নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শব্দকবিতা : শব্দেই দৃশ্য, শব্দেই অনুভূতি [email protected]

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই

দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই › বিস্তারিত পোস্টঃ

ব্লগারদের স্ব-নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা : দ্বিতীয় পর্ব

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৩:০০





কবিতা সংগ্রহ ও সম্পাদনা এবং কম্পিউটার গ্রাফিক্‌স

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই



প্রচ্ছদ : কাল্পনিক_ভালোবাসা



ছবি: পিডিএফ কপির ব্যাকগ্রাউন্ডে ব্যবহৃত ছবিটি সম্পাদক কর্তৃক ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত। অন্যান্য ছবিগুলো হয় সংশ্লিষ্ট কবি অথবা সম্পাদক কর্তৃক ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে; তবে বেশিরভাগ ছবিই সম্পাদক কর্তৃক এডিট করে এখানে সংযুক্ত করা হয়েছে।



কবিতা শুরুর আগে



‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’ বা ‘শ্রেষ্ঠ’ কথাগুলোয় অনেকের অপত্তি রয়েছে; কেননা, একজন কবির কাছে তাঁর কবিতামাত্রই শ্রেষ্ঠ; কোনো একটা কবিতাকে শ্রেষ্ঠ বলা হলে অপরাপর কবিতা অপাঙ্‌ক্তেয় হয়ে যাবার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু কবিদের ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’র বই প্রকাশ করার ইতিহাস নতুন নয়। রবীন্দ্র-নজরুল থেকে শুরু করে হুমায়ুন আজাদ পর্যন্ত খ্যাতিমান কবিরা শ্রেষ্ঠ কবিতার বই প্রকাশ করেছেন। একজন কবি জীবনে ৫০০টি কবিতা লিখে থাকলে ৫০০টি কবিতাই গুণগতভাবে সমান মানসম্পন্ন হবে, এমনটা ভাবা মনে হয় ঠিক নয়।



একজন কবি কি নিজে জানেন না তাঁর দুর্বল কবিতা কোন্‌টি বা কোন্‌গুলো। এজন্য দিনের পর দিন, যখনই সময় পান, দুর্বল-নির্বিশেষে সব কবিতাই তিনি পরিমার্জন ও পরিবর্ধন করতে থাকেন। রবীন্দ্রনাথও ক্রমাগত পরিমার্জন করতেন। দ্বিতীয় বা তদ্‌পরবর্তী সংস্করণসমূহে প্রথম প্রকাশিত কবিতায় অনেক পরিবর্তন বা পরিমার্জন লক্ষ করা যেতো। কখনো কখনো এ পরিমার্জিত কবিতাটি নতুন আঙ্গিক ও ভাবে আবির্ভূত হতো।



কবি তাঁর সাবলীল ও প্রিয় কবিতাগুলো সম্পর্কেও সম্যক অবহিত। ভালো কবিতাগুলো বার বার পড়েন, এতে প্রচুর আনন্দ ও তৃপ্তি পেয়ে থাকেন, তেমনি এসব কবিতায় কোনো খুঁত থাকলে তা তিনি দূর করতে সচেষ্ট হোন।



কবির কাছে তাঁর কোন কবিতাটি সবচেয়ে বেশি প্রিয়, কোনো কবি হয়তো এভাবে কখনো ভাবেন নি। ঠিক এ ভাবনা থেকেই ‘ব্লগারদের স্ব-নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা’ সংকলন পোস্ট তৈরি করার ধারণা লাভ করি। ব্লগে নানান ধরনের সংকলন পোস্ট প্রকাশিত হতে দেখা যায়, উদাহরণ স্বরূপ মাসিক ভিত্তিতে প্রকাশ করা গল্প ও কবিতা সংকলন পোস্টের নাম বলা যেতে পারে। এসব সংকলন পোস্টে ব্লগারদের আবেগ, ভালোবাসা, উচ্ছ্বাস ও উদ্যম অন্য সাধারণ পোস্টের চেয়ে অনেক বেশি লক্ষ করা যায়।



আমি যতটুকু দেখতে পেয়েছি তাতে মনে হয়েছে ব্লগে কবিদের সংখ্যা প্রচুর। কোনো কোনো কবি এক দিনে গোটা পাঁচেক, বা তারও বেশি সংখ্যক কবিতা প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ, কবিরা ক্লান্তিহীন। কবিরা প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর। তাঁদের জন্য আরেকটি আনন্দদায়ক কাজ করা যেতে পারে- তাঁদের শ্রেষ্ঠতম কবিতাটি বাছাই করা। কবিরা এ যাবতকাল যতগুলো কবিতা লিখেছেন, তার মধ্য থেকেই তাঁদের শ্রেষ্ঠতম কবিতাটি বাছাই করবেন। ২১ মে ২০১৪ তারিখে এ নিয়ে ফেইসবুকে প্রথম স্টেটাস ছাড়া হয়। ব্লগার বন্ধুরা তাৎক্ষণিকভাবে এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং তাঁদের সানন্দ ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কথা বলেন। এতে আমিও খুব উৎসাহিত বোধ করি। ব্লগে বর্তমানে যাঁরা এ্যাক্টিভ রয়েছেন, তাঁদের সবার কাছেই সার্কুলার পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করি। যাঁরা আগে এ্যাক্টিভ ছিলেন, বা বর্তমানে যাঁরা ব্লগে খুব কম আসেন, তাঁদের কাছেও মেসেজ পৌঁছে দিয়ে তাঁদের সেরা কবিতাটি সাবমিট করতে অনুরোধ করি। পুরোনো কয়েকজন ব্লগার অনেক আগে ব্লগ ছেড়ে দিয়েছেন বলে কবিতা দিতে চান নি, তবে তাঁরা উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তার পরও, বেশ কয়েকজন পুরোনো ব্লগার এতে অংশগ্রহণের জন্য এগিয়ে এসেছেন। এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত কবি ও ব্লগার, হাংরি আন্দোলনের কবি মলয় রায়চৌধুরীর কথা উল্লেখ না করলেই নয়। ‘জখম’ তাঁর সেরা কবিতা। এ কবিতার সফট কপি পাওয়ার জন্য তাঁর সাথে আমার বেশকিছু মেসেজ আদান-প্রদান হয়; আমি ইন্টারনেটেও খুঁজি। কিন্তু পাই নি। তবে, সামহোয়্যারইন ব্লগে ‘জখম’-এর উপর আলোচনা পোস্ট রয়েছে; আগ্রহী ব্লগারগণ সেটি পড়তে পারেন।



এ ধরনের পোস্টে অনেক শ্রমের প্রয়োজন। ব্লগারদের অদম্য উৎসাহে আমি আমার ব্যক্তিগত সময় নষ্ট করে এ কাজটি করার জন্য নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ি। এজন্য ব্লগারদের প্রতি আমার অজস্র ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।



মজার অভিজ্ঞতা



ব্লগারগণ নিজেরাই তাঁদের সবচেয়ে ভালোলাগা কবিতাটি সাবমিট করবেন - প্রিয় ব্লগারদেরকে এ বিষয়টা বোঝাতে আমি চরম ভাবে ব্যর্থ হয়েছিলাম। এবং অনেক ব্লগারই এ কনসেপ্টটা বুঝতে পেরেছেন বলে মনে হয় নি। তাঁরা মনে করেছেন - কবিতাগুলো আমার পছন্দ অনুযায়ী নিলেই তো কাজ হয়ে গেলো!



আসলে ব্যাপারটা তা ছিল না। একজন কবি সারাজীবনে অনেক কবিতা লিখেন। অনেকে সর্বশেষ লিখিত কবিতাটিতেই সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পেয়ে থাকেন। কিন্তু কিছুকাল পরে সর্বশেষ কবিতাটিও হয়তো পানসে হয়ে যায়। কিন্তু সমগ্র কবিতাসম্ভারে কবির এমন কিছু কবিতা থাকতে পারে, যার প্রতি তাঁর সবিশেষ অন্তরিকতা থাকে। তা ছাড়াও, রচনাশৈলি, ভাব, সব মিলিয়ে কবির কাছে সবচেয়ে নিখুঁত কোনো কবিতা থাকতে পারে, যেটি পড়ে কবি নিজেই মুগ্ধ হয়ে যান। আমি কবিদের কাছে এমন কবিতাই চেয়েছিলাম। ‘শ্রেষ্ঠ’ কথাটিতে হয়তো আপত্তি থাকতে পারে- কিন্তু সবচেয়ে ভালোলাগা কবিতা থাকা সম্ভব। কবিদের সেই সবচেয়ে ভালো লাগা কবিতা নিয়েই এ পোস্ট। কিন্তু আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগা কবিতা নিয়ে এ পোস্টটি নয়- এ নিয়ে মেসেজিং করতে করতে আমাকে প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয়েছে।



পোস্ট বা সংকলন বইয়ের নাম এরকম হতে পারতো- ‘সামহোয়্যারইন ব্লগের শ্রেষ্ঠ কবিতা।’ সে ক্ষেত্রে কবি ব্লগারদের কোনো ভূমিকা নেই; তখন কবিতা নির্বাচনের সমুদয় দায়িত্ব সংকলকের। তখন বরং সংকলকের সাথে কবি মতামত বিনিময় করলে সংকলক বায়াস্‌ড হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু কোনো একটা ব্লগের শ্রেষ্ঠ কবিতা নির্বাচন কোনো মুখের কথা নয়। এ কাজটা করার জন্য প্রথমত দীর্ঘ সময়ের দরকার- এক বছরও পর্যাপ্ত সময় নয় বলে আমি মনে করি। দ্বিতীয়ত, এ কাজটা একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়।



অনেক ব্লগারই তাঁদের ব্লগ পড়ে আমার যেটা ভালো লাগে সেটা নিয়ে নিতে বলেছিলেন, অনেকে এ নিয়ে অনেক জোরাজুরিও করেছেন। কেউ কেউ ৩-৪টা কবিতা জমা দিয়ে তা থেকে সেরাটা বেছে নিতে বলেছেন।



আমি নিজে কবিদের ব্লগ থেকে আমার ভালোলাগা কবিতাগুলো বেছে নিলে এটা ব্লগারদের স্ব-নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা হতে পারে না। আমার জন্য সবচেয়ে কষ্টদায়ক, লজ্জাকর ও বিব্রতকর বিষয়টি ছিল- কোনো ব্লগারবন্ধুই বোধহয় অনুধাবন করেন নি যে, একা আমার পক্ষে শত শত ব্লগারের ব্লগ পড়া সম্ভব নয়। অনেকে আবার স্টেটাস ভালোমতো না পড়ে মেসেজে অনেক প্রশ্ন করেছেন। সময়ের অভাবে অনেককে সব প্রশ্নের জবাব দেয়া সম্ভব হয় নি। তবে, শতভাগ ক্ষেত্রে স্বয়ং কবি তাঁদের শ্রেষ্ঠতম কবিতাটি বাছাই করেছেন, যদিও ব্লগারদেরকে এ ব্যাপারে কনভিন্স করতে আমাকে প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে।



পুরোনো প্রায় সব ব্লগারের কাছেই মেসেজ পাঠানো হয়েছিল। অনেকে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দিয়ে কবিতা দিয়েছেন, অনেকে সময়াভাবে কবিতা বাছাই করা সম্ভব নয় বলে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন।



খুব উন্নত মানের গ্রাফিকস আমি জানি না। যতটুকু পারি তা দিয়ে পিডিএফ করতে যেয়ে দেখি সাইজ ৩৫-৪০ এমবি হয়ে গেছে। এটাকে ভাগ ভাগ করে পোস্ট দিলে হয়তো সমস্যা একটু কমবে। এ উদ্দেশ্যে সবগুলো কবিতাকে কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে।



এর আগে ব্লগে এ ধরনের কোনো সংকলন পোস্ট প্রকাশ করা হয় নি। এবার এ পোস্টটির জন্য কাজ করতে যেয়ে কবিদের সেরা কবিতাটি পড়ার এক অভূতপূর্ব সুযোগ পেলাম আমি, যা আমার জন্য একটা অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। সামহোয়্যারইন ব্লগের জন্য এটা একটা ইউনিক ডকুমেন্ট হিসাবেও চিহ্নিত হয়ে থাকবে।



সম্ভাবনার কথা



এই অভূতপূর্ব কবিতাসমষ্টি হাতে পাবার পর আমার ইচ্ছে প্রবল হচ্ছে- আগামী একুশে বইমেলায় এর একটা পুস্তক সংস্করণ বের করার। বড় আকারে সম্ভব না হলেও অন্তত এ থেকে নির্বাচিত কবিতা নিয়েও একটা বই প্রকাশ করার ইচ্ছে আমার আছে।



এই চমৎকার প্রচ্ছদটি আর কে আঁকতে পারেন? কাল্পনিক_ভালোবাসা। বই বের করা হলে তিনিই এর প্রচ্ছদ আঁকবেন- জাদিদ ভাইয়ের কাছে আমার এ দাবি থাকলো।



যাঁরা কবিতা দিয়েছেন, তাঁদের সবার প্রতি আবারও কৃতজ্ঞতা।



প্রথম পর্বের প্রতিক্রিয়া



সামহোয়্যারইন ব্লগে ৩০ মে ২০১৪ তারিখে রাত ১১.০৮ মিনিটে ‘ব্লগারদের স্ব-নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা’র প্রথম পর্ব পোস্ট করা হয়। সকলেই এটিকে সানন্দে গ্রহণ করেন, এবং কবিব্লগারগণ, বিশেষত যাঁদের কবিতা প্রথম পর্বে স্থান লাভ করেছিল, খুব সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। শুরুতেই বলা হয়েছিল যে, কবিতার সংখ্যা বিপুল হওয়ার কারণে কবিতাগুলো কয়েকটি পর্বে ভাগ করে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু প্রথম পর্বে নিজেদের কবিতা দেখতে না পেয়ে কোনো কোনো কবিব্লগার পোস্টের কমেন্টে এবং ফেইসবুকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এবার দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশিত হবার পর তাঁদের ভুল ভাংবে বলে আশা করি। দ্বিতীয় পর্বেও যাঁদের কবিতা দেখা গেলো না, তাঁদেরকে চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত ধৈর্য্য ধারণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।



প্রথম পর্ব প্রকাশিত হবার পর ব্লগার বন্ধুদের উৎসাহে আমি অভিভূত; সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।



কবি অরুদ্ধ সকালের প্রতি কৃতজ্ঞতা

সফট ফার্সনের ব্যাকগ্রাউন্ড গ্রাফিকস সহ বেশ কয়েকটি ছবি এঁকে দিয়েছিলেন কবি অরুদ্ধ সকাল। কিন্তু এ বিষয়ে আমার জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অপ্রতুল থাকার কারণে আমি সেগুলো কাজে লাগাতে পারি নি। চমৎকার ছবিগুলো যুক্ত করা গেলে সফট কপি অনেক বেশি সুদৃশ্য হতো। কবি অরুদ্ধ সকালের ক্রিয়েটিভ শিল্পকর্ম ও অমায়িক সহযোগিতার মনোভাবের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি এবং আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।



লিংক



ব্লগারদের স্ব-নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা দ্বিতীয় পর্বের পিডিএফ কপি



ব্লগারদের স্ব-নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা প্রথম পর্বের পিডিএফ কপি



ব্লগারদের স্ব-নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতা প্রথম পর্ব



***







রেজওয়ান মাহবুব তানিম

মৃত্যু



এইখানে নেমে এসেছে, শশ্মানের শবপোড়ানো রাত্রির মতন-

অদ্ভুত ক্লান্ত নিস্তব্ধতা। মৃত্যু এখন তার শীতলতা নিয়ে;

হয়ত ঘুরছে আমাদের আশেপাশে। হয়তবা দেহান্তরের খেলায়,

লীন হবে পরম সত্তা কোনো। অন্ধকার আমাদের অবসন্ন করে,

নিয়ে যাবে বিনাশের কাছে। ভূষা কালি বা কয়লার মতন

অসভ্য এই রাত; কিশোরীর ঢেউখেলানো খোলা চুল কিংবা

উঠতি বুক পাহাড়ের খাঁজের মতন দৃষ্টি সুখের নয়। নক্ষত্রগুলো

ক্লান্ত হয়ে সব শুয়ে পড়েছে নিজস্ব উঠোনে। অতিথি করে নিয়ে

গেছে ধার করা আলোয় স্নিগ্ধ চাঁদটাকে। সামনের রাস্তাটুকু

পাণ্ডব বিবর্জিত। বটের তলায় এখন ঝিমুচ্ছে না বসে বসে,

কাজে ফাঁকি দেয়া বুড়ো চৌকিদারটা। যে বিকট সিটি

রোজ রাতে মাথায় আনতো দূষণের অদৃশ্য বিষ; পরম প্রার্থিত

শব্দিত স্বর, কাঙ্ক্ষিত হলেও এখন অনুপস্থিত। নীরবতা তাই-

হিরণ্ময় হয়ে ছেয়ে রেখেছে সব, অস্বস্তির পূর্ণ অনুভবে; আমার

সমস্ত সত্তাকে, আমার সবটুকু আশার দেয়ালিকে।



গরম জলে উষ্ণতার কিছুটা উপশম। মাদকতায়

যদি দূর হয় সব অনাকাঙ্ক্ষিত অস্থিরতাগুলো!

ইঁদুরবিড়ালে খেলা রাত তাড়াবার। কবিতা আসুক সুন্দরের

আলো নিয়ে, সুন্দরের পূজায় কালো রাতের হোক অবসান!

অবাক হঠাৎ, জল্লাদের কোপের মতন ঘাই মারে উলঙ্গ

দমকা বাতাস। কবিতারা থমকে দাড়ায়; বিহ্বলতায়।

দ্রিম দ্রিম শব্দ; মৃত্যুদূতের রণ দামামা, এ ঘর থেকে

ও ঘরে ছুটে চলছে। শশব্যস্ত কবিতার বিদায়। বুকফাটা

আর্তনাদ তখনি! পাশের ঘরটা থেকে আমার ঘরে; উড়ে বেড়ায়

শব্দ তরঙ্গ নিজের মনে, দেয়ালের গম্ভীরতা

ঠেকাতে পারে না মৃত্যুর বিজয় সঙ্গীত।

মৃত্যু! অনন্যসাধারণ নিয়তির বিধান! সবচেয়ে বড়

সত্য এ পৃথিবীর! তবু সে চরম অনাকাঙ্ক্ষিত।

কখনো আসে সে সংকেত দিয়ে, কখনো বা অকস্মাৎ।

ওরা কি পেয়েছিল মৃত্যুর পূর্ব সঙ্কেত? হতচ্ছাড়া কুক পাখি

অপয়ার মত কি ডেকেছিল কাল, ওদের ঝুলবারান্দায় বসে?

এসেছিল কি শাশ্বত মৃত্যুর অগ্রিম বার্তা নিয়ে?



পৃথিবীর মানবসত্তা, সবসময় করেছে কোনো এক

শক্তিমান সত্তার সন্ধান! তারাই আবিষ্কার করে দেবতাদের;

যে দেবতারা খেলে তাদের নিয়ে, বুকপকেটে রাখা

পুতুলটির মত। একদিন বজ্রদেব, জলদেবী আর বনরানির ;

অন্তিম আরাধনায় মত্ত ছিল তারা। এই সব প্যাগানেরা ধর্ম

এনেছিল পৃথিবীর বুকে। কত রং, কত বিচিত্র সব-

নাম তার। নানান তন্ত্র; মূর্তিপূজা অথবা ভুডু, অন্ধ জগতের

প্রেতাত্মা, লর্ড লুসিফারের কুৎসিত সাধনায় লিপ্ত কেউ কেউ।

এর পরে বিপ্লব আসে, শুরু হয় সর্বগামীর মোক্ষ লাভের সাধনা।

আসে ত্রিত্ববাদ, ক্রমে ক্রমে স্থান নেয় একেশ্বরবাদ। আরাধ্যের

বদল ঘটেছে, ঘটমান আর দশটা ঘটনার মতই। কিন্তু অমোঘ

মৃত্যু রয়ে যায় একই রূপে, সমান ভীতিতে। এই অজ্ঞেয়বাদী

আমায় সমান ভীত করে, পাশের বাড়িটির বুড়ো ধার্মিকের

মতন, মৃত্যু যার হল আজ রাতে। অনেক লিখেছি মৃত্যু নিয়ে;

তবু মৃত্যুকে করি নি প্রকাশ, কোনো কল্পনা জালে কিংবা প্রতিশব্দে।

একমাত্র শাশ্বত শব্দ মৃত্যু, যা এর তীব্র ভয়াল সুন্দরের

প্রকাশ ঘটায়। জলহীন কাদাটে পুকুরে ঝাঁপি নিয়ে, জেলের আতিপাতি

খোঁজ করে মাছ ধরার মতন, একদিন মৃত্যু খুঁজে নেবে;

ঈশ্বরাদেশ অমান্যকারী, অবাধ্য ঠুনকো আমাকে। বিধাতার

দর্শন পাই নি কোনোদিন। পাবার চেষ্টা করেও লাভ নেই জানি;

কিন্তু মৃত্যু, আততায়ীর রূপে, দেখা দেবে সুনিশ্চিত!



রচনা : ০৩/১০/১১



***



স্বপ্নবাজ অভি

জীবন হয়তো অন্য কোনো পাখির ঠোঁটে!



জীবন হয়তো অন্য কোথাও।

অন্য কোনো অতল জলের গভীরে,

অন্য কোনো রাতের নিস্তব্ধতার আঁধারে

অন্য কোনো অরণ্যের সুখী এক পাখির ঠোঁটে।

এখানে রজনিগন্ধার ঝোপের সুগন্ধিতে ভেসে বেড়ায়

দীর্ঘ অনিদ্রার ঘ্রাণ!

এখানে গভীর রাতে অন্ধকার ছিঁড়ে

নিঃসঙ্গ কোনো রাতের পাখি জানিয়ে দেয়,

শূন্যতাই ছিল একসময়, সমস্ত মহাবিশ্বে!

এখানে অতল জলের নীচে মাছের গায়ে লিখা ছিল,

দীর্ঘ অন্ধরাতে গোলাপ বিষয়ক কোনো কবিতার পাতায় আমি নৈঃশব্দ্য আর অনিভপ্রেত ক্লান্তির মিলন দেখিয়েছি। গোলাপের মঞ্জরিবিন্যাসে নাকি বলা ছিল ‘নৈকট্য ভয়ানক’!



কোনো এক অলস বিকেলে মেঘেদের শরীর জুড়ে চলে জল-বিভ্রমের লুকোচুরি।

সে বিকেলে মনে হলো, জীবনটা কেন চিত্রল হরিণের ক্লান্তি হলো, কেন অন্ধ দোয়েলের আর্তনাদ শুনতে হয়?

অজস্রবার ঘড়ির কাঁটা দীর্ঘ ঘড়িভ্রমণ শেষ করেছে, এই আমি তখনো নির্লিপ্ত স্বপ্নবাজ কেবল! বৃষ্টি আসার আগে দেখলাম,

আলোছায়ার আকাশের ক্লান্তি নেই। বৃষ্টি নামার ঠিক আগের এই নিঃসঙ্গতা, বৃষ্টি নামার পর থাকবে না। কেননা বালক ততক্ষণে বুঝে যাবে ‘নৈকট্য ভয়ানক’!

তাই চিত্রল হরিণের পায়ে পায়ে, অন্ধ দোয়েলের কণ্ঠে, আর গোলাপের সুগন্ধিতে তুই পাবি মহাবিশ্বের শূন্যতা, বিবর্ণ অন্ধকার আর একই আগুনে পুড়ে যাওয়া দুটো সুখপাখির ডানার ছাই–তোর জন্য রেখে যাওয়া আমার উপহার!



***



আদনান শাহ্‌রিয়ার

খাম খোলা চিঠি (১)–জন্মান্তর (অথবা প্রেমপত্র)



সেই যে তুমি,

আমি যখন শুনেছিলাম তুমি ঘাসফুল হয়ে শুয়ে রয়েছ

সে প্রায় লক্ষ বছর আগের কথা।

যখন আকাশের রং দেখে কবিতা লিখতে শিখে নি মানুষ।

যখন গাঢ় বাদামি কোনো সমুদ্র পেরুবে বলে পাল তোলে নি নাবিক।

আমি জেনেছিলাম তুমি ঘাসফুল, এক তেপান্তরের মাঠে।

অতঃপর তোমাকে ছোঁবো বলে একদিন আমি বৃষ্টির কণা হলাম।

এক গোমড়ামুখো মেঘের ডানার নীচে খুব চাপাচাপিতে।

আমি এগুতে থাকলাম তোমার পানে।

পথে আমার কত সুখদুঃখের সাথি ঝরে গেলো।

কেউ পাহাড়ের চূড়ার একাকিত্ব বেয়ে নেমে গেলো।

আর কেউ ঢেউ হতে নদীর আহবানে।

আমি খুব গুটিসুটি মেরে নিজেকে ভাঁজ করে লুকিয়ে রইলাম।

অনেক রাত আর আরো অনেক হিসেবহীন রাতের পর পৌঁছালাম তোমার উপর।

কী যে আনন্দ হয়েছিল তোমাকে অমন শুয়ে থাকতে দেখে, অনেক বছর পর ক্লিওপেট্রা ওই ভঙ্গিতেই শুয়ে রবে।

একসময় আমার ঝরে পড়বার পালা এলো।

আমি প্রবল বেগে পূর্ণতার সুখে নামতে লাগলাম।

কিন্তু তোমাকে ছোঁয়ার আগেই কেউ একজন তোমার উপরে এসে দাঁড়ালো।

তার কালো কাপড়ে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে চলে গেলাম কোন দিকে।

উত্তপ্ত জমিনে নিঃশোষিত হলাম নিমিষে।

তুমি জানলে না আমি এসেছিলাম।



আমি যখন শুনেছিলাম তুমি মৌমাছি হয়েছ

সে প্রায় হাজার বছর আগের কথা।

তখন মানুষ পাতার শরীরে লিখতে শিখে গেছে বৃক্ষের ইতিহাস।

একটি ক্ষুদ্র নক্ষত্রকে বিশ্বাস করে হেঁটে হেঁটে হারিয়ে গেছে বহুদূর।

আমি শুনেছিলাম তুমি মৌমাছি হয়ে ভেসে বেড়াও সৌরভের গায়ে।

অতঃপর তোমাকে ছোঁবো বলে আমি পাঁচটি পাঁপড়ির ফুল হয়েছিলাম।

পৃথিবীর সব সৌন্দর্য মেখে লজ্জায় নুইয়ে ছিলাম।

আর আড়চোখে তাকিয়ে ছিলাম এক দিগন্ত থেকে আরেক দিগন্তে এক বিরহকাল।

একদিন খুব বাতাসে ঝরে গেলো একটি পাঁপড়ি।

আমার মন খারাপ আমার পূর্ণতাকে তুমি পেলে না তাই।

আরেকদিন বৃষ্টিতে নিয়ে গেলো আরেকটি পাঁপড়ি, খুব অক্ষমতায় হারালাম তাকে।

দুষ্টু ছেলের দল ছিঁড়ে নিল আরেকটি পাঁপড়ি। খুব কেঁদেছিলাম কেউ দেখে নি।

আরেক পাখি এসে অশুচি করে দিল আমার চতুর্থ পাঁপড়ি।

সে পাঁপড়ি আমি নিজেই ফেলে দিয়েছিলাম, আমার অপবিত্রতা তোমাকে দেখাবো না বলে।

আমার পক্ষাঘাতগ্রস্ত সৌরভে তুমি আসবে না জেনেও দাঁড়িয়েছিলাম স্কাইলাইটের মতো একা।

রোদে রোদে একদিন তাও ঝরে গেলো।

তুমি জানলে না আমি তোমার জন্যই জন্মেছিলাম।



আমি যখন শুনেছিলাম তুমি খুব ছোট্ট ঘুণপোকা হয়েছ

সে প্রায় একশ বছর আগের কথা।

কেউ কেউ রক্তের গন্ধে পিছলে যাচ্ছে গভীরতর অভ্যাসে।

কেউ কেউ ইকারুসের ডানার তলায় দাঁড়িয়ে আছে প্রশ্নবোধক হয়ে।

আমি শুনেছিলাম তুমি ঘুণপোকা হয়ে কেটে যাও পাতার পর পাতা।

অতঃপর তোমাকে ছোঁবো বলে আমি একটা কবিতা হয়েছিলাম।

পৃথিবীর যাবতীয় উপমা গায়ে মেখেছিলাম আমি।

প্রতিটা শব্দকে সাজিয়েছিলাম বিষণ্ণতম সুখী কলম দিয়ে।

তারপর চুপচাপ ভাঁজ হয়েছিলাম বইয়ের শেষ পাতাটিতে।

যেদিন তুমি বইটি কাটতে আসলে কী এক অপূর্ব আনন্দ, ঝাপসা হয়ে গিয়েছিলাম আমি।

তাই বুঝি তোমার চোখে পড়লাম না।

আমাকে রেখে চলে গেলে পাশের ঝাঁ তকতকে বইটির কাছে।

আমার আর্তনাদ কোনোদিন আমার বই পেরিয়ে তোমার কাছে পৌঁছে নি।

তবুও অপেক্ষায় ছিলাম।

একদিন অন্য ঘুণপোকারা এসে আমাকে স্পর্শ করলো।

আমার সবকিছু তাদের কাছে সমর্পণ করলাম এই ভেবে ভিড় দেখে যদি আসো।

আমি আমার শেষ শব্দটি পর্যন্ত খুঁজেছিলাম তোমাকে।

তুমি আসলে না। জানলে না আমি শুধু তোমার অপেক্ষাই করেছিলাম।



আমি যখন শুনেছি তুমি রাজকন্যা হয়েছ

জানি না কবেকার সে কথা।

কারো কারো ঝরা নক্ষত্রের পরের প্রার্থনা এখন তুমি।

কারো কারো ভাঙা স্বপ্নের শেষ টুকরোটির মতো নিঃসঙ্গতার কারণ তুমি।

আমি শুনেছি তুমি রাজকন্যা, বন্দি আছো সোনার কাঠি রুপার কাঠি নিয়ে।

অতঃপর তোমাকে ছোঁবো বলে আমি মানুষ হয়েছি।

শেষ রাতের চাঁদ যেখানে ডুবে যায় ততদূর যাবো বলে পায়ে বেঁধেছি পঙ্খিরাজ।

বুক জমাট ব্যর্থতার কষ্টগুলোতে পাঁজর হয়েছে ধারালো তলোয়ার।

তোমাকে শুনাবো বলে লক্ষ বছর ধরে জমিয়ে যাচ্ছি মধুরতম গল্পগুচ্ছ।

আমার নির্ঘুম পলকতলে জ্বলজ্বল করে জ্বলছে রঙিন পোস্টার।

‘তোমাকে ছুঁতে চাই।’

আমি এসেছি। আমি জন্ম নিয়েছি। আমি অপেক্ষা করছি।



এইবারও কি তুমি আমাকে ছোঁবে না?



***



অশ্রু হাসান

কবি



ইট-বালুর রসায়নে নির্মিত

সুরম্য অট্টালিকা তোমার থাকার জায়গা না,

কবি, আরামের ওখানে থেকে কবিতা হয় না,

কবিতা করতে থাকতে হবে চিলেকোঠায়;

যার চালের জায়গায় জায়গায় ফুটো থাকবে,

যেই ফুটো গলিয়ে কৌমুদীর কোমল আলো

তোমার আঁখিতে মুগ্ধতা বুলিয়ে দিবে,

যেই ফুটো চুয়ে বৃষ্টির ফোঁটা ফোঁটা জল

তোমার কপাল ও গাল সিক্ত করে যাবে।



চারিদিকে দামি খাবারের গন্ধে মৌ মৌ করা

খাবারের দোকানগুলো তোমার খাবার জায়গা না,

কবি, ক্ষুধার জ্বালার কাব্যিকতা ওখানে পাবে না।

তোমাকে খেতে হবে ফুটপাথে বা টঙ্গের খুপড়িতে,

ওখানে পাবে অভুক্ত পেটের জ্বালা নিবারণের কাব্যিকতা;

কবি, তুমি ওখানে দিব্যি পাবে বলছি আমি।





কবি, কষ্ট করে অর্থ উপার্জনের কাব্যিকতা

ধনাঢ্য মহামানবদের সাথে আড্ডায় পাবে না,

সভ্য সমাজ যাদের পতিতা বলে,

অসভ্য সমাজ যাদের মাগি বলে,

তোমাকে শুনতে হবে তাদের কথা,

খুঁজে পাবে অনেক কষ্টে নষ্ট হবার কাব্যিকতা।





কবি, তুমি ভালোবাসতে ভালোবাসবে;

তবে প্রেম করতে ভালোবাসবে না,

ভালোবাসায় স্বাধীনতার কাব্যিকতা পাবে,

প্রেমের কাব্যিকতা হলো শৃঙ্খলে আবদ্ধের,

তাই খুব একটা প্রেম করো না কবি।



কবি, তুমি পঞ্চাশ বছর বেঁচো না,

অতদিন বাঁচলে খ্যাতির বিড়ম্বনায় ভুগবে;

তখন তোমার অনেক সাধের কাব্যিকতা

চাইলেও খুঁজতে পারবে না খ্যাতির বিড়ম্বনার ভিড়ে।





***



কান্ডারি অথর্ব

কৌমুদী প্রিয়তমা



সূচনা পর্যায়

আপনিই বলুন পৃথিবীর কষ্টে কেঁদে;

প্রেমের অর্থ আজ আদমজাত

কি পেতেছে?

আপনিই বলুন পৃথিবীর আনন্দে হেসে;

ভালোবাসার অর্থ আজ আদমজাত

কি পেতেছে?

আপনি বললে

কোথাকার জল কোথায় যেয়ে গড়াবে,

তার খোঁজে আমি হবো সর্বহারা;

অবুঝ হৃদয়ে অবশান্ত।

আপনি বললে

প্রেমের বর্তমান অশ্লীলতায় করবো

শুকনো মাটিতে পুকুরচুরি;

হৃদয় তারপর হবে একাই ক্লান্ত।

আমি বললে;

আমি বলি,

আপনার হৃদয় আমার হৃদয়ের মতো

এতটা ব্যাকুল নয় স্বর্গের প্রেমের তৃষ্ণায়;

আপনি তো পৃথিবীর নতুন প্রেম চেয়েই বৃক্ষজ,

ও আমার প্রাণের কৌমুদী প্রিয়তমা।



শেষ পর্যায়

আপনি এ কী হিসেবে শর্ত জুড়ে দিলেন!

আমি তো সবে নিয়তির অধর চুমে এলেম;

প্রেম সে তো দূরের যাত্রায় শনি।

এখনই এভাবে যদি শর্ত জুড়ে দেন,

আমি তার ওয়াদা নেভাবো কী করে?

বলুন আমার কৌমুদী প্রিয়তমা।



ওই দূরে যেখানে ভোর হতেছে সেখানে,

লাল নিশানা উড়াতেছে সবে সূর্য;

আর আপনি এতো ভোরেই চলে এলেন,

পবিত্র বাতাসের প্রহসনে জঘন্য কালিমা শরীরে মেখে,

আমার শয়নের পাশেই বসে; হৃদয়ের

শুকনো স্বপ্নগুলো বিকিয়ে প্রেমের শর্ত প্রদানে।



অভিশপ্ত আদমজাতের প্রেমেও যদি থাকে শর্ত,

সাদা দলিলে স্বাক্ষর করেই যদি প্রেম হয় নত;

আমি তবে কখনো পৃথিবীর বয়সে

চাই নে সে প্রেম; কোনো আবেগিত উষ্ণ অনুরাগে

অযথাই; আবারো ভেবে দেখুন আমার কৌমুদী প্রিয়তমা।



উৎসর্গঃ আমার প্রাণপ্রিয়া স্ত্রী রেশমিকে



***



সুলতানা শিরীন সাজি

আমি কিংবদন্তি হবো তোমার কবিতায়!



তুমি আমাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখেছো জানলে

আমি শিশিরের সুষমা হতাম।

আগুনের শিখা হতাম।

সমুদ্রের ঢেউ হতাম।

হতাম আকাশে ওড়া পাখিদের মতন সুখী।



শুধু একবার আমার নাম লিখলে

উপন্যাসের কত কালজয়ী চরিত্রের মতন

তোমায় কবিতার আমিও কালজয়ী হতাম।



লিও তলস্তয়ের আনাকারেনিনার দুঃখকে ছাপিয়ে

আর একটা স্টেশন

আরো কিছু গভীর গোপন দুঃখ হয়তোবা আমাদের নেই।

ইবসেনের নোরা,

যার দম আটকানো অদ্ভুত এক পুতুলের মতন জীবন যাপনের ইতিহাসও আমাদের নয়।

ডল’স হাউসের শেষ দৃশ্যে নোরার চলে যাওয়া।

দরজাটার বন্ধ হওয়া।

এমন কিছু ঘটবার জন্য আমাদের কোনো দুঃখস্মৃতি জমা নেই।



তবে আমাদের আরো অনেক কিছু আছে!

আমাদের দুজনের বানানো নক্ষত্রের চাদর আছে।

আমাদের রেলগাড়ি আছে।

রেলগাড়িতে বুফে কার আছে।



(যেখানকার পুডিং তোমার ভারি পছন্দ)

আমাদের ভোরের স্বপ্ন আছে।

যে স্বপ্নে গায়ে চাদর দিয়ে দিয়ে তুমি আর আমি

শীতের সকালে চায়ের দোকান খুঁজে বেড়াই।

চায়ের কাপে চা ঢেলে খাওয়া ম্যানার্সের বাইরে

অথচ স্বপ্নে আমরা সুরুৎ সুরুৎ শব্দ করে চা খাই।

আমাদের স্বপ্নগুলোতে অনেক গাছের সমাহার।

তুমি গাছ ভালোবাসো বলে তোমাকে ডাকি ইউক্যালিপটাস।

তুমি আমার কোনো নাম দাও নি।

বলেছো তার জন্যই নাম দিতে হয় যার নামটা সুন্দর নয়!

এ কথা শুনে আমি অহংকারী ময়ূর হয়ে যাই।



আমি তোমার জন্য দূর্বাঘাসের মালা বানাই।

ঘন কুয়াশায় হাঁটতে হাঁটতে আমরা অনেকদূর চলে যাই।

আমাদের নিশ্বাসের সাথে ধোঁয়া বের হয়।

আমি সান্দ্রা বুলকের মতন সুখটান দিতে থাকি।

তুমি হাসতে হাসতে বসে পড়ো।

কত ছোটো ছোটো সুখ আমাদের পথে জমা হতে থাকে।



সান্দ্রা বুলককে আমার ভারি পছন্দ! তোমারও তাই?

ছেলেদের মধ্যে পছন্দ হ্যারিসন ফোর্ড আর রিচার্ড গিয়ার।

তোমার আরও একজন পছন্দ,

জুলিয়া রবার্টস্‌।

আমারও তাই।



আমাদের কত মিল!

আমাদের কত মিলে যাওয়া সুখ!

অথচ আমরা কত দূর!

তুমি জোনাকি হলে আমি হই রোদ্দুর।

তুমি হরপ্পায় গেলে আমি যাই মোহনপুর।



শুধু তুমি আমাকে নিয়ে যদি একবার কবিতা লেখো

আমি মেনে নিতে পারি আমাদের নির্বাসন।

আমাদের যেন আন্দামান নিকোবরে কোনো দ্বীপে পাঠানো হয়।

তুমি দিনমান কবিতা লিখবে।



আর আমি মেঘের ভেলায় ভাসাবো আমার স্বপ্নলোকের ডিঙা!



তুমি শুধু একবার নাম লিখে দেখো।

আমি কিংবদন্তি হবো তোমার কবিতায়!



***



হামিম কামাল

মখমলের মত হাত যে মেয়েটির



মখমলের মত হাত যে মেয়েটির, সে আমাকে ভালোবাসে

হাত ধরে একটি রঙিন ফটোগ্রাফ তুলেছিলাম দুজন

আজ বাদে কাল তা শাদাকালো হবে



‘আজ’-এর দেউড়ি মাড়িয়ে দিল ‘কাল’, তারপর সব শাদাকালো হলো

মখমলের মত হাত ছিল যে মেয়েটির সে আমায় সেদিনও ভালোবাসলো

শুধু ঠোঁটের কাছে আদুরে ছিল যে তিল

তা বয়েসি শতেক তিলের মাঝে হারিয়ে গিয়েছে



টিএসসি ছবির হাট ঘুরে দোর্দ- বৈশাখে

তোলা লাল টিপ কত লাবণ্যআলো ছবি

সে লাল টিপ সব কালো হয়ে গেলো



কথা ছিল-কথা ছিল নামে এক অদ্ভুত ভাষা আছে

সে ভাষায় ক্ষয়ে যাওয়া নখের আঙুল প্রেম লিখে রাখে

‘লগন মিছে বলেছিল ফাগুনের কথা,

ফাগুনের মতন এমন বিভ্রম আর নেই।’



মখমলের মত হাত ছিল যে মেয়েটির সে আমার মৃত দিনলিপির পাতায়

বহু বহুদিন পর এই শেষ কথাগুলো লিখে রেখেছিল

সেদিন ঘোর বর্ষা, বরষার ঘোর, শেষরাতে এমনই বৃষ্টি নেমেছিল



২৭/০৭/২০১৩।



***



আফ্রি আয়েশা

আপনহারা বালিকা



ঘাসফড়িঙের পিছনে ছুটো দস্যি বালিকা

থেমে গেলে!

ধরিত্রী শুনছে পদশব্দ

কিছু শ্বাপদের চোখ জ্বলছে

সর্বক্ষণ-

আড়াল যাও, লুকিয়ে পড়ো, পালাও...



রাজনীতি... অর্থনীতি... সমাজনীতি

প্রতিষ্ঠানবিরোধিতা... পোস্ট মডার্নিজম... নন্দনতত্ত্ব ...

তুমি বোঝো না... তোমায় ভাবায় না

প্রথাবদ্ধ বালিকা



নিজেকে আবিষ্কার করো

চার দেয়াল-

জায়া জননী ভগ্নি কন্যা

ছায়া-কায়া হয়ে রয়ে যাও



শৈশব কৈশোর যৌবন

পূজা অর্ঘ্য করো পুরুষ পদতলে

বালিকার আত্মপ্রসাদ



বালিকা তুমি আপনহারা-

কতকাল... কত দীর্ঘকাল...



***



ভারসাম্য

স্বপ্নঘুড়ি



দিনভর স্বপ্ন সাজাই মনের হাতে

রাতঘুমে দেখবো তাদের,

পাই না খুঁজে।



ঘুম ভাঙে, নতুন করে স্বপ্ন শুরু

আগের মতোই মনের হাওয়ায় ইচ্ছেঘুড়ি।



ইচ্ছে সুতোয় বাধ্য হয়ে

ঘুড়ি ওড়ে মনের পাখায়,

আগের মতোই।



সুতোটা আবার কাটে আরেক ঘুমে

ঘুড়িটাও কই চলে যায়, আর দেখি না।



জেগে দেখি সুতো-নাটাই হাতের মুঠোয়

নতুন এক ঘুড়ি জুড়ে দেই উড়িয়ে।





***



ইসতিয়াক অয়ন

অর্বাচীনে অবগাহন



ভোর হতে চলেছে এখন...

অন্ধকার কেটে যাবে। আচ্ছন্ন শুভ্রতায় ভরে যাবে পৃথিবীর মন

সব ব্যথা-গ্লানি-দুঃস্বপ্নেরা ঘুম ভেঙে মুছে যাবে আর

শিশির ঝরার মতো নিঃশব্দে ঝরে যাবে কান্না আমার

আকাশের কালো রং ছিঁড়ে খাবে নির্বাক হলুদ সূর্য...



আবারো আসবে নব ভোর-

নতুনের ছোঁয়া পেয়ে কর্পূরসম উড়ে যাবে বৃষ্টি-ঝড়।

শিশুরা সকাল হতে উদোম তনুতে কাদা মেখে যাবে খেলে

সেই খেলা শেষ হবে তাদের খেলার তৃষ্ণা শেষ হয়ে গেলে।

শুভ্র সংবাদপত্রে রবে না কালো দাগ কোনো লাল শিরোনাম,

ফি-দিন যাবে না বেড়ে উদর শান্ত করা খাবারের দাম,

ফুটপাথে রবে না পড়ে শ্রান্ত ঘুমন্ত মানুষের দেহকঙ্কাল,

স্ট্রিটল্যাম্পের সোডিয়াম নূরে কোনো ক্ষুধার্ত শিশু আর ফোলাবে না গাল।

রবে না কাহারও মনে দৈহিক দুঃখ; - সব বিবর্ণ পাতা

ঝরে যাবে। সবার হৃদয়ে শুধু রবে ‘প্রেম’ নামে এক অদৃশ্য অদ্ভুত ব্যথা!



বদলাবেই বাঁধাধরা ছক,

ছুটে চলা জীবনের এক গতি এক স্বপ্ন ছিঁড়েফেড়ে জাগবে নূতন কোনো শখ।

এনড্রিন খেয়ে কেউ বিসর্জনমাল্য দিতে যাবে না আর সমুদ্রের জলে

বোতলের কাঁচভাঙা বিষ দ্রুত মিশে যাবে সমুদ্র অতলে।

সমুদ্রমন্থিত অমৃত বিক্রিত হবে মুদিঘরে আর গরল হারাবে তার তত্ত্বতাবাস-

ক্যান্সার-এইডস যত মারাত্মক ব্যাধি আছে তাও হবে ধুলোবন্দি নীল ইতিহাস

হাতের মুঠোতে রবে স্বাধীনতা। লুপ্ত হবে ‘পরাধীন’ শব্দটা বইপত্র হতে

দুর্নীতি-দুঃশাসনের দশচক্র ভেসে যাবে বিস্তীর্ণ অর্ণব-স্রোতে।

ভ্রূণহত্যা হবে না আর, স্থানাভাবে মৃত্যু হবে না তাদের-

জনসংখ্যা বৃদ্ধি হবে পুঁথিগাঁথা- কারণ, সমগ্র ছায়াপথই একদিন হবে আমাদের!



স্বপ্ন দেখার সময় এসেছে এখন,

যান্ত্রিক শব্দময় শহরের মানুষগুলো বদলাবেই নিজেদের মন,

আপন স্বার্থ ভেঙে পরের জন্যে দেবে সাত-সমুদ্র পাড়ি-

মানুষ বিভেদ যাবে ভুলে, রোবটেরাই দেবে শুধু পরস্পরে আড়ি!

একুয়াস হিউমারেরও রবে না সে মানুষের কোনো প্রয়োজন...



***



রাইসুল নয়ন

মার্জিনা



মানবের রূপে বহুরূপ, এই সুখ এই অসুখ!

স্বেচ্ছায় পঙ্গুত্ব মেনে নেয়া ভিখিরি,

জানে না কতকাল আর করবে ভিক্ষেবৃত্তি!

অনেক যে হলো রঙ্গতামাশা!

দরিদ্ররা যেন বৃদ্ধা পতিতার চুলের উকুন,

ভাড়াটে বানরে টিপে মেরে খায়, উল্লসিত দুপুর।



কিছুই পেলো না, সে যে স্বেচ্ছাপঙ্গু!

পা কেটেছে পেটের দায়ে!

একমুঠো ভাত খোঁজে, অনাহারী মেয়েটা জ্বরে মরে!

ঔষধ কেনার টাকা তো চায় নি, মরুক, মরে যাক!

দু মুঠো ভাত অন্তত মুক্তি পাক।

ঝুম বজ্রে বিধাতার ঘুম ভাঙ্গুক, বুঝুক মানুষও বিধাতা হতে চায়!



কষ্ট কেয়া মার্জিনার চোখ চেয়ে বিলাসী শকুনেরা দেখুক-

তারও রাজকন্যা হবার ইচ্ছে আছে!

তারও ইচ্ছে হয় বাবা চুপি চুপি গভীর রাতে

ঘুমের ঘোরে হাত বুলিয়ে দিয়ে যাবে মাথায় কপালে!



মার্জিনারা মরুক, মার্জিনারা মরে যাক,

ওদের আত্মা বিধাতা, মৃত্যুই বেঁচে থাকা!

অনাকাঙ্ক্ষিত ভালোবাসায় তারা অনাকাঙ্ক্ষিত আদমশুমারির খাতায়!

মার্জিনারা পথে ঘাটে মরে, আগুন কাঁদে–

সামাজিক খুনি হবার অন্তঃক্ষমাপ্রবণতায়।

‘মানবতা’ শব্দটা নিয়ে এতো আয়োজন, এতো পরিকল্পনা?

কোথাও কি লেখা ছিল না, খেতে না পেলে মানুষ বাঁচে না!

সুশোভিত পোশাক না হলেই সে নীচুজাত, ছোটলোক?

আলঙ্কারিক পোশাকের আড়ালে কখনই কি সাধ জাগে নি–

আজ অন্তত একজন মার্জিনা জানুক, কুকুরবতা,

কুকুরবতা আর মানবতা একই মুদ্রার এপাশ ওপাশ!



মার্জিনা, মার্জিনাদের মৃত্যুই যেন সান্ধ্যিক আড্ডায় গল্পছেদহীনতা!



একটা রাত, শুধু একটা রাত গা এলিয়ে দিও দারিদ্রিক সুখ প্রত্যাশায়!

অনুভব করে নিও, প্রতি ফোঁটা রাতে,

মা-হীন মেয়েটাকে ছারপোকাতে খায়!



তবুও মার্জিনারা বেঁচে থাকে পথশিশু শব্দের উদাহরণে,

মার্জিনারা বেঁচে থাকে, দেখতে একরকম হলেও তারা মানুষ নয়,

এমন হাজারটা অভিমান বুকে চেপে।



***



রাবেয়া রব্বানি

হেরে যাওয়া মানুষের বিবৃতি



(১)

তাজমহল রোডের মোড়ে এইমাত্র একটি পাগলকে দেখতে পেলাম,

কী যেন বিড়বিড় করছে।

কাছে যেতেই আকাশের দিকে হাত উঁচু করে বললো, হেয় পাইছে কী?

আমি তাকে পাঁচ টাকার ঝকঝকে একটা কয়েন দিলাম,

তাকে চক্রাকারে ঘুরে দেখলাম,

ময়লা শতচ্ছিন্ন পোশাকের পিঠে হাত রাখলাম।

সে তবু নির্বিকার।

হঠাত্‍ আমার পিঠেও এক পথচারী হাত রেখে বললো, ভাই সময় নষ্ট করে লাভ কী?

আমি পাগলটাকে পেছনে ফেলে নূরজাহান রোডে ঢুকে পড়লাম।

মনে মনে বললাম, হ্যাঁ, তাই তো। কিছু কষ্টের পুনর্বাসন নেই।



(২)

লিখতে বসলেই আঙুল থেকে সার্চলাইটের মত আলো পড়ে কাগজে

লিখে ফেলি ভাগ্যের হাতে হেরে যাওয়া কিছু মানুষের বিবৃতি.

ভাবলেন,

হাওয়া এসে টুটি চেপে লিখিয়ে দিয়ে যায়?

না তো!

সবই উনার বদান্যতা!

মূল গল্প মূলত ঈশ্বরেরই লেখা



***



অরুদ্ধ সকাল

যে কথা বলা হয় নি



-নীল; তুমি কচুরিপানা দেখেছো?

ভরা পানিতে কেমন ভেসে থাকে;

রমণীরা আলতো ছোঁয়ায়

তাকে কাছে টেনে নেয়; তাকে সৌন্দর্যের এক ভাস্কর্য

মনে করে কেউবা নানা উপমায় সাজায়;



কিন্তু সে ফুল কেউ অন্দর মহলের শোভা বর্ধনে সাজায় না।

ওরা খুব জোড়া বেঁধে থাকতেই ভালোবাসে;

একা থাকতে চায় না।

-নীল, আমি সেই কচুরিপানার মতোই

নিপুণ হাতে গড়া জীবন্ত ভাস্কর্য

যার ভেতরে আনন্দ আছে, ব্যথা আছে,

বিবর্ণ হবার আকাঙ্ক্ষা আছে; কিন্তু প্রেম নেই।



যার বুকে ভালোবাসাই নেই তাকে কি ভালোবাসা যায়, বলো?



-নীল, আকাশের সীমানা যদি মেপে ফেলা যেতো,

তাহলে তাকে অসীম বলার কিই বা প্রয়োজন থাকতো, বলো?



আমি অথৈ গভীরতা সমান আনন্দ বুকে নিয়ে বসে আছি;

যদি চাও তো নিতে পারো পাহাড় সমান।

-নীল, দেয়ালিকার মতো সাদা কাগজ রেখেছি বুকের এই মাঝখানে

তুমি এঁকে চলো যেমন খুশি তেমন, আমি বাধা দেব না।

হাতের তালুতে রেখে দিয়েছি আঁকাবাঁকা এক নদী;

সেখানে আমার ভাগ্যদেবতা রোজ লুকোচুরি খেলে।



তোমার পূর্ণ চোখ মেলে দাও এই ভাগ্যরেখার বালুচরে;

পাবে অনন্ত দিগন্ত; তূষারপাত; টানা বারান্দার কথোপকথন;

কিন্তু সেখানে একবিন্দু প্রেম তুমি পাবে না!



২ ফেব্রুয়ারি ২০১১, সুসং দূর্গাপুর



***



সকাল রয়

তোমাকে না লেখা চিঠি



প্রিয় মিলি,

গতকাল রাতের অসম্পূর্ণ কল্পনায় হঠাৎ ঘুমহীন হয়ে গিয়েছিল আমার চোখ,

ঘুমচোখ নিয়ে সেলফোনে হাত রাখতেই দেখি

ইনবক্সে অচেনা এক চিরকুট!

চোখ বুলিয়েই বুঝতে পেরেছি তোমার পাঠানো।

অনেকগুলো মাস পেরিয়ে নতুন নম্বর থেকে তোমার চিরকুট!

ভেবেই আমার চোখ জুড়ে দুর্দান্ত উচ্ছ্বাসের ঢেউ!



তিনদিন পেরিয়ে গেল,

মেঘালয়ের কুয়াশা সাদা রুমাল আর সরছে না।

সোমেশ্বরীর স্বচ্ছ পানিতে মাছেরও দেখা নেই!

তবুও পাথর কুড়ানির দল থেমে নেই! জীবন তাদের চলছে!

তোমার চিরকুট পড়বার পর মনে হলো সব ঠিকঠাক চলছে;

শুধু আমিই পারছি না।



তোমার পাঠানো চার-চারটি চিরকুট

যেন ছোটোখাটো একটা চিঠির মতো মনে হলো।

জানতে পারলাম ঘর-সংসার, নতুন অতিথি, বাড়ির ছাদ আর

বাসন মাজার মহারানি হয়েই কেটে যাচ্ছে তোমার সোনালি দিনগুলো।

অথচ-

তুমি একদিন স্বনির্ভর হবার স্বপ্ন দেখতে;



তুমি লিখেছ, নরম তুলতুলে হাত দুটোতে পাথরের মতো

অসমান কোনো চর জেগেছে, যেন অদৃশ্য কংক্রিট!

আলসে ভরা সেই সব ঘুমে ভরা দুপুর

তোমার মুঠোতে এখন এনে দিয়েছে হাজার রকম কাজ আর কাজ,

দিনকে দিন হারিয়ে যাচ্ছে তোমার বৈভব।



মিলি,

ভুলে থাকার আরেক নাম অভিমান!

আর সেই অভিমানকেই পাশবালিশ ভেবে জড়িয়ে আছো তুমি।

তোমার মতো-

মেঘালয়ের পাহাড়গুলোও যেন আজকাল অভিমান করে আছে,

তার গায়ে জমে থাকা মেঘগুলো, অবচিত।

তিলতিল করে জমে থাকা অভিমান,

তোমাকে ছেড়ে আমাকেও গ্রাস করে নিচ্ছে ক্রমশ,

তাই বোধ হয়-

চোখের উত্তাপে কাছের সম্পর্কগুলোতে ছড়াচ্ছে ম্লান হবার পূর্বাভাস।



তুমি জানতে চেয়েছ ভালো আছি কিনা।

মিলি, ভালো থাকা এখন ততটাই কঠিন, যতটা কঠিন ভুলে থাকা!

ভালো থাকার আশায় সিগারেট ছেড়েছি,

জায়গা বদলেছি, ঘর-দুয়ার, সঙ্গ সব ছেড়েছি

নিজেকে রুটিন মাফিক বেঁধে ধরেও

ভালো থাকতে পারি নি; হয়ত পারবো না।

নিমাইদা’র মেমসাহেব কিংবা গোধূলিয়া পড়তে গেলেই কান্না আসে,

আমারও মাটি সরে যায় পা থেকে,

যন্ত্রণা আরো বেড়ে যায় এরিখ সেগালের লাভ স্টোরি পড়লে।

রানিখংয়ের গির্জা, ছিমছাং নদী, রামকৃষ্ণ মঠ সবকিছুর সামনেই

মিথ্যে অভিনয় করে ভালো থাকার চেষ্টা করি।

গঙ্গাসাগর, পালোলাম সৈকত কিংবা ঝাড়খণ্ড

কোনো কিছুতেই পা আর চলে না যেন সব অশ্রেয়!



আমার মতো অক্ষরজীবীদের চোখে অশ্মরী জন্ম নেয়

আর জানতে ইচ্ছে হয় তুমি ভালো আছো তো?

তুমি হয়ত বলবে ভালো-খারাপ থাকাটা নিজের কাছে,

হয়তোবা তাই! কিন্তু নিজেকে কার কাছে রাখবো বলতে পারো?

আমার ভালো থাকা আর আকাশ দেখা এখন সমান কথা।





তুমি লিখেছ মাঝে মাঝে আমাকে ভাবলে তোমার মন মেঘ হয়ে যায়,

জানতে চেয়েছ তোমার মতো আমারও এমন হয় কিনা।

সূর্যের মতো সত্যি এই যে, নন্দিত হতে গিয়ে আমি বোধহয় তোমার কাছে

নিন্দিত হয়ে গেলাম,

নিন্দিত হয়ে পুরোনো কথা ভেবে কী হবে?

সেসব কথা ভেবেই না মনকে মেঘ করো না।



কেউ হয়ত জানবে না কোনোদিন, হয়ত আমি আর

খোলা আকাশ জানবে মন খারাপের কথা।

জানবে আমার ভাবনাতেও বিরহের তুলির আঁচর পড়ে,

বিরহী সুর বাজে; করুণ বিউগলের সাথে সাথে কেউবা সেখানে মার্চ করে বেড়ায়।



আমাদের ফেলে দেয়া সোনালি সে সময়কার সব স্মৃতির পাতায় আজ বন্দি।

নিজেকে হ্যাংলাটে মনে হয়,

আজকাল তোমার মতো কারো মুখায়ব দেখলেই ছুটে যাই,

সেই খরগোসের মতো দাঁত, সেই হাসি

এই বুঝি তুমি!

এখন জীবনের সোনালি দিন খুইয়ে পাথর যুগে এসে গেছি।

পাথরের ভারে চোখ মেলতেই যতো যন্ত্রণা।



প্রতি মুহূর্তেই সময়ের দাসত্বের অনুবর হয়ে যাচ্ছি

ভালো কিংবা ভুলে থাকার চেষ্টায় ক্রমাগত পরাজিত

হবার শঙ্কায় ভুগছি।

তুমি ভেবে নিও মুদ্রার এ পিঠের মতো জীবন হলেও আমি ভালো নেই;

একটু একটু করে বিক্রি হয়ে যাচ্ছি সময়ের কাছে।



মিলি, জানি না কেন তোমাকে

খুব গভীরে, খুব গোপনে লোকচক্ষুর আড়াল করেছিলাম;

তবে মনে হতো তুমি যেন আমার পিদিম;

এ আলো শুধু আমার একার।

তোমাকে নিয়ে কোনোদিন কিছু লেখা হয়ে ওঠে নি





শুধু অচল পয়সার মতো করে লুকিয়ে রেখেছি বুকের পাশ পকেটে

আজ শুধু বলবো, মৃত্তিকার মতো আনন্দ তোমার মুকুট হোক;

যা আছে সুখ আমার তোমাতে মিশে যাক,

তুমি কুসুম্ভরানি হয়ে থেকো,

তোমার পৃথিবীতে,

তোমার গহিনে।



****

রচনাকাল:

১৯ জানুয়ারি ২০১৪

সুসং নগর। উইলকিংসন রোড।



***



মানসী

স্বাদ হীন মোড়কে



রঙিন মোড়কটি ছিল স্বাদহীন-

কারণ, তার ভিতরে কোনো খাবার ছিল না।

ছিল না বলা ভুল

ছিল, ছিল, প্রচুর খাবার ছিল-

কিন্তু ফুরিয়ে গেছে।

ফুরিয়ে গেছে তার সমস্ত খাবার।

শুধুমাত্র পড়ে আছে স্বাদহীন তার দলিত দেহটি।



সে ভেবেছিল বুঝি ফুরাবে না

ফুরাবে না তার সমৃদ্ধিময় অন্দর মহলটি-

আশ্চর্য স্পর্ধা তো তার ভাবনার!

তার ভাবনা কি বোঝে নি-

খাবার সমৃদ্ধ মোড়কটিকে তৈরি করা হয়েছে

শুধুমাত্র সকলের লোভ-লালসা তৃপ্তির জন্য।

কিন্তু হায়! এতো দ্রুত ফুরিয়ে গেলো!

ফুরিয়ে গেলো তার সমস্ত খাবার।

তার চাকচিক্যময় দেহটির মতো স্বপ্নকে টুটিয়ে দিয়ে।



যারা তাকে বোঝে না,

বুঝতে চায় না তার স্বপ্নকে,

একদিন তাদেরই জন্য সে তার স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়েছে।

বিলিয়ে দিয়েছে তার ভালোলাগাকে, তার সৌন্দর্যকে।

এখন নিজের এই মহানুভবতাকে সে নিজেই মেনে নিতে পারে না।

কারণ সে মহান হতে চায় নি কখনো।

সে চায় তার পরিপূর্ণ নাভিকেন্দ্রসহ বহিঃসৌন্দর্যটি।

সে চায়, সত্যিই চায় নিজেকে সমৃদ্ধ করে উজ্জ্বল হতে।

তবে সকলের জন্য নয়, শুধুমাত্র নিজের জন্য।

ওগো, তোমরা তার এই স্বার্থপর চাওয়ার কথা কি কেউ শুনবে না ?



***



মাহমুদ০০৭

স্বাধীনতা



স্বাধীনতার কালা পানি খাইতে গিয়া

মইরা গেছে বহুত মানুষ।।

লুকমানে কয় জায়গা-জমি, আমার পুলা,

হাত, চোখ, ট্যাঙ সবডি গেছে

মাগার আমার সার্টিফিকেট

লইয়া ভর্তি হইছে সদুর নাতিন।

চাকরি গিলছে লুফার জাফর।।

ঐ মান্দার পো

তরে পাঠাইছে কোন হালায়?

কী ব্যবসা আমার সনে?

আমার ভাতা কই?

কম্বল কই?

আমি সাক্ষাৎকারের মায়রে...।

আমি চ্যানেল ব্যবসার মায়রে...।



আমি কী বলবো?

কী বলবো আমি?

আমি কি বলবো

রুদ্রের মতো

জাতির পতাকা খামচে ধরেছে বুনো শকুন?

নাকি শকুনেরা শবদেহ টানাটানি করে?

নাকি

আমার স্বপ্নেরা ধর্ষিত হবার পরও

নাকি সুরে মঞ্চে বলবো

স্বাধীনতা তুমি রবি ঠাকুরের অজর কবিতা, অবিনাশী গান?

নাকি বলবো

আসুন চাচা!



খুলে বসি

স্বাধীনতা বিক্রয় প্রাইভেট লিমিটেড!!

অথবা চ্যানেলে চ্যানেলে

দাঁতাল-শুয়োরের মতো মস্ত ঘাড় নেড়ে বলবো

স্বাধীনতা তুমি বসুন্ধরা সিটি,

স্বাধীনতা তুমি কেএফসি চিকেনের

অবারিত সুখ,

স্বাধীনতা তুমি দখলি নদীনালা খালবিল জায়গাজমির

শিল্পিত নান্দনিক রসনা তৃপ্তি!!!



এভাবে আরো অনেক কথা

প্রতিটা হতাশ রক্তকণা

বলতে চায়।

বলতে চায়

তোমাকে পাবার জন্য হে স্বাধীনতা

আমাকে আর কতটা কী করতে হবে?

আর কতটা কী করলে

লুট হয়ে যাওয়া সুন্দর স্বপ্নগুলো

নগর-গ্রামে প্রতি নীড়ে ফিরে আসবে?



আমি কিছুই বলতে পারলাম না।

অথবা বলতে ইচ্ছেই হলো না!!



***



ৎঁৎঁৎঁ

বেনিয়া বিশ্বে সবাই বেশ্যা!



এই বেনিয়া বিশ্বে আমরা সবাই বেশ্যা!

কেউ যোনি- কেউ মন, কেউ বুদ্ধি- কেউ শ্রম।

এখানে সবই পসরা সাজিয়ে অপেক্ষায় থাকে,

এখানে সবাই যার যার সাঁঝে,

বিশ্রামের সূর্যটুকু নিভিয়ে দিয়ে এক ফুঁয়ে

অবলীলায় মেলে ধরে-

শরীরী ও অশরীরী কামের নির্লজ্জ বিপণিসম্ভার!

এখানে সবকিছু বিক্রয়যোগ্য হতে হবে,

এখানে সবার সব কিছুর বিনিময়মূল্য থাকতে হবে!

বহুদূর হেঁটে আসা একবিন্দু হিম জল-

সেও তার পাওনা মিটিয়ে নেয় একবুক তৃষ্ণার দামে,

এখানে প্রতি আউন্স আনন্দের বিপরীতে-

ভারনিয়ার স্কেলে মেপে দিতে হয় চুলচেরা দুঃখের গতিপথ!

এখানে আবার কেউ কেউ কখনও কখনও-

আকাশের সুনীল স্বপ্নে ধোঁকা খেয়ে দুঃখের বিনিময়ে দুঃখ কিনে ঠকে যায়,

দিগ্‌ভ্রান্ত দেউলিয়া অভিমানে ঘুরপাক খেতে থাকে সুতোছেঁড়া ঘুড়ির মতন!

এখানে ভালোবাসার বিনিময়ে ভালোবাসা জরুরি নয়,

প্রকৃত লক্ষ্য সম্পর্ক, তাই একটা প্রস্তাব আর একটা সম্মতি সম্মেলনেই-

এখানে সঙ্গম কিনতে পাওয়া যায়, সন্তান দামে অমরত্বও বিকোয় একই হাটে।

এখানে সবই পণ্য, চটকদার বিজ্ঞাপনী মুখোশে কামিনী মোহিনী বিলবোর্ডের মেলা,

চামড়ার আবরণ ভেঙে সত্যকে নগ্ন করবে যে উত্তাপ,

তাও নাকি সিএনজির মিটারে গুনে গুনে বিক্রি হয় একলা ল্যাম্পপোস্ট নিরালায়!

এখানে যা কিছু যত পবিত্র ঘোষণা, তার অনুচ্চারিত কোটরে ততই বিনীত পাপাচার!

এখানে যা কিছু যত মহান প্রতিশ্রুতি, তার নিগূঢ় কেন্দ্রে কেবল বাণিজ্যের অধিবাস!



এখানে সত্য অধিষ্ঠিত নয়, প্রতিষ্ঠিত হয়!

এখানে সত্য সহজাত নয়, তাই সত্য যা সুবিধাজনক!

স্বয়ং ঈশ্বর যেখানে স্বর্গ আর নরকের দাঁড়িপাল্লায় বিকিয়েছেন নিজের স্বাধীনতা,

সেখানে মানুষ তো শুধুই বিনিময়, যদি দামে না পোষায়-

স্রষ্টাও ফেলে ছুঁড়ে, যদি শর্ত না মানো- প্রেমিকাও দেয় প্রত্যাখ্যান!

তবুও দোষ কেবলি টানবাজারের মাগিদের!

সভ্যতার যত পতিত জঞ্জাল-ক্লেদ-পুঁজ-মধুঘাম,

কিনে কিনে তোমাদের সমাজে ওরা বেঁচে শান্তি, ওরা সাজায় নির্বাণ!

দৌলতদিয়া আর বানিয়াশান্তার খানকিপাড়াগুলো প্রকৃত অর্থে-

তীর্থ যদি কিছু থাকতো তোমাদের, তবে ঠিক তাই!



***



স্বপ্নচারী গ্রানমা

শ্রেষ্ঠতম কবিতা অথবা নারীর শরীর...!



শ্রেষ্ঠতম কবিতা বলে কিছু নেই

যেমন প্রতিটি নারীর শরীর!



কুন্তল কানন হতে যুগল চরণ

মাঝে প্রতিটি বাঁক,

প্রতিটি মোহনা,

প্রতিটি আঁধার,

প্রতিটি জোছনা।



প্রতিটি সন্ধ্যায় আমি সমান মাতাল,

প্রতিটি রাতের মৃত্যু সমান বাসনা

সমানভাবে,

বিদ্ধ করে

ঋদ্ধ করে

এ সাহারা হৃদয়!



***

মোঃ ইসহাক খান

অভিযোগ



আমি অভিযোগ করবো না।

অভিযোগ করতে আসি নি।

অভিযোগ করা আমার মানায় না।

অভিযোগ করতে আমি জানি না।

অভিযোগ করার অধিকার আমায় দিয়েছিলে কোনো একদিন,

আমি নিই নি।

হয়তো আমার ভুল ছিল!



তাই বলবো না আমায় কষ্ট দিয়েছ,

বলবো না উপেক্ষা করেছ ইচ্ছেমত।

বলবো না, আমায় অপেক্ষায় রেখে করেছ ব্যস্ততার ভান।

বলবো না, আমি তোমায় রেখেছিলাম সবার আগে, সবার চেয়ে যত্নে,

আর তুমি? আমায় রেখেছিলে সবশেষে, সবাইকে দিয়ে-থুয়ে,

অনুভূতির আস্তাকুঁড়ে! কী নিদারুণ অপমানে!

বলবো না, তুমি ছিলে আমার জন্য মহামূল্য উপহার,

আর আমায় তুমি বিবেচনা করেছ এক অপ্রয়োজনীয় কিছু,

এমন এক বোঝা, যাকে নামিয়ে রাখতে পারলেই যেন বেঁচে যেতে।

বলবো না, আমি তোমার সব বুঝে নিয়েছি,

আর আমার অনুভূতিকে তুমি করেছ বিদ্রূপ।

বলবো না, আমি সবসময় ছিলাম তোমার জন্য,

তোমার থাকবার সময় হয় নি।

বলবো না, আমি তোমার সব কথা শুনেছি,

আর তুমি মেতে থেকেছ নিজেকে নিয়ে,

আমি কেমন আছি, শুধোবার সময় তোমার হয় নি।

বলবো না, আমি তোমার সব কষ্ট নিজের বুক পেতে নিয়েছি,

তুমি হয়েছ শুধুই সুখী, স্বার্থপরের মত।

বলবো না, তোমার সব বেদনা কাঁধে হাত রেখে আমি হালকা করেছি,

তুমি কখনো জিজ্ঞেস কর নি, আমার দুঃখ হয় কি না।

বলবো না, নিয়েছ অনেক, আমার ঝুলি করেছ খালি!

বলবো না, তোমার জন্য সবসময় রেখেছিলাম উষ্ণ আশ্রয়,

আর তুমি দিয়েছ নিষ্ঠুর শীতলতা।

বলবো না, তোমার আবেগের আতিশয্য আমি হাসিমুখে সয়েছি,

আর আমার জন্য মমতার বদলে ছিল অভিমান।

বলবো না, তোমার মুখের হাসির জন্য কত কিছুকে উপেক্ষা করেছি,

ছেড়েছিও অনেক কিছু!

আর তুমি? আমার মুখ ভার দেখেও তুমি দেখো নি!

বলবো না, নাক উঁচু এই তোমার ধারণা ছিল,

কষ্ট শুধু তুমিই পেতে পারো, আমি নই।

বলবো না, তোমায় অনুভব করেছি সর্বক্ষণ,

আর তুমি? আচ্ছা, থাক, বলবো না!

বলবো না, আমি বুঝি, আর তুমি বোঝো না।

বলবো না, আমি দিয়েছি, তুমি দাও নি।

বলবো না, তুমি থেকেও ছিলে না,

পাশে দাঁড়িয়েও আমায় রেখেছিলে বড্ড বেশি একা।

বলবো না, আপনজন হয়েও আমায় পর করেছিলে,

কোথাকার কাদেরকে খুব করে আঁকড়ে ধরেছিলে।

বলবো না, আমি হাত বাড়িয়েছি বলেই করেছিলে অবহেলা,

আর তোমার কষ্টে যাদের কিছু যায় আসে না, তাদেরকেই টেনেছ কাছে!

বলবো না, খুব কাছে দাঁড়িয়ে থেকেও আমার নিশ্বাসের

গুমোট কষ্টটা তুমি ধরতে পারো নি।

বলবো না, বিভ্রমের জগতে দাঁড়িয়ে বুঝতে সবসময় ভুল করেছ,

আমিই আসলে ছিলাম, ওরা কেউ নয়।

বলবো না, সবসময় যা ইচ্ছে চেয়ে নিয়েছ,

কখনো ভাবো নি, আমারও চাওয়া থাকতে পারে।

বলবো না, অন্য সবার জন্য তোমার দৃষ্টি ছিল,

আমার জন্য ছিলে তুমি অন্ধ!

বলবো না, অন্য সবার জন্য তুমি ছিলে মুখর,

আমার জন্য ছিলে মূক।

বলবো না, অন্য সবার কথা শুনতে তুমি ছিলে অধীর,

আমার জন্য ছিলে বধির।

বলবো না, আর সবার জন্য আগে আগে এগিয়ে গেছ,

আমায় পেছনে ফেলে।

বলবো না, আর সবার জন্য ইমারত রচনা করেছ,

আমার জন্য রেখেছ পুরোনো এক সমাধি মাত্র, কোনোরকমে!



বলবো না কখনোই, বলবো না।

বলেছি না, অভিযোগ করা আমার দ্বারা হবে না!

২৬ নভেম্বর, ২০১৩



***



মাঈনউদ্দিন মইনুল

টেক্সট মেসেজ সিনোপসিস



সাক্ষাৎ হলেই নীলা বলতো:

তোমাকে গতকাল অনেক মিস্ করেছি

ফোন দিয়েছিলাম, রিং হলো বার বার

কিন্তু তুমি ধরছো না, কেন ধরো নি?

তুমি কি আমাকে মিস্ করো নি? কেন ধরো নি?

তোমার সাথে আড়ি; কেন ধরো নি?

তুমি কি আমাকে মিস করো নি?

তোমাকে না পেয়ে টেক্সট করেছিলাম

বলেছিলাম, মিসিং ইউ...

অপেক্ষা করেছিলাম তোমার রিটার্ন টেক্সট-এর;

তুমি কি আমাকে মিস্ করো নি?



তারপর কেটে গেলো কিছু ঝঞ্ঝাটময় সময়

বিয়ে হলো আমাদের

গড়ে উঠলো লাল-নীল সংসার।

নীলা হলো গৃহিণী, আমি হলাম চাকুরে।



তারপরও কিছুদিন চললো আমাদের

পরস্পরকে মিস্ করাকরি, টেক্সট করাকরি।

কাটিয়ে দিলাম আরো কিছু সংসার-বিক্ষুব্ধ সময়:

এবার শুধু আমারই

মিস্ করার পালা

এখন আমাকে মিস্ করে না নীলা

কল করে না, কলব্যাকও করে না।

কিন্তু টেক্সট করে,

আলু-পেঁয়াজ কিনে নেবার জন্য।



***



জুন

গাংচিলের ডানায় ভেসে আসা বাসন্তী সুবাস



এরপরও কি আছে এমন আকাশ!

সুর্যাস্তের সমুদ্র সমতল বালুকাবেলায়,

রেশম-নরম বুকওয়ালা সাদা গাংচিলেরা

নেচেছিল কি কোনো ভাটা আর জোয়ারের তালে?



মাতাল হাওয়ায় পাতাদের শনশন

যেখানে বয়ে চলে পৃথিবীর বাসন্তী সুবাস

রয়েছে নীলাভ দূরদূরান্তে এক প্রলুদ্ধ

রহস্য-জগৎ, যেখানে বুকের মাঝে

সবুজ বীজ আগলে রাখা হলুদ সূর্যমুখী

মুখ তুলে রক্তাভ সুর্যবন্দনায় ব্যস্ত



যেখানে পাখিদের উড়াল দেয়ার এক মহান উচ্চতা

যার পানে উন্মোচিত হয় শূন্যতাভরা

আলোকময় বিশ্বের। পেঁজা তুলোর মতো

ভেসে যাওয়া ধূসর মেঘ দাঁড়িয়ে যায়

অকস্মাৎ, স্তব্ধ হয়ে শোনে গভীর সংবেদনে

কম্পমান পাতার হিল্লোল



সুদূর থেকে ভেসে আসে কোনো এক

রাখালিয়া বাঁশির সুরের কাঁপন

ডালে ডালে অদৃশ্য এক উদ্দীপ্ত যৌবন,

মৃদু ফিসফিস আর মাঝে মাঝে কার জন্য

মন কেমন করা এক সুদীর্ঘ দীর্ঘশ্বাস



তাদের কাছে রেখে এসেছি আমার শৈশব

যেন এক রঙিন মায়াবী কাচের টুকরো

যেন আলগোছে ধরা কারো নম্র করতলে

যেন এক স্বতন্ত্র সঙ্গীতময় প্রাণ নানা সঙ্গীতে

বেজে ওঠে স্রোতস্বিনীর অবিরাম জলকুন্তলে



***



অন্য কথা

ভালোবাসার হিসাব-নিকাশ



ভালোবাসা পোড়ে ভালোবাসার আকালেই

পোড়ে কবিতা মন। শব্দরা কষ্ট হলেই

কেটে যায় ভালোবাসাহীন প্রতি প্রহর

আশ্চর্য!

তোমার জন্য কবিতা লিখবো বলেই ভালোবাসতে চেয়েছিলাম।



ভালোবাসা কি এখনো বোঝো না নারী? নাকি

আমিই বুঝি না এসবে হিসাব-নিকাশ

তাই বলে থাকা একাকী, ভালোবাসাহীন

অসম্ভব!

তোমাকে পাবো বলে একাকী হেঁটে এসেছি জীবনের এতটা পথ।



***



পান্থ বিহোস

দুঃখগুলো শেয়ার করি, কষ্টে মেতে রুবাই পড়ি...

এক ডজন রুবাইয়াত



১. নিশির্শন

বন্যমেলা রাতপ্রহরী কথায় আঁকো রেখা

দোজাহানের বেশ্যাকবি তোমার কাছে শেখা

ক্লাস্টেরেতে শান্তি ভরা; রোদন ভরা মায়ায়

দুঃখগুলো হয় পতিতা কবির কাছে শেখা।



২. তোমার মতো, প্রিয়তা

স্বপ্ন দেখি মন উতলা বেশ্যাভাবী প্রহর

প্রেমের বলি ভালোবাসা কিনেছি এক শহর

জীবন মায়ায় শহর ঘুরে শহর দিলাম তোরে

স্বপ্ন উধাও তার অতলে আমার বুকে কহর।



৩. নৈশপ্রেম ইকুয়েল ইজ নাথিং

কবিতারা খেয়ালখুশি হাঁটেন আপন মনে

নাব্য নদী যায় না রাখা সস্তা প্রহসনে

হচ্ছে না প্রেম বিক্রিতে তাই লাগাম টানো জোরে

নদী-মেয়ে ঝলসানো ভয় ভঙ্গ দিল রণে।



৪. ঝলসানো মেঘ

মোনালিসা খেয়াল ছাড়া কাপুরুষের ফ্যান

দোজাহানের অভিজ্ঞতা বিক্রি করে দ্যান

বিক্রিতে সে বান্ধা রাখেন যা খুশি তা সব

অপরূপা বিলিয়ে দ্যান অনাঘ্রাত হাইমেন!



৫. দর্পণসু

অভিজ্ঞতার শূন্য ঘরে বিক্রি করে মন

ষোলকলা পূর্ণ করেন বিদায় বেলায় পণ-

বৈশাখি পণ খেয়াল শূন্য মন মেতেছে যার

হারিয়ে হাসেন বোকা সে; ফেরানো ধন।



৬. খেলাপি জল

সুর তুলেছে সুর তুলেছে অষ্টরবির মন

অপূর্ণতা মাতিয়ে রয় হৃদয় ভাঙা ক্ষণ

কামুক নারী নিলাম করে বিজ্ঞাপনী সুর

অভিসারে গোপন রবে নিলামকারী ধন।



৭. অনুর্ণনা

সোনালি সুর বর্ণালি মেঘ আঁধার রাতে পেয়ে

কষ্ট ফসিল বান্ধা রাখে এমনি আজব মেয়ে

মেয়ের মেলা সাঙ্গ হবে রং ফুরানো শেষে

রঙিন রাখে ছয়টি প্রহর আকাশ-কুসুম খেয়ে।



৮. কবিতাসেন

কবিতা হয় বীর্য থেকে সঞ্জিবনী ফুল

উড়িয়ে দ্যায় কল্পলোকের মনোহরী দুল

তেলেসমাতি নারীর আসর ছোঁয়াছুয়ি সুর

কবিতা কি নারীর উরু, নারীর এলো চুল!



৯. কচুপাতার কল

রঙিন সুতোয় বিনি কাটে হাইমেন ছেঁড়া মন

তোরই জন্য বয়ে চলে অনেক অনেক ক্ষণ

বাকাট্টা হয় জীবন প্রহর ফালি ফালি চাঁদ

বুঝতে পারি শেষ কবিতায় তুই পতিতাজন।



১০. অনন্ত : দীর্ঘ বিদায়

জীবন কাটে প্রবহমান যোজন যোজন দূরে

জীবন মায়ায় ছেড়ে দিলে নীলাকাশে ওড়ে

স্পর্শতা হয় বেশ্যাপ্রহর মোনালিসা হাসি

তোর হাসিতে মাটি ফাটে কাকডাকা ঐ ভোরে।



১১. প্রস্টিটিউট-এক

আকাশ ভরা জোছনা-মেঘের লুটোপুটি হায়

এক যৌবন জোয়ার-ভাটায় বিলিয়ে দিতে চায়

বিলিয়ে সুখ হয় না তবু বিক্রি হয় নিজে

চাঁদের আলো অঙ্গে মেখে জীবন ভরে খায়।



১২. প্রস্টিটিউট-দুই

জীবন মায়ায় জীবন বেঁচে কষ্টে কাটে দিন

এমনি করে যোনির তরে নিজের বাড়ে ঋণ

ঋণের বোজা হালকা করে বীর্য হয় ভারী

নিশি বেলায় চিল্লা করে- তপ্ত হয়ে নিন।



***



সুপান্থ সুরাহী

দ্বিতীয় অক্ষমতা এবং আজাড়-আনন্দ



প্রথম অক্ষমতায় বেতাব অনুরাগে অধীর

থাকে; জীবনের যত প্রতিবেশী নিকট-স্বজন!

আদৃত কোমল সত্তা, বাড়াবাড়ি সব আয়োজনে

বেড়ে ওঠে আগামীর কল্পিত সলাভ বিনিয়োগে।

প্রাপ্তির সাথে চাহিদার কখনো অমিল আশাবাদ!

সময় চলে সবেগে- গড়ে ওঠে প্রেমার্ত পৃথিবী।

মুখরিত প্রতিবেশে; স্বজনের শত সমাবেশ।

নির্ভরতার সচলতা, গিলে খায় নীরবতা সুখ

নিবন্ধিত যত চোখে শুভকামনার দৃষ্টি ছায়া

লেগে থাকে অবিরাম কামনার ঐহিক মানসে!



মহাকাল ছুটে চলে; খেয়ে যায় জগৎ-সচল!

অসার অক্ষমতায় অথর্ব আমিত্ব বেঁচে থাকে

মনোযোগহীন ঘরের নিরানন্দ স্তব্ধ খাটিয়ায়।

দ্বিতীয় অক্ষমতায় অনুগ্রহের আদর চলে-

অনুরাগ হয়ে যায় দূর অতীতের নস্টালজিয়া!

ফিসফাস স্বজন মুখে; কত আর চলবে যতনের

ম্যারাথন ভালোবাসা? কাজের সময় যাচ্ছে বয়ে!

কিন্তু শেষ অক্ষমতায়; বেড়ে যায় জীবনের প্রেম।

প্রস্থানের কামনায় যতই আসুক আবেদন

প্রাণের আহ্বান ততই তীব্রতর হয় অবিরাম।

বিমুখ স্বজন এসে করুণার প্রার্থণায় বসে

মুছে দেয় স্মৃতি হতে প্রথম অক্ষমতার গাণ!



সুনিথর প্রতিবেশে আজাড়-আনন্দ সমাবেশ

সুখস্মৃতি রোমন্থনে; দুঃখ-প্রস্থানের আয়োজন...



২৪.০৯.২০১৩

রাজনগর



***



নীলসাধু

একমুঠো জোনাকি হাতে কবি ভেসে যায় চন্দ্র সায়রে!



তোমার চোখের মধ্যে সূর্যোদয়, মন্দিরের ভাস্কর্য,

একলা নদী আর আমার গোপন ঈশ্বর!

ঐ চোখে ভেসে বেড়ায় রঙিন মাতাল ফাগুন, ঘাসফুল

ঝিকিমিকি আগুন

স্বর্ণলতা রোদ!



আজ কৃষ্ণচূড়া

রক্তজবা আর পলাশ ফুলের উৎসব!

ঝলমলে আলোকিত সকালে বাসন্তী হাওয়ায়

মন ছুঁয়ে থাকে ঘুঘুর বুকের মতো ওম

ইচ্ছে করে তোমার বুকের বকুল ফুলের গন্ধ নিতে!



গোপন প্রেমের জল ঝরে

মনের মর্মর গলে গলে পড়ে অনুভূতি-মাখা মোম।

মনে পড়ে

একদিন অনন্ত মধ্যরাতে বৃষ্টি নেমেছিল; হিজল গাছ

মেঘদল আর বিশুদ্ধ পদ্মকে সাথে নিয়ে

যুগল-স্নানে ভিজেছিলাম রাতভর!



কোকিলের ডাক

মঠের ঐ বিরাট গম্বুজ

আলোকিত দুপুরের কাছে রেখে

একমুঠো জোনাকি হাতে কবি ভেসে যায় চন্দ্র সায়রে!



***

বৃতি

তবুও আমি জেগে উঠি



ইতিহাসবিদ, আমাকে নিয়ে এক দীর্ঘ ইতিহাস লিখতে পারো,

তিক্তসত্য অথবা চিনিতে জারিত কিছু

আধাপাকা মিথ্যা দিয়ে,

পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা

লিখে যাও তুমি মার্টিন লুথার কিং, শ্রমদিবস,

আর ২৪শে এপ্রিলের কথকতা,

এক অদ্ভুত গ্লানিময় পথে আমাকে

ধুলো মেখে ছড়িয়ে দাও,

মাড়িয়ে যাও,

পূর্বপুরুষের এনে দেয়া উপহার, দাসখত যদিও, তবু মাথা পেতে নিয়ে

তোমার নির্মোহ কলমের খোঁচাবিদ্ধ আমি

স্বপ্ন আর আশার গোড়ায় বার বার জল দিতে থাকি-



ধুলো হয়েও যেন বেঁচে থাকতে পারি।



আলোকচিত্রী, আমার রুক্ষতায় কি তুমি বিষাদগ্রস্ত হও?

ঝরে পড়া অশ্রুর মত আমার নুয়ে পড়া কাঁধ

অর্ধনিমীলিত চোখ

নতমুখ

আমার অপ্রকাশিত আর্তনাদ সব,

আধময়লা রংচটা কাপড়ে ঢেকে রাখা যৌনতা,

বর্ষাকালীন সাজ আর স্মোকি আইজে আমার অবিশ্বাস্য অপটুতা কি

তোমার মন খারাপ করিয়ে দেয়?

র্যা ম্পে হেঁটে যাওয়া সারি সারি ম্যানিকিনদের

ছুরি-কাঁচিচর্চিত মেদহীন শরীর বনাম

আমার বুভুক্ষু মেদমাংসহীন শরীর

তোমার ডিএসএলআর ক্যামেরার চোখে এক করে দেখো না, দয়া লাগে।

বিষাদ কেন জড়িয়ে আছে তোমায়?

তবে কি আমায় আরো নুয়ে ভেঙে পড়া দেখতে চাও?



রাজনীতিক আর ব্যবসায়ী, আমার নোনা ঘর্মাক্ত

দু’হাজার টাকার অহংকার কি তোমার জন্য অপমানকর?

মাস শেষে আমি উচ্ছ্বাসে হেসে উঠি যেন স্বর্ণখনি পেয়েছি

আমার উঠোনে।



মা’র পথ্য, ভাইয়ের বেতন আর ছোটো বোনটার পাঁচমাস ধরে

এক নতুন জামার একটানা ঘ্যানঘেনে আবদার,

দয়া করে আমার আনন্দ প্রকটভাবে নিও না।



আমি শ্রমিকদিবস চিনি না,

উইকেন্ড, পেইড হলিডেইজ, মিনিমাম ওয়েজ, এইট-আওয়ার-ডে

যাবতীয় উচ্চমার্গীয় শব্দসমূহ

আমার সমতল ঘিলুতে কোনো বাঁক সৃষ্টি করে না; আমি শিক্ষানীতিতে

নিতান্তই অজ্ঞ, ব্যাঙের অথবা আমার মতই মনুষ্যনামধারীদের জীবনচক্র বা শারীরতত্ত্ব জানি না বলে ক্ষমা চাই; চৌদ্দশিকের

পেছনে এক কয়েদির মতই, আহ্নিক বা বার্ষিকগতি সম্পর্কিত চলমান

কোনো ধারণা নেই আমার (ক্ষমা কোরো),

চাইনিজ-ফ্রেঞ্চ-ইতালিয়ান খাদ্য যত

আমার ভোঁতা রসনায় কোনো আবেদন আনে না জেনে আমি অতি সঙ্কুচিত।

দোহাই লাগে, শুধু দু’মুঠো ভাতের হাসিটুকু থেকে আমাকে বঞ্চিত কোরো না।



মান্যবর,

তোমাদের উচ্চকিত শব্দ দিয়ে আমাকে গুলিবিদ্ধ করতে পারো

তোমাদের চোখ দিয়ে আমাকে কেটে ফেলতে পারো

তোমাদের জিঘাংসায় আমাকে থেঁতলে হত্যা করতে পারো।



তবু, বায়বীয় হয়ে, আমি প্রতিদিন বেঁচে উঠি।



সভ্যতাকে মাড়িয়ে আমি জেগে উঠি

ব্যথাক্লান্ত অতীত থেকে আমি জেগে ওঠি

কালো রাতের ভয়কে পিছে ফেলে স্বপ্নচোখে আমি আবার জেগে উঠি।



চাঁদ এবং সূর্যের মত,

নিশ্চিত তরঙ্গের মত,

মহার্ঘ উচ্চাশার মত,

তবুও আমি জেগে উঠি।



***

আমার একটি অত্যন্ত পছন্দের কবিতা, ‘Still I Rise’ by Maya Angelou-এর ছায়া অবলম্বনে

***



ক্লান্ত তীর্থ

নীল দেয়াল



একটা নীল দেয়াল ছিল,

তোমার-আমার মাঝে!



আমি বার বার সেই দেয়াল ছুঁয়ে দেখেছি,

দেখেছি চুনের প্রলেপ,

অবচেতন ছিল সেই দেয়ালের মন!

হঠাৎ সে তোমায় ভালোবাসলো,

আমার কাছ থেকে সরে যেতে লাগলো দূরে!

এক ইঞ্চি, এক ইঞ্চি করে,

সেই দেয়াল প্রায় মাইলদশেক পেরিয়ে গেলো!

আমি পেলাম বিস্তীর্ণ মাঠ,

দুটো ডানাভাঙা গাঙচিল, একরাশ কাশফুল,

তবু আমার আরো পাওনা ছিল!

আমি তা ভুলে মেতে রইলাম মাছরাঙার ঠোঁট নিয়ে।



আমি সেই পাওনা বুঝে নিতে

কয়েক শতাব্দী হাঁটার পর পেলাম দেয়ালের দেখা!



কিন্তু সেই দেয়ালের গায়ে তুমি মিশে আছো,

নীল হয়ে...

বিপ্লবের উত্তর প্রতিবিপ্লবে দেয়া যেত হয়ত!

কিন্তু আমি দিতে চাই নি একেবারেই,

আমার কাছে তোমার না থাকাটাই বিপ্লব!



যদি কবিতা লিখতে জানতাম তাহলে একটা সনেটে,

দুটো অণুকাব্যে লিখে দিয়ে যেতাম তোমার নাম!



তারপর থেকে আমি,

এবং আমার শরীর দাঁড়িয়ে আছি নাম-না-জানা নদীর তীরে!

একরাশ শিউলি হাতে নিয়ে,

আমি জানি তোমার মৃতদেহে আমি ছাড়া,

আমি ছাড়া আর কেউ নেই ফুল দেবার!



এসো তবে দ্রুত,

শিউলি বড্ড অভিমানী ফুল!

তাড়াতাড়ি মরে যাবে সবগুলো কুঁড়ি!



***



টুম্পা মনি

এমনই এক ভোরের শুভ্রতায় আমি নারী হবো!



তুমি আমায় বলে দিও এমনই এক জোনাক রাতের গল্প

যেই রাতের কালো চাদরে লীন হয় নি

হতভাগীর কালো কাজল রেখায় লজ্জিত সম্ভ্রমহীন ছন্দ!

অস্ফুট আওয়াজে শৃঙ্খলিত ভালোবাসার ঢেঁকুর,

একটু একটু করে হয়েছে সম্পূর্ণ!



নোনা তিতিক্ষা, জীবনের নির্যাস বয়ে করে রামধনু

জমাট বাঁধে একসাথে দলা পাকানো সাত রং

বর্ণিল থেকে বর্ণিল, তীক্ষ্ণ হৃষ্ট পুষ্ট সং ,

ঠিক যেন নবজাতকের মত জীবন্ত উপঢৌকন!

হঠাৎ ভুবনকাঁপানো চিৎকারে হেঁটে চলে জীবনের লংমার্চ!



প্রজাপতি ওড়ে! ভেসে রয় আড়ষ্ট সুরে!

অন্ধকারের গালিচায় ভালোবাসা হয় ঘনীভূত, আরো, আরো তীব্র!

সতত চাওয়ায় প্রেম, পাওয়াতেই তার কি পরিণতি?

প্রশ্নের পর প্রশ্নরা গাড়ে সমাধি, বিচ্ছিন্ন হাওয়ায় ক্ষিপ্ত আর্তনাদ!



তারপর কাটে অন্ধকার! একটু একটু করে শৃঙ্খল ভাঙে অকাট্য নিয়তি!

পাড় ভাঙে নদী, ভাঙে মানবহৃদয়!

আবার জমে পলি একরোখা আকাঙ্ক্ষার ডামাডোলে!

সন্ধ্যাপ্রদীপ দপ করে নিভে কালপুরুষের মত,

আসে ভোর! বহু প্রতীক্ষিত ভোর!

বসন্তের বিলাপ হঠাৎ শুভ্র শুদ্ধতায় মুছে দেয় নির্যাতিতার রক্তক্ষরণের ক্ষত!

আমার আঁচলের ভাঁজে উঁকি দেয় নারী! এক পরিপূর্ণ নারী!



***



প্রোফেসর শঙ্কু

দিনগুলি



বৃন্তচ্যুত শিউলি আবার ডালে উঠবে জানি

শুধু এ পথ দিয়ে

আর

যাওয়া

হবে না।

এই সর্বপ্রথম, সর্বশেষ এবং

সর্বশ্রেষ্ঠ।

সৌন্দর্য অবলোকন যাত্রাপথে একবার মাত্র।

আমাদের

পর প্রজন্ম

জানবে না

শিউলি

কাকে বলে।

তাদের সর্বাঙ্গে শুধু আতঙ্ক মিশ্রিত অবাক বিস্ময় :

এই

ফুলগুলো

প্রতি ভোরে

ঝরে পড়ে

কেন?



***



বাবুল হোসেইন

আত্ম-উপাসনা



মন্ত্রপাঠ শেষে তুমি লুটিয়ে পড়ো ঈশ্বরের পায়

কবিতার শরীর নির্মাণে নিমগ্ন আমি ভুলে যাই

কে ঈশ্বর, কে দেবতা

সাদা কাগজের জমিনে কালি ছেনে

আমিও হয়ে উঠি দিব্যলোক ঈশ্বর, সৃষ্টিকর্তা

ঐশ্বরিক অহমে তিরতির কাঁপে আমার জগৎ

তুমি দুলে ওঠো মাটির পুতুল

লুটাও আমার পায়



***



পারভেজ রবিন

এই ব্লগ ছেড়ে দূরে বহুদূরেঅন্য কোনো ওয়েবসাইটে



ব্লগে খুব অস্থির

চারপাশে বড় বেশি শোরগোল

অক্ষর ছোঁড়াছুঁড়ি,

আর ছোরা হাতে একদল

দাঁড়ায়ে সাইডবারের পেছনে

আর এক দল উঁকি দেয়

ব্যানারের উপর থেকে

মাঝখানে বিজ্ঞাপনে মাথা ভাসিয়ে

থেকে থেকে হেঁকে ওঠে ভেক।



ব্লগে আজ বড় বেশি ধুলো

কোথাও নেই হেলান দেবার,

বসবার, হাসবার

হাতে হাত রেখে কথা বলবার

একটু নিরিবিলি উইজেট।



চলো যাই আজ এই ব্লগ ছেড়ে

দূরে বহুদূরে অন্য কোনো ওয়েবসাইটে,

কোনো তরুণের পরম মমতায় গড়া

শান্ত সবুজ কোনো সাইটে।

আমরা দুজন বসবো সেখানে

ডান কলামে ফুটারের একটু উপরে

পা ঝুলিয়ে।

পাশের কোনো গানের ওয়েবসাইট থেকে

ভেসে আসবে অঞ্জন তার বৃষ্টির গান নিয়ে-

দূরে কোথাও কোনো রেডিওতে-

‘এই পথ যদি না শেষ হয়।’

কার্সরের ছোঁয়ায় ফ্লাশ প্লেয়ার হতে



ঝরে পড়বে ঝলমলে তারার আলো

মৃদু বাতাসে বাইনারি কোডগুলো

ছুঁয়ে যাবে তোমার গাল,

কিছুক্ষণ আমরা ভুলে যাব

জীবনের যত রানটাইম এরর।



***

আমি মোটেও কবি নই, মাঝেমধ্যে দু-একটা গান অনুবাদের ধৃষ্টতা দেখাই বটে। গত কাল রাতে মাথায় হঠাৎ আসা কিছু কথা সোজা করে সাজিয়ে কবিতার নামে একটা দুই নম্বর মাল চালিয়ে দিলাম। বিএসটিআই'র ভয়ে আছি।



***



লাইলী আরজুমান খানম লায়লা

মহোৎসব



দূরে বজরা বাঁধা, হিন্দি গানের ধ্বনি ভেসে আসছে

পোলাও, কোর্মা রান্নার ধুম পড়ে গেছে

পিকনিকের মহোৎসব চলছে- ব্যস্ত সবাই।



গ্রামে গ্রামে প্রবেশ করেছে বন্যার পানি

তলিয়ে গেছে ক্ষেতের ফসল, রাস্তা-ঘাট, উঠোন, মাচা

দিশেহারা কৃষান-কৃষানি, অভুক্ত শিশুরা বসে আছে মায়ের কোলে

মাঝে মাঝে চিৎকার করে বলছে ‘ভাত দে মা!’

পিকনিকের মহোৎসব চলছে- ব্যস্ত সবাই।



ত্রাণের গাড়ি ছুটে আসছে শহর থেকে গ্রামে

নৌকা, ভেলায় চড়ে মানুষ প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে

কখন পাবে একটু খাবার।

নইমুদ্দিন চিৎকার করে বলছে, ‘লুঙ্গি চাই না- খাওন চাই, দাওয়াই চাই।’

এত ত্রাণসমাগ্রী কোথায় যেন মিলিয়ে গেল

রহিমা বিষণ্ণ চিত্তে ফিরে আসে বাড়িতে

পিকনিকের মহোৎসব চলছে- ব্যস্ত সবাই।



গাঢ় অন্ধকার নেমে আসছে, চিৎকার শোনা যাচ্ছে দূরে-

‘আমার বাচ্চা নাই’

গরু মহিষ ছাগলের মরদেহ এদিক ওদিক ভাসছে,

দূরের বাঁশঝাড়ে শোনা যাচ্ছে পাখির ডানা ঝাপটানি

হুতোম পেঁচার ডাকে যেন কেঁপে কেঁপে উঠছে গোটা গ্রাম

দূরে প্রস্তুতি চলছে পিকনিকের- ব্যস্ত সবাই।





রাধাকান্ত’র বুকে সন্ত্রাসীরা বসিয়েছে ধারালো অস্ত্র,

পাঁচশত টাকার সওদা হয়েছে ছিনতাই।

রাধাকান্ত’র ষোড়শী মেয়ের কান্নায় বাতাস ভারী হয়ে আসছে,



‘আমাকে নিয়ে যাও বাবা’- আমার আশ্রয় কোথায়?

এত মানুষের ভিড়- কেউ মুখ খোলে না

এ লজ্জা আমার, রাধাকান্ত!

এ লজ্জা গোটা দেশের!

বন্যার পানিতে ডুবে গেছে গোটা এলাকা

পিকনিকের মহোৎসব চলছে- ব্যস্ত সবাই।



***



সাদাত হোসাইন

শূন্য



তোমার জন্য যতটা পথ হেঁটেছি

ততটা পথ হাঁটলে

আমি পৌঁছে যেতে পারতাম জেরুজালেম

আমার প্রিয়তম শহর।

তোমার জন্য যতটা রাত কেঁদেছি

ততটা কান্নায় আমি ছুঁয়ে দিতে পারতাম মেঘ

বরষায় ভিজিয়ে দিতে পারতাম তৃষ্ণার্ত সাহারা।

যে দহনে রোজ পুড়ে গেছি

তাতে জ্বেলে দিতে পারতাম অজস্র

গনগনে ভিসুভিয়াস।

যতটা তৃষ্ণায় গুনে গেছি অপেক্ষার প্রতিটি প্রহর

ততটা মেটাতে পারে সাধ্য নেই সাইবেরিয়ার।



যতটা ডুবে গেছি রোজ, যতটা উবে গেছি রোজ

যতটা ভেসে গেছি চুপ, যতটা বেহিসেবি ডুব

সবটাই মিশে গেছে ওই

তোমাকে পাওয়া হলে দেখি

এই আমি, সেই আমি নই



১০.০৪.২০১৪



***



shapnobilash_cu

দ্রোহ



তোমার নীল ঘুমেরা সব

নির্বাসনে যাবে

শকুন খুবলে খাবে

পূর্ণিমার চাঁদ



রাতের নির্জনতা ধর্ষিত হবে

হায়েনার উন্মত্ততায়

ভূমিকম্প হবে নয় মাত্রায়

উপচে পড়া চোখের জলে

ভেঙে যাবে সমস্ত অতীত রেকর্ড

তোমার হৃদয় নামের পাষাণপুরীতে



বিক্ষোভ হবে নগর জুড়ে

টায়ার পুড়বে, গুলি ছুঁড়বে

মিছিল-মিটিং, ব্যারিকেডে

স্থবির হবে নগরজীবন



আগুন জ্বলবে

বোমা ফুটবে

শুদ্ধ ভালোবাসার তীব্র খরায়

মহামারি হবে পৃথিবীময়...



***



পেন আর্নার

যেন তাই



হারিয়ে যায় নি কিছুই

যেন কয়েকটি পাতায় এগিয়েছে জীবন



একরত্তি ভাঙে নি খেলাঘর

যেন খেলার সাথিরা লুকোচুরি খেলছে এখন



বয়ে যায় নি সময় স্রোতে

যেন এটাই আজ সঠিক ক্ষণ



মানুষগুলো এমনি দেয় নি বিদায়

যেন সামনের জগৎকে জানিয়ে গেছে

আমার জাগরণী আগমন



অবেলায় গড়ে নি বেলা

যেন নতুন দিনের এই হলো উত্থান



বিষাদে কেটে যায় নি রাত

যেন অবসাদকে রুখে দিয়েছে আঁধারের বান



নির্বিকারে কমে যায় নি ভাবনা

যেন দিগ্বিদিক হচ্ছে স্বপ্ন আবির্ভাবের আলোড়ন



হঠাৎ ভাঙে নি ঘুম

যেন ঘুমে থাকা রন্ধ্রে জ্বলেছে একটু স্ফূরণ



শুধু হয় নি সে শ্রোতা

যেন কষ্টগুলোকে দিয়েছে সুখের অনুরণন



থেমে থাকে নি নিষ্ঠ প্রেম

যেন ভা্নলোবাসার শুরুটা আজও নয় পুরাতন।

২১/১২/১১



***



সানড্যান্স

শুধু তোমার হাতের চায়ের জন্য আমি তোমাতে তৃষ্ণার্ত হই



শুধু তোমার হাতের চায়ের জন্য আমি তোমাতে তৃষ্ণার্ত হই

লিকার কম হোক, দুধ চিনি বেশি হোক আমার কোনো আপত্তি নেই!

দরকার নেই কোনো কাঁচা পাতির, শুধু দরকার তোমার হাতের ছোঁয়ার

সিরামিকের কাপে নয়, সে চায়ের আকুতি তোমার ঠোঁটের পরিবেশন!

তোমার আঙুলের নান্দনিকতায় সে চায়ে চামচেরা নিষ্প্রয়োজন!



শুধু তোমার হাতের চায়ের জন্য আমি তৃষ্ণার্ত হই!

উষ্ণতার জন্য তিতাস গ্যাস নয়, সেজন্য চাই তোমার স্পর্শ

ধোঁয়া ওঠার জন্য তীব্র হিট নয়, প্রয়োজন ঘন তপ্ত-উত্তপ্ত নিশ্বাসের!

বাছাই করা চা পাতার দরকার নেই, তোমার আঙুল যে পাতা চেনে!

আমি না হয় তোমার বানানো সেই উত্তপ্ত চা, বহু চুমুকে চুমুকে ঠাণ্ডা করব, শ্রান্ত হব!



অতঃপর, তুমি আবার নতুন করে জল চড়াবে, আমি উদ্যমী হব

নতুন করে বলব, এক কাপ চা হবে গো? আমি যে ফের তৃষ্ণার্ত!



আমি যে শুধু তোমার হাতের চায়ের জন্য তোমাতে তৃষ্ণার্ত!



***



সুমন কর

৬টি অণুকাব্য



(১)

হাসি-কাঁদি, জলে ভাসি

যেমন ছিলাম, তেমন আছি।



(২)

লোভ আর বিষের মধ্যে থাকি

কী জানি! কে কখন!

বাজায় তার চেনা বাঁশি।



(৩)

আমি চলি পথের দিকে

পথ আমায় দেখে, মুচকি হাসে!!

অবুঝ মন তবু বলে

সামনে আছে নতুন পথ।



(৪)

আমি অপূর্ণ, হই চূর্ণ

হিসেবের খাতায়, ফলাফল শূন্য।



(৫)

আমি বড্ড ভঙ্গুর

ভেঙেছি বার বার, তবুও

তোমায় নিয়ে গড়া হয় নি নতুন ভুবন।



(৬)

গল্প,

সে তো তোমার আমার জীবনের ঘটনা

শুধু,

মিছে মিছে কিছু চরিত্রের বর্ণনা।



***



ঈপ্সিতা চৌধুরী

নতুন কোনো ছবি আঁকতে পারি নি!



তুই যেদিন পিছুটান দিয়েছিলি

সেদিন তোর নামের সাথে

ভণ্ড বা প্রতারক তকমা লাগিয়ে

নতুন কোনো ছবি আঁকতে পারি নি!

যখন কারণে-অকারণে আমাকে অজস্র গালি দিতিস,

তখন অভিমান হতো, রাগ হতো,

মাঝে মাঝে আবার হেসে উড়িয়েও দিতাম!

কিন্তু কখনোই উলটো তোকে গালি দিয়ে গালিবাজ বলে আক্রমণ করি নি!

কিংবা সেরকম কোনো ছবিও আঁকি নি!

এই তুই-ই আবার যখন আমাকে হুমকি দেয়া শুরু করলি

তখন কষ্টে বুকটা ঝাঁজরা হয়ে গেলো...

কিন্তু সেই তোকে সন্ত্রাসীর চেহারায় আঁকি নি!

মায়া-মমতা-ভালোলাগা আর ভালোবাসার

যে বাঁধনে তুই আমাকে বেঁধেছিলি-

আমি সেই তখনই তোর একটা ছবি

মনে মনে এঁকে ফেলেছিলাম!

এখনো সেটাকেই আঁকড়ে ধরে আছি!

তাই তোর ইদানীং কালের আচরণগুলো নিয়ে

ঘসা-মাজা করে সেই ভালোবাসার ছবিটাকে

মুছে ফেলে নতুন কোনো ছবি আঁকতে পারি নি!



***

মন্তব্য ১৩৬ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (১৩৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৩:০২

একজন ঘূণপোকা বলেছেন: পুত্তুম প্লাস!!

প্রচ্ছদ ভালো হয়েছে, আর সংকলনও ভালো হয়েছে।

কষ্টসাধ্য পোস্টে ভালো লাগা। :)

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৩:০৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমি পুরো পোস্ট দেখতে পাচ্ছি না। কী সমস্যা তা বুঝতে পারছি না। আপনি কি ঈপ্সিতা চৌধুরীর পোস্ট (লাস্ট পোস্ট) দেখতে পাচ্ছেন?

২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৩:১৭

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:


এ পর্বে আমার বেশ কিছু প্রিয় কবির কবিতা চলে এসেছে। শেষ পর্ব পর্যন্ত সাথে আছি ! :)

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৩:২০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কোনো টেকনিক্যাল কারণে আমি জুন আপুর পর থেকে আর কোনো কবিতা দেখতে পাচ্ছি না। লাস্ট কবিতা ঈপ্সিতা চৌধুরীর। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন ওটা?

৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৩:৩০

আফ্রি আয়েশা বলেছেন:
দারুণ উদ্যোগ । অনেক অজানা কবি সম্পর্কে জানতে পারছি :)

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন।

৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৩:৩২

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

আমিও দেখতে পাচ্ছি না B:-)

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ ভোর ৪:০৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: মোজিলা ফায়ারফক্স রি-ইনস্টল করলাম। সব দেখতে পাচ্ছি, কোনো সমস্যা নেই ;)

৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৩:৩৭

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন: কপি করার সময় সিলেক্ট করার মত করে নিচের দিকে কার্সট আনলে দেখা যায়।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ শোভন ভাই কষ্ট করে এটা দেখার জন্য। আমি ব্রাউজার রি-ইনস্টল করার পর দেখি সবকিছু ঠিক হয়ে গেছে ;)

ভালো থাকবেন।

৬| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ ভোর ৪:২৭

একজন ঘূণপোকা বলেছেন:
আমি তো দেখতে পাচ্ছি।


০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ একজন ঘূণপোকা।

৭| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ ভোর ৪:৩৪

ভারসাম্য বলেছেন: এ যাত্রাও বাঁচতে চেয়েছিলাম। মরেছি তো মরেছি, একেবারে মাঝামাঝি। সবার আগে বা পরে হলেও কথা ছিল একটা।

অবশ্য যা হয়েছে, সেটাও কম বড় নয়, আমার জন্য।সাথে আরো অনেক প্রিয় কবির অনন্য সব কবিতা!

অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ অভী আসলাম ভাই। সাথে ছিলেন, আছেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন- এ প্রত্যাশা আপনার কাছে।

ভালো থাকবেন।

৮| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ ভোর ৫:২৭

সোনালী ডানার চিল বলেছেন:

চমৎকার সংকলন। কবিতাপ্রেমিদের ছায়াতল!!

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় কবি। ভালোবাসা নিন।

৯| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ৭:৫৪

মামুন রশিদ বলেছেন: আপনার কাজে বিস্মিত হয়ে যাই । চুড়ান্ত পরিশ্রম আর লেগে থাকার কাজ । এবারের পর্বে জেনুইন কবিদের সংখ্যা বেশি ।


পঞ্চম ভালোলাগা++

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমার কাজে আপনি বিস্মিত হলে তো আমার লজ্জা পাওয়া ছাড়া কোনো পথ থাকে না ;) তবে এমন প্রশংসা কার না ভালো লাগে?

জেনুইন কবি? হাহাহাহাহা? এভাবে ভাবি নি। তবে প্রতি পর্বে সাবলীল কবিতার সাথে কিছু দুর্বল কবিতার সমাহার থাকছে। তবে সাবলীল বা দুর্বল কথাগুলো হলো আপেক্ষিক বা ব্যক্তিক। কবি ‘ক’-এর কবিতা আমার কাছে হয়তো খুব দুর্বল মনে হতে পারে, দেখা গেলো বেশিরভাগ পাঠকের কাছেই সেটা খুব ভালো মানের কবিতা হিসাবে গণ্য হচ্ছে। নজরুলের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ব্যাপারে কেউ বলেন ‘দুর্বল কবিতা’, আবার কারো কারো কাছে এটা বাংলা কবিতার অন্যতম সেরা কবিতা। পাঠক ভেদে কবিতার বিচার হয়। অনেক নামকরা কবির কবিতাকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে দেখি ভিতরে ফাঁপা, কিন্তু তিনিও কবিতায় মাইলফলক।

আপনার ভালো লাগলো বলে আমার অনেক ভালো লাগছে। পরের পর্ব শেষ হতে একটু সময় লাগছে। কবিদের ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটলো কিনা তা ভেবে আমি অস্থির।

সবসময় পাশে থাকবেন, এই দাবি রাখলাম।

ভালো থাকুন প্রিয় মামুন ভাই।

১০| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ৮:৪৩

সানড্যান্স বলেছেন: ধন্যবাদ। স্যরি।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ।

১১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৩৭

ডট কম ০০৯ বলেছেন: এই লেখাগুলি সত্যিকারে বই আকারে পেলে দারুন একটা বিষয় হবে।

অনেক নতুন কবির কবিতা পড়লাম।

ভাল লাগছে। আরো পড়ব।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমিও দারুণভাবে উজ্জীবিত এত কবিতা দেখে। বই আকারে বের করতে পারলে আমার জন্য এটা অনেক আনন্দের কাজ হবে।

ধন্যবাদ আরমান ভাই।

১২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৫৮

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। অনেক কষ্ট সাধ্য একটা কাজ করেছেন। এই মহৎ উদ্যোগকে জানাই সাধুবাদ। শুভেচ্ছা শতত।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ব্লগার। ভালো থাকবেন। আপনাকে এখন নিয়মিত ব্লগে দেখে ভালো লাগছে।

১৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:২৭

আমি গাঙচিল বলেছেন: সাধারন লাগ্লো
++++++++++++++++++

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ গাঙচিল।

১৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৩২

সুমন কর বলেছেন: এত কষ্ট কিভাবে করেন ? আপনার কষ্ট ও শ্রমকে শ্রদ্ধা না জানিয়ে উপায় নেই। অসংখ্য ধন্যবাদ এমন একটি কবিতা পর্ব উপহার দেবার জন্য।

বহু নামী কবিদের মাঝে আমার নাম দেখে, আমি অভিভূত।

আর একটা কথা, ভাল না লাগলে আমি সরাসরি বলতেই পছন্দ করি। এতে ব্লগার বা পাঠকদেরই সুবিধে। শুধুশুধু মিথ্যে প্রশংসা করাটা ভাল নয়। কারণ, সবার নিজস্ব মতামত বা চিন্তা থাকাটাই স্বাভাবিক।

ভালো থাকবেন।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ প্রিয় সুমন ভাই। আপনাকে অভিভূত হতে দেখে আমিও যারপরনাই আনন্দিত বোধ করছি।

সত্যি কথা বলতে কী, আমিও খুব স্পষ্টবাদী মানুষ। কোনো রাখঢাক নেই, বলে ফেলি ;) ব্লগে আমার কমেন্টগুলো যদি খেয়াল করে থাকেন তাহলে দেখবেন আমি প্রশংসাযোগ্য লেখাকে যেমন প্রশংসা করছি, ত্রুটিপূর্ণ লেখার ত্রুটিগুলোকেও নির্দেশ করছি সংশোধনের জন্য- কেউ ভালো চোখে দেখেন, কেউ ক্ষেপেও যান।

আপনি বোধহয় গত পোস্টের কথাই বলছেন। আমি মানুষ নিয়ে কাজ করি। মানুষের ভুল হলে সেটা ধরিয়ে দিতে পারলে অধিকাংশ মানুষই সেটা মেনে নেন, নিজের ভুল বুঝতে পেরে। ওখানে যে কবিতাটির কথা আপনি বলছেন ওটি যদি আপনি মনোযোগ দিয়ে আবার পড়েন তাহলে দেখতে পাবেন ওটা বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো কবিতা নয়, ওটা একটা নির্ভেজাল প্রেমের কবিতা। প্রেমিকার প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করার জন্য কবি বেশ কয়েকটি উপমা প্রয়োগ করেছেন, তার একটি হলো বিশ্বকাপ ফুটবল। আমি ‘প্রিয়তমা’ ওভাবে লিখলে আমার উপমা হতো ক্রিকেট খেলা ;) আর এ পোস্টগুলো হলো কবিদের নিজেদের নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ কবিতার সংকলন। কবিদের সেরা কবিতা নির্বাচনে আমার কোনো ভূমিকা নেই। আমার অনেক কাছের, অনেক প্রিয় কয়েকজন ব্লগার আমাকে অনেক জোরাজুরি করেছেন তাঁদের সেরা কবিতা বাছাই করে দেয়ার জন্য। আমি সবিনয়ে সবার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছি। এখন, ঐ কবি কেন ‘প্রিয়তমা’ কবিতাটি পোস্টের জন্য দিলেন? কারণ, এটাই তাঁর কাছে তাঁর শ্রেষ্ঠ কবিতা মনে হয়েছে। পোস্টে আপনি দেখুন, কত বিচিত্র বিষয় নিয়ে কবিতা লেখা হয়েছে। কবিরা স্বাধীন। কে, কোন্‌ বিষয়ে কবিতা লিখবেন এতে অন্যের কোনো এখতিয়ার থাকা উচিত নয়।

ব্যাপারটা কিন্তু খুব সহজবোধ্য।

ভালো থাকবেন সুমন ভাই।

১৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৩৮

বাবুল হোসেইন বলেছেন: ধন্যবাদ কবি।
স্যালুট।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:০০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ বাবুল ভাই।

১৬| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৪০

শের শায়রী বলেছেন: নিজে শব্দ নিয়ে খেলা করতে পারি না তাই যারা পারে তাদের কে আমার ভিন গ্রহের কিছু মনে হয়।

কি অসাধারন শব্দ গুচ্ছ। পড়ছি আর মাথার মধ্যে ফুল বাগানের সুবাসের অনুভুতি অনুভব করছি।

এই সব শব্দ গুচ্ছ কে আপনি এক জায়গায় নিয়ে আসছেন। সুযোগ দিয়েছেন এই মহামিলনে আমাদের পাঠক হবার।

কৃতজ্ঞতা জানুন। ও হ্যা অনেক দিন পর দেখা হল কেমন আছেন ভাই?

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:০৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এরকম উৎসাহ পেলে মনে হয়, জীবনটা এ কাজেই কাটিয়ে দিই। খুব আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি।

আপনিও আমার কৃতজ্ঞতা জানুন।

আমি খুব ভালো আছি আল্লাহর রহমতে। আশা করি আপনিও ভালো আছেন।

ভালো থাকুন। অনেক ধন্যবাদ।

১৭| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৪২

নাহিদ শামস্‌ ইমু বলেছেন: বেশ কয়েকটি কবিতা পড়ে ফেলেছি। সময় পেলে অন্যগুলোও পড়ব।
শুভকামনা রইলো...

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:০৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা জানবেন।

১৮| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৫৪

রাতুল_শাহ বলেছেন: শের শায়রী বলেছেন: নিজে শব্দ নিয়ে খেলা করতে পারি না তাই যারা পারে তাদের কে আমার ভিন গ্রহের কিছু মনে হয়।

ভাই এর জন্য কোচের ব্যবস্থা করা হউক। অবশ্য মহিলা কোচের দরকার।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাহাহাহাহাহা ;)

ভালোই তো ;) কিন্তু মহিলা কোচ কেন?

১৯| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭

আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
দুটো পর্বেই যা মনে হলো, প্রিয় কবিতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রায় সবাই যেন তার দীর্ঘতম কবিতাটি বেছে নিলেন :)

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: সবাই না। কিছু কিছু কবিতা খুব ছোটো। এ পর্বে অবশ্য কিছু বড় কবিতাও রয়েছে।

ধন্যবাদ আশরাফুল ভাই।

২০| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:০১

নাজমুল হাসান মজুমদার বলেছেন: দিতে পারলাম না :(

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমাকে এবং ব্লগের পাঠককে বঞ্চিত করা কি আপনার উচিত হয়েছে?


২১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:০২

ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন: এই সংকলনে আমাকে স্থান দেবার জন্য ধন্যবাদ


শের শায়েরী ভাই,আপনি যা পারেন সেটা কয়জন পারে??

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ক্লান্ত তীর্থ।

২২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২২

লাবনী আক্তার বলেছেন: বাহ! এই পর্বটা মনে হচ্ছে খুব ভালো হয়েছে। কারন প্রিয় প্রিয় ব্লগারদের লেখা দেখতে পাচ্ছি। :P :P ভাললাগা রইল অনেক অনেক।

আর আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া। কথা কিন্তু সব ঠিক বলছি। :P :P B-) B-)

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কথা ঠিক ;)

আপনার জন্যও অনেক শুভ কামনা থাকলো আপু।

২৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২৪

মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: অবশ্যই প্রিয়তে ...

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:১৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ মুনতাসির নাসিফ ভাই।

২৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭

রাতুল_শাহ বলেছেন: ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন:

শের শায়েরী ভাই,আপনি যা পারেন সেটা কয়জন পারে??


সহমত

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
রাতুল_শাহ বলেছেন: ক্লান্ত তীর্থ বলেছেন:

শের শায়েরী ভাই,আপনি যা পারেন সেটা কয়জন পারে??

সহমত


সহমত।

২৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:২৭

অন্য কথা বলেছেন: ধন্যবাদ "সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই" ভাই।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৩৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ অন্য কথা। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের জন্য দুঃখিত।

২৬| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: আপনার প্রয়াস সার্থক হয়েছে বলেই আমি মনে করি। ধন্যবাদ।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ দেশপ্রেমিক বাঙালি। ভালো থাকবেন।

২৭| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩

সকাল রয় বলেছেন: দারুন হইছে

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
ধন্যবাদ কবি সকাল রয়।

২৮| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৯

অন্য কথা বলেছেন: সূচীপত্রে আমার নাম নাই (কবিতার শিরোনাম ও নিক) মনে হচ্ছে।
কিন্ত্ু ভিতরে আছি বহাল তবিয়তে। দেখবেন এবং জানাবেন কিন্ত্ু কি হচ্ছে অবশেষে।

০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:০৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমি অত্যন্ত লজ্জিত এবং দুঃখিত অন্য কথা। টেক্সট থেকে একটা একটা করে কবিতা ও কবির নাম কপিপেস্ট করেছি সূচিপত্রে। বাদ পড়ে যাবার আশঙ্কা আমারও ছিল। কিন্তু চেক করতে গিয়ে দেখি সবগুলো নামই উঠেছে। কিন্তু আপনার নামটা বাদ পড়ে গেছে এখন জানতে পারছি। পিডিএফ কপি তো ফাইনাল করে ফেলা হয়েছে। সবার কাছে এটা চলে গেছে। এটা এ্যাট বেস্ট এতটুকু করা যাবে, আপনার জন্য সূচিপত্র সংশোধন করে আপনাকে একটা কপি করে দেয়ার জন্য। আমি বরং এটাই করে আপনাকে পাঠাই।

অনিচ্ছাকৃত এ ভুলের জন্য ক্ষমাপ্র্রার্থী।

২৯| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭

মাহমুদ০০৭ বলেছেন: কোন সন্দেহ নেই - এই পর্ব স্বচ্ছ , নিরপেক্ষ , আন্তর্জাতিক মানের ( যেহেতু আমি আছি ;) ) হয়েছে ।
কালজয়ী একটা কাজ করেছেন ছাই ভাই । ( যেহেতু আমি আছি - তাই কালজয়ী B-) নয়তো X(( ) ।

আপনার আগামী পর্ব নিয়ে আমি সংশয়ী ।
ভাল হবে ত ? ;)


দারুণ একটা কাজ করলেন ছাই ভাই :)
অসাধারণ ! আপনার উদ্যম আর কষ্টের ব্যাপারে কি বলব খুজে পাচ্ছি না ।
কাভা ভাই দারূণ প্রচ্ছদ করেছেন ।
অরুদ্ধ সকাল ভাইকেও শুভেচ্ছা ।

ভাল থাকুন প্রিয় ছাই ভাই :)
শুভকামনা রইল ।



০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আগামী পর্ব নিয়ে আপনার সংশয় দেখে তো আমিও চিন্তায় পড়ে গেলাম। তবে চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকবে না আগামী ৩য়/শেষ পর্বেও প্রথম দুই পর্বের মতো ভালো কবিতার একটা সুদৃশ্য সংকলন উপহার দেয়ার জন্য।

আপনার কমেন্ট সব সময়ই আমাকে অনুপ্রাণিত করে এবং ভালো কিছু করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।

ভালো থাকুন প্রিয় মাহমুদ ভাই।

৩০| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৪

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: মোট কয়টা পর্ব থাকছে ভাইয়া ?
এই পর্বে বেশ কয়েকজন প্রিয় কবির চমৎকার আর দুর্দান্ত কয়টা কবিতা আছে , একি লিঙ্কেই এই কবিতাগুলো পাবো আর পোষ্ট টা প্রিয়তে থাকছেনা তাতো হবেনা !
মনে হচ্ছে সামনের সবকটাই প্রিয়তে রাখতে হবে !

অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানবেন !

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শ্রেষ্ঠ কবিতার একাধিক সংকলন পোস্ট যে দিতে হবে, শুরুতে এটা আমার মাথায় আসে নি। কিন্তু কবিদের অংশগ্রহণে কবিতার সংখ্যা হয়ে যায় প্রচুর, যা এক পর্বে দিলে তা অনেক লম্বা হয়ে যেতো। এজন্য প্রথমে চিন্তা করি দুই পর্ব করার, এরপর দেখি আরও একটা পর্বের প্রয়োজন পড়বে। এখন ৩য় ও শেষ পর্ব নিয়ে কাজ করছি, প্রায় শেষের পথে। আশা করি শেষ পর্বেও প্রথম দুই পর্বের মতো চমৎকার কবিতার সমাহার থাকবে।

ধন্যবাদ অভি ভাই। ভালো থাকবেন।

৩১| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:২৭

জেরিফ বলেছেন: প্রিয়তে


সাথেই আছি শুভ কামনা :)

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিনীত ধন্যবাদ আপনাকে।

৩২| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৫১

আরজু পনি বলেছেন:

কবিতা পরে থম ধরে ভাবলাম কবিতা লেখা আমার কর্ম নয় :(

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমিও তো ধম ধরে ভাবছি, আপনি কবিতা লেখা কবে ছেড়ে দিলেন!

৩৩| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৫১

আরজু পনি বলেছেন:

কবিতা পরে থম ধরে ভাবলাম কবিতা লেখা আমার কর্ম নয় :(

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:০০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আরও একবার ভাবলেন বুঝি? :)

৩৪| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:১২

লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ কষ্টসাধ্য একটি কাজ করার জন্য । নিজের কবিতাটি দেখে ভাল লাগলো। সাথে অন্যান্য ব্লগারের কবিতাগুলো ভীষণ ভীষণ ভাল লেগেছে।

সরাসরি প্রিয়তে নিলাম ------ রাশি রাশি শুভকামনা আপনার তরে -------

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:০২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপু। আপনার জন্যও শুভ কামনা থাকলো।

৩৫| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৮:৪৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
কবিদের মধ্যে আমি যেমন...



কবিদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহব্লগার সোনাবীজসহ সংকলন টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা :)

আশা করছি সুহৃদ সহব্লগার এবং গুণী কবিগণ এই ব্যতিক্রমকে ক্ষমা করবেন। সোনাবীজ ভাইয়ের ভালোবাসার অন্তর্ভুক্তি। এনিয়ে একটা ইস্টেটাসও দিলুম আজ ;)

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমার প্রিয় ফলের মধ্যে পেয়ারা, নাশপাতি, তালকোষ, জামরুল, বরই উল্লেখযোগ্য। পেয়ারা আর বরই আমি এত ভালোবাসি যে, আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে গেলে এগুলোও নিয়ে যাই ;)

প্রাইমারি স্কুলে একবার টিচার বলেছিলেন যে, একটা পেয়ারা বা টমেটোতে একটা আপেল বা অরেঞ্জের চেয়ে বেশি গুণ থাকে। এ কথার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য আজকাল বেশিদূর যেতে হয় না।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ প্রিয় মাঈনউদ্দিন ভাই। ভালো থাকবেন।

৩৬| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৮:৪৫

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: আমার কবিতা _ মনে হয় ......

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ পরিবেশ বন্ধু।

৩৭| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৯:০২

জুলিয়ান সিদ্দিকী বলেছেন: পিডিএফটা দারুণ!

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পিডিএফটা দারুণ হয়েছে জানতে পেরে খুব আনন্দ হচ্ছে। স্বল্প জ্ঞান নিয়ে এটুকু করতেই আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। নিজেকে খুব কৃতার্থ মনে করছি।

ধন্যবাদ জুলিয়ান ভাই।

৩৮| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৯:০২

আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই ,




যথারীতি প্রিয়তে ।

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই। আপনার কবিতা পেলাম না :(

৩৯| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ৯:২৫

জুন বলেছেন: জুলিয়ান ভাই ঠিকই বলেছে পিডিএফ টা সত্যি অসাধারন। দারুন এক কাজ এ হাত দিয়েছেন দেশি ভাই , স্যালুট আপনাকে।

০৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:১৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আশা করি শেষ পর্যন্ত পিডিএফ কপিটা ওপেন করতে পেরেছিলেন।

ধন্যবাদ দেশি আপু। ভালো থাকবেন।

৪০| ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ রাত ১১:০৭

স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
আইডিয়া থেকেই বুঝেছিলাম কত বিশাল কর্মযজ্ঞ হাতে
নেবার মতো আন্তরিকতা আর ধৈর্য আপনি রাখেন !

@ দুর্জয় ভাই,

প্রিয় কবিতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রায় সবাই যেন
তার দীর্ঘতম কবিতাটি বেছে নিলেন ! :|| :||

অনেক ধন্যবাদ আর কৃতজ্ঞতা রইল সোনাবীজ ভাই ।

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:০২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তবে আমি কিন্তু ভাবি নি যে ব্যাপারটা এরকম বিরাট কর্মযজ্ঞে পরিণত হবে ;) ব্লগার বন্ধুদের উচ্ছ্বসিত অংশগ্রহণ আমাকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত হতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

সবাই অবশ্য দীর্ঘ কবিতা বেছে নেন নি তাঁদের শ্রেষ্ঠ কবিতা হিসাবে, যেমন আপনি ;) আপনার কবিতাটি কি এই সংকলন উপলক্ষেই লিখিত হয়েছিল? তাহলে এ সংকলনের কাছে আপনার কবিতাটি ঋণী ;)

ভালো থাকুন স্বপ্নচারী গ্রানমা।

৪১| ০৫ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:০৮

আদনান শাহ্‌িরয়ার বলেছেন: শ্রদ্ধা এবং প্রিয়তে !

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:০৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ আদনান শাহরিয়ার ভাই।

৪২| ০৫ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:১৫

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
ব্লগে পড়ার চেয়ে পিডিএফ-এ পড়া বেশি আনন্দের। সুন্দর বিন্যাস :)

কবিতাগুলো সত্যিই অনেক সুন্দর... :)

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:০৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পিডিএফ-এর গ্রাফিকস করার জন্য আমাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছে। ভোর ৩টা-৪টা পর্যন্ত, ছুটির দিনে সারা রাত। শেষ পর্যন্ত আপনার এবং আরো অনেকের এটা ভালো লেগেছে জেনে নিজেকে খুব কৃতার্থ মনে করছি।

ধন্যবাদ মাঈনউদ্দিন ভাই।

৪৩| ০৫ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:২০

রেজওয়ান তানিম বলেছেন: অনেকের কবিতা পড়েই মনে হচ্ছে তাদের ভালো ঝামেলায় ফেলেছিলেন আপনি...

আবেগ ও অনেকের ক্ষেত্রে ডমিনেটিং ফ্যাক্টর ছিল...

আরও ভালো কবিতা পড়বার ইচ্ছা রইল...

দেখা যাক কি হয়।

কি দায় যে মাথা পেতে নিলেন, মনে হচ্ছে টের পাবেন আগামতের...

সে পর্যন্ত আপনাকে শুভকামনা,

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:১৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেকে হয়তো ঝামেলায় পড়েছিলেন, কিন্তু আমার জন্য সবচেয়ে কষ্টকর এবং বিব্রতকর বিষয় ছিল ব্লগারদেরকে বোঝানো যে, এটি আমার পছন্দ অনুযায়ী কবিতা নির্বাচনের কোনো বিষয় না, এটা কবিদেরকেই বাছাই করতে হবে। আমার সাকসেস হলো- আমি শতভাগ এটা বজায় রেখেছি। যাঁরা নিজেদের কবিতা বাছাই করে দিতে না পেরে আমার উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন, তাঁদেরকে বিনয়ের সাথে এ সংকলন থেকে বাদ রেখেছি।

দেখা যাক পরের পর্ব কেমন হয়। প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বের মতো শেষ পর্বেও ভালো কবিতার সমাহার থাকবে বলে আশা করছি।

ধন্যবাদ তানিম ভাই।

৪৪| ০৫ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৫

অন্য কথা বলেছেন: "সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই" ভাই, প্রতিটি পর্বে আপনার কবিতা চাই।

অবশেষে:

সোনাবীজ অথবা ধুলোবালিছাই হোক তা যে কোনোটাই, সবই তো অতীত হবে তবু এখানে থাকুক সবার প্রিয় কবিতাটাই ।

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:২৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন:
আমার প্রিয় কবিতাগুলো খুঁজতে গেলে প্রথমেই আমাকে চলে যেতে হয় কলেজ জীবনে। ঐ সময়ের কবিতাগুলো অনেক বেশি কাঁচা ছিল, কিন্তু ওগুলো আমার রক্তক্ষরণ থেকে উৎসারিত হয়েছিল। এইচএসসি পরীক্ষার কিছু আগে, অথবা কিছু পরে লিখেছিলাম, এরকম একটা কবিতা আপনার সৌজন্যে এখানে শেয়ার করছি।

***

স্বপ্ন-কুসুম

হাজার রজনি একাকী হয়েছে পার,
ওখানে আজও বাসর-দুয়ার খুলে
আমি সাজিয়েছি আমার ফুলদানিতে
রাতের বাগানে রজনিগন্ধা তুলে।

নীরব নিশীথে মলিন দীপের শিখায়
আমি জেগে আছি কবিতার খাতা হাতে,
মাতাল গন্ধ রজনিগন্ধা ছড়ায় :
কেউ যদি হতো নিঃসঙ্গ এ রাতে!

ভাবি যতো কথা যতো কবিতাই লিখি
লক্ষ্মী কে মেয়ে করে নাচানাচি এসে
বাগানে সহসা ডাকলো ভোরের পাখি-
সেখানে স্বপ্ন-কুসুম ফুটেছে হেসে।

***

এ কবিতায় ছোট্ট একটা রহস্য আছে। আপনাকে বেশি ভাবতে হবে না, প্রতি লাইনের ১ম অক্ষর যোগ করুন, দেখুন কী হয় ;)

ভালো থাকুন অন্য কথা।

• ১৯৮৬

৪৫| ০৫ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:০০

আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
পড়ে মন্তব্য করি! :)

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:২৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঠিক আছে কবি।

৪৬| ০৫ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:২৮

ৎঁৎঁৎঁ বলেছেন: অসাধারণ উদ্যম আপনার, কবিতার প্রতি ভালোবাসাতে মুগ্ধ! সবার প্রিয় কবিতা নিয়ে আরেকটা অভিনব সঙ্কলন!

ভালোবাসা জানবেন!

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩০

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ প্রিয় ইফতি ভাই।

৪৭| ০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:১৩

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর +

০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ১২:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ কবি।

৪৮| ০৬ ই জুন, ২০১৪ রাত ২:৫০

সায়েম মুন বলেছেন: কবি এবং সংগ্রহ ও সম্পাদনাকারী সবারই মাথার ঘাম পায়ে পড়েছে নিশ্চয়ই। :P
পিডিএফটা ডাউনলোড করে নিলাম। সময় করে শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলো পড়ে নিবো। :)

০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:০৪

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কষ্টটা বুঝেছেন বলে ভালো লাগলো কবি।

ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন কবি সায়েম মুন।

৪৯| ০৬ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১১:৫৮

রাবেয়া রব্বানি বলেছেন: স্বনির্বাচিত বলেই উত্তেজনা ছিল কিন্তু মুগ্ধতা আছে। সাধুবাদ

০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:২৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। ভালো থাকবেন।

৫০| ০৬ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৪১

রাইসুল নয়ন বলেছেন:


avro r ovabe bangla likhte parchina :(

prosnota ahammoker moto hote pare ,tobuo ei bisoyta jante icche korche !!

apnar kobita dekhlam na :( naki amar kothao vul hocche !

idaning sob vule jai ,sobkichu vul hoy .

onek kosto korchen songkoloner sarthe ,bisoyta nissartho .


suvokamona sobsomoyer jonnei ,touo vodrota kore ullekh ar ki :)

০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:২৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার ভুল হয় নি ;) তবে ৪৪ নম্বর কমেন্টের উত্তরে একটা কবিতা দেয়া হয়েছে ;)

ধন্যবাদ রাইসুল নয়ন ভাই। ভালো থাকবেন।

৫১| ০৭ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:৩২

ইখতামিন বলেছেন:
উভয় সংকলনই অনবদ্য। অবশ্যই খাটতে হয়েছে বোঝা-ই যায়, প্রিয়তে নিয়ে রাখলাম। পড়তে হবে সবগুলো।
অসাধারণ একটা সংকলন

০৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৩৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ ইখতামিন ভাই।

৫২| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১০

স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
ব্যাপারটা অনেকটা সেরকমই !

নতুন লেখাটা দেখবেন সময় করে !

কৃতজ্ঞতা সব সময়ের !

০৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ৮:৩৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জেনে ভালো লাগলো ;) হ্যাঁ, অবশ্যই আপনার লেখা পড়তে যাবো।


ভালো থাকুন স্বপ্নচারী গ্রানমা।

৫৩| ০৭ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৪০

ভারসাম্য বলেছেন: হাওয়া রানী এখন কোথায়? ;)

০৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ৯:৩৮

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: জানা নেই :(


:) :)

৫৪| ০৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ১০:৪৮

মশিকুর বলেছেন:
এই পর্বেতো দেখি আমার অনেক প্রিয় কবিরা আছেন :) তবে শেষ পর্যন্ত দেখতে পারছি না :( ব্রাউজার ইন্সটল করার চেয়ে বরং পিডিএফটা ডাউনলোড দেই।

এই সংকলনটা আমার কবিতার প্রতি আগ্রহ বাড়িয়েছে +

শুভকামনা।

০৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ১১:০৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার কমেন্টে অনেক অনুপ্রাণিত হলাম মশিকুর ভাই।

ধন্যবাদ, ভালো থাকবেন।

৫৫| ১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: অনেক পরিশ্রমী ধারাবাহিক পোস্ট।

ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা, সাধুবাদ রেখে গেলাম।

১৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ১১:২৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় ইসহাক ভাই।

৫৬| ১৫ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ২:০৮

এহসান সাবির বলেছেন: আগেই দেখেছিলাম।

পিডিএফ ডাউনলোড............

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

১৭ ই জুন, ২০১৪ রাত ১১:২৯

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আবারও ধন্যবাদ প্রিয় এহসান ভাই।

৫৭| ০৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৩

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন: দীর্ঘদিন পরে এসেই এই পোস্টটির কথা মনে হলো। কঠিন শ্রমসাধ্য কাজটির জন্য মহান রবের কাছে আপনার সুখময় জীবনের প্রার্থনা করছি।

পিডিএফটা ডাউনলোড হচ্ছে না। কষ্ট করে আগেরটার মত ইনবক্সে দিলে কৃকৃতজ্ঞ থাকবো।

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:৩৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ইনবক্সে সেন্ড করার চেষ্টা করলাম। পারলাম না। দেখি, স্পিড ভালো পেলে আবার ট্রাই করবো।

ধন্যবাদ সাইফ সিরাজ ভাই।

৫৮| ০৫ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩২

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: যখনই সামুতে এসেছি তখন-ই এই পোস্টটা পুরোটা পড়তে চেয়েছি কিন্তু দুর্ভাগ্য আজকেও পারলাম না... কিছু দেখা যায় বাকি সব কালো ... এতদিন কমেন্ট ও করতে পারিনি! আজ কমেন্ট করার সুযোগ পেলাম, অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া!

০৫ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ আপু।

৫৯| ২৬ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:১৮

মনিরুল হাসান বলেছেন: দারুণ প্রশংসনীয় উদ্যোগ, উৎসাহ ও খাটুনি।
পোস্টের শেষে পোস্ট শেষ বা সমাপ্ত লিখে দিলে ভালো হতো। নাহলে মন্তব্য পড়ার পর পোস্ট পুরোটুকু দেখলো কিনা এই ব্যাপারে পাঠকের মনে সন্দেহ থেকে যাবে।
(আমি সম্ভবত ব্রাউসার পরিবর্তন বা সিলেক্ট করা ছাড়াই পুরোটুকু দেখছি।)

০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: পাঠ ও পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ মনিরুল হাসান ভাই।

৬০| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৪

সালমাহ্যাপী বলেছেন: বাহ... একেকজনের কবিতা একেকরকম ভাবে ভালো লাগলো...
অসাধারন উদ্দ্যোগ...

প্রিয়তে নিতেইই হয় :)

০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। এতদিন কোথায় ছিলেন?

৬১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৪৯

বাঙ্গাল অ্যানোনিমাস বলেছেন: এবং প্রিয়তে ... ;)

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫১

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ বাঙ্গাল অ্যানোনিমাস।

৬২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১০:৫১

বাঙ্গাল অ্যানোনিমাস বলেছেন: আরো একবার প্লাস!!

২২ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আরও একবার ধন্যবাদ ;)

৬৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:০৫

কসমিক- ট্রাভেলার বলেছেন:





++++++++++

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৬

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ কসমিক- ট্রাভেলার।

৬৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:০৮

মাঝিবাড়ি বলেছেন: লাইলী আরজুমান খানম লায়লা

'মহোৎসব '

হৃদয় ছুঁয়েছে আমার, দারুণ লিখা রে!

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ মাঝিবাড়ি।

৬৫| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৯

বাড্ডা ঢাকা বলেছেন: পোষ্ট প্রিয়তে।

২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৭

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ বাড্ডা ঢাকা।

৬৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০২

প্রফেসর মরিয়ার্টি বলেছেন: পরিশ্রমসাধ্য কাজ। চমৎকার এই উদ্যোগটি ৩য় পর্বে শেষ হয়ে যাবে ভাবতেই খারাপ লাগছে। এই উদ্যোগটি প্রতি বছর বইমেলার আগে চালু রাখা যায়।

আপনার কলেজ জীবনে লেখা কবিতাগুলো নিয়ে কোনো পোষ্ট করা যায় না?

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এটা আসলে সামহোয়্যারইন ব্লগের বিভিন্ন কবির এ যাবত লিখিত সেরা কবিতা নিয়ে তৈরি করা একটা পোস্ট।


আপনার কমেন্টের লাস্ট লাইন পড়ে চিন্তায় পড়ে গেলাম- আমরা পূর্ব পরিচিত কিনা। তবে আপনার আইডিয়াটা আমার মাথায় ঢুকে গেলো। আমার কলেজ জীবনের কবিতাগুলো আলাদা করতে হবে তাহলে!!

এ আইডিয়া থেকেই মনে হচ্ছে ব্লগারদের কলজে জীবনে লেখা সেরা কবিতা নিয়েও একটা পোস্ট করা যায়। আমি আপাতত ব্যস্ত আছি বলে এ প্রজেক্ট হাতে নিতে পারছি না। তবে, ইচ্ছে করলে আপনি এটা করতে পারেন। যথাসাধ্য শহযোগিতা করবো।

৬৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:১০

প্রফেসর মরিয়ার্টি বলেছেন: সাম্প্রতিক মন্তব্য থেকে পড়তে এসে, ২য় পর্ব দেখে ভেবেছিলাম হয়ত নতুন কোনো পোষ্ট। যাই হোক এই বছর এমন একটা উদ্যোগ আবার নিতে পারেন।

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:১৩

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: উপরে বক্তব্য তুলে ধরেছি। শুভেচ্ছা।

৬৮| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:২৩

স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: ব্লগে কত কিছু যে মিস করেছে !! আর কি কোন পর্ব আসবে।
পোস্ট প্রিয়তে।

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৫

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমি অবাক হলাম এই কারণে যে, হঠাৎ করে এ পোস্টে কীভাবে এলেন? যাই হোক, আপাতত আমার কোনো প্ল্যান নেই, তবে মনে হচ্ছে এরকম উদ্যোগ আরো নেয়া যেতে পারে। ভাবছি। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.