও হাদীসের অপব্যখ্যা করে এবং কুরান ও হাদীসে উল্লেখিত জিহাদ বিষয়ক শর্তগুলি অস্বীকার করে তারা জিহাদকে ফরয আইন ও বড় ফরজ বলে দাবি করতো । অন্যায়ের প্রতিবাদের নামে তারা আইন ও বিচার নিজের হাতে তুলে নিত । কুরান ও হাদিসের কতিপয় বক্তব্যর অপব্যাখ্যা করে তারা এগুলি করতো । জিহাদের নামে রাষ্ট্রদ্রহিতায় লিপ্ত হতো । অথচ বিভিন্ন হাদিসে রাসুল সাঃ বারংবার বলেছেন যে, জালিম বা পাপী শাসকদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে ঘৃর্না করতে হবে , কোনো অবস্থাতেই আইন নিজের হাতে নেওয়া যাবে না । রাসুল সাঃ বলেন- “ যখন তোমরা তোমাদের শাসক-প্রশাসকগন থেকে এমন কিছু দেখবে যা তোমরা অপছন্দ কর , তখন তোমরা তাঁর কর্মকে অপছন্দ করবে, কিন্তু তাঁর আনুগত্য থেকে হাত গুটিয়ে নিবে না” ( মুসলিম, আস-সহীহ ৩/১৪৮১
©somewhere in net ltd.