নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

নবীন কবিদের ‘কঠিন’ কবিতা

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৩

নবীন কবিদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ‘শব্দরোগ’। তাঁরা হন্যে হয়ে ‘কঠিন’ শব্দ খোঁজেন। সমস্যা এখানেই শেষ নয়- যখন কবিতা লিখতে বসেন, স্মৃতিতে যতগুলো ‘কঠিন’ শব্দ জমা পড়েছে তার সবগুলোই এক কবিতায় ঢেলে দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কবিতা লেখা শেষ হলে তৃপ্তির হাসি হেসে মনে মনে বলেন- এইতো, একটা ‘কঠিন’ কবিতা লিখে ফেললাম, এর অর্থ বের করতে পাঠকের দাঁত ভেঙে যাবে।



কিছু পাঠক এরূপ ‘কঠিন’ কবিতা পড়ে চমৎকৃত হোন। তাঁরা আদতে কবিতা কম বোঝেন, তাঁদের পরিচিত শব্দসংখ্যা খুব সীমিত; এমনও হতে পারে তাঁরা কবিতা বোঝেন না, শব্দও চেনেন না। ফলে এই কবির ‘সুবিশাল’ শব্দভাণ্ডার দেখে তাঁকে শব্দসম্রাট, শব্দের জাদুকর, শব্দের কারিগর, ইত্যাকার মহৎ অভিধায় ভূষিত করে মাথায় তুলে নাচতে থাকেন। কবিও তীব্র সুখে এই গর্ব রাষ্ট্র করে বেড়ান।



একটা কবিতা ভালো কবিতা হিসাবে দাঁড়িয়ে যায় কিছু ‘কঠিন’ শব্দের উপস্থিতিতে নয়, বরং ঐ শব্দগুলোর সঠিক প্রয়োগে। সঠিক প্রয়োগের ফলে কিছু মামুলি শব্দের সমাহারেও একটা কবিতা অনন্য হয়ে উঠতে পারে। বস্তুত, শব্দ কখনো ‘কঠিন’ হতে পারে না, শব্দের প্রয়োগই তাকে কঠিন করে তোলে। সব ‘কঠিন’ শব্দেরই ‘অভিধানে’ স্থান রয়েছে, যা থেকে তার অর্থ পাওয়া সম্ভব। অর্থ নেই, এমন শব্দ কোনো কবি তাঁর কবিতায় বসাবেন বলে মনে করি না; যদি কেউ বসান, তাতে কবিতার কোনো অর্থ সৃষ্টি হয় বলে মনে করি না। কবিতার ভিতরে আপনি কী বোঝাতে চাইছেন, সেই মূল মর্মটি ‘কঠিন’ হতে পারে- কারণ, সকল দর্শন সকলের কাছেই যে বোধগম্য হবে, ব্যাপারটা এরকম নয়। কবিতার সারমর্ম কোনো শব্দকোষ বা কাব্যকোষে নেই। কবিতার ‘কঠিন’ কিছু থেকে থাকলে সেটি তার শব্দ নয়, অন্তর্নিহিত ভাবার্থ।



একটা কবিতাকে শক্তিশালীভাবে উপস্থাপন করার মধ্যেই প্রকৃত সার্থকতা নিহিত। মনের ভিতরে জমা হওয়া সব শব্দকে কবিতায় না বসিয়ে কেবল কবিতার প্রয়োজনে সঠিক অবস্থানে সঠিক শব্দটাকে বসাতে পারলেই একটা কবিতা সাবলীল ও সার্থক হয়ে উঠবে।



অনেকে নতুন নতুন শব্দ তৈরি করেন। এটা খুবই ভালো কথা, এবং সৃজনশীল কাজ। অনেকে এমন শব্দ আবিষ্কার করেন যে আবিষ্কৃত শব্দের কোনো অর্থ নেই। এরূপ ‘অর্থহীন’ শব্দেও কবিতা লিখে প্রতিষ্ঠিত কবিদের কাছ থেকে বাহবা পাওয়া যায় বলে তাঁরা দাবি করেন। যিনি সম্পূর্ণ নতুন একটা শব্দ তৈরি করে কবিতায় ব্যবহার করেন, আমার বিশ্বাস, তিনি নিশ্চয়ই এটার একটা অর্থ কল্পনা করেই এ কাজটি করে থাকেন। তা না করে থাকলে এটা ‘আগডুম, বাগডুম, ঘোড়াডুম’ ধরনের শব্দের মতো হবে, যেগুলো গানের মধ্যে ‘লা লালা লালা লা’, ‘হো হো হো’ ইত্যাদি রূপে ফিলার হিসাবে কাজ করে। প্রকৃতপক্ষে, নতুন শব্দ সৃষ্টি করা কোনো বাহাদুরি নয়। এই দেখুন, কত বিচিত্র ও নতুন নতুন শব্দ বানানো যায়- যোগনূর, যোগতাল, যোগীনূর, যোগামৃত, যোগবল, যোগাসুখ, যোগসুখ, যোগাতুর, যোগার্ত, যোগমৃত, যোগময়, যোগমায়া, যুগঞ্জয়, যোগসিৎ, যোগসিক্ত, যোগালয়, যোগনৃত্য। এগুলো কি কিছু হয়েছে? হ্যাঁ, এর প্রতিটা শব্দেরই অর্থ বের করা সম্ভব। শব্দকে কীভাবে ভাঙতে হয়, জুড়তে হয়, একজন দক্ষ কবি সেটা জানেন। যদি কোনো কবি শব্দ ভাঙাজোড়ার বদলে নতুন শব্দ বানিয়ে ফেলেন, সেটা বেশ হাস্যকর হয়ে যেতে পারে। শব্দ ঠিক এভাবেই বানানো যায় বলে মনে হয় না; প্রতিটা শব্দের প্রকৃতি বা মূল থাকতে হয়। সতুন, প্রতুন, যতুন, মথুন, অতুন, মর্তুন, মানুশি, প্রনিভা, সুরুনিমা, আলুশিনা, প্রনিতি, বিরূশা, চাপিশা, যশোথী, কপালো, কাপিতা, কপিতা, নপিতা, রানিলা- শব্দগুলো কি নতুন নয়? কিন্তু এই নতুন শব্দগুলোর কোনো মূল নেই, তাই এগুলো অর্থহীন শব্দ। তবে আপনি নতুন শব্দ বানিয়ে যদি তার একটা অর্থ জুড়ে দিতে পারেন, সেটা একটা কাজের কাজ হতে পারে। কিন্তু পৃথিবীর কোনো ভাষায় কোনো ভাষাবিদ এভাবে নতুন শব্দ সৃষ্টি করেছেন কিনা আমার জানা নেই। শব্দ বা ভাষার উৎপত্তির ইতিহাস এরকম কিনা তাও আমি জানি না। তবে বর্তমান যুগে কেউ যদি এভাবে নতুন শব্দ বানাতে বসে যান তাহলে ভূরি ভূরি নতুন শব্দ বানানো সম্ভব। সেক্ষেত্রে নতুন শব্দের আলাদা একটা অভিধান রচনা করার প্রয়োজন পড়বে বৈকি। এতে অবশ্য বিপত্তি যে কম কিছু হবে না তা নয়- একেক ব্যক্তি যদি নিজ নিজ সৃজনীশক্তি প্রমাণের উদ্দেশ্যে শত শত ‘ব্যক্তিগত নতুন শব্দের অভিধান’ রচনা করে বসেন, অবস্থাটা ভয়াবহ হবে নিঃসন্দেহে। কিন্তু তা দ্বারা ভাষার কী উপকার সাধিত হবে? এজন্য, একটা নতুন শব্দ বানিয়ে ফেলেছি- এতে বিরাট কোনো কিছু ঘটে গেছে বলে আমি মনে করি না। সাহিত্যে, বিশেষ করে কবিতায় শব্দকে ভাঙার ব্যাপারটা অনেক আলোচিত ও সৃজনশীল বিষয়। একটা শব্দকে ভাঙার উদ্দেশ্য কোনো অর্থহীন শব্দ সৃষ্টি করা নয়। কল্পনা করুন, অর্থহীন অনেকগুলো বানানো শব্দ দিয়ে একটা বাক্য লিখলেন; যে-শব্দের কোনো অর্থ নেই, সেই শব্দ দ্বারা গঠিত বাক্যের কি কোনো অর্থ থাকতে পারে? সে ভাষা পাখি বা পশুর ভাষার মতোই অবোধ্য হবে।



মোটের উপর বাঙালিদের প্রকাশ ক্ষমতা, বিশেষ করে মৌখিক প্রকাশ ক্ষমতা খুব দুর্বল। যিনি যত সুন্দর করে ভাবতে পারেন, তিনি তত প্রাঞ্জল ও সাবলীল ভাষায় প্রকাশ করতে পারেন। আমার ভাবনা যখন জট পাকানো থাকবে, আমার প্রকাশও তখন জটিল হবে। কেউ বুঝবে না। কিন্তু ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো, আমরা যখন একটা কবিতা বুঝতে বা হৃদয়ঙ্গম করতে ব্যর্থ হই, মনে করি ওটা খুব গুরুগম্ভীর ও উচ্চমার্গীয় রচনা হয়েছে। এখানে লেখকেরও যে ভাবপ্রকাশে দুর্বলতা থাকতে পারে, আমরা মনে হয় তা ভেবে দেখি না।



একজন কবি সবচেয়ে বেশি তৃপ্ত হোন এবং আনন্দ পান বোধ হয় এই কমেন্টে- ‘আপনার কবিতা মাথার উপর দিয়ে গেলো। এটা একটা জটিল কবিতা। আপনি অনেক কঠিন শব্দ লিখেন! এত কঠিন শব্দ আপনি পান কোথায়? কট্ঠিন!’ কবির জন্য এসব বাচ্য বহুমূল্য পুরস্কারের মতো। কবির সুখ তখন বহুগুণ বেড়ে যায়। তিনি মাটিতে পা ফেলেন না; হাওয়ার উপর ভর করে হাঁটেন।



কবিতায় কোন্‌ শব্দগুলো আরোপিত, বা জোড় করে টেনে এনে বসিয়ে দেয়া হয়েছে, কবিতাটা পড়লেই তা বোঝা যায়। এরূপ কবিতা পাঠে প্রায়শ মনে কোনো ভাব জাগে না, কল্পনায় কোনো ছবি ভেসে ওঠে না; কখনোবা পাঠকের মনে বিরক্তি সৃষ্টি করতে পারে। সহজাত লেখনিতে শব্দরা অনায়াস ভঙ্গিতে এসে পঙ্‌ক্তিতে নিজ জায়গায় বসে পড়ে। কবিতা পড়লে মনে হয় কবি খুব সহজভাবে কথাগুলো বলে গেছেন। শব্দ আরোপিত হলে পড়তে কষ্ট হবে, অর্থ উদ্ধার করতে যেয়ে দেখবেন এর কোনো অর্থ নেই। অনেকে পঙ্‌ক্তির ভিতরে অপ্রযোজ্য কিংবা অপ্রজোনীয় শব্দ বসিয়ে দিয়ে থাকেন, কবিতাকে ‘জটিল’ কিংবা ‘দুর্বোধ্য’ করার উদ্দেশ্যে। কেউ কেউ আরও ইন্টারেস্টিং পন্থা অবলম্বন করেন- হুটহাট কিছু ভুল শব্দ বসিয়ে দিন চরণের মধ্যিখানে। এ কবিতার কী মর্ম, পাঠক এবার হাড়ে হাড়ে টের পান, যখন দেখেন এ থেকে কিছুই উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না। বুঝতে-না-পারা বা এরূপ ‘অর্থহীনতা’কে অনেকে কবিতার মাধুর্য বা বহুমাত্রিকতা বলে মনে করেন। তাঁদের ধারণা, কবিতাটার অর্থ না থাকায় একেক পাঠক একেকরকম অর্থ তৈরি করে নিবেন। এতেই নাকি কবিতার প্রকৃত স্বাদ বা মাধুর্য। এরূপ ব্যাখ্যা আমার কাছে খুব হাস্যকর মনে হয়। একটা ভালো কবিতা এমন- এর একটা পঙ্‌ক্তি পড়া মাত্রই একটা ছবি বা ভাব আপনার মনের মধ্যে জেগে উঠবে। পুরো কবিতাটা পাঠ করার পর একটা আনন্দস্রোত আপনার মনেপ্রাণে প্রবাহিত হতে থাকবে।



সামহোয়্যারইনব্লগে এমন অসংখ্য কবি রয়েছেন, সৃজনশীলতায় যাঁদের কবিতা খুব উচ্চমার্গীয়। এঁদের কবিতা পাঠে আমি চমৎকৃত হই এই দেখে যে- পরিচিত শব্দ, কিন্তু তাঁরা শব্দকে এমনভাবে ভাঙেন আর গড়েন যে, প্রতিটি প্রয়োগই আমার কাছে অভিনব। প্রতিটিই নতুন শব্দ। নতুন ব্যঞ্জনায় উদ্ভাসিত। এটা হলো কবির সৃজনীশক্তি।



তবে কবিতাকে শব্দকোষও বানানো যায়। কবি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করেন, তাহলে শব্দের বাহুল্যে কবিতার মূল বক্তব্য ডুবে যেতে পারে। কবিতা তখন ব্যর্থ। কবির অনন্য সৃজনশীলতাই এটাকে একটা কবিতা হিসাবে প্রতিষ্ঠা দেবে। আর যে কবি ‘অনন্য সৃজনশীলতা’র আধার, তিনি কবিতাকে শব্দকোষ না বানিয়ে ‘ভাবকোষ’ বানিয়ে থাকেন। কবির সার্থকতা এখানে।



নজরুল বা রবীন্দ্রনাথের রেকর্ড ভাঙার জন্য হাইস্কুল লাইফে দিনে ৮-১০টা করে কবিতা লিখতে চেষ্টা করতাম। কবিতায় একটা ট্রাঙ্ক ভরে গিয়েছিল। এসএসসি’র পর ট্রাঙ্কের সব কবিতা ছোটো ভাইকে দিয়ে দিলাম, সের দরে বিক্রি করে চানাচুর খাওয়ার জন্য। ঐগুলো সত্যিই কোনো কবিতা হতে পারে নি (আজও কিছু যে হয়ে ওঠে, তা বলছি না)। তো, আমার সেই হাইস্কুল লাইফে আমাকে কেউ এসব লেকচার শোনালে তাঁকে উলটো দৌড়ের উপর রাখতে সাধ হতো বৈকি। পরিণতিতে কী হতো? সবগুলো (অ)কবিতা ভস্মীভূত করা ছাড়া গতি হতো না। এ কথা বলছি নবীন কবিদের অন্য আরেকটি অসুখের কারণে- সমালোচনা সহ্য করতে না পারা। ভুলভাট কিছু লিখে ফেললেও তার উপর প্রশংসা ছাড়া কোনো সমালোচনা তাঁরা সহ্য করতে পারেন না। ‘নিন্দুকেরে বাসি আমি সবার চেয়ে ভালো’- এ কথাটা তাঁদের জন্য মিথ্যা।



একজন নবীন কবিকে সবচেয়ে বড় উপকার করেন তিনি, যিনি তাঁদের ভুলগুলো ধরিয়ে দেন। যিনি এটাকে সাদরে গ্রহণ করেন, পরিণামে তাঁর উপকার সাধিত হয়। যিনি ভুলকে ভুল হিসাবে গ্রহণ না করে ‘সঠিক’ হিসাবে প্রমাণের জন্য প্রচুর যুক্তিতর্কের অবতারণা করেন, উচ্ছ্বসিত প্রশংসা কামনা করেন, এবং প্রশংসাকারীকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেন- তাঁর জন্য প্রার্থনা- আমার মতো তাঁকে যেন কবিতার খাতা সের দরে বিক্রি করতে না হয়।



এবার সামহোয়্যারইনব্লগের কয়েকটি কবিতা পাঠকদের জন্য নিচে তুলে দিলাম। ইচ্ছে করেই কবিব্লগারের নাম উহ্য রাখলাম। উৎসাহী পাঠকগণ খুব সহজেই এঁদের চিনে নেবেন। এরকম আরও অনেক কবি রয়েছেন- পোস্টের আকার সীমিত রাখার জন্যই কেবল গুঁটিকতক কবিতা এখানে তুলে ধরলাম। এসব কবিতায় আপনি ‘কঠিন’ শব্দের সমাহার দেখবেন না, কবিতার হৃদয়ে যে সুগভীর ভাবরস রয়েছে, এসব কবিতা পাঠে আপনি সেই অনুপম মাধুর্যের আস্বাদ পাবেন। (যদি কোনো ব্লগবন্ধু তাঁদের কবিতা এখানে উল্লেখ করা হয় নি বলে মন খারাপ করেন, তাহলে সেটা আমারও মন খারাপের কারণ হবে। এখানে স্রেফ উদাহরণ স্বরূপ মাত্র কয়েকজনের কবিতা তুলে দেয়া হয়েছে।)





চোখগুলো যখন আর আমার সাথে থাকে না



ফড়িঙের পাখাবদলদৃশ্য দেখার সময় হয়ে ওঠে না আমার। চলে যায় বসন্ত,

বাসন্তী রঙের আভা রেখে বিদায় নেয় চৈত্র। খরার কথা মনে রেখে সাজিয়ে

রেখেছিলাম যে ছাতা, সে-ও ছায়া প্রদান থেকে বিরত থাকবে বলে ডাকে

ধর্মঘট। আর নগরে যারা ধার্মিক ছিল- তারা আমার পাপের বোঝা দেখে

ঘৃণায় ফিরিয়ে নেয় মুখ। পাপীদের প্রকৃত কোনো পথ থাকে না। তাই অন্ধ

হরিণের মতো উঁকি দিতে গিয়ে দেখি, চোখগুলো আমার সাথে নেই। ভাবি,

এই চোখ দুটি কি আমার ছিল কোনোকালে! যদি আমারই হতো- তাহলে

এত সত্য আমি কেন দেখতে পেলাম না! কেন আঁকতে পারলাম না কালিক

প্রস্থানপ্রবাহ রেখা!





বিষণ্ণতার প্রহর



তারপর ছিঁড়ে, করি কুঁচিকুঁচি

এইসব দিনক্ষণমান। আলো ও অন্ধকারের

সারিসারি ঘর।



যাকিছু হৃদয়ে ছিল, দিয়েছি নিলামে;

শূন্যতা ছাড়া এখন আর কিছুই নেই।

ঝড় কি গড়ে বালিঘর? শান্ত চোখের নীড়!



প্রতিদিন খাতা খুলে, মুছে ফেলি অবাধ

অতীত, নাম-ধাম। মুছে মুছে; ভুলে যাই

কথার বিভাজন।



যত বেশি যোগ করি, ঢের করি বিয়োগ।



অগাধ দিয়েছ তুমি; বেদনা মোড়ানো জীবন।

শুধু স্মৃতিপটে জমে থাকে নরম ক্ষীরের মতো

বিষণ্ণতার প্রহর।





ঘঘুদহ



জীবনের খানা-খন্দ ভরে গেছে

মাংসের ভেতর গেঁথে রাখছি শীতভরতি শিরিঞ্জ

সহসাই কেঁপে উঠছে

দেহখানা



কয়লার তলে জ্বলে ওঠা অগ্নিনায়িকার বাজুবন্ধে

মিলিয়ে যাচ্ছে মৃদু রোদের গতি



একটা পাতার মত

উড়ে উড়ে ফিরে আসছে হলুদ বাটা হাতের কাঁপন



মনে পড়তেছে ঘুঘুদহ



তার পানির নিচে নথ হারানো রমণীর একটা চুলের সাথে

তলিয়ে গেছে কার অন্তর?





আমার ক্ষমতা শুধু তোমাকে বপিত করে দেহে উঠা



আমাকে সব ছেড়ে দাগকাটা পাজামাটা পরতে দাও

সামনে বোতাম থাক আর না থাক

আমি ক্ষরিত বেদনায় আমার যৌবন লুকাতে চাই, পরিধানে;

যেখানে বিপরীত কাম খুব বেশি খোলামেলা হয়, সেখানে

আমার শক্ত পৌরুষ ঢলঢলে ছত্রাক হতে হতে বায়ু হয়ে যাবে

নিমিষেই-



খুব ভোরে, যখন শুধু শালিক জাগে

রতিক্লান্ত রাঙ্গাবউ চুপচাপ টুক করে ডুব দেয় দেওয়ান বাড়ির পুকুরে

তখন আমি ঢাকতে চাই আমার নিঙড়ে ফেলা নগ্নতা কাপড়ের বেভুল ভাঁজে



গোপনে যে খেলা চলে তোমার আমার

অবিরাম যে সুখে পাথর আকাশ

আমার ক্ষমতা শুধু তোমাকে বপিত করে দেহে ওঠা, কেমন যেন

প্রাণী প্রাণী ভাব আর শীত শীত কাঁপন

তাই ঢাকতে দাও আমার উরত আচ্ছাদনে, শালিক চোখের বৈরি চাহনি থেকে

নিজস্ব মেরুতে-



এখুনি পেশল রাখাল বেরুবে দঙ্গালে

সকালের কাঁচা মরিচ ভেঙে ভাত খাবে চাষি

আমি কেমনে বলো মগ্ন থাকি এ নগ্নতায়

আমাকে আচ্ছাদিত কর, আমাকে দাও উত্তাপ



সস্তা প্রেমের নাম কি কাম!

সস্তা চুমু কি গ্রাম্য নাবালকের অচেনা বিহার আর জুলফির তিরতিরে ঘাম

সস্তা দেহে কি শামুক গন্ধ এতটা বেহুঁশ করে

সস্তা সুখ মানে কি শরীর খুলে লোমকূপে দাহনের দুঃসাহস!

পিত চামড়া নখে তুলে আনে বিবশ লালা



তাই তো দাগকাটা পাজামাটা চাইছি

ঘুমের শুরুতে যে ছায়াছবি দেখে ঘুমায় মানুষ

সেই সব চরিত্রের কথিত সম্মেলনে তুমি আমি ঢাকবো পরাণপ্রেম!





স্তূপ থেকে আরো কিছু



আমাকে চিনে নি নীল, আমাকে চিনে নি সরল পথ।

চিনে নি নক্ষত্র, পথের শোভায় অহংকারী ঘাসফুল।

রাখে নি মনে প্রজাপতি, পাখায় লিখেছিলাম শপথ।

আমাকে চিনে নি ভেজা পথে শুয়ে থাকা শীত সকাল।

আমাকে চিনে অন্ধকার, শ্মশানের সে গোর খোদক

দেহ ছুঁয়ে যে গুনে ফেলে যাপিত জীবনের যোগফল।



ও গোর খোদক, তুমি কি শেষের হুইসেল জানো

মৃতের স্বজনকে বাঁচিয়ে রাখা দূরভিসন্ধি মানো?

কেন যে কে নিছক খেলে মিছিমিছি বাঁচিয়ে দেহ

দেহের ভেতর মৃত আত্মায় অভিশপ্ত পৃথিবী স্নেহ।



তুমি বরং নিশ্চিম অন্ধকারের বার্তা বাহক বনো।





ব্যাধ



১.

এখন মাঝরাতে জানালার পাশে

বসে দূর হতে দ্যাখা যায় দেয়ালে লেপ্টানো ছায়া

অথবা, আট তলা থেকে পড়ে যাওয়া মানুষটির থ্যাতলানো মাথা

এও হতে পারে, দেয়ালের সাথে কোন গোপন আলাপ

আছে তার- আমি জানি না; রাত গভীর হলে হয়তো বা

জড় রা জীবন্ত হয়, আর কেউ কেউ মরে যায়

ঘুমের ঘোরে, তবে ভৌতিক কোন কিছু নয়-

একথা স্বভাবতই পুরনো যে, অন্ধকারে-

মাঝে মাঝে এলোমেলো ভাবে জোনাকিরা ওড়ে-অনেক শখ নিয়ে

য্যামন শখ= সবুজ টাংস্টেন মিশ্রিত আলো; কিন্তু লাল কালো

অনেক অধিবৃত্তও দ্যাখা যায়, ওরা ছোট থেকে বড় হতে হতে

_________________আবার অদৃশ্য।



আমি তোমাকে বলি-

যেভাবে আমি অনুভব করি, তা নিতান্তই একটা অসুখ-

মহাজাগতিক,

ছিলো জন্মেরও অনেক আগে, তবে পৃথিবীতে এসে আরও

_______________________ বহু, বহু শখ জাগে

_____________________________মোহগ্রস্ত হবার;

________________________________তবে পৃথিবীর নয়-



আমি তাই শব্দের ভেতরে ভাসি

প্রকাণ্ড উল্লাসকরন শেষে, তারপরে খাপছাড়া- কেউ কেউ বলে, এগুলো কবিতা

কিন্তু আমি কবি নই; কারন আমি যা লিখি

___________________তা লিখি রক্ত দিয়ে;

মুলত রক্তেরও আছে অনেক গোপন অহংকার

__________________এবং অনেক অস্থিরতা-



অতপর একটা ঘূর্ণিপাক

_______এবং আরও, (আরও)১

________________পাক খাওয়া-



আমাকে টেনে নেয় একটা বিশাল চোখের ভেতর;



শূন্যতাঃ তাকে কি ই বা বলা যায়?

আমি অনেক সত্যের উপরে গাঢ় প্রলেপ দিয়ে

_____________________একটা অবয়ব সাজাই;



পথিমধ্যে ঘূর্ণি- ধাবমান



এবং আমি গুনি

_______এক

__________দুই

_____________তিন





চোখঃ বিনিদ্র ও নশ্বর;

অথবা, একটা জানালা-

একদিন বন্ধ হবে, তবে তার আগে, যা দ্যাখার সাধ আছে- সবকিছু দেখে নিতে হবে

যদিও মাঠে ঘাটে ইদুর-বেড়ালেরা এমনিই মারা যায়,

ওদের চোখ খুলে, তবে সব মানুষেরা নয়-

কদাচিৎ,

কি বিচিত্র!





আমার প্রয়োজন ছিলো শুধু একটা শব্দই,মনমতো

______তাইতো আমি জেগে থাকি- একটা নোম্যান্সল্যান্ড এর স্বপ্নে।



২.

অনেক শব্দ নিয়ে ভাসি

বহুকাল, আমার ভেতরের আমি কে চিনি না আমি

_________অহেতুক স্বপ্ন-গনিতায়

আত্মকামী ইথারের মাঝে বাসা বেঁধে

________সকল বাহু ডুবিয়ে রাখার স্বাদ আছে।

মা,

সেদিন স্বপ্নে দেখলাম, একটা খোলা মাঠ

আর একটা সবুজ প্রাচীন বারান্দা;

তারপর, কি মনে করে আমি একবার আকাশের দিকে তাকালাম

এবং, দ্যাখা গেলো- একটা কালো ঘুড়ি, শতছিন্ন কাপড়ের মতো

থেমে আছে

________মধ্য আকাশে

নাটাইহীন; একটা ছেঁড়া সুতো নেমে এসেছে নিচে

তারপর- সুতো ধরতেই ও আমাকে টানলো



অনেকবার

______ভাসার জন্য,



ও কি জানে, আমি এমনিতেই ভাসমান

হয়ে হেটে বেড়াই পৃথিবীতে;



তারপর একছুটে পাড়ি দেই অনন্তকাল।





৩.

শব্দ; মাত্র একটিই, আমার জন্য-আমি জানি না সেটা কি;

__________আকাশের পিঠে এখন একটা ঘর বানাচ্ছি।





-------------------------------------------



নাই..।





রঙনদীর মাঝি



এরূপ সান্ধ্য নৌকাভ্রমণের জলকোলাহলের ভিতর

দিয়ে অনির্ধারিত পৃথিবীর সবচেয়ে বিষণ্ণ চোখের মেয়েটি

পাখি হয়ে উড়ে গেলো এবং ধরতে পারা গেলো না !

আহ, এ বড় ব্যর্থতা । ঘুড়ির ডানার মত নেমে আসে

অসংখ্য প্রত্নভাষা, ব্যাখাতীত। কে সে ঘুঙুরবিভ্রমের

আড়াল থেকে ডাক দেয় নাম ধরে , সংখ্যাহীন বেদনার দিকে ।

এইসব বেদনা টেদনা ফাও, পৃথিবীর মন হু হু করে উঠলে



সকল নীরবতা মুছে আমি প্রজাপতি ডানার রঙনদীর মাঝি হয়ে গেলাম !





মহীন



এ-ই তবে 'নীরবতা' - সময়ের গাঢ় ইতিহাস !

চিরকাল শরতের আকাশের চেনা পরিসরে

নিয়ত চলচ্ছবি পিছে ফেলে গেলে বুনোহাঁস,

তারপর ঘোড়াগুলো নেমে আসে পৃথিবীর 'পরে।



সময়ের নিঃশ্বাসে লন্ঠনে অবাধ কাঁপন;

মহীনের ঘোড়াগুলো দেখে হাই তোলে বুড়ি চাঁদ;

কত যুগ কেটে গেল - তাও বুঝি ঘোড়াদের মন

আজও খুঁজে পায়নি যা দেখেছিল একদা অগাধ?



আস্তাবলের পথে কুয়াশা'র আস্তর বাড়ে

ঘোড়াদের স্তব্ধতা প্রাণ পায়। আর নিরাকারে -

লৌকিক সব আলো নিভে গেলে ওরাও তাকায়;

তাকিয়ে তো থাকে জানি, তবে ওরা দেখতে কি পায়?



জীবনানন্দে মেতে এক কবি আজও হেঁটে চলে:

নক্ষত্রের নীচে পৃথিবীর প্রগাঢ় মায়ায়...





সময়ঘড়ি



কেন জানে না, কেন শোনে না

কেন বোঝে না, কেন সময়ের ঘড়ি

দম দেয়া ছাড়াও চলে বিস্তীর্ণ পথ

ধরে, কেন বৈশাখের উৎসবে ঘুমের

গ্রহণ লাগে না; কেন বারবার ভুল

করেও ভুলের সালতামামীতে লালদাগের

পরিবর্তে কুমারী আলোর হাসি

কেন সময় বোঝে না, প্রাণের অর্গল

নিভে গেলে তার আপন বলতে কেউ

থাকে না, কেন বুঝে না সময়।



রাত বাড়ার সাথে সাথে পুরনো রোগেরা

ফিরে আসে, কাশির দমকে, নাভিঃশ্বাস

উঠে প্রাণে; কেন বোঝে না, না বুঝেও সে

চলে চলতে থাকে, আমার আমাদের

কাঙালপনা দেখেও মুচকী হেসে বলে--

'সময়ের ঘড়িতে দম দেয়া লাগে না'



স্রোত হারা নদী মরে গেলেও সময়ের

ঘড়িতে কখনো মরণের নাম নেই।

সে মরে না, ঘুণপোকার দাঁতে সেই ধার নেই

যে ধারে কেটে নিতে পারে সময়ের কাঁটা।

কেন, কী কারণে সময়ের এই ছুটে চলা

মৃত নগরীর পাঁচিল ধরে, আমাদের তৈরি

সুখপ্রাসাদের দেয়ালে! তবে কি সময় দেয়ালে

ঝুলে থাকা সেই তৈলচিত্র যার বয়সের

সাথে সাথে দামের হিসেব নিকেষে অমূল্য

হয়ে ওঠে। তবুও সময়ের ঘড়িতে দমের

ঠিকুজি আমাদের নানাবিধ রচনায়!





হঠাৎ করেই এটা ঘটবে



আমি জানি এটা ঘটবে খুব হঠাৎ,

আমার সব কিছু সাজানো হুট করে নাই হবে যাবে,

আজকে যাকে আমি বিশ্বাস করে মসৃণতা খুঁজে চলছি, সে শুধু সময় নিচ্ছে

যে কোন ভোরে আমি চোখ মেলতেই দেখবো কিচ্ছু নেই।



খুব আচমকা ঘটবে, বুঝে ওঠার আগেই

ছবিটা তছনছ হয়ে আমাকে বোকা বানাবে,

আজকে যে ছায়া দিয়ে অভ্যস্ত করে ফেলছে, আমি ধরেই নিচ্ছে সে আছে

আর আমিও ধীরে ধীরে আমার যাবতীয় স্থাবর সম্পত্তি তার কাছে লিখে দিচ্ছি

সে এক স্বাক্ষরে আমাকে ভিখিরি করে দেবে,

সে একবার পিছনে ফিরে হাসারও সময় দেবে না

যেমন আজন্ম যার স্নেহ মাতৃদুগ্ধের মত আশ্রয় সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে

মরে যাবে যে কোন সকাল বা বিকালে

আমি বোঝার আগেই আমাকে নিঃস্ব করে চলে যাবে



আমার আজকে যতটুকু স্বাচ্ছন্দ্য আর আনন্দ এসব ঘটছে কেননা

কিছুটা সময় লাগছে ষড়যন্ত্রের পরিণত হতে,

আমার যখন কিছু রইবে না, আমি অনেকবার ভাববো কেন আগে

জেনেও ব্যবস্থা নেই নি,

আলস্যে ভ্রমরের চাবি ঝুলিয়ে রেখেছিলাম প্রকাশ্য স্থানেই,

খুব মনে হয়েছিল মানুষ বড় মহান, তাই সবচেয়ে ভঙ্গুর মানুষের কাছে

আপাদমস্তক জানিয়ে দিয়েছি।





কবিতার আকুতি



এখানে পলেস্তারা খসে যাওয়া ভবনের প্রতিটি ইটের গাঁথুনি

পুরাতন চুন সুরকি, ছয়া সবুজে ঘেরা পিতামহ বৃদ্ধ দালান ঘর



স্মৃতির খুপড়ি ঘর থেকে নিত্য সঙ্গীরা এসে জড়ো



ছত্রাক ছত্রাক গন্ধ নাকে লেগে চিত্তে জ্বলে ওঠে কোমল আলোর পিদিম

আমার গায়েতে জমেছে শ্যামল শ্যাওলা-



আজ সকলের মন খারাপ

তাই দেয়াল ঘরে বিষণ্ন বাতাসের আনাগোনা

তোমাদের কেউ একজন ভালো করে ভেবে নাও

গলাটাও একটু সেধে নিতে পারো

ছেঁড়া আর মলিন কবিতার পৃষ্ঠাগুলো সযতনে মেলে

ডায়াসে দাঁড়াও

ভারী চশমার উপর একনজর চেয়ে দেখে

আমাদের কেউ একজন একটি কবিতা শোনাও।





মন্তব্য ১১০ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (১১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩১

রাইসুল সাগর বলেছেন: সহজ শব্দেও সুন্দর কবিতা লিখা যায় বলে আমার ধারনা।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভালো বলেছেন রাইসুল ভাই। আমি ব্যাপারটা অন্য ভাবে দেখি। একটা উৎকৃষ্ট কবিতার বৈশিষ্ট্য এই নয় যে সেখানে জটিল ও ‘কঠিন’ শব্দ ব্যবহার করতে হবে। কবিতার বক্তব্য কবিতাকে উপরে তোলে, তারা গাঁথুনি হতে হবে সুদৃঢ়। এই গাঁথুনি-কাজে শব্দগুলোকে কীভাবে ব্যবহার করা হলো, বা বিন্যস্ত করা হলো- কবিতার গুণগত মান দেখতে হলে সেই জিনিসটাই বিবেচনা করতে হবে।

ধন্যবাদ রাইসুল সাগর ভাই।

২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

ডার্ক ম্যান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। জীবনে কখনো চিন্তা করি নাই কখনো কবিতা বা গল্প লিখবো।কিন্তু কবি "হেলাল হাফিজ" স্যারের কবিতা পড়ে এই বুড়ো বয়সে কিছু লেখার চেষ্টা করছি।সেই সাথে এটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি যে, কবিতা বা গল্প পড়া যত সহজ লিখা ততটা কঠিন। আর একজন লেখকের স্বার্থকতা সেখানে, যেখানে পাঠক খুব সহজে কথামালা বুঝতে পারেন।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার অসাধারণ উপলব্ধি ও সুন্দর কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ মিস্টার ডার্ক ম্যান।

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৪

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: চমৎকার পোস্ট ।সবগুলো কবিতা পড়িনি। পোস্ট আমার মত নবীশের জন্য শিক্ষনীয় ।অনেক ধন্যবাদ সোনাবীজ ভাই।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ প্রিয় কবি সেলিম আনোয়ার ভাই। শুভেচ্ছা জানবেন।

৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: চমৎকার পোস্ট ।সবগুলো কবিতা পড়িনি। পোস্ট আমার মত নবীশের জন্য শিক্ষনীয় ।অনেক ধন্যবাদ সোনাবীজ ভাই।

৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: চমৎকার পোস্ট ।সবগুলো কবিতা পড়িনি। পোস্ট আমার মত নবীশের জন্য শিক্ষনীয় ।অনেক ধন্যবাদ সোনাবীজ ভাই।

৬| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৫

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: চমৎকার পোস্ট ।সবগুলো কবিতা পড়িনি। পোস্ট আমার মত নবীশের জন্য শিক্ষনীয় ।অনেক ধন্যবাদ সোনাবীজ ভাই।

৭| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:২০

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: হুম! সহমত

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৫৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস)।

৮| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৩৫

এনামুল রেজা বলেছেন: শব্দের ব্যাবহার কবিতায় খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার কাছে মনে হয়, সহজবোধ্যতা ব্যাহত না করে নতুন নতুন শব্দ ব্যাবহার করা যেতেই পারে..

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:০৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: লেখার সাবলীলতা একটা বড় গুণ। সাবলীলতার গুণে লেখা প্রাঞ্জল ও বোধগম্য হয়ে ওঠে। অন্যথায় লেখা জটিল হয়ে পড়ে, বোধগম্যতার মাত্রা হ্রাস পায়। নতুন শব্দ ব্যবহার অবশ্যই করতে হবে। তবে নতুন শব্দের অর্থ যদি কেউ ‘সারবত্তাহীন স্বপ্রণীত’ শব্দকে বুঝে থাকেন, সেটা মনে হয় সবাই মেনে নেবেন না।

ধন্যবাদ এনামুল ভাই।

৯| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫৯

অন্ধবিন্দু বলেছেন:


সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই,
প্রাথমিক অবস্থায় নবীন কবিদের (বর্তমানে) হাতে কেবল শব্দই থাকে। সময়ের সাথে সাথে যখন ভাবনায়, চিন্তা এবং পাঠ অভিজ্ঞতায় পরিপক্বতা আসে; কবিতা সহজ হতে শুরু করে। যদিও কঠিন ও সহজের, অর্থ ও মাত্রাগত পরাবর্ত রয়েছে।

একজন জাগরূক কবিকে বাহবা বা প্রশংসা অর্জনের জন্য নয় বরং কবিতার জন্যই নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া উচিত। যার জন্য প্রচুর পড়াশোনা/ জানার মধ্যে থাকতে হবে।

পৃথিবীতে মানুষের মনস্তাত্ত্বিক আচরণ এবং সাহিত্য উপাদানের সাথে রোজকার চড়ন কঠিন বা ক্রমশ দুর্বোধ্য হচ্ছে তার প্রভাব কবিতায় আসবে; যা খুবই স্বাভাবিক।

পাঠকও সহজ বলতে সস্তা ভাবেন। তাই সব দোষ কবিকে দেওয়া যায় কী !

আশা করি, আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কবিরা আন্তরিক ও সহৃদয় পাঠে উপলব্ধি করতে পারবেন।

উত্তর না দিয়া ই নতুন পোস্ট দিলেন। এইডা কি ঠিক হইলো ;)

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:১২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার কমেন্টে মুগ্ধ হলাম। খুব গুছিয়ে একটা পরিষ্কার ধারণা প্রকাশ করেছেনঃ প্রাথমিক অবস্থায় নবীন কবিদের (বর্তমানে) হাতে কেবল শব্দই থাকে। সময়ের সাথে সাথে যখন ভাবনায়, চিন্তা এবং পাঠ অভিজ্ঞতায় পরিপক্বতা আসে; কবিতা সহজ হতে শুরু করে। একজন কবির বেড়ে ওঠা থেকে পরিণতি পর্যন্ত যেভাবে বিবর্তন ঘটে, স্বল্প কথায় অতি চমৎকারভাবে তা ব্যক্ত করেছেন। ভালো লাগলো।

***

শেষ বাক্যে আপনার খোঁচাটা আসলে আমার প্রাপ্য ছিল। এ পোস্টটা পাবলিশ করেই ঐ পোস্টের কমেন্ট রিপ্লাই দেয়ার কথা ভাবছিলাম। কিন্তু একটু ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম অন্যত্র। যাই হোক, দুঃখিত।

***

অনেক ভালো থাকুন অন্ধবিন্দু।

১০| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:৩৪

মোঃ নুরুল আমিন বলেছেন: সাহিত্যের ভাষা হোক সহজবোধ্য,
হোক সে কবিতা, না হয় গোদ্য।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ নুরুল আমিন ভাই। শুভেচ্ছা।

১১| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:১০

রাখাল রাাজু বলেছেন: osthir

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: :)

১২| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:১৩

ফা হিম বলেছেন: কঠিন কবিতা কম বুঝি, শব্দভান্ডারও খুব বেশি নেই। মনে যা আসে লিখে যাই।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ ফা হিম ভাই।

১৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৩৮

মানসী বলেছেন:

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই,


সহজ সরল ভাষায় কিছু লেখাটা আসলেই বেশ কঠিন। তাই সহজ পন্থা কঠিন ভাষায় লেখা।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাঃ হাঃ হাঃ খুব ভালো বলেছেন- তাই সহজ পন্থা কঠিন ভাষায় লেখা।

ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।



ভালো আছেন তো? ভালো থাকবেন

১৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই ,


বিশাল একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন । অনেক কিছু বিধৃত না করে অল্পতে সারছি -------------
কাকে কবিতা বলে , এই প্রারম্ভিক প্রশ্নের সম্ভবত কোনও সর্বজন গ্রাহ্য মীমাংসা বা সুস্পষ্ট সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া ভার । কাব্য তত্ত্বের আদি গুরু এ্যারিষ্টোটলও কবিতা বলতে ঠিক কি বোঝায়, তা নির্দেশ করতে পারেননি । কবিতার শ্রেনী হয়তো আছে কিন্তু কবিতার গা-গতর কেমন হবে, এ নিয়ে তর্কের শেষ নেই ।
ওয়ার্ডসওয়ার্থ এর কথাই যদি ধরি, তবে বলতে হয় – কবিতা হলো শক্তিশালী অনুভূতির স্বতঃস্ফুর্ত প্রবাহ ।
এই অনুভূতি গা-গ্রামের মানুষটির মতো সরল শব্দের খেলা হতে পারে কিম্বা শহুরে আধুনিক যুবকের মন মানসিকতার মতো জটিল শব্দের জাল বোনা ও হতে পারে ।

কাব্যের কাব্যত্ব কোথায় ? কি বিশেষ গুনে বাক্য ও সন্দর্ভ কাব্য হয়ে ওঠে ?
কোনও একটি মাত্র ছাঁচে এর উত্তর ঢেলে সাজানোর নয় । কেউ বলেন , শব্দ আর অর্থ ছাড়া কবিতার আর কোনও আত্মা নেই । শব্দকে আটপৌরে না রেখে খানিকটা অলংকার দিয়ে সাজিয়ে দিলেই বাক্য কবিতা হয়ে ওঠে । কেউ বলেন , এটা হলো কবিতার কথা বা বাচ্য কিম্বা বক্তব্য ।
এক্ষেত্রে আপনার সাথে একমত হয়ে এও বলি - অলংকার পড়ালেই যে তা সর্বাঙ্গ সুন্দর আর মনোহর হয়ে উঠবে এমোন কথা নেই । এই অলংকারের অবয়ব সংস্থান যদি নির্দোষ না হয় তবেই কবিতা 'খটর-মটর'ই থেকে যাবে, হয়ে উঠবে জবরজং । রমনীদেহের রূপ লাবণ্য যেমন তার অলংকৃত অবয়ব সংস্থানের অতিরিক্ত অন্য জিনিষ তেমনি সু-কবিদের বাণীতে এমোন বস্তু আছে যা শব্দ, অর্থ , রচনাভঙ্গি ছাঁপিয়ে অন্য কিছু ।
তাই সু-কবিতা, কথিত বিষয় নয় বিষয়ের কথন । সে কথন জটিল বা সরল যা ই হোকনা কেনো তাকে "বিষয়" হয়ে উঠতে হবে ।

সবশেষে ধন্যবাদ আপনাকে ।
শুভেচ্ছা সহকারে ।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৫৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: চমৎকার কিছু কথা বলেছেন আহমেদ জী এস ভাই। এই পোস্টের বক্তব্যের সাথে আপনার কমেন্ট একটা মূল্যবান সংযোজনা। অনেক ভালো লাগলো।

বিনীত ধন্যবাদ জানবেন।

১৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:৪৯

সায়েম মুন বলেছেন: একটা কবিতাকে শক্তিশালীভাবে উপস্থাপন করার মধ্যেই প্রকৃত সার্থকতা নিহিত। মনের ভিতরে জমা হওয়া সব শব্দকে কবিতায় না বসিয়ে কেবল কবিতার প্রয়োজনে সঠিক অবস্থানে সঠিক শব্দটাকে বসাতে পারলেই একটা কবিতা সাবলীল ও সার্থক হয়ে উঠবে।
-----সহমত কবি!

কাকঙ কবিনঙ অধ্যয়ঙ তপঃ----------। প্রচেষ্ঠা অব্যাহত থাকলে কাকও কবি হতে পারে। :P

আমি বেশ কয়েক বছর ট্রাই করলাম কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। কাকের চেয়ে নিম্নমানের বোধয়। তাই আপাতত হাইবারনেশানে আছি। :!>

ভাল থাকবেন কবি। আর এরকম সুন্দর পোস্ট দিয়ে যাবেন। সেই সাথে নতুন কবিতাও আশা করছি।



২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:০৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কবি সায়েম মুনকে দেখে ভালো লাগছে। অনেকদিন পর দেখা হলো। আশা করি ভালো আছে।

কবিতা হলো আবেগ। আবেগ হলো স্রোতের মতো। আবেগ যখন বাঁধ ভেঙে চারদিক প্লাবিত করে ফেলে, তখন কবিতারা স্রোতের বেগে ধেয়ে আসে। যখন আবেগ থাকে না, তখন চৈত্র্যের আগুনে সবটুকু প্রাণরস শুকিয়ে যায়। তখন মাথায় বোমা ফাটালেও কোনো শব্দ বের হয় না। কিন্তু এরূপ অবস্থায় আমি অন্য কিছুতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি- গান, ছবি, বই, কাজ- ইত্যাদি। কখনোবা কাজের মধ্যেই হঠাৎ গুঁতা অনুভব করি। তখনই নতুন কিছু সৃষ্টি হতে থাকে।

আশা করি শীঘ্রই আপনাকে ব্লগে নিয়মিত পাব।

ভালো থাকুন কবি।

১৬| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:১২

মামুন রশিদ বলেছেন: কবিতা বলতে আমি বুঝি একটা আবেগ, আকুতি, অনুভূতি কিংবা দৃশ্যপট পাঠকের সামনে উপস্থাপন করা । পাঠক ব্যাপারটা পুরোপুরি অনুধাবন করতে ব্যর্থ হলেও সমস্যা নেই, কিংবা পাঠক তার নিজের মত করে ব্যাপারটা ভেবে নিতে পারে ।

আর এই আবেগ বা দৃশ্যপটকে ধারণ করার জন্য যে শব্দগুলো বেশি উপযুক্ত, তাই ব্যবহার করা উচিত । আর এটা ফুটিয়ে তুলতে একজন প্রকৃত লেখকের খুব কঠিন কিংবা অপরিচিত শব্দসম্ভার খোঁজার দরকার নেই ।

আসলে কঠিন শব্দ ব্যবহারের চেয়ে সহজভাবে প্রকাশ করাই বেশি কঠিন ।

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১২:০৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আর এই আবেগ বা দৃশ্যপটকে ধারণ করার জন্য যে শব্দগুলো বেশি উপযুক্ত, তাই ব্যবহার করা উচিত। আর এটা ফুটিয়ে তুলতে একজন প্রকৃত লেখকের খুব কঠিন কিংবা অপরিচিত শব্দসম্ভার খোঁজার দরকার নেই।

আসলে কঠিন শব্দ ব্যবহারের চেয়ে সহজভাবে প্রকাশ করাই বেশি কঠিন।
এজন্যই রবিকাকা বলেছেন, ‘সহজ কথা যায় না বলা সহজে।’

আমার মনের কথাগুলোই বলেছেন প্রিয় মামুন ভাই। ভালো লাগলো।

ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।

১৭| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৩৭

ইসতিয়াক অয়ন বলেছেন:
|| সহজ কথা কইতে আমায় কহো যে
সহজ কথা যায় না বলা সহজে || :)

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১২:১০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ।

১৮| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৪০

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: অসাধারন একটা পোষ্ট! প্রিয়তে নিলাম। আমার মত যারা টুকটাক কবিতা ভালোবাসেন বা সামান্য টাইপের লেখার সাহস করেন এই ধরনের পোষ্ট তাদের জন্য আর্শিবাদস্বরুপ। অনেক কৃতজ্ঞতা জানবেন প্রিয় সোনাবীজ ভাই।

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১২:১৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: খুব স্বস্তিদায়ক মন্তব্য জাদিদ ভাই। অনেক ভালো লাগলো।

ধন্যবাদ।

১৯| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:২৭

এহসান সাবির বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।

শত ভাগ সহমত।

সহজ ভাষায় কবিতা লিখলে অনেকই বলে নাহ্‌ কবিতা ভারি হহনি, সস্থা শব্দ দিয়ে কবিতা....!!

মজার একটা কথা লিখি
একদিন এক আসরে নিজের মনেই বলছিলাম
''আঙিনাতে যে আছে অপেক্ষা ক'রে, তার পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর''
এক জন নবীন কবি শুনে বল্ল এটা কোন লাইন হলো? তার পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর কোন উপমা হল? আমি তো শুনে থ!, বলি রবি বাবুর লেখা লাইন, বলে কিনা পুরানো আমলে লেখা তো, নারীর উপমা হবে হট, মন টানবে, শরীর টানবে যেমন 'তোমার শরীরের কার্ভে কার্ভে জমে থাকা উষ্ন আহবান আমাকে অনু থেকে পরমানুর ন্যায় ভেঙ্গে.......'
কি আর করা, বলি 'ভেঙ্গে রকেট লাঞ্চার থকে মিসাইল করে দেয়.......'
কি আশ্চার্য ভাই সে বলে কিনা 'রাইট, পারফেক্ট!! শব্দ গুলো হবে নিউক্লিয়ার বোমার মত' '

তোমার শরীরের কার্ভে কার্ভে জমে থাকা উষ্ন আহবান বোমার মতো মনে হয়নি আমার কছে, বরং মনে হয় আঙিনাতে যে আছে অপেক্ষা ক'রে, তার পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর, ঐ কপাল টা একটু ছুঁয়ে দিই। ঐ অপেক্ষা আমার জন্য, ওখানে ভালোবাসা আছে, ঐ ভালোবাসা আমার জন্য নিউক্লিয়ার বোমার চেয়ে শক্তিশালী হতে পারে। আর পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুরে যে অপেক্ষা করে আছে সে নারী, তার শরীরে ভাজে ভাজে ভালোবাসা থাকবে, ভালোবাসা থেকে আসতে পারে উষ্ন আহবান.....! শাশ্বত নারীর বর্ণনা এই লাইনের থেকে ভালো আর কি হতে পারে? এ যেন দেবীর মত। পুরুষের ছোঁয়ায় দেবী বাঘিনী হয়ে উঠতেই পারে, তখন মিসাইল রকেট লাঞ্চার একে ৪৭...

আগে নারী হোক তো তারপর উষ্নতা আসুক.........



০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১২:৪৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:


আপনার মজার কাহিনিটা সত্যিই খুব মজার। মূল টেক্সটে নবীন কবিদের সমালোচনা সহ্য করতে না পারার বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করেছি। তাঁদের ভুল ধরিয়ে দিলে নিজের অবস্থান ধরে রাখার জন্য ভুলটাকে সঠিক হিসাবে প্রমাণ করার জন্য প্রাণান্ত হয়ে পড়েন। আপনার মজার কাহিনিতে উল্লেখিত কবি যখন জানতে পারলেন আপনি রবীন্দ্রনাথের কবিতা থেকে উদ্ধৃত করেছেন, তখন বাস্তবিকই তিনি মনে মনে বিব্রত ও লজ্জিত হয়েছিলেন নিজের অজ্ঞতা আর বোকামির জন্য। কিন্তু প্রকাশ্যে পরাজয় না মেনে নেয়ার উদ্দেশ্যেই রবীন্দ্রনাথের কবিতাকে সেকেলে বলে বাতিল করে দিলেন।

সহজ ভাষায় কবিতা লিখলে সত্যিই কবিতা ভারী হয় না, সস্তা হয়ে যায়। সে-একম দুটো সস্তা কবিতা নিচে তুলে দিলাম। সস্তা কবিতা দুটো কে লিখেছেন তা কবিতাপ্রেমী ব্লগারগণ অতি সহজেই বুঝে নিবেন। আমার মতো এক নিঃস্ব কবি যদি সারা জনমে এরকম একটা সস্তা কবিতা লিখতে পারতো, কব-জীবন ধন্য হয়ে যেতো, আর কোনো কিছু চাওয়ার বা পাওয়ার বাকি থাকতো না।


বাঁশি

কিনু গোয়ালার গলি।
দোতলা বাড়ির
লোহার-গরাদে-দেওয়া একতলা ঘর
পথের ধারেই।
লোনা-ধরা দেওয়ালেতে মাঝে মাঝে ধসে গেছে বালি,
মাঝে মাঝে স্যাঁতা-পড়া দাগ।
মার্কিন থানের মার্কা একখানা ছবি
সিদ্ধিদাতা গণেশের
দরজার ‘পরে আঁটা।
আমি ছাড়া ঘরে থাকে আরেকটা জীব
এক ভাড়াতেই,
সেটা টিকটিকি।
তফাত আমার সঙ্গে এই শুধু,
নেই তার অন্নের অভাব।
বেতন পঁচিশ টাকা,
সদাগরি আপিসের কনিষ্ঠ কেরানি।
খেতে পাই দত্তদের বাড়ি
ছেলেকে পড়িয়ে।
শেয়ালদা ইস্টিশনে যাই,
সন্ধেটা কাটিয়ে আসি,
আলো জ্বালাবার দায় বাঁচে।
এঞ্জিনের ধস্‌ ধস্‌,
বাঁশির আওয়াজ,
যাত্রীর ব্যস্ততা,
কুলি-হাঁকাহাঁকি।
সাড়ে দশ বেজে যায়,
তার পরে ঘরে এসে নিরালা নিঃঝুম অন্ধকার।
ধলেশ্বরীনদীতীরে পিসিদের গ্রাম।
তাঁর দেওরের মেয়ে,
অভাগার সাথে তার বিবাহের ছিল ঠিকঠাক।
লগ্ন শুভ, নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া গেল —
সেই লগ্নে এসেছি পালিয়ে।
মেয়েটা তো রক্ষে পেলে,
আমি তথৈবচ।
ঘরেতে এল না সে তো, মনে তার নিত্য আসাযাওয়া —
পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর।
বর্ষা ঘন ঘোর।
ট্রামের খরচা বাড়ে,
মাঝে মাঝে মাইনেও কাটা যায়।
গলিটার কোণে কোণে
জমে ওঠে পঁচে ওঠে
আমের খোসা ও আঁঠি, কাঁঠালের ভূতি,
মাছের কান্‌কা,
মরা বেড়ালের ছানা,
ছাইপাঁশ আরো কত কী যে!
ছাতার অবস্থাখানা জরিমানা-দেওয়া
মাইনের মতো,
বহু ছিদ্র তার।
আপিসের সাজ
গোপীকান্ত গোঁসাইয়ের মনটা যেমন,
সর্বদাই রসসিক্ত থাকে।
বাদলের কালো ছায়া
স্যাঁৎসেঁতে ঘরটাতে ঢুকে
কলে-পড়া জন্তুর মতন
মূর্ছায় অসাড়।
দিন রাত মনে হয়, কোন্‌ আধমরা
জগতের সঙ্গে যেন আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে আছি।
গলির মোড়েই থাকে কান্তবাবু,
যত্নে-পাট-করা লম্বা চুল,
বড়ো বড়ো চোখ,
শৌখিন মেজাজ।
কর্নেট বাজানো তার শখ।
মাঝে মাঝে সুর জেগে ওঠে
এ গলির বীভৎস বাতাসে —
কখনো গভীর রাতে,
ভোরবেলা আধো অন্ধকারে,
কখনো বৈকালে
ঝিকিমিকি আলোয় ছায়ায়।
হঠাৎ সন্ধ্যায়
সিন্ধু-বারোয়াঁয় লাগে তান,
সমস্ত আকাশে বাজে
অনাদি কালের বিরহবেদনা।
তখনি মুহূর্তে ধরা পড়ে
এ গলিটা ঘোর মিছে,
দুর্বিষহ, মাতালের প্রলাপের মতো।
হঠাৎ খবর পাই মনে
আকবর বাদশার সঙ্গে
হরিপদ কেরানির কোনো ভেদ নেই।
বাঁশির করুণ ডাক বেয়ে
ছেঁড়াছাতা রাজছত্র মিলে চলে গেছে
এক বৈকুণ্ঠের দিকে।
এ গান যেখানে সত্য
অনন্ত গোধূলিলগ্নে
সেইখানে
বহি চলে ধলেশ্বরী;
তীরে তমালের ঘন ছায়া;
আঙিনাতে
যে আছে অপেক্ষা ক'রে, তার
পরনে ঢাকাই শাড়ি, কপালে সিঁদুর।


হঠাৎ দেখা

রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
ভাবি নি কোনোদিন সম্ভব হবে।

আগে ওকে বার বার দেখেছি
লালরঙের শাড়িতে
ডালিম ফুলের মতো রাঙা;
আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে
মাথায় আঁচল তুলেছে।
মনে হলো, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব
নিজের চারদিকে ঘনিয়ে নিয়েছে,
যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়
শালবনের নীলাঞ্জনে।
সমস্ত মন থমকে গেলো;
চেনা লোককে দেখলাম অচেনার গাম্ভীর্যে।

হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে
আমাকে নমস্কার করলো।
খুলে গেলো সমাজবিধির পথ,
আলাপ শুরু করলাম—
কেমন আছো, কেমন চলছে সংসার, ইত্যাদি।
সে জানলার বাইরের দিকে চেয়ে রইলো
কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব দিল,
কোনোটা বা দিলই না।
হাতের অস্থিরতায় বুঝিয়ে দিল—
কেন এ-সব কথা,
এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।

আমি ওর সাথিদের সঙ্গে
অন্য বেঞ্চিতে ছিলাম
এক সময়ে আঙুল নেড়ে কাছে আসতে বললো।
মনে হলো কম সাহস নয়;
ওর এক-বেঞ্চিতে বসলাম।

গাড়ির আওয়াজের আড়ালে
মৃদুস্বরে বললো,
‘কিছু মনে করো না,
সময় কোথায় সময় নষ্ট করবার?
পরের স্টেশনেই আমাকে নামতে হবে;
তুমি দূরে যাবে,
দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতোকাল থেমে আছে,
তোমার মুখে শুনবো।
সত্য করে বলবে তো?’

আমি বললাম , ‘বলবো।’
বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই বললো,
‘আমাদের যে দিন চলে গেছে
একেবারেই কি গেছে,
কিছুই কি বাকি নেই?’


একটুকু চুপ করে থাকলাম;
তারপর বললাম,
‘রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।’


খটকা লাগলো, কী জানি বানিয়ে বললেম নাকি?
সে বললো, ‘থাক্‌ , এখন ওদিকে যাও।’
সবাই পরের স্টেশনে নেমে গেলো;
আমি চললাম একা।

২০| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৪২

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
কবিতায় কঠিন-সহজ শব্দ নিয়ে আলোচনা করার ক্ষমতা হয়নি।
তবে কঠিন শব্দের কোন মানে হয়না, যদি না তা পাঠক কে ছুঁয়ে যায়।
কঠিন শব্দ হয়তো সাময়িক একটা সৌন্দর্য রাখে, কিন্তু শেষাবধি বেঁচে থাকে কবিতার বক্তব্য, জীবন ঘনিষ্ঠতা। এসবই সামান্য পাঠক হিসেবে মূল্যায়ন।

এই পোস্ট যে কতটা পরিশ্রমী আর আপনার নিবিড় পাঠের প্রতিফলন, অনেকে হয়তো বুঝতেও পারছেনা। কিন্তু যারা বিষয়টা আঁচ করবে, তাদের স্যালুট জানানো ছাড়া উপায় নেই। আর পুরো পোস্ট, কতিপয় নির্বাচিত কবিতা ব্লগের নতুন যারা কবিতায় কিছুটা সময় দেই, তাদের জন্য পরম পাওয়া।

একটা বিষয়ের জন্য নিজে গর্ব অনুভব করছি। কৃতজ্ঞও। যদিও আমি এর যোগ্য নই, কিন্তু অনুপ্রাণিত করার হাতের পরশ পেয়ে এসেছি সেই ব্লগ শুরুর বেলা থেকে।

শুভকামনা ভাই।

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১:০৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:

কঠিন শব্দের কোন মানে হয়না, যদি না তা পাঠক কে ছুঁয়ে যায়। চমৎকার একটা কথা বলেছেন আশরাফুল ভাই।

কঠিন শব্দ হয়তো সাময়িক একটা সৌন্দর্য রাখে। কবিতা হলো শব্দের খেলা, শব্দের বুনন। পঙ্‌ক্তিস্থিত কোনো শব্দই এককভাবে কবিতা নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত সবগুলো শব্দ নিবিড় বন্ধনে যুক্ত হয়ে ভাব বা অর্থ প্রকাশ করে। কঠিন শব্দ বলতেই মাধুর্যমণ্ডিত নয়, তদ্রূপ সহজ শব্দ বলতেই যে সেগুলো রুক্ষ বা রসহীন তাও নয়। শব্দভাণ্ডারের কিছু শব্দ খুবই সুন্দর, কিছু শব্দ তত মোলায়েম বা সুন্দর নয়। একটা সুন্দর শব্দ যেমন ভুল প্রয়োগের ফলে পঙ্‌ক্তির সর্বনাশ ঘটাতে পারে, কিছু অতি সাধারণ শব্দ মিলেও কালজয়ী চরণ সৃষ্টি করে ফেলতে পারে। নি, কথা, রাখে, কাটলো, কেউ, বছর, তেত্রিশ- বহুলপ্রচলিত খুব সাধারণ মানের একগুচ্ছ শব্দ। কিন্তু এ থেকে যা সৃষ্টি হয়েছে, তা আমাদের বুক ভেদ করে যায় যখন-তখনঃ

কেউ কথা রাখে নি
তেত্রিশ বছর কাটলো।


আমরা নবীন বা প্রবীণ যেই হই না কেন, যা-ই লিখি না কেন- শেষাবধি বেঁচে থাকে কবিতার বক্তব্য, জীবন ঘনিষ্ঠতা। এ কথাটিও দারুণ বলেছেন।

যে কাজের কথাটি উল্লেখ করেছেন, ওটি করতে পেরে আমি নিজেও খুব আনন্দিত বোধ করছি এবং আপনার একনলেজমেন্টে সম্মানিত বোধ করছি।

অনেক ভালো থাকুন আশরাফুল ভাই।

২১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৪৯

অদিতি মৃণ্ময়ী বলেছেন: কঠিন শব্দ দেখলে পাঠক হিসেবে কবিতাগুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। সত্যি বলতে নিজে যেসব (অ)কবিতা লেখার চেষ্টা করি, ওগুলোতেও কঠিন শব্দ ব্যাবহার করতে পারি না।

নিয়ম টা ছিল কবিতার এক তৃতীয়াংশ অর্থ উহ্য রাখতেন কবিরা। এ নিয়ম অনুসুরণ করতে গিয়ে আজকাল কিছু কবি এমন কবিতা লেখে, যেখানে পুরো কবিতাটাই বোধগম্য হয়ে ওঠে না। আর কঠিন থেকে কঠিনতর শব্দের প্রয়োগে কবিতা হয়ে ওঠে অপাঠ্য।

অসাধারণ পোষ্ট।

এখানে উল্লেখ করা কবিতা গুলোর মধ্যে একটা কবিতা আমার বিশেষ প্রিয়। কোন কবিতাটি উল্লেখ করব না। তবে, কবিতাটি পাঠের পর একা একা বলে উঠেছিলাম - "বাহ!"

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১:২২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কবিতার এক-তৃতীয়াংশ অর্থ উহ্য রাখার নিয়মটা অবশ্য আমার জানা ছিল না। কবিতা হলো রহস্যময়ী নারীর মতো (যখন পুরুষরা ভাবেন)। কতখানি রহস্য উন্মোচন করবে, আর কতখানি প্রকাশ করবে সেটি হলো নারীর কলা বা আর্ট। কবিতার ক্ষেত্রেও কি সেটা প্রযোজ্য নয়? কবিই ভালো বুঝবেন তাঁর কবিতাকে আকর্ষণীয় করার জন্য রহস্যে ঢেকে রাখবেন, নাকি কিছু প্রকাশও করবেন। কবিতা যদি অতি মাত্রায় সাংকেতিক হয়ে যায়, তাহলে তা রসকষহীন পাথরের মতো হয়ে যেতে পারে। আবার স্বচ্ছ কাঁচ বা তরল পানির মতো হলে কীরূপ হয়? স্বচ্ছতার মধ্যেও অনন্য মাধুর্য থাকতে পারে। উপরে এহসান সাবির ভাইয়ের কমেন্টের উত্তরে কবিতাদুটোতে কি কোনোকিছু উহ্য রাখা হয়েছে? সব প্রকাশের মধ্যেই আবার অব্যক্ত অনেক কিছু রয়ে গেছে।


ভালো লাগলো- আমার উল্লেখিত কবিতাগুলোর মধ্যে একটি কবিতা আপনার বিশেষ প্রিয়। সেটি উল্লেখ করলে কবির জন্য একটা বিরাট সম্মাননা বা অনুপ্রেরণার কাজ হবে। সম্ভব হলে ফেইসবুকে ইনবক্সে মেসেজ করে কবিতাটির নাম জানাবেন।

ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।

২২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:৫৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


আপনার পোস্ট শিরোধার্য। তবে কবিতাকে যদি নব বধুর সাথে তুলনা করা যায় তাহলে শব্দ ও উপমার প্রয়োগ হলো তার অলংকার। তবে এখানে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন অলংকারের ভারে বধুর হাঁসফাঁস অবস্থা না হয়ে যায়। অলংকার ছাড়া যেমন একজন নব বধু কল্পনা করা যায় না তেমনি অসামঞ্জস্য অলংকারে নববধূর সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যেতে পারে হয়ত শ্বাস রোধে মৃত্যু হতে পারে কখনও কখনও।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:০৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সুন্দর বলেছেন। টেক্সটে অলঙ্কারের কথা কোথাও উল্লেখ করি নি, তবে ‘অলঙ্কার’ও সহজাত বা ‘কঠিন’ শব্দাবলির শামিল ভাবতে হবে। উপমা প্রয়োগ ও বিশেষণের বাহুল্যও অনেক সময় কবিতাকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। অলঙ্কারের মার্জিত ও যথোপযুক্ত ব্যবহারে সৌন্দর্য বৃদ্ধি ঘটে; বাহুল্যে রূপ ঢাকা পড়ে যায়, তখন কেবল অলঙ্কারের চাকচিক্যই দৃশ্যমান হয়।

মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার।

২৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১:৫০

সোনালী ডানার চিল বলেছেন:
আপনার উপলব্ধিকে দারুণ সম্মাননা!
লেখাটি পড়ে ভাবলাম, কবিতার ব্যাপারটা এমনই, এই যে ভাবনাকে প্রভাবিত করার ভাবনায় আপনি সহজাত আর খুব গভীর দায়িত্ব পালন করলেন সেখানে আমি খুব উষ্ণ, আপনার বিদগ্ধতায়-

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৩৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার বিদগ্ধ মন্তব্যে আমিও খুব সম্মানিত বোধ করছি, প্রিয় কবি। বিনীত ধন্যবাদ আপনাকে।

২৪| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ২:০৫

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ নাজমুল হাসান মজুমদার ভাই।

২৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৩১

অদৃশ্য বলেছেন:







আপনি এমন খোলামেলা আলাপ করেন লিখাগুলোতে বলেইতো আপনার লিখা আমার অত্যন্ত ভালোলাগে... নবীন কবি ও কবিতা নিয়ে যা বললেন তা ভাবনার জগৎকে আন্দোলিত করবার মতো... অন্তত আমি আপনার এই লিখাটি থেকে অনেককিছু পেয়ে গেলাম...

বুঝা না বুঝার একটা ব্যাপার থেকেই যায় সবসময়... অনেকসময় দেখবেন খুব সাধারণ কথাও মানুষ বুঝতে পারেনা অথচ কিছু কঠিন কথার অর্থ তারা ঠিকই আন্দাজ করে ফেলছে ( বলা ভালো, অনুভব করে নেয় )... মানুষতো, সৃষ্টির সেরা... তাইতো নিজের বুঝের সেরাটা বা ভাবনার সেরাটা বা প্রকাশের সেরাটারই তারা স্বাক্ষর রাখতে চায়...

খুব কঠিন লিখা হলে আমি তা খুবই মনযোগ দিয়ে পাঠ করি... ঠিক বুঝবার জন্য নয়... বরং ভাবি দেখিতো কতোটা ফিল করা যায়, আমাকে টানে কিনা... সেরকম কিছু আছে কিনা... মজার ব্যাপার হলো, দুনিয়া পাল্টে যাচ্ছে আর তা খুব সাধারণ ভাবে নয়... বরং অনেক কমপ্লেক্স কিছুকে নিয়ন্ত্রনের মাধমেই, সেটা লিখাপড়া থেকে শুরু করে, ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক, কৃষি, আবাসন, বস্ত্র, খাদ্য, সম্পর্ক এমন সবকিছুর ভেতরেই তা দৃশ্যমান... তাই কোন কিছুকেই আমরা একটি নির্দ্দিষ্ট গন্ডির ভেতরে বা সিম্পল সিহেবে ধরে রাখতে পারবোনা বরং মানুষই এসবে একসময় অভ্যস্থ হয়ে যাবে... নিজের মতো করেই বুঝে নেবে, ফিল করবে ইত্যাদি ইত্যাদি... আমার এমনই মনে হয়, পেছনের দিকে তাকিয়ে বর্তমান ভাবলেতো তেমনই প্রমাণ পাওয়া যায়...

তারপরেও সবথেকে জরুরি কথাটি হলো নিজের ভাবনাকে অন্যের কাছে সব থেকে সহজে ও সুন্দরভাবে উপস্থাপনের জন্য যেটা সেরা সেটাই করতে হবে... সে চেষ্টাটাই করা উচিৎ...

ভালো থাকুন কবি
শুভকামনা...

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৪৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কমেন্টে অনেক মূল্যবান কথা লিখেছেন। ‘অনেকসময় দেখবেন খুব সাধারণ কথাও মানুষ বুঝতে পারে না অথচ কিছু কঠিন কথার অর্থ তারা ঠিকই আন্দাজ করে ফেলছে।’- চমৎকার, আমার মনের কথাটাই বলেছেন। সামহোয়্যারইনব্লগে কবি বাকী অরিন্দমের কবিতাগুলো এরকম। কথাগুলো, শব্দগুলো খুব পরিচিত। আলাদা আলাদাভাবে প্রতিটা শব্দই আমাদের প্রচলিত শব্দমালার অন্তর্গত। কিন্তু এ শব্দগুলো যখন পঙ্‌ক্তিতে বসে পড়ে, বড্ড সাবলীল হয় সেই গাঁথুনি, কিন্তু তার অন্তর্নিহিত ভাব উদ্ধারে বেশিরভাগ সময়েই আমি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে থাকি। বাকী অরিন্দমকে আমার এ অক্ষমতার কথা জানিয়েছিলাম। তিনি বুদ্ধদেব বসুর উদ্ধৃতি টেনে বলেন, “কবিতা বুঝার কিছু নেই... কবিতা সম্বন্ধে ‘বোঝা’ কথাটাই অপ্রাসঙ্গিক। কবিতা আমরা বুঝিনে; কবিতা আমরা অনুভব করি। কবিতা আমাদের কিছু ‘বোঝায়’ না; স্পর্শ করে, স্থাপন করে একটা সংযোগ। ভালো কবিতার প্রধান লক্ষণই এই যে তা ‘বোঝা’ যাবে না, ‘বোঝানো’ যাবে না।”

বাকী অরিন্দমের কবিতাগুলো পড়ে দেখবেন। এখানে তাঁর একটা কবিতা তুলে দিলাম।

অদৃশ্য’র জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।


***

দেহ বিলীন পাখিরা

কবরস্থানে বৃক্ষ ও কবর নিধন শুরু হলে দেহ বিলীন সুকণ্ঠী পাখিরা মানুষ ও মৃত মাছেদের উদরে ঢুকে পড়ছে
ভিড় রাস্তায়

তিন সুফি আর তিনশ মানুষের বিকৃত ও অবিকৃত হাড়ের সাথে খোয়া বালির মিশ্রণ
পিচ পাথরের মোলায়েম প্রলেপের অপেক্ষায়

কবরস্থান থেকে পথচারীর আবাস অবধি মৃত মানুষ ও মাছেরা
পাখিদের ডাক ডেকে যায়

পূরবী থেকে কালশী হয়ে অনন্তের পথে পথচারীরা এখন প্রশস্ত রাস্তায়...।।



______________
_____ বাকী অরিন্দম

২৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১১:০১

অচিন্ত্য বলেছেন: চমৎকার ! সত্যি কথা একটা বলে দিই। এক সময় আমি নিজেও লেখাকে কঠিন করার মধ্যেই তার গুণ খুঁজে পেতাম। আমার এই ধারণা আস্তে আস্তে বদলেছে। খুব সুন্দর লিখেছেন।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার সত্যি কথাটা জেনে খুব ভালো লাগছে। আপনার লেখা খুব সাবলীল। আমার ভালো লাগে।

আপনাকে ধন্যবাদ, অচিন্ত্য।

২৭| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৩০

শংখনীল কারাগার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।

কোন কঠিন বা সহজ শব্দ নিয়ে না ভেবে স্বর্তস্ফুর্তভাবে যে শব্দ আসে তাই দিয়ে কবিতা লেখাই শ্রেয়।

কঠিন শব্দ দিয়ে কবিতা লেখা সহজ কিন্তু সহজ শব্দ দিয়ে কবিতা লেখা অনেক কঠিন। যা সবাই পারে না।

প্রিয়তে রাখলাম।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:

যখন যেভাবে শব্দরা আসে
ক্রোধ ও কান্না, প্রেম ও দ্রোহে
ওভাবেই ওরা ঠাঁই করে নেয়
আপন গুণ ও গন্ধ-আবহে


অনেক ধন্যবাদ শংখনীল কারাগার।

২৮| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ বিকাল ৩:০২

একজন আরমান বলেছেন:
বুঝিলাম।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভালো লাগিল আরমান ভাই।

২৯| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪০

জন কার্টার বলেছেন: লিখেছেন অসাধারন ,

আমার পরিচিত একজন আছে যে সহজ ভাষায় কবিতা না হলে পছন্দ করে না ।


সহজ সরল , মনের ভাব প্রকাশ করে এরকম একটা কবিতা লিখে দিবেন ভাই ??

একজন কে উপহার দিব ।আর হ্যা আপনার নাম অবশ্যই বলবো ।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: যিনি যত সহজ করে ভাবতে পারেন, তিনি তত প্রাঞ্জল ভাষায় লিখতে পারেন। উপরের অনেকের কমেন্ট থেকেই এটা বেরিয়ে এসেছে যে, হুট করে বা হঠাৎ করেই সহজবোধ্য ভাষায় লেখা যায় না। এর জন্য দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, অধ্যয়ন, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার প্রয়োজন পড়ে। সেই গুণ অর্জন করা খুব কঠিন কাজ।

আপনার চাহিদা মেটাতে পারে এমন কবিতা লিখবার ক্ষমতা আমার নেই। তবে নিচে আমার সাম্প্রতিকতম কবিতাটা দিলাম। এটি কোনো এক সুশ্রী গায়িকাকে উদ্দেশ্য করে লিখা হয়েছে। ফেইসবুকে এর উপর একটা স্টেটাসও পোস্ট করা হয়েছে। ওটি এখানে ক্লিক করে দেখা যাবে।

***

সিঁথি

কোনোদিন যদি মনে হয়
মিছেই নষ্ট করেছি সময়
গানের পেছনে,
তোমার গনগনে
রূপের উত্তাপে ধ্বংস করেছি নিজেকে;
যদি মনে হয়-
এসব বালখিল্য কবিতারা কবির জন্য নয়
তবুও অগ্নিভূক পোকাদের মতো
ঝাঁপ দেব তোমার আগুনে।
যদিবা অগণন খ্যাতির ভিতরে
কোনো একদিন ‘তোমার’ কবিতারা কলঙ্কিত তারা হয়ে
এঁকে দেয় দুর্লঙ্ঘ্য ক্ষত-
তবুও তোমাকেই চাই- তোমার প্রেমেতে কবিতার অমরত্ব।
তবু তুমি ধরে রেখো সুর, রূপের দ্রোহ
তোমাতে আমার সন্ন্যাস, তোমাতেই ধ্যানের সমারোহ।





কোনো এক সুশ্রী গায়িকাকে নিয়ে কবিতা লিখেছি, একদিন এটি আমার জন্য খুব বিব্রতকর হতে পারে। নিজেকে খুব তুচ্ছ, খাটো মনে হতে পারে, কলঙ্কচিহ্নের মতো আমার সকল খ্যাতিকে ধূলায়িত ও ম্লান করে দিতে পারে। কিন্তু আমি সকল পরিণতির জন্যই প্রস্তুত।

৩০| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৮

শায়মা বলেছেন: আমি একদম সহজ সহজ কবিতা ভালোবাসি ভাইয়া!

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১:২৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমিও আপু।

৩১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:১৮

শায়মা বলেছেন: আমি একদম সহজ সহজ কবিতা ভালোবাসি ভাইয়া!

৩২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৪৬

ডট কম ০০৯ বলেছেন: সামহোয়্যারইনব্লগে এমন অসংখ্য কবি রয়েছেন, সৃজনশীলতায় যাঁদের কবিতা খুব উচ্চমার্গীয়। এঁদের কবিতা পাঠে আমি চমৎকৃত হই এই দেখে যে- পরিচিত শব্দ, কিন্তু তাঁরা শব্দকে এমনভাবে ভাঙেন আর গড়েন যে, প্রতিটি প্রয়োগই আমার কাছে অভিনব। প্রতিটিই নতুন শব্দ। নতুন ব্যঞ্জনায় উদ্ভাসিত। এটা হলো কবির সৃজনীশক্তি।


আমার কথা আপ্নে কইলেন কেমনে!

যত যাই বলেন আমার খুব ইচ্ছা কঠিন শব্দদিয়ে একদিন একটা কবিতা লেখার। কিন্তু ভান্ডার সীমাবদ্ধ। এই জীবনে হবে বলে মনে হয় না। ;)

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১:২৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অতি শীঘ্রই আপনার কঠিন শব্দ দিয়ে লেখা একটা কবিতা পাওয়ার জন্য দাবি রাখলাম। না লিখলে খবর আছে, দ্য নিউজ ;)

ভালো থাকুন আরমান ভাই।

৩৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫০

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
শব্দের জালে আটকে পড়ছেন নবীন কবিরা। শব্দ কি তবে ভাবের প্রতিপক্ষ? আসলে কিন্তু তা নয়। ভাব থাকলে শব্দেরা ঝাঁকে ঝাঁকে কখন এসে ভিড় করবে এমনিতেই।

নবীন কবিদের কবিত্ব বরণের প্রাথমিক সিমটমটি তুলে ধরেছেন, দারুণভাবে। যারা বুঝবে, তাদেরই ফায়দা। নবীনেরা লিখে লিখে একসময় বন্দিত্বের কথা খেয়াল হবেই। না হলে নবীন পর্যন্তই শেষ ;)

একটি ফেইসবুক স্ট্যাটাসে ব্লগের কবিতা সম্পর্কে যা বলেছিলাম, অনেকটাই মিলে গেলো আপনার সাথে, সোনাবীজ ভাই :)

লেখা ও মন্তব্য সবই পড়লাম।
আপনার লেখা পড়লে আমারও ‌‌'ভাব' চলে আসে ;)
আকামের ভাব আরকি B-)
খেমতা দিলাম....

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:০২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সময়ের অভাবে উপরের কমেন্টগুলোর উত্তর দেয়া হয় নি এখনো। এখন উপর থেকে উত্তর দেয়ার প্ল্যান করছিলাম, কিন্তু আপনার কমেন্ট পড়ে হাসতে হাসতে চশমা ভেঙে ফেলার উপক্রম হয়েছিল ;)

আপনার লেখা পড়লে আমারও ‌‌'ভাব' চলে আসে ;)
আকামের ভাব আরকি B-)

=p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~ =p~


শব্দ কি তবে ভাবের প্রতিপক্ষ? আসলে কিন্তু তা নয়। ভাব থাকলে শব্দেরা ঝাঁকে ঝাঁকে কখন এসে ভিড় করবে এমনিতেই। - এ অংশে দারুণ বলেছেন। খুব ভালো লাগলো।

সব মিলিয়ে খুব মূল্যবান কথা বলেছেন প্রিয় মাঈনউদ্দিন ভাই। বিনীত ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।


৩৪| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৮:৫৭

ডট কম ০০৯ বলেছেন: ও আরেকটা কথা

উপরে একজন আরমান কে আরমান ভাই বলায় তীব্র উম্মা প্রকাশ করিতেছি।

হাহহাহাহহা

;)

০১ লা মে, ২০১৪ রাত ১:২৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: :) :) :) :)

আপনারা দুজনই আমার কাছে আরমান ভাই। তবে এখন আর কোনো কনফিউশন নাই আপনাদের নিয়ে ;) আমি আপনাকে চিনি ;) ভালো করেই ;) মোবাইল করেছিলেন ;)

৩৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২৮

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: আজাইরা শব্দের বাহাদুরি আমারও ভাল লাগে না ।
কবি অমর মিত্র ত বলেছেন - যারা এইসব করে তারা কবি ই না !!
কিন্তু প্রিয় মাইনুদ্দিন ভাইয়ের পাকনা কথা ভাল লাগে । ;) ;)
আর ভাল লাগে আমার অনেক প্রিয় ছাই ভাইয়ের পোস্ট পড়তে ।
মোটের উপর বাঙালিদের প্রকাশ ক্ষমতা, বিশেষ করে মৌখিক প্রকাশ ক্ষমতা খুব দুর্বল। যিনি যত সুন্দর করে ভাবতে পারেন, তিনি তত প্রাঞ্জল ও সাবলীল ভাষায় প্রকাশ করতে পারেন।
- অসাধারণ বলেছেন ।

আপনার পুরো পোস্টের সাথেই আমি একমত ।

আর হ্যা - অনুসর্গ , উপসর্গ প্রকৃতি - প্রত্যয় এর উপর ধারণা থাকলে
আমার মনে হয় লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই ।

চিন্তার প্রকাশ ই মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত । কবির দেখা উচিত
শব্দ তার চিন্তাকে যথাযত ভাবে বহন করতে পারছে কিনা ।

আচ্ছা - সুধীন দত্তের কবিতা সম্পর্কে আপনার অভিমত জানতে ইচ্ছে করছে ।

ভাল থাকুন প্রিয় ছাই ভাই আর এমন পোস্ট আরও অনেক চাই চাইইইইইইইইইইইইই !!

০১ লা মে, ২০১৪ সকাল ১০:০৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মাঈনউদ্দিন ভাইয়ের মতোই আপনার সূক্ষ্ম হিউমারের মজা অতুলনীয়। আমার অসম্ভব প্রিয়।

চিন্তার প্রকাশই মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। কবির দেখা উচিত
শব্দ তার চিন্তাকে যথাযত ভাবে বহন করতে পারছে কিনা।
যথার্থ বলেছেন। এটাই হওয়া উচিত। একমত।

সুধীন দত্তের কবিতা সম্বন্ধে আমার আইডিয়া অত্যন্ত ক্ষীণ। খুবই কম পড়া হয়েছে- ব্লগে বা ফেইসবুকে যা টুকিটাকি পড়েছি, তাই তাঁর সম্পর্কে জ্ঞান।

শেষের ছড়াটা দারুণ হয়েছে ;)

পুরো পোস্টের সাথে একমত হয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো প্রিয় মাহমুদ ভাই।

ভালো থাকুন।

৩৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৫৯

আরজু পনি বলেছেন:

পুরোটা পড়া শেষ করতে পারিনি, নিজের কাছে নিয়ে রাখলাম সময় করে শেষ করতে হবে,

তারপর কবিতা লেখার কথা ভাবতে হবে :|

শুভেচ্ছা রইল, সোনাবীজ ...

০১ লা মে, ২০১৪ সকাল ১০:১৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: নিজের কাছে নিয়ে রাখার জন্য ধন্যবাদ থাকলো আপু।

তারপর কবিতা লেখার কথা ভাবতে হবে :|

হাহাহাহাহাহাহা - কবিতা লিখবার জন্য এই পোস্ট কোনো অবস্ট্যাকল নয় ;)

লিখতে থাকুন কবিতা- কবিতার উৎকর্ষের জন্য।

ভালো থাকুন আপু।

৩৭| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ৯:৩৮

অদৃশ্য বলেছেন:






আশাহত হয়ে যাই যখন দেখি আপনার মতো কবিতা বোদ্ধা একজন আমার লিখা ফিল করতে পারেননা... আমি তখন ভাবি যে আমি কি করছি, এগুলো কি তবে কবিতা নামক জিনিসটার ধারে কাছেও যায় না ! কিন্তু কথা হলো যে ওভাবেই আমার লিখতে ভালো লাগে... আমি তৃপ্তি পাই ওভাবে কিছু প্রকাশ করতে পারলে... অবশ্যই সেটাতে টোন, ফ্লো রাখবার চেষ্টা করি, ভাবতো থাকেই তবে আমার ভাবনায় পাঠক কিভাবে পৌছাবে সে চিন্তা করিনা... করিনা এজন্য যে ওটাতো আমার ভাবনার প্রকাশ পাঠকের ভাবনার প্রকাশ নয়... তাই পাঠককেই চেষ্টা করে আমার প্রকাশ থেকে ভাবনায় পৌছাতে হবে... তবে আমার সব লিখাগুলোই যে জটিল হয়ে যায় এমন না, আমি সিম্পলি লিখি ... সব লিখাগুলোই সিম্পল হবে এমন ভাবাও যায় না... অটোমেটিক্যালি ভাব চলে আসে আর প্রকাশ হয়ে যায়... যা হোক, কবিতা লিখবার সময় আমি শব্দই খুঁজে পাইনা আর কঠিন বা জটিল শব্দও তাই আমার লিখাতে কম থাকে... সম্ভবত আপনার মন আমার লিখাগুলোর গভীরে ঢুকতে চায়না খলিল ভাই...

যাক, আপনার রেফারেন্সে বাকী অরিন্দমের লিখাগুলো পড়া শুরু করেছি... তার ছাইপাশ টাইপের লিখাগুলো কষ্ট করেই পড়ছি বটে... তার ভেতর থেকে একটা ছাইপাশ লিখা আপনার এখানে দিয়ে গেলাম...




বাকী অরিন্দমের কবিতা

ক্ষোভ
_____



ভুল দেখেছ এটা চোখের জল নয় মানবিক অশ্রু ধারা
এটা শরীর নয় ক্ষোভ টানটান শিরা-উপশিরায় যোদ্ধা।

একদিন হাতে থাকবে খোলা তরবার
খুব দুর নয়, দেখ তার ছায়া ওই দিগন্তে
সূর্যের আলোয় ফিনকি ছোটাবে রক্তের
অমানবিকতার অসাম্যের আর শয়তানের।

তুষার ধবল আরবী ঘোরায় চেপে ছুটে যাবে
শহরের অলি গলি আনাচ-কানাচ পেরুবে
সব ভেদ করে অন্ধকারেও তার ফলা চমকাবে।

খোলা বাবরী, চোখে প্রশ্নহীন সর্বনাশ
মুষ্টিবদ্ধ পান্ঞ্জায় ঝঙ্কার উঠে অস্ত্রের
অশ্বখুরের শব্দের নীচে চাপা পড়ে
সব আর্তনাদ আকুতি মিনতি জোড়হাত
সব কীট সব জংলীপোকা।

ধুলোমলিন মুখ দৃঢ়াবদ্ধ
দাঁতে দাঁত, শুকনো জ্বীভে দেহ শক্ত
পলকহীন চোখে প্রশ্নহীন সর্বনাশ-ধ্বংস।

যোদ্ধার হাতে লাগাম, হাতে খোলা অস্ত্রো
দূরহও অমানবিকতা, দূরহও অসাম্য
দূরহও শয়তান।

লোহার ঘরে বন্দী কাগুজে নোট
কারখানা ঘরে নড়াচড়া করে রক্ত
আকাশ ছোয়া ইমারতের দীর্ঘশ্বাস-ঘাম
যত কষ্ট বাতাসে ঘোরে,
তার ভেতরে শয়তানের সিংহাসনে
কালো জ্বীভ-দেঁতো হাসি হুংকার
মানবিকতার মেরুদন্ডে দাঁত বসায়
অমানবিক চাবুক শীস্‌ কেটে যায়।

অশ্বখুরের নীচে অমানবিক চাবুক
কালো জ্বীভ-দাঁত চাপা পড়ে, থেতলে যায়
ফিনকি ছোটায় কালো রক্তের,
কচুকাটা সব কচুকাটা-

ভুল দেখেছ এটা চোখের জল নয় মানবিক অশ্রু ধারা,
এটা শরীর নয় ক্ষোভ টানটান শিরা-উপশিরায় যোদ্ধা।।



খলিল ভাইয়ের জন্য
শুভকামনা...

০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
যাঁরা ‘কঠিন’ কবিতা লিখবার মানসে কেবল ‘কঠিন’ শব্দ খুঁজে খুঁজে কবিতায় জুড়ে দেন, পরিণামে কবিতাটি ‘কঠিন’ না হয়ে কৃত্রিম বা আরোপিত, মাঝে মাঝে বিভ্রান্তিকর বা জট-পাকানো হয়ে যায়, যা কোনো মহৎ বাণী প্রকাশের অন্তরায় হয়ে পড়ে- তাঁদের জন্য বাকী অরিন্দমের কবিতাগুলো শিক্ষণীয় হতে পারে। তিনি খুব সহজপ্রাপ্য বা পরিচিত শব্দই ব্যবহার করেন- কিন্তু এই পরিচিত শব্দের গাঁথুনিতে যে ভাব গড়ে তোলেন, তার মর্মার্থ উদ্ধারে অনেক বেগ পেতে হয়। এজন্য তাঁর কবিতার গাঁথুনি আমার এত ভালো লাগে। অত্যন্ত সুদৃঢ় ও সাবলীল সেই গাঁথুনি।


গগনে গরজে মেঘ, ঘন বরষা।
কূলে একা বসে আছি, নাহি ভরসা।
রাশি রাশি ভারা ভারা
ধান কাটা হল সারা,
ভরা নদী ক্ষুরধারা
খরপরশা।
কাটিতে কাটিতে ধান এল বরষা।

একখানি ছোটো খেত, আমি একেলা,
চারি দিকে বাঁকা জল করিছে খেলা।
পরপারে দেখি আঁকা
তরুছায়ামসীমাখা
গ্রামখানি মেঘে ঢাকা
প্রভাতবেলা—
এ পারেতে ছোটো খেত, আমি একেলা।

গান গেয়ে তরী বেয়ে কে আসে পারে,
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ভরা-পালে চলে যায়,
কোনো দিকে নাহি চায়,
ঢেউগুলি নিরুপায়
ভাঙে দু-ধারে—
দেখে যেন মনে হয় চিনি উহারে।
ওগো, তুমি কোথা যাও কোন্‌ বিদেশে,
বারেক ভিড়াও তরী কূলেতে এসে।
যেয়ো যেথা যেতে চাও,
যারে খুশি তারে দাও,
শুধু তুমি নিয়ে যাও
ক্ষণিক হেসে
আমার সোনার ধান কূলেতে এসে।

যত চাও তত লও তরণী-’পরে।
আর আছে?— আর নাই, দিয়েছি ভরে।
এতকাল নদীকূলে
যাহা লয়ে ছিনু ভুলে
সকলি দিলাম তুলে
থরে বিথরে—
এখন আমারে লহ করুণা করে।
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই— ছোটো সে তরী
আমারি সোনার ধানে গিয়েছে ভরি।
শ্রাবণগগন ঘিরে
ঘন মেঘ ঘুরে ফিরে,
শূন্য নদীর তীরে
রহিনু পড়ি—
যাহা ছিল নিয়ে গেল সোনার তরী।


উদ্ধৃত কবিতাটিতে এমন কোনো শব্দ দেখি না যা আমাদের নিত্যদেখা শব্দের বাইরে। এই সহজ-সরল শব্দগুলো দিয়ে কবি কোন্‌ মহৎ দর্শন সৃষ্টি করে গেছেন, তা বোদ্ধা পাঠকমাত্রই জানেন। কিন্তু এই সরল সব্দগুলো যে একেকটা পঙ্‌ক্তি বা চরণ রচনা করেছে, তার কোনো একটি কি জটিল বা কৃত্রিম মনে হয়েছে? এটাই সাবলীলতা। গঠন সাবলীল হলে লেখা প্রাঞ্জল হয়ে থাকে। গঠন দুর্বল বা জটিল হলে লেখার প্রাঞ্জল্য হ্রাস পায়।

বল বীর-
বল উন্নত মম শির
শির নেহারি আমারি নতশির ঐ শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর-
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন আরশ ছেদিয়া
উঠিয়াছে চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাত্রীর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটিকা দীপ্ত জয়শ্রীর
বল বীর-
আমি চির-উন্নত শির!


এখানে কিছু কিছু শব্দ সব পাঠকের কাছে পরিচিত নাও থাকতে পারে। কিন্তু যাঁদের কাছে সবগুলো শব্দই পরিচিত, তাঁরা বিস্মিত হবেন এ পঙ্‌ক্তিগুলো গঠনের অনন্যতা দেখে- এত সাবলীল আর সুদৃঢ়। নজরুলের শব্দচয়নে অনুপ্রাণিত হয়ে হয়তো কোনো কবি লিখে ফেলবেনঃ

দুর্গম ত্র্যাঙ্গুল নেহারি কান্তার ভ্যূলোক দ্যুলোক ক্রকচ মরু
হিমাদ্রি ভবিতব্য নতশির প্রেমারা দুস্তর পৈশুন্য
খোদার আসন বিশ্ববিধাত্রীর মহাকাশ


অসাধারণ! তাই না? এখানকার অনেকগুলো শব্দের অর্থ জানার জন্য সাধারণ পাঠককে অভিধানের সাহায্য নিতে হবে। যাঁরা অভিধান না ঘেঁটেই একঝলক লাইনগুলোর দিকে তাকাবেন, বিস্ময়ে নির্বাক হয়ে যাবেন। শব্দের জাদুকর! অসাধারণ মেধাবী এ কবি! তিনি জীবন্ত শব্দকোষ! তবে এ কবিতা যদি কোনো কবির হাতে পড়ে, তিনি স্মিত হেসে মনে মনে শুধু এটুকুই বলবেন- ‘বেকুব!’ এরকম ভাবার কারণ হলো কবি এখানে শব্দগুলো অভিধান থেকে নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু তা দিয়ে সার্থক বা সঠিক পঙ্‌ক্তি গঠনে ব্যর্থ হয়েছেন। এমনও হতে পারে যে, কবি হয়তো নিজেই শব্দগুলোর অর্থ জানেন না। আমার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু অনেক ভালো কবিতা লিখেন। কিন্তু মাঝে মাঝেই তাঁকে এরকম করতে দেখা যায়। এরকম করার কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি জবাব দেন, ডিকশনারি দেখতে পারি নাই, কিন্তু শব্দগুলো খুব ভালো লাগছে বলে কবিতায় দিয়ে দিলাম। ;)

দুয়ারে প্রস্তুত গাড়ি; বেলা দ্বিপ্রহর;
হেমন্তের রৌদ্র ক্রমে হতেছে প্রখর।
জনশূন্য পল্লিপথে ধূলি উড়ে যায়
মধ্যাহ্ন-বাতাসে; স্নিগ্ধ অশত্থের ছায়
ক্লান্ত বৃদ্ধা ভিখারিণী জীর্ণ বস্ত্র পাতি
ঘুমায়ে পড়েছে; যেন রৌদ্রময়ী রাতি
ঝাঁ ঝাঁ করে চারি দিকে নিস্তব্ধ নিঃঝুম —
শুধু মোর ঘরে নাহি বিশ্রামের ঘুম।
গিয়েছে আশ্বিন—পূজার ছুটির শেষে
ফিরে যেতে হবে আজি বহুদূরদেশে
সেই কর্মস্থানে। ভৃত্যগণ ব্যস্ত হয়ে
বাঁধিছে জিনিসপত্র দড়াদড়ি লয়ে,
হাঁকাহাঁকি ডাকাডাকি এ-ঘরে ও-ঘরে।
ঘরের গৃহিণী, চক্ষু ছলছল করে,
ব্যথিছে বক্ষের কাছে পাষাণের ভার,
তবুও সময় তার নাহি কাঁদিবার
একদণ্ড তরে; বিদায়ের আয়োজনে
ব্যস্ত হয়ে ফিরে; যথেষ্ট না হয় মনে
যত বাড়ে বোঝা। আমি বলি, ‘এ কী কাণ্ড!
এত ঘট এত পট হাঁড়ি সরা ভাণ্ড
বোতল বিছানা বাক্স রাজ্যের বোঝাই
কী করিব লয়ে কিছু এর রেখে যাই
কিছু লই সাথে।’

... ... ...

বাহিরে দ্বারের কাছে বসি অন্যমন
কন্যা মোর চারি বছরের। এতক্ষণ
অন্য দিনে হয়ে যেত স্নান সমাপন,
দুটি অন্ন মুখে না তুলিতে আঁখিপাতা
মুদিয়া আসিত ঘুমে; আজি তার মাতা
দেখে নাই তারে; এত বেলা হয়ে যায়
নাই স্নানাহার। এতক্ষণ ছায়াপ্রায়
ফিরিতেছিল সে মোর কাছে কাছে ঘেঁষে,
চাহিয়া দেখিতেছিল মৌন নির্নিমেষে
বিদায়ের আয়োজন। শ্রান্তদেহে এবে
বাহিরের দ্বারপ্রান্তে কী জানি কী ভেবে
চুপিচাপি বসে ছিল। কহিনু যখন
‘মা গো, আসি’ সে কহিল বিষণ্ন-নয়ন
ম্লান মুখে, ‘যেতে আমি দিব না তোমায়।’


কালোত্তীর্ণ এ কবিতায় ‘কঠিন’ শব্দের কোনো ঝনঝনানি নেই। আছে প্রাঞ্জলতা, সাবলীলতা। আর এর ভিতরে আছে গভীর ভাবাবেগ।

হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে,
সিংহল সমুদ্র থেকে নিশীথের অন্ধকারে মালয় সাগরে
অনেক ঘুরেছি আমি; বিম্বিসার অশোকের ধূসর জগতে
সেখানে ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন,
আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিলো নাটোরের বনলতা সেন।


ভাবপ্রবাহের দিকে যাচ্ছি না, শুধু খেয়াল করে দেখেন কী চমৎকার আর সাবলীল শব্দবন্ধন!

মাকে দেখি প্রতিদিন ধ্যানী প্রদক্ষিণে
ছায়াবৃতা আপন সংসারে। তাকে চিনে
নিতে পারি সহজেই যখন নিভৃত অনুভবে বার বার
একটি ভাস্বর নদী, ফুলের বাগান, মাঠ আর
শস্যক্ষেত, দূরের পাহাড়
গলে গিয়ে একই স্রোতে বয়ে যায়, সীমা
মুছে যায় চরাচরে : স্বদেশের স্বতন্ত্র মহিমা
অনন্য উপমা তার। কে যেন চকিতে চেনা স্বরে
বলে শুনি, ‘পাল্কি চড়ে, বেনারসী পরে
যেদিন এলেন তিনি আমাদের ঘরে
চেরাগের মতো কল্যাণের হাত ধরে-
তারই স্মৃতি আছে লেগে অদৃশ্য চাঁপার উন্মীলনে,
সোনার কলসে আর সাঁঝ-নামা দিঘির গহনে।’

মার চোখে শৈশবের ক্রৌঞ্চ দ্বীপ ভাসে?
চোখে বেনেবউ পাখি, চোখে চন্দ্রমল্লিকার দাবি
শঙ্কিত আভাসে আঁকা- ভাবি
রান্না আর কান্না গাঁথা রুক্ষ এই মরুর আকাশে
এখনো কি স্বপ্ন বোনে ঊর্ণনাভ চাঁদ
নাকি স্বপ্নের জরির পাড়ে সবি জাদুকরী ফাঁদ।
চেয়েছে বুকের সূক্ষ্ম সোনালি সুতোয় চিরদিন
সমস্ত জীবন হোক নক্সীকাঁথা : সে ইচ্ছার ঋণ
শুধে দিতে বুঝি হতে হয়
গাছের মতোই এই রৌদ্রজলে মৃন্ময়, তন্ময়।

মাকে দেখি। আজো দেখি কী এক মায়ায়
পাখি তার হাত থেকে স্নেহের খাবার খেয়ে যায়
দু’বেলা আবেগ ভরে। দেখি তসবী গুণে
সন্ধ্যার মিনারে
সত্তার কিনারে
ঐ দূরায়নী আজানের ধ্বনি শুনে
আর সুবে-সাদেকের তীব্র শুভ্রতায় নির্মেঘ আনন্দ শোকে
আজীবন সমর্পিতা কোরানের শ্লোকে।
আমার দুর্ভাগ্য সেই বিশ্বাসের অনড় জমিনে
দেখি না প্রোথিত কোনো অলীক পর্বত- যাকে চিনে
দ্বন্দ্বহীন জীবনের কাছে আত্মবিসর্জনের পাবো স্বর্গসুখ।
মাঝে মাঝে সংশয়ের গলিতে বিমুখ
প্রশ্ন তুলে ধরে ফণা :

আমি কি সঠিক জানি ভদ্রমহিলাকে
- আমি যার একান্ত বিস্তার অনন্ত শুভ্র লোকে-
চিনি তাকে?
ব্যথা হয়ে বাজে
মাঝে-মাঝে তারও চোখ
আমার অস্তিত্ব-পটে : ‘কে এই অচেনা ভদ্রলোক?’

- ‘আমার মাকে’, শামসুর রাহমান


অশ্বখুরের নীচে অমানবিক চাবুক
কালো জ্বীভ-দাঁত চাপা পড়ে, থেতলে যায়
ফিনকি ছোটায় কালো রক্তের,
কচুকাটা সব কচুকাটা-

ভুল দেখেছ এটা চোখের জল নয় মানবিক অশ্রু ধারা,
এটা শরীর নয় ক্ষোভ টানটান শিরা-উপশিরায় যোদ্ধা।।

- বাকী অরিন্দম


শামসুর রাহমান বা বাকী অরিন্দমের কবিতা দুটোতেও ঐরকম ‘শব্দের বাহাদুরি’ (মাহমুদ ভাইয়ের কথা) নেই। মনের ভিতরে যে ভাব বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো কূল ছাপিয়ে ভেসে যাচ্ছিল, তার প্রকাশের জন্যই যেন শব্দগুলো অদৃশ্য অমরাবতী থেকে ছুটে এসে পঙ্‌ক্তির সঠিক জায়গাটাতে বসে পড়েছে। খোদ রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে নজরুল, জীবনানন্দ, শামসুর রাহমান – এঁদের যে ক’টা কবিতা উপরে উদ্ধৃত করা হলো, সবগুলো কবিতায়ই স্বচ্ছন্দে ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে শব্দপ্রয়োগ ঘটেছে। এঁদের সকলেই কবিতাকে প্রাঞ্জলভাবে উপস্থাপনে ব্রতী ছিলেন। আমাদের নবীন কবিদের ধারণা এর উলটো বলেই মূলত এ পোস্টের অবতারণা।

আপনার কমেন্টের রিপ্লাইটা খুব বিশদ করেই লিখলাম। কিন্তু রিপ্লাইটা যে আপনার কমেন্টেরই উত্তর তা নয় কিন্তু। যাঁরা কবিতা আলোচনা ভালোবাসেন, তাঁদের জন্য মূল টেক্সট, কমেন্ট বা কমেন্টের উপর কমেন্ট- সবই হৃদয়গ্রাহী ও উপভোগ্য হবে বলে বিশ্বাস করছি।

অদৃশ্য’র জন্য ভালোবাসা ও শুভ কামনা।

৩৮| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯

সায়াহ্নের কাব্য বলেছেন: Onek kisu shekhar silo amar jonno...... Dhonnobad vai.....
অসীমা,
কী প্রশ্ন করেছিলে যেন তুমি?
ভালবাসার জন্য আমি জীবন দিতে পারব কি না তাইতো?
আমার উত্তর হলো "না"! কারণ আমি ভালবেসেছি স্বপ্নময় জীবন লাভের জন্য,
স্বপ্নশূন্য মৃত্যুর জন্য নয়।
আমি ভালবেসেছি উন্মত্ত সিন্ধুর মত শৃঙ্খলহীন গতিবেগ পাব বলে,
স্তব্ধতার উত্তরী তলে বিলীন হব বলে নয়।
তোমায় পাবার আনন্দ আমায় দেবে স্বর্গজয়ী সুর আর হারানোর বিরহ দেবে অভূতপূর্ব সৃজনী ক্ষমতা। তাই দিয়ে অমর করব আমার ভালবাসাকে।
অসীমা,
আগামী দিনের হাসি-কান্নার সমীকরণ সমাধান করাটা মুখ্য নয় আমার কাছে।
কারণ তোমাকে ভালবাসি, এটাই আমার জন্য চরমতম সত্য।
কারণ সম্রাট শাজানের রক্তই তো বইছে আমার ধমনী-শিরায়।।।

০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অসাধারণ! খুব ভালো লিখেছেন। আপনার উপর প্রীত হয়ে নিচের কবিতাটিঃ


বাসস্টপে দেখা হলো তিন মিনিট, অথচ তোমায় কাল স্বপ্নে বহুক্ষণ
দেখেছি ছুরির মতো বিঁধে থাকতে সিন্ধুপারে- দিকচিহ্নহীন-
বাহান্ন তীর্থের মতো এক শরীর, হাওয়ার ভিতরে
তোমাকে দেখেছি কাল স্বপ্নে, ওষধি স্বপ্নের
নীল দুঃসময়ে।

দক্ষিণ সমুদ্রদ্বারে গিয়েছিলে কবে, কার সঙ্গে? তুমি
আজই কি ফিরেছো?
স্বপ্নের সমুদ্র সে কী ভয়ঙ্কর, ঢেউহীন, শব্দহীন, যেন
তিনদিন পরেই আত্মঘাতী হবে, হারানো আঙতির মতো দূরে
তোমার দিগন্ত, দুই ঊরু ডুবে গেছে নীল জলে
তোমাকে হঠাৎ মনে হলো কোনো জুয়াড়ীর সঙ্গিনীর মতো,
অথচ একলা ছিলে, ঘোরতর স্বপ্নের ভিতরে তুমি একা।

এক বছর ঘুমোবো না, স্বপ্ন দেখে কপালের ঘাম
ভোরে মুছে নিতে বড় মূর্খের মতন মনে হয়
বরং বিস্মৃতি ভালো, পোশাকের মধ্যে ঢেকে রাখা
নগ্ন শরীরের মতো লজ্জাহীন, আমি
এক বছর ঘুমোবো না, এক বছর স্বপ্নহীন জেগে
বাহান্ন তীর্থের মতো তোমার ও-শরীর ভ্রমণে
পুণ্যবান হবো।

বাসের জানলার পাশে তোমার সহাস্য মুখ, ‘আজ যাই, বাড়িতে আসবেন।’
রৌদ্রের চিৎকারে সব শব্দ ডুবে গেল।
‘একটু দাঁড়াও‘, কিংবা ‘চলো লাইব্রেরীর মাঠে‘, বকের ভেতরে
কেউ এই কথা বলেছিল, আমি মনে পড়া চোখে
সহসা হাতঘড়ি দেখে লাফিয়ে উঠেছি, রাস্তা, বাস, ট্রাম, রিকশা, লোকজন
ডিগবাজির মতো পার হয়ে, যেন ওরাং উটাং, চার হাত-পায়ে ছুতে।
পৌঁছে গেছি অফিসের লিফটের দরজায়।

বাস স্টপে তিন মিনিট, অথচ তোমায় কাল স্বপ্নে বহুক্ষণ।


- হঠাৎ নীরার জন্য, নীল লোহিত

৩৯| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:১৭

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:


চমৎকার পোস্ট!!!!

প্রিয়তে....

০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ স্নিগ্ধ শোভন ভাই। শুভেচ্ছা।

৪০| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:২২

লাবনী আক্তার বলেছেন: গতকালই পড়েছিলাম লেখাটা। বেশ সুন্দর একটা পোস্ট।

আমি খুব ভালো লিখতে পারিনা, তবে আমার সব কবিতাই সহজ সরল ভাষায় লিখা। আমি কঠিন করে কখনই লিখতে পারিনা। আর সহজ সরল লেখা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে।

০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
আমি এক কবির কথা বলি। আমার ‘সবুজ অঙ্গন’ সাহিত্যপত্রিকায় তাঁর কবিতা ছাপা হয় নি বলে তাঁর বেদনার অন্ত ছিল না। অনেকদিন পর্যন্ত তিনি আমার বেশকিছু পোস্টে এসে তিনি মনোকষ্ট প্রকাশ করতেন। তিনি লিখতেন খুব সহজ-সরল ভাষায়, কিন্তু তাঁর গাঁথুনি খুব দুর্বল ছিল। একেবারেই আনাড়ি। সেভাবেই তিনি লিখতে থাকলেন। ব্লগে তাঁর কবিতা দেখি, কিন্তু মন ভরে না, অর্থাৎ আমি যেরকম ভালোবাসি তাঁর কবিতা সেরকম হয় না। কিন্তু তাঁর ব্লগ পড়ি। কয়েক মাস আগে তাঁর একটা পোস্টে বেশ কিছু কবিতা পড়ে আমি থ বনে গেলাম- অভূতপূর্ব উত্তরণ। আমি মুগ্ধ, অভিভূত।

আমরা কঠিন বা সহজ যে শব্দেই কবিতা লিখি না কেন, নিয়মিত অধ্যয়ন, চর্চা আমাদের কবিতার মান নিঃসন্দেহে উন্নত করবে। ব্লগ একটা ইউনিট প্ল্যাটফর্ম। এখানে অধ্যয়ন এবং লিখা- দুটোই একসাথে চলতে পারে। নিয়মিত অধ্যয়নের পর একদিন হয়তো দেখা যাবে আমাদের সামনে আসা প্রতিটি শব্দই আমাদের পরিচিত। নিজের অজান্তেই একজন চলন্ত শব্দকোষ হয়ে উঠছি।

কবি জানেন তাঁর ক্ষমতা কতখানি। নিজের উপর বিশ্বাস বা আস্থা রাখা খুব জরুরি। ব্লগে কেউ আমাদের কবিতা সমালোচনা করে ভস্মীভূত করে ছাড়বে। মন খারাপ না করে এ থেকে শিক্ষা নিতে হবে যে আরো ভালো লিখতে হবে। তদ্রূপ, কেউ কেউ ভূয়সী প্রশংসা করবেন। সেটা সত্যি হতে পারে, আবার উৎসাহ দেবার জন্যও হতে পারে। এ প্রশংসায় আহ্লাদিত না হয়ে সংযত হতে হবে; নিজের দায়বদ্ধতার কথা ভাবতে হবে- যিনি আমাকে আজ ‘ভালো’ বললেন, আমার পরবর্তী কবিতায় তিনি যেন ‘আশাহত’ না হোন- নিজের প্রতি নিজের দায়বদ্ধতা এটাই।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকুন আপু।

৪১| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৪ রাত ৯:০৫

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আমার প্রথম কবিতা লেখার ঘটনাটা শেয়ার করি। আমি প্রথম কবিতা লিখি আমার স্কুলের শেষদিনে। সেইদিন আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধুর বাবা মারা যান। আমি অনেক স্বাভাবিক মৃত্যু প্রত্যক্ষ করেছি কিন্তু আমার এই ফ্রেন্ডের বাবার মৃত্যুটা কি কারণে যেন মেনে নিতে পারি নাই। মনে পড়ে, ফ্রেন্ডের বাবাকে কবরে রেখে যখন বাসায় আসি তখন রাত ১০টার বেশি কিছু। আমার রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেই। মনে আছে তখন ভালোই শীত ছিল। তাও আমি ফ্যান ছেড়ে দিয়ে বসে থাকি। কিছুতে মন শান্ত হচ্ছিলো না। রাত ১২টার দিকে একটা খাতা কলম হাতে নিয়ে বসে পড়ি এবং লিখে ফেলি মনের কথাগুলো। লেখার পর দেখি আমি কাঁপছি আর কেমন যেন স্থির হয়ে গেছি।

কবিতাটা আপনাদের জন্য---


এখন রাত ঘুমোচ্ছে সবাই
কিন্তু ভোরের আলোয় জেগে উঠবে
নতুন দিনের প্রত্যাশায়।

আবার দিন যাবে রাত আসবে
শুরু হবে নিঃশ্বাসের শব্দ
কিন্তু যখন থেমে যাবে নিঃশ্বাস
তখন সে নিশ্চিত ঘুমায় আমার বিশ্বাস।

যে ঘুম কখনও শেষ হবে না।
অন্তবিহীন পথ চলার মত,
পথ যেন শেষ হতে চায় না
যেন অসীম কোন্ রাজ্যে প্রবেশ করা।

যে ঘুম সকল সম্পর্ক ছিন্ন করবে
শুধু ঘুম শেষে স্বপ্নগুলো
থেকে যাবে চিন্তা ক্লিষ্ট দেহে
দূর হবে সকল অনিন্দ্রা, ঘুম হবে পরম স্নেহে।



তখনো আমি শব্দের ব্যবহার জানতাম না। এখন যে জানি তাও না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি কবিতার শব্দরা আসবে স্বপ্রনোদিত হয়ে। এখন কবিতার শব্দ সহজ না কঠিন এসব কবির কাছে বিবেচ্য না। দিনশেষে কবি কিন্তু নিজের জন্যই কবিতা লিখছেন অন্যকারো জন্য না। ;)

এখন আমরা অলঙ্কার বা উপমা ব্যবহারের বেলায় অনেক গ্রামার মানার চেষ্টা করি, আসলেই কি এই গ্রামার মেনে লেখার প্রয়োজনীয়তা আছে??

সোনাভাই, আপনার পোষ্টে নিজের ছায়া দেখেছি ;) অনেকেই বলেন আমি নাকি অনেক কঠিন শব্দে কবিতা (আমার ভাষায় অকবিতা) লিখি। আমার লেখা কি হচ্ছে না হচ্ছে তা আসলে আমার চেয়ে আপনারা ভালো বলতে পারবেন কিন্তু আমার মনে হয় শব্দের ব্যবহারে স্বাধীনতা আছে আমাদের ;)

শুভেচ্ছা সোনাভাই।

মেলাদিন পর আপনার ব্লগে আসছি। আশাকরি নতুন কোন কবিতা দিবেন রিপ্লাইয়ে ;)

০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ২:১২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:

কবিতার শব্দরা আসবে স্বপ্রণোদিত হয়ে। ঠিক এ কথাটিই আমি আমার পুরো পোস্ট জুড়ে বলার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের অনেক নবীন কবি আছেন যাঁদের কবিতা পাঠে মনে হয় যে, তাঁরা অভিধান খুলে সামনে রেখেছেন (এটা কোনো অপরাধ নয়), যে শব্দটা তাঁদের ভালো লাগছে, কবিতায় তার প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও জোর করে সেটা বসিয়ে দিচ্ছেন। ফলে শব্দগুলো হয়ে যাচ্ছে আরোপিত, পঙ্‌ক্তিগুলো হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল। আপনার উদ্ধৃত কবিতাটি কত প্রাণবন্ত! কারণ হলো, আপনি যা ভেবেছিলেন, সেটাই প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন, ফলে ভাব প্রকাশের প্রয়োজনে শব্দেরা দৌড়ে এসে যার যার জায়গায় বসে গেছে।

এখন আমরা অলঙ্কার বা উপমা ব্যবহারের বেলায় অনেক গ্রামার মানার চেষ্টা করি, আসলেই কি এই গ্রামার মেনে লেখার প্রয়োজনীয়তা আছে?? আমার অবশ্য এরকম মনে হয় না। এর উপর ধরাবাঁধা কোনো গ্রামার যে আছে, বা থাকতে পারে তাও মনে হয় না। তবে, কোন্‌ বস্তুটি উপমা বা অলঙ্কার, এটা জানার কি কোনো উপায় আছে? ফর দ্যট ম্যাটার, কোন্‌টা গদ্য, আর কোন্‌টা কবিতা, এটা কে ডিফাইন করেছে? – আমাদের পূর্বসূরিরাই বলে গেছেন- এটা হলো কবিতা, কবিতা এরকম হয়, বা এরকম হতে হয়; আর এটা হলো গল্প বা প্রবন্ধ- যার গড়ন, অবয়ব এরকম। তা যদি না হতো তাহলে কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, নিবন্ধ- ইত্যাদি আলাদা আলাদা শাখা আমরা সাহিত্যে পেতাম না। হয়তো সবগুলো মিলিয়ে মাত্র একটি ক্যাটাগরিই প্রকাশ করতো- এর নাম সাহিত্য। এমনও তো হতে পারতো- আমরা যাকে কবিতা বা পোয়েট্রি বলি এটা হলো উপন্যাস! আর যাকে উপন্যাস বা নভেল বলে চিনি তাঁর নাম পুঁথি! ;) কালের বিবর্তনে গদ্যের যেমন একটা ধারা বা প্যাটার্ন দাঁড়িয়ে গেছে, পদ্য বা অন্য সাহিত্যেরও।

এবার তাহলে উপমা বা অলঙ্কারের কথায় আসা যাক। কবিতায় যে উপমা বা অলঙ্কার ব্যবহার করতে হবে, আমাদেরকে এ আদেশ কে শুনিয়েছে? কবিতায় উপমা ব্যবহার করলাম না, তাহলে কি সেটা কবিতা হবে না? যদি না হয়, তাহলে কেন হবে না? আর যদি উপমা ছাড়াও কবিতা লেখা যায়, সেটাই বা আমাদেরকে কে শেখালো? এজন্য আমার মনে হয়, এসবের জন্য যেমন ধরাবাঁধা কোনো নিয়ম নেই, কবি সম্পূর্ণ স্বাধীন এসব ব্যবহার করা বা না-করার জন্য, অন্যদিকে যদি ব্যবহার করিই তাহলে সেগুলো কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তা জানার জন্য আমাদের পূর্বসূরিদের লেখা পড়তে হবে। কালক্রমে সেগুলো থেকে মোটামুটি একটা প্যাটার্ন বের হয়ে আসে যে, উপমা বা অলঙ্কার এরকম- এ প্যাটার্নটাই হয়তো একটা প্রচলিত ধারায় পরিণত হয়েছে, যা কেবলই আপডেটেড হতে থাকে। নজরুল-রবীন্দ্র যেসব উপমা ব্যবহার করেছেন, আপনি-আমিও যদি সেগুলো অবিকল একইভাবে ব্যবহার করি, তাহলে আমাদের স্বকীয়তা বলে কিছু থাকবে না। প্রতিটা কবিই স্বকীয় প্রতিভায় সমুজ্জ্বল। উপমা বা অলঙ্কার প্রয়োগে ভিন্নতাই তাঁদেরকে অনন্যতা দান করে। একজন সচেতন ও ক্রিয়েটিভ কবি শব্দ, বিশেষণ, উপমা, ইত্যাদি ব্যবহারে সর্বদা নতুনত্ব সৃষ্টির চেষ্টা করেন। ‘চন্দ্রভুক অমাবস্যা’ একমাত্র সুনীলই লিখতে পারেন, আমি লিখতে পারি ‘অগ্নিভূক পোকা’। আমি উপরে ‘সিঁথি’ কবিতায় ‘অগ্নিভূক পোকা’ শব্দটা ব্যবহার করেছি- এখানে নজরুলের ‘অগ্নিভূক পতঙ্গ’ (আমি সৈনিক) আর সুনীলের ‘চন্দ্রভূক অমবস্যা’র সুস্পষ্ট প্রভাব রয়েছে। কিন্তু আমি বলে না দিলে এটা কোনো পাঠকের পক্ষেই উদ্ধার করা সম্ভব হতো বলে মনে হয় না- উত্তরসূরিদের কাছে আমাদের ঋণ এরকমই।


আমার মনে হয় শব্দের ব্যবহারে স্বাধীনতা আছে আমাদের। লেখালেখির পুরো ব্যাপারটাই স্বাধীন ব্যক্তিসত্তার একটা সৃজনশীল কাজ। আমাকে কবিতা লিখতে কেউ বাধ্য করেন নি। গল্প লিখতে বাধ্য করেন নি। আমি যখন লিখছি সম্পূর্ণ নিজের মনের তাগিদেই লিখছি। সমগ্র শব্দভাণ্ডার আমার দখলে। ওগুলোকে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করার শতভাগ স্বাধীনতা রয়েছে আমার। আসলে, এ প্রসঙ্গে স্বাধীনতা কথাটা মনে হয় অপ্রযোজ্য। তবে, যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো- এসব শব্দ ব্যবহারের যে-স্বাধীনতা আমরা উপভোগ করছি, তা কতখানি সার্থক হচ্ছে? শব্দভাণ্ডার থেকে স্বাধীনভাবে বেছে বেছে নিচের শব্দগুলো নিলাম, পাশাপাশি বসিয়ে কবিতা লিখলামঃ

জৈতুন প্রিয়ব্রজ্যা ব্রততী ক্ষারিত আঙ্গার
অবীর সংবেদনা দুণ্ডুভ জিগৎসা
খেচর আর্গল পূরভাষ সমিদ্ধ রক্তিম
বাণকাড়া মনোবাঞ্ছা


বাহ! দারুণ না! এখানে আমার কৃতিত্ব হলো এখানকার শব্দগুলোর অর্থ জানার জন্য পাঠককে ঘর্মাক্ত হতে হবে। তাতে আমার প্রভূত প্রসাদ লাভ হবে। আর এ ‘অসাধারণ’ কবিতা লিখতে আমি যে স্বাধীনতা ভোগ করেছি, তা খর্ব করার দুঃসাহস কারো নেই। তবে কেউ যদি এটা পাঠ করে খিক করে হেসে ফেলেন, তাহলে আমার সেই হাসির অর্থ হজম করার শক্তি থাকতে হবে। আর যদি সেই হাসির অর্থ না-ই ধরতে পারি, তাহলে মৃত্যু-অবধি অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করেও সাহিত্যে কিছু কবিতা দান করে যেতে পারবো বলে মনে হয় না।

আপনার জীবনের প্রথম কবিতাটা আসলেই মন ছুঁয়ে যায়। খুব সুন্দর

আমার নতুন কবিতা? খুব বিপদে ফেললেন প্রিয় আলাউদ্দিন ভাই। নতুন কবিতা আবার কবে হবে তা জানি না, তবে অনেক পুরোনো একটা দিলাম নিচে।

***
ভ্রমছায়া

এখনো মনে হয় সুতীব্র অভিমানে তুই
মেঝের উপর আছড়ে ফেলিস মুঠোফোন, আর আমি সবেগে ছুটে এসে
নীরবে পেছনে দাঁড়াই, সন্তর্পণে তোর ঘাড়খানি ছুঁই।
অমনি সচকিত ঘুরে
একফালি হাসি ঝেড়ে আহ্লাদে ছিটকে যাস দূরে।
এখনো মনে হয় একদিন সোনালি প্রত্যূষে নিবিড় দাঁড়িয়ে আছি চৌমাথার ধারে,
হাসনাহেনার সুগন্ধি ছড়ানো হাসিমুখ তোর ভেসে আসে আবছা অন্ধকারে।

মাঝে মাঝে ভ্রম হয়, মনে হয় আজও আছে সবকিছু ঠিকঠাক
অবিকল সেদিনের মতো
তারপর চেয়ে দেখি, তুই নেই, আছে শুধু তোর দেয়া একবুক ক্ষত।

অক্টোবর ২০০৭

***

অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় কবি আলাউদ্দিন ভাই।

৪২| ০১ লা মে, ২০১৪ রাত ২:০১

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: পোস্ট দেখে, পড়ে বিমোহিত হলাম। অসাধারণ একটি লেখা। কবিতা নিয়ে এখনও কিছু বলার সাহস করিনে, কিন্তু আপনার লেখা আর মন্তব্যগুলো দারুণ আনন্দ দিল- এইটুকুই বলতে পারি।

বিশেষ করে মন্তব্যগুলো আরেকবার খুঁটিয়ে পড়ে দেখার ইচ্ছা রাখি। প্রিয়তে নিলাম।

শুভরাত্রি, প্রিয় সোনাবীজ।

০১ লা মে, ২০১৪ দুপুর ২:১৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রোফেসর সাহেব। ভালো থাকুন।

৪৩| ০১ লা মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪২

নিশাত তাসনিম বলেছেন: অসাধারণ পোস্ট ।

০৩ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ নিশাত ভাই। শুভেচ্ছা।

৪৪| ০১ লা মে, ২০১৪ রাত ৮:৪৮

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
আপনার পোষ্টেও বলেছেন এবং আমার কমেন্টের রিপ্লাইতেও বলেছেন হজম করার ক্ষমতা নিয়ে মানে সমালোচনা সহ্য করা নিয়ে। আমি বিশ্বাস করি যেটাতে সমালোচনা হয় সেখানে কিছুটা হলেও রসদ আছে ;)

জৈতুন প্রিয়ব্রজ্যা ব্রততী ক্ষারিত আঙ্গার
অবীর সংবেদনা দুণ্ডুভ জিগৎসা
খেচর আর্গল পূরভাষ সমিদ্ধ রক্তিম
বাণকাড়া মনোবাঞ্ছা


এই কয় লাইন কিন্তু ভাবনার খোরাক হয়েছে। অন্তত শব্দগুলোর অর্থ জানার তো ইচ্ছে তৈরি হয়। ;)

স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন--এই লাইনটা মাথায় এসেছে স্বাধীনতা নিয়ে। মজার বিষয় হলো যে স্বাধীনতায় বিশ্বাসি সে স্বাধীনতা ধরে রাখার বিষয়টাও মাথায় রাখে। ;)

ভ্রমছায়া পড়ে বুকে হাহাকার তৈরি হয়েছে :(


শুভেচ্ছা কবি এবং গুরু :)

০৩ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভ্রমছায়া পড়ার পর বুকে যে হাহাকার তৈরি হয়েছিল, আশা করি এতক্ষণে তা কেটে গেছে।

ভালো থাকুন প্রিয় আলাউদ্দিন ভাই।

৪৫| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১২:২৮

এহসান সাবির বলেছেন: আরো কিছু লিখতে ইচ্ছা করছে ভাইয়া। থাকতে পারছি না।

হৃদয়- আসন

কোমল দুখানি বাহু শরমে লতায়ে
বিকশিত স্তন দুটি আগুলিয়া রয় ,
তারি মাঝখানে কি রে রয়েছে লুকায়ে
অতিশয় সযতন গোপন হৃদয় !
সেই নিরালায় , সেই কোমল আসনে ,
দুইখানি স্নেহস্ফুট স্তনের ছায়ায় ,
কিশোর প্রেমের মৃদু প্রদোষকিরণে
আনত আঁখির তলে রাখিবে আমায় !
কত – না মধুর আশা ফুটিছে সেথায় —
গভীর নিশীথে কত বিজন কল্পনা ,
উদাস নিশ্বাসবায়ু বসন্তসন্ধ্যায় ,
গোপনে চাঁদিনী রাতে দুটি অশ্রুকণা !
তারি মাঝে আমারে কি রাখিবে যতনে
হৃদয়ের সুমধুর স্বপন – শয়নে।

আমি প্রতিটা লাইন পড়ি আর হায় হায় করে উঠি, ''সেই নিরালায় , সেই কোমল আসনে , দুইখানি স্নেহস্ফুট স্তনের ছায়ায় ,কিশোর প্রেমের মৃদু প্রদোষকিরণে, আনত আঁখির তলে রাখিবে আমায় !'' ------ আরেেেে নাাাা!!!
''কত – না মধুর আশা ফুটিছে সেথায় , গভীর নিশীথে কত বিজন কল্পনা'' আর না থাম এবার..!!
এত সহজ ভাষায় কোমল আগুনের উষ্ন আহবান আর কোথায় আছে?

মাঝে মাঝে চিৎকার করে বলি ঐ বেটা তুই তো সবই লিখে গেলি আমি তাহলে কি লিখবো?

আমার মতো এক নিঃস্ব কবি যদি সারা জনমে এরকম একটা কবিতা, না পুরো একটা কবিতা দরকার নাই

''হঠাৎ সন্ধ্যায়
সিন্ধু-বারোয়াঁয় লাগে তান,
সমস্ত আকাশে বাজে
অনাদি কালের বিরহবেদনা।
তখনি মুহূর্তে ধরা পড়ে
এ গলিটা ঘোর মিছে,
দুর্বিষহ, মাতালের প্রলাপের মতো।
হঠাৎ খবর পাই মনে
আকবর বাদশার সঙ্গে
হরিপদ কেরানির কোনো ভেদ নেই।
বাঁশির করুণ ডাক বেয়ে
ছেঁড়াছাতা রাজছত্র মিলে চলে গেছে
এক বৈকুণ্ঠের দিকে......!!

এই রকম কটা লাইন লিখতে পারতো, কবি-জীবন না, সারা জনমই ধন্য হয়ে যেতো, আর কোনো কিছু চাওয়ার বা পাওয়ার বাকি থাকতো না।

কত সহজ ভাষায় লেখা লাইন গুলো মাতালের প্রলাপের মতো, দুর্বিষহ!!


শুভকামনা ভাইয়া।


০৩ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আবারও এসে চমৎকার কবিতাটি শেয়ার করা সহ মূল্যবান মতামতের জন্য অনেক ধন্যবাদ প্রিয় এহসান সাবির ভাই।

৪৬| ০৩ রা মে, ২০১৪ দুপুর ২:০৩

ডি মুন বলেছেন: শেষাবধি বেঁচে থাকে কবিতার বক্তব্য, জীবন ঘনিষ্ঠতা

সহমত। খুব সুন্দর পোষ্ট+++++

০৩ রা মে, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ডি মুন।

৪৭| ০৩ রা মে, ২০১৪ রাত ১০:৫৪

সকাল রয় বলেছেন:
আমি সস্তা শব্দ ছাড়া কিছু লিখতে পারিনা। আমি অন্ধকার যুগের লেখিয়ে।
না কবি। না লেখক। আমি মুখোরোচক শব্দের প্রতি খুব দুর্বল। সে কারনে আমার লেখা পড়লে জীবনানন্দের উত্তরসূরী সমসাময়িক কবিবৃন্দ বলেন ‍"লুতুপুত টাইপ কবিতা"
তারপরো লিখি কেননা বাঙলায়এক শ্রেনীর লেখক আছে যাদের উপন্যাসের মলাটে থাকে চিত্র নায়িকাদের ছবি আর নাম গুলোও হাস্যকর। যেমন-আমার কবরে দিও ফুল, বোরকা পড়া সেই মেয়েটি। এইসব সৃষ্টিকে উন্নত কবিরা বলবেন সি গ্রেডের সাহিত্য। এইসব সি গ্রেডের সাহিত্যিকদেরও কিন্তু পাঠক আছে।

আমি হয়তো সেরকম সস্তা লিখি বলে সি গ্রেডে পড়ে আছি তবে আমিও বলতে পারি আমার সেইসব সস্তা লেখারও পাঠক আছে। এবঙ সেজন্যই লিখি ।।।।।


_____________________পরে আবার বলবো

০৮ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:২১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সব লেখকেরই পাঠক আছে। সেই পাঠকেরা ঐ লেখকদের লেখনিতে নিশ্চয়ই মূল্যবান কিছু পেয়ে থাকেন।

কে কোন্‌ গ্রেডের লেখক- মহাকাল তার নির্ণায়ক। কত শত লেখক জন্মাবার কিছুদিনের মধ্যেই হারিয়ে গেছেন, তার হিসাবও আমরা জানি না।

ভালো থাকুন কবি। কবিতায় বেঁচে থাকুন। শুভ কামনা।

৪৮| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ ভোর ৪:৩৪

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: অনেক কথাবার্তা অনেক আলোচনা হইছে দেখা যায়। খলিল ভাই আপনার ধৈর্য আছে বটে। আমার নাই, শেষ...

যা হোক, কয়খান লাইন লিখছি আজকে, আপ্নারে দিয়া গেলাম

এ জীবন বড্ড অসুখের।

চিবুকে চুমুর মত লেগে থাকে বিষাদ!

আলিঙ্গনে বেঁধে ফেলে মৃত্যুর অবিনাশী ফাঁদ-

ঘুম ভেঙে দেখি, কেবলই দূরে সরে যায়।

আরও দূরে সরে যায়, শূন্যতায় কবিতা এঁকে যায়।

//////////////////

খুব কঠিন কবিতা

হি হি হি

০৮ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:

এ জীবন বড্ড অসুখের।
চিবুকে চুমুর মত লেগে থাকে বিষাদ!
আলিঙ্গনে বেঁধে ফেলে মৃত্যুর অবিনাশী ফাঁদ-


দারুণ লিখেছেন। চিবুকে চুমুর মত লেগে থাকে বিষাদ! কিন্তু এতো নৈরাশ্য কেন? ;)

ভালো থাকুন তানিম ভাই।

৪৯| ০৪ ঠা মে, ২০১৪ ভোর ৬:০০

নস্টালজিক বলেছেন: সহজ কথায় দৃশ্যকল্প সাজানো কঠিন কাজ! পড়ার সময় সহজ মনে হয় কিন্তু ভাবনাকে সহজিয়া শব্দে ধরা কবির আসল মুন্সিয়ানা!

কবির যুদ্ধ, সহজ শব্দে পাঠককে কবিতার ময়দানে, খোলা প্রান্তরের ম্যাজিকাল সুররিয়েল আবহ এনে দেয়া!

যুদ্ধে জয়ী না হলেও ক্ষতি নাই, কবিদের হেরে যাওয়ায় ভালো মাঝে মাঝে।





আপনার পোস্টে অনেক ভালো লাগা রেখে গেলাম খলিল ভাই!


ভালো থাকুন নিরন্তর!

০৮ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:


যুদ্ধে জয়ী না হলেও ক্ষতি নাই, কবিদের হেরে যাওয়ায় ভালো মাঝে মাঝে।


খুব সুন্দর কথা বলেছেন রানা ভাই। সত্যি বলতে কী, কমেন্টের সবগুলো কথাই কবিতা লিখবার জন্য চমৎকার গাইডলাইন।


অনেক ভালো থাকবেন।

৫০| ০৯ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:০৯

দ্য ইলিউশনিস্ট বলেছেন: চমৎকার পোস্ট। অনেক কিছু শিখলাম।
প্রিয়তে

০৯ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ দ্য ইলিউশনিস্ট।

৫১| ২৭ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১২:০৪

বাবুল হোসেইন বলেছেন: এতো জ্ঞানী লোকের কথা শুনে মুগ্ধ, নিজে আর কি বলবো।

অনেক কিছুই শিখলাম, আপনার ধৈর্য্যের পরীক্ষা করা কঠিন। এতো নিখুঁতভাবে এখনো ব্লগিং করছেন দেখে। ভালো লাগা জানালাম কবি।

কবিতার জন্য এক জীবন যথেষ্ট নয়, আরেকটা জীবন পেলে ভালো হয়।

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
কবিতার জন্য এক জীবন যথেষ্ট নয়, আরেকটা জীবন পেলে ভালো হয়।


আপনার এ লাইনটা পড়ার পর সেদিন আমার এক অদ্ভুত, অব্যাখ্যেয় অনুভূতি হয়েছিল। মানুষের জীবন কত ক্ষুদ্র! যে-কোনো কিছুর জন্যই এ জীবন অপ্রতুল।

ভালো থাকুন বাবুল ভাই।

৫২| ২৭ শে মে, ২০১৪ রাত ১০:০৪

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: অনেক অনেক গুনি পোষ্ট। অালোচনাও বেশ জমেছে। যাই একটু লিখতে চাইতাম তাও গেল। ভাল লাগল।

২০ শে জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: :) :)

কমেন্টে মজা পেয়েছি। শুভ কামনা থাকলো।

৫৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ৩:২৬

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ফেসবুকে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া ! সেই এপ্রিলের পোষ্ট আর আমি দেখলাম আজকে , পোষ্ট টা আপনার মনোযোগী পাঠ আর বিশ্লেষনের ফসল ! অনেকেই উপকৃত হবে , বেশ কয়েকটি চমৎকার কবিতা আছে এই পোষ্টে , কমেন্ট গুলো ও উপভোগ্য বেশ ! এই পোষ্ট প্রিয়তে না থাকলেই না হয় !

নিজে টুকটাক কবিতা লিখার চেষ্টা করি মাঝে মাঝে , লিখতে লিখতে লেখোয়াড় হয় নাকি ?

কিছুদিন আগে এক কবি বড় ভাই আমাকে বলছিলেন প্রতিদিন নিয়ম করে লিখা উচিৎ , অভিনেতারা যেমন মন খারাপ না থাকলেও কাঁদে , কবিদের ও নাকি তেমন করে কবিতার প্রয়োজনে মন খারাপ করতে হবে , মন ভালো করতে হবে :(

যাই হোক , আমি ওনাকে বলেছিলাম যতটুকু মনে পড়ে , ভাই আমার সব সময় আসেনা , যখন আসে তখনই লিখি , অন্য সময় অনেক চেষ্টা করেও কিছুই আসেনা ! ব্যাপারটা অনেক টা নাজিল হবার মতো , নিয়ম করে লেখা আমার পক্ষে সম্ভব না , নাইবা হলাম কবি !!

আমার কখন কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে ?
১> মাঝরাতে হুট করে বিচ্ছিন্ন কিছু ভাবনা নিজেকে এলোমেলো করে দেয় , হুট করে ভাবি কেমন হয় সবার মাঝে তা ছড়িয়ে দিলে ? তখন সেই ভাবনা গুলোকে আঁকতে চেষ্টা করি , শব্দ খুজি সংগ্রহে থাকা বইয়ে , কখনো ব্লগের প্রিয় কবিদের পোষ্টে ! মাঝে মাঝে একটা প্যাটার্ণ দাঁড়িয়ে যায় , মাঝে মাঝে কিছুই হয়না ! এই ধরনের কবিতায় আত্বতৃপ্তি টা তুলনা মূলক ভাবে কম ! হবেই বা কি করে ভাবনা গুলো আমার কাছেই বিক্ষিপ্ত !!

২ > মাঝে মাঝে সত্যি সত্যি নাজিল হয় , কোন একটা ভাবনা ঘুরপাক খায় , আপনা থেকেই শব্দ এসে বসে যায় , চার থেকে পাচ মিনিটেই কবিতা রেডি , আমি মনে করি এগুলো নাজিল হয় ! ব্লগিং এর শুরুর দিকে যখন লিখতাম তখনই দিয়ে দিতাম পোষ্ট আকারে , অনেক বানান ভুল থাকতো! বিভিন্ন পোষ্টে আপনাদের কথা শুনে ইদানিং দুই চার দিন সেই নাজিল হওয়া কবিতা টা পড়ে থাকে , বানান গুলো ঠিক করার চেষ্টা করি , দুই চারটা উপমা বদলের চেষ্টা করি ! এটাতে আত্বতৃপ্তি একটু বেশী !

৩ > পড়তে পড়তে অথবা শুনতে শুনতে অনেক সময় দুই চারটা শব্দ মাথায় গেঁথে যায় , সেই শব্দ থেকে অনেক সময় কবিতা আসে ! কঠিন শব্দ কোনগুলো আমি ঠিক জানিনা , শব্দটাকে টানতে টানতে অনেক সময় কিছু একটা বলা হয়ে যায় , সাক্ষী হয়ে থাকে আমার সেই অনুভূতি টুকো ! কবিতার নিয়ম কানুন , ব্যাকরণ জানিনা , আপনার এই পোষ্টে অনেক কিছুই জানলাম, এর আগে তানিম ভাই একবার আমার এক পোষ্টে অতি বিশেষায়ন এড়াতে , অপ্রয়োজনীয় শব্দ এড়াতে বলেছিলেন , খেয়াল করে দেখলাম আসলেই অধিক শ্রুতি মধুর হয় ! যা বলছিলাম , পছন্দের কোন লাইন বা শব্দ থেকে কবিতা আসে তখনই যখন লিখতেই হবে এমন একটা ব্যাপার থাকে ! কয়দিন আগে এক বড় ভাই নিজের স্বরচিত একটা গান শোনাচ্ছিলেন - " ঘোলাটে সুর আর ঘোলাটে মেঘ
মেঘে ঢাকা মেঘে মেঘ , মেঘদের ক্রন্দন !
আমার একলা জলফড়িং " - "একলা জলফড়িং" উপমাটা এত ভালো লেগেছিল যে ওনাকে অনুরোধ করেছিলাম গানের শিরোনাম এটা দিতে ! পরে একলা জলফড়িং , দুই চারদিন মাথায় ছিল , কিন্তু আশেপাশে কিছু বসেনি , আর একলা জলফড়িং থেকে কোন কবিতাও আসেনি, কোথাও ব্যাবহার করার ও সুযোগ পাইনি :( স্পষ্ট মনে নেই মাঝে মাঝে লিখেছি এমন একটা কিংবা দুটা শব্দের প্রেমে পড়ে ! এমন জোর করে অনুভব করা কবিতা গুলো আলাদা হয়ে তাকিয়ে থাকে !

অনেক অপ্রয়োজনীয় কথা বলে ফেলেছি হয়তো মাফ করবেন ! প্রায় ঘুমন্ত একটা ছেলেকে পোষ্ট পড়তে আর কমেন্ট করতে বাধ্য করেছেন , কমেন্ট একটু বড় হবেই
:P :P

আমি যখনই লিখি , পোষ্ট দেয়ার পরে আপনি আমার ব্লগে গেলে আমার আলাদা ভাবে ভালো লাগে , অসম্ভব দারুন এই পোষ্ট টাতে কনফেস করে গেলাম !
শুভেচ্ছা সব সময়ের !

৫৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:১০

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: সকালেই অসাধারণ একটি পোস্ট !!! মন ভরে গেল

৫৫| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:০১

আহসান জামান বলেছেন:
আপনি খুব কঠিন-কঠিন কাজগুলো করে বসেন! অসংখ্য ধন্যবাদ।

৫৬| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ২:৫২

ফারিয়া বলেছেন: প্রতিটি কথায় সহমত। তবে একটা কথা, আমি নিজেও নতুন শব্দ শিখলে তাতে একপ্রকার এক্সপেরিমেন্ট করি। বেশ কিছুভাবে সেটাকে প্রকাশের চেষ্টা করি, শব্দকে উপলব্ধি করতে। এটা কেমন?
আর ভুল প্রয়োগ পরিহার করা উচিত। অনেকদিন পরে আসলাম, কেমন আছেন?

৫৭| ২৩ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৪৫

বালুচর্ বলেছেন: যে কবিতা কঠিন ভাষায় লিখে গেলো কোন কবি
কেউ যদি না বুঝে মর্ম জ্বালবে কি তা কোন রবি?
যে কবিতা জাগায় মনে ভাব সাগরের সব নালা
সেই কবিতা হোক সাবলিল মিটবে তবে সব জ্বালা।
---------সহমত।

৫৮| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ২:০০

চন্দ্ররথা রাজশ্রী বলেছেন: আপনার সংগে সহমত।
কঠিন শব্দে গড়া কবিতাগুলো পাঠক মনে সৃষ্ট আবেগের স্বতঃস্ফূর্ত প্রবাহকে নষ্ট করে।

অনেক ভাল লাগলো।

৫৯| ১৭ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৫

নেক্সাস বলেছেন: একটা কবিতা ভালো কবিতা হিসাবে দাঁড়িয়ে যায় কিছু ‘কঠিন’ শব্দের উপস্থিতিতে নয়, বরং ঐ শব্দগুলোর সঠিক প্রয়োগে। সঠিক প্রয়োগের ফলে কিছু মামুলি শব্দের সমাহারেও একটা কবিতা অনন্য হয়ে উঠতে পারে। বস্তুত, শব্দ কখনো ‘কঠিন’ হতে পারে না, শব্দের প্রয়োগই তাকে কঠিন করে তোলে। সব ‘কঠিন’ শব্দেরই ‘অভিধানে’ স্থান রয়েছে, যা থেকে তার অর্থ পাওয়া সম্ভব। অর্থ নেই, এমন শব্দ কোনো কবি তাঁর কবিতায় বসাবেন বলে মনে করি না; যদি কেউ বসান, তাতে কবিতার কোনো অর্থ সৃষ্টি হয় বলে মনে করি না। কবিতার ভিতরে আপনি কী বোঝাতে চাইছেন, সেই মূল মর্মটি ‘কঠিন’ হতে পারে- কারণ, সকল দর্শন সকলের কাছেই যে বোধগম্য হবে, ব্যাপারটা এরকম নয়। কবিতার সারমর্ম কোনো শব্দকোষ বা কাব্যকোষে নেই। কবিতার ‘কঠিন’ কিছু থেকে থাকলে সেটি তার শব্দ নয়, অন্তর্নিহিত ভাবার্থ।


একদম সহমত।

তবে

কবিতার সারমর্ম কোনো শব্দকোষ বা কাব্যকোষে নেই। কবিতার ‘কঠিন’ কিছু থেকে থাকলে সেটি তার শব্দ নয়, অন্তর্নিহিত ভাবার্থ। ------------- এখানে কিছু কথা বলতে চাই। হূম এটা সত্য কবিতার প্রামণ্য কোন ভাবার্থ নাই। পাঠক শব্দ উপমার দোলাছলে যে দৃশ্যকল্পের মধ্য দিয়ে ভেসে যায় সে মত করে সে কবিতার ভাবার্থ তৈরি করে নেয়। এটাই সত্য। তবে এটাও সত্য যে কবিতা একেবারে অর্থ বা সরমর্মহীন নয়। একটা না একটা অর্থ থাকতেই হবে, সে যার কাছে যেটা হোক। আর সেক্ষেত্রে কবিতার শব্দ ও উপমার যথার্থ ব্যবহার পাঠক কে যে কোন একটা দৃশ্যকল্প রচনায় সহযোগীতা করতে হবে। পারষ্পরিক অন্বয় না রেখে খালি শব্দ ব্যবহার করে গেলেই হয়না।

ধন্যবাদ দাদা.আপনাকে আমার কবিতায় পায়না। আপনার পাঠ প্রতিক্রিয়া নিজেকে আমাকে সমৃদ্ধ করবে বলে আমি আশাবাদী।

৬০| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:২৬

abir24 বলেছেন: http://bdming.com

৬১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:৫৩

ইসিয়াক বলেছেন: ওহ দারুণ একখানা পোষ্ট । প্রিয়তে রাখলাম আমার অনেক কাজে লাগবে ।
ধন্যবাদ কবি , শুভকামনা রইলো।

৬২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
কবির প্রকারভেদের শেষ নেই। তাই একেক জনের কবিতা একেক রকম।

+++++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.