![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চাই মিথ্যার নাশ, চাই সত্যের উন্মেষ, চাই শান্তির পৃথিবী
জানিনা সবারই কি এমন মনে হয় কিনা বা কারো চিন্তায় এসেছে কিনা সেটাও বুঝতে পারছিনা । তবে এটা নিশ্চিত যে, যেহেতু আমার চিন্তায় ব্যাপারটা বারবার এসেছে সেহেতু সবারই না আসুক, সমগ্র পৃথিবী ঘুরে বেশ কয়েকজন পাওয়া যাবে যারা ব্যাপারটাকে আমার মতোই ভেবেছে বা ভাবছে । এ ভাবনা কতটুকুন বোকামির সেটাও আন্দাজ করতে পারছিনা । বোকারাইতো বোকামি করে । আমিও না হয় করলাম ।
বিজ্ঞান-প্রযুক্তি আমাদের অনেক দিয়েছে । প্রতিনিয়ত দিয়েই যাচ্ছে । অথচ তার হর্তা-কর্তা কিন্তু আমরাই । বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সরাসরি ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকগুলো প্রত্যাখান করে আমি মূলত সাময়িকভাবে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে এর প্রগতির দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছি । যে প্রগতির কথা বলছিলাম, তা আজ লাগামহীন ঊর্ধগামী পাগলা ঘোড়াতে রূপ নিয়েছে । আর সে পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় চড়ে আমরা যে কোথায় যাচ্ছি, তা মুহূর্তেই ভুলে যাচ্ছি । কারণ কিছুই না, ঘোড়ার দ্রুততায় সময় স্থির হয়ে গেছে । অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যত মিশে একাকার । সে একাকারে আমাদের স্মৃতিশক্তি ঠাওর করতে পারছেনা । হ্যা, আমরা যে সভ্যতায় অবস্থান করছি, সেই সভ্যতারই যান্ত্রিক প্রগতির কথা বলছি ।
মেধা আর শ্রম; এ দুটোর উপরই বর্তমান সভ্যতা অহংকারে বুক ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছে । আজকের যে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, সেটাও । মানুষ ব্যতীত পৃথিবীর বা ভিনগ্রহের অন্য কেউ সেই মেধা আর শ্রমের দাবির অধিকার রাখেনা । অর্থ্যাৎ আমাদের মেধা ও শ্রমের সমন্বয়ই হলো আজকের সভ্যতা (যদিও সভ্যতা বলা মোটেও যৌক্তিক নয়, কারণ আজকের দুনিয়ায় সভ্য ও সভ্যতার মধ্যে বিস্তর ফারাক, তবু বললাম বুঝার খাতিরে । বর্তমান সাপেক্ষে সভ্যতার পরিবর্তে যান্ত্রিক প্রগতি বলাই উত্তম) ।
আমাদের মেধা আর শ্রম দিয়েই আমরা কম্পিউটার আবিষ্কার করেছি । ইন্টারনেট আবিষ্কার করেছি । রোবট আবিষ্কার করেছি । এরকম আরো কী কী আবিষ্কার করেছি, তার হিসেব কি দেয়া সম্ভব? অবশ্যই না । প্রয়োজনীয়তার তাগিদে মানুষ নিত্যনতুন কলা-কৌশল আবিষ্কারের নেশায় মত্ত, আবিষ্কার করছেও । কিন্তু এখানেই থেমে থাকেনি উদ্ভাবন অভিযান । কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটাও কেউ জানে না ।
জীবনের অমূল্য সম্পদ হলো সময় । সেই সময়ের যথার্থ ব্যবহার ও সঞ্চয়ের জন্য আমরা কত কিছুই না করেছি এবং প্রতিদিনই করে যাচ্ছি! যানবাহন, অ্যাবাকাস, ক্যালকুলেটর, কম্পিউটার, মোবাইল, ফ্যাক্স, লিফট, স্যাটেলাইট, ইন্টারনেট এরকম আরো অজস্র কিছু আবিষ্কার করেছি । আবিষ্কার করেও ক্ষান্ত হইনি আমরা । জোরগতিতে চলছে সেগুলোর গতি ও সুবিধা বৃদ্ধি এবং সহজলভ্য হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ ও কার্যক্রম । তাইতো সময়ের প্রেক্ষিতে আমরা দেখেছি এবং দেখে যাচ্ছি এসবের চেইন পরিবর্তনঃ স্লেজগাড়ি থেকে বাষ্পীয় ইঞ্জিনগাড়ি, বাষ্পীয় ইঞ্জিনগাড়ি থেকে পেট্রোল ইঞ্জিনগাড়ি, বাইসাইকেল থেকে মোটরসাইকেল, বাস-ট্রাক থেকে ট্রেন, ফানুস থেকে এরোপ্লেন, এরোপ্লেন থেকে রকেট, অ্যাবাকাস থেকে ক্যালকুলেটর, ক্যালকুলেটর থেকে কম্পিউটার, আর্পানেট থেকে ইন্টারনেট প্রভৃতি । এতো গেলো সময়কেন্দ্রিক আমাদের প্রচেষ্টার সাফল্য । আর একটু আরাম-আয়েশ আর ভোগবিলাসিতার জন্য আমরা আজ এমন কিছুর আবিষ্কার করেছি যা আমাদের পূর্বপুরুষেরাই তার অর্ধাংশ দেখেনি; আগের রাজ-রাজারা দেখবে তা বহুদূরের প্রসঙ্গ ! খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থান-চিকিৎসা-শিক্ষা সবখানেই লেগেছে আধুনিক থেকে আধুনিকায়নেরর গভীর মনোযোগে তুলির শৈল্পিক ছোঁয়া । সর্বত্রই আজ বিজ্ঞান-প্রযুক্তির জয়জয়কার সাফল্য । কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছি, যান্ত্রিক প্রগতির এ সাফল্য শুধুই তার, প্রকৃত অর্থে আমাদের নয়? কেনো নয় তা জানার আগে আমাদের জানতে হবে, কেনো আমরা যান্ত্রিক প্রগতির সৃষ্টি করেছি? কেনো সেই প্রয়োজনীয়তা? উত্তর হলো সময় বাঁচানো ও জীবনকে সহজ-সরল করা সাপেক্ষে আরাম-আয়েশ-শান্তিতে জীবনকে উপভোগ করা । জানি উত্তরটা সবারই জানা, তবে সেই উত্তরের বোধগম্যতার সাথে গ্রহণযোগ্যতার বলতে গেলে কোনো সম্পর্কই নেই । নেই বলেই আজও আমরা অন্ধের ন্যায় যান্ত্রিক প্রগতির পিছনে অবিরত ছুটে সহজ-সরল জীবনটাকে কঠিনে পর্যবসিত করছি এবং প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি । এতোকিছুর পরেও আমরা না পেরেছি সময় বাঁচাতে, না পেরেছি প্রকৃত অর্থেই শান্তিতে জীবন উপভোগ করতে, বরং আমরা দিনেদিনে আরো বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ছি, জীবনযাত্রার ব্যায়ভারও বেড়ে চলেছে সমানতালে । যতোটুকুন প্রয়োজন তার সীমারেখা অতি্ক্রম করে স্বর্গের গন্ধক ফল ছেঁড়ার মতো অপরাধ করে ফেলেছি । সে অপরাধই হয়তো আমাদেরকে যান্ত্রিক প্রগতি কেন্দ্রিক সিস্টেমে নিক্ষেপ করেছে, যেভাবে স্রষ্টা নিক্ষেপ করেছিলো আদমকে এই পৃথিবীর মাঝে । সেই সিস্টেমের মধ্যে থেকে আমরাও পারছিনা নিজেকে যান্ত্রিক প্রগতির কড়ালগ্রাস থেকে ছাড়াতে ।
এভাবে চলতে থাকলে খুব বেশিদূর নয়, যেদিন কলকারখানা থেকে মানুষ শ্রমিককে লাত্থি মেরে বের করে দেবে রোবট সোসাইটি; যেদিন মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডিসপ্যান্সারি, চিকিৎসা গবেষণাগার থেকে ডাক্তার-ফার্মাসিস্টদের মুখে থার্মোমিটার গুঁজে দিয়ে বের করে দিবে মেডিসিন ও সার্জারি প্রোগ্রাম্যাবল কম্পিউটার অর্থ্যাৎ রোবট চিকিৎসক; যেদিন ব্যাংক-বীমা-বিভিন্ন থানা-অফিস-কোর্ট-জেল-হাজত থেকে মানুষ নামক উচ্ছিষ্টদের ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করবে প্রোগ্রাম্যবল কম্পিউটার; যেদিন সফটওয়্যার-মেকানিকাল-ইলেকট্রিকাল-রোবটিকাল-অ্যারোনিটিকাল-মাইনিং-শিপইয়ার্ডিং ইঞ্জিনিয়াররা হয়ে যাবে অচল,বেকার; যেদিন মানবশিক্ষকের মূর্তি লুভরের মিউজিয়ামে শোভা পাবে; যেদিন মানুষের কানে, হাতে এককথায় সারা শরীরে সেট করা হবে বায়োমেটালে তৈরি বিভিন্ন ডিভাইস; যেদিন মানুষ পাচ্য খাবারের পরিবর্তে ক্যাপসুল খেয়ে জীবনধারণ করবে; যেদিন মানুষ মেধাশূণ্য অলস-শ্রমহীন-নিস্তেজ হয়ে পড়ে রবে আইসিইউ-তে অথবা শুয়ে শুয়ে ফ্ল্যাট মনিটরে দেখবে অলিম্পিকের বিভিন্ন ইভেন্ট, যেখানে আয়োজক-উদ্যোক্তা-অংশগ্রহণকারী সবাই রোবট । সেদিন খুব দূরে নয়, সীমালঙ্ঘনের কারণেই আমরা মানুষ হবো রোবটের দাস, কাটাতে হবে কঠিন থেকে কঠিনতর ইহলৌকক জীবন; পারলৌকিক জীবনটা না হয় হিসেবের বাইরেই রাখলাম । সৃষ্টির দাস হওয়াটা কি স্রষ্টার কাছে খুব গর্বের?
*******
যদি কেউ এ পর্যন্ত এসে আমাকে প্রশ্ন করেন, এখন কি তার সমাধান নেই? কেবলমাত্র তাদের জন্য নিম্নোক্ত লেখাটিঃ
আমি বলবো আছে । প্রাকৃতিক হয়ে যাওয়া ছাড়া আমাদের দ্বিতীয়টি উপায় নেই । প্রাকৃতিক হয়ে যাওয়ার অর্থ এ নয় যে, আপনাকে আমাকে গুহায় গিয়ে গাছের ছালচামড়া বা উলঙ্গ হয়ে দিনাতিপাত করতে হবে । সেরকমটি আমি বলছিও না । কারণ, আমি কেনো, স্বর্গের দেবদূত এসে বললেও পৃথিবীর তাবৎ মানুষ বর্তমান বিজ্ঞান-প্রযুক্তির লাগামহীন যান্ত্রিক প্রগতি থেকে একচুল পরিমাণ সরে দাঁড়াবেনা । তাই ওরকমটি ভাবার অবকাশ নেই, বরং প্রাকৃতিক হয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে স্রষ্টার দেয়া জীবনব্যবস্থায় দিনাতিপাত করা । এখানে যেমন ভারসাম্য আছে, তেমনি আছে সীমারেখার চিত্র । এক স্রষ্টার দেয়া জীবনব্যবস্থায় আছে ইহলৌকিক চাওয়া-পাওয়ার সীমারেখা । কারণ যার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যই স্রষ্টার সন্তুষ্টি অর্জন, আর যাই হোক, সে পার্থিব ভোগবিলাসিতায় ডুবে থাকতে পারেনা, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কিছুর দাস হওয়াতো দুরের কথা । স্রষ্টার দেয়া জীবনব্যবস্থা মেনে নেয়ার কারণে এভাবেই মানুষ যান্ত্রিক প্রগতির হাত থেকে ছুটে তার দৃষ্টিগোচরে প্রকৃতির সাথে ধীরে ধীরে ভারসাম্যপূর্ণ হয়ে যাবে । তখন না ভয় থাকবে মেধাশূণ্য হয়ে যাওয়ার, না ভয় থাকবে সৃষ্টির দাস হওয়ার । এটাই মানুষের সত্যিকারের প্রাকৃতিক অবস্থা ।
১৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৮
স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: হুম ! অন্তত নিজেদের জন্যই ভাবতে হবে । কিন্তু আমাদের ভাবনা ঐ ভাবনা পর্যন্তই । তাই ভাবুকের এতো ভাবনায় কোন কিছুর আর পরিবর্তন হয় না ।
মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ।
২| ১৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:২৬
আদম_ বলেছেন: আমি ভেবেছি আপনার মতো।
১৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৩
স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: দৃঢ়বিশ্বাস আছে যে আমার মতো অনেকেই এ ব্যাপারে ভেবেছে এবং ভাবছে । ভাবনায় উৎসাহ পেলাম এই ভেবে যে আমার ভাবনা পৃথিবীর মধ্যে আপনিও একজন ।
৩| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:৩২
খেলাঘর বলেছেন:
ভাবছেন, কি নিয়ে ভাবছেন?
১৬ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:৫৭
স্বপ্নাতুর পুরব বলেছেন: আপনার এ প্রশ্নে বুঝে নিতে হবে, হয় আপনি আমার লেখাটা পড়েন নি অথবা আমি এ লেখার মাধ্যমে আমার প্রত্যাশিত মনের ভাব প্রকাশ করতে পারিনি । এ দুটোর যেকোন একটা ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৫
এমএম মিন্টু বলেছেন: ভবিষৎ নিয়ে আসলে ভেবে দেখতে হবে