![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চাই মিথ্যার নাশ, চাই সত্যের উন্মেষ, চাই শান্তির পৃথিবী
[জোর করে কাউকে মেনে নিতে বলছিনা । এটা কেবল মৃত্যু নিয়ে আমার ব্যক্তিগত স্বাপ্নিক মৃত্যুর অভিজ্ঞতা ]
মৃত্যু আসলে কী?
আমরা যাকে মৃত্যু বলে জানি সেটা কিন্তু আত্মার মৃত্যু নয়, স্রেফ আত্মা ও দেহের মধ্যে বিচ্ছেদ মাত্র । আত্মা অক্ষয়, অব্যয় । তার কোনো বিনাশ নেই । পৃথিবীর উপাদান, প্রকৃতি ও আবহাওয়ার উপযোগী করেই আমাদের দেহকে বানানো হয়েছে । তাই আমাদের দেহের সাথে পৃথিবীর রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক । যখনই দেহ আত্মাধারণে ব্যর্থ হয় তখন দেহের মধ্যে বিভিন্ন রোগ-শোকের উপসর্গ দেখা দেয় । শেষতক দেহের টান মাটিতে মিশে গিয়েই ক্ষান্ত হয় । দেহ ফিরে তার আপন নীড়ে । (তাহলে আত্মা কোথায় যায়? এ প্রশ্নের উত্তর আমি দিবোনা । কারণ, এটা দিতে গেলে লেখাটা বিতর্কিত হয়ে যাবে । পাঠক ও লেখকের মধ্যকার আলাপচারিতা মূল প্রসঙ্গ ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি )
মৃত্যু কিভাবে যন্ত্রণাদায়ক হবে?
পৃথিবীতে বসবাস করতে করতে মানুষ যখন পার্থিব ভোগবিলাসিতায় নিমজ্জিত হয়ে যায় তখন তার কাছে মনে হবে পৃথিবীই একমাত্র সবকিছুর গন্তব্য এবং এখানেই শুরু এখানেই শেষ । মৃত্যুর মাধ্যমেই সবকিছুর পরিসমাপ্তি ঘটে । পরবর্তী পরিণাম বলতে কিছুই নেই । পার্থিব এই ভালোলাগা, ভোগবিলাসিতা, স্থায়ীত্বে যারা যতো বেশি বিশ্বাসী তারা ততই পৃথিবীর প্রেমে মুগ্ধ । পৃথিবীর সাথে তার আত্মা ততই আবদ্ধ, ততই আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িত । কিন্তু মৃত্যু মানেই তো পার্থিবের সাথে আত্মার বিরহ, বিচ্যুতি । যার আত্মা পার্থিব সত্তার প্রতি যতো দুর্বল সে মৃত্যুলগ্নে ততোই বিরহে পুড়বে । যতোই অপার্থিব জগতটা তার আত্মাচক্ষুতে স্পষ্ট হবে ততোই সে আফসোস করবে । এই আফসোসের প্রারম্ভিকতায় মিশে থাকবে পৃথিবী ছাড়ার আফসোস আর শেষের দিকে মিশে থাকবে পৃথিবীকে আপনভেবে তাতে আসক্ত হয়ে মূল কার্যসাধন না করতে পারার আফসোস । আত্মার এই আফসোস আমাদের সাধারণ আফসোসের ন্যায় নয় । এই আফসোস মহা আফসোস, মহাদুঃখের কারণ, যার পীড়া দেহে আবদ্ধ আত্মার সহ্য করার ক্ষমতা নেই, যা পার্থিব অবস্থায় থেকে বর্ণনা করার সাধ্যও কারোর নেই । মৃত্যুর যন্ত্রণা মূলত এটাই । রক্তে-মাংসে আঘাত করে আমরা যে যন্ত্রনাদায়ক মুত্যুর কথা শুনে থাকি তা সম্ভব নয় (হয়তো এটা ব্যবহার করা হয়ে থাকে মৃত্যুযন্ত্রনার পরিমাণ নির্ণয়ার্থে), কারণ দৃশ্যজগতে যদি তাই হতো তবে স্বাভাবিক মুত্যুলগ্নে আত্মার বিচ্যুতির সময় শরীর ফেটে রক্ত-মাংস বের হওয়াটা চোখের আড়াল হবার কথা নয় । যেহেতু মৃত্যুটা অদৃশ্য জগতের কার্য তাই মৃত্যুযন্ত্রনাটাও অদৃশ্য জগতের পরিণাম ।
মৃত্যু কিভাবে শান্তিদায়ক হবে?
যার ভোগবিলাসিতা, স্বার্থপরতা, আত্মকেন্দ্রিকতা যতো কম বরং আত্মত্যাগ বেশি; পার্থিব প্রেমের চাইতে অপার্থিব প্রেম বেশি তার আত্মা ততো পবিত্র এবং সে জানে পৃথিবী তার মূল গন্তব্য নয় । তাই তার কাছে পৃথিবী ভালো লাগেনা । এখানে তার দম বন্ধ হবার উপক্রম । মৃত্যু তার কাছে উপহার, পার্থিব জগত থেকে নিস্তার পাবার উপায় । তাই পবিত্র আত্মা মৃত্যুকে ভয় তো পায়ই না, বরং ভাবে কবে মূল কার্য সম্পন্ন হয়ে আপননীড়ে ফেরা যায় । যার কাছে পার্থিব প্রেমই নেই তাকে মৃত্যু কোনো আফসোসের ভয় দেখাতে পারবেনা । মৃত্যু তার কাছে নেশার পেয়ালা । তাই মৃত্যুই তার কাছে শান্তিদায়ক, পরম প্রশান্তির একটা উন্মোচন ।
সে হিসেবে মৃত্যুর আগেই আপনি নিজেই নিজের মৃত্যুকালীন পরিণাম বলে দিতে পারবেন যে, আপনার মৃত্যু যন্ত্রনাদায়ক হবে না শান্তিদায়ক হবে ।
©somewhere in net ltd.