![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছোট একটা ফার্মে কাজ করছি । সৌখিন লেখক । ক্রিকেট খেলতে পছন্দ করি । পকেটে পয়সা থাকলে এদিক ঘুরে খরচ করে ফেলি । সুনীলের লেখার ভক্ত, শামসুর রাহমানের কবিতা পড়ি। বিদেশী লেখকের মধ্যে ড্যানিয়েল স্টীলের লেখা ভাল লাগে । সবচেয়ে ঘৃণা করি স্বাধীনতার বিরোধী শক্তিকে । একাত্তর আমার সবচেয়ে বড় অহংকার। ইমেইল: [email protected]
ভ্যাপসা বাতাস। মাটির নিচে ঘুমাতে ঘুমাতে ক্লান্ত। একসময় আড়মোড় ভাঙতেই হলো। মৃত্যুর পর কতদিন গেছে নিশ্চিত হওয়া দরকার। কিন্তু হাতে ঘড়ি নেই।
কবরের ভিতর সময় গোনার কেউ নেই। এখানকার নিয়ম অন্যরকম । তবে নিয়ম কানুন পৃথিবীর চেয়ে শিথিল।
গা ঝাড়া দিয়ে বের হয়ে আসলাম এপিটাফের পাথর ঘেষে। অবাক হয়ে দেখলাম আমার গায়ে যেন টিশার্ট আর বঙ্গবাজারের সেই প্যান্টটা। প্যান্টটাতে একটু ধুলো কাদা লেগে আছে। গেট দিয়ে আজিমপুরের পাকা রাস্তা দিয়ে আগেও অনেকবার চলেছি। এই উঁচু কৃষ্ণচূড়া, শিমুল গাছের নিচে হাটতে হাটতে বাড়ি ফেরা আমার খুব প্রিয় ছিল। হাটতে হাটতে নির্জনে কবিতার ভাবনা সঞ্চিত হতো, কত গল্পের প্লট এসেছে পথ চলতে চলতে।
"অপিনিহিতি" ছদ্মনামে পত্রিকায় ছাপানো হতো। অনলাইনেও একই নামে সবাই চিনে যেত। আমার প্রতিভা যে অন্যদের চেয়ে কিঞ্চিত বেশী সেটা টের পাই যখন পত্রিকায় শত শত পাঠক চিঠি লিখতো। আর সেখানে দেশের সবচেয়ে নামী লেখকেরা হুমড়ি খেয়ে পড়তো। স্বাধীনতা নিয়ে বিশাল ঐতিহাসিক গল্প লিখেছিলাম - গবেষণালব্ধ জ্ঞান আর ভাষাশৈলীতে আমার খুব সুনাম হয়েছিল। "অপিনিহিতি"র গল্প জাতীয় গল্প উৎসবে পাঠ হয়েছিল। বই হিসাবে প্রকাশ হলে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পাওয়া অসম্ভব ছিল না।
আমার গল্পগুলো বেশ বড় হতো। গুনে গুনে ১০০টা গল্প হয়েছিল। একটা বই ছাপানোর কাজও শুরু করেছিলাম। ইচ্ছে ছিল সবাইকে চমকে দিয়ে ছদ্মনামের রহস্যটা জানিয়ে দেয়া হবে, “অপিনিহিতি" মানে আমি সালাউদ্দীন ফয়সাল ছাড়া কেউ না।
কিন্তু মৃত্যুটা হয়েছিল খুব আচমকা। কর্মস্থলে ফেরার পথে বাস দুর্ঘটনা। এরকম মৃত্যুতে কার কী আসে যায়। মৃত্যুর পর আমাকে ঘিরে কোন শোকের মাতম ছিল না। পত্রিকায় সর্বমোট নিহতদের সংখ্যা ছাপানো হয়েছিল। আমার জানাজায় কোন বিখ্যাত কেউ আসেনি। পত্রিকায় নাম ছাপা হয়নি। অথচ অপিনিহিতি মারা গিয়েছে শুনলে নিশ্চিতভাবেই এটা পেপারে হেডলাইন হতো । আমার সঙ্গে আমারই ছদ্মনামের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আমি হেরে গিয়েছিলাম।
আমাকে মনে রাখার মতো আপন শুধু দু'জন - স্ত্রী মিলি আর সন্তান অর্ক । ভাইয়েরা অনেক আগেই আলাদা। বাবা মা বেঁচে নেই।
মৃতদের নাকি মন থাকেনা। কিন্তু সাহিত্যিক বলেই আমার মন খারাপের অভ্যেসটা কাটেনি।
*
সালাউদ্দীন ফয়সাল তার বাসাটা চিনতে পারলো। বড় কড়ইগাছ। গেটে নেমপ্লেট "ক্ষণিকালয়"। বহুতলা বাসা। নিচের তলার গেট দিয়ে সে ভেতরে ঢোকে। পাহারাদার বরাবরের মতো ঝিমোচ্ছে।পায়ের শব্দেও জাগে না। দোতলায় সে থাকতো। সিড়িগুলো বড় পরিচিত। সাদাসিমেন্টের রং করা হাতল। বড় বড় ঘাটের সিড়ি। দোতলায় উঠে দেখে দরজাটা হা করে খোলা। লোকজন এত ভুলো মন? ঢাকায় দরজা খোলা থাকলে যে কোন কিছু হতে পারে। মিলি বরাবরই এমন। কতবার যে তাকে ফয়সাল তাকে মানা করেছে। কাজ হয়নি। টিভি খোলা রেখে যায়। ট্যাপের পানি ঝর ঝর করে পড়তে থাকে।
উপর থেকে স্টেরিওর শব্দ ভেসে আসে। ফয়সাল বুঝতে চেষ্টা করে সে কত দিন আগে মারা গেছে? কত মাস না বছর? একজন মৃত মানুষের জন্য মানুষ অন্তত: সৌজন্য হলেও শোক প্রকাশ করে। মৃতের বাড়িতে এত উচ্ছাস - খুব বেমানান। উচ্চগ্রামের ডিসকো গানে সে আহত হয়।
বাসাটা তিন রুমের। রুমগুলো ছোট। বিল্ডিং এ ঢুকতে ডান পাশের ফ্ল্যাট। দরজা দিয়ে ঢুকতেই করিডোর, সেটার শেষ মাথায় রান্নাঘর। প্রথমে ডান দিকে ড্রয়িং রুম। তারপর বাচ্চার থাকার ঘর আর শেষে নিজেদের বেডরুম। ড্রইং রূমে একটা নতুন সিডি প্লেয়ার। সেখানেই গান বাজে - চড়া বীটে।
পরের রুমে তার বাচ্চা ভিডিও গেমস খেলছে। ঢিসুম ঢুসুম শব্দ হচ্ছে। সে তাকে ফিরেও দেখে না। রূমে পোস্টার ঝুলছে পাওয়ার রেঞ্জারদের। ফয়সালর একটু বিরক্তই লাগে, সে বেঁচে থাকতে বাচ্চাকে কখনই এমন আজেবাজে জিনিস ধরতে দেয়নি।
সে "বাবা বাবা" বলে ডাকলো । "অর্ক অর্ক"। কিন্তু বাচ্চাটা তার কোন কথারই জবাব দেয় না। ফয়সাল বিকট শব্দে ধমকায়। তারপর ছুটে বাচ্চার হাত ধরতে চায়। কিন্তু বাচ্চাটা তখনো আনমনে খেলা চালিয়ে যাচ্ছিল। তার বুঝতে বাকি থাকে না, বাচ্চাটা তাকে দেখছেনা। তার কথা শুনছে না। সে সম্পূর্ণ অদৃশ্য! সে মৃত্যুর পরবর্তী বাস্তবতাকে উপলব্ধি করে ধাক্কা খায়। দ্বিগুণ একটা কষ্ট নিয়ে বাচ্চাকে নিরবে আদর করে বেরিয়ে আসে।
ফয়সাল ও মিলির প্রেমের সংসার । সে তাকে ভালবেসে বিয়ে করেছিল। মিলিকে এক নজর দেখার জন্য সে ছটফট করে । ঠিক এমন সময় শোবার দরজাটা খুলে যায়। সে দেখতে পেল একটা অপরিচিত মানুষ বের হয়ে আসছে। ফয়সাল নিজের মৃত অস্তিত্ব ভুলে গিয়ে ধমকালো, "মিলি!!"। মিলিও তাকে দেখলো না। লোকটা তাকে সোহাগী গলায় বললো, "ওগো, আমার জীবনে তুমি না এলে জীবনের কোন অর্থই থাকতো না"। মিলি মানুষটার চোখে চোখ রেখে মিষ্টি করে তাকিয়ে থাকে।
ফয়সাল ঘরের ভেতরে তাকালো। সেখানে মিলি এবং ফয়সালের একটা বিয়ের ছবি ছিল। ছবিটা সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বদলে মিলি এবং লোকটার একটা বাঁধানো ছবি । ছবিটার গলায় মালা পরানো। মিলি কি তবে লোকটাকে বিয়ে করেছে?
ফয়সালের বুক কষ্টে খান খান হয়ে যায়। নিজ স্ত্রীকে অন্যকারো পাশে কে সহ্য করতে পারে? অপমানে চোখ ভরে আসে। কিন্তু মৃত মানুষের চোখে কান্না থাকে না। মিলি যদি বিয়েই করে তবে অন্য কোথাও উঠলো না কেন? অবশ্য মিলি কী করে জানবে মৃত হলেও স্বামীরা ফিরে এসে সব দেখতে পায়।
আবার এও মনে হতে থাকে, তার স্ত্রী কেনই বা তাকে সারাজীবন মনে রাখতে যাবে? জীবন তো আর থেমে থাকে না। যুক্তিসঙ্গত কারণে তার মনে হলো তার উচিত স্ত্রীর মঙ্গল চাওয়া।
ফয়সাল পা টেনে পায়ে নেমে এল রাস্তায়। তার মনে হতে লাগলো, কেন সে ছদ্মনামে লিখতে গিয়েছে। এখন তার এতসব সাহিত্যকর্ম কোনটাতেই তার নাম থাকবে না। তার স্ত্রী সন্তান কেউই তাকে মনে রাখেনি । সে আজ নামহীন মানুষ - প্রকৃতপক্ষেই একজন অদৃশ্য মানুষ।
*
ফয়সাল কবরে ঘুমিয়ে পড়তে যাবে । অনেক মনোকষ্ট। কী লাভ এমন পৃথিবী দেখতে চাওয়া যেখানে তার একটি বিন্দু স্মৃতি অবশিষ্ট নেই। মানুষ কত লোকের নাম বংশ পরম্পরায় মনে রাখে, তার কিছুই থাকবেনা।
কবরের কিছু দুরে গোর খোদকদের জন্য একটা লম্বা লোহার বেঞ্চি পাতা ছিল। উপরে রেইনট্রি গাছ, সান্ধ্যপাখীরা বাড়ি ফিরে কিচির মিচির করছে। সন্ধা নেমে আসছে। সে গিয়ে সেখানে বসে সাতপাঁচ ভাবছে এমন সময় একটা লোক তাকে দেখে কাছে ডাকলো।
ঝাকড়া চুল, মুখ ভর্তি উস্কুখুস্কু দাড়িতে যেন বনমানুষ। বেশী লম্বা বলে কুঁজো লাগছে। লোকটা তার মতই আরেক মৃত। ফয়সালকে শুধু মৃতরাই দেখে আর লোকটাও তার ডাকের জবাবও শুনতে পায়। লোকটা কথা বলতে বলতে তার পাশে ঝপ করে বসে পড়ে।
"ভাই,কেমন চলছে? বাড়ি থেকে ফিরছেন মনে হয়"
"জ্বী, আপনি?", ফয়সাল আলাপে যোগ দেয়।
"এই তো আমিও অনেক অনেক বছর এখানে। আপনি সম্ভবত: তেমন একটা বের হন না"
তারপর ফয়সালর মুখে চেয়ে বলতে থাকে,
"আপনাকে দেখে বিধ্বস্ত লাগছে। কোন সমস্যা নাতো?"
মৃতদের হারানোর কিছু নেই। তাই তারা মিথ্যা বলে না। ফয়সাল খুব আন্তরিক হয়ে বলেই ফেলে তার সমস্যাটা
"আমি সালাউদ্দীন ফয়সাল, দেশের বিখ্যাত লেখক ও সাহিত্যিক। প্রায় ১০০ টির মত বিশাল গল্প লিখেছি। হয়তো সংখ্যাটা খুব বড় না, কিন্তু এক একটি গল্প অনেক পরিশ্রমে গড়া। আমার গল্প পত্রিকায় ছাপা হলে পত্রিকার কাটতি বেড়ে যায়। আমাকে সবাই বলতো মানবিক সম্পর্কের গল্পকার। ভাইবোন, বাবা মা, বাপ-মেয়ে, ইত্যাদি মানবিক সম্পর্ক নিয়ে আমার গদ্য হাজার হাজার পাঠককে চোখের পানি ঝরিয়েছে।"
একটু দীর্ঘশ্বাস নিয়ে ফয়সাল বলতে থাকে,
"মহা পরিতাপের বিষয়, এত বিশাল পরিশ্রমী কাজের সব "অপিনিহিতি" ছদ্মনামে। যখনই পরিকল্পনা করছি যে বই বের করবো, আর মোড়ক উন্মোচনে এই রহস্যটা প্রকাশ করে সাহিত্যমহলে আলোড়ন তুলবো, ঠিক তখনই আচমকা মৃত্যু এসে বুকে টেনে নিল। "
তারপর আবার বললো,
"এখন "অপিনিহিতি" ছদ্মনাম যে সালাউদ্দীন ফয়সাল" সেটা প্রচার করার কোন উপায় জানেন?"
"হুম", লোকটা চিন্তা করে বললো,"কথা শুনে বোঝা যায় আপনি নতুন এখানে। আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে মৃত হলে বাস্তব পৃথিবীর কোন কিছু বদলে ফেলার ক্ষমতা কারো থাকে না"।
তারপর একটু আশা দিতে শুরু করলো,
"..তবে আপনার কৃতিত্ব নিয়ে মৃতদের কাছে গল্প করতে পারেন । গল্প করতে ভালও লাগবে। কারণ মৃত আত্মাদের নিজেদের মধ্যে খুব মিল । জীবিতদের ভাষা অনেক, নানান কালচার, পোষাক আর বৈষম্য নানান রকম । আর এখানে সবাই সবার কথা বুঝতে পারে, যেখানে ইচ্ছে সেখানে যেতে পারে, যে কারো বন্ধু হতে পারে যখন তখন। মৃতদের জায়গাটা দারুন"।
এসব সান্ত্বনায় ফয়সালকে অপরিবর্তিত দেখে উস্কুখুস্কু লোকটা বললো, "আগামীকাল ভোরে চলুন মৃতদের রাজ্যগুলো বেড়াতে যাই - মনটা ভাল লাগবে। আজই যেতাম, তবে অন্য জায়গায় যেতে হচ্ছে। বলে ঝাকড়া লোকটা তাড়াহুড়ো করে চলে গেল।
ফয়সাল সমাধীর অন্ধকারে শুয়ে থেকে বার বার তার বোকামীর কথা মনে করছিল। তার ছদ্মনামের খ্যাতিটা ভুলতে পারছিল না। তার পুত্রের পরিবর্তন নিয়ে কিছু করার নেই কিন্তু তার পিতার জন্য দেয়ালে তার অন্তত: একটি ছবি প্রত্যাশিত ছিল। মিলির কথা ভাবতে গিয়ে সে কবরের ঝুরঝুরে মাটির দিকে চেয়ে থাকলো।
*
পরদিন ভোরে সেই ঝাকড়া চুলের লোকটা তাকে নিয়ে একটা দারুণ নৈসর্গিক পরিবেশে বেড়াতে এলো। ফুর ফুরে বাতাসে দারুণ লাগছিল। জায়গাটা পৃথিবীর মানচিত্রে কোথায় তা তার মাথায় ঢুকছিল না।
ঢোকার কারণ নেই কারণ ফয়সাল হাইস্কুলে ভুগোলে কাঁচা ছিল। সে ফেল করতে করতে বেঁচে গেছে। উস্কুখুস্কু লোকটা একটা মরুভূমি পার হয়ে সুউচ্চ পর্বতের উপর নিয়ে এল। দুর দিগন্তের পাহাড়গুলো সবুজ পাইন গাছে ছেয়ে আছে। আর পাহাড়ের চারদিকে গভীর। পাহাড়টা নিশ্চিতভাবেই হিমালয়ের চেয়ে উঁচু। নিচে কিছুই দেখা যায় না। উপরে ঝক ঝকে রোদ। ফয়সাল পশ্চিম মুখী হয়ে সাত পাঁচ ভাবছিল।
ঝাকড়া মাথার লোকটা বললো, এদিনে নয়, পুব দিকে এসে দেখুন। লোকটা তাকে দেখার জন্য তার হাতে একটা বড় দুরবীন তুলে দিল।
ফয়সাল অবাক হয়ে দেখলো এক অবিশ্বাস্য বিরাট টাওয়ারের মতো অট্টালিকা। কত তলা? ১০০০, ৫০০০? ১০,০০০ - আরও বেশী। অট্টালিকাটার শুরু পাহাড়ের একদম গভীরে। তল দেখা যায় না। আর প্রতিটি তলা বিশাল সুবিস্তৃত। একপাশ থাকে অন্যপাশে দেখতে মাথা ঘুরে যায়। আশ্চর্য হয়ে দেখলো কোন ইটকাঠ নয়, মানুষের উপর মানুষ দাঁড়িয়ে। ফয়সাল মুখ ফুটে উচ্ছাস নিয়ে বললো, "কী অবাক কান্ড! এত বড় একটা স্থাপত্যকলা পৃথিবীতে কোথাও কেউ নাম শুনেনি, জানেনি।"
লোকটা ঠান্ডা গলায় বললো, "দেখুন তো একটু নিচের ছাদে ঐ লোকটাকে চিনতে পারেন কিনা? "
ফয়সাল আইপিসে দেখলো অনেক মানুষের ভীড়ে একজনকে পরিচিত পরিচিত লাগছে। একজন লোক ঘষা কাঁচ নিয়ে আকাশ দেখছে। মুখে অযত্নে বেড়ে ওঠা দাড়ি তবু চিনতে অসুবিধে হয় নি। সে অস্ফুট স্বরে বলে উঠলো,
"ও, গ্যালিলিও!!..উনি এখানে যে। তার উপর তলায় আরেকজনকে চেনা চেনা লাগে, আপেল হাতে কিছু ভাবছেন, সম্ভবত: নিউটন"।
ফয়সালের সঙ্গী বেশ মজা পায়,
"বাহ আপনি দেখছি ভালই মনে রেখেছেন। স্কুলে নিশ্চয়ই ভালই ফলাফল করতেন। কিন্তু এ ছাড়াও কিন্তু অসংখ্যা লোক একই ছাদের নিচে - খেয়াল করে দেখুন গ্যালিলিওকে কাচ ঘষে দিচ্ছে একজন। কাচ ঘষতে তার খুব পরিশ্রম হচ্ছে। পিছনে লোহা গলিয়ে অন্য একজন মানুষ সুদক্ষভাবে দুরবীনের চোঙ বানিয়ে দিচ্ছেন গ্যালিলিওকে। গ্যালিলিও রাত জাগছে। আর তার মা ছেলের পাশে বসে আছেন। গ্যালিলিও খেতে দেরী করলে অসুস্থ হবে, এই অভ্যেসটা মৃত্যুর পরও তার কাটে নি। উপর তলায় দেখছেন একজন লেখক। তিনি গ্যালিলিওকে নিয়ে লিখছেন। এতসব না হলে গ্যালিলিওর কাহিনী জানতেন কি করে?
গ্যালিলিওর কাজের সহযোগী, প্রচারক এবং খাদ্য যোগানদানকারী যে মানুষগুলো তাদের কাউকে কি চিনতে পারেন?"
ফয়সাল মাথা নাড়ে, "না"। ফয়সাল খুব মনযোগ দিয়ে দেখেও কাউকে চিনতে পারলো না।
তারা দুজন একটা ঝুলন্ত সেতুর সামনে এসে দাড়ালো। সেতুটা দিয়ে লোকজন টাওয়ার থেকে পাহাড়ে আসা যাওয়া করে ।
"দেখুন একজন বন্ধু সেতু বেয়ে এদিকে আসছে"।
ফয়সাল দেখলো আগন্তুক লোকটার চোখে দেখতে পায় না, হাতে বাঁশের লাঠি। মাথায় চুল কম। চেহারায় গাম্ভীর্য। "উনি কি দার্শনিক?", ফয়সাল এবার হাত বাড়িয়ে বললো , "আপনার সঙ্গে পরিচিত হতে পেরে খুশী হলাম"। লোকটা তাকে অবাক করে বললো, "আপনি বাংলা সাহিত্যের নতুন লেখক সালাউদ্দীন ফয়সাল, ঠিক বলিনি! আপনি বাংলা ভাষায় এই অঞ্চলের গৌরব। আপনার লেখা নিয়ে আমাদের গর্ব হয়, যদিও বাংলা আমার ভাষা না"।
বাংলা ভাষার অঞ্চলের একজন লোক পিছন পিছন এসেছিল। ফয়সাল প্রথমে ভাবলো ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর । কিন্তু না, তাকে সে চিনতে পারলো না। বাঙালী লোকটা বললো,
"এই খানে স্বাগতম, বাঙালী কাউকে দেখিয়া আমি খুবই আনন্দিত । আমি আপনার মত একজন সাহিত্যিক । আমার নিজেরও কোন বই প্রকাশিত হয় নি। কিন্তু আমি খুব উন্নতমানের কবিতা লিখতাম ।"
লোকটা তার নাম বলতে দেখে মনে হলো এই সুযোগে নিজের গুনগান করবে। ফয়সাল একটু বাজিয়ে দেখার জন্য বললো,
"তা আপনি কি অবদান রেখেছেন"?
"হাটটিমাটিমটিম" নামে এক খানি ছড়া আমি আমার দৌহিত্রর জন্য রচনা করি। আজ ঘরে ঘরে প্রতিটি শিশু সেই ছড়াটি জানে। শত বছর ধরে এই একটি ছড়া শিশুদের মন কেড়ে নেয়। আশ্চর্য হয়ে বললাম, "তা, আপনি কেন আপনার নামটা বলে দিলেন না?"।
এমন সময় আরও কয়েকজন এসে দাঁড়িয়ে গল্প শুনছে।লোকটা বললো, "হা হা হা। এতক্ষণ যে অন্ধ লোকটির সঙ্গে কথা বললেন উনি কে জানেন? উনি ৪০০০ বছর আগে ভাষার লিখিত রূপ, মানে অক্ষর আবিষ্কার করেছিলেন। তারও কোন নাম নেই। সেই অক্ষর আবিস্কর্তার নাম যদি ইতিহাসে না থাকলে চলে তবে আমার তো নাম বলতে লজ্জাই হবেই "।
অক্ষর ওয়ালা তখন মিষ্টি হেসে বললেন, "ভাই, এত বড় একটা সৌধ। সবাই মিলে না বানালে কি করে হবে? আমি যে প্যাপিরাস নামের এক ধরণের নলখাগড়ার কাগজে অক্ষর লিখেছিলাম, সেই কাগজের উদ্ভাবক অনেক খুজে পাইনি"?
আমি চুপ করে তখন শুনছিলাম। "টাওয়ারের ওপরে বালু দিয়ে আঁক কষছিল একজন, তাকে দেখিয়ে অক্ষরওয়ালা বললো, ঐ দেখুন আরেকজন, লোকটি কিন্তু আপনাদের দেশী, যদিও দেশ তৈরী হবার আগে উনার জন্ম। লোকটা মারা গেছে ৪০০ খ্রীষ্টপুর্বে। দারুন রসিক লোক। তাকেও মনে হয়না কেউ চেনে, সে বন্ধুদের হিসাবের সুবিধার জন্য একটা চিহ্ন ব্যবহার করে নাম শূণ্য। তার এত ব্যবহার, কিন্তু কোন বইতে তার নাম নেই। এই শূণ্য থাকায় আজকে শত শত গনিতবিদদের কাজ হচ্ছে, ব্যাংক কলকারখানা হিসাব রাখছে"।
তারপর তিনি বললেন,
"এই টাওয়ারটা মৌমাছির চাকের মতো - উপরের তলার লোকগুলো জটিলতর কাজ করছে কিন্তু নিচের তলার অবদান ছাড়া তারা অচল"।
এবার উস্কুখুস্কু লোকটা মুখ খুললো, "অনেকের নাম থাকে ইতিহাসে অনেক সময়ই ভুল থাকে। যেমন শেক্সপিয়ার বলে কাউকে পাবেন না। ওটা সম্পূর্ণ কাল্পণিক। ফয়সাল বুঝতে না পেরে বললো "মানে?"। লোকটা জবাব দিল, "ও দিকে কত শত ইংরেজ সাহিত্যিক লিখে চলেছে। তাদের সত্যিকারের পরিচিয় কারো জানা নেই । কারো মতে তাদের ভেতর একজনের নাম শেক্সপিয়ার অথবা অন্যরা বলছে সবাই একই নামে লিখেছে। সেটা নিয়ে জীবিতরা হৈচৈ করছে, কিন্তু মৃতদের জগতে কারও অভিমান নেই"।
ফয়সালকে অভিনন্দন জানাতে অনেক নাম না জানা নারী পুরুষ সেতু বেয়ে এগিয়ে এল ।
একেবারে নিচ তলা থেকে একজন ফয়সালকে বললো, "শুনেছি আপনি অল্প কিছুদিন আগে এসেছেন। কেমন আছে আপনার দেশের লোকজন?"।
আমি উত্তর দেয়ার আগে উস্কুখুস্কু চুলের বলে উঠলো, " বাস, গাড়ি রিক্সা, রেলে..এরকম যানবাহনে সবাই এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছে, এক কথায় চাকা ছাড়া পৃথিবী অচল। এই ভদ্রলোক চাকার আবিষ্কারক করেছিলেন অথচ তার নাম ইতিহাসে অনুপস্থিত"।
ফয়সাল দেখতে পায় এভাবে অনেক লোক নাম পরিচয় ছাড়া কাজ করে যাচ্ছে। কেউ কেউ নাম বলতে অনিচ্ছুক। ততক্ষণে নিজের কষ্টটা কেটে গিয়ে লজ্জা লাগতে শুরু করেছে। বাঙালীদের অংশটা সে একটা দুরবীন দিয়ে দেখতে থাকে। কত শত সাহিত্যিক, কবি,জ্যোতির্বিজ্ঞানী, চাষী, বাউল, সাধক, গায়কগায়িকা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে। লালন, হাসন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল ছাড়া অন্যদের নাম তার জানা নেই। ভারত, আরব,গ্রীস,ইউরোপের অঞ্চলে দুরবীন ঘুরিয়ে দেখলো সেখানেও শত শত লোক কাজ করে যাচ্ছে। কাজের ফলে টাওয়ারটা ক্রমেই বড় এবং সমৃদ্ধ হচ্ছে। সবাই ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে ফয়সালকে দেখে যাচ্ছিলো। এভাবে সারাদিন ধরে অনেক নাম না জানা আবিস্কারক, লেখক, দার্শনিকের সঙ্গে পরিচয় হলো ।
রোদ হেলে পড়ছে । ফয়সাল সবাইকে বিদায় জানিয়ে চলে আসতে চাইছো। সে দেখলো উস্কুখুস্কু লোকটাকে সবাই ভীষণ শ্রদ্ধা করে।
চাকা আবিস্কারক ফয়সালর দিকে তাকিয়ে বললো, "আমরা এত কিছু আবিষ্কার করেছি, রচনা করেছি অথচ কোনটাই সম্ভব হতোনা উনি যদি আগুন আবিষ্কার না করতেন"।
ফয়সাল চমকে উঠল। সে ভাবলো, আরে, এতবার সবার পরিচয় জেনেছে অথচ যে তাকে এই টাওয়ার দেখাতে আনলো তার পরিচয়ই জিজ্ঞেস করা হয়নি। চাকা আবিষ্কর্তা পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন এটা ফয়লালের সঙ্গীকে লজ্জিত করে দিল। যেন পরিচয় না জানালেই সে খুশী হতেন।
ফয়সাল বাকরুদ্ধ অবস্থা থেকে ফিরে স্বাভাবিক হয়ে বললো, "এতক্ষণ যার সঙ্গে আছি উনি কি তবে প্রমিথিউস? যে বিধাতার কাছ থেকে আগুন চুরি করে এনেছিল তারপর সেই আগুন মানুষকে উপহার দিয়েছিল?"।
একজন নামহীন গ্রীক কবি সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করলো, "না, না, তা কেন হবে? প্রমিথিউস বলে যাকে তোমরা চেন উনি নিছক ভুল। মানুষকে কোন বিধাতাই হাতে আগুন তুলে দেয়নি। ইতিহাসে তার নাম হারিয়ে গেছে বলে প্রমিথিউসের কল্পিত চেহারা আগুনের কৃতিত্ব পেয়েছে। "।
*
আগুনের আবিষ্কর্তা ফয়সালকে আজিমপুর কবরস্থান পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন। লোকটি যাবার সময় ফয়সালকে বুকে জড়িয়ে ধরলোন। বার বার এতগুলো সুন্দর গল্প দিয়ে সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করার জন্য ধন্যবাদ দিলেন। তারপর বলতে থাকলেন,"এইযে সুবিশাল টাওয়ারটা দেখেছেন, এ পুরো মানবজাতির গর্ব। আমার আগুনে স্ফুলিংগ হয়তো একদিন তার শুরু কিন্তু সেই আগুনকে হাজার লক্ষ বছর ধরে বাঁচিয়ে রাখছে অসংখ্য নাম জানা না জানা মানুষ। টাওয়ারটাকে অবশ্য আমরা সভ্যতা নামে ডাকি"। আগুনের আবিষ্কারকের দেরি হয়ে যাচ্ছিল। তিনি বললেন, "ফয়সাল, আজ চলি, অন্যত্র যেতে হবে"। ফয়সাল তার চলার পথে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো।
ততক্ষণে ফয়সালের পাশে আরো কয়েকজন মৃত লোক এসে জড়ো হয়েছে । একজন তাকে বললো, "এই আগুনগুরু মৃতদের মন ভাল করতে এত ব্যস্ত থাকেন! অথচ আগুন আবিষ্কার করার সময় সেই আদিম জঙ্গলে সঞ্চিত শুকনো কাঠের স্তুপে ভুল করে আগুন ধরে যায়, আর তার গোত্রের সবাইকে সে চিরতরে হারিয়ে ফেলে। তার চোখের সামনে পড়েছিল বিভৎস ভাবে দগ্ধ জনক এবং জননী"
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:০১
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ! প্রথম প্লাসের জন্য
২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:১৮
শিমুল আহমেদ বলেছেন: অসাধারন গল্প। ভাল লাগল অনেক।
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:০১
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:২১
বলাক০৪ বলেছেন: কাজের ফাঁকে পুরা শেষ করতে পারলাম না। লান্চ অবসরে পড়ার আশা রাখি। নতুনত্বতো আছেই আর আপনার ভাষা সবসময়েই উন্নত (ঝন্টুর মত!)।
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৪
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: বেশ লম্বা হয়ে গেছে। হয়তো ভেঙে দিলে পড়তে সুবিধা হতো - সময় করে পড়লে কৃতজ্ঞ থাকবো।
৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১২:৩৫
কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: নতুন ধরনের লেখা। ভাল লেগেছে।
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৪
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ কাঙ্গাল মুরশিদ। ব্লগে স্বাগতম
৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:০১
রেশাদ১০৬ বলেছেন: এক নিঃশ্বাসে শেষ করলাম। সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী বিষয়ে লেখা। খুব ভাল লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ।
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৫
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ দীর্ঘ রচনা একবারে পড়ে ফেলার জন্য। ভাল থাকবেন।
৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ২:৩২
সোমহেপি বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।ভালো লাগলো।
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৬
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: আপনার বুকমার্কগুলো দেখছিলাম। আপনার কাছ থেকে ভাল শুনলে একটু বেশী খুশী হয়ে যাই।
ভাল থাকবেন।
৭| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৪:৫৫
আবদুল্লাহ আল মনসুর বলেছেন: দারুণ লাগলো বস। +++
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৬
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৮| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:০৫
জুন বলেছেন: অদ্ভুত সুন্দর তোমার লেখনী স্বদেশ কিছু বলার নেই আমার ।খালি বলবো প্রচন্ড এক ব্যাতিক্রম ধর্মী গল্পো লিখেছো যা এই ব্লগে কেন অন্যত্র ও বিরল।
অনেক প্লাস দিলেও প্লাস বলা হবেনা।
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৮
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: আমার নিজের জন্যও একটু অন্যরকম এটা। অনেক দিন পর লিখেও মজা পেলাম।
ভাল থাকবেন জুন।
৯| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:২৮
মদন বলেছেন: অসাধারন
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:০৯
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ
১০| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৪৭
অন্ধ আগন্তুক বলেছেন: এতো বেশী চমৎকার গল্প নিয়ে বলার কিছু নেই ! সেটা ধৃষ্টতা হবে , কতটা বেশী ভালো লাগা সেটা প্রকাশে আমি অক্ষম !
ব্লগে যে কজনের লেখা পড়ে মনে হয় , ভাগ্যিস পড়তে শিখেছিলাম , স্বদেশ হাসনাইন তাদের প্রথম দিকের একজন !+++++++
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১২
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন:
আবারও আপনার মন্তব্যে অনুপ্রেরণা পেলাম।
লেখার সময় ছদ্মনাম নিয়ে ভাবতে গিয়ে মনে হলো অন্ধ আগন্তুক নাম নিয়ে অনুবাদের চশমায় চোখ খুলে দিচ্ছেন কতজনকে...
১১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৮:২৯
ইমন জুবায়ের বলেছেন: অসাধারন।++
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৪৬
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, ইমন জুবায়ের
১২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:১৩
মেহবুবা বলেছেন: ১০০ তম গল্প । নি:সন্দেহে আপনার সব কাজের মত এটাও অসাধারন । আরো ভাল হত বিষয় ১০০ তম নির্বাচনে অন্যরকম হত যদি । আনন্দ , উচ্ছ্বাস তেমন কিছু আশা করেছিলাম ।
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৫৩
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: মেহবুবা, একটু স্লো মানুষ হয়তো - খুব আনন্দ উচ্ছাসের বিষয় আমাকে দিয়ে হয় ভাল না। লেখাটায় শেষে একটা কষ্ট আছে (অগ্নি আবিষ্কারকের ..) এটা বাদ দেয়া উচিত কিনা ..নিশ্চিত ছিলাম না।
তবে আমি নিজে খুব আনন্দ পেয়েছি থীমটাতে কাজ করে। রবীন্দ্রনাথের আরোগ্য কবিতার পড়তে গিয়ে ..এর শুরু
অনেক ধন্যবাদ।
১৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:১৭
সকাল রয় বলেছেন:
খুব সুন্দর লেখা ++
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৫৫
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন:
সকাল রয় - আপনার পাঠে ধন্য হলাম।
১৪| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৪১
রাজসোহান বলেছেন: সেঞ্চুরি গল্পটা একদমই অসাধারণ হল
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৫৫
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাল থাকবেন।
১৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৯:৫৫
নিমা বলেছেন: অসাধারনন সুন্দর
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৫০
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: নিমা। আপনাকে আগের মত দেখি না। পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:১৪
মিরাজ is বলেছেন: অসাধারন ভাই, অনেক ভাল লাগল............
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৫০
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ মিরাজ
১৭| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:২৯
শায়মা বলেছেন: আমার জানাজায় কোন বিখ্যাত কেউ আসেনি। পত্রিকায় নাম ছাপা হয়নি। অথচ অপিনিহিতি মারা গেলে শুনলে নিশ্চিতভাবেই এটা পেপারে হেডলাইন হতো । আমার সঙ্গে আমারই ছদ্মনামের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আমি হেরে গিয়েছিলাম।
কথাটা খুব মনে ধরে গেলো।
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৫৪
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: শুধু এটুকুই মনে ধরেছে?
১৮| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:০৪
শূণ্য উপত্যকা বলেছেন: খুব সুন্দর গল্প++++++
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:০৫
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, শূন্য উপত্যকা
১৯| ০৯ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:৪২
দীপান্বিতা বলেছেন: অন্য ধরনের গল্প পড়া হল...খুব ভাল লাগল
১০ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৩৬
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ দীপান্বিতা। বলাবাহুল্য আপনার পোস্টের থীমগুলোও কিন্তু ভাল লাগে .
২০| ১০ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১১:৪৮
ত্রাতুল বলেছেন:
একটু বড়। কিন্তু পড়তে একটুও কষ্ট হয়নি। এক কথায় অসাধারণ।
কবে যে এরকম করে লিখতে পারব?
১০ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৩৮
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: লেখাটা আসলে একটু বড়ই। সংক্ষেপে অল্প কথায় লিখতে আরো কিছু অভিজ্ঞতা লাগবে। যা ইচ্ছে লিখে যাওয়া তো সোজা - গুণে উন্নত করা অনেক শেখার ব্যাপার।
২১| ১০ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:০৫
মাহী ফ্লোরা বলেছেন: এইটা কি পড়লাম!ওহ অসংখ্য ধন্যবাদ।আর ১০০ তম গল্পের জন্য শুভকামনা।ভাল থাকবেন।+++
১০ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:৩৯
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক।
২২| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ২:৫২
নৈশচারী বলেছেন: প্লটটা বেশ চমকপ্রদ! এটাই কি আপনার ১০০তম গল্প? বোঝাই যাচ্ছে অনেক খানি যত্ন নিয়ে লিখেছেন! আপনার লেখনীর পারদর্শীতা নিয়ে তো নতুন করে কিছু বলার নেই! বরাবরের মতই চমত্কার! সামুতে আপনার গল্পের ভক্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে!
১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪৪
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন:
অনেকের ব্লগে কপিরাইট নোটিস দেখে নানাবিধ প্রশ্ন হয়। নিজের নাম ইতিহাসে রেখে যাওয়া কতটা জরুরী? নাকি কাজ? যদি আমার নাম না থাকে কোথাও - কিন্তু একটি সামান্য গল্পের অংশ বা কবিতা অনেক বছর বেঁচে থাকে, তাহলে কি খুব অসম্পুর্ণ কিছু? এরকম ভাবতে গিয়ে মনে হয় ছোটবেলায় হাটটিমাটিমের যে ছন্দ সারাজীবন হৃদয়ে বয়ে বেড়াই তার কপিরাইট কোথায়? কে লিখেছে?
ব্লগে দিনে পাঁচ দশটি করে পোস্ট দিতে পারে এমন ব্লগার অনেক। সুতরাং সংখ্যায় বাড়তে থাকা খুব বড় কিছু মনে হয় না।
২৩| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৩:০১
হাসান মাহবুব বলেছেন: উপভোগ্য একটা গল্প। চমৎকার। আপনার অন্য গল্পগুলোর চেয়ে বেশ আলাদা।
১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪৫
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার কাছ থেকে মন্তব্য শুনে খুব ভাল লাগলো।
২৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ৩:০৫
রাত্রি২০১০ বলেছেন: একদম আলাদা--চমৎকার!
অনেক যত্নে গাঁথা সভ্যতার গল্প মনে দেয় ক ত ক্ষুদ্র আমরা, কত ছোট্ট আমাদের চাওয়া পাওয়া। কালের ঘড়িতে আমাদের স্থায়িত্ব পলমাত্র।
খুব ভাল লাগল। এটা কি শততম? অফুরান অভিনন্দন!
১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪৫
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: এটা শততম পোস্টের উপলক্ষে দেয়া। অনেক ধন্যবাদ। আপনার শেষ গল্পটা খুব ভাল লাগলো।
২৫| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:০৭
পাপতাড়ুয়া বলেছেন: ব্যতিক্রমী প্লটে অনন্যসুন্দর গল্প বাড়ি।
১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:১০
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ পাপতাড়ুয়া।
২৬| ১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:২৬
আবদুর রাজ্জাক শিপন বলেছেন:
মুগ্ধতা ।
১২ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:৫৬
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ!
২৭| ১৪ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:৪৬
পারভেজ বলেছেন: অনেক চমৎকার অন্যরকম এখটা গল্প!
নামকরনের এই যুগে ভাবনাগুলিকে বদলে দিতে চায় লেখাটা!
খুব ভালো লাগলো। আরো বিস্তৃতভাবে লেখাটা হয়ে উঠতে পারে চমৎকার একটি 'ফার্স'।
৩১ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৫:১৭
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ পারভেজ। ফার্স শব্দটি নতুন, গুগলে খুঁজে দেখি জিনিসটা কি
২৮| ১৬ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১২:৪৫
জনৈক আরাফাত বলেছেন: ব্যতিক্রমীভাবে দারুণ।
চমতকার সময় উপহার দেবার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
৩১ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৫:১৯
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: আরাফাত ..সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ
২৯| ১৬ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:০৮
লিপিকার বলেছেন: দারুন! দারুন! দারুন!
গল্পটা যেন মুহুর্তেই শেষ হয়ে গেল। অসাধারন!
৩১ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৫:২০
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ লিপিকার
৩০| ১৬ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ১:০৮
কায়কোবাদ বলেছেন: ব্যাতিক্রম...সাবলীল...সুন্দর... এককথায় চমৎকার!!!
৩১ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৫:২১
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: পাঠ করার জন্য অশেষ কৃতজ্ঞতা রইল
৩১| ৩১ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৫:০৪
ফেরদৌস রহমান বলেছেন: এক নিশ্বাসে শেষ করলাম অসাধারণ।আপনাকে সালাম ও শ্রদ্ধা।
৩১ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৫:২১
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: আপনাকেও ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য অনেক কৃতজ্ঞতা।
৩২| ৩১ শে আগস্ট, ২০১০ ভোর ৫:৫৩
লাবিব ইত্তিহাদুল বলেছেন: এই গল্প আপনার মাথায় আইল কেমটে ?? !!!!
আস্বাধারণ... চরম মোরাল। আরো লিখেন। অনেক বড় মাপের লেখক হন, এই দোয়া করি।
কিন্তু, ডাবল স্টেন্ডারট ধারী যেন না হোন।
৩১ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ৮:৫২
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন:
বড় মাপের লেখক না হলেও চলবে অ্যামিবা না হলেই খুশী
Click This Link
কিন্তু, ডাবল স্টেন্ডারট ধারী যেন না হোন
অনেকদিন পর একটা আশির্বাদের মতো পেলাম। যদিও ডবল স্ট্যান্ডার্ডই আসলে স্ট্যান্ডার্ড যেমন কমনসেন্স সবচেয়ে আনকমন।
৩৩| ৩১ শে আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:৫১
এ.কে. শারমিন বলেছেন: আমি শিহরিত। গল্পের শুরুতে আমি বুঝতেই পারি নি লেখা এই দিকে মোড় নেবে। খুবই সুন্দর চিন্তা। এ রকম একটি লেখা পড়ে আমি ধন্য।
৩১ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:০২
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ধন্যবাদ অনেক। পড়ার জন্য
৩৪| ৩১ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১০:২১
লাবিব ইত্তিহাদুল বলেছেন: হুম, বুঝলাম। বাপপন্থী।
৩১ শে আগস্ট, ২০১০ রাত ১১:০৩
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: ঠিক ঠিক। আমার বাবা আদর্শের মানুষ। তার পন্থায় চলতে পারলে জীবন ধন্য। ভাল থাকবেন।
৩৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১২:৫৮
যীশূ বলেছেন: ভালো লাগলো লেখাটা
০৩ রা নভেম্বর, ২০১০ দুপুর ১:০১
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় লেখক
৩৬| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৫২
আহাদিল বলেছেন: ভিন্নরকম একটা গল্প, অসাধারণ প্লট।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১:৫০
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
৩৭| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:১৪
রেজওয়ান তানিম বলেছেন: মুগ্ধপাঠ। অনেক দিন আগে লিঙ্ক দিয়েছিলেন মনে আছে নিশ্চয়ই ?
আমি আজ এটা পড়লাম
ঝরঝরে এবং অনেক অর্থবহ, চমৎকার এক গল্প
প্রিয়তে রাখলাম
সবচেয়ে মজা লাগল, এখানে যাদের কমেন্ট দেখছি বেশিরভাগই এখন আর নিয়মিত নন
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ৮:১২
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ তানিম। এটা আমার নিজের প্রিয় গল্পের একটা
৩৮| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:৫১
নাঈম আহমেদ আকাশ বলেছেন: শেষে গিয়ে একটা ধাক্কা খেলাম ।
গল্পটা সত্যি ই অসাধারণ । প্লট টা চিন্তা করার উৎস কি ভাই?
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:৩০
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন:
অনেক ধন্যবাদ আকাশ
প্লটটা উৎস নেই কিছু । মৌলিক গল্প - এ যে আমাদের কপিরাইট ইত্যাদি নিয়ে অহংকার মানে ঋণ করে পাওয়া লক্ষ জনের জ্ঞান কে বেমালুম অস্বীকার করা।গ
৩৯| ১৪ ই মার্চ, ২০১২ রাত ১০:২৮
শহিদুল ইসলাম বলেছেন: গল্পটা মগজে গেথে গেল ।
বেশ ব্যতিক্রম লাগল গল্পটা , ভালো লাগল । গল্প নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই ।
২০ শে মার্চ, ২০১২ রাত ১১:৫৯
স্বদেশ হাসনাইন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ শহিদুল
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই আগস্ট, ২০১০ সকাল ১০:৫১
কঠিনলজিক বলেছেন: অসাধারন লিখেছেন । গল্পের প্লট আর মুরাল দুইটাই একদম ব্যাতিক্রমী ।