নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
আর কারো হয় কিনা জানি না, কিন্তু আমার প্রায়শ এ ব্যাপারটা ঘটে থাকে। যে থিম বা প্লট মাথায় ডিগবাজি খাচ্ছিল, লিখতে গিয়ে দ্বিতীয় পঙ্ক্তিতেই দেখি ১৮০ ডিগ্রি সরে যাচ্ছি। শেষাব্দি নতুন কিছু রচিত হয়তো হলো, যা থেকে সৃষ্টির আনন্দ বেশ আস্বাদন করা যায়, কিন্তু ব্যক্ত-করতে-না-পারা ভাবনাটা ক্রমাগত মনের মধ্যে যন্ত্রণা দিতে থাকে। আবার এমনও হয়, বিষয়টা মনের ভিতরে যেভাবে ভাবছি ও অনুবাদ করছি, অবিকল সেভাবে ব্যক্ত করতে পারছি না। এখানেও একটা অতৃপ্তি ক্রমশ ঘনিয়ে উঠতে থাকে।
মজার ঘটনাও ঘটে থাকে। ১ লাইনের এক কবিতা এমনি-এমনি হঠাৎ করে বেরিয়ে গেলো। দিন যায়, মাস যায়, সেটি আর এগোয় না। কী যে লিখেছি, তার না হয় কোনো অর্থ, না আছে কোনো সমাপ্তি, ‘কোনোদিনই হইল না শেষ’ অবস্থার মধ্যে ওটাকে ‘ক্ষণজন্মা’ শিরোনামে আপগ্রেড করে দিই। মজার ঘটনা আরো আছে। ৫-৭ লাইনের কবিতাকে ব্লগে পোস্ট করা হলো। তার উপর পাঠকের একেকটা মন্তব্য জমা হয়, নতুন নতুন থিমের উন্মেষ ঘটে, আর কবিতার কলেবরও বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত ওটি প্রায় ৩-৪ পাতা খেয়ে ফেলে। সবচেয়ে হাস্যকর এবং ‘হৃদয়বিদারক’ ঘটনা ঘটে তখন, যখন এটিকে পূর্ণ কবিতা হিসাবে ব্লগে নতুন করে পোস্ট করি – হায়, কেউ এটাকে আর কবিতা বলে না, বলে ‘প্রবন্ধ’, ‘গবেষণা’!
‘রুপা’ চরিত্রটি আমার অনেক পছন্দের। রুপার স্বামী আছে, সন্তান আছে। রুপার সুখের সংসার। ভবঘুরে হিমালয়, কিংবা হঠাৎ হঠাৎ অন্য কোনো নায়ক-চরিত্র মানসিক অশান্তিগ্রস্থ হয়ে পড়লেই রুপার আশ্রয়ে চলে আসে। তারা প্রেমিক-প্রেমিকা। গভীর সম্পর্ক তাদের মধ্যে। কিন্তু কোনো পঙ্কিলতা নেই। আমি এমন একজন নারীকেই কল্পনা করি। সে নারী আমার সর্বস্ব, সে আমার হাতের পুতুল, চাইলেই মুহূর্তে সে তার স্বামী-সংসার-যাবতীয়-সুখ ত্যাগ করে আমার কাঁধে হাত রাখবে। চাইলেই সে যখন-তখন আগুনে পা দেবে। কিন্তু আমি তা চাই না। বুকের ভিতরে যে-নারী অনাঘ্রাত পুষ্পের মতো আজন্ম অক্ষত, মর্মের ভিতর দিয়েই আমি তার ঘ্রাণ নিতে থাকি। তাকে এবার কবিতায় নিয়ে আসি। আমি লিখলামঃ
চারদিক ছেয়ে আসে গাঢ় অন্ধকার,
আমি মুদিত-নয়ন কবি, ধ্যানমগ্ন, উতলা-অস্থির,
যত চাই ভুলে যেতে, ততই ভেসে ওঠে
জীর্ণ-শীর্ণ, অশ্রুভেজা, ম্লানমুখ চির দুঃখিনীর।
তুমি ভগ্নি, তুমি কন্যা, জননী বা তুমি প্রণয়িনী
সর্ব বর্ণে, সর্ব রূপে মনে হয় জন্মে জন্মে তোমাকে আমি চিনি।
আমাকে চেনো নি তুমি? তোমার জন্যে বুকে জাগে
তামাম পৃথিবীর ভালোবাসা, অন্তরে নিত্য প্রস্রবণ,
আপন বক্ষের মাঝে কান রেখে শোনো, রয়েছে
তোমার আত্মার সাথে আমার আত্মার নিগূঢ় বন্ধন।
আমার হৃৎপিণ্ডের আধেক আমাতে,
আধেক রয়ে গেছে তোমার বুকের ভিতর,
তুমি কি কখনো পাও নি টের কখন শান্ত নদী,
কখন সেখানে জাগে উত্তাল দেবে।
নাহ্, হয় নি। যা চাই, তা হয় না। কী ভেবেছিলাম, আর কীইবা লিখেছি, কোথাও কোনো মিল খুঁজে পাই না। পঙ্ক্তি ধরে ধরে কতো রকমে নিজেকে বোঝাতে চাই- যা ভেবেছি, এ তা-ই। কিন্তু এটা যে একটা ফাঁকি, নিজের সাথেই প্রতারণা, তা ভেবে মনোকষ্টে তাড়িত হতে থাকি। আবার ব্লগে লিখি – ‘অমর্ত্যবর্তিনী’-
তুইতো বউ হলি না, হলি না প্রেমিকাও
সম্পর্ক আর অসম্পর্কের মাঝগাঙে তোর নাও
বউকে দিব্যি প্রেম দিই, যার চেয়ে ঐশ্বর্য কিছু নেই
তোকে দিই মুহূর্তকবিতা, না চাইতেই
গৃহের ধ্যানে বড্ড গুটিয়ে গেছিস; আমিও তাই
আজও এক গৃহেই জ্বালি তোর রোশনাই
এখানে সামান্য তৃপ্তি মেলে। কিন্তু যতই দিন বাড়ে, ‘রুপা’র প্রতি আমার অনুরাগ যেমন অদম্য হয়ে ওঠে, তাকে ‘প্রকাশিত’ করতে না পারার ব্যর্থতা আমাকে ততই বিধ্বংসী এবং যুগপৎ বিদীর্ণ করতে থাকে। ভেঙেচুরে মিহিদানার মতো গুঁড়ো হয়ে যেতে থাকি। সেই কষ্টের ভেতরই ক্ষুদ্র একটা ‘প্রাপ্তি’ জুটে যায়-
সেই কবে
একটি বাহু ছুঁয়ে দিয়েছিলি
বিষম আলতোমিতে
তারপর এক শতাব্দী গত
আজও তোর স্পর্শের দাহে
জ্বলেপুড়ে ছারখার অঙ্গারিত ক্ষত
যৌবন বনস্পতি
বরিখে বরিখে নীরবে অশ্রু ফেলে
কী এমন হতো রে ক্ষতি
এক জনমে এ-প্রসাদটুকু না পেলে?
যন্ত্রণা আমাকে কুরে কুরে ক্ষয় করতে থাকে। যাঁরা লেখেন তাঁরা জানেন যা লিখতে চান তা ফুটিয়ে তুলতে না পারলে তার কী কষ্ট। অনেক আগে, বিটিভির এক সাহিত্য-অনুষ্ঠানে কবি ত্রিদিব দস্তিদার বলেছিলেন- একজন কবিকে একটা শব্দের জন্য কখনো কখনো পুরো একটা দিন- একটা সপ্তাহ, অনেকগুলো মাস- বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। আমি কবির কথা স্মরণ করে নিজেকে সান্ত্বনা দিই, আর ভাবি, সেই ‘অধরা’কে একদিন পাবই। এমন সময়েই আমি ‘ধ্রুব’ সৃষ্টি করি, যা আমাকে প্রভূত তৃপ্তি ও আনন্দ দান করে-
১
তোর জন্যই আঁধারে নহর কিংবা রোশনাই
তোর জন্য তুমুল বেঁচে থাকা
তোর জন্যই মুহূর্তে নিঃস্ব; নঞ্-ত্বে নস্যি, নষ্ট হয়ে যাই।
২
তুই কি চলে যাবি ঘুড়ি, আকাশে?
ঠিক আছে, যা।
তুই তোর আকাশেই থাক, আমি খুঁজে নেব আমার ঠিকানা।
৩
কে তবে আগুন-পাহাড়ে বরফের বীজ বোনে? আমি, নাকি তুই?
যাবার আগে, অয়ি ঈশ্বরিনী, বলে যা এটুকুই।
এটাও যখন হলো না, তখন এভাবে ‘অধরা’কে ধরার চেষ্টাকে আমি খুব পজিটিভলি নিতে শুরু করি। সৃষ্টির লক্ষ্যে সৃষ্টি; সৃষ্টির জন্য সৃষ্টি। নব নব সুখ ও তৃপ্তি। আমি রুপা’র উদ্দেশে ‘হিরণ্যকথা’ লিখলাম-
১
ল্যাবএইডের উত্তর গেইটের সিঁড়ি, ১ নম্বরের গোলচক্বর
ওভারব্রিজের গোড়ায়, সনি’র দক্ষিণে সংকীর্ণ গলির মুখে
বিগবাজারের নির্মল দরজার ভেতর অস্থির দাঁড়িয়ে
অমনি রিকশার হুড গলে বাতাসে শাড়ির ওড়াউড়ি
আমি এক প্রেমার্ত শিশু। আলাভোলা। পূর্বাপর ভাবি না কোনও কালে।
উড়ে তোর কোল জুড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ি। অসাবধানে। বেখেয়ালে।
২
দুইশ বত্রিশ কিলোমিটার বাসে চেপে বাড়ির স্টপেজে নামলি। দশ পা ফেললে ঘর। ‘এখনই চলে আয় বুড়ি।’
আকাশে তুমুল তুফান। আহা! ফালি ফালি জ্যোত্স্নারা। আহা! একজোড়া তীর্থের চোখ। আহা!
‘মোবাইলে কান পেতে আছি। ফিরতি টিকিট কাট্। এখনই।’
দুইশ বত্রিশ কিলোমিটার। আহা! নির্বিবাদ ফিরে আসা তোর। আহা!
‘কী করে চলে গেলি না বলে?’
‘বড্ড উন্মাদ তুই। ছেলেমানুষ।’
‘আজ খুব ধকল গেলো।’
‘ঘরে তুই আগুন দিবি?’
‘আমি কোনও ঘর চিনি না। কী শান্তি সংসারে?’
‘এ আমার কলজেটা নে। খেয়ে তবে নিষ্কৃতি দে।’
এটা লিখবার পর আমাকে একটা বিচিত্র ধরনের যন্ত্রণায় ধরলো- এর পাঠক হয়তো ঘটনাটা ধরতে পারবেন না- কারণ, লেখাটা খুব বেশি সাংকেতিক ও সংক্ষিপ্ত। আমাকে না জানিয়ে রুপা ওর নিজভূমে চলে গেছে! এটা তো হবার নয়! রুপার নিশ্বাসকে আমি নিয়ন্ত্রণ করি; আমার হুকুম বিহনে, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে ঢাকা ছেড়ে বহুদূর সীমান্ত গাঁয়ে পাড়ি দেবে রুপা, ওর এতই দুঃসাহস! বাস থেকে নেমে দু পা ফেললেই ঘরের দাওয়া। উঠোনে পা ফেলতেই আমি রুপাকে কল দিই মোবাইলে – এক্ষুণি, এক্ষুণি- ফিরতি বাসে ঢাকা ফিরে আয়। রুপা অতিশয় নির্বিবাদে দুয়ারে পা না রেখেই ফিরে এসে বুকের উপর আছড়ে পড়ে ফুঁপিয়ে ওঠে – ‘স্বামীর ঘরেও কি যেতে নেই?’ ‘না....’ আমার সুদীর্ঘ তীক্ষ্ণ চিৎকারে আকাশের চিকন বুক চৌচির হয়ে যায়। ... সরল অর্থ করলে এ-কবিতার অর্থ এ বই অন্য কিছু হয় না। কিন্তু আমি চাই রুপাকে। তখনই মনে পড়ে, অনেক আগে লিখেছিলাম ‘তুমি শুধু মন নিয়ে খেলা করো’ সিরিজ। তাতে কমপক্ষে দুটো সিকোয়েলে আমি রুপাকে ধরতে চেষ্টা করেছিলামঃ
১
আমার প্রেম পাওয়া হয়ে গেছে, এবার তবে
যেতে পারিস যথাতথা, মহোৎসবে।
সবই তুই দিস, শুধু যত্ন করে
আমার জন্যে মনটারে তোর রাখিস ধরে।
২
তুই যে বড় বলিস, কৈশোরের কাল হতে
আমায় বেঁধেছিস মনে
তাহলে প্রমীলা চল্ আমরা ফিরে যাই
বিশ বছর আগেকার প্রথম যৌবনে।
আমি তো ছিলাম অভাগা ‘যতিশংকর’,
এমন কেউ নয় তোর চোখে পড়বার মতো।
তুই কি জানিস, একটানা কতোদিন কাটিয়ে দিতিস
একবারও না তাকিয়ে আমার পানে?
আমার ছিল না কেউ দেখবার অন্তরের রক্তাক্ত ক্ষত।
কখনো সহজ চোখে, কখনো বিরক্তিতে,
কখনো তোরই প্রয়োজনে, কখনো অভ্যাসবশত,
কখনো ভুলে-ভাটে অতর্কিতে
তোর চোখের আলো এসে পড়তো আমার নয়নে।
অমনি রুদ্ধশ্বাস ভালোবাসা ছুটতো ফিনকি দিয়ে অন্তর্প্রস্রবণে, সঙ্গোপনে।
তা তুই জানতিস না কিছুই। প্রমীলা, আজ তবে চল্ আমরা ফিরে যাই
বিশ বছর আগেকার প্রথম যৌবনে প্রেমের বৃন্দাবনে।
প্রমীলা? হ্যাঁ, প্রমীলা। প্রমীলাকে কবে, কোথায় দেখেছি, জানি না। রুপার কোনো অস্তিত্ব যেমন নেই আমার জীবনে, কিংবা ত্রিভুবনে, প্রমীলা তেমনি। প্রমীলা অন্ধকারের ঝিনুক থেকে ছিনিয়ে আনা অহংকারী বেদনা। এমন সময়ে ‘হিরণ্যকথা’র কথা মনে পড়ে। ওটার আরেকটা অনুবাদ বা সংস্করণ তৈরি হয়ে যায় – ‘প্রমীলার সাথে আমার সম্পর্ক’-
প্রমীলার সাথে আমার কোনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল না, কোনোরূপ যৌনসম্পর্কও নয়।
অথচ আমরা একে অপরকে সবচেয়ে বেশি বুঝতাম, বকতাম সবচেয়ে বেশি।
বললাম, ‘তোকে কল করলেই ‘ওয়েটিং’ পাই, কার সাথে এতো কথা?’ অমনি সে মোবাইল সেটটা মেঝেয় আছড়ে গুঁড়ো করলো। এটা অবশ্য ওর অভিমান ছিল; ছেলেমানুষি।
দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা বাসভ্রমণ শেষে কাশিয়ানিতে পা রাখলো প্রমীলা। ‘না বলে চলে গেলি?’
বলতেই সে ফিরতি বাসের টিকিট কাটলো।
আমি তখন কাঁটাবনের রাস্তায় উদাস গড্ডলিকা। প্রমীলার ছায়া পাশে দাঁড়ালেই আমার
হাড়গুলো টের পায়। আমার কাঁধে ওর হাত, ‘চেয়ে দেখ, আমি কাঁদছি।’
ঘুমের ভেতর ‘বুবু’ চিৎকারে আড়িয়াল বিলের ধানক্ষেত মাড়িয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে উঠলে যে ছায়ামূর্তি আমার সামনে এসে নির্মলহাস্যে মধুর হাত বাড়িয়ে দেয়,
সে প্রমীলা।
আমি প্রমীলার শাসন-হুকুম ভালোবাসি।
আমি হাসলেই প্রমীলার দুঃখ হয়, আমি হাসি না।
আমি যদি একবেলা প্রমীলাকে না দেখি, জীবনের সব অর্থই অনর্থ হয়ে যায়।
আমি যদি একবেলা প্রমীলার সামনে না দাঁড়াই, সে ভাবে
ওর কথা আজ একটুও ভাবি নি।
প্রমীলাকে বলেছিলাম, ‘ভ্রূ প্লাক করিস না পাখি। এই যে পারলারে যাস, ওখানে কি
ছেলেরাও থাকে না?’ প্রমীলা একটা ভয়ানক কাজ করেছিল- পুরোটা মাথা ন্যাড়া করে
পবিত্র ভিক্ষু’র মতো সামনে এসে দাঁড়ালো- ওর চোখ ছিল বিশ্বস্ত ও নির্লিপ্ত, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর; পুলিশের হাতে ধরা-খাওয়া খুনের আসামির মতো আমি কাঁপছিলাম।
প্রমীলা মাতৃস্থানীয়া নয়, সহোদরা নয়, প্রেমিকা অথবা বান্ধবী নয়। প্রমীলার সাথে কী
আমার সম্পর্ক জানি না। সকল অ-সম্পর্কের গভীরে তীব্র অস্তিত্বশীলা রমণীর নাম
প্রমীলা, যে আমাকে সকল সম্পর্কের মতো এখনো নির্মোহ ভালোবাসে।
বাহ্! বাহ্! এইতো! এইতো আমি এতদিন ধরে চেয়েছি! আমি উদ্বেলিত হই। ফল্গুস্রোতে আমার নদী বয়ে যায়। আমি উড়তে থাকি। কিন্তু, সহসাই সব আলো ম্লান হয়ে গেলো। উচ্ছ্বাস নিভে গেলো মুহূর্তে, হায়, আমি যে রমণির আরাধনা করি, সে তাকিয়ে আছে অন্য আলোর দিকে, অধীর উন্মুখ হয়ে। কে সে? সে কে? ‘তোমার প্রেমিকের নাম বলো, প্রমীলা’-
তোমার প্রেমিকের নাম বলো, প্রমীলা, যার সাথে
প্রতিদিন গোপনে দেখা করো, অবলীলায় যে তোমার হাত ধরে
মনুষ্যভিড়ে; অথবা চিলের মতো ছো মেরে কেড়ে নেয় তোমার হৃৎপিণ্ড,
যার ধ্যানে একদিনও চোখ খুলে দেখলে না
তোমার পাদপদ্মে আত্মাহুতি দিয়ে গেলো ঘোরের সন্ন্যাসী
আমাকে তার নাম বলো, প্রমীলা, সেই মহান পুরুষের বিরাট ছায়ায়
একবার নিজেকে দেখি।
সব বেদনা ভুলে যেতে চাই, পাগলা ষাঁড়ের মতো বেদনারা তীব্র তেড়ে আসে। যাকে চাই নি, তাকে পাই নি; যাকে পাই নি, তাকে কেবল জীবন দিয়েই ভুলে যাওয়া যায়। সে থাকে আকাশ জুড়ে; আকাশ ছোঁয়া যায় না। আকাশ ফুঁড়ে তার হৃৎপিণ্ডে ঢুকে যাওয়া যায়। আকাশের অণু-পরমাণুতে সে মিশে আছে। আমি তার ঘ্রাণ পাই। তখনই লিখি ‘একটা ঘ্রাণ’-
হঠাৎ হঠাৎ একটা অরিহ গন্ধ ভেসে আসে বাতাসের স্বননে; প্রথম তারুণ্যে আফরোজার কেশফুলে এমন পেলব একটা ঘ্রাণ ছিল; কলমিলতা আর দুধুল্লার শরীরেও ছিল এমন অদ্ভুত কিছু ঘ্রাণ; এখনো কোনো কোনো নিঝুম দুপুরে বড্ড আচানক নাকের পর্দা ভেদ করে একগুচ্ছ সৌভিকঘ্রাণ মগজে ঢুকে পড়ে; অন্ধের মতো ঘ্রাণের উৎস খুঁজতে খুঁজতে কেবলই দিশেহারা হই;
সে-রাতে ভৈরবের রেল-স্টেশনে নামতেই বহুকাল আগে হারিয়ে যাওয়া একজন মানুষ একটা অচেনা নাম্বার থেকে ফোন করলো; ‘ভালো আছিস, সোনাপাখি?’ বলতেই কেঁদে উঠলো অহনা, ‘তোর ঘ্রাণ এখনো ভুলতে পারি না সোনা; ঘরের চারপাশ, বারান্দায় এখনো তোর ঘ্রাণ। আমাকে জ্বালায়, পোড়ায় তোর ঘ্রাণ। আর পারি না, আমাকে একটু বাঁচতে দে না, পাখি!’
অরিহ গন্ধ। ‘অরিহ গন্ধটা’ খুব নিরীহ, সাদামাটা গন্ধ নয়, এমন একটা অনির্বচনীয় গন্ধ, যা অন্যসব গন্ধকে ছাপিয়ে ‘অস্তিত্বশীল’ হয়ে ওঠে। গন্ধের কোনো ‘অস্তিত্ব’ নেই, কিন্তু এ গন্ধটার এমনই প্রভাব, মনে হয় নিরীহ বাতাশের মৃদুতম শব্দতরঙ্গের সাথে একাত্ম হয়ে অতিশয় মোলায়েমভাবে নাসারন্ধ্রের ভেতর ঢুকে পড়ে। কোথা থেকে আসে এ গন্ধ? কোন্ অমরাবতীর পুষ্পোদ্যানে কোনোদিন-না-দেখা ফুলের থেকে উঠে আসছে এ ঘ্রাণ? প্রথম যৌবনে আফরোজা নাম্নী এক কিশোরীর চুলগুচ্ছে এমন ঘ্রাণ ছিল। আড়িয়াল বিলে ডগাতোলা কলমিলতার শরীরে এমন মাদকতাময় কিছু ঘ্রাণ ছিল। ধুধুল্লা-লতা মুঠো ভরে হাতে তুলে নেবার সময় এমন কিছু ঘ্রাণে আমি মাতোয়ারা হতাম। সেইদিন কবে চলে গেছে, অথচ আজও সেই ঘ্রাণ আমাকে পাগল করে। কোথা থেকে এ ঘ্রাণ আসে? ঘ্রাণের উৎস খুঁজে খুঁজে বিষাদগ্রস্থ হয়ে উঠি, উৎস মেলে না।
এমনটা কি শুধু আমারই ঘটে থাকে? কেন ঘটে থাকে?
ঝঞ্ঝা-ক্ষুব্ধ যৌবনে যে যুবতীর কোমল গন্ধে জীবনে স্থৈর্য্য এসেছিল, সে হারিয়ে গেলো। কিন্তু রেখে গেলো তার অফুরন্ত ঘ্রাণ। অহনার খবর জানা নেই, তার ঠিকানা হারিয়ে গেছে। এক ভবঘুরে, ছন্নছাড়াকে মনে রাখবে অহনা, এতোখানি আশা করাই অন্যায়। কিন্তু যেদিন মাঝরাতে, একটা অচেনা নাম্বার থেকে একটা কণ্ঠস্বর ভেসে এলো, অতি পরিচিত সেই কণ্ঠস্বর- অহনা- অনেক কাল আগে হারিয়ে যাওয়া মেয়েটি। সে তো সুখেই আছে, এমন ভেবে ভেবে কতো কেঁদেছি। ....এই ভাবনাটাই ভুল ছিল। কেউ ভুলতে পারে না। আমিও যেমন অহনার কথা মন থেকে মুছে ফেলতে পারি নি, পারে নি অহনাও। আমার যেমন মনে হয়, একটা অদ্ভুত সুন্দর ঘ্রাণ আমায় পাগল করে দিল, অহনার দশাও এমনই। ভুলতে না পারা কী যে বেদনাময়, বুকের ভেতর যার তুষের আগুন সেই শুধু তা জানে। অহনাও ভুলে যেতে চায়, ভুলে গিয়ে বেঁচে থাকতে চায়।
একটা ঘ্রাণ, শুধু একটা ঘ্রাণ নয়, একটা অদৃশ্য বন্ধনের প্রতীক।
তারপর অহনাকেও আর খুঁজে পাই না। জানি না কী তার গাত্রবর্ণরূপ। জানি না তার নদীর লাবণ্য ছিল কী না-ছিল। বড্ড মনে পড়ে নি এসব তুচ্ছাতিতুচ্ছ বাহ্যিকতা। আমি তার বলয়বন্দি প্রেমাসক্ত পুরুষ, যুগযুগান্তকাল। আমি তার বাহির দেখি নি; খুঁজেছি অন্তরের হেমখণ্ডখনি। কী হবে তার গাত্রবর্ণরূপে, যদি গো তার প্রেম নাহি মেলে!
অহনার কথা আরো বলি। অহনা স্বপ্ন দেখে দিনভর অহনাকেই ভাবি। অহনা বললো : আমায় নিয়ে কবিতা লিখো না আর কোনোদিনও। আমি অহনার কথা মেনে নিয়ে অহনাকে নিয়ে আর লিখি না।
তারপর দেখো, অহনাকে কেমন অনায়াসে অতীত পাথারে ডুবে যেতে দেখি। অহনা মানবী ছিল : প্রেমিকা হতে হতে তারপর মহীয়সী। পবিত্র প্রত্যূষে অহনার উদ্ভাসিত হাসি আমাকে করেছিল মৃত্যুঞ্জয়ী পাখি। অহনা বলেছিল : আমায় নিয়ে কবিতা লিখো না আর কোনোদিনও। আমি অহনার কথা মেনে নিয়ে আর লিখি না।
এভাবেই অহনার কথা বিলকুল ভুলে যেতে থাকি।
অহনা একটা ভোরের পাখি, কিংবা ভোরের রং অথবা রাগ। কিংবা একটা স্বপ্নঘোর ঊষা। ভোর। অহনা আলেয়া কিংবা মরীচিকা। অহনা কে, তা সত্যিই জানি না।
প্রমীলা! সে এখন যে-কোনো নারী! তার বুকে অচেনা গন্ধ। কে তার সত্যিকারের প্রেমিক, জানি না।
প্রমীলা- সব আলো ম্লান করে দেয়।
প্রমীলা- জমাট আঁধারে তীব্র একখণ্ড আলো।
প্রমীলা- আলেয়া, এবং মরীচিকা।
মাঝে মাঝে মনে হয় প্রমীলাকে চিনি, এ গ্রহেই তার নিবিড় আনাগোনা। প্রমীলাকে এরপর দেখি না, তাকে ছোঁয়া যায় না, তার ফেলে যাওয়া পথে কখনো সোনাবীজ, কখনোবা বা দুঃখ রয়েছে বোনা।
পৃথিবীতে প্রেম ছিল। অমোঘ রত্নের মতো আলোডানাপ্রেম আমার চোখের ভেতর মেখে দিয়ে ভোরের কুয়াশায় মিলিয়ে গিয়েছিল যে নারী- রাতের পাখিরা তার নাম রেখেছিল ‘অহনা’। অহনা, কিংবা প্রমীলা, প্রমীলা অথবা অহনা- হতে পারে অন্য কোনো নারী কিংবা অপ্সরা- অথবা কোনোদিনই কেউ ছিল না- যা ছিল, তার একখণ্ড-সুখ, অন্যখণ্ড-দুঃখ। আমার কোনো দুঃখ নাই। দুঃখের সাথে সখ্য আছে, সে হয় আমার আপন ভাই।
এমন একজন নারীকে খুঁজি, যে হবে রুপার মতো প্রেমময়ী, প্রমীলার মতো সকল সম্পর্কের উর্ধ্বে হবে তার বাস। সে অহনা, অথবা আফরোজা, অথবা এমন একজন নারী, যে মানবী কোনো ‘ভাবে‘ই ব্যক্ত হতে শেখে নি, সে ‘এমন একজন নারী’-
একটা অদৃশ্য সিঁড়ি বেয়ে ছায়ার মতো ধীর পায়ে নেমে আসে কবিতার নারী
তার নরম নিশ্বাসে স্নিগ্ধ সৌরভ
সহসা চঞ্চল হয়ে ওঠে – নৃত্যের ভঙ্গিমায় সর্বাঙ্গে ফুটিয়ে তোলে রাশি রাশি ফুল আর কলা
আবার আলগোছে কাছে বসে শরীর এলিয়ে রাখে আমার শরীরে।
আমি তার হাত নাড়ি, আঙুলগুচ্ছ, ও রঙিন কঙ্কন।
আমি তার রক্তের ভেতর নাচি
আমি তার বুকের উপর নির্বিঘ্ন খেলা করি
আমি তাকে ফালি ফালি করে রাতদিন কেটে খাই
আমি তার সমগ্র সত্তা ও ইচ্ছেকে হাতের মুঠোয় পুরে রাখি তার বাধাহীন বিসর্জনে
অথচ আমরা কোনো সম্ভোগে বসি না- কীভাবে কামনাকে ভুলে গিয়ে অনায়াসে ডুবে যাই গভীর গঙ্গায়
এমন একটা প্রেমের জন্য আজন্ম ক্ষুধার্ত ছিলাম
এমন একজন নারীর জন্য বটবীথিকার নির্জনতায় নিয়েছি সন্ন্যাস
এখনো ঘোরের ভেতর অলৌকিক মাধুর্যে হাসে আমাতে জড়িয়ে থাকা অদ্ভুত প্ল্যাটনিক নারী
আমি তাকে দেখি, কিন্তু দেখি না
আমি তাকে ছুঁই, কিন্তু ছুঁই না
১১ জুলাই ২০১৩
১১ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:১৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খুব ভালো লাগলো সোহাগ ভাই, আমার ব্লগে আপনার প্রথম কমেন্ট দেখে। প্লাসের জন্য ধন্যবাদ।
২| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:০০
আরজু পনি বলেছেন:
আপনার এই লেখার জবাব দিতে গেলে আমার নিজেরই আরেকটা পোস্ট রেডি হয়ে যাবে !
তবে এটাকে আমি বলবো প্রবন্ধের সঙকলন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় আমারও খুব মাথা ন্যাড়া করতে ইচ্ছে হতো । মাকে রাজি করাতে পারি নি ।
এখন্ও একটু আধটু ইচ্ছে করে...ফিলিঙসটা পেতে ইচ্ছে করে...কিন্তু বিবাহিত মেয়েদের সেই স্বাধীনতা সমাজ দেয় না !
শেষের এই কথাটায় যেনো কেউ এসে সামনে দাড়ালো...
আমি তাকে দেখি, কিন্তু দেখি না
আমি তাকে ছুঁই, কিন্তু ছুঁই না
১১ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:২৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ইতিহাস, এবং আকাঙ্ক্ষা সবারই আছে যে-ইচ্ছেটা একদম হাতের নাগালে, জীবন ও শখ ফুরিয়ে যাবার আগেই পূরণ করে নিতে হয়। কোনো কোনো পাগলামিতে খুব মজা এবং সুখ আছে- এটা আমি নিজে যেমন পছন্দ করি, আমার পছন্দের কেউ তা করলে তেমনি উপভোগ করি। ফিলিঙসটা এক্জিকিউট করুন স্বাধীনতা হলো নিজের অধীনতা থাক থাক- অত পাগলামি অতটা ভালো নয়
ধন্যবাদ আপু এ বিশাল প্রবন্ধটি মনোযোগ দিয়ে পড়বার জন্য।
৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৪৩
আজ আমি কোথাও যাবো না বলেছেন: পোস্ট পড়লাম! পোস্টের মতোই চমৎকার মন্তব্য দেয়ার মতো ভাষা আপাতত আসছে না মাথায়!
প্লাস দিয়ে গেলাম আপাতত! পরে বিশাল একটি মন্তব্য পাওনা রইলো!
১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খুব প্রেরণাদায়ী মন্তব্য। ধন্যবাদ। তবে ‘বিশাল‘ মন্তব্যের অপেক্ষায় থাকলাম
৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ১১:৫২
অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: প্রমীলা, অহনা এই কবিতাগুলো আগে পড়েছিলাম আর ফেবুতে লাস্টের গুলো। এর মাঝে আমার প্রিয় একটা অংশ হলো -
তোর জন্যই আঁধারে নহর কিংবা রোশনাই
তোর জন্য তুমুল বেঁচে থাকা
তোর জন্যই মুহূর্তে নিঃস্ব; নঞ্-ত্বে নস্যি, নষ্ট হয়ে যাই।
--- এই তিন লাইন নিয়ে আমার ভালো লাগার কথা আগেও বলেছিলাম !
পুরো লেখার অনুভবটাই চমৎকার !
১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৪২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপু। কিছু লেখা অন্য ব্লগেও পড়েছিলেন, ফেসবুকে নিয়মিত তো আছেনই।
ভালো থাকুন আপু।
৫| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:২১
~মাইনাচ~ বলেছেন: সমস্যাটা আমারও হয় মাঝে মাঝে। কোন গল্প, রম্য মাথায় এল কিন্তু সেটাকে পরে লিখতে গিয়ে দেখি আর এগুতে পারছিনা কয়েক লাইন লিখেই।
সুন্দর পোষ্ট
১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ প্রবলেমটা কি তাহলে কমন টু অল?
এ লেখাটার একটা মূল থিম ছিল, সেটি মনে হয় ফুটিয়ে তুলতে পারি নি। আরেকটা ব্যর্থতা, তা থেকে আরেকটা লেখ
ধন্যবাদ পোস্ট পড়ার জন্য। ভালো থাকুন।
৬| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭
মামুন রশিদ বলেছেন: কবিতার ঘর-গেরস্থালীতে আমি এক অনাহুত
১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কবিতার ঘর-গেরস্থালিতে আপনি সসম্মানে আমন্ত্রিত পড়বার জন্য ধন্যবাদ।
৭| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:১৮
রেজোওয়ানা বলেছেন: আমিও যথাপোযুক্ত মন্তব্য প্রদানে অক্ষম
১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক কথাই বলে গেলেন খুব ছোটো করে বলে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানবেন আপু।
৮| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪৩
অন্য কথা বলেছেন: তোমার প্রেমিকের নাম বলো, প্রমীলা, যার সাথে
প্রতিদিন গোপনে দেখা করো, অবলীলায় যে তোমার হাত ধরে
মনুষ্যভিড়ে; অথবা চিলের মতো ছো মেরে কেড়ে নেয় তোমার হৃৎপিণ্ড,
যার ধ্যানে একদিনও চোখ খুলে দেখলে না
তোমার পাদপদ্মে আত্মাহুতি দিয়ে গেলো ঘোরের সন্ন্যাসী
আমাকে তার নাম বলো, প্রমীলা, সেই মহান পুরুষের বিরাট ছায়ায়
একবার নিজেকে দেখি।
.... মুগ্ধতায় নির্বাক হলাম ।
১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৪৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
সে নারী আমার সর্বস্ব, সে আমার হাতের পুতুল, চাইলেই মুহূর্তে সে তার স্বামী-সংসার-যাবতীয়-সুখ ত্যাগ করে আমার কাঁধে হাত রাখবে। চাইলেই সে যখন-তখন আগুনে পা দেবে। কিন্তু আমি তা চাই না। বুকের ভিতরে যে-নারী অনাঘ্রাত পুষ্পের মতো আজন্ম অক্ষত, মর্মের ভিতর দিয়েই আমি তার ঘ্রাণ নিতে থাকি।
আপনার মুগ্ধতায় নির্বাক হওয়া আমার জন্য অনেক সম্মান ও অনুপ্রেরণার। অসংখ্য ধন্যবাদ অমূল্য মন্তব্যের জন্য।
৯| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪৭
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: সোহাগ সকাল বলেছেন: যথোপযুক্ত মন্তব্য প্রদানে অক্ষম। ভালো লাগলো, প্লাস দিলাম।
১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৪৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক অনেক, অনেক ধন্যবাদ ইরফান আহমেদ বর্ষণ। ভালো থাকুন।
১০| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৮
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেকগুলো কবিতা সম্মিলিত কিন্তু একীভূত একটা অনুভবের জন্ম দিল।
সুন্দর।
১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৫২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঠিক ধরেছেন। যে-কবিতাটা লিখতে চেয়েছিলাম, সেটি আজও লিখতে পারি নি। এটা যেমন একটা ব্যর্থতা ও যন্ত্রণা, মনের ভিতরে যে-আকুলতা নিয়ে এ লেখাটা শুরু করেছিলাম, তা-ও অব্যক্ত রয়ে গেছে।
শুভেচ্ছা থাকলো।
১১| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:৫২
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া একসময় তুমি অনেক অনেক কবিতা কমেন্ট করতে। তোমাকে এইখানে চেনার আগেই তোমার লেখা একটা বই পড়েছিলাম আমি। সেই তোমাকে এখানে আবিষ্কার করে আমার কি যে মজা লেগেছিলো!!!!!!!!!!!!!!
যাইহোক এখন তুমি ফেসবুক, ব্লগ থেকে এডিকশন মুক্ত। আমিও প্রায় মুক্ত যদিও পড়ে থাকি তারপরও আমি জানি আমি এখন অনেকটাই মুক্ত।
এই লেখা প্রিয়তে নিয়ে গেলাম অহনা অহনা লেখাগুলো বরুনা বরুনা লাগে।
১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:১১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার এ কমেন্টটি আমার জন্য অতিশয় আনন্দ ও অনুপ্রেরণার। ব্লগের প্রথম দিককার সময়গুলোতে ‘বরুণা‘র সাথে আমার অনেক যোগাযোগ ছিল। বরুণার পোস্টে কমেন্ট লিখতে গিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক কবিতার জন্ম হয়েছিল সেই সময়ে। এরপর ‘অপ্সরা‘র পোস্টেও তা হতো।
যাইহোক এখন তুমি ফেসবুক, ব্লগ থেকে এডিকশন মুক্ত। আমিও প্রায় মুক্ত যদিও পড়ে থাকি তারপরও আমি জানি আমি এখন অনেকটাই মুক্ত।
অবসর সময়ে ছোটো ছেলে আর মেয়েকে পড়াই। এ কাজটা চিরদিনই আমার কাছে খুব আনন্দের এবং প্রিয়। টিভি দেখি। মাঝে মাঝে গল্ফ খেলি। কিন্তু কর্মজীবনের ব্যস্ততার মধ্যেই অনেক বড় একটা স্বাদ ও আনন্দ লুকিয়ে আছে। ব্লগিং বা ফেইসবুকিং হলো ক্রিয়েটিভ জগৎ। এর ভিতরকার আনন্দ বাকি সবগুলোর চেয়ে আলাদা। কিন্তু এতে যদি এডিক্টেড হয়ে যাই, তখন আনন্দটা আর নির্মল থাকে না। সব মিলিয়ে যদি একটা ব্যালেন্স করে লাইফ লিড করা যায়, সেটা হয় সবচেয়ে ভালো।
অহনা অহনা লেখাগুলো বরুনা বরুনা লাগে। বরুণাই হলো আমার জীবনের প্রথম নারী, যে বুকের মধ্যে সুগন্ধি রুমাল রেখে বলেছিল, যেদিন আমায় সত্যিকারের ভালবাসবে সেদিন আমার বুকেও এ-রকম আতরের গন্ধ হবে! তারপর ভালোবাসার জন্য আমি হাতের মুঠোয় প্রাণ নিয়েছি, দুরন্ত ষাঁড়ের চোখে বেঁধেছি লাল কাপড়, বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি ১০৮টা নীলপদ্ম; তবু কথা রাখে নি বরুণা, এখনো সে যে-কোনো নারী! বরুণার কথা মনে পড়ে আর হুহু করে ওঠে আমার বুক। অহনা, কিংবা আফরোজা, প্রমীলা‘র ভিতরে নিভৃতে লুকিয়ে আছে যে-নাম, তার নাম বরুণা।
১২| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৪
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন: সোহাগ সকাল বলেছেন: যথোপযুক্ত মন্তব্য প্রদানে অক্ষম। ভালো লাগলো, প্লাস দিলাম।
১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:১৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ স্বপ্নবাজ অভি। শুভেচ্ছা থাকলো।
১৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৩
রোমেন রুমি বলেছেন: অদ্ভুত ভাল লাগল ।
এত মজা পাচ্ছিলাম পড়ে সেটা প্রকাশ করার সাধ্য আমার নাই ।
পড়তে পড়তে মাঝে মাঝে খুব হাঁসি পাচ্ছিল আবার কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছিলাম । পাঠক হিসেবে একই লেখার মধ্যে এত দ্রুত অনুভুতির উত্থান - পতন হয়েছে এমন লেখা মনে করতে পারছি না ।
অসাধারণ !
ভাল থাকবেন
সোনাবীজ ।
১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:১৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বেশি সরস মন্তব্যে খুব আপ্লুত হয়ে যাই। আমাকে মুগ্ধ করলেন এবং ঋণী করলেন। এমন মন্তব্যে খুব উদ্বুদ্ধ হলাম।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।
১৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৯
সোমহেপি বলেছেন: কবিতা বিষয়ক কাব্যিক প্রবন্ধ না কবিতা ঠিক ধরতে পারলাম না তবে তুঁতুলের মত লাগলো।রুচিবর্ধক।
ঘোর ঘোর ভালো লাগে।
১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৩৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ খুব ভালো বলেছেন, ‘রুচিবর্ধক‘।
ধন্যবাদ সহ শুভেচ্ছা থাকলো, ইমন ভাই।
১৫| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৮
ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: কবিতা লেখাটা তাহলে দেখা যাচ্ছে অনেকের ক্ষেত্রেই অদ্ভুত! মানে আমি যেমন মাঝে মাঝে ভাবি আমি কি কবিতা লিখছি নাকি কবিতা নিজেই নিজেকে লিখে চলেছে, সেই লিখে চলার উপর আমার কোন বুঝি নিয়ন্ত্রণ নেই! কখনও খুব লেখার আবেগ নিয়ে বসে আছি কিন্তু শব্দেরা পলাতক! আবার প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্যে কিছু কথা, শব্দ ভেতরে আকুলি বিকুলি কাটতে থাকে, অস্থির করে ফেলে! আর কবিতার শেষটা কি হবে সেটা আমি কখনই আগে থেকে জানতে পারিনি, কবিতা নিজেই নিজের মত করে ঠিক করে, আমাকে শুধু অপেক্ষা করে যেতে হয়!
শুভকামনা রইলো!
১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৪৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার মন্তব্যটা আমার এ পোস্টের সারাংশ হিসাবে বিবেচনা করা যায়। কবিতা আগে থেকে ভেবে নিয়ে যে লেখা যায় না, বা কবিতাটির সমাপ্তি কীভাবে হবে- আজও পর্যন্ত আরাধ্য কবিতাটি লিখতে না পারার ব্যর্থতা থেকেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়। যে-ভাবটি মনের মধ্যে তোলপাড় করছিল, লিখতে গিয়ে দেখি তা থেকে ১৮০ ডিগ্রি সরে গেছি; ওটিকে আবার লিখি, কিন্তু সেটিও ভাবনার কাছাকাছি যায় না। এভাবেই কবিতা তার নিজের গতিতেই চলমান, চলার পথে খড়কুটো কুড়োবার মতো শব্দ কুড়িয়ে নিজের ঝুলিতে পুরে নেয়।
ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। শুভেচ্ছা।
১৬| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৩৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই,
খুব সুন্দর লিখেছেন ।
রুপা সম্পর্কে আপনার মোহময়তা তরল সোনার মতো কেবল গড়িয়ে গেছে ... গড়িয়ে গেছে । ধুলোবালিছাই হয়ে যায়নি ।
নিজেকে কাটাচেরা করেছেন অনেক । যতোই করেছেন ততোই আপনার ঋদ্ধতার বীজটি ফুলে-ফলে -পত্র-পল্লবে ডালপালা ছড়িয়েছে । সুগন্ধ তাতে । পাঠক মজবেন সে সুগন্ধে ।
শুভেচ্ছান্তে ...
১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এমন কমেন্টের জবাবে কী লিখবো ভেবে পাচ্ছি না। এক কথায় বলছি- আমি আপ্লুত। অনেক অনেক ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই। শুভেচ্ছা থাকলো।
১৭| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৪৩
সায়েম মুন বলেছেন: এভাবে সব গোপন কথা ফাঁস করে দিচ্ছেন।
আমার ড্রাফটে অন্তত ৫০ খানা এলোমেলো ভাব জমে আছে কয়েক বছর/ বা বছর খানেক ধরে। মাঝে মধ্যে এক দুটাতে হাত চালাই। কিছুটা অর্থবহ হলে সান্তনা খুঁজে পাই। তবে ইদানীং যে সব অকবিতা লিখছি বেশীর ভাগই একবারই কিছুটা অর্থবহ হয়। একটা সার্থক অর্থবহ কবিতা/ বা যেটা লিখে যথেষ্ঠ মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায় সে কবিতা হয়ত মাসে বা কয়েক মাসে একটা পাওয়া যায়।
কবিতার নায়িকা এবং কবিতা সংক্রান্ত আরও যে কথাগুলো বললেন সেগুলোও অনেকটা মিলে যায়।
১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গোপন কথা ফাঁস !!!! ঠিক তা না। ব্যাপারটা আসলে এই যে, যে প্লটের উপর লিখবো ভেবে কলম ধরলাম, লিখবার পর তা আমূল পালটে গেলো। যে ভাবটা মনের ভিতর জমাট বেঁধে আছে, তা শতভাগে ব্যক্ত হচ্ছে না কোনোভাবেই। এভাবে একটা প্লট থেকে অনেকগুলো লেখার জন্ম হচ্ছে, কিন্তু আদি প্লটটা অবিকল প্রকাশিত না হওয়ার একটা যন্ত্রণা সব সময় মনের ভিতর কামড়াতে থাকে। লেখাটার মূল ভাবটা হলো এই
ধন্যবাদ কবি সায়েম মুন ভাই।
১৮| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:৪০
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
পর্যবেক্ষণে রাখলাম পরে এসে পড়ব।
১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:০৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আরেকবার আসবেন, সে আশায় থাকলাম
১৯| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৩২
শায়মা বলেছেন: হা হা ভাইয়া তোমার জবাব পড়তে এলাম আর বরুনার কবিতা আর তোমার
মন্তব্য পড়ে হাসছি।
বরুনাবেলার কথা যদিও আমি প্রায় ভুলে ভুলে গেছি তবুও সেই এডিকশন বা নেশা যেটাই বলো তার তুলনা শুধু সেটাই ছিলো।
ভাইয়া জীবনটা একেক সময় একেক রকম বহমান নদীর মত এঁকে বেকে বাক নেয় ঠিকই তবে সব বাঁকেই থাকে নিত্য নতুন আবিষ্কার, আবিষ্কারের নেশা, নতুন নতুন দৃশ্যাবলী বা নতুন নতুন ঘটনাপ্রবাহে চমক লাগে, ঘোর জাগে ।
যাই বলো জীবনের এই নিত্যনতুন আবিষ্কারের নেশা আমৃত্যু হয়তো একই রকম আকর্ষনীয়। জানিনা সঠিক তবুও তেমনি মনে হয় আমার।
ভাইয়া তোমার নামটাও আমার জীবনের কিছু অবিস্মরনীয় সুন্দর মুহুর্তের সাথে জড়িয়ে থাকবে। নিজের লেখা ছাপার অক্ষরে দেখবার সেই দুর্লভ সুযোগটা তুমিই দিয়েছিলে সর্বপ্রথম আমাকে যা আমার আশাতীত কোনো এক্সপেরিয়েন্স হয়ে থাকবে আজীবন।
অনেক অনেক শুভকামনা ভাইয়া আর কৃতজ্ঞতা। সবাইকে নিয়ে অনেক ভালো থাকো তুমি।
১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:১৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
ভাইয়া তোমার নামটাও আমার জীবনের কিছু অবিস্মরনীয় সুন্দর মুহুর্তের সাথে জড়িয়ে থাকবে। নিজের লেখা ছাপার অক্ষরে দেখবার সেই দুর্লভ সুযোগটা তুমিই দিয়েছিলে সর্বপ্রথম আমাকে যা আমার আশাতীত কোনো এক্সপেরিয়েন্স হয়ে থাকবে আজীবন।
আপনাকে এতোখানি আনন্দ দিতে পেরেছি জেনে আমার নিজেরও খুব ভালো লাগছে। অনেক শুভ কামনা আপনার জন্যও।
২০| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১২:৫০
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন:
চমৎকার একটা বিষয়ের পাশাপাছি মন ভালকরা কবিতা পাঠও হলো!
ধন্যবাদ প্রিয় কবিকে।
গোপনে বলি...
আমারও হয় এমন যে শুর করি একটা হয় আরেকটা। আবার কখনও দেখা যায় একটা থিম মাথায় বসবাস করে প্রায় কয়েক বছর। কোনটা আবার মূহুর্তেই পগারপার। আজ পাঁচ বছর যাবৎ একটা উপন্যাসের থিম মাথায় নিয়া ঘুরতাছি।
কোন একটা কবিতার থিম মাথায় ছিল প্রায় ৩ বছর।
তিন বছর পর লিখলাম...
" বনসাই বোধের পাঠে প্রগৈতিহাসিক ভাষা হয়ে যায় সময়ের গ্রফিতি''
কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই লাইনের ধারাবাহিতা রাখতে পারিনি...
অনেক অনেক ভাললাগা...
১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:১৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ আপনার আর আমার মধ্যে তো দেখি হুবহু মিল আসলে সবার মধ্যেই মনে হয় এমনটা ঘটে থাকে।
যাই হোক, অনেকদিন পর আপনার সাথে দেখা। আশা করি ভালো ছিলেন। ধন্যবাদ পাঠের জন্য। শুভেচ্ছা।
২১| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪
সুপান্থ সুরাহী বলেছেন:
ভাল ছিলাম না... ক্রমশ ভাল হওয়ার পথে...
আপ্নাদের প্রর্থণা সাথ থাকলে দ্রুতই সব অবসাদ, ক্ষোভ, খেদ কাটিয়ে উঠব...
আপনিও ভাল থাকবেন সবসময়...
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:০৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জানি না কোন্ নিদারুণ সমস্যায় পড়েছিলেন। তবে ক্রমশ ভালো হওয়ার পথে, এটাই খুব আশাব্যঞ্জক। সব সময় প্রার্থনা থাকলো, সকল ভালো‘র জন্য।
২২| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭
রোমেন রুমি বলেছেন: প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম।
যাতে আবার পড়তে ইচ্ছে হলে তাড়াতাড়ি খুঁজে পাই ।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:০৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রিয়তে নেয়া আমার জন্য খুব সম্মানের। অনেক ধন্যবাদ রোমেন রুমি। শুভেচ্ছা।
২৩| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:২৭
এরিস বলেছেন: কোট করতে গেলে পোস্টের প্রায় পুরোটাই চলে আসবে। যথোপযুক্ত মন্তব্য লেখার যোগ্যতা নেই।
আমার মনে হয় অনেকেই এই একই সমস্যায় আক্রান্ত, বলতে চাই একটা বলা হয়ে যায় আরেকটা। বলা শেষে মনে হয় বলার ছিল অন্য কিছু, বুঝতে পারি, কিন্তু বুঝাতে পারি না।
যতই বলি, মনে হয় বলা হল না।
ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম।
অনেক অনেক ভালো থাকবেন।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:০৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কোট করতে গেলে পোস্টের প্রায় পুরোটাই চলে আসবে। এমন মন্তব্যের পর আমাকেও নির্বাক হয়ে যেতে হয়, কোনো কিছু বলার থাকে না। অনেক অনেক ধন্যবাদ এরিস। শুভেচ্ছা।
২৪| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৫
বোকামন বলেছেন:
কবিতায় কবি কাব্যময়, যেন স্বকপোল-কল্পিত কাব্যধারা .........।
ভালোলাগা রইলো।।।।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:০৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
কবিতায় কবি কাব্যময়, যেন স্বকপোল-কল্পিত কাব্যধারা .........। খুব সুন্দর বলেছেন কথাটা। অনেক ধন্যবাদ বোকামন। শুভেচ্ছা থাকলো।
২৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ৮:০১
মোঃ সাইফুল ইসলাম সজীব বলেছেন: গতকাল হঠাৎ করেই একটা কবিতা মাথায় ঘুরছিলো। তেমন কিছু না। একটা স্বপ্ন দেখা থেকে। রাতে শুতে গেছে আর এলো। আলসেমীতে আর লেখাই হয়নি। এই লেখাটা পড়ার পর লিখতে মনে চাইছে। দেখি চেষ্টা করে-
গতকাল রাতে একটা স্বপ্ন দেখলাম।
একটা সুন্দর মাঝার কি এরকম একটা ডেরা থেকে
রাস্তায় বের হয়ে হাটছিলাম
একটা ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ছুটে আসছিলো আমার দিকে
আমি সেই ভয়ংকর সুন্দরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম
এরপর হঠাৎ কি মনে হতেই ফিরে এলাম সেই ডেরাতে
এরপর ঘুম ভেঙ্গে গেলো,
কিন্তু সেই স্বপ্নের রেশটা চলতে লাগলো মনের ভেতর
মনের ভেতর একটা প্রশ্ন উড়তে লাগলো
তুমি এসে ছিলে আমার স্বপ্নে
কিন্তু কী রূপে?
সেই সাজানো গোছানো ডেরা না ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় হয়ে?
সত্যি বলতে কি, এতো ভালো লাগলো লেখাটা পড়ে আমি তন্ময় হয়ে পড়ছিলাম। এতো ভালো লাগছিলো, মনে হলো অনেক দিনপর কিছু পড়লাম। এই ভালো লাগাটুকু নিয়ে গেলাম। ভালো থাকবেন। সব সময়।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:১৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার কবিতাটা খুব ভালো হয়েছে। ইনস্ট্যান্টলি লিখেছেন বোঝা গেলো। ভেরি ওয়েল ডান।
অবশেষে শেষ প্যারায় এসে যা বললেন, তার জন্য অজস্র ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা। শুভেচ্ছা।
২৬| ১৩ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১:২৯
বৃতি বলেছেন: অনেক ভালো লাগা থাকলো ।
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:২৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ‘বৃতি‘ একটা চমৎকার শব্দ। এ শব্দটার সাথে পরিচিত হয়েছি খুব বেশিদিন হয় নি, ফেইসবুকে একটা ‘নিক‘ থেকে। এরপর শব্দটা পাই আহমেদ আলাউদ্দিন সরকারের একটা কবিতায়।
আমার ব্লগে সুন্দর শব্দের স্বাগতম। পড়ার জন্য ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
২৭| ১৩ ই জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫৮
ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: অনন্ত স্বপ্ন-বিলাস
অক্লান্ত দৃষ্টি
অতৃপ্ত সৃষ্টি
অসম্ভব ভালোবাসা
১৫ ই জুলাই, ২০১৩ ভোর ৪:২৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ, তুমিও এ লেখাটার আরেকটা সারমর্ম করে ফেলেছ অনেক ধন্যবাদ, এবং শুভেচ্ছা।
২৮| ১৫ ই জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫
ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: প্রেক্ষাপট যদি এরকম হয়-
একজন দক্ষ শিল্পী একটি ছবি এঁকে চলেছেন
নিজের মনের মতো হচ্ছে না বলে আবার আঁকছেন...
অথবা
যার জন্য এঁকে চলেছেন তার পছন্দ হচ্ছে বলে মনে
হচ্ছে না ভেবে আবার রঙ তুলি হাতে নিচ্ছেন...
এ ধরণের অনিবারিত তৃষ্ণা সম্পর্কে লেখকের
মতামত জানাতে চাই।
শুভকামনা নিরন্তর।
১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সেই অনিবারিত তৃষ্ণা নিয়েই এ লেখাটা লেখা হয়েছে। আশা করি আমার মতামত জানতে পেরেছ, মহিয়সী
২৯| ১৮ ই জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৪:১৩
স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:
এরিস বলেছেন, কোট করতে গেলে পোস্টের প্রায় পুরোটাই চলে আসবে। যথোপযুক্ত মন্তব্য লেখার যোগ্যতা নেই।
আমি এরিস এর সাথে সহমত জানাই।
গত দুই বছর ধরে একটি গল্পের থিম মাথায় নিয়ে ঘুরছি। অবশেষে গত দুই তিন দিন ধরে লিখতে বসেছি।
১৯ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আশা করি শীঘ্রই ২ বছর ধরে মগজে আটকে থাকা গল্পটা ব্লগে দেখতে পাব। এ পোস্টটা ধৈর্য্য নিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ স্নিগ্ধ শোভন। শুভেচ্ছা।
৩০| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হুমায়ূন আহমেদ লেখকদের ভিতরে এমনভাবে ঢুকে গিয়েছেন যে, নবীন লেখকসহ সমসাময়িক বেশিরভাগ লেখকের গল্প পড়ার সময় মনে হয় হুমায়ূন আহমেদের গল্প পড়ছি। এঁদের চরিত্রগুলোও যেন অবিকল হুমায়ূন আহমেদেরই চরিত্র। লেখার স্টাইলও ঐরকমই। যে উঠতি লেখক জীবনে হুমায়ূন আহমেদের একটিমাত্র বইও পড়েছেন, তাঁর মগজেও অনায়াসে ঢুকে গিয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ।
প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রয়াত এই লেখক-জাদুকরের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা। আল্লাহ তাঁকে শান্তিতে রাখুন।
১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:৪৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পাঠক লক্ষ্য করলেই বুঝবেন, এ লেখাটার সূত্রপাতও হুমায়ূন আহমেদের একটি অবিস্মরণীয় চরিত্র ‘রুপা’ থেকে। ‘রুপা’ নামটি তিনি বিভিন্ন গল্প ও উপন্যাসে ব্যবহার করেছেন। কিন্তু ‘রুপা’ চরিত্রের মূল ‘মায়াবতী’ বৈশিষ্ট্য সর্বত্র বিরাজমান।
****
‘রুপা’ চরিত্রটি আমার অনেক পছন্দের। রুপার স্বামী আছে, সন্তান আছে। রুপার সুখের সংসার। ভবঘুরে হিমালয়, কিংবা হঠাৎ হঠাৎ অন্য কোনো নায়ক-চরিত্র মানসিক অশান্তিগ্রস্থ হয়ে পড়লেই রুপার আশ্রয়ে চলে আসে। তারা প্রেমিক-প্রেমিকা। গভীর সম্পর্ক তাদের মধ্যে। কিন্তু কোনো পঙ্কিলতা নেই। আমি এমন একজন নারীকেই কল্পনা করি। সে নারী আমার সর্বস্ব, সে আমার হাতের পুতুল, চাইলেই মুহূর্তে সে তার স্বামী-সংসার-যাবতীয়-সুখ ত্যাগ করে আমার কাঁধে হাত রাখবে। চাইলেই সে যখন-তখন আগুনে পা দেবে। কিন্তু আমি তা চাই না। বুকের ভিতরে যে-নারী অনাঘ্রাত পুষ্পের মতো আজন্ম অক্ষত, মর্মের ভিতর দিয়েই আমি তার ঘ্রাণ নিতে থাকি।
****
আমার এ লেখাটা আজ হুমায়ূন আহমেদের প্রতি উৎসর্গ করছি।
৩১| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৫:২১
জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: আমার তো মনে হয় আপনার সারা জীবনে কর্ম বলতে একটাই-
তোর জন্য তুমুল বেঁচে থাকা
-যা আমার চোখে অসাধারণ সৃষ্টি একটা। আগে পরে আর কি লেখা জরুরি?
২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ ঠিকই ধরেছেন জুলিয়ান ভাই, আমার সারা জীবনের কর্ম বলতে ওটাই
ধন্যবাদ এত ধৈর্য্য নিয়ে এ লেখাটা পড়ার জন্য। শুভেচ্ছা।
৩২| ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ৯:০৮
ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: ‘তোর জন্য তুমুল বেঁচে থাকা’ এর আগে পরে আর কি লেখা জরুরি? এই কথাটাই আমি বুঝতে চেয়ে ভাষা পাচ্ছিলাম না। আন্তরিক ধন্যবাদ মিঃ জুলিয়ান সিদ্দিকী ।
২০ শে জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:০০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মহান জুলিয়ান ভাই নিশ্চয়ই আপনার 'ধন্যবাদ' দেখতে পেয়েছেন।
শুভেচ্ছা।
৩৩| ২১ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ২:২৭
ব্লগপাতায় কামরুন নাহার বলেছেন: দুঃখিত, ‘আ’ কার বাদ পড়েছে।
কমেন্টের শব্দটি ‘বুঝতে’ নয় ‘বুঝাতে’ হবে।
সকালর শুভেচ্ছা। সোনাবীজ
২৭ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৫২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ও আচ্ছা
৩৪| ২৮ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১:৩৬
অদৃশ্য বলেছেন:
ভাইয়া
আপনার এই লিখাটি লাষ্ট পড়েছিলাম... আপনার এই কবিতা/বিষয়বস্তু নিয়ে আরও অনেক লিখা আছে... আমি তার অনেকগুলোই পড়েছি... শব্দ নিয়ে লিখা পড়েছি...
যখন মন চায় তখন ঢুকি... একটু একটু করে পড়ি... তবে খুব বড় লিখা হলে আমি পড়তে পারিনা ব্লগে বসে... আগেও পড়তাম, ইদানিং সমস্যা হয়...
আপনার লাষ্ট পোষ্টটির স্বাদ আস্বাদন করতে পারলাম না আপাতত... পরে হয়তো আস্তে আস্তে পড়ে ফেলতে পারি...
শুভকামনা...
২৮ শে জুলাই, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কোনো মনোকষ্টে ভুগবেন না যেন। মাঝে মাঝে একটুখানি পড়েন তাতেই আমি অনেক বেশি আনন্দিত। আপনার কবিতা আমার খুব ভালো লেগেছে। আশা করি নিয়মিত যোগাযোগ হবে। শুভ কামনা।
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:৫৯
সোহাগ সকাল বলেছেন: যথোপযুক্ত মন্তব্য প্রদানে অক্ষম। ভালো লাগলো, প্লাস দিলাম।