![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কথার পিঠে নতুন কথা চাপিয়ে মজা পাই, কথা কে নাকানি চুবানি খাওয়াতেও বেজায় পছন্দ আমার। আত্মবিশ্বাসের ফানুস সহসাই ফেটে যায়, ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার নজির নেই বললেই চলে। মানুষ কে আনন্দ দেবার শেষ চেষ্টা করতে পারি.।.।।
কথা মত কাজ করে ফেললামঃ আলামিন নামের এক পিকেটারের সাক্ষাৎকার নিলাম।
ঘুম থেকে উঠে হেলতে দুলতে লেগুনায় করে মহাখালী গিয়ে নামলাম। মহাখালী থেকে ডানে বামে না তাকিয়ে সোজা বনানী ১১ নং রোডে অফিসে যেয়ে উঠলাম। কোন রকমে হাজিরা নিশ্চিত করে বেরিয়ে পড়লাম মহাখালীর দিকে একজন পিকেটারের খোঁজে।
মহাখালী আমতলী থেকে চৌরাস্তার মোড় পর্যন্ত পুলিশ রিতিমত গ্ল্যাডিয়েটরের পোশাক পরে সারিবদ্ধ হয়ে দাড়িয়ে আছে।
কোন পিকেটারের বাবারও সাধ্যি নাই, এক দলা তুলাও ছুড়ে মারে। আসে পাশে অনেক্ষন তাকাতাকি করলাম, পিকেটার ধরনের কাও কে পেলাম না। আমার চারিদিকে এই তাকাতাকি কিম্বা এদিক থেকে ওদিকে চলাচল একজন পুলিশের চোখে পড়লো, আমার দিকে কেমন জানি অগ্নি দৃষ্টি দিলেন পুলিশ মহাশয়, শেষে আবার আমাকে পিকেটার না ভাবে! আমি আর অপেক্ষা না করে ছুট দিলাম তেজগাঁওয়ের দিকে।
তেজগাঁও কলেজের সামনে এসে আনন্দে চোখ চক চক করে উঠলো। হরতাল সমর্থিত একটা জালাও পোড়াও টাইপের মিছিল শ্লোগান দিতে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ রাস্তার পাশে মারমুখী ভাবে দাড়িয়ে আছে।
আমি মিছিলের এক পাশে, দোকান গুলো ঘেঁষে দাঁড়ালাম। হঠাৎ মিছিলের মাঝবরাবর থেকে একটা ইটের টুকরা একটা পুলিশের মাথায় এসে লাগলো। শুরু হয়ে গেল, পুলিশ আর মিছিলকারীদের মাঝে ধ্বস্তাধস্তি। এক পর্যায়ে পুলিশ পাকিস্থানি সৈন্যের মত পজিশন নিয়ে রাবার বুলেট ছুঁড়ল কয়েক টা। আমি দিশা না পেয়ে, একটা দোকানের পিছে যেয়ে দাঁড়ালাম।
পুলিশ আর মিছিলকারীরা বিপরীত মেরুতে অবস্থান নিল।
মিছিলকারীরা পুলিশের সামনে টিকতে না পেরে
গাড়ি ভাংচুর শুরু করলো। একটা সি এন জি কে চোখের সামনে ভচকিয়ে দিল।
একটা রিকশাওয়ালার বাম কাঁধে অল্প বয়সী একটা ছেলে এসে লাফিয়ে থাপ্পর বসিয়ে দিল।
রিকশাওয়ালা এইটা কে নিয়ম মেনে, রিক্সা ঘুরিয়ে উল্টা দিকে ফিরে চল্ল।
আমি একজন পিকেটার কেও আলাদা করে পাচ্ছি না, দুই দণ্ড কথা বলব বলে।
ঘণ্টা খানেক পরে পরিস্থিতি একটু শান্ত হলে, একটা চায়ের দোকানে বসে চা খাচ্ছি। খেয়াল করলাম, গলির রাস্তা ধরে সাইজ মত একটা লাঠি হাতে হ্যাঙলা পাতলা একটা ছেলে জরে জরে পা ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। চা টা শেষ না করেই ওর পিছু নিলাম। ও যেদিকে যায়, ওর পিছু পিছু আমি। ছেলেটা কিছুদুর যেয়ে দাঁড়িয়ে পিছন ফিরে তাকাল। আমি দোয়া পড়তে পড়তে কাছে গেলাম।
--ছোট ভাই, ৭নং রোড টা কোন দিকে বলতে পার?
--এইডাই তো ৭ নং। (রক্ত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে)
--(পরের প্রশ্ন কি করবো, বুঝে উঠতে পারছি না, ভয়ে শরীর জমে যাচ্ছে)
--কৈ যাইবেন? বাসা নং কত?
--আসলে কোথাও যাব না,৭ নং রোডে এক বন্ধু আসবে । তা, পুলিশ খুব ঝামেলা করছে তাই না?
--পুলিশ তো আস্তা **** বাচ্চা। ওর বাপেগো কথা শুনে।
--( ততক্ষনে আমি ওর মটিভ বুঝে গেছি, ও জিয়ার সৈনিক) আসলেই, সামনের বার যখন বি এন পি ক্ষমতায় আসবে, তখন যে এদের কি হবে!!
--হেইডা যদি এরা বুঝত তাইলে কি আর এমুন বাড়াবাড়ি করতো?
--আর গাড়ির মালিক গুলাও ! কেন ভাই, হরতালে গাড়ি না বাহির করলে কি হত!
--এর লাইগ্যাইতো একটা সি এন জি ভাংছি। শালা মাদার **।
--এদের লজ্জা নাই, যতই ভাংবা, পরের হরতালে দেখবা মেরামত করে আবার রাস্তায় বাহির করছে! গাড়ি যে পুড়াই ভালোয় করে!
--( ছেলেটা এইবার কোন কথা না বলে আমার দিকে রহস্যের দৃষ্টি দিল, আমার পেটের ভিতরে কেন জানি একটা মোচর মারল, এই বুঝি মাইর খাইলাম, পরিস্থিতি নরমাল করার জন্য আমিই আবার কথা বলে উঠলাম) তা ছোট ভাই, তোমার সাথে কথা বলে অনেক ভালো লাগলো। নাম কি তোমার?
--আলামিন।
--কোন ক্লাসে পড়?
--ক্লাস টেনে।
আর কথা বাঁড়াতে মন সাঁয় দিল না, ক্লাস টেনে পড়া একটা ছেলেকে অনেক বেশি হিংস্র মনে হচ্ছে। বিশ্বজিতের ঘটনাটা চোখের সামনে ভেসে আসলো। প্রানের ভয়ে সাক্ষাৎকার অসমাপ্ত রেখে ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে অফিসের দিকে পা বাড়ালাম।
অথছ, ওকে আজ আমার প্রশ্ন করার কথা ছিলঃ
১) গাড়ি যে ভাংগিস, তোর বাপের কয়টা গাড়ি আছে?
২) বিশ্বজিতের মত মানুষ খুন করলে, দলে কোন পদ পাওয়া সহজ হয়?
৩) গাড়ি ভেদে ভাংগার জন্য কত টাকা করে মজুরি পাস?
৪) আজকে কিসের জন্য হরতাল, এইটা জানিস?
৫) পেশা হিসেবে পিকেটিং এর ভবিষ্যৎ কি ?
২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:১২
ইথান মাহমুদ বলেছেন: চরম ভাই চরম। হরতালের দিন প্রশিক্ষন দেওয়া হয়। ইচ্ছা করলে যে কেউ অংশগ্রহন করতে পারে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৯
আসফি আজাদ বলেছেন: পেশা হিসেবে পিকেটিং -এর ভবিষ্যত খুবই উজ্জ্বল এবং বরাবরই সম্ভাবনাময়...অন্যগুলার উত্তর আমার জানা নাই...