আমাদের আন্দোলনের দাবি রাজাকারের ফাঁসি, ইসলাম বিরোধী না

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৬

আমাদের আন্দোলনের মূল ছিল রাজাকারের ফাঁসির দাবি। আর আমাদের দাবি এইতাই। কিন্তু এখন কিছু কারনে আমরা আমাদের মূল দাবি থেকে সরে যাচ্ছি। আমাদের আন্দোলনের দাবি এখন জামাত শিবির প্রতিহার, বিভিন্ন ব্লগ প্রতিহার, একেক জনের মৃত্যুর দাবির। কিন্তু আমরা এই দাবির পিছনে ইসলাম কে নিয়ে আসতেছি। ইসলাম বিরোধী হয়ে যাচ্ছি আমরা। কিছু মানুষ ভুল করবে কিন্তু তার মানে এই না যে আমরা সবাই ভুল করবো।



কেও মারা গেলে বলে দিচ্ছি জামাত শিবির মেরেছে। আবার বলছি “ইসলাম কি হত্যা শিখায়?”। এই রকম প্রশ্ন দিয়ে প্রমান করে আমরা ভুলের ঘোরে ইসলাম নিয়ে সন্দেহ করছি। আজ যে ব্লগার খুন হলো তাকে কে বা কারা মেরেছে? প্রমান আছে? কিন্তু আমরা কিন্তু বলে বেড়াচ্ছি জামাত শিবির মেরেছে। আমরা প্রতিবাদ করছি তাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এমন কি হতে পারে না এইটা একটা ষড়যন্ত্র। ব্লগার রাজীব ইসলাম নিয়ে উল্টা পাল্টা লিখতো। নাস্তিক ছিলেন সে। তাই হয়তো কোনো এক মহল তাকে মেরে সবার কাছে বোঝাতে চেয়েছে যে জামাত শিবির রাই মেরেছে যাতে আমাদের আন্দোলনের মোড় ঘুরে যায়। আর তাতে কি লাভ? অনেক। এতোদিন ধরে আওয়ামীলীগ এর যত খারাপ কর্মকাণ্ড ছিল টা ধামাচাপা পড়ে যায়। যাতে মানুষ বিরোধী দলের কর্মকাণ্ড কে নিয়ে আন্দোলন করে আর সব ইস্যু বাতিল হয়ে যায় আর আওয়ামীলীগ সোনার দল হয়ে যায় আবার।



আমরা ব্লগার মরলো টা নিয়ে শোক প্রকাশ করতেছি কিন্তু কিছুদিন আগে যে শিক্ষক ছাত্রলীগ ছেলেদের হাতে মার খেলো, অপমানিত হলো তাকে নিয়ে আমরা একবারো কিছু বলেছি? আন্দোলন করেছি? কিন্তু একজন নাস্তিক কে আমাদের দলের বলে মেনে নিয়ে তার জন্য শোক প্রকাশ করছি। একজন কে খুন করার পক্ষে আমিও নই। কিন্তু একজন নাস্তিক এর পক্ষেও আমি নই। আমি অসুস্থ মস্তিস্কের মানুষ না। তাই অসুস্থ মস্তিস্কের মানুষের কোনো কিছুতেই সাপোর্ট দিব না। আমরা মনে হয় একটা কথা সবাই জানি “মানুষ যখন অনেক জানে তখন সে ধার্মিক হয়, আর যত কম জানে সে তখন নাস্তিক হয়”। নাস্তিক রা কখনই অনেক জানে বলবো না।



আমার এই লেখার কারন এই না যে নাস্তিক বা আস্তিকতা শিখাবো। আমার এই লেখার মূল কারন একটাই, সবার কাছে অনুরোধ কোনো অন্ধ মহল কিংবা রাজনৈতিক মহলের তালে পড়ে আন্দোলনের মূল মন্ত্র থেকে সরে যাবেন না। আমাদের আন্দোলন রাজাকারের ফাঁসির দাবিতে। আজ ১২ দিন হলো কোনো সাড়া পেলাম না কোথাও থেকে। শুধু প্রতিদিন ই আমরা দেখি একেক জায়গায় মারা মারি, পুলিশ জামাত মুখোমুখি, এ খুন, সে খুন। কিন্তু আমাদের আন্দোলনের কোনো সাড়া কেও দিচ্ছে না। আর কতদিন লাগবে? কেও কি বলতে পারে? আমাদের রাজনৈতিক নেতারা আমাদের নিয়ে সংসদ, মিটিং সব জায়গায় মনে হয় গল্প করছে। আর বিরোধী দলের বদনাম করছে। কিন্তু কেও সমাধান করছে না। আমাদের আন্দোলন অনেকের জন্য পোস্টার এর পাশের ছবির জায়গা পেয়ে গেছে। কেও কেও শাহবাগ এসে ছবি তুলে সেটা পোস্টার বানিয়ে রাস্তায় রাস্তায় লাগিয়ে লোকজন কে বুঝাতে চাচ্ছে অনেক বড় দেশ প্রেমিক সে। কিন্তু এইভাবে কি দেশ প্রেম বুঝায়? আমি তাইলে দেশ প্রেমের সংজ্ঞা ভুল জানি বা এখন নতুন ভাবে সংজ্ঞা বানানো হয়েছে।

কেও আমাদের আন্দোলন কে নিয়ে মজা করবেন না। আর কেও আমাদের আন্দোলনের মূল দাবি থেকে সরে যাবেন না। ইসলাম কিংবা কারো খুনের জন্য আন্দোলন না এইটা। এইটা সব রাজাকারের ফাঁসির জন্য আন্দোলন। সব দলের মাঝে লুকিয়ে থাকা রাজাকার আলবদর দের ফাঁসির দাবিতেই আমাদের আন্দোলন। আর অদের কবর ও এই দেশে দেয়া যাবে না। আর জামাতের মূল পাকিস্তানে। তাই ওদের ওই দেশেই পাঠিয়ে দেয়া হোক। আর একটা অনুরোধ সবার কাছে। কেও ছবি তোলার জন্য কিংবা ভাব মারার জন্য শাহবাগ আসবেন না। অথবা নিজের বা দলের স্বার্থের জন্য আসবেন না। দেশ এর জন্য আসুন, দেশ কে কলঙ্ক মুক্ত করতে আমাদের আন্দোলন। আমাদের আন্দোলন ধর্ম বিরোধী না, কিংবা এক কথায় ইসলাম বিরোধী না।



সব রাজাকারের ফাঁসি চাই, এই দেশে ওদের ঠাই নাই।

২ টি +০/-০