![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাসান সাহেব গালে হাত দিয়ে বসে আছেন পুকুর পাড়ে। ভাবান্তর দৃষ্টিতে এক নাগাড়ে তাকিয়ে আছেন পুকুরের দিকে। দৃষ্টি পানির দিকে হলেও ভাবছেন অন্য কিছু। ভাবতে ভাবতে এক সময় কেঁদেই ফেললেন। চেস্টা করেও কান্না থামাতে পারেননি।
হ্যাঁ বলছি তার কান্নার কারণঃ-
হাসান সাহেবের মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন প্রায় বছর খানিক আগে। নিম্নবিত্ত মানুষ হাসান সাহেব। বিয়ের অনেক বছর পর ১টাই মাত্র মেয়ে হয়েছে, তারপর আর কোন সন্তান হয়নি তাদের। এই এক মেয়েকেই অনেক কষ্ট করে পড়া লেখা করিয়েছেন মোটামুটি।
হাসান সাহেবও বৃদ্ধ হয়ে গেছেন। আগের মতো আর তেমন কাজও করতে পারেন না। তবুও অনেক কষ্ট করে যাই পারেন তা করেই সংসার চলে। আর সারাজীবনের সামান্য সঞ্চয় দিয়ে গত বছর মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন । খুঁজ খবর নিয়ে দেখেছেন ছেলে অনেক ভালো। তাছাড়া সে মাওলানা, এক মাদ্রাসায় পড়ায় এবং মসজিদে ইমামতি করে। হাসান সাহেব ভাবলেন তাহলে তো পাত্র নিঃসন্দেহে ভালো।
কিন্তু তিনি জানতেন না এ যে আলেমের আড়ালে এক মুখোশদারী শয়তান। বিয়ের ৩ মাস পরেই মাদ্রাসা আর মসজিদের চাকরী ছেড়ে দিল। তারপর শুরু করলো বিদেশ যাওয়ার ধান্ধা । সঞ্চয় করে রাখা টাকাগুলিও উড়ালো বিদেশের ধান্ধায় পড়ে। অবশেষে বিদেশ যাওয়ার চিন্তা বাদ দিয়ে, ব্যবসা দেয়ার চিন্তা করতে শুরু করলো। কিন্তু এটাতেও বিফল।
তারপর শুরু করলো স্ত্রীর সাথে খারাপ ব্যবহার। স্ত্রীকে চাপ দিতে লাগলো বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য। যন্ত্রণা সইতে সইতে হাসান সাহেবের মেয়ে হাসান সাহেবকে সব বললো। এসব শুনে তিনি অনেক কষ্টে ঋণ করে কিছু টাকা এনে দিলেন। আর ভাবলেন এখন হয়তো মেয়েটা সুখি হয়ে যাবে। আমার যতো কষ্টই হোক একমাত্র মেয়েটা সুখে থাকলেই হলো।
কিন্তু না, হাসান সাহেবের ধারণা ভুল। কদিন যেতে না যেতেই মেয়ের জামাই আবার মেয়েকে নির্যাতন শুরু করলো । শারীরিক নির্যাতনের চেয়ে মানসিক নির্যাতন বেশি করে। মেয়ের আর বিবেকে দেয়না বাবাকে বলার। সে জানে তার বাবা আগেরবারই কতো কষ্ট করে টাকা জোগাড় করে দিছেন। এখন আবার কোন মুখে চাইবে টাকা!!
তবুও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবাকে বললো। মেয়ের মুখ থেকে এসব শোনার পর থেকেই হাসান সাহেব যখন তখন ভাবনার জগতে হারিয়ে যান, কাঁদেন। ভাবেন কিভাবে সুখি করবেন মেয়েকে? এ কোন ভুল জায়গায় দিলেন মেয়েকে!
এখনও পুকুর পাড়ে বসে এসবই ভাবছিলেন আর কাঁদছিলেন। হঠাৎ তার চলনসই ফোনটা বেজে উঠলো বেসুরো কন্ঠে। রিসিভ করে হ্যালু বলতেই ওপার থেকে কে যেন বলে উঠলো আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে গলায় ফাঁস লাগিয়ে। এটা শোনার সাথে সাথে মোবাইল পরে গেল হাসান সাহেবের হাত থেকে। বিকট একটা চিৎকার দিয়েই তিনিও লুটিয়ে পরলেন নিচে। অতঃপর তিনিও চলে গেলেন মেয়ের সাথে। স্ত্রী এসে দেখলেন স্বামী শেষ। পরে তিনিও যখন মেয়ের খবর শুনলেন তখন তিনিও নিরুপায় হয়ে বিষ খেলেন। বেঁচে থেকেই বা কি করবেন! স্বামী নেই, মেয়েও নেই তো তিনি থেকে কি করবেন!
এভাবেই যৌতুকের বলি হলো একটা পরিবার। প্রতিদিন বলি হচ্ছে এমন শত শত পরিবার।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:০০
মেঘ প্রহর বলেছেন: true & sad story....we don't know how to stop it..............