![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
“একদিন আমার সমস্ত ডানা মেলে পেয়েছিলুম আমার উড়ার আকাশ; আজ আমি পেয়েছি আমার ছোট্ট বাসা, ডানা গুটিয়ে বসেছি । কিন্তু আমার আকাশও রইল ।“ _ রবি ঠাকুর
প্রকৃতপক্ষে আমি কোন দুঃখ-বিলাসী ডিঙিনৌকো প্রতিকূল স্রোতের উত্তাল সমুদ্রে ভাসাতে আগ্রহী নই । অতীতে ফিরে যাওয়াটাও আমার বিশেষ উদ্দেশ্য নয় । একটু এলোমেলো ঘুরে আসা আরকি !
খুব করে ইচ্ছে হচ্ছে সব ছেড়ে দিয়ে একটা লম্বা দৌড় দিতে । যাকে বলে ‘ব্যাক টু দ্যা পাষ্ট’ । একেবারে কৈশোরের তাজা ঝরঝরে দিনগুলোতে । শুধু ঘুম, খাওয়া আর ঘুরাফেরা । সারাদিন ঘুরঘুর করে ঘুরে বেড়াব সেই ডাকবাংলো থেকে শহিদ মিনার, শহিদ মিনার থেকে কলেজ, আবার কলেজ থেকে আলমগিরের দোকান হয়ে ধনু ভাইয়ের চা-স্টলে বসে টানা চার-পাঁচ কাপ গরম পানি, সাথে কয়েকটা গরম হাওয়া । আহা......!!
দুপুরের খাবার সময় পার হয়ে গেলে, আম্মা ফোন করে ধমক দিয়ে বলবে, “কই গিয়া বইয়া রইলি ? খাওন দাওন লাগব না ?” তখন সেই আগের মত লাজুক হাসি দিয়ে বলব, ‘লাগব ত’ ।
৪ টা ২০ বেজে গেলেও তেমন কোন তাড়া থাকবে না, কলেজ মোড়ে দারিয়ে থেকে হতাশ হয়ে ফিরে আসার । কলেজের গার্ড সাবু ভাইর সাথে হঠাৎ দেখা হলে হয়ত অবাক হয়ে জিগ্যেস করবে, কি নায়ক, ইদানীং খুব একটা দেখা যায় না যে?
সুভল দা’র দোকানে বসি না কত দিন । পার্থ, জনি, খোকন, মোশারফ, দেলোয়ার সহ প্রায়ই শুভল দা’র দোকানে দাড়িয়ে-বসে আড্ডা দিতাম । সকালে বের হয়েই মিলিত হতাম ওইখানে । সুভল দা’র দুকানটা আগেই ঐ যায়গাটাতে আর নেই এখন । বদলে ফেলেছেন । হয়ত সুভল দা নিজেও বদলে গেছেন অনেকটা । আগের সেই ফিলিংসটা পাই না আর ।
সিনেমা হলটা বহু আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে । নতুন সিনেমা আসলে টিফিন পিরিয়ড এর পর ক্লাস ফাকি দিয়ে সব একসাথে সিনেমা হলে ডুকতাম । আর পরের দিন রহিম স্যারের হাতে গণ-মার খাওয়া । ইসস...!
কলেজের ধার ঘেঁষে নুরপুরএর দিখে যে রাস্তাটা গেছে, ওইটা ধরে হেঁটে যেতাম সমস্ত বিকেল । যখনই বোঝতে পারতাম সন্ধ্যা হতে বেশি বাকি নেই, ফিরে আসতাম । না না, বাড়িতে নয় । ডাকবাংলোর পিছনের রেলিঙয়ের ধারে বারান্দায় উঁচু করে যে বেধি করা ছিল, ওইখানটায় বসতাম আমরা । খবর নিয়ে জানা গেল, আজকাল ঐ দিকটায় থাকালেও নাকি দুর্নাম হয় । ভাল খবর !!
হাতে হাতে ফোন না থাকায় একটা নির্দিষ্ট সময়ে এক জায়গায় মিলিত হতাম আমরা । কোন এক আলসে দুপুরে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যখন বিকেল পেড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে আসত, দেলোয়ার আর মোশারফ এসে গালাগাল দিয়ে টেনে ঘুম থেকে উঠাতো । সাথে কিছু জরিমানাও । এর পর কুলিকুন্দা যাওয়ার রাস্তার পাঁশে যে একটা বড় পুকুর আছে, ঐটার পাড়ে বসে সন্ধ্যা অবধি আড্ডা দিতাম । অনেকদিন সেই চর্চাটা হয় না ।
বিকেলে ডাকবাংলোর সিঁড়িতে বসে আনমনে হাই স্কুলের গেটে থাকিয়ে থাকার দিন গুলিও রইল না । কারো আপা বা দুলাভাই এসে বলবে না আর, ‘ডাকবাংলোয় কি বাড়ি ঘর করে ফেলেছ নাকি?’ হাহ হাহ...!!
শীতের বিকেলে সাড়ি সাড়ি হলদে রঙে রাঙা সরিষা ক্ষেতের ঘা ঘেঁষে বসে থেকে সমস্ত বিকেলটা পাড় করে দেওয়ার মাঝে যে কি এক অদ্ভুত আনন্দ কাজ করত ! হঠাৎ দুরের কোন সদ্য ফসল উঠানো জমিতে আগুন দেওয়া হচ্ছে দেখলে দৌড়ে যেতাম আমরা । আর সেকি উচ্ছ্বাস । আগুন টপকে এই পাড় থেকে ঐ পাড় যাওয়া ।
শুনেছি অতীত নাকি সবসময়ই রঙিন মনে হয় । হয়তবা তাই । আবার হয়ত সত্যিই বদলে গেছি সবাই সময়ের প্রয়োজনে বা নিজেদেরই প্রয়োজনে ।
এত তাড়াতাড়ি আমাদের এত বদলে যাওয়া । মাত্র এতটুকু সময়ের ব্যাবধানে ।
আরওতো অনেক দিন বেঁচে থাকার সাধ । হয়ত আরও রয়েছে বাকি, আরও বদলে যাওয়ার, আরও অবাক হবার !!
২| ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৩২
ইমরান-উল-ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ বশর সিদ্দিকী । আশা করছি ভবিষ্যতে আরও কথা হবে । সাথেই থাকবেন ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭
বশর সিদ্দিকী বলেছেন: সময়ের সাথে সাথে আসলে অনেক কিছু্ই হারিয়ে যায়। আপনার লেখাটা পরে অনেক পুরো নি কিছু স্বৃতি মনে পরে গেল।