![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কথার পিঠে নতুন কথা চাপিয়ে মজা পাই, কথা কে নাকানি চুবানি খাওয়াতেও বেজায় পছন্দ আমার। আত্মবিশ্বাসের ফানুস সহসাই ফেটে যায়, ভুল থেকে শিক্ষা নেয়ার নজির নেই বললেই চলে। মানুষ কে আনন্দ দেবার শেষ চেষ্টা করতে পারি.।.।।
কিছুদিন আগে বাংলা লিংকের একটা বিজ্ঞাপনে দেখিয়েছিল, একটা যুদ্ধ-বিদ্ধস্থ দেশ থেকে ফেরত প্রবাসী দেশে এসে আর রাতে ঠিক মত ঘুমাতে পারেন না। কারণ, মেশিন গান-মর্টারের শব্দ শুনে শুনে অভ্যাসে পরিণত হওয়ায় এই শুব্দের অনুপস্থিতিতে তিনি দু চোখের পাতা একই করতে পারেন না। তাই বৌ অগত্যা সারা রাত জেগে মুখ দিয়ে শব্দ করেন, ঠা ঠা ঠা ঠা...... ঠুস ঠুস ঠুস...... ঢিচিয়া ঢিচিয়া......
মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম নেত্রকোনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার । মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে শত্রু সেনাদের সাথে যখন সম্মুখ সমরে অবতীর্ণ হন তখন পাক হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে ছুটে আসা একটা বুলেট আবুল হাশেমের ডানে থাকা বন্ধু প্রতিম সহযোদ্ধা আজগর মিস্ত্রীর মাথার খুলী উড়িয়ে নিয়ে যায়। নিমিষেই সহযোদ্ধার নিথর দেহটা পড়ে থাকা দেখে আবুল হাশেম খেই হারিয়ে ফেলেন।
তিনি ক্রলিং করা থামিয়ে হাতের মেশিন গানটা তুলে ধরে দাঁড়িয়ে পড়েন। জয়বাংলা শব্দে গলা ভিজিয়ে বৃষ্টির মত গুলি ছুঁড়েন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পরিস্থিতি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
এই ধরণের অনেকগুলো অপারেশনের নায়ক আবুল হাশেম।
যুদ্ধ শেষে তিনিও ঠিক মত ঘুমাতে পারতেন না। চলতে ফিরতে মেশিন গানের গুলির শব্দ শুনতে পেতেন। দুই হাতে মাথা চেপে বসে পড়তেন। সময়ের সাথে সেই শব্দ বিদায় নিয়েছে আবুল হাশেমের কাছ থেকে কিন্তু তিনি আর স্বাভাবিক জীবন পাননি।
ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত প্রায় দুই মাস যাবত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন ব্লক বিল্ডিঙয়ের ৪০২ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন আছেন। চিকিৎসার ব্যায়ভার বহন করতে করতে যখন আবুল হাশেমের পরিবারটি নিঃস্ব থেকে নিঃস্বত্বর হয়ে যাচ্ছে ঠিক তখন একই বিল্ডিঙয়ের উপরেই আধুনিক রাজার সকল সুযোগ সুবিধা সমেত আছেন “একাত্তরের মীরজাফর রাজাকার গোলাম আযম”।
রাজাকার গোলাম আযমের পিছনে সরকার যে অর্থ খরচ করছে তার সিকিভাগও যদি এই মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পিছনে করতো তাহলে হয়তো বিদায় বেলায় এই মুক্তিযোদ্ধা তার ফেলে আসা অতীতের (মুক্তি যুদ্ধ) জন্য একটু কম অনুশোচনা করতেন।
আমরা গণজাগরণ মঞ্চে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম দেশের উপর থেকে দায়মুক্তির জন্য, আমরা কেন ঝাঁপিয়ে পড়তে এতোটা কার্পণ্য করি তাঁদের জীবন প্রদীপ আর কিছুটা দিন জালিয়ে রাখার সাহায্যে যারা এই দেশটার কারিগর।
যতই বীজয় দিবসে কিম্বা স্বাধীনতা দিবসে গান শুনে শুনে কানের টিম্পনি পর্দাকে ক্লান্ত করে তুলি “ এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলবো না”; এই দেশ আমাদের ক্ষমা করবে না।
রাজাকার রা একাত্তরেও মুক্তি যোদ্ধাদের রক্ত চক্ষু দেখিয়েছে, এখনো দেখাচ্ছে।
মাঝে কিছুটা সময় গিয়েছে, বাকি সব একই আছে।
জানি আমার এই কথা সরকারের কান পর্যন্ত পৌঁছাবে না, কারণ সরকার প্রধান এখন হয়তো নতুন রেসিপিতে ব্যস্ত প্রাণ।
তবে আমি, আপনি, আমরা যদি এই মুক্তি যোদ্ধার সাহায্যার্থে এগিয়ে আসতে চাই তাহলে নিম্ন ঠিকানায় যোগাযোগ করা যেতে পারে।
শুধু ইচ্ছেটা থাকা দরকার।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ
ইমরান আহমেদ (ছেলে)
অ্যাকাউন্ট নম্বর: ১৫২০-২০২৬১৮৯৯২০০১
ব্র্যাক ব্যাংক, বাংলাদেশ।
সরাসরি যোগাযোগ: ০১৭২৯৬৯৩৯৩৯।
L
©somewhere in net ltd.