নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুন্দর জীবন সকলে পায় না, তবে কিছু লোক জীবনকে সুন্দর করে গড়ে তোলেন। আর সুন্দর জীবনের জন্য চাই সুন্দর জীবন ব্যবস্থা। নিঃসন্দেহে ইসলাম হল শ্রেষ্ঠ সুন্দর জীবন ব্যবস্থা।

ফরিদ আলম

আমি শেখ ফরিদ আলম। অনেক ব্লগে লিখি ফৈরা দার্শনিক নামে। বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের ইসলামপুরে। আমি স্পেশাল কিছুনা। খুবই সাধারণ একজন মানুষ। যার পৃথিবীতে থাকা না থাকাতে কিছুই যায় আসে না কারো। লেখা লেখি করি বলা যাবে না। কারণ ভালো কিছু কখনোই লিখতে পারিনা। তবে আমি কিছু লিখতে চাই। আমি চাই সবাই আমার লেখা পড়ুক আমার ভাবনা গুলোকে জানুক। কিন্তু দুখের বিষয় হল আমি কখনোই এব্যাপারে চেষ্টা-প্রচেষ্টা করিনা। তাই ঘুরে ফিরে সেই একই জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলাম, দাঁড়িয়ে আছি, হয়ত দাঁড়িয়ে থাকব আরো অনেক দিন। দেশকে ভালোবাসী। দেশের জন্য কিছু করতে চাই। এর বদলে আমি দেশের কাছে কিছুই চাইনা। কারণে আমি ভারতীয় হিসেবে গর্বিত। এটাই আমার বড় প্রাপ্তি। আমার ব্লগে আসার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। শুভ ব্লগিং।

ফরিদ আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইসলামী সমাজ বিনির্মানের পথ ও পদ্ধতি / শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ দুপুর ১:২৬

বর্তমানে মুসলমানদের অবস্থা হ’ল এই যে, তারা বস্ত্তগত শক্তিতে বলীয়ান কাফের রাষ্ট্রসমূহ দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং এমন সব শাসকদের হাতে নিপীড়িত অবস্থায় দিনাতিপাত করছে, যারা আল্লাহর বিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালনা করে না, আর করলেও তা খুব সামান্যই। যার ফলে সুযোগ ও সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও তারা সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করার সুযোগ পাচ্ছে না। এক্ষেত্রে আমি মনে করি মুসলিম দলগুলোকে কেবল দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে অগ্রসর হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি না এ দু’টি বিষয় ছাড়া মুসলমানদের এই দুর্বলতা, লাঞ্ছনা ও অপমান-অপদস্থতা থেকে মুক্তি পাওয়ার কোন উপায় আছে। আমি সকল বিশ্বাসী মুসলিম ভাই-বোনদেরকে বিশেষতঃ সচেতন ও প্রতিশ্রুতিশীল যুবকদেরকে বলছি, প্রথমতঃ যে বিষয়টি আমাদের জানতে হবে তা হ’ল, মুসলমানদের করুণ পরিস্থিতি। আর দ্বিতীয়তঃ যে বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে তা হ’ল, সমস্ত শক্তি-সামর্থ্য দিয়ে তা থেকে মুক্তির উপায় বের করার পথ অনুসন্ধান করা। কোটি কোটি মুসলমান আজ কেবল ভৌগলিক বাস্তবতা অথবা নিজের আত্মপরিচয় রক্ষার্থে মুসলিম। অর্থাৎ নিজের জাতীয়তা, পরিচয়পত্র এবং জন্মসনদে লিপিবদ্ধ পরিচিতি মোতাবেক মুসলিম। আজকে আমি তাদের উদ্দেশ্যে কিছুই বলব না। আমি পুনরায় সকলকে বলব, ঐ মুক্তিকামী যুবকদের হাতে মুক্তির কেবল দু’টি পথই খোলা আছে- (১) তাসফিয়াহ বা আক্বীদা সংশোধন (২) তারবিয়াত বা আমলী প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন।

তাসফিয়াহ হ’ল, মুসলিম যুবকদের নিকটে সেই বিশুদ্ধ ইসলামকে উপস্থাপন করা, যা যুগের পরিক্রমায় অনুপ্রবিষ্ট ভ্রান্ত আক্বীদা-বিশ্বাস, কুসংস্কার, বিদ‘আতসহ সকল প্রকার জাল-যঈফ হাদীছ হ’তে মুক্ত। এই আক্বীদাগত সংস্কারকে বাস্তবায়িত করা ব্যতীত দ্বিতীয় কোন পথ খোলা নেই। এই সংস্কার ব্যতীত মুসলমানদের মধ্যে কাংখিত শান্তি ও নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনার কোন সুযোগ নেই।

এই ‘তাসফিয়াহ’র উদ্দেশ্য হ’ল, ইসলামকে একমাত্র চিকিৎসা হিসাবে উপস্থাপন করা, যা অনুরূপভাবে সেই আরবদের চিকিৎসা করেছিল, যারা একদিকে পারসিক, রোমীয়, হাবশীদের কাছে লাঞ্ছিত, নিপীড়িত অবস্থায় পতিত ছিল। অন্যদিকে আল্লাহর পরিবর্তে গায়রুল্লাহর ইবাদত করতো।

এই অবস্থান থেকে আমরা সকল ইসলামী দল ও গোষ্ঠীর বিরোধিতা করি এবং বিশ্বাস করি অবশ্যই তাসফিয়াহ এবং তারবিয়াত একত্রে শুরু করতে হবে। যদি আমরা রাজনীতি দিয়ে শুরু করি তাহলে আমরা দেখতে পাব যে, যারা এখন রাজনীতিতে ডুবে রয়েছে, তাদের আক্বীদা বিনষ্ট। আর ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের আচার-আচরণ অনেকটাই শরী‘আত বহির্ভূত। তারা কেবল আমভাবে ইসলামের নামে মানুষ জমায়েত করতেই ব্যস্ত। অথচ তাদের লক্ষ্য ও চিন্তাধারা সম্পর্কে ঐসব আমজনতার কোন স্পষ্ট ধারণা নেই। ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবনাচারে ইসলামের কোন প্রভাব খুঁজে পাওয়া যায় না। দেখা যাবে, তাদের অধিকাংশ নিজেদের ব্যক্তিজীবনেই ইসলামী বিধি-বিধান বাস্তবায়ন করে না, যা তাদের পক্ষে সহজেই সম্ভবপর ছিল। অথচ একই সময়ে তারা উঁচু গলায় শ্লোগান দিচ্ছে ‘আল্লাহর হুকুম ব্যতীত কোন হুকুম চলবে না!’। বক্তব্যটি ঠিকই যে, অবশ্যই আল্লাহ নাযিলকৃত হুকুম ব্যতীত অন্য কোন হুকুম চলবে না। কিন্তু স্মরণ রাখতে হবে যে, ‘যে ব্যক্তি নিজে যা হারিয়েছে, সে অন্যকে তা দিতে পারে না’। আধুনিক কালের অধিকাংশ মুসলমান নিজেদের জীবনে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা না করে যদি অন্যদের কাছে রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রামী ভূমিকা কামনা করে, তবে কখনোই তারা তাদের উদ্দেশ্য পূরণে সক্ষম হবে না। কেননা কেউ যদি কোন জিনিস নিজেই হারিয়ে ফেলে, তবে তা অন্যকে দিতে পারে না। আর ঐসব শাসকগণ তো এই উম্মতেরই অন্তর্ভুক্ত। তাই শাসক-শাসিত উভয়কেই এ দুর্বলতার কারণ সম্পর্কে জানতে হবে। জানতে হবে কেন মুসলিম শাসকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ইসলামের বিধান অনুযায়ী শাসন করছে না? কেন মুসলিম দাঈগণ অন্যদেরকে রাষ্ট্রে ইসলাম প্রতিষ্ঠার আহবান জানানোর পূর্বে নিজেদের জীবনে ইসলামী বিধান কার্যকর করছেন না। এর জওয়াব একটাই-তাদের কারোরই হয় ইসলাম সম্পর্কে ভাসা ভাসা জ্ঞান ছাড়া সঠিক জ্ঞান বা বুঝ নেই অথবা তারা চলাফেরা, জীবনযাপন, স্বভাবচরিত্র, পারস্পরিক লেনদেন কোন ক্ষেত্রেই ইসলামী মূল্যবোধের উপর গড়ে উঠেনি। ফলে আমার অভিজ্ঞতাবলে আমি যা বলতে পারি তারা বড় ধরনের ভ্রান্তির মধ্যে নিমজ্জিত রয়েছে। আর সেটি হ’ল দ্বীনের সঠিক বুঝ থেকে দূরে ছিটকে পড়া।

এমনকি আজকের দিনে কোন কোন দাঈ মনে করেন যে, সালাফীরা কেবল তাওহীদের দাওয়াতেই জীবনপাত করে গেল। সুবহানাল্লাহ, কতই না মূর্খতায় ডুবে আছে সেই ব্যক্তি, যে অজ্ঞতাবশতঃ এমন কথা বলে। যদি সে প্রকৃতপক্ষে গাফেল নাও হয়, তবুও সকল নবী ও রাসূলের দাওয়াত সম্পর্কে তার জানার কমতি আছে। কেননা সকল নবীর দাওয়াত ছিল, ‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং ত্বাগূত থেকে বেঁচে থাক’ (নাহল ১৬/৩৬)। নূহ (আঃ) ৯৫০ বছর যাবৎ কেবল এই দাওয়াতই দিয়েছিলেন। সেখানে তিনি নতুন কোন সংস্কার করেননি, কোন বিধান প্রবর্তন করেননি, কোন রাজনীতি করেননি। বরং তিনি কেবল বলেছিলেন, হে আমার কওম! তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর এবং ত্বাগূত থেকে বেঁচে থাক’।

এটাই ছিল পূর্ববর্তী সালাফ আম্বিয়ায়ে কেরামের কার্যক্রম! তাহ’লে এই সকল মুসলিম দাঈগণ কিভাবে এত নীচে নেমে যেতে পারেন যে, তারা সেই একই কার্যক্রমের জন্য সালাফীদের নিন্দা করেন?

দ্বিতীয় উপায় হ’ল তারবিয়াত বা প্রশিক্ষণ। যুবকদেরকে এমনভাবে প্রশিক্ষিত করতে হবে যেন তারা পূর্ববর্তীদের মত দুনিয়ার প্রতি মোহগ্রস্ত না হয়ে পড়ে। রাসূল (সা) বলেছেন, ‘আল্লাহর কসম! তোমরা দারিদ্রে্য নিপতিত হবে এ আশংকা আমি করি না। বরং আমি ভয় করি যখন তোমাদের সামনে দুনিয়াবী চাকচিক্যের দুয়ার উন্মুক্ত হবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের মত। ফলে তাদের মত তোমরাও পরস্পর সম্পদ অর্জনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবে এবং তা তোমাদেরকে ধ্বংস করে দেবে, যেভাবে ধ্বংস করেছিল পূর্ববর্তীদেরকে’ (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫১৬৩)।

আরেকটি রোগ থেকে মুসলমানদের অবশ্যই বেঁচে থাকতে হবে যেন কোনভাবেই তা হৃদয়ে স্থান না পেতে পারে। তা হ’ল, দুনিয়ার প্রতি ভালোবাসা এবং মৃত্যুকে ভয় না করা (আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৩৬৯)। এটা এমন একটি রোগ যার চিকিৎসা করা এবং মানুষকে তা থেকে রক্ষা করা অত্যাবশ্যক। এর সমাধানটি একটি হাদীছের শেষাংশে রাসূল (ছাঃ) উল্লেখ করেছেন এভাবে, ‘যতক্ষণ না তোমরা দ্বীনের পথে ফিরে আসবে’ (আবুদাঊদ হা/৩৪৬২)। অর্থাৎ মুক্তির পথ প্রতিভাত হবে বিশুদ্ধ দ্বীনের দিকে ফিরে আসার মাধ্যমে, যে দ্বীনের উপর অটুট ছিলেন রাসূল (ছাঃ) ও ছাহাবায়ে কেরাম।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, তিনি তোমাদেরকে সাহায্য করবেন’ (মুহাম্মাদ ৪৭/৭)। মুফাসসিরগণ একমত যে, অত্র আয়াতে আল্লাহকে সাহায্য করা অর্থ হ’ল, তাঁর হুকুম-আহকাম অনুযায়ী আমল করা। সুতরাং আল্লাহকে সাহায্য করা যদি আল্লাহর বিধান বাস্তবায়ন না করা ব্যতীত অসম্ভব হয়, তাহ’লে আমরা কিভাবে বাস্তব জিহাদে অবর্তীণ হব, যখন আমরা আল্লাহকে সাহায্য করছি না? কেননা আমাদের আক্বীদা যেমন অশুদ্ধ, নৈতিকতাও তেমন ধ্বংসোন্মুখ হয়ে পড়েছে। সুতরাং জিহাদ শুরুর পূর্বে এই অবহেলা-উন্নাসিকতা আর বিবাদ-বিসম্বাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং বিশুদ্ধ আক্বীদা ও আত্মশুদ্ধি অর্জনের প্রচেষ্টাই হবে আমাদের আবশ্যকীয় প্রাথমিক কর্মসূচি। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পরস্পর ঝগড়া করো না, তাহ’লে তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের শক্তি নিঃশেষ হয়ে যাবে’ (আনফাল ৮/৪৬)। সুতরাং যখন আমরা এই মতবিরোধ ও গাফিলতির পরিসমাপ্তি ঘটাতে সক্ষম হব এবং তদস্থলে পারস্পরিক ঐক্য-ভালোবাসার জাগরণ সৃষ্টি করতে পারব, তখন সেটাই হবে আমাদের দুনিয়াবী শক্তির মূল চাবিকাঠি। আল্লাহ বলেন, ‘তাদের মুকাবিলার জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী শক্তি ও অশ্ববাহিনী প্রস্ত্তত কর’(আনফাল ৮/৬০)।

চারিত্রিক দিক থেকেও মুসলমানদের অবস্থা ধ্বংসাত্মক এবং মারাত্মক বিভ্রান্তিতে নিমজ্জিত। তাইতো সালাফী নন এমন একজন বিখ্যাত মুসলিম দাঈর বক্তব্য (কাযী হাসান হুযায়মী) আমাকে বিস্মিত করেছে, যদিও তাঁর অনুসারীরা তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী চলেন না। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা তোমাদের হৃদয়ে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা কর, তবেই তোমাদের রাষ্ট্রে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠা লাভ করবে’। অধিকাংশ দাঈ ভুল করেন যখন তারা আমাদের এই মূলনীতিকে অবহেলা করেন। একই ভুল করে বসেন যখন তারা বলে বসেন, ‘এখন তো তাছফিয়াহ ও তারবিয়াতের সময় নয়। বরং এখন তো ঐক্যবদ্ধ ও সংঘবদ্ধ হওয়ার সময়’। অথচ এ অবস্থায় ঐক্যবদ্ধ হওয়া কিভাবে সম্ভব হ’তে পারে যখন মৌলিক ও শাখা-প্রশাখাগত নীতিতে বিভেদ বিরাজমান?… এ দুর্বলতাই আজ মুসলমানদের মাঝে ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হ’ল যেটা আমি আগেই বলেছি, বিশুদ্ধ ইসলামের দিকে যথাযথভাবে ফিরে আসা এবং সমাজে তাছফিয়াহ ও তারবিয়াহর নীতি বাস্তবায়ন করা। আশা করি এটুকুই যথেষ্ট হবে। সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি জগৎসমূহের প্রতিপালক

(মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আশ-শায়বানী, হায়াতুল আলবানী ওয়া আছারুহু ওয়া ছানাউল উলামা আলাইহে ৩৭৭-৩৯১)

[আত-তাহরীক, জুলাই ২০১৩ সংখ্যা থেকে গৃহীত]



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.