নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় শিক্ষক হলেও নেশায় লেখক ও পর্যটক। \'\'ভালো আদর মন্দ আদর\'\'(২০১৩) তাঁর প্রকাশিত প্রথম বই

এইযেদুনিয়া

আমার চোখে তো সকলই শোভন/সকলই নবীন,সকলই বিমল/ সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন/বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল/সকলই আমার মত

এইযেদুনিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুখ খারাপ

০৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৪৫

--‘’তুই দেইখ্যা চালাইলি না ক্যান? অশ্রাব্য গালি

---অশ্রাব্য গালি , আমার রিকশাডা আইতাসে তুই চক্ষে দেহস না?

রিকশা চালানো বাদ দিয়ে দুই রিকশাচালকের বাগবিতণ্ডার মাঝে পড়ে যাত্রীর সময় চলে যায় অনেকখানি। বাব্বাহ, ঝগড়া তো নয়, যেন পারমাণবিক গালির ঝনঝনানি। শুনলে মনে হয়, এর চেয়ে বধির হলেও ভাল ছিল। রিকশার যাত্রী তাড়া দেন, ‘’আহ, কী শুরু করলে তোমরা? বাদ দাও তো। এদিকে দেরি হয়ে যাচ্ছে আমার।‘’



পথে বের হলে বিকশাওয়ালা,পুলিশ, হকার, ভিক্ষুক,টোকাই নানা ধরনের মানুষের মুখের গালি আপনার কান পর্যন্ত পৌঁছাবেই। বাড়ির পেছনে বস্তি বা রিকশার গ্যারেজ থাকলে তো কথাই নেই। দিনের মধ্যে কয়বার যে মহাবিপদ সংকেত নিয়ে গালির সাইক্লোন বয়ে যাবে তার হিসাব নেই। শিক্ষাবঞ্চিত, অবহেলিত, নিম্নবিত্তের অপরিচ্ছন্ন, পুষ্টিহীন, মলিন কাপড়ের এসব মানুষের মুখের বুলিই হলো অশ্লীল,অশ্রাব্য, অশিষ্ঠ সব গালি।প্রচণ্ড যৌন অবদমন ও বিকৃতির প্রকাশ এসব গালি। নারী-পুরুষের শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে নোংরা সব ইংগিত উঠে আসে এসব গালিতে। প্রায় সব গালিতেই নিরপরাধ মা-বোনেদের অশ্লীলভাবে আক্রমণ করার সুপ্ত ইচ্ছা প্রকাশিত হয়ে থাকে। জানি না, নির্দোষ মা-বোনদের প্রতি এমন অসম্মানজনক শব্দ ব্যবহার করে তারা কী আনন্দ পান। স্বান্তনা একটাই, এগুলো শুধুই কথার কথা। বাস্তবে এসবের প্রয়োগ হলে না জানি কেমন ম্যাসাকার কাণ্ড হত।





শুধু নিম্নবিত্তের এই মানুষগুলোই নয়, শহুরে শিক্ষিত, মার্জিত, পরিপাটি, দেখতে শুনতে স্মার্ট ভদ্রলোকটির মুখেও ঐ একই গালি শুনে আপনি হঠাৎ বিব্রতবোধ করতে পারেন। উচ্চবিত্তের ইংরেজি মাধ্যমে পড়া হাল ফ্যাশনের স্টাইলিশ তরুণ-তরুণীরাও কম কিসে? নিজেদের আনন্দ, বেদনা, বিরক্তি, প্রেম ইত্যাদি নানা অনুভূতি তারা প্রকাশ করে থাকে ঐ একই গালি ব্যবহার করে, তবে নিখুঁত ইংরেজিতে। গালিগালাজের ক্ষেত্রেও তারা তাদের ঠাঁটবাট ও আভিজাত্য এতটুকুও নষ্ট হতে দেয় নি। ‘’ছিকখিৎ’’,’’দশ কেলাশের উপরে’’ পড়া এসব এসব তরুণ-তরুণীদের ‘’ইংলিশে গাইল পাড়া’’ দেখেই হয়ত মাইনক্যা চিপায় ফেঁসে যাওয়া কবি আক্ষেপ করে বলেছেন, ‘’মনে মনে কই আমি, গাইলের আর হুনছস কী? আমগো গাইল হুনলে পরে খাড়াইবো মুর্দা পীর।‘’



মৃত পীরকে জীবিত করে দেবার জন্যই হয়ত সাধারণ মানুষের নিত্যদিনের আটপৌরে জীবনের অশ্লীল গালি ব্যবহার করে এক শ্রেণীর ফেসবুক ব্যবহারকারী ও ব্লগার নিয়মিত তাদের স্ট্যাটাস আপডেট, পোস্ট ও কমেন্ট করে থাকেন। তাদের পোস্টের বিষয় হয়ত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ও আলোচনার দাবি রাখে। যৌক্তিক আলোচনা নয়, মুক্ত বুদ্ধির চর্চা নয়, চর্চা হয় গালির। কিন্তু শুধুমাত্র গালির বাহুল্যে পোস্টগুলোর গ্রহণযোগ্যতা, গুরুত্ব,পাঠকের আগ্রহ নষ্ট হয়ে যায়। গালাগালির তোড়ে ভাসতে ভাসতে হারিয়ে যায় পোস্টের মূল বক্তব্য। গালাগালি করেই বিশাল একটা কিছু করে ফেলার তৃপ্তি হয়ত অনুভব করেন তারা। যদিও এতে করে অশ্লীলতা ও বিদ্বেষ ছড়ানো ছাড়া তেমন বিশেষ কিছুই আর হয় না। বাক স্বাধীনতার অপব্যবহারের জলজ্যান্ত উদাহরণ এসব পোস্ট। বড়দের এভাবে বুক ফুলিয়ে প্রকাশ্যে অশ্লীল পোস্ট দিতে দেখছে ছোটরা। তাতে তারা কী শিখছে ভেবে দেখার বিষয়।





স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য কলহ থেকে শুরু করে রাস্তার মানসিক ভারসাম্যহীন ভিক্ষুকটি পর্যন্ত সবাই হালকা থেকে মাঝারি, মাঝারি থেকে ঝড়ো পর্যায়ের মুখ খারাপ করে। আমাদের মহান সংসদের মাননীয় সাংসদগণই বা তাদের পবিত্র মুখ নিঃসৃত অমীয় গালি শোনা থেকে আমাদের বঞ্চিত করবেন কেন? নিকট অতীতে সংসদকে গালির চর্চাকেন্দ্রে পরিনত করে সাধারণ জনগনকে মুখ খারাপ করার জন্য মাননীয় সাংসদেরা অনেকবারই উৎসাহ যুগিয়েছেন।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:০৩

ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: হুমম...

০৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:১১

এইযেদুনিয়া বলেছেন: হুমম...

২| ০৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:

কিছু গালি অতি ব্যবহারে গালি হিসেবে আর বিবেচিত হয় না এখন :)
নৈমত্তিক কথাবার্তায় ঢুকে গেছে।

০৬ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৪

এইযেদুনিয়া বলেছেন: হে হে

৩| ০৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:

কিছু গালি অতি ব্যবহারে গালি হিসেবে আর বিবেচিত হয় না এখন :)
নৈমত্তিক কথাবার্তায় ঢুকে গেছে।

৪| ০৬ ই জুন, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৯

ঘাসফুল বলেছেন: আমাদের পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বাড়াতে হবে...

০৬ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫

এইযেদুনিয়া বলেছেন: ধৈর্যটাও।

৫| ০৬ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৫২

আদম_ বলেছেন: বাহ খুব সুন্দর করে লিখেছেনতো। দরকারী কথা। তবে গালিটা যে এ যুগের সৃষ্টি তা নয় । যুগ-যুগান্তর ধরেই চলে আসছে। আমি বলছিনা যে গালাগালিট করাটা ভালো।

০৬ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৮

এইযেদুনিয়া বলেছেন: ভালো আর মন্দ, দুজনের বয়স সমান। কিন্তু কোনটা গ্রহনযোগ্য?
আপনার সাথে একমত।

৬| ০৬ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: সুশীল গালিগুলোর ব্যবহার বাড়াতে হবে। যেমন, হতচ্ছাড়া, হতভাগা, মড়াখেকো, অসভ্য, ইবলিশ, ইতর ইত্যাদি।

০৬ ই জুন, ২০১৩ রাত ৮:৩১

এইযেদুনিয়া বলেছেন: হাহাহা, দেখলেন তো গালি দিলেই গালি বাড়ে।

৭| ০৮ ই জুন, ২০১৩ রাত ১২:২৮

বহুব্রীহি বলেছেন: গালি দিছি তো কি হইছে, আবার দিমু, মনের খেদ মিটানোর সহজ উপায়। চাইপা রাইখা নিজে সিদ্ধ হয়ার থেইকা মুখ খারাপ করা ভালো। এত সুশিল গিরি কইরা পীর দরবেশ হয়ার ইচ্ছা নাই। যারা ভদ্র পল্লীতে থাইকা বেনসন খায় আর গরীব কেন গরীব এই নিয়া কবিতা লেহে তাদের মা বাপ তুইলা গালি দেওটা কি খুব খারাপ কাজ?

০৮ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৩:৫০

এইযেদুনিয়া বলেছেন: হেহেহে, ''যারা ভদ্র পল্লীতে থাইকা বেনসন খায় আর গরীব কেন গরীব এই নিয়া কবিতা লেহে'' আর যারা তাদের মা বাপ তুলে গালি দেয়, তাদের মধ্যে পার্থক্য কী? সব কয়টাই অকম্যার ঢেঁকি। ইয়ে আমি কি গালি দিয়ে ফেললাম? B:-)

৮| ০৯ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৯

প‌্যাপিলন বলেছেন: আমার নানার সবচে কুতসতি গালি ছিল পুলাপান ' আজাদ' হইয়া গেছে। মানে স্বাধীন, ছন্নছাড়া......তার ভাষায় এই কুতসিত গালি শুনলে এযুগের পুলাপান হাসপিন না কানপিন

০৯ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৭

এইযেদুনিয়া বলেছেন: B:-)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.