নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার চোখে তো সকলই শোভন/সকলই নবীন,সকলই বিমল/ সুনীল আকাশ,শ্যামল কানন/বিশদ জোছনা,কুসুম কোমল/সকলই আমার মত
সাপ্তাহিক বিচিত্রা বের হত হতো শুক্রবারে।আব্বা নিয়ে আসতেন আগের দিনেই।বাসায় পত্রিকাটা আসা মাত্র তা দখল করার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেত। সবার ছোট বলে সবার হাত ঘুরে টুরে আমার হাতে পেতাম ।পত্রিকাতে শুরুতে পড়তাম শুধু র’নবীর টোকাই, বানান করে করে। এরপর আস্তে আস্তে ‘প্রবাস থেকে’, ব্যক্তিগত বিজ্ঞাপণ,এখানে সেখানে, কুরুক্ষেত্র পড়া শুরু করেছি। প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন টপিক নিয়ে কভার স্টোরি হত। তারপর এক সময় বন্ধ হয়ে গেল প্রিয় পত্রিকাটি। ঐ সময়টাতে আমি ঠিকমত খেতে পারতাম না। কারণ, আমার অভ্যাস ছিল খাবার সময় বিচিত্রা পড়া। অভ্যাসটা ভাল নয় যদিও।
বিচিত্রাবিহীন খুব বাজে একটা সময় যাচ্ছিল তখন। আমার এস এস সি পরীক্ষা শেষ হয়েছে কি হয় নি, এমন একটি দিনে, ১৫ মে, ১৯৯৮...সাপ্তাহিক ২০০০ নামে নতুন একটি পত্রিকা নিয়ে আব্বা হাজির।মনটা খুশিতে নেচে উঠল। পুরোনো সেই মানুষগুলোর হাত ধরেই আবার এলো পত্রিকাটি, নতুন রূপে। পত্রিকাটির নাম কেন এমন? নতুন একটি শতাব্দীর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আমরা তখন অপেক্ষা করছিলাম। এই পত্রিকা ছিল নতুন শতাব্দীকে রিপ্রেসেন্ট করার পত্রিকা। প্রতি সপ্তাহে পত্রিকার নামের সাথে লেখা থাকতো...আর মাত্র এত দিন! নতুন একটি শতাব্দীর মুখোমুখি করিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করার কথাই যেন বলত, ২০০০। তারুণ্যের ঝলমলে উপস্থাপন প্রতি সপ্তাহে পাঠককে ঝরঝরে করে দিত। সম্পাদক শাহাদত চৌধুরীর নিত্য নতুন আইডিয়াতে লেখা পড়ে পড়ে আমার খুব ইচ্ছে হত তাঁর সাথে একটিবার যদি দেখা করতে পারতাম!কিন্তু হয় নি, যদিও তখন পত্রিকা অফিস থেকে আমার বাসা খুব বেশি দূরে ছিল না। তারপরেও একটা অদৃশ্য যোগাযোগ ঠিক ছিল...আমার খুব ইচ্ছে হত যুগের থেকে এগিয়ে থাকার, ভাবনায়, চিন্তায়, ফ্যাশনে...ইচ্ছে হত নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করার...
আর কি অদ্ভুত যোগাযোগ! এই ফেবুতেই এক সময় পরিচয় হয়ে গেল পত্রিকাটির সম্পাদক মঈনুল আহসান সাবের’র (আমি অবশ্য অনেক আগে থেকেই তাঁর বিমুগ্ধ পাঠক, সেও ঐ বিচিত্রা আর ২০০০ এর মাধ্যমেই) সাথে। তারপর বেশ অদ্ভুত আর নাটকীয়ভাবে আমার লেখা ও আইডিয়া সহ আমিও যুক্ত হয়ে গেলাম ২০০০ এর সাথে! ভাবা যায়! আমার লেখালেখির আঁতুরঘর এই ২০০০, এখানে লিখতে লিখতেই আমি শিখেছি কিভাবে লিখতে হয়, ভাবতে হয়, নতুন আইডিয়া বের করে আনতে হয়, চারপাশটাকে দেখতে হয়...লিখতে গিয়ে আমি আসলে শিখেছি অনেক বেশি। একদম শেষ দিকে পেয়েছিলাম মারুফ রায়হান ভাইয়ের তৈরি করা গ্রুপ। প্রতি শনিবারের মিটিং-এ পালটা পালটি যুক্তি-তর্ক দিয়ে ২০০০ এর কনফারেন্স রুম গরম করে ফেলতাম, বেশির ভাগ সময় আমার প্রতিপক্ষে থাকতেন মারুফ ভাই। যদিও নিজের ব্যক্তিগত সমস্যা, ল্যাপটপিকগত সমস্যা, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেকটা সময় আমি বন্ধ্যা ছিলাম। খুব মিস করবো, এই আড্ডা, আর লেখালেখির উদ্দাম স্বপ্নের দিনগুলিকে, দারুন কিছু মানুষকে, সাপ্তাহিক ২০০০কে...
''আকাশে তো আমি রাখি নাই মোর. উড়িবার ইতিহাস। তবু , উড়েছিনু এই মোর উল্লাস ।।''
০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৪
এইযেদুনিয়া বলেছেন: রিডার্স ডাইজেস্ট-এ প্রচুর পাঠকের লেখা ছাপা হয়। এটাও পত্রিকা জনপ্রিয় হবার একটি কারণ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:০৫
তিক্তভাষী বলেছেন: আমিও বিচিত্রার ভক্ত ছিলাম। অনেক দেশেই পত্রিকা অনেকদিন টিকে থাকে। যেমন রিডার্স ডাইজেস্ট ১৯২২ থেকে রয়েছে। আমাদের দেশেই কেনো জানি কোনো কিছুই স্থায়ী নয়। এমনকি ইতিহাসও!