কি হবে ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ, ২০১৩?

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:২৬

কি হবে আগামীকাল? সহজ হিসাব হরতাল.



হ্যাঁ, আগামীকাল হরতাল। এই রকম হরতাল ফেব্রুয়ারি মাস জুড়েই চলছে। তবে কাল আবারো এক ফাঁসির আসামীর মুক্তির দাবীতে হরতাল। তাও এমন একজন আসামী যে ছিল রাজাকার। যারা এই রকম হরতাল এর আহবান জানালো তাদের কি একটুও বুদ্ধি নাই? দেশ প্রেম নাই? তারা কিসের ইসলাম নিয়ে বরাই করে? ইসলাম মানেই তো জানেনা। সে ইতিহাস জানেনা আমাদের নবীজির, দেশ প্রেম কি সেটা জানার জন্য আমাদের নবীজির দেশ প্রেমের আদর্শ দেখলেই তো পারে। এই রকম লোক রা ধর্ম কে ব্যাবহার করে নিজেদের পাপ কিংবা খারাপ কে ঢেকে রাখার জন্য। যে দেশের সম্পদ ব্যাবহার করছে, যে দেশের মাটিতে বাস করছে, যে দেশের খাবার খাচ্ছে আর যে দেশে জন্মাচ্ছে সেই দেশের সাথে বেইমানি? এই রকম লোক গুলা তো নব্য রাজাকার। ওদের ও দেশ থেকে বিতাড়িত করা হোক। শাহবাগ এ এইটাও একটা আন্দোলন হোক।



ও ভালো কথা, শাহবাগ এর কথা যখন আসলো তখন একটু সেটা নিয়েও লিখি। কাল হরতালের মাঝেও শাহবাগ থাকবে শ্লোগান এ ভরা। শ্লোগান চলবে জামাত ইস্লামি/শিবির এর বিরুদ্ধে, শ্লোগান চলবে রাজাকারের ফাঁসির দাবীতে। হাতে হাত মিলিয়ে, গলায় গলা মিলিয়ে চলবে এই আন্দোলন। থাকবে শিশু থেকে বৃদ্ধ সবাই। থাকবে আস্তিক ও নাস্তিক।



ওহ, আবারো একটা প্রসঙ্গ চলে আসলো "নাস্তিক"। শাহবাগের আন্দোলনএ নাস্তিক রা কখন থেকে ছিল সেটা কারো জানা নাই। কিন্তু নাস্তিক এর বেপারটা আসলো রাজীব এর মৃত্যুর পর। রাজীব কে সবাই নাস্তিক বলছে। কিন্তু আমি সত্যি করে বলছি উনি নাস্তিক না। উনার সম্পর্কে না জেনে এই কথা কেও বলবেন না প্লিজ। আগে উনার সম্পর্কে জানুন, তার লেখা পড়ুন। তারপর তাকে কিছু বলুন। লোক মুখে শুনে নাস্তিক বলে চেচাবেন না।



আতপর যা ঘটলোঃ

সাধারণ জনতা :

আমিঃ কি ক্ষেপে গেলেন? নাহ খেপবেন না প্লিজ। উনি সত্যি নাস্তিক না। তবে উনি ইসলাম বিরোধী। নাস্তিক তো সব ধর্ম বিরোধী কথা লিখে বা বলে। উনি কিন্তু সেটা করেনি। উনি শুধু ইসলাম এর বিপরীতে লিখেছে। তার কোনো কথা যদিও আমার শুক্ষ ব্রেইন এ কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। কারন উনার যে লেখা গুলো পড়েছিলাম তার বেশির ভাগ ই মুক্তমনা বা যাকে বলবো পাগলামি লেখা ছিল। মুক্ত মনা মানে হলো মুক্ত মনের মানুষ। আফসোস আমাদের দেশের সব মুক্তমনা গুলো যদি মুক্ত হৃদয়ের মানুষ হতো তবে দেশ অনেক শান্তিতে থাকতো। রাজীব কের মৃত্যুতে আমি শোকাহত হইনি বলে আমায় একজন বল্লো "একজন মানুষের মৃত্যুতে আপনার কষ্ট লাগে না?", হ্যাঁ লাগে, যখন একজন শিবির মরে, কষ্ট লাগে, বিশ্বজিৎ মরে কষ্ট লাগে, সাগর রুনি মরে কষ্ট লাগে। তারাও মানুষ। কিন্তু তাদের বেলায় আপনাদের কেনো? কষ্ট লাগে না? বিশেষ করে শিবির (না জেনেই বলে ফেলি) মরলে আপনারা তো ফালান। বলে উঠেন "খুব ভালো হইছে মরছে"। আপনারা দেশ প্রেমের দোহাই দিয়ে এইটা মত প্রকাশ করেন, আর ঠিক অই রকম ভাবে আমি ইসলামের দোহাই দিয়ে রাজিবের সময় বলছি। আমার কাছে ধর্ম আগে, তারপর দেশ। আমার দেশ যদি কাফেরের দেশ হয়ে যায় তবে এই দেশ থেকে অন্য কোথাও চলে যাবো অথবা আফসোস করে বেঁচে থাকবো, তবে ধর্ম কে আগে রাখবো অবশ্যই। এইটাকে কি আপনি দেশপ্রেম বলবেন না? যাই বলেন না কেনো, আমার আফসোশ কিন্তু দেশ প্রেমের কারনেই থাকবে। কিভাবে সেটা ব্যাখ্যার সময় না এখন, বা বিষয় ও না।



এইবার আসুন আমরা কাল অর্থাৎ ২৮ তারিখ নিয়ে কিছু কথোপকথন করি। কাল আসলে কি হতে যাচ্ছে? ফাঁসি নাকি আবারো বিভ্রান্তিকর একটা রায়? রায় যেটাই হোক না কেনো কাল ও অনেক গুলো লাশ পড়বে, আগুন জ্বলবে গাড়িতে কিংবা কারো শরীরে। খবর পত্রিকা লেখা লেখি নিয়ে বেস্ত হয়ে পড়বে। অনেক ব্লগার বসে পড়বে ল্যাপটপ কিংবা ডেস্কটপ নিয়ে। লেখার খিরিক পড়ে যাবে কাল। মন্ত্রী মিনিস্টার এর মুখ খুলে যাবে। যে যা খুশি বলবে নিজেকে প্রকাশ করার জন্য। কেও হেসে বলবে, কেও রাগ নিয়ে। কেও ভি দেখাবে আর কেও মুখ লুকাবে। তবে যাই হোক না কেনো, আরেকবার দেশে একটা শ্রেণী মানুষের গালি হবে, মানুষের অভিসাপ হবে। অথচ আমরা কিন্তু জাচাই বাছাই না করেই সেটা করি।। যাই হোক না কেনো, আমাদের দাবি অবশ্যই ফাঁসি। তবে যদি কালও সেটা না হয় তবে আপনারা ১০০% শিউর হবেন এইটা রাজনৈতিক হয়ে গেছে। যদি ফাঁসি হয় আর মন্ত্রীরা (সরকারি) মঞ্চে এসে হেসে হেসে বলে "আমরা দেখিয়ে দিয়েছি আমরা পারি", কিংবা বলে "আমাদের সময়ই রাজাকারের ফাঁসি হয়েছে, আমরা প্রমান করেছি আমরা দেশ কে কলংক মুক্ত করতে পারি" তবে ভেবে নিবেন সেটাও তাদের চাল। মানুষের মন জয় করার চাল। কিন্তু যদি বিবেক থাকে তবে অবশ্যই প্রশ্ন জাগবে "কাদের মোল্লার সময় কেনো পারলেন না? তখন কি শিবিরের কিংবা বিরোধী দলের হাতে ছিল কোর্ট? নাকি শাহবাগের আন্দোলনের পর আপনাদের হাতে চলে আসছে কোর্ট? যদি তাই হয় তবে এখন কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় দেন না কেনো?"।



এই প্রশ্ন গুলো আমার মনে জাগে যখন আমি কোনো সরকারি মন্ত্রী কে দেখি দেশ প্রেমের বড়াই করতে মিছেমিছি, যখন দেখি তারা শাহবাগের মানুষ গুলো কে পুতুল বানিয়ে নাচাচ্ছে আর নিজেদের প্রকাশ করার চেষ্টা করতেছে। যখন মঞ্চে দাড়িয়ে বড় বড় গলায় রাজাকারের ফাঁসির দাবি করে তখন। কাল আমরা চোখ বন্ধ করে রাখবো, কান বন্ধ করে রাখবো। শুধু রায় এর জন্য অপেক্ষা করবো। একটাই দাবি ফাঁসি। যদি বেতিক্রম হয় তবে শাহবাগ আন্দোলনকারীদের কাছে অনুরোধ পুতুল সেজে থাকবেন না, কারো পুতুল হয়ে নাচবেন না। আন্দোলন টা যদি চালিয়ে যান তবে জামাত শিবির এর সাথে আওয়ামীলীগ কেও নিয়ে আসেন, আর প্রশ্ন করেন কেন এই অবিচার? কিসের দেশপ্রেম তাদের যাতে বার বার আমরা এক রকম রায় পাই? যদি তারা রাজাকার না হয় তবে এতো তাল বাহানা কিসের?



তবে একটা বেপার মাথায় রাখবেন "উপরে থুথু ফেললে সেটা নিজের গায়ে পড়বেই", সেটা কাল হোক কিংবা পরশু। সরকার থু উপরে ফেললে তার গায়ে সেই থু পড়বেই।



একটাই দাবি, রাজাকারের ফাঁসি। অপেক্ষা তাই ২৮ ফেব্রুয়ারি।

০ টি +১/-০