নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
সুপ্তি ভালোবেসেছিল। এমন ভালোবাসা অমর কাব্যে গাঁথা থাকে। রুমন সেই ভালোবাসায় হয়েছিল সিক্ত। সেই সিক্ততা খুব বেশিই ছিল।
দুজনের মাঝখানে ঝড়ের মতো যার আবির্ভাব ঘটলো সে হলো আনান। আনান বিধ্বংসী। সর্বগ্রাসী। রুমনের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু সে। বন্ধুর প্রেমিকাকে কখনো নিজের প্রেমিকা বলে কল্পনা করে না আনান। সত্যি বলতে কী, প্রেম জিনিসটা তার অভিধানে নেই। যা আছে তা অতি ভয়ংকর। কারণে-অকারণে রুমন আর সুপ্তির অন্তরঙ্গ মুহূর্তে সে উপস্থিত হয়। দুজনের পিঠ চাপড়ে সহজাত হাসিঠাট্টা করে।
আনান একদিন হাস্যচ্ছলে আচমকা হাত বাড়িয়ে সুপ্তির বুক ছুঁয়ে দিল। মুহূর্তে কী হয়ে গেলো! সুপ্তি ঝিম মেরে বসে পড়ে, অবাক হয়। ভর্ৎসনা করে আনানকে। আনান এতে আহত বা লজ্জিত হয় না। এ খুব মামুলি ব্যাপার অধুনার ছেলেমেয়েদের। সুপ্তি এতখানি ব্যাকডেটেড কেন তা ভেবে আনান খুব আশ্চর্য হয়; হাসতে হাসতে সে কুটিকুটি। রুমনও কি ওর সাথে এসব করে না? এতে কত সুখ সুপ্তি তা জানে। সুযোগ কখনো হাতছাড়া করা ঠিক না।
কিন্তু সুপ্তি আনানের কথা মানে না। রুমনের সাথে ওর বহুদিনের প্রেম। ওরা একসাথে কত গভীর ও গোপন সময় কাটিয়েছে। রিকশায় হুড ফেলে ঘুরে বেড়িয়েছে। দুষ্টুমি করে রুমন কখনো সুপ্তির পিঠ কিংবা উরুতে চাপ দেয় নি, তা কিন্তু না। কিন্তু এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো রুমন আর সুপ্তির ভালোবাসা নদীর দু কূল ছাপিয়ে যায়। তারা আকাশে ওড়ে। ঘূর্ণির মতো বাতাসে পাক খায়। পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে ডানা মেলে। বিকেলের নরম আলোয় ঘাসের উপর শুয়ে পড়ে যুগল কণ্ঠে কবিতা পড়ে। গান গায়- ‘আবার এলো যে সন্ধ্যা।’ এ এক অনির্বচনীয় প্রেম। অপার আনন্দময়। তারা ভুলে থাকে দিন ও রাত্রির বাস্তবতা।
আরেকদিন সুযোগ পেয়ে আরো আচমকা সুপ্তিকে একটু বেশি পিষ্ট করলো আনান। ওর প্রতিক্রিয়া এবার খুব দুর্বোধ্য হলো। আনানটা এতো বেপরোয়া হয়ে উঠছে কেন? রুমনকে সবকিছু খুলে বলবে কিনা ভাবতে লাগলো সে। ভাবতে ভাবতে, যেভাবে আনান ওকে জড়িয়ে ধরেছিল, পেছন হতে হঠাৎ এসে দুদিক থেকে দুহাতে খুব শক্ত ভাবে বুকের উপর হাতের মুঠি গেড়েছিল, কল্পনা করতে করতে সুপ্তি একটা অন্যরকম শিহরণ অনুভব করে। এর আগে কোনোদিন এমন অনুভূতি হয় নি। রুমন কি এভাবে পারে না? রুমনকে সে খুব ভালোবাসে। এভাবে রুমন তাকে কোনোদিন আদর করে নি। আদর? আদর কথাটা মনে আসতেই কেমন যেন লাগে। এটাই কি তাহলে প্রেম? রুমনকে সে ঠকাতে চায় না। এই শরীর এই মন সবই রুমনের জন্য সংরক্ষিত, সেখানে অন্য কারো অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ। আনানকে এ কথাটা খুব পরিষ্কার করে জানিয়ে দেয়া দরকার।
‘আনান শোনো। প্লিজ, তুমি আর কখনো অমন করো না। প্লিজ।’
আনান হেসে দেয়। বলে, ‘অমনটা কী জিনিস, সোনাপাখি?’ বলে সে সুপ্তির আরেকটু কাছে আসে। সুপ্তি মাথা নিচু করে মাটির দিকে তাকায়। বলে, ‘তুমি তো জানো আমি একজনকে ভালোবাসি।’
‘অফ কোর্স জানি। একজনকে কেন, একশ জনকে ভালোবাসলেই বা আমার কী ক্ষতি? কারোই কোনো ক্ষতি নেই। তোমারও ক্ষতি নেই। কিন্তু তোমার কী হয়েছে, সোনা?’ বলে সুপ্তির কাছ ঘেঁষে বাম কাঁধের ওপর দিয়ে একটি হাত রাখে, ডান হাতে সুপ্তির থুতনি টেনে নিজের দিকে টানে।
‘ভালোবাসা কী জিনিস তা কি তুমি জানো, আমার ঘুঘুপাখি? তুমি জানো না। তোমাকে ভালোবাসা শেখাতে চাই; আমার খুব শখ।’ বলতে বলতে আনানের শ্বাস দ্রুত ও ঘনতর হয়। সুপ্তির মধ্যেও একটা পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। সে বুঝতে পারে না এমন লাগছে কেন। আনান আলতো করে সুপ্তিকে নিজের বুকের কাছে টানে। চুম্বকশক্তির কাছে অনায়াসে সুপ্তি হয়ে যায় সমর্পিতা।
সুপ্তি ভেবে পায় না এর চেয়ে মধুর, এর চেয়ে গভীর কোনো ভালোবাসা হয় কিনা। অপূর্ব এ ভালোবাসা। বিগত এতো বছরে রুমন তাকে যা দিতে পারে নি, তার চেয়ে ঢের ঢের বেশি, অসম্ভব, অতুলনীয় ভালোবাসার স্বাদ দিয়েছে আনান।
এরপর কমতে কমতে একদিন সুপ্তি বুঝতে পারলো রুমনের জন্য ওর মনে আর একবিন্দু ভালোবাসাও বেঁচে নেই- যা আছে তা কেবল আনানের জন্য।
১৫ অক্টোবর ২০০৯
২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:১৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুন্দর মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রোফেসর সাহেব। শুভেচ্ছা।
২| ২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:১৮
অদৃশ্য বলেছেন:
কবি
দারুন গল্প... কোন টাইপের ভালোবাসা আসলে মনে বেশি দাগ কাটে বা কাটবে তা কে বলতে পারবে... সেই অভিজ্ঞতা অর্জনই বা কতজনের পক্ষে সম্ভব হয়েছে...
আমরা জানি যে একদিন দেহ তার সৌন্দর্য আর ক্ষমতা হারাবে... তাই নারী পুষের ভালোবাসাটা কোন টাইপের হলে সেটা সব থেকে বেশি উত্তম তা জানাটা আনশ্যক মনে করি... কেননা নারীহীন জীবনের স্বাদ খুব কম মানুষই পায়... অথবা এভাবে বলি যে নারীহীন জীবন আসলে পুরুষরা বলতে গেলে চায়ই না...
হয়তো ভালোবাসা না সম্ভবত শরীর তীব্রতা বেশি পছন্দ করে...
শুভকামনা...
২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:১৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রেমের দারুণ বিশ্লেষণ করেছেন। মুগ্ধ হলাম।
অদৃশ্যকে অনেক ধন্যবাদ এবং একরাশ শুভকামনা।
৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৩
বৃষ্টিধারা বলেছেন: চিন্তায় পড়ে গেলাম
ভালো আছেন তো ?
২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চিন্তার কোনো কারণ নেই
টমেটো ভূনা কীভাবে রাঁধতে হয় জানেন? গত দুদিন খেলাম। না জানলে জেনে নেবেন, আর জানা থাকলে খেয়ে দেখবেন আরেকবার
৪| ২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:০৯
বৃষ্টিধারা বলেছেন: আজ টমেটো দিয়ে আলু আর তেলাপিয়া রানলাম ।
আপনার তো টমেটো নিয়ে আমার বাসায় আসার কথা ছিলো...
২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:১৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জি, মানে, তাইতো জানতাম। কিন্তু গত পোস্টে যে নিজে রান্না করে খেতে বললেন!!!
৫| ২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:১৮
বৃষ্টিধারা বলেছেন: ওরে ফাঁকিবাজ রে .......
টমেটো নিয়ে বাসায় আসেন, রেসিপি দেয়া আছে । দেখে দেখে রানবেন, এরপর ২জন মিলে খাবো।
২৪ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৫:২৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আচ্ছা, তাহলে দাঁড়ান, টমেটো তুলতে যাচ্ছি
৬| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১০:১৬
মামুন রশিদ বলেছেন: গল্পটা দ্বিধায় ফেলে দিল । রুমনের সাথে সুপ্তির যে সম্পর্ক তা প্রেমের, খানিক বাদে এসে জানলাম এই প্রেমটা তাদের শুধুই মনোগত (প্লেটোনিক) । আর আনান যেটা করলো তাতে ছিটেফোটাও প্রেমের কোন ব্যাপার ছিল না, পুরোটাই শারীরবৃত্তীয় । কিন্তু সুপ্তি কিন্তু এক পর্যায়ে মজে গেল শারীরিক ভোগে, রুমন হারিয়ে গেল ।
এখন দ্বিধার জায়গা এই যে, কোন প্রেম মহান ? প্লেটোনিক না শারীরবৃত্তীয় ?
আমি বিষয়টাকে অন্যভাবে ভাবি । দুইটা ব্যাপার যদিও আলাদা, তবু এর কোনটাকেই আমি অস্বীকার করিনা । দুটোর পরিমিত মিশ্রণই প্রেম । সুতরাং বুঝতেই পারছেন, আমার চিন্তা অনেকটাই ফ্রয়েড জাত..
০৩ রা এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার এ কমেন্টের রিপ্লাইয়ে যা লিখেছিলাম তা ভুলবশত সেদিন পোস্ট হয় নি।
‘লেডি চ্যাটার্লি’জ লাভার’-এ শরীরটাই বড় করে দেখানো হয়েছে (পুরুষের ক্ষমতাকে)। ফলে, একজন ভৃত্যের (কাঠুরে) সাথে গৃহকর্ত্রীকে সম্ভোগ করতে দেখা যায়, তার প্রজ্ঞাবান স্বামী যখন যৌনশক্তিতে চরমভাবে ব্যর্থ। এটা চিরকালই ঘটে থাকে। প্লেটোনিক লাভ ক্ষণস্থায়ী; তবে, যৌনশক্তি শূন্যে পৌঁছে গেলে এটার একটা দীর্ঘস্থায়ী ও স্বর্গীয় অনুভূতি লাভ করা সম্ভব হতে পারে।
বিষয়টাকে ভিন্নভাবে ভেবেছেন দেখে ভালো লাগলো মামুন ভাই।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।
৭| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:১৮
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
আমার হয়েছে সুপ্তির দশা। মনে হচ্ছে, বিষয়টি অনৈতিক এবং অগ্রহণযোগ্য। এরকম ঘটনায় উভয়কেই ঘৃণা করা উচিত। আমারও ঘৃণা হচ্ছে, কিন্তু পুরোপুরি রিজেক্ট করতে পারছি না। শরীরের নিজস্ব একটি ভাষা আছে ভালোবাসা প্রকাশের। এবং এটি হৃদয়ের চেয়েও গতিশীল এবং তাৎক্ষণিক। হৃদয়ের বার্তা পৌঁছাবার আগেই শরীর জবাব দিতে শুরু করে। ফ্রয়েডিয় বলুন প্ল্যাটোনিক, যাই বলুন - শরীরের ভাষা কেবল শরীরই বুঝে!
২৮ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৪৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
এরকম ঘটনায় উভয়কেই ঘৃণা করা উচিত। আমারও ঘৃণা হচ্ছে, কিন্তু পুরোপুরি রিজেক্ট করতে পারছি না। শরীরের নিজস্ব একটি ভাষা আছে ভালোবাসা প্রকাশের। এবং এটি হৃদয়ের চেয়েও গতিশীল এবং তাৎক্ষণিক। হৃদয়ের বার্তা পৌঁছাবার আগেই শরীর জবাব দিতে শুরু করে। ফ্রয়েডিয় বলুন প্ল্যাটোনিক, যাই বলুন - শরীরের ভাষা কেবল শরীরই বুঝে!
আপনার কথাগুলোই এ গল্পের সারমর্ম।
অনেক ভালো লাগলো প্রিয় মাঈনউদ্দিন ভাই।
৮| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৭
মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: আসলেই শারীরবৃত্তীয় !!! শরীর একবার শরীরের মজা পেয়ে গেলে ঠেকিয়ে রাখা দায়...
২৮ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৩৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
শরীর একবার শরীরের মজা পেয়ে গেলে ঠেকিয়ে রাখা দায়...
এটা মনে হয় জ্বলন্ত সত্য।
ধন্যবাদ জহিরুল ভাই।
৯| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩
মাহমুদ০০৭ বলেছেন:
ভালবাসার লাইনে কতরকম যে আছে !
হাহাহ !!
আপনার বর্ণনা দারুণ সুন্দর । উপভোগ করলাম ।
বুঝে হোক না বুঝে হোক - মাইনুদ্দিন ভাইয়ের কমেন্টে লাইক ।
ভাল থাকুন ছাই ভাই
এমন লেখা আরো চাই !!
২৮ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৩৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এমন লেখা আরো চাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হলাম মাহমুদ ভাই। মাঈনুদ্দিন ভাইয়ের কথা লাইক না করে থাকা যায়?
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় মাহমুদ ভাই।
১০| ২৭ শে মার্চ, ২০১৪ ভোর ৬:০৩
বন্ধু তুহিন প্রাঙ্গনেমোর বলেছেন: ভালোবাসা বেচে থাকুক.........
২৮ শে মার্চ, ২০১৪ সকাল ১১:৩২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ বন্ধু। শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:৩১
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালবাসার দুটো ভাগ করে দেওয়া দরকার, প্লেটোনিক আর আরেকটা আনানের মতন- শারীরবৃত্তীয়; পশুত্বের সাথে যার পার্থক্য খুব একটা নেই।