নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একলা চলতে হয়

মানুষ আমার সাধন গুরু. সেই মোকামে যাত্রা শুরু

ক্ষয়রোগ

আমি এখন ভিন্ন মানুষ অন্যভাবে কথা বলি কথার ভেতর অনেক কথা লুকিয়ে ফেলি, কথার সাথে আমার এখন তুমুল খেলা...

ক্ষয়রোগ › বিস্তারিত পোস্টঃ

চেতনায় একাত্তর: সময়ের সঙ্গে ইতিহাসের যোগসূত্র তৈরির সাহসী প্রচেষ্টা

২৫ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৩:১৬

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের শিল্পকলার যে শাখাটি সবচেয়ে বেশি চর্চিত ও বিকশিত হয়েছে; তা হলো স্মৃতিসৌধ ও ভাস্কর্যশিল্প। একাত্তরের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ইতিহাসকে ধারণ করে দেশের নানাপ্রান্তে গড়ে তোলা হয়েছে স্মৃতিসৌধ, নিরেট কনক্রিটে শিল্পীরা প্রাণের স্পর্শে তৈরি করেছেন ভাস্কর্য। ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও চেতনাবহনকারী এইসব সৌধ ও ভাস্কর্যের খবর আমরা কজন রাখি? অবশ্য দেশজুড়ে এতো এতো স্থাপত্য ও ভাস্কর্য রয়েছে যে চাইলেও কারো পক্ষে সেগুলো ঘুরে ঘুরে দেখা প্রায় অসম্ভব একটি ব্যাপার।

সেই অসম্বব বিষয়টি হাতের মুঠোয় আনার কাজটি বেশ মনোযোগের সঙ্গেই করা হয়েছে মোহাম্মদ আবু তাহের সম্পাদিত 'চেতনায় একাত্তর' শীর্ষক স্মৃতিসৌধ, ভাষ্কর্য ও চিত্রকলায় মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক অ্যালবামটি। আইকন পাবলিকেশন্স প্রকাশিত আর্টপেপারে ঝকঝকে চাররঙে ছাপা প্রামাণ্য এ গ্রন্থ বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার এখানে-সেখানে গড়ে তোলা সৌধ ও ভাস্কর্যগুলোর আলোকচিত্র তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে স্থাপত্য ও ভাস্কর্য নির্মাণের পটভূমি, নির্মাণ তথ্য এবং স্থপতি বা ভাস্কর্যশিল্পীর পরিচিতও স্থান পেয়েছে এ অ্যালবামে।

শিল্পকলা ধারণ ও লালন করে একটি জাতির ইতিহাস আর ঐহিত্য। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঘটনাটি ঘটেছে নিঃসন্দেহে ১৯৭১ সালে। দীর্ঘ নয়মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি অর্জন করে স্বাধীনতা, পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নেয় একটি নতুন রাষ্ট্র- বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধে এ জাতির চেতনাকে কতোটা প্রভাবিত করেছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় স্বাধীনতার পর এপর্যন্ত সারাদেশে গড়ে তোলা স্মৃতিসৌধ ও ভাস্কর্যগুলোর প্রতি চোখ রাখলে।

মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে বিশাল আকৃতির স্থাপত্য ও ভাস্কর্যের মাধ্যমে আমাদের শিল্পীরা সামাজিক নিয়ম-নীতির প্রচলিত গোড়ামির শিকল ভাঙ্গতে সক্ষম হয়েছেন। স্থায়িত্ব, প্রতিক্রিয়া, সম্ভাবনা সব মিলিয়ে ভাস্কর্যের চেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম আর নেই। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশের বিভিন্ন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যগুলো তাদের বিশালতা নিয়ে ধারন করে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতিসৌধ ও ভাস্কর্যশিল্প নিয়ে এখন পর্যন্ত বড়ো কলেবরে কোনো গবেষণা হয়নি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্য হয়তো কোনো আলোচনাই আসেনি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রশিল্প খুঁজে পেলে শিল্পী ও তাঁর দর্শন নিয়ে আলোচনা লিপিবদ্ধ হতে পারে- কিন্তু ভাস্কর্যগুলে সাধারণত সরকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক সম্পত্তি এর সংরক্ষণে উদাসিনতার ছাপ সুস্পষ্ট। বিক্ষিপ্তভাবে ছাড়ানো স্বাধীনতার এইসব স্মারক নিয়ে একান্তই নিজের উদ্যোগে এ গবেষণার কাজটি করেছেন মোহাম্মদ আবু তাহের 'চেতনায় একাত্তর' প্রকাশনার মাধ্যমে।

মানুষের ছোঁয়ায় বিমূর্ত শিল্প মূর্ত হয়ে ওঠে, প্রাণ পেয়ে একটি নির্দিষ্ট আকার ধারণ করে। সময়ের সঙ্গে ইতিহাসের যোগসূত্র তৈরি করে স্থাপত্য ও ভাস্কর্যশিল্প। একযুগে সঙ্গে আরেক যুগের মেলবন্ধন গড়ে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নির্মাণ করা স্মৃতিসৌধ ও ভাস্কর্যগুলো একটি শক্তিশালী ভাষার মতোই শতাব্দীর পর শতাব্দী প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে জ্বালিয়ে যাবে একাত্তরের শিখা। এ বোধটি জাগ্রত করতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক স্মৃতিসৌধ ও ভাস্কর্যশিল্প নিয়ে ডকুমেনশনভিত্তিক অ্যালবাম 'চেতনায় একাত্তর' ভূমিকা পালন করবে, নিঃসন্দেহে এটা আশা করা যায়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫৫

অন্য এক আমি বলেছেন: ++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.