নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একা বৃষ্টিতে ভিজি

মেঘ ঝড়ে ঝড়ে বৃষ্টি নামে, বৃষ্টির নাম জল হয়ে যায়..

একা বৃষ্টিতে ভিজি

মেঘ ঝড়ে ঝড়ে বৃষ্টি নামে, বৃষ্টির নাম জল হয়ে যায় জল উড়ে উড়ে আকাশের গায়ে ভালবাসা নিয়ে বৃষ্টি সাজায। ইচ্ছে গুলো ভবঘুরে হয়ে, চেনা অচেনা হিসেব মেলায় ভালবাসা তাই ভিজে একাকার, ভেজা মন থাকে রোদের আশায়. ইচ্ছে হলে ভালবাসিস, না হয় থাকিস যেমন থাকে স্নিগ্ধ গাংচিল।

একা বৃষ্টিতে ভিজি › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বাধীনতা দিবস এবং কিছু বিখ্যাত কবিতা

২৫ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:০৬



পড়ে দেখতে পারেন অসাধারণ কিছু কবিতা। যতটুকু সম্ভব প্রিয় কবিতাগুলোকে একত্রিত করেছি। :)







একটি পতাকা পেলে

– হেলাল হাফিজ



কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

আমি আর লিখবো না বেদনার অঙ্কুরিত কষ্টের কবিতা

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

ভজন গায়িকা সেই সন্ন্যাসিনী সবিতা মিস্ট্রেস

ব্যর্থ চল্লিশে বসে বলবেন,–’পেয়েছি, পেয়েছি’।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

পাতা কুড়োনির মেয়ে শীতের সকালে

ওম নেবে জাতীয় সংগীত শুনে পাতার মর্মরে।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

ভূমিহীন মনুমিয়া গাইবে তৃপ্তির গান জ্যৈষ্ঠে-বোশেখে,

বাঁচবে যুদ্ধের শিশু সসন্মানে সাদা দুতে-ভাতে।

কথা ছিলো একটি পতাকা পেলে

আমাদের সব দুঃখ জমা দেবো যৌথ-খামারে,

সম্মিলিত বৈজ্ঞানিক চাষাবাদে সমান সুখের ভাগ

সকলেই নিয়ে যাবো নিজের সংসারে।







সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড

অ্যালেন গিন্সবার্গ কবিতার বাংলা অনুবাদ।



শত শত চোখ আকাশটা দেখে, শত শত শত মানুষের দল,

যশোর রোডের দুধারে বসত বাঁশের ছাউনি কাদামাটি জল।

কাদামাটি মাখা মানুষের দল, গাদাগাদি করে আকাশটা দেখে,

আকাশে বসত মরা ইশ্বর, নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে।

ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে, যুদ্ধে ছিন্ন ঘর বাড়ী দেশ,

মাথার ভিতরে বোমারু বিমান, এই কালোরাত কবে হবে শেষ।

শত শত মুখ হায় একাত্তর যশোর রোড যে কত কথা বলে,

এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে।



সময় চলেছে রাজপথ ধরে যশোর রোডেতে মানুষ মিছিল,

সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, গরুগাড়ী কাদা রাস্তা পিছিল

লক্ষ মানুষ ভাত চেয়ে মরে, লক্ষ মানুষ শোকে ভেসে যায়,

ঘরহীন ভাসে শত শত লোক লক্ষ জননী পাগলের প্রায়।

রিফিউজি ঘরে খিদে পাওয়া শিশু, পেটগুলো সব ফুলে ফেঁপে ওঠে

এইটুকু শিশু এতবড় চোখ দিশেহারা মা কারকাছে ছোটে।

সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, এত এত শুধু মানুষের মুখ,

যুদ্ধ মৃত্যু তবুও স্বপ্ন ফসলের মাঠ ফেলে আসা সুখ।



কারকাছে বলি ভাতরূটি কথা, কাকে বলি করো, করো করো ত্রান,

কাকে বলি, ওগো মৃত্যু থামাও, মরে যাওয়া বুকে এনে দাও প্রান।

কাঁদো কাঁদো তুমি মানুষের দল তোমার শরীর ক্ষত দিয়ে ঢাকা,

জননীর কোলে আধপেটা শিশু একেমন বাঁচা, বেঁচে মরে থাকা।

ছোটো ছোটো তুমি মানুষের দল, তোমার ঘরেও মৃত্যুর ছায়া,

গুলিতে ছিন্ন দেহ মন মাটি, ঘর ছেড়েছোতো মাটি মিছে মায়া।

সেপ্টেম্বর হায় একাত্তর, ঘর ভেঙে গেছে যুদ্ধের ঝড়ে,

যশোর রোডের দুধারে মানুষ এত এত লোক শুধু কেনো মরে।

শত শত চোখ আকাশটা দেখে, শত শত শত শিশু মরে গেল,

যশোর রোডের যুদ্ধ ক্ষেত্রে ছেঁড়া সংসার সব এলোমেলো

কাদামাটি মাখা মানুষের দল, গাদাগাদি করে আকাশটা দেখে,

আকাশে বসত মরা ইশ্বর, নালিশ জানাবে ওরা বল কাকে।

ঘরহীন ওরা ঘুম নেই চোখে, যুদ্ধে ছিন্ন ঘর বাড়ী দেশ,

মাথার ভিতরে বোমারু বিমান, এই কালোরাত কবে হবে শেষ।

শত শত মুখ হায় একাত্তর যশোর রোড যে কত কথা বলে,

এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে,

এত মরা মুখ আধমরা পায়ে পূর্ব বাংলা কোলকাতা চলে॥







স্বাধীনতা, এই শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো

- নির্মলেন্দু গুণ



একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে

লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে

ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’

এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,

এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,

এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না৷

তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?

তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে

ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি?

জানি, সেদিনের সব স্মৃতি ,মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত

কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ

কবির বিরুদ্ধে কবি,

মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,

বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,

উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,

মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ … ৷

হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,

শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি

একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে

লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প৷

সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর৷

না পার্ক না ফুলের বাগান, — এসবের কিছুই ছিল না,

শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত

ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়৷

আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল

এই ধু ধু মাঠের সবুজে৷

কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে

এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,

লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,

পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক৷

হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,

নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে

আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে৷

একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল

প্রতীক্ষা মানুষের: “কখন আসবে কবি?’ “কখন আসবে কবি?’

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,

রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে

অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷

তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,

হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার

সকল দুয়ার খোলা৷ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?

গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:

‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,

এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷’

সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের৷







স্বাধীনতা, উলঙ্গ কিশোর

- নির্মলেন্দু গুণ



জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উল্ঙ্গ শিশুর মত

বেরিয়ে এসেছো পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও।

তোমার পরমায়ু বৃদ্ধি পাক আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে,

প্রাত্যহিক বাহুর পেশীতে, জীবনের রাজপথে,

মিছিলে মিছিলে; তুমি বেঁচে থাকো, তুমি দীর্ঘজীবী হও।

তোমার হা-করা মুখে প্রতিদিন সূর্যোদয় থেকে

সূর্যাস্ত অবধি হরতাল ছিল একদিন,

ছিল ধর্মঘট, ছিলো কারখানার ধুলো।

তুমি বেঁচেছিলে মানুষের কলকোলাহলে,

জননীর নাভিমূলে ক্ষতচিহ্ন রেখে

যে তুমি উল্ঙ্গ শিশু রাজপথে বেরিয়ে এসেছো,

সে-ই তুমি আর কতদিন ‘স্বাধীনতা, স্বাধীনতা’ বলে

ঘুরবে উলঙ্গ হয়ে পথে পথে সম্রাটের মতো?

জননীর নাভিমূল থেকে ক্ষতচিহ্ন মুছে দিয়ে

উদ্ধত হাতের মুঠোয় নেচে ওঠা, বেঁচে থাকা

হে আমার দূঃখ, স্বাধীনতা, তুমিও পোশাক পরো;

ক্ষান্ত করো উলঙ্গ ভ্রমণ, নয়তো আমারো শরীরি থেকে

ছিঁড়ে ফেলো স্বাধীনতা নামের পতাকা।

বলো উলঙ্গতা স্বাধীনতা নয়,

বলো দূঃখ কোনো স্বাধীনতা নয়,

বলো ক্ষুধা কোন স্বাধীনতা নয়,

বলো ঘৃণা কোন স্বাধীনতা নয়।

জননীর নাভিমূল ছিন্ন-করা রক্তজ কিশোর তুমি

স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবী হও। তুমি বেঁচে থাকো

আমার অস্তিত্বে, স্বপ্নে, প্রেমে, বল পেন্সিলের

যথেচ্ছ অক্ষরে,

শব্দে,

যৌবনে,

কবিতায়।







স্বাধীনতা তুমি

- শামসুর রাহমান



স্বাধীনতা তুমি

রবিঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান।

স্বাধীনতা তুমি

কাজী নজরুল ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো

মহান পুরুষ, সৃষ্টিসুখের উল্লাসে কাঁপা-

স্বাধীনতা তুমি

শহীদ মিনারে অমর একুশে ফেব্রুয়ারির উজ্জ্বল সভা

স্বাধীনতা তুমি

পতাকা-শোভিত শ্লোগান-মুখর ঝাঁঝালো মিছিল।

স্বাধীনতা তুমি

ফসলের মাঠে কৃষকের হাসি।

স্বাধীনতা তুমি

রোদেলা দুপুরে মধ্যপুকুরে গ্রাম্য মেয়ের অবাধ সাঁতার।

স্বাধীনতা তুমি

মজুর যুবার রোদে ঝলসিত দক্ষ বাহুর গ্রন্থিল পেশী।

স্বাধীনতা তুমি

অন্ধকারের খাঁ খাঁ সীমান্তে মুক্তিসেনার চোখের ঝিলিক।

স্বাধীনতা তুমি

বটের ছায়ায় তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর

শানিত কথার ঝলসানি-লাগা সতেজ ভাষণ।

স্বাধীনতা তুমি

চা-খানায় আর মাঠে-ময়দানে ঝোড়ো সংলাপ।

স্বাধীনতা তুমি

কালবোশেখীর দিগন্তজোড়া মত্ত ঝাপটা।

স্বাধীনতা তুমি

শ্রাবণে অকূল মেঘনার বুক

স্বাধীনতা তুমি পিতার কোমল জায়নামাজের উদার জমিন।

স্বাধীনতা তুমি

উঠানে ছড়ানো মায়ের শুভ্র শাড়ির কাঁপন।

স্বাধীনতা তুমি

বোনের হাতের নম্র পাতায় মেহেদীর রঙ।

স্বাধীনতা তুমি বন্ধুর হাতে তারার মতন জ্বলজ্বলে এক রাঙা পোস্টার।

স্বাধীনতা তুমি

গৃহিণীর ঘন খোলা কালো চুল,

হাওয়ায় হাওয়ায় বুনো উদ্দাম।

স্বাধীনতা তুমি

খোকার গায়ের রঙিন কোর্তা,

খুকীর অমন তুলতুলে গালে

রৌদ্রের খেলা।

স্বাধীনতা তুমি

বাগানের ঘর, কোকিলের গান,

বয়েসী বটের ঝিলিমিলি পাতা,

যেমন ইচ্ছে লেখার আমার কবিতার খাতা।









তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা

- শামসুর রাহমান



তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা,

তোমাকে পাওয়ার জন্যে

আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?

আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,

সাকিনা বিবির কপাল ভাঙলো,

সিঁথির সিঁদুর গেল হরিদাসীর।

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,

শহরের বুকে জলপাইয়ের রঙের ট্যাঙ্ক এলো

দানবের মত চিত্কার করতে করতে

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,

ছাত্রাবাস বস্তি উজাড় হলো। রিকয়েললেস রাইফেল

আর মেশিনগান খই ফোটালো যত্রতত্র।

তুমি আসবে ব’লে, ছাই হলো গ্রামের পর গ্রাম।

তুমি আসবে ব’লে, বিধ্বস্ত পাড়ায় প্রভূর বাস্তুভিটার

ভগ্নস্তূপে দাঁড়িয়ে একটানা আর্তনাদ করলো একটা কুকুর।

তুমি আসবে ব’লে, হে স্বাধীনতা,

অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিলো পিতামাতার লাশের উপর।

তোমাকে পাওয়ার জন্যে, হে স্বাধীনতা, তোমাকে পাওয়ার জন্যে

আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ?

আর কতবার দেখতে হবে খাণ্ডবদাহন ?

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে এক থুত্থুরে বুড়ো

উদাস দাওয়ায় ব’সে আছেন – তাঁর চোখের নিচে অপরাহ্ণের

দুর্বল আলোর ঝিলিক, বাতাসে নড়ছে চুল।

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে

মোল্লাবাড়ির এক বিধবা দাঁড়িয়ে আছে

নড়বড়ে খুঁটি ধ’রে দগ্ধ ঘরের।

স্বাধীনতা, তোমার জন্যে

হাড্ডিসার এক অনাথ কিশোরী শূন্য থালা হাতে

বসে আছে পথের ধারে।

তোমার জন্যে,

সগীর আলী, শাহবাজপুরের সেই জোয়ান কৃষক,

কেষ্ট দাস, জেলেপাড়ার সবচেয়ে সাহসী লোকটা,

মতলব মিয়া, মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি,

গাজী গাজী ব’লে নৌকা চালায় উদ্দান ঝড়ে

রুস্তম শেখ, ঢাকার রিকশাওয়ালা, যার ফুসফুস

এখন পোকার দখলে

আর রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুড়ে বেড়ানো

সেই তেজী তরুণ যার পদভারে

একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হ’তে চলেছে –

সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জন্যে, হে স্বাধীনতা।

পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জলন্ত

ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে,

মতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক

এই বাংলায়

তোমাকেই আসতে হবে, হে স্বাধীনতা।







উচ্চারণগুলি শোকের

- আবুল হাসান



লক্ষি বউটিকে

আমি আজ আর কোথাও দেখিনা,

হাটি হাটি শিশুটিকে

কোথাও দেখিনা,

কতগুলি রাজহাঁস দেখি

নরম শরীর ভরা রাজহাঁস দেখি,

কতগুলি মুখস্থ মানুষ দেখি, বউটিকে কোথাও দেখিনা

শিশুটিকে কোথাও দেখিনা !

তবে কি বউটি রাজহাঁস ?

তবে কি শিশুটি আজ

সবুজ মাঠের সূর্য, সবুজ আকাশ ?

অনেক রক্ত যুদ্ধ গেলো,

অনেক রক্ত গেলো,

শিমুল তুলোর মতো

সোনারূপো ছড়ালো বাতাস ।

ছোটো ভাইটিকে আমি

কোথাও দেখিনা,

নরোম নোলক পরা বোনটিকে

আজ আর কোথাও দেখিনা !

কেবল পতাকা দেখি,

কেল উৎসব দেখি ,

স্বাধীনতা দেখি,

তবে কি আমার ভাই আজ

ঐ স্বাধীন পাতাকা ?

তবে কি আমার বোন, তিমিরের বেদীতে উৎসব ?







কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প

- রুদ্র মুহান্মদ শহীদুল্লাহ



তাঁর চোখ বাঁধা হলো।

বুটের প্রথম লাথি রক্তাক্ত করলো তার মুখ।

থ্যাতলানো ঠোঁটজোড়া লালা-রক্তে একাকার হলো,

জিভ নাড়তেই দুটো ভাঙা দাঁত ঝওে পড়লো কংক্রিটে।

মা….মাগো….চেঁচিয়ে উঠলো সে।

পাঁচশো পঞ্চান্নো মার্কা আধ খাওয়া একটা সিগারেট

প্রথমে স্পর্শ করলো তার বুক।

পোড়া মাংসের গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো ঘরের বাতাসে।

জ্বলন্ত সিগারেটের স্পর্শ

আমারা কথা বলবো।

লাঠিচার্জ আমাদের ফেরাতে পারেনি

কাঁদানে গ্যাস আমাদের ফেরাতে পারেনি

র্ইাফেল আমাদের ফেরাতে পারেনি

মেশিন গান আমাদের ফেরাতে পারেনি -

আমারা এসেছি,

আমারা আমাদের গৃহহীনতার কথা বলবো।

কৃষক তোমাদের পক্ষে যাবে না

শ্রমিক তোমাদের পক্ষে যাবে না

ছাত্র তোমাদের পক্ষে যাবে না

সুন্দর তোমাদের পক্ষে যাবে না

স্বপ্ন তোমাদের পক্ষে যাবে না -

তারা সকলেই কষ্টে আছে

তারা সকলেই অনটনে আছে

তারা সকলেই বিক্ষোভের হাত তুলেছে।

তোমাদের পক্ষে যাবে কুকুর

তোমাদের পক্ষে যাবে সুবিধাভোগী

তোমাদের পক্ষে যাবে বিত্তবান নেকড়েরা।

বৃক্ষ তোমাদের অভিশাপ দিচ্ছে

শস্য তোমাদের অভিশাপ দিচ্ছে

রক্ত তোমাদের অভিশাপ দিচ্ছে

তোমাদের অভিশাপ দিচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত শিশুরা।

লক্ষ মৃত্যু আমাদের ফেরাতে পারেনি

আমারা এসেছি।

আমারা আমাদের শিক্ষাহীনতার কথা বলবো

আমারা আমাদের চিকিৎসাহীনতার কথা বলবো

আমারা আমাদের গৃহহীনতার কথা বলবো

আমারা আমাদের বস্ত্রহীনতার কথা বলবো

আমারা আমাদের ক্ষুধা ও মৃত্যুর কথা বলবো।

আমরা তিতুমিরের বাঁশের কেল্লা থেকে এসেছি

আমরা সিপাহী আন্দোলনের দুর্গ থেকে এসেছি

আমরা তেভাগার কৃষক, নাচোলের যোদ্ধা

আমরা চটকলের শ্রমিক, আমরা সূর্যসেনের ভাই

আমরা একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধ থেকে এসেছি

কাঁধে স্টেন, কোমরে কার্তুজ, হাতে উন্মত্ত গ্রেনেড -

আমরা এসেছি।







অস্ত্র সমর্পণ

– হেলাল হাফিজ



মারণাস্ত্র মনে রেখো ভালোবাসা তোমার আমার।

নয় মাস বন্ধু বলে জেনেছি তোমাকে, কেবল তোমাকে।

বিরোধী নিধন শেষে কতোদিন অকারণে

তাঁবুর ভেতরে ঢুকে দেখেছি তোমাকে বারবার কতোবার।

মনে আছে, আমার জ্বালার বুক

তোমার কঠিন বুকে লাগাতেই গর্জে উঠে তুমি

বিস্ফোরণে প্রকম্পিত করতে আকাশ, আমাদের ভালবাসা

মুহূর্তেই লুফে নিত অত্যাচারী শত্রুর নি:শ্বাস।

মনে পড়ে তোমার কঠিন নলে তন্দ্রাতুর কপালের

মধ্যভাগ রেখে, বুকে রেখে হাত

কেটে গেছে আমাদের জঙ্গলের কতো কালো রাত!

মনে আছে, মনে রেখো

আমাদের সেই সব প্রেম-ইতিহাস।

অথচ তোমাকে আজ সেই আমি কারাগারে

সমর্পণ করে, ফিরে যাচ্ছি ঘরে

মানুষকে ভালোবাসা ভালোবাসি বলে।

যদি কোনোদিন আসে আবার দুর্দিন,

যেদিন ফুরাবে প্রেম অথবা হবে না প্রেম মানুষে মানুষে

ভেঙে সেই কালো কারাগার

আবার প্রণয় হবে মারণাস্ত্র তোমার আমার।



১০



এ লাশ আমরা রাখবো কোথায়

- হুমায়ুন আজাদ



এ লাশ আমরা রাখবো কোথায় ?

তেমন যোগ্য সমাধি কই ?

মৃত্তিকা বলো, পর্বত বলো

অথবা সুনীল-সাগর-জল-

সব কিছু ছেঁদো, তুচ্ছ শুধুই !

তাইতো রাখি না এ লাশ আজ

মাটিতে পাহাড়ে কিম্বা সাগরে,

হৃদয়ে হৃদয়ে দিয়েছি ঠাঁই।



১১



অভিশাপ দিচ্ছি

- হুমায়ুন আজাদ



আজ এখানে দাড়িয়ে এই রক্ত গোধূলিতে

অভিশাপ দিচ্ছি।

আমাদের বুকের ভেতর যারা ভয়ানক কৃষ্ঞপক্ষ

দিয়েছিলো সেঁটে,

মগজের কোষে কোষে যারা

পুতেছিলো আমাদেরই আপনজনের লাশ

দগ্ধ, রক্তাপ্লুত,

যারা গনহত্যা

করেছে শহরে গ্রামে টিলায় নদীতে ক্ষেত ও খামারে

আমি অভিশাপ দিচ্ছি নেকড়ের চেয়েও অধিক

পশু সেই সব পশুদের।

ফায়ারিং স্কোয়াডে ওদের

সারিবদ্ধ দাঁড়

করিয়ে নিমিষে ঝা ঝা বুলেটের বৃষ্টি

ঝরালেই সব চুকে বুকে যাবে তা আমি মানি না।

হত্যাকে উতসব ভেবে যারা পার্কে মাঠে

ক্যাম্পাসে বাজারে

বিষাক্ত গ্যাসের মতো মৃত্যুর বীভতস গন্ধ দিয়েছে

ছড়িয়ে,

আমি তো তাদের জন্য অমন সহজ মৃত্যু করি না

কামনা।

আমাকে করেছে বাধ্য যারা

আমার জনক জননীর রক্তে পা ডুবিয়ে দ্রুত

সিড়ি ভেন্গে যেতে আসতে

নদীতে আর বনবাদাড়ে শয্যা পেতে নিতে

অভিশাপ দিচ্ছি আজ সেইখানে দজ্জালদের।



১২



রিপোর্ট ১৯৭১

– আসাদ চৌধুরী



প্রাচ্যের গানের মতো শোকাহত, কম্পিত, চঞ্চল

বেগবতী তটিনীর মতো স্নিগ্ধ, মনোরম

আমাদের নারীদের কথা বলি, শোনো।

এ-সব রহস্যময়ী রমণীরা পুরুষের কণ্ঠস্বর শুনে

বৃক্ষের আড়ালে স’রে যায়-

বেড়ার ফোঁকড় দিয়ে নিজের রন্ধনে

তৃপ্ত অতিথির প্রসন্ন ভোজন দেখে

শুধু মুখ টিপে হাসে।

প্রথম পোয়াতী লজ্জায় অনন্ত হ’য়ে

কোঁচরে ভরেন অনুজের সংগৃহীত কাঁচা আম, পেয়ারা, চালিতা-

সূর্য্যকেও পর্দা করে এ-সব রমণী।

অথচ যোহরা ছিলো নির্মম শিকার

সকৃতজ্ঞ লম্পটেরা

সঙ্গীনের সুতীব্র চুম্বন গেঁথে গেছে-

আমি তার সুরকার- তার রক্তে স্বরলিপি লিখি।

মরিয়ম, যীশুর জননী নয় অবুঝ কিশোরী

গরীবের চৌমুহনী বেথেলহেম নয়

মগরেবের নামাজের শেষে মায়ে-ঝিয়ে

খোদার কালামে শান্তি খুঁজেছিলো,

অস্ফুট গোলাপ-কলি লহুতে রঞ্জিত হ’লে

কার কী বা আসে যায়।

বিপন্ন বিস্ময়ে কোরানের বাঁকা-বাঁকা পবিত্র হরফ

বোবা হ’য়ে চেয়ে দ্যাখে লম্পটের ক্ষুধা,

মায়ের স্নেহার্ত দেহ ঢেকে রাখে পশুদের পাপ।

পোষা বেড়ালের বাচ্চা চেয়ে-চেয়ে নিবিড় আদর

সারারাত কেঁদেছিলো তাহাদের লাশের ওপর।

এদেশে যে ঈশ্বর আছেন তিনি নাকি

অন্ধ আর বোবা

এই ব’লে তিন কোটি মহিলারা বেচারাকে গালাগালি করে।

জনাব ফ্রয়েড,

এমন কি খোয়াবেও প্রেমিকারা আসে না সহজ পায়ে চপল চরণে।

জনাব ফ্রয়েড, মহিলারা

কামুকের, প্রেমিকের, শৃঙ্গারের সংজ্ঞা ভুলে গ্যাছে।

রকেটের প্রেমে পড়ে ঝ’রে গ্যাছে

ভিক্টোরিয়া পার্কের গীর্জার ঘড়ি,

মুসল্লীর সেজদায় আনত মাথা

নিরপেক্ষ বুলেটের অন্তিম আজানে স্থবির হয়েছে।

বুদ্ধের ক্ষমার মূর্তি ভাঁড়ের মতন

ভ্যাবাচেকা খেয়ে প’ড়ে আছে, তাঁর

মাথার ওপরে

এক ডজন শকুন মৈত্রী মৈত্রী ক’রে

হয়তো বা উঠেছিলো কেঁদে।



১৩



শহীদদের প্রতি

– আসাদ চৌধুরী



তোমাদের যা বলার ছিল

বলছে কি তা বাংলাদেশ ?

শেষ কথাটি সুখের ছিল ?

ঘৃণার ছিল ?

নাকি ক্রোধের,

প্রতিশোধের,

কোনটা ছিল ?

নাকি কোনো সুখের

নাকি মনে তৃপ্তি ছিল

এই যাওয়াটাই সুখের।

তোমরা গেলে, বাতাস যেমন যায়

গভীর নদী যেমন বাঁকা

স্রোতটিকে লুকায়

যেমন পাখির ডানার ঝলক

গগনে মিলায়।

সাঁঝে যখন কোকিল ডাকে

কারনিসে কি ধুসর শাখে

বারুদেরই গন্ধস্মৃতি

ভুবন ফেলে ছেয়ে

ফুলের গন্ধ পরাজিত

স্লোগান আসে ধেয়ে।

তোমার যা বলার ছিল

বলছে কি তা বাংলাদেশ



সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের অনেক অনেক অনেক শুভেচ্ছা। :)

মন্তব্য ১৪ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৪০

বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: প্রিয়তে রাখলাম।

২| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৪২

রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ) বলেছেন: প্রায় সব গুলো পড়া ছিল আগে। আজ আর একবার পড়লাম এক সাথে। অন্য রকম ভাল লাগছে। বুকের ভিতর অন্য রকম কিছু অনুভব করছি।

৩| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:০৪

দেওয়ান কামরুল হাসান রথি বলেছেন: ভাই অসাধারণ। সবগুলো পড়া তবে এক সাথে পড়ে এতো ভালো লাগলো। ভাষায় প্রকাশ করতে পারবোনা।

৪| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:১০

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: পাকিস্তান হলো এক নরপশুদের জাতি
এরা অভিসপ্ত এবং বিতারিত।
বাংলাদেশের যারা এদের পছন্দ করে তারাও
ঘৃনিত ও অভিশপ্ত।

৫| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৪৩

তানজিয়া মোবারক মণীষা বলেছেন: সেরাগুলো থেকেই বাছাই করে দিয়েছেন এখানে, অনেক ভালো লাগলো পোস্টটি। প্রিয়তে নিয়ে যাচ্ছি। +++ :)

৬| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ৯:৫১

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: এত কবিতা এক বসায় পড়া সম্ভব না। প্রিয়তে নিলাম।

সংকলন ভালো হয়েছে।

৭| ২৫ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:২৬

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চমৎকার! প্রিয়তে নিলাম।

৮| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:২৯

শাকিল ১৭০৫ বলেছেন: দারুন !

৯| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৪০

অরুদ্ধ সকাল বলেছেন: র ক্ত পু রা ণ
সকাল রয়


স্বাধীনতার জন্য লাশ হয়ে আছি,
এখনও-
হাড়গোড় খোয়া ঠিকানাহীন কঙ্কাল হয়ে তোমাদের নগরে
এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে।
একদিন বুক চিতিয়ে বারুদ নিয়েছিলাম,
একদিন রক্তলাল মিছিল হয়েছিলাম,
একদিন হায়েনাদের সাথে শুয়েছিলাম,
স্বাধীনতা পাবো বলে।

সবুজ গ্রাম বিধবা হয়েছিল,
বলিদানের বলিখাতায় হাত কিংবা পা খুইয়েছিলাম কেউ কেউ।
কুকুর, শকুন টেনে হিচরে ছিঁড়েছিল আমাদের দেহ;
সোমেশ্বরী সেদিন নির্বাক ছিল; তার বুকে ছিল রক্ত জমাট লাশফুল।

এখনও লাশ হয়ে শুয়ে আছি, আমি এবং
সন্তোষ, আরজ আলী, আওয়াল, ছুট্টুনী সহ নাম না জানা আরো অনেকে।
শুয়ে আছি ঘিলুহীন মাথাভর্তি অভিযোগ নিয়ে।
দেখছি-অবহেলা, অনাচার, পদদলিত পতাকা, ভাঙচুর শহীদ মিনার।
চলছে ধর্ষণ, দুর্নীতির বর্ষণ নির্দ্বিধায়
পাথরের চোখ দিয়ে স্বাধীন রক্তাক্ত আকাশ দেখছি।
ইচ্ছে করে মাটি ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসি-গর্জে উঠি!
কিন' মাটির শিকল এতটাই মজবুত যে ছিড়ে ফেলার মতো নয়।

ইচ্ছে করে আকাশ কাঁপিয়ে বজ্রনিনাদে বলি,
টিকে থাকুক বাঙলা আমার, টিকে থাকুক স্বাধীনতা।
শুধু-
চাইনা আরেকটা শকুন গেয়ে যাক রাজাকারের গান,
চাইনা জন্মাক আরেকটি রক্তপুরাণ।

১০| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৪০

অরুদ্ধ সকাল বলেছেন: র ক্ত পু রা ণ
সকাল রয়


স্বাধীনতার জন্য লাশ হয়ে আছি,
এখনও-
হাড়গোড় খোয়া ঠিকানাহীন কঙ্কাল হয়ে তোমাদের নগরে
এখানে-ওখানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে।
একদিন বুক চিতিয়ে বারুদ নিয়েছিলাম,
একদিন রক্তলাল মিছিল হয়েছিলাম,
একদিন হায়েনাদের সাথে শুয়েছিলাম,
স্বাধীনতা পাবো বলে।

সবুজ গ্রাম বিধবা হয়েছিল,
বলিদানের বলিখাতায় হাত কিংবা পা খুইয়েছিলাম কেউ কেউ।
কুকুর, শকুন টেনে হিচরে ছিঁড়েছিল আমাদের দেহ;
সোমেশ্বরী সেদিন নির্বাক ছিল; তার বুকে ছিল রক্ত জমাট লাশফুল।

এখনও লাশ হয়ে শুয়ে আছি, আমি এবং
সন্তোষ, আরজ আলী, আওয়াল, ছুট্টুনী সহ নাম না জানা আরো অনেকে।
শুয়ে আছি ঘিলুহীন মাথাভর্তি অভিযোগ নিয়ে।
দেখছি-অবহেলা, অনাচার, পদদলিত পতাকা, ভাঙচুর শহীদ মিনার।
চলছে ধর্ষণ, দুর্নীতির বর্ষণ নির্দ্বিধায়
পাথরের চোখ দিয়ে স্বাধীন রক্তাক্ত আকাশ দেখছি।
ইচ্ছে করে মাটি ফুঁড়ে বেড়িয়ে আসি-গর্জে উঠি!
কিন' মাটির শিকল এতটাই মজবুত যে ছিড়ে ফেলার মতো নয়।

ইচ্ছে করে আকাশ কাঁপিয়ে বজ্রনিনাদে বলি,
টিকে থাকুক বাঙলা আমার, টিকে থাকুক স্বাধীনতা।
শুধু-
চাইনা আরেকটা শকুন গেয়ে যাক রাজাকারের গান,
চাইনা জন্মাক আরেকটি রক্তপুরাণ।

১১| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১১:০৬

এহসান সাবির বলেছেন: দারুন পোস্ট।

১২| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:২০

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: ১০ তম প্রিয় বাটন ক্লিকাইলাম। কিন্তু কিঞ্চিত টেনশিত ড্রাফট হবে কবে এই ভেবে। :)

১৩| ২৯ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৪:৪২

একা বৃষ্টিতে ভিজি বলেছেন: সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। এই কবিতাগুলো আমারও অনেক অনেক প্রিয় :)

১৪| ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: সব গুলো কবিতাই খুব সুন্দর।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.