![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কথার পিঠে নতুন কথা চাপিয়ে মজা পাই, কথা কে নাকানি চুবানি খাওয়াতেও বেজায় পছন্দ আমার। আত্মবিশ্বাসের ফানুস সহসাই ফেটে যায়, ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার নজির নেই বললেই চলে। মানুষ কে আনন্দ দেবার শেষ চেষ্টা করতে পারি.।.।।
গোলাম মাওলা রনি এক দিকে যেমন আলোচিত তেমনি অন্য দিকে তুমুল সমালোচিত। তিনি প্রথম আলোচনায় আসেন, মিঃ আবুল হোসেন যখন যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে মুখ থুবড়ে পড়েছিলেন তখন আবুল হোসেনের মন্ত্রিত্ব পদ পাওয়ার পিছনের কারণ উন্মোচিত করে।
তিনি এক টক শো তে বলেছিলেন, মিঃ আবুল হোসেন এক দৌড় প্রতিযোগিতায় জয়ী হয়ে হয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসীনার মন জয় করতে সমর্থ হয়েছিলেন। শেখ হাসিনা স্নেহধন্য আবুল হোসেন কে পুরস্কার হিসেবে মন্ত্রিত্ব পদ দেবার অঙ্গীকার করেন যার ফলে আবুল হোসেনের মন্ত্রিত্ব পাওয়া।
সেই থেকেই গোলাম মাওলা রনি শেখ হাসিনার অনেকটা চক্ষুশূলে পরিণত হন। তারপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন টক শো তে তিনি সরকারের তীব্র সমালোচনা করে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বপর্যায়ের হেভি ওয়েট নেতাদের চোখের বালিতে পরিণত হন। তবে সব সময় রনি যে গঠনমূলক সমালোচনা করেছেন তা কিন্তু নয়, মাঝে মাঝে তার কথার তীর দিক ভ্রান্ত হয়ে ভুল জায়গায় গেথে যেত।
কিছুদিন আগে সংসদ ভবনের মূল নকশার ভীতরে এক সাংসদের গরু পোষার সমালোচনা করে এক লেখায় তিনি লিখেছিলেন, আমি তো আর গরু নই যে দুধ দিব! তায় হয়তো সরকার দলীয় এম পি হয়েও ভালো একটা বাসা বরাদ্ধ পাচ্ছি না।
গোলাম মাওলা রনি সব চেয়ে বড় ভুলটা করেছেন নেহায়েত শ্বেত ভদ্রলোক বনে যাওয়া সালমান এম রহমানের মত দরবেশ বাবার পিছে হুল ফুটিয়ে। শেয়ার মার্কেটের কেলেঙ্কারির হোতা এই দরবেশ বাবার বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে তিনি পত্রিকাতে কলাম এবং টিভি চ্যানেলে লাইভ টক শো তে বলে যাচ্ছিলেন।
বাবা তো বাবাই! বাবা ঠিক ঝোপ বুঝে কোপ মেরে দিলেন। এক কোপে এম পি রনির মত কাপাশি তুলা উড়ে যেয়ে হাজত খানায়। বাবা হয়তো তার সাদা সফেদ দাড়িতে কোমল স্পর্শ দিয়ে বলছেন, যেখানে হাজার কোটি টাকা হজম করতে আমার এক দণ্ড সময় লাগে না সেখানে তোর মত চুনোপুঁটি এসেছিস টক্কর দিতে!
আমরা সকলেই রনির ভিডিও ফুটেজ দেখেছি। রনি অবশ্যই গর্হিত কাজ করেছেন। এভাবে সাংবাদিকের উপরে চড়াও হওয়া মোটেই সমীচীন হয় নাই। তবে রনির জায়গায় একবার নিজেকে প্রতিস্থাপন করেন। আপনার বাসার সামনে যদি টেলিভিশন ক্যামেরা গত সপ্তাহ ধরে তাক করা থাকে এবং আপনি কি করছেন না করছেন তার সব কিছুই ক্যামেরায় ধারণ করা হয় তাহলে আপনার জীবন কি দুর্বিষহ হয়ে উঠবে না? আপনি অফিসের কাজে বাইরে যাচ্ছেন, পিছনে খেয়াল করে দেখলেন চ্যানেলের লোক। আপনি পারিবারিক কোন অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করতে যাচ্ছেন, পিছনে খেয়াল করে দেখলেন চ্যানেলের ক্যামেরা। আপনি প্রচণ্ড মাথা ব্যাথার জন্য কিছু পেইন কিলার ওষুধ কেনার জন্য ফার্মেসীতে গেলেন, পিছনে খেয়াল করে দেখলেন চ্যানেলের ক্যামেরা। তখন আপনি কি আর স্বাভাবিক থাকতে পারবেন?
র
নির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় রনি যখন সাংবাদিকদের জিজ্ঞেস করছেনঃ সিঁড়িতে বসে আপনারা কি করেন?
সাংবাদিকরা তখন ওদ্ধত্যপূর্ণ উত্তর দেনঃ কিছু না।
বাক বিতণ্ডার এক পর্যায়ে তিনি আঘাত করেন। কেন, সাংবাদিকরা যদি তখন তাকে বলতেন, “আমরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য এসেছি” তাহলে কি কোন সমস্যা হত?
একজন রক্ত মাংসের মানুষের পক্ষে এতোগুলো দিন এতোটা ধৈর্য ধারণ করা সম্ভবপর কিনা সেই প্রশ্ন আসা খুব স্বাভাবিক! তাহলে কি পুরা ঘটনার পিছনে এই অতি অভিনয়ের যুগে কোন নাটকীয়তার গন্ধ পাওয়া যায় না?
আর সাংবাদিকদের উপরে চড়াও হওয়া সরকারের জন্য নতুন কোন ঘটনা নয়।
সাগর রুনির হত্যা কান্ডের দগদগে ঘা এখনো সকলের মনে। বাংলাদেশের বেশীর ভাব মানুষই এখনও এই নির্মম হত্যা কান্ডের জন্য সরকারকেই দায়ী করে আসছে।
কৈ, এখনো তো এই খুনের নেপথ্যের কুশীলবদের নামই জানা গেল না!
কিছুদিন আগে হেফাজতের সুযোগ্য কর্মীরা এক মেয়ে টিভি রিপোর্টার কে জন সম্মুখে যেভাবে লাথি উষ্ঠা দিয়েছিল তা আমরা সকলেই দেখেছি টিভির পর্দায়। কৈ, সেইটা নিয়ে তো কিছুই হল না?
কিছুদিন প্রধানমন্ত্রী যেভাবে ঘোষণা দিয়েছিলেন, “যারা যারা গাড়ি ভাংচুর করেছে তাদের ভিডিও ফুটেজ দেখে বি সি এস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল থেকে বাদ দেওয়া হবে, তাদের চাকুরী হবে না”।
সেই একইভাবে তো তিনি ঘোষণা দিতে পারতেন, “যেসব হেফাজত কর্মী নারী সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে তাদের ভিডিও দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে”।
তিনি কিন্তু বলেন নাই।
মিরপুরের সাংসদ কামাল মজুমদারের সাংবাদিক পিটানির খবর জানেন না এমন মানুষ কি এই বাংলায় খুঁজে পাওয়া যাবে? তখন কেন সকলে মুখে কুলুপ এটে ছিলেন? কামাল মজুমদার প্রধান মন্ত্রীর স্নেহ ধন্য বলে?
এই বার চলেন গতবারের সময় আওয়ামীলীগ সরকারের সাংবাদিকদের উপরে চড়াও হবার কিছু কিচ্ছা কাহিনী।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ব্যাপারে খোদ যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।
২০০১ সালের ১৮ মে খোদ সরকারি পত্রিকা দৈনিক জনকন্ঠে বোরহান আহমেদের একটি লেখা প্রকাশিত হয়েছিল এরকম, ‘১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলে বিপন্ন ছিল সাংবাদিকতা। বন্দুকের নলের মুখে ছিল সাংবাদিকদের জীবন আর আইনের শাসন'। শাসকগোষ্ঠীর এমপি মন্ত্রীদের হাতেও সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ছিল যেন নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা।
২০০১ সালের ২৪ জুলাই দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়, যেখানে বলা হয়, বছরের প্রথমার্ধে ছয়মাসে দেশে ৭৪ জন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হন আর সরকারি গুন্ডা বাহিনীর হাতে নিহত হন ২ জন সাংবাদিক। ঐ একই পত্রিকায় ২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর ‘সাংবাদিকরাই বড় টার্গেট' শিরোনামে আরো একটি বড় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। মহাজোট সরকারের শরীক দলের এমপি রাশেদ খান মেনন নিজেই ২০০১ সালের ৮ মে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় ‘আক্রান্ত সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা' শিরোনামে এক বিশাল প্রবন্ধ লিখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সাংবাদিক নির্যাতনের বিশদ বর্ণনা দিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগ আমলের তৎকালীন সমাজকল্যান মন্ত্রী ডা. মোজাম্মেল হোসেন সাংবাদিকদের পিটিয়ে হাড় গুড়ো করে দেয়ার হুকুম দিয়ে সমালোচনার শীর্ষে চলে আসেন। তার হুকুমের ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সাতক্ষীরা চিত্র'র সম্পাদক আনিসুর রহমানকে প্রহার করা হয়। ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের সংবাদ ছাপার অপরাধেই(!) তাকে পিটিয়ে আহত করা হয়। ফেনীতে জয়নাল হাজারী নিজের হাতে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে সাংবাদিক টিপুকে। ফেনীর ছাত্রলীগ নেতা কহিনুরসহ জন ছাত্রলীগ ক্যাডাররা সেখানকার বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকদের সব সময়েই রাখতের হুমকির মুখে। ২০০০ সালের ১৬ জানুয়ারি দৈনিক মানব জমিন পত্রিকায় তাদের মিডিয়া ওয়াচে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মিডিয়া জগতের রিপোর্টার এবং ফটো সাংবাদিকদের জন্য ২০০০ সালটি ছিল খুবই বেদনাদায়ক। দেশ স্বাধীন হওয়ার ৩০ বছরের মধ্যে আওয়ামী শাসনামলের এই বছরটিতেই সম্ভবত স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর বেশি আঘাত এসেছে।
এই সব অত্যাচারের কনটারই কি বিচার হয়েছে?
তবে গোলাম মাওলা রনির ক্ষেত্রে এতো তাড়াহুড়া সব কিছু শুরু হয়ে গেল!
নকুল কুমারের একটা গানের কয়েকটা লাইন এরকম,
কাকের মাংস দেখ খায় না কাকে,
উল্লুকে খায় নাকো উল্লুক,
মানুষের মাংস মজা করে খায় মানুষ নামের কিছু ভুল্লুক।
বর্তমানে সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এই লাইন গুলো অনেক বেশী সত্য।
সাংবাদিকরা নিজেরাই নেজেদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমার কেন জানি মনে হয়, বর্তমানে সব চেয়ে বেশী দুর্নীতিগ্রস্থ পেশা হচ্ছে “সাংবাদিকতা”। স্বার্থের প্রয়োজনে তারা রাজনৈতিক নেতাদের ব্যবহার করছেন অথবা নেতারাই তাদের ব্যবহার করছে।
কিন্তু এভাবে বেশী দিন কি যাওয়া যাবে?
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২৮
চাঁদোয়া বলেছেন: সত্য কথন।
২| ২৫ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৪
বটের ফল বলেছেন: এইখানে রনি শুধুমাত্র একজন ভিকটিম। সুপরিকল্পিত ভাবে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।
ধিক্কার জানাই সরকারকে, ধিক্কার জানাই প্রধানমন্ত্রীকে।
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:২৯
চাঁদোয়া বলেছেন: ধিক্কার!
৩| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৩৫
সাদা মনের মানুষ বলেছেন: যা কিছুই হোক, নিজে সাংবাদিক পিটিয়ে যে বদনাম কামালেন তার থেকে উঠে আসতে সময় লাগবে। তবে এটা মিটিয়ে না ফেলে সরকারী দলের একজন এমপির জেল হাজতে যাওয়া সত্যিই বিশ্ময়কর। বুঝা যায় এর ভেতর আরো কিছু আছে।
৪| ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:১৮
চাঁদোয়া বলেছেন: এর ভীতরে শেয়ার মার্কেট ছাড়া আর কিছু আছে বলে তো মনে হয় না!
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:২৪
সবখানে সবাই আছে বলেছেন: আওয়ামী লীগের কাজের একটা পদ্ধতি আছে। সেই পদ্ধতির সাথে রনি যায় না। এইকারনেই সে এখন হাজতে। দোষটা শুধু লীগের না বিএনপি জামাতের আছে। বিএনপি জামাত সমর্থক ভিত্তিক রাজনীতি করে নাই। তারা করে ক্যাডার ভিত্তিক আন্দোলন। আর লীগ করে রাস্তা আর জনগন ভিত্তিক। কিন্তু দিন যতই আগাচ্ছে মানুষ ততই বদলাচ্ছে। তাই বিএনপি এখন প্রায় ক্যাডার শূন্য। তারা জামাতের ক্যাডারের উপর নর্ভরশীল। লীগের অবস্থা সেইরকম না হলেও কাছাকাছি। মানুষ এখন অনেক ব্যাস্ত। তাদের খেয়েদেয়ে কাজ নাই যে রাস্তায় গিয়ে আন্দোলন করবে। এই কারনেই লীগ সবসময় কিছু গডফাদার পোষে। যেমন শামীম ওসমান, কামাল মজুমদার, জয়নাল হাজারী। এরা হল রাস্তার সৈনিক। এরা দুর্নীতি করবে, মানুষ খুন করবে কিন্তু লীগ এদের কিচ্ছুই বলবে না। কারন জামাত শিবির বিএনপি যখন ক্ষমতায় আসবে তখন এই রনি চুপচাপ থেকে সুশীল সাজবে, খুব বেশি হলে টকশো করবে আর নিজের ব্যাবসা বানিজ্য করবে। কিন্তু মাঠ গরম করবে ওই গদফাদাররা। দুই দলের গড ফাদাররা আবার নিজেদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক রাখেন। নিজেদের মধ্যে বিয়েও দেন। এরা কখনো আবার একে অপরকে ঘাটাননা। যেমন আব্দুল জলিলের জাপান গার্ডেন সিটির কথা ধরতে পারেন। এটার পুরোটাই হয়েছিল বিএনপি আমলে এবং তাদের প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে। যাই হোক সময় এখন বিএনপির।তাই এখন দরবেশ বাবাকে লীগের নিজের প্রয়োজনেই লাগবে। গড ফাদাররা আন্দোলন তো আর নিজের পকেটের পয়সায় করবে না। পয়সা আসবে দরবেশের কাছ থেকে। তাই আগামী ৬ বছর রনি দৃশ্যপটে না আসলেই ভাল।