![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজনীতী করি না, তবে রাজনৈতিক ক্যাচাল ভাল লাগে। আমার মেইল [email protected]
একজন ফাঁসির আসামী শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস করেন কোন দৈব শক্তি এসে তাকে রক্ষা করবে। এমনকি পেছনে হাত বাঁধা, গলায় দড়ি পরানো অবস্থায় এক পৃথিবী থেকে অন্য পৃথিবীতে যাওয়ার মাঝখানে দেয়াল যখন একটি মাত্র রুমাল; নীরবে দাড়িয়ে তখন সে ভাবতে থাকে এই বুঝি তাকে রক্ষা করতে কেউ এগিয়ে এলো।
বাংলাদেশে যেভাবে ফাঁসি কার্যকর করা হয়
বাংলাদেশে এক সময়ে মুনিরের ফাঁসি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এরপর এরশাদ শিকদারের ফাঁসি নিয়ে ছিল মানুষের ব্যাপক আগ্রহ।
একজন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী যতই ঘৃন্য হোক, তার শেষ ইচ্ছা পালনের চেষ্টা করা হয়। চেষ্টা করা হয় তার মৃত্যুটি যথাসম্ভব আরামদায়ক করার।
মৃত্যুদন্ড আরামদায়ক করার জন্য বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন। এই ধারাবাহিকতায় ইলেকট্রিক চেয়ার, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড আবিস্কার হয়েছে। তবে যত সিস্টেমই আবিস্কারই হোকনা কেন, মৃত্যুতো মৃত্যুই।
আইনানুগ সকল ফর্মালিটি শেষে ফাঁসির আসামীকে নিয়ে আসা হয় কনডেম সেলে। সেখানে শুধু ফাঁসির আসামীরাই থাকে। মাথায় থাকে লাল টুপি। অনেকটা ওয়েটিং রুমের মতো। এখানে কয়েকদিন রাখা হয়। তার সাথে যথাসম্ভব ভালো ব্যবহার করা হয়। বিদেশ থেকে আনা হয় দড়ি। সাধারনত জার্মানি থেকে বিশেষ এই দড়ি আনা হয়। নিয়ম করে কয়েকবার এতে মাখানো হয় সবরি কলা আর মাখন। জল্লাদ নির্বাচন করা হয় কয়েদিদের মধ্য থেকেই। প্রতিটি ফাঁসি কার্যকরের জন্য ঐ কয়েদির ২ মাস করে সাজা কমে। আসামীর সম-ওজনের বালির বস্তা দিয়ে কয়েকবার ফাঁসির প্র্যাকটিস করা হয় কয়েকদিন আগেই।
কনডেম সেলে আসামীর আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করানো হয়। তবে কবে ফাঁসি কার্যকর হবে তা আসামী এবং আত্মীয়-স্বজন কাউকেই বুঝতে দেয়া হয় না।
সাধারনত রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার দিকে কারাগার মসজিদের ইমামকে সাথে নিয়ে জেল সুপার কনডেম সেলে যান। তখন কয়দি বুঝতে পারেন যে আজই তার জীবনের শেষ রাত। সাড়ে ১১টার মধ্যে তওবা পড়ানোর কাজ শেষ হয়ে যায়।
১২টার ৫ মিনিট আগে যম টুপি ও গলায় দড়ি পরিয়ে দেয়া হয়। জেল সুপার হাতে রুমাল নিয়ে মঞ্চের পাশে দাড়িয়ে থাকেন। সাথে দাড়িয়ে থাকেন অন্যান্য অতিথিরা। জল্লাদের চোখ তখন রুমালের দিকে। ঐ মুহুর্তে এই রুমালই একজন মানুষকে এপাড় থেকে ঐপাড়ে পাঠিয়ে দেয়ার ভূমিকা পালন করে।
আসামীর চোখে মুখে অন্ধকার। দাঁতে দাঁত খিটে থাকে। গলাটাকে ফোলানোর চেষ্টা করেন যেন ব্যথাটা একটু কম লাগে। কিন্তু বিশাল এই দেহের ভারকি আর গলা সইতে পারে? ধর্মীয় দোয়া/মন্ত্র পাঠ করতে থাকে আর মনে মনে অপেক্ষায় থাকে কোন দৈব শক্তির। কান খাড়া করে রাখে এই বুঝি কেউ একজন বলে উঠবে, “স্টপ; এই ফাঁসি হবে না”। ভাসতে থাকে প্রিয় মানুষগুলোর মমতাভরা মুখ। তাদের মায়ামুখগুলো ভেবে হৃদয় কেঁদে উঠে। মনে হয়, যে কোন কিছুর বিনিময়ে আর ক’টা দিন যদি ওদের সাথে কাটাতে পারতাম। প্রিয় মানুষগুলোকে একটু জড়িয়ে ধরতে পারতাম।
একজন ফাঁসিতে আত্মহত্যাকারী আর মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীর মৃত্যুর মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। আত্মহত্যাকারী পৃথিবীর প্রতি বিতৃষ্ণার কারণে আত্মহত্যা করে। তাছাড়া সেই মুহুর্তে তার মধ্যে কোন হিতাহিত জ্ঞান থাকে না। আর ফাঁসির আসামী পৃথিবীর মায়ার জন্য অন্যায় করে এবং সে ভাবার মতো যথেষ্ট সময় পায়।
আসামী যাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য অপরাধ করে শেষ সময় তারা কেউ পাশে থাকতে পারে না। যারা থাকে সবগুলো অপরিচিত মুখ। সবাই যার যার দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত। স্বজনদের মতো মমতা ভরা কন্ঠ এখানে নেই। গায়ে হাত বুলিয়ে দেবার কেউ নেই। তার কস্টে ব্যথা পাওয়ার কেউ নেই। যত বড় দুর্ধর্ষ ব্যক্তিই হোক না কেন, এই সময়টিতে সে সবচেয়ে অসহায় অনুভব করে।
একজন মানুষ যখন উত্তেজনায় থাকে তখন ভবিষ্যৎ পরিনতি ভাবার মতো জ্ঞান তার থাকে না। আর সে সময়টিতেই ঘটায় যত অঘটন। আর এজন্যই মনিষীরা বলে থাকেন, জীবনে দুটো সময় কোন সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত নয়। এক খুব রাগান্বিত অবস্থায় এবং খুব আনন্দময় অবস্থায়। এই দুটো সময়ে সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা ৯০ ভাগ।
সর্বশেষ ১২টা পাঁচ মিনিটে পায়ের নিচ থেকে পাটাতন সরে যায়। গলায় আটকে যায় মোটা দড়ি। শুরু হয় রহস্যময় যাত্রা। ১০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখার পর একজন ডাক্তার এসে ঘাড়ের চামড়া কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে থাকে নিথর দেহ। এরপর থেকে আর প্রয়োজন হয়না কোন খাবার কিংবা পানি। রাতে খাওয়া খাবারগুলো দেহের কোন কাজে আসেনা। পাকস্থলিতে পরে থাকে নিরব হয়ে।
মৃত্যুর আগ মুহুর্তে একজন আসামী ফিরে যেতে চায় তার অতীতে। ভুলগুলো মুছে দিয়ে নতুন করে লিখতে চায় জীবনের অধ্যায়। আমরাও একই পথের যাত্রী। শুধু আমরা জানতে পারিনা আমাদের মৃত্যুর সময়-ক্ষন। আমাদের যেন শেষ মুহুর্তে পিছনে ফিরে অতীতকে নতুন করে লিখার ইচ্ছে জাগ্রত না হয় সে জন্য প্রতিটি মুহুর্ত-প্রতিটি সেকেন্ড ভেবে চিন্তে সৎ ভাবে অতিবাহিত করতে হবে। কারণ জীবন খাতার অক্ষর মোছার কোন ফ্লুইড নেই।
---এসএম নাহিদ রহমান
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৬
দূষ্ট বালক বলেছেন: নিশ্চিত মৃত্যু হবে, এ সময়টা খুবই কষ্টের, এমনকি মৃত্যুর যন্ত্রনার চেয়েও
২| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৬
ঢাকাবাসী বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৯
দূষ্ট বালক বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪০
shahinur70 বলেছেন: পড়ে অনেক ভাল লাগল, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভাল থাকুন।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬
দূষ্ট বালক বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ। ভাল থাকবেন সবসময়
৪| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬
শাহ আজিজ বলেছেন: সাদ্দামের ফাঁসীর দৃশ্য বোধকরি এযাবতকালের সবচে প্রকাশ্য চিত্র । দড়িতে বড় গেরো টি গলার বা দিকে লাগান হয় যাতে হার্ট থেকে ব্রেইন পর্যন্ত রক্ত চলাচলের পেশীকে এবং ঘাড়ের ডিস্ক কে ছিন্ন করে তাৎক্ষনিক মৃত্যু নিশ্চিত করে । আপনারা জানেন স্পাইনাল কর্ড ছিঁড়ে গেলে কেউই বাচে না । এসবের জন্য আসামির শরীরের দিগুন ওজনের বালির বস্তা তার পায়ের নিচে লাগান থাকে যা লিভার তানার সাথে সাথে হ্যাচকা টান মেরে ঘাড়ের এই দুটি বিষয়ের ছিন্নকরন নিশ্চিত করে। বস্তার গর্তটি কিন্তু বেশ গভীর । এটি সবচে কম যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যুদণ্ড । অবশ্য লেথাল ইনজেকশন আরও আরামদায়ক যেন ঘুম পাড়িয়ে দ্যায়।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৮
দূষ্ট বালক বলেছেন: গা শিউরে উঠা বর্ণনা। আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাজত করুক
৫| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪৪
মোঃ আনারুল ইসলাম বলেছেন: পোস্টে +++++++ খুব সুন্দর গুছিয়ে পরিপূর্ণ লেখা।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০
দূষ্ট বালক বলেছেন: ধন্যবাদ আনারুল ভাই
৬| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৫০
নক্শী কাঁথার মাঠ বলেছেন: ঘাড়ের চামড়া কেটে নয়, পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ২০ মিনিট ঝুলিয়ে রাখা হয় ফাঁসির দড়িতে।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪১
দূষ্ট বালক বলেছেন: খুবই মর্মান্তিক, আল্লাহ আমাদের সকলকে হেফাজত করুন
৭| ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৪
অলওয়েজ এ্যান্টি গর্ভণমেন্ট বলেছেন: যার লেখাই হোক, সুন্দর রচনা, সাবলীল। ধন্যবাদ।
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২
দূষ্ট বালক বলেছেন: গর্ভণমেন্ট ভাই আপনাকেও ধন্যবাদ
৮| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪১
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: পোষ্টে +++
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:১২
দূষ্ট বালক বলেছেন: ধইনা......
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:২৩
রামন বলেছেন:
ফাঁসির আসামীরা মৃত্যুর আগে অতীতের অনেক কিছু ভাবার সময় পায় যেমনটি আপনি বলেছেন, সে সাথে মৃত্যু যন্ত্রণা উপলব্ধি করতে পারে কিন্তু জেলোটিন এ দন্ডিত ব্যক্তি কিছু বুঝার আগেই সবকিছুই শেষ হয়ে যায়। ধন্যবাদ ।