নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হারান সুর

চাঁদোয়া

কথার পিঠে নতুন কথা চাপিয়ে মজা পাই, কথা কে নাকানি চুবানি খাওয়াতেও বেজায় পছন্দ আমার। আত্মবিশ্বাসের ফানুস সহসাই ফেটে যায়, ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার নজির নেই বললেই চলে। মানুষ কে আনন্দ দেবার শেষ চেষ্টা করতে পারি.।.।।

চাঁদোয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে সমস্যা কি?

১৯ শে জুন, ২০১৩ দুপুর ১:১২

বেশ কিছুদিন ধরে ভার্চুয়াল থেকে রিয়েল জগৎ ,সব জায়গায় একটা শব্দ বেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে “টিকফা”।মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা কাঠামো (টিকফা) চুক্তির খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে গত সোমবার। এই নিয়ে টিভির টকশো থেকে সংবাদপত্রের পাতা, সকল ক্ষেত্রে এক পক্ষ এর ছাফাই গাইছে অন্য পক্ষ এর বিরোধিতায় নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। আজ সকালে প্রথম আলোতে গোলাম মোহাম্মদ কাদের (বাণিজ্যমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার) একটা কলামে লিখেছেন, “বহু বছর ধরে ঝুলে থাকার পর শেষমেশ একরকম সুরাহা হওয়াটা অবশ্যই স্বস্তির।

তবে আমি আজও বুঝতে পারি না, এটি কেন এত বছর ঝুলে ছিল। এর মধ্যে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী কিছুই নেই। আছে যা, তা হলো উভয় দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের দিকনির্দেশনা। সম্ভাব্য চুক্তির খসড়াটি এতটাই সাদামাটা ও নিরীহ গোছের যে এ নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা একবারেই অবান্তর”।

চলুন তাহলে দেখে আসি এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে আমাদের আসলেই কোন সমস্যা আছে কিনা!



টিকফা চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে সমস্যা কি?



চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হলে দেশের সেবাখাতসমূহ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ থেকে মুক্ত হয়ে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানির দখলে চলে যাবে। এতে করে দেশীয় কোম্পানিগুলোর স্বার্থও বিঘ্নিত হবে। অবাধ মুনাফা অর্জনের জন্য বিদেশি কোম্পানিগুলো সেবা যেমন টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, চিকিৎসা, শিক্ষা, বন্দর প্রভৃতি ও পণ্যের দাম বহুগুনে বৃদ্ধি করবে। সেবাখাতে বিদেশি প্রাইভেট কোম্পানিগুলোর অবাধ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান করলে বাংলাদেশ তার কল্যাণমূলক রাষ্ট্রনীতির আওতায় সরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের দরিদ্র ও সাধারণ মানুষকে কম মূল্যে সেবা দানের যেসব কর্মসূচী নিয়ে থাকে তা সঙ্কুচিত হবে অথবা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ফলে সাধারণ মানুষের জীবনধারণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজে সুকৌশলে বাণিজ্য সংরক্ষন নীতি গ্রহণ করে অনুন্নত দেশকে বাণিজ্য সুবিধা প্রদান থেকে বিরত থাকছে। দোহা এজেন্ডা অনুযায়ী বাংলাদেশ কৃষিতে ৫% এর বেশি ভর্তুকি দিতে পারছে না, অথচ যুক্তরাষ্ট্র নিজেই কৃষিতে ১৯% এর বেশি ভর্তুকি দিয়ে তাদের কৃষি ব্যবস্থাকে সুরক্ষা দিচ্ছে। ফলে বাংলাদেশের কৃষিজ পণ্যের দাম ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজে কিন্তু বাণিজ্য সংরক্ষন নীতি গ্রহণ করছে অথচ আমাদের মত অনুন্নত দেশগুলোকে বাণিজ্য উদারনীতি গ্রহণে নানা চুক্তির মাধ্যমে বাধ্য করছে।



মেধাসত্ব আইনের কঠোর বাস্তবায়ন হলে তা উন্নত দেশগুলোর মালিকানাধীন বহুজাতিক কোম্পানির অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবেই কাজ করবে যাতে দরিদ্র দেশগুলোর কাছ থেকে অবাধে মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা লুণ্ঠনের আইনি বৈধতা পাওয়া যায়। উন্নত প্রযুক্তি এবং উৎপাদন পদ্ধতির অধিকারী হবার পর তারা এই জ্ঞানকে কুক্ষিগত করে রাখতে চায়। এর মাধ্যমে তারা চায় যেন অবশিষ্ট বিশ্ব প্রযুক্তি ও উৎপাদনের জন্য তাদের উপর নির্ভরশীল থাকে এবং তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারে পরিণত হয়। টিফা চুক্তির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই মেধাস্বত্ব আইন মানতে বাধ্য করছে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে। টিকফা চুক্তির ফলে বাংলাদেশকে ২০১৬ সালের আগেই মেধাস্বত্ব আইন মেনে চলতে হবে। চুক্তির প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে বাণিজ্য সম্পর্কিত মেধাস্বত্ব অধিকার (TRIPS) এবং অন্যান্য প্রচলিত মেধাস্বত্ব আইনের যথাযথ এবং কার্যকরী রক্ষণাবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে । দোহা ঘোষণা ২০০০ অনুযায়ী বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় বাণিজ্যবিষয়ক মেধাসম্পদ স্বত্ব চুক্তি অনুসারে স্বল্পোন্নত সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্য ও সেবায় এবং ২০১৬ পর্যন্ত ওষুধের ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ববিষয়ক বিধিনিষেধ থেকে ছাড় পেয়েছে এবং এই সুবিধা গ্রহণ করে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো বিভিন্ন পেটেন্ট করা ওষুধ উৎপাদন এবং রফতানি করতে পারছে। কিন্তু টিকফা এ সে ধরনের কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। এর ফলে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প, কম্পিউটার সফটওয়্যার সহ গোটা তথ্যপ্রযুক্তি খাত আমেরিকার কোম্পানিগুলোর পেটেন্ট, কপিরাইট, ট্রেডমার্ক ইত্যাদির লাইসেন্স খরচ বহন করতে গিয়ে বিভিন্ন পণ্য এবং প্রযুক্তির দাম অভাবনীয়ভাবে বেড়ে যাবে। মেধাস্বত্ত্ব আইন কার্যকর হলে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো অনেক ওষুধ তৈরি করতে পারবে না, আমাদেরকে কয়েকগুন বেশি দামে বিদেশি কোম্পানির পেটেন্ট করা ওষুধ খেতে হবে । বাংলাদেশ ওষুধ শিল্পে রপ্তানি সম্ভাবনা হারাবে। দরিদ্ররা ওষুধ কিনতে গিয়ে হিমশিম খাবে। বাংলাদেশের ওষুধশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে কেননা দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজ দেশেই তাদের ওষুধ বিক্রি করতে গিয়ে বিদেশি কোম্পানির সাথে অসম প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে। ফলে অনেক মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প ধংস হয়ে যাবে। আবিষ্কারক কোম্পানি সুদীর্ঘ ২০ বছর ধরে নিজের ইচ্ছামতো দামে ওষুধটির একচেটিয়া ব্যবসা করে অবাধে মুনাফা লুট করবে।



‘টিকফা’ চুক্তির খসড়ায় পণ্য ও পুঁজির চলাচলকে অবাধ করার কথা এবং সেই সূত্রে মুনাফার শর্তহীন স্থানাস্তরের গ্যারান্টির কথা বলা হলেও শ্রম শক্তির অবাধ যাতায়াতের সুযোগের কথা কিছুই বলা হয়নি। অথচ শ্রম শক্তিই হলো আমাদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও মূল্যবান সম্পদ যার রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের রয়েছে বিপুল আপেক্ষিক সুবিধা। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ‘খোলাবাজার’ নীতিটি যুক্তরাষ্ট্র প্রয়োগ করতে রাজি নয়। তারা তা প্রয়োগ করতে প্রস্তুত কেবল পুঁজি এবং পণ্য-সেবা পণ্যের ক্ষেত্রে, যে ক্ষেত্রে তার রয়েছে বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি আপেক্ষিক সুবিধা। অন্যদিকে, টিকফাতে ‘শুল্ক বহির্ভূত বাধা’ দূর করার শর্ত চাপানো হলেও ‘শুল্ক বাধা’ দূর করার কথা বেমালুম এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রপ্তানিকৃত তৈরি পোশাক শিল্পের পণ্যের ক্ষেত্রে, গড় আন্তর্জাতিক শুল্ক যেখানে ১২%, যুক্তরাষ্ট্রের তা ১৯%

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.