নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
আমাদের ক্লাসমেট জাহিদের জন্য আমরা পাত্রী দেখতে গেলাম। অনেক কথা হচ্ছে, হাসিঠাট্টা, গল্পগুজব হচ্ছে। আড্ডার শেষ পর্যায়ে যেয়ে মেয়েটি জিজ্ঞাসা করে বসলো, ‘আচ্ছা, পাত্র কে?’
***
এক সুদর্শন যুবক নিজের জন্য সুপাত্রী খুঁজছিল।
সে সদাহাস্য, সপ্রতিভ এবং চৌকষ। ৩৮ কিংবা ৪০ বছর বয়স হলেও তাকে ১৮ বছরের টগবগে তরুণের মতো দেখায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও সে বিয়ে করতে পারছিল না। এটা ওর দোষ নয়, মেয়েদের দোষ। বরপ্রার্থিনীকে গান ও সাহিত্যসহ সকল কলায় পারদর্শিনী হতে হবে। এমন কলাবরিষ্ঠা মেয়ের খুব অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছিল।
সে ঘরে ঘরে কনে দেখে। কনেদের বড় বোন বা মা-খালারা ‘যুবকের’ প্রকৃত বয়সের কথা জানতে পেরে ঠোঁট উলটালেও ‘কচি’ মেয়েরা ‘ওর বয়স নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই’ বলে তৎক্ষণাৎ ‘কবুল’ বলে ফেলতে রাজি হয়ে যায়। কিন্তু সে নিরিখ করে দেখতে পায়, মেয়েটির ‘কলা’ বলতে আসলে কিছুই নেই।
যুবকের মা, বোন ও ভাইয়েরা ত্যক্তবিরক্ত হয়ে ‘এরপর সামনে যে-কোনো মেয়েকে পাওয়া মাত্র বিয়ে করতে হবে, অন্যথায় আমরা আর তোমার সাথে নেই’ মর্মে হুঁশিয়ারি ঘোষণা করলে সে শেষবারের মতো পাত্রী নির্বাচনে বের হয়েছিল।
পাত্রী নির্বাচনই বটে। তবে এ গল্পটি কোনো পাঠ্যবইয়ে পাওয়া গেলে শিক্ষার্থীরা এটি পাঠ শেষে শিরোনামে নির্ঘাত বানান ভুল হয়েছে মনে করে এটিকে ‘পাত্রী নির্বাচন’ ভেবে নিতেন। তাঁদের উদ্দেশ্যে বলে রাখি- আমি নিজেও গল্পটির নাম শুরুতে ‘পাত্রী নির্বাচন’ই রেখেছিলাম। পরে মনে হয়েছে, ওটি একটা বড় রকমের ভুল হতো।
চলুন, গল্পের ভিতরে যাওয়া যাক।
ঘরে ঘরে কনে দেখার পর আর মাত্র একটি পাত্রী দেখবে বলে গল্পের নায়ক এই শর্তে মনস্থির করে যে, এই মেয়েটি মনের মতো না হলে সে তৎক্ষণাৎ চির-কুমারত্ব গ্রহণের ঘোষণা দেবে। তার একজন মননশীলা, সংস্কৃতিমনা পাত্রীর প্রয়োজন, যার মধ্যে সমুদয় রমণীয় গুণাবলি বিদ্যমান। রবি ঠাকুরের গান জানতে হবে তাকে, কাব্যকলায়ও তার অসাধারণ দখল থাকতে হবে।
দৈবক্রমে সর্বশেষ কনে দেখার দিন তার এক বাল্যবন্ধুর আবির্ভাব হয়, কোনো এক কালে যে-বন্ধুটি তার অন্তরের একটি অংশ ছিল। যদিও কাল পরিক্রমায় পার্থিব কারণেই তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল, তথাপি এই আকস্মিক উপস্থিতিতে দু বন্ধুর মিলন খুব মধুময় হয়েছিল। এ বন্ধুর কনে-ভাগ্য খুব ভালো, তার নিজের জন্যই শুধু নয়, বন্ধুদের জন্যও। তার দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে, কেবল তার ভাগ্যেই এ কন্যায় বন্ধুর কপালে বউ জুটবে।
ধরা যাক, ফাহিম আর জামান দু বন্ধুর নাম।
ছিমছাম ড্রইং রুম ভর্তি মেহমান- এক পাশে বরের জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা বর্ষীয়ান আমজাদ খান, সাদা-কালোয় মেশানো শ্মশ্রুমণ্ডিত মুখ, অষ্টাদশ বর্ষীয় কলেজ-গোয়িং কন্যার পঁয়তাল্লিশ বর্ষীয় পিতা; তাঁর চেয়ারের পাশে তদীয় ছোটো ভাই, চল্লিশ বর্ষীয় আরফাজ খান।
ফাহিম আর জামান পাশাপাশি বসেছে। ফাহিমের বামপাশে দুটি চেয়ার খালি রাখা হয়েছে, তেমনি জামানের ডান পাশে দুটি চেয়ার কীভাবে বা কেন খালি রয়ে গেছে, তা অজ্ঞাত। আরেক পাশে কনের দুলাভাই, তাঁর পাশ ঘেঁষে কনের বড় মামা।
‘আসসালামুআলাইকুম।’
পুরো ড্রইং রুম আলো করে সে দরজায় এসে দাঁড়ায়। কনে দেখে সবার চোখ জুড়িয়ে গেলো। এক অপূর্ব স্নিগ্ধ আভা তার সর্বাঙ্গে খলখল করে। ডানহাত উঁচিয়ে রাজকীয় রীতিতে ঈষৎ শির-অবনত ভঙ্গিতে সবার উদ্দেশে সালাম জানালো সম্রাজ্ঞী, সেই সঙ্গে স্মিত হাসির বিচ্ছুরণ, বিধাতার আপন হাতে গড়া সুন্দরী কন্যার আলো-ঝলমল হাস্য আর মধুর কণ্ঠস্বরে সবার প্রাণ ভরে গেলো।
‘ওয়ালাইকুম আসসালাম।’ সকলে সমস্বরে প্রত্যুত্তুর করলেও আমজাদ খান বেশ উচ্চস্বরে দীর্ঘক্ষণ টেনে সালামের জবাব দিয়ে কন্যাকে জানিয়ে দিতে সচেষ্ট হলেন, এ ‘পাত্রীনির্বাচন’ সভায় তিনিই সর্বমান্য গুরুজন।
কন্যার একজন সঙ্গিনী আছে, চিরাচরিত ও আধুনিক উভয় প্রথাতেই এর ব্যত্যয় খুব কম দেখা যায়; অর্ধ ঘোমটাবৃত, সলাজ হাসি ঝরে তার বদনে, কন্যার পাশ ঘেঁষে খুব কাঁচুমাচু হয়ে বার বার পড়নোন্মুখ ঘোমটা টেনে দাঁড়িয়ে।
ফাহিমের মনে সহসা এক অবান্তর প্রশ্নের উদয় হলো- পাত্রী কে? সামান্য ভ্রম হবার অবকাশ আছে বটে। নির্বাচনী সভায় পাত্রীর লম্বা একখানি ঘোমটা থাকে, চিকনলতার মতো তার বাঁকা দেহবল্লরী সামনে নুয়ে পড়ে। পুরো নয়, এর সামান্য আভাস পেছনের ‘লজ্জাবতী’র মাঝে ফুটে আছে। কিন্তু পাত্রী সে নয়। সে তার সম্মুখের সহচরিণীকে পেছন থেকে দু হাতে জড়িয়ে। আগের যুগে পেছনের লজ্জাবতীকেই সবাই পাত্রী জ্ঞানে সুনিশ্চিত হতো। ফাহিম কিছুটা আগের যুগের ধারণাবাহক, তার ভুল হতেই পারে। তবে জামান নিশ্চিত, এদের যে কোনো একজনই যে-কোনো সভায় ‘পাত্রী’ হবার জন্য ঢের যোগ্যতা সম্পন্না।
‘ভিতরে আসবো?’ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর, অত্যাধুনিকা কোকিলকণ্ঠীর গলা থেকে মধু ঝরে পড়লো।
লাবণ্য দর্শনে মুহূর্তকালের জন্য বাকরহিত সভার ভিতর থেকে হঠাৎ ‘জি হ্যাঁ, অবশ্যই আসবেন, অবশ্যই, আসুন ভিতরে, বসুন’ বলে ওঠেন আমজাদ খান। সুদর্শনা মিষ্টি হেসে গৃহপ্রবেশ করে।
আমজাদ খান হাসিমুখ করে সামনে উপবিষ্টা কন্যাগণের দিকে চোখ রাখেন। তিনি ওদিকে তাকাতেই দুটি মেয়ে একসঙ্গে তাঁকে উদ্দেশ্য করে পুনর্বার বলে উঠলো, ‘আসসালামু আলাইকুম।’ আমজাদ খান স্বভাবসুলভ উচ্চ-গম্ভীর স্বরে সালামের জবাব দিয়ে বলেন, ‘আপনারা ভালো আছেন তো?’
‘জি ভাইয়া। আপনি ভালো?’
‘আল্লাহ্র অশেষ মেহেরবানি।’ একটু বিরতি দিয়ে আমজাদ খান বলেন, ‘ফাহিম, জামান, তোমরা কথা বলো। টেক দেয়ার ইন্টারভিউ।’
জামান অবাক হয়। ‘টেক দেয়ার ইন্টারভিউ’ মানে কী? পাত্রী কি তাহলে দুজন? দু পাত্রী কি তাহলে দু জনের জন্য নাকি? এমন তো কথা ছিল না।
ফাহিম জিজ্ঞাসা করে, ‘আপনাদের নাম?’
‘প্রগতিশীলা’ হেসে জানায়, ‘আমি নির্ঝর।’
‘বা বা, চমৎকার।’ আমজাদ খান উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেন, ‘একেবারে রাবিন্দ্রিক নেইম। জানো বোন, নির্ঝরকে নিয়ে রবীন্দ্রনাথের একটা বিখ্যাত কবিতা আছে?’
‘কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও, তারই রথ নিত্যই উধাও...’ আরফাজ খান খুব দরদ দিয়ে আবৃত্তি করে উঠতেই আমজাদ খান বাধা দিয়ে বলেন, ‘একটু ভুল করে ফেললে তুমি।’ কথা শেষ না হতেই জামান বলে উঠলো, ‘আজি এ প্রভাতে রবির কর...।’ আমজাদ খান হাতে তুড়ি মেরে বলেন, ‘দ্যাটস্ ইট। দ্যাটস্ ইট।’ আরফাজ খান লজ্জিত ও বিব্রত হলেন।
জামান বললো, ‘আপনাদের ‘প্রিয় সঙ্গীত’ কোনটা? রবীন্দ্রসঙ্গীত, নাকি নজরুল?’
কন্যারা কিছুটা হোঁচট খায়। নির্ঝর বলে, ‘আসলে বাংলা গান অনেকদিন আমাদের শোনা হয় না। তবে, আমার কাছে হিন্দি ভার্সন রবীন্দ্রসঙ্গীতের একটা সিডি আছে। মাঝে মাঝেই শোনা হয়।’
‘আসলে হিন্দি গানের কোনো তুলনা হয় না। গানের জন্য হিন্দি...।’ কন্যার দুলাভাই বলে ওঠেন। তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে আরফাজ খান বলেন, ‘যুদ্ধের জন্য ইংলিশ মুভি।’
‘আসলেই। এখনো অড্রে হেপবার্ন আমার স্বপ্নের নায়িকা। জানেন, ‘রোমান হলি ডে’ দেখার পর...।’ আমজাদ খানকে থামিয়ে দিয়ে আরফাজ খান বলে ওঠেন, ‘ওহ..., তুমি একটু ব্যাকডেটেড। অড্রে হেপবার্ন মরে ভূত হয়ে গেছে সেই কবে... এখন হলো ব্রুকশিল্ড-ম্যাডোনাদের যুগ।’
‘ব্রুকশিল্ড আর ম্যাডোনাদের যুগও পার হয়ে গেছে এক ডিকেড আগে। এখন হলো অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আর জেনিফার লোপেজদের যুগ।’ জামান বললো।
কোথা থেকে যেন তাঁদের আলোচনা শুরু হয়েছিল? হ্যাঁ, কন্যাদের নামপরিচয় থেকে- ‘নির্ঝর।’ রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে ‘ক্রিয়েশন অব আর্থ’, তারপর ‘চূড়ান্ত’ ও বিতর্কিত বিষয- ‘দ্য এক্সিসটেন্স অব গড’-এ গিয়ে তা পৌঁছলো। তবে তাদের এই ‘জমজমাট’ আলোচনায় ‘হ্যাঁ-হুঁ’ বলে কাউকে ‘সায়’ দেয়া, প্রয়োজনমতো হাসি-উপহার প্রদান ছাড়া ‘বরপ্রত্যাশিনীদের’ বড় কোনো কাজ ছিল না। কিন্তু তাদের মধ্যে কিছুটা বিরক্ত বোধের জন্ম হলো, কারণ, তারা লক্ষ করে দেখে- সুদর্শনাদের কাছে নিজেকে ‘শ্রেষ্ঠ’ প্রমাণের জন্য প্রত্যেকের মধ্যে একটা ঠাণ্ডা প্রতিযোগিতা চলছে। তবে এটা তারা দুজনেই খুব উপভোগ করছিল তা প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়।
‘তোমরা কিছু বলো।’ আমজাদ খান বললেন।
‘মেয়েরা’ পরস্পরের মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে। নির্ঝর বলে, ‘আপনারাই বলুন। আপনাদের আলোচনায় আমরা খুব মজা পাচ্ছি।’
দ্বিতীয় কন্যার উদ্দেশে আরফাজ খান বললেন, ‘আপনার নামটি কি জানতে পারি?’ দ্বিতীয় কন্যা ঝটপট জবাব দেয়, ‘আমার নাম শিমলা। আমি ওর ছোটো আন্টি হই।’
আরফাজ খান খুব ছোটো শব্দে ‘স্যরি’ বললেন। তিনি ‘শিমলা আন্টিকে’ কন্যার ‘বোন’ ভেবেছিলেন।
‘শিমলা আন্টি কি এখনো স্টুডেন্ট?’ জামান জিজ্ঞাসা করে।
‘কেন, আমার কি লেখাপড়ার বয়স পার হয়ে গেছে?’ মিটিমিটি হেসে শিমলা জবাব দিয়ে মাথা নিচু করে।
‘না, মানে আপনি কোন কলেজে পড়েন তা জানতে ইচ্ছে করছে।’ ফাহিম বলে।
‘আমি কলেজে পড়ি না।’
‘নেভার মাইন্ড,’ আরফাজ খান বলেন, ‘অনেকে বুড়ো বয়সেও স্কুলে ভর্তি হয়। আসলে পড়ালেখার কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই।’
মেয়েরা মিটিমিটি হাসতে থাকে।
কনের বড়মামা আর মুখ বন্ধ করে থাকতে পারছিলেন না। তিনি গম্ভীর স্বরে বলে উঠলেন, ‘শিমলা এবার অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ছে।’
বরপক্ষের মাথা হেঁট হবার জো হলো।
‘দাদা, আমি উনাদের একটা প্রশ্ন করি।’ শক কাটিয়ে ওঠার উদ্দেশ্যে মেয়েদের লক্ষ করে ফাহিম বলে, ‘এবার আপনাদের কথা বলুন।’
‘আমাদের সবার কথা বলবো কেন? এখানে পাত্রী মাত্র একজন। পাত্রী সম্বন্ধে আপনাদের কিছু জানার থাকলে বলুন।’ নির্ঝর বলে।
‘স্যরি, আমাদের ভুল হয়ে গেছে’, জামান বলে, ‘নির্ঝর, আপনাকেই একটা প্রশ্ন করি।’
‘অসংকোচে বলুন। আমি আপনাদের ইন্টারভিউয়ের জন্য প্রস্তুত।’ নির্ঝরের কণ্ঠে ঠাণ্ডা কৌতুক।
‘আমরা এটাকে ইন্টারভিউ না বলে একাডেমিক ডিসকাশন বলতে পারি।’ জামান বলে।
‘তা হবে কেন?’ নির্ঝর কিছুটা রূঢ় স্বরে বলে, ‘এটা কোনো মতবিনিময় সভা নয়। এটা এটা পাত্রীনির্বাচনী সভা। আমার কাছ থেকে আপনাদের অনেক কিছুই জানার থাকতে পারে। পারে না?’
‘আলবত পারে। কিন্তু আপনিও প্রশ্ন করতে পারেন, যে কোনো প্রশ্ন। আমরা প্রস্তুত।’ জামান বলে।
রমণীরা মুখ টিপে হাসতে থাকে, যার অর্থ সবাইকে প্রশ্ন করে লাভ নেই, পাত্র তো একজনই।
একটা বেফাঁস প্রশ্ন করে বসলো ফাহিম, ‘আচ্ছা, আপনাদের বয়স কত?’
শিমলার মুখমণ্ডল লাল হয়ে উঠলো, যদিও নির্ঝরের চেহারায় কোনো ভাবান্তর নেই। কন্যাদের জবাবের আগেই আমজাদ খান স্বগতোক্তি করে বলেন, ‘মেয়েদের বয়স জিজ্ঞাসা করতে নেই।’
‘আমার এখন বাইশ বছর।’ নির্ঝর বলে।
‘এ পারফেক্ট এইজ ফর দ্য ম্যারিজ।’ জামান উচ্ছ্বসিত স্বরে বলে।
‘যদিও আমি নিশ্চিত নই এ বয়সেই আমার বিয়ে হবে কিনা।’ নির্ঝর হাসতে হাসতে বলে।
আমজাদ খান আদম-হাওয়ার উল্লেখ করে বললেন, ‘বিয়ের জোড়া আল্লাহ্ তা'য়ালা আগেই নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। পুরুষের বাম পাঁজরের হাড় থেকে নারীর সৃষ্টি।’ যদিও তাঁর এ তত্ত্ব দ্বারা প্রমাণিত হলো না যে, এ বছরই নির্ঝরের বিয়ে হবে, একেবারে মোক্ষম বয়সে।
ফাহিম সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাঁচের একটা প্রশ্ন করলো, ‘আপনি কি নারীর সম-অধিকার চান?’
‘অবশ্যই চাই,’ নির্ঝর বলে, ‘তবে কথা হলো, ‘আপনাদের’ পুরুষ-শাষিত সমাজে নারীর সম-অধিকারের প্রশ্নটি বাতুলতা মাত্র।’
‘এ কথা কেন বললেন?’ জামান বলে।
‘নারীরা কি কোনো অধিকার ভোগ করতে পারছে? আমাদের চলার কোনো স্বাধীনতা নেই। বোরখা না পরে বের হবার কোনো উপায় নেই।’
‘একজন সুশিক্ষিতা মেয়ে হিসাবে আপনার এ কথাটি বেমানান। বোরখা পরার বিধান সমাজ আপনার ওপর চাপিয়ে দেয় নি, এটা আপনি নিজেই আত্মরক্ষার হাতিয়ার হিসাবে বেছে নিয়েছেন।’
‘এটা আপনি ঠিক বলেন নি। এই বিধানটা সমাজেরই চাপিয়ে দেয়া। সমাজই বিধান করে দিয়েছে, হে নারীরা, তোমরা পর্দা করো। এ কথাটা পুরুষকে কেন বলা হলো না? এখানেই কিন্তু নারীদের অধিকার খর্ব করার বিষয়টা ধরা পড়ে। নারীরা পর্দার আড়ালে গৃহবন্দি থাকবে, পুরুষরা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করবে। সমাজ যদি নারীদের অধিকারের ব্যাপারে সচেতন হতো তাহলে নারীর স্বাধীনতার কথাটিই সবার আগে ভাবতো।’
‘আপনি কিন্তু এখানে পরোক্ষভাবে পুরুষের অধিকারের পাল্লাটাই ভারী করে দিলেন। সমাজপতি যদি হয় পুরুষেরা, তাহলে নারীরা কেন পুরুষের মুখাপেক্ষী হয়ে পুরুষের কাছ থেকে স্বাধীনতা প্রত্যাশা করবে? নারীরা কেন শৃঙ্খল ভেঙে ফেলে না?’ জামান বলতে থাকে।
ফাহিম জামানের পক্ষ নিয়ে বলে, ‘নারীরা কোনোদিন শৃঙ্খল ভাঙতে পারবে না। শৃঙ্খল ভাঙতে পেশিশক্তির প্রয়োজন, যা নারীদের নেই। নারীরা প্রকৃতিগতভাবেই দুর্বলমতি এবং কাপুরুষোচিত এবং ভীরুও বটে।’
‘মানলাম না।’ নির্ঝর বলে।
‘সেটা ব্যক্তিগত ব্যাপার, মানা আর না মানা। কিন্তু দিস ইজ দ্য রিয়েলিটি, ছেলেরাই মেয়েদেরকে ইভটিজিং করে থাকে, মেয়েরা ছেলেদেরকে নয়।’ জামান বলে।
‘দ্যটস দ্য পয়েন্ট।’ নির্ঝর বলতে থাকে, ‘পুরুষরা কতখানি বর্বরোচিত সেটা চিন্তা করুন। এই বর্বর পুরুষ-সমাজে নারীরা কতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে? কীভাবে?’
‘কিন্তু আমার প্রশ্নও এখানেই।’ জামান বলে, ‘স্বাধীনতা ভোগ করবার প্রশ্নটা আসছে কেন? কেন বলা হচ্ছে না যে, নারীরা পুরুষদেরকে স্বাধীনতা দিচ্ছে না? নারীদের কেউ হাত-পা বেঁধে রাখে নি। তারাও পুরুষের মতোই বন্ধনহীন। পুরুষরা কি কখনো বলেছে, আমরা নারীদের মতো সমান অধিকার চাই? অধিকার একটা অদৃশ্য ভাববাচক শব্দ মাত্র, যা কেউ কোনো প্রকোষ্ঠে আটকে রাখে নি। এটার ফল যে কেউ ইচ্ছেমতো ভোগ করতে পারে। এক বাটি দুধ চাওয়ার মতো কেউ যদি বলে আমাকে একটুখানি অধিকার দাও, তা নিতান্তই হাস্যকর শোনায়।’
‘সমাজ কিন্তু পুরুষরাই নিয়ন্ত্রণ করছে...’ নির্ঝর কথা শেষ করবার আগেই জামান তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে, ‘আমিও তো তাই বলছি। কিন্তু নারীরা কেন পুরুষের হাতে সেই নিয়ন্ত্রণের ভারটা তুলে দিল? নারীরা কি পারছে না সমাজ নিয়ন্ত্রণ করতে?’
‘কীভাবে পারবে? ইভটিজিংয়ের কথা বলছিলেন...’ এবারও নির্ঝরের কথায় বাধা দিয়ে জামান বলে, ‘হ্যাঁ, ঐ কাজটা মেয়েরা করতে পারে না? মেয়েরা কেন দু-চারজন সুদর্শন যুবককে অপহরণ করে সপ্তাহ খানেক আটকে রাখে না?’
‘তা করতেই পারে মেয়েরা। কিন্তু আপনি চিন্তা করুন ঐ মেয়েগুলো তখন কোন মুখে সমাজে বের হবে?’
‘আসলে আপনারা কিন্তু ঐ এক জায়গা থেকেই বের হতে পারছেন না। এর উলটোটার কথা কেন না ভাবছেন যে, ঐ ছেলেগুলো তখন কীভাবে সমাজে মুখ দেখাবে? আপনারা নিজেরাই পুরুষের হাতে সবকিছু ছেড়ে দিয়ে, ঠেলে দিয়ে ফিরে পাবার জন্য হা-হুতাশ করছেন।’ জামান এ কথা বলে থামলো।
নির্ঝর বোধ হয় গুছিয়ে উঠছিল কিছু একটা বলবে বলে। এই ফাঁকে আরফাজ খান মুখ খুললেন, ‘মেয়েরা অধিকার দিয়ে কী করবে আমি তো সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না। স্বামীর সংসারে তারা থকেবে। রান্না-বান্না ঘরকন্না তাদের কাজ। এখানে অধিকার-অধিকার করে গলা ফাটানোর সময় কোথায়?’
আরফাজ খানের কথায় সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
আমজাদ খান নড়েচড়ে বসে বললেন, ‘তোমাদের এই আলোচনা এখন আমার একদম পানসে মনে হচ্ছে। ধান ভানতে শীবের গীত। তোমরা মেয়ে দেখো।’
মেয়ের দুলাভাই বললেন, ‘মেয়ে সম্পর্কে আরো কিছু জানবার থাকলে বলুন।’ এমন সময় বাইরে থেকে একজন লোক এসে দুলাভাই মহোদয়ের কানে কানে কী যেন বলে গেলো। দুলাভাই ‘স্যরি’ বলে শুরু করলেন, ‘আমরা কি একটু ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসতে পারি?’
‘তার আগে’, আরফাজ খান বলেন, ‘আরেকটা কাজ বাকি আছে। নির্ঝর, আপনি একটু হাঁটুন তো দেখি আমাদের সামনে।’
‘আমার শ্যালিকাটি কিন্তু ন্যাংড়া কিংবা খুঁড়া নয়’, দুলাভাই অতিথিদের উদ্দেশে কৌতুক করে বলেন। তারপর বললেন, ‘নির্ঝর, একটু হেঁটে দেখাও তো!’
নির্ঝর বিনা প্রতিবাদে উঠে ঘরময় একপাক হাঁটলো।
‘ইটস ওকে। ইটস ওকে।’ বলে আমজাদ খান নির্ঝরকে সোফায় বসতে বললেন।
‘একটু ক্যাটওয়াক করে দেখাবো?’ বসতে বসতে এ কথা বলে নির্ঝর ফিক করে হেসে ফেললো। পাত্রপক্ষ নিজেদের নির্বুদ্ধিতায় লজ্জিত হয়ে মাথা নীচু করে নীরব থাকলেন।
‘ক্যাটওয়াক আমার দারুণ পছন্দ।’ আবহ স্বাভাবিক করার জন্য জামান উদ্যোগী হলো। সে হাসতে হাসতে বলতে থাকে, ‘একটা মেয়ের সবটুকু আর্ট তার ক্যাটওয়াকের মধ্য দিয়ে ফুটে ওঠে।’ মেয়েরা হাসতে থাকলে জামান কৌতুকের মাত্রা বাড়ানোর জন্য আরো যোগ করলো, ‘আসলে এটাকে ক্যাটওয়াক না বলে টাইগার-ওয়াক বললে শিল্পটায় একটু ভারী ভারী ভাব জাগে।'
‘আপনার কথাগুলো কিন্তু আমার খুব ভালো লাগছে।’ জামানের উদ্দেশে নির্ঝর বলে উঠলো, ‘আপনি খুব জলি-গুড-ফেলো। আপনার কথাগুলো সিরিয়াস, কিন্তু খুব সহজেই বলে ফেলেন। ‘প্রাঞ্জল’ আর কী!’
আমজাদ খান বলেন, ‘জামানের কিন্তু বড় একটা পরিচয় আছে।’ মেয়েপক্ষের চোখ বড় হতে থাকে। তিনি বলেন, ‘ও একজন প্রতিভাবান লেখক। ওর নাম শোনেন নি?’
এ বাড়ির মেহমানরা নড়েচড়ে বসেন। নির্ঝর জিজ্ঞাসা করে, ‘স্যরি, উনার নামটা শোনা হয় নি।’
‘কার লেখা বেশি পড়েন?’ জামান জিজ্ঞাসা করে।
‘স্পেসিফিক কেউ নেই।’ নির্ঝর জবাব দেয়, ‘সমরেশ মজুমদারের লেখা অবশ্য একটু বেশিই পড়ি।’
‘তাঁর অবশ্য দু বাংলা জুড়ে নামডাক। হালে তাঁর পাঠকসংখ্যাই সর্বাধিক বলে আমার ধারণা।’
‘আপনি সাতকাহন পড়েছেন?’
‘শুরু করেছিলাম। বিখ্যাত উপন্যাস। তবে আমি খুব কষ্ট করে ৮৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়েছিলাম।’
‘উহ্হু, এটা কিন্তু ঠিক করেন নি। পুরোটা পড়া আপনার উচিত ছিল।’ নির্ঝর বলে।
‘বইটি আমার কাছে আহামরি গোছের কিছু মনে হয় নি।’ জামান বললো।
নির্ঝর আশ্চর্য হয়ে বলে, ‘বলেন কী! আপনার সাথে আমি একমত হতে পারলাম না। স্যরি। দুঃখিত। সাতকাহন একটা অসাধারণ উপন্যাস।’
জামান দৃঢ়তার সাথে বলে, ‘তা মানছি। গল্প অসাধারণ হলেই উপন্যাসটা যে অসাধারণ হবে তা কিন্তু নয়। একটা অতি সাধারণ গল্প লেখকের বর্ণনায় উৎকৃষ্ট সাহিত্যকর্ম হয়ে উঠতে পারে। আমি যা বলতে চাইছি তা হলো, সমরেশ বাবুর গল্প বলার ঢংটা আমার কাছে বিরক্তিকর মনে হয়। তাঁর সংলাপগুলো মনে হয় আর্টিফিশিয়াল। হুমায়ূন আহমেদ কিংবা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বর্ণনা এবং সংলাপগুলো যেমন বুকের ভেতরে গিয়ে গেঁথে যায়, তাঁর বেলায় তা হয় না, বড্ড নীরস মনে হয়। অবশ্য, এটা আমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মতামত।’
‘আমিও জামানের সাথে একমত হতে পারলাম না। আই এ্যাম স্যরি মাই ফ্রেন্ড।’ ফাহিম মুখ খুললো।
শেষ পর্যন্ত খাবার টেবিলে না গিয়ে তাঁদের হলো না। খেতে খেতে আবারও শুরু হলো জম্পেশ গল্প।
এই ‘এন্ডলেস’ আড্ডা বহুরাত অব্দি চলেছিল। কনে-দেখার মতো একটা গম্ভীর আবহে ম্যারিজ সেটেলমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার চেয়ে বহির্বিধ বিষয়াদিতে তাদের আগ্রহ অনেক বেশি ছিল। কন্যাপক্ষীয় মাতুল বা ভগ্নিপতিগণ কিছুটা বিরক্তবোধ করছিলেন বৈকি, কিন্তু মেয়েদের কাছে এসব বাস্তবিকই বিপুল রসময় ও উপভোগ্য হয়ে উঠেছিল।
জামান আর ফাহিম রমণীযুগলের সাথে খোশগল্পে মেতে উঠেছিল। কৌতুকরঙ্গ থেকে শুরু করে গান, সাহিত্য, খেলাধুলা, কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স, ইত্যাদি সব বিষয়ে তাদের তুখোড় মিল হলো।
জামান এককালে কবিতা লিখতো, তার অনেকগুলো বই প্রকাশিত হয়েছে জেনে নির্ঝরের মুখ ভীষণ উজ্জ্বল হয়েছিল। সে জানিয়েছিল, কবিতা আবৃত্তিতে ভার্সিটি জুড়ে তার খ্যাতি রয়েছে। সে হিন্দি সিরিয়াল, কিংবা স্টার জলসা দেখে না। তবে, স্টার মুভিজ, এইচবিও চ্যানেল তার ফেভারিট এবং সিনেপ্লেক্সে সে নিয়মিত ছবি দেখে। সর্বশেষ ‘ফ্রোজেন’ আর ‘স্কাইফল’ দেখেছে শুনে জামান প্রায় লাফিয়ে উঠেছিল; কারণ, সেও এসব ছবি দেখেছে।
ফাহিম একটা গান গেয়েছিল। ‘আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে...’
এভাবে অনেক সময় ধরে মজা করতে করতে তারা ভুলে গিয়েছিল যে, তারা এ বাসায় পাত্রী নির্বাচনের উদ্দেশ্যে এসেছিল।
আড্ডা শেষ হবার খানিক আগে প্রয়োজনীয় কথাটা পাড়া হলো। মেয়ের আন্টি মুখ খুললো, ‘বললেন না যে, পাত্রী পছন্দ হলো কিনা?’
কথা শেষ হবার আগেই আমজাদ খান ‘মাশা’ল্লাহ, মাশা’ল্লাহ’ বলে আওয়াজ তুলে বললেন, ‘পাত্রী আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে।’
‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে আন্টিও হাসিমুখে জানালো, ‘আমাদেরও মাশা’ল্লাহ পাত্র খুব পছন্দ হয়েছে।’
ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ বিয়ের দিন ধার্য্য করা হলো। হাতে মাত্র সপ্তাহ খানেকের মতো সময় আছে। এর মধ্যেই সমুদয় প্রস্তুতি শেষ করতে হবে। তবে জামান একটা কার্যকরী পরামর্শ দিয়ে বললো, ‘এতো দেরি করে লাভ কী? কালই বিয়ে পড়ালে কোনো ক্ষতি দেখি না।’
পরদিন খুব অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফাহিমের বিয়ে পড়ানো হলো।
সেবার একুশে বইমেলায় জামানের গোটা তিনেক নভেল বের হয়েছিল। সে প্রায় দিনরাত বইমেলায় পড়ে থাকে। বটতলায় আড্ডা দেয়, পাবলিশারের বুকস্টলে বসে ‘অটোগ্রাফ’ দেয়। আর মাঝে মাঝেই ফাহিম ওর বউকে নিয়ে বাইক চালিয়ে ঝড়ের বেগে বইমেলায় এসে হানা দেয়। একজোড়া কপোত-কপোতীর মতো, দেখলেই মনে হয় সদ্য প্রেমে পড়েছে, হাবুডুবু খেতে খেতে গভীর জলে ডুবে যাবে যে-কোনো মুহূর্তে। জামান ওর নিজের লেখা নভেল, অন্য লেখকের বই কিনে ওদের গিফ্ট করে। বই পেয়ে নির্ঝরের আনন্দ আকাশ ছুঁয়ে যায়।
বইমেলা শেষ হলে জামান ঢাকার বাইরে চলে গেলো বহুদিনের জন্য। ফাহিমের সাথেও আর কোনো যোগাযোগ থাকলো না। এভাবে কতদিন বা কত বছর চলে গেলো জামান বা ফাহিম কেউই তার হিসাব রাখে নি।
ফুটনোট
প্রায় ৮ বছর পর দৈবক্রমে ঢাকার এক রাজপথে নির্ঝরের সাথে জামানের দেখা হয়ে গেলো।
রাস্তার পাশে একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে তারা বসলো। চা-নাস্তা খেতে খেতে তাদের কথা হচ্ছিল। জামানের কিছুই জানা ছিল না- কথা বলার মাঝ পর্যায়ে এসে নির্ঝর সেই অনভিপ্রেত এবং দুঃখজনক ঘটনাটা জানালো। অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত একটা ঘটনার জের ধরে মাত্র এক বছরের মাথায় তাদের বিয়েটা ভেঙে গিয়েছিল। ফাহিম এক যাযাবার পাখি। পৃথিবীর কত দেশ কত নারী তার। নির্ঝরকে তার বেশিদিন ভালো লাগে নি, নির্ঝরেরও যায় নি ওর সাথে। তবে একটা গভীর দুঃখ বোধহয় ওর মনে চিরদিনই কাঁটার মতো বিঁধে থাকবে।
জামান যারপরনাই ব্যথিত হলো। এই আকস্মিক সাক্ষাৎকার পর্বটি এক বেদনাঘন নীরবতায় ছেয়ে যেতে থাকলো। তারপর টুকিটাকি আরও কিছু কথা সেরে বিদায় নেবার জন্য উঠে দাঁড়ালো জামান। নির্ঝর ইতস্তত করে কী যেন বলতে চাইল। জামান জিজ্ঞাসু চোখে তার দিকে তাকায়। মাথা নীচু করে চুপচাপ মাটির দিকে তাকিয়ে থাকলো নির্ঝর। তারপর নরম স্বরে বললো, ‘কিছু মনে করবেন না ভাইয়া, আর কোনোদিন হয়তো আমাদের দেখা হবে না। একটা কথা বলি আপনাকে।’ জামান উদগ্রীব হলো। নির্ঝর মনে মনে কথাটা গুছিয়ে নিল। তারপর বলেই ফেললো, ‘প্রথম দিনের কথাগুলো কি আপনার মনে আছে, ভাইয়া, যেদিন আপনারা আমাকে দেখতে এসেছিলেন? আমাদের কত কথা হলো। কত হাসিঠাট্টা। তাই না?’ বলতে বলতে তার গলা খানিকটা ধরে আসে। ‘...পাত্র নির্বাচনে আমার একটুখানি ভুল হয়েছিল... অনেক দাম দিয়ে আমাকে সেই ভুলের মাশুল গুনতে হচ্ছে।’
জামান তার কথা ধরতে পারে না। নির্ঝর বললো, ‘বর সেজে যে আমাদের বাসায় এসেছিল, তাকে দেখে আমি চমকে উঠেছিলাম। যার সাথে আমাকে সংসার বাঁধতে হবে, আমি তাকে চিনতে পারি নি।’
তারপর তার চোখমুখ বিষাদগ্রস্ত রহস্যের অন্ধকারে ছেয়ে গেলো। মাথা অবনত করে সে যখন যেতে থাকলো, তখন দুপুরের নির্মল আকাশে গনগনে সূর্য, বৃক্ষবীথির পত্রপল্লবে নরম বাতাসের আছড়ে পড়ার শো-শো শব্দ, রাস্তার পিচগলা তীব্র ভাঁপ এসে শরীরে বিঁধছিল।
আর জামানের বুকটা তখন হু-হু করছিল।
২৬ মে ২০০৫
০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:২৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার আগে আর কেউ নেই, আমি ছাড়া।
২| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:২৮
আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
ফেবুতে কি পড়ছিলাম আর এখন কি পড়লাম! চমৎকার।
অফ টপিক : পাণ্ডুলিপির কিছু হলো?
০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৩৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আলাউদ্দিন ভাই, আল্লাহর অশেষ রহমত, আজ ওটা খুঁজে পেয়েছি। পাওয়ার পর আমার এত আনন্দ হচ্ছিল যা প্রকাশ করা যাচ্ছিল না। পাণ্ডুলিপিটার কথা আমার যখনই মনে পড়েছে, আমার বুকে আগুন জ্বলে উঠেছে। আমি চিন্তায় ঘাস হয়ে যাচ্ছিলাম।
আমি সেই দোয়াটি পড়তে পড়তে ঘরের দিকে যাচ্ছিলাম। অলৌকিক ব্যাপার, যে ট্রাঙ্কটি সবার আগে খুললাম, সেটিতেই বস্তুটা পেয়ে যাই।
খুব ভালো লাগছে।
এবার গল্পের কথা বলি। এ গল্প থেকে কণিকা রূপ দেয়ার সময় খানিকটা বদলে গেছে, এই আর কী
ধন্যবাদ আলাউদ্দিন ভাই। ভালো থাকবেন।
৩| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
অপ্সরা বলেছেন: অবশেষে পাত্রী নির্বাচন হলোনা??
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:২০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অবশেষে পাত্রী নির্বাচন হয়েছিল বটে, কিন্তু পাত্র নির্বাচনে বিভ্রাট ঘটেছিল
৪| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
আহমেদ আলাউদ্দিন বলেছেন:
জেনে খুব খুশি হলাম। টেনশন হচ্ছিল খুব।
অনেকটাই পাল্টে গেছে!
শুভ রাত্রি কবি।
ভালো থাকবেন
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৩৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এ গল্পটার শুরুর দিকটা বদলে দিলাম। হ্যাঁ, অনেকটাই পালটে গেছে।
পাণ্ডুলিপির জন্য কী টেনশন ছিল, আপনার সাথে কথা বলার সময় হয়তো বুঝতে পারেন নি। আমার ভিতরটা ক্ষয় হয়ে যাচ্ছিল। আল্লাহ রক্ষা করেছেন।
ধন্যবাদ আলাউদ্দিন ভাই।
৫| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: আপনার গল্প দেখে এত সময় নিয়ে পড়লাম । লম্বা লেখা পড়ি না আমি । একটা ধন্যবাদ পাওনা থাকলাম। ।
সুপ্রিয় কবি কবিতা লেখা বাদ দিয়েছেন বোধ হয়। কতদিন আপনার কবিতা পড়িনা ।
গল্পটা ভাল লেগেছে। বিশেষ করে পাত্রী খোজাখুজির উপর লেখা ভাল লাগে।
আর পাত্রিকে হাটানোর ব্যাপারটা এখন আর চলে না তেমন।
জেনিফার লোপেজ এর নাচের কিছু মুদ্র আমার বেশ ভাল লাগে।
সুন্দর লিখেছেন। আমার ব্লগে আসেনা অনেক দিন। সময় করে আসার দাওয়াত থাকলো।
আর আপনার মজাদার তারকা জরিপ এর কি হলো?
ওটা পড়ে বেশ মজা পেতাম।
ভাল থাকবেন সুপ্রিয় কবি ।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৩৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেকগুলো ধন্যবাদ এত বড় একটা গল্প পড়লেন সেজন্য
কবিতা লেখা বাদ দিই নি, কবিতা পোস্ট করি না অনেক দিন- ঘটনা এই ছাড়া আর কিছু না
পাত্রীকে হাঁটানোর ব্যাপারটা আনা হয়েছে ব্যঙ্গার্থে
তারকাজরিপ তার নিজের জায়গাতেই আছে, তবে ভবিষ্যতে ২য় সংস্করণ বের হতে পারে
ইদের সময় বাড়িতে ছিলাম, যেখানে নেট ছিল না বলে ব্লগ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলাম। আপনার ব্লগে শীঘ্রই আসবো
ধন্যবাদ প্রিয় কবি সেলিম আনোয়ার ভাই। ভালো থাকবেন।
৬| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
সুমন কর বলেছেন: জামানের কাহিনী ভাল লাগল। আমজাদ খানের ভূমিকা রসালো হয়েছে। নির্ঝরের জন্য থাকল সমবেদনা।
গল্প ভাল লেগেছে।
আমি ১ম হতে পারতাম কিন্তু না পড়ে ১ম হতে চাই না।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বড় গল্পটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুমন ভাই। ভালো থাকবেন।
৭| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫৩
কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
২ নং লাইকটা কিন্তু ভাইয়া আমার দেয়া
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ২ নং লাইকটা দেয়ার জন্য অশেষ ধন্যবাদ প্রিয় কাণ্ডারি। ভালো থাকবেন।
৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৫৩
লেখোয়াড় বলেছেন:
অপ্সরা বলেছেন: অবশেষে পাত্রী নির্বাচন হলোনা??
আমি কিছু বললাম না, কারণ প্রথম প্যারা পড়েছি শুধুমাত্র।
হা হা হা ............
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রথম প্যারা পড়েছেন, এটাই বা কম কী? অনেক ধন্যবাদ লেখোয়াড় ভাই।
৯| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:১৪
আরজু পনি বলেছেন:
শুরুতেই লিঙ্ক ধরে এগিয়ে যা পড়েছি তাতেই মনটা খারাপ হয়েছিল, পুরোটা পড়ে শেষে আবারও মন খারাপ হল।
শুভেচ্ছা রইল অনেক।।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপু, গল্পের প্রথম দিকটা বদলে ফেলেছি। প্রথম কয়েক প্যারা বাদে বাকি অংশ অপরিবর্তিত আছে।
অনেক ধন্যবাদ আপু।
১০| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৫৫
ডি মুন বলেছেন: ঘুরে গেলাম।
সময় করে পড়ে মন্তব্য করবো।
ভালো থাকুন সর্বদা।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঘুরে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ ডি মুন। ভালো থাকবেন।
১১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:০৮
মামুন রশিদ বলেছেন: মোটামুটি লেগেছে । হয়ত সত্যি ঘটনা, খুটিনাটি সব কিছু তুলে ধরার প্রয়াসে ডিটেইলিং দীর্ঘ হয়ে গল্পের মজা কিছুটা কমিয়ে দিয়েছে ।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গল্পের পাত্র-পাত্রীরা বাস্তব চরিত্রের ছায়ারূপ। কিন্তু গল্পের পুরোটা- খুটিনাটিসহ- সর্বাঙ্গীন কাল্পনিক পাঠক এটিকে সত্য কাহিনি মনে করতে পারেন- শুরুর অংশটুকু জুড়ে দেবার সময় আমার এমন আশঙ্কা হয়েছিল (আদিতে ঐ অংশটুকু ছিল না)। যখন গল্পকে সত্য কাহিনি মনে করা হয়, তখন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ডিটেইলগুলোকে অপ্রয়োজনীয় বা অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়। কিন্তু মৌলিক গল্পে ক্ষুদ্র বর্ণনাগুলো গল্পের শৈলি বাড়ায়। এসব মনে করে গল্পের শুরুর দিকটা বদলে দিলাম।
মামুন ভাই, আপনার কমেন্ট পাওয়ার পর থেকে ব্যাপারটা আমার মাথায় কামড়াচ্ছিল। এখন শান্তি পারছি। আর এজন্য আপনাকে একটা বিশেষ ধন্যবাদও দিলাম
ভালো থাকবেন।
১২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১:২০
রাজিব বলেছেন: জাহিদের উচিত ছিল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রেম করে নিজের মনের মত কন্যা ঠিক করে ফেলা। তাহলে জাহিদের এত সমস্যা হত না।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার কথা ঠিক। কিন্তু সে যে সেই চেষ্টা করে নি, তা আমরা বলতে পারবো না
ধন্যবাদ রাজিব ভাই।
১৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:৩৯
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ।
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম ভাই।
১৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪৭
মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: ভাই এটাকে কি 'কনিকা' কনভার্টারে পাঠানো যেতনা?
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:২০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: টি-টুয়েন্টি আসার পর টেস্ট ক্রিকেট তো অবশ্যই, ওয়ান ডে ম্যাচও আমাদের আর মজা দেয় না আমাকে গল্পকণিকাতেই ফিরে যেতে হবে দেখছি এ বৃহৎ গল্পটির একটা কণিকা ভার্সন নীচে দিয়ে দিলাম, তবে শেষ পর্যন্ত এটি কিন্তু আপনার বাড়তি গল্পপাঠও হয়ে যেতে পারে, কেননা মূল গল্প আর কণিকাগল্পে পার্থক্য রয়েছে
****
পাত্র নির্বাচন
আমরা জাহিদের জন্য পাত্রী দেখতে এসেছি। জাহিদের বড় ভাই, মেজ ভাই, জাহিদ এবং আমি।
ড্রয়িংরুমের একদিকে জাহিদ আর আমি, উলটো দিকে ওর দু ভাই সোফায় বসেছেন।
একটুপর পাত্রী ঘরে ঢুকলো, তার মামির সাথে। তারা আমাদের ডানদিকের সোফাসেটে পাশাপাশি বসলো। তারা শাড়ি পরেছিল, মুখে সলাজ হাসি ছিল, কিন্তু মাথায় ঘোমটা ছিল না।
জাহিদের বড় দু ভাই পাত্রীর ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমে গেলেন- কার প্রশ্ন কত বুদ্ধিদীপ্ত এবং কার কটি প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পাত্রী ব্যর্থ হলো, এভাবে।
আমি আর জাহিদ পাত্রী আর তার মামির সাথে খোশগল্পে মেতে উঠলাম। বিটলামি থেকে শুরু করে গান, সাহিত্য, খেলাধুলা, কারেন্ট এ্যাফেয়ার্স, ইত্যাদি সব বিষয়ে আমাদের তুখোড় মিল হলো।
আমি এককালে কবিতা লিখতাম জেনে পাত্রীর মুখ উজ্জ্বল হলো। সে জানালো, কবিতা আবৃত্তিতে ভার্সিটি জুড়ে তার খ্যাতি রয়েছে।
সে হিন্দি সিরিয়াল, কিংবা স্টার জলসা দেখে না। তবে, স্টার মুভিজ, এইচবিও চ্যানেল তার ফেভারিট এবং সিনেপ্লেক্সে সে নিয়মিত ছবি দেখে। সর্বশেষ ‘ফ্রোজেন’ আর ‘স্কাইফল’ দেখেছে শুনে আমি প্রায় লাফিয়ে উঠলাম; কারণ, আমিও এ ছবি দেখেছি।
জাহিদ একটা গান গাইল। ‘আমার স্বপ্নে দেখা রাজকন্যা থাকে...’
এভাবে অনেক সময় ধরে মজা করতে করতে ভুলে গেলাম যে আমরা পাত্রী নির্বাচনের উদ্দেশ্যে এসেছি।
খাবার টেবিলে ডাক এলো। খেতে খেতে আবার গল্প। শেষমেষ মেয়ের মামি মুখ খুললেন, ‘বললেন না যে, পাত্রী পছন্দ হলো কিনা?’
কথা শেষ হবার আগেই জাহিদের বড় ভাই ‘মাশা’ল্লাহ, মাশাল্লাহ’ বলে আওয়াজ তুলে বললেন, ‘পাত্রী আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে।’
‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে মামিও হাসি মুখে জানালেন, ‘আমাদেরও মাশাল্লাহ পাত্র খুব পছন্দ হয়েছে।’
...
অত্যন্ত তুচ্ছ একটা ঘটনার জের ধরে মাত্র তিন মাসের মাথায় ওদের বিয়েটা ভেঙে গেলো। আমি যারপরনাই ব্যথিত হলাম। স্রেফ সৌজন্য বশত একদিন ভাবীদের বাড়িতে গেলাম।
সেই ড্রয়িং রুম। ম্লান মুখে ভাবী আমার বিপরীত দিকে বসে আছেন। কী কথা বলতে এসেছি, বা কী বলা যায়, আমি জানি না।
চা খেতে খেতে খুব ছোটো কয়েকটা কথা বললাম। তারপর আমি উঠলাম। দরজার বাইরে পা দিয়েছি। ভাবী নীচু স্বরে ডাকলেন, ‘কিছু মনে করবেন না ভাইয়া, আর কোনোদিন দেখা হবে কিনা জানি না। একটা কথা বলি আপনাকে।’ আমি ঘুরে দাঁড়াই। ভাবী ইতস্তত করতে করতে বলেই ফেললেন, ‘প্রথম যেদিন দেখতে এসেছিলেন... আমার বুঝতে ভুল হয়েছিল... আমি আসলে জানতাম না যে পাত্র আপনি নন।’
২৪ জুলাই ২০১৪
১৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪৯
মহামহোপাধ্যায় বলেছেন: শুরুটা দারুণ হয়েছে। অনেক ভালো লাগলো।
লেখাটা মনে হয় দুবার চলে এসেছে ভাইয়া।
ভালো থাকুন। শুভেচ্ছা রইল
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:২৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শুরুটা দারুণ হয়েছে জেনে ভালো লাগলো।
বার বার এডিট করার ফলে ভুলবশত লেখাটা দু বার চলে এসেছে। ঠিক করে দিলাম।
ধন্যবাদ মহামহোপাধ্যায়।
১৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৪০
বোকামানুষ বলেছেন: বুঝলাম পাত্রপক্ষ দেখতে আসলে পাত্র কে আগে জেনে নিতে হবে
গল্প ভাল লেগেছে তবে অনেক বেশি ডিটেল
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমাদের ক্লাসমেট জাহিদের জন্য আমরা পাত্রী দেখতে গেলাম। অনেক কথা হচ্ছে, হাসিঠাট্টা, গল্পগুজব হচ্ছে। আড্ডার শেষ পর্যায়ে যেয়ে মেয়েটি জিজ্ঞাসা করে বসলো, ‘আচ্ছা, পাত্র কে?’
পাত্র কে তা জানতে পেরে মেয়েটির মুখ হঠাৎ ম্লান হয়ে গিয়েছিল। সে নিশ্চয়ই অন্য ছেলেটিকে পাত্র ভেবে বসে ছিল।
এ জন্য আগেভাগেই পাত্র কে তা নিশ্চিত হয়ে নেয়া ভালো
গল্প ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।
গল্পের ডিটেইলসের ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করি। দু বন্ধুর মধ্যে মেয়েটি মনে মনে একটি ছেলেকে পছন্দ করে ফেলে, এবং সে ভেবে নেয় যে সে-ই তার হবু বর। এই যে মনে মনে ছেলেটিকে পছন্দ করে ফেলে ছেলেটির বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য তার ভালো লাগে বলেই। খেয়াল করুন, গল্পে মূল পাত্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের বর্ণনা দেয়া আছে, যেমন সে সুদর্শন, চৌকষ, সপ্রতিভ। গান গায়, সাহিত্য ভালোবাসে। অপর বন্ধুর ব্যাপারে কিছু উল্লেখ নেই। সংলাপধর্মী এ গল্পটিতে বিভিন্ন কথার মাধ্যমে জামানের বুদ্ধিমত্তা বা ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। মেয়েটি একবার বলেও ফেলে যে জামানকে তার ভালো লাগে। ফাহিমের সকল গুণকে ছাপিয়ে নির্ঝর ও পাঠকের কাছে জামানকে অধিক লোভনীয় হিসাবে তুলে ধরার জন্যই এত ডিটেইলস যোগ করা হয়েছে।
ধন্যবাদ বোকামন। ভালো থাকবেন।
১৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৫০
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ছোটো ভাইয়ের বউকে মা ডাকার ইতিহাস গিনেস বুকেও নেই।'
না্ম লিখানোর একটা সুযোগ পাবো বেচে থাকলে ইনশাল্লাহ
শেষ টায় এসে গান শুনতে ইচ্ছে করছে ,
" আমি তোমাকেই বলে দিবো সেই ভুলে ভরা গল্প , কড়া নেড়েছি ভুল দরজায় "
আমার প্লাস সামু নেয়না প্লাস দিতে গেলেই কি যেন একটা পেজ এ চলে যায় , মৌখিক প্লাস নেন ভাইয়া !
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হাহাহাহাহা। গিনেজ বুকে আপনার নাম দেখবার ইচ্ছে হচ্ছে খুব। শীঘ্র দেখতে পাব কি?
গানটার কথা মনে করে দিলেন! আমারও শুনতে ইচ্ছে করছে।
আপনার মৌখিক প্লাস নিলাম।
অনেক ধন্যবাদ অভি ভাই।
১৮| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৪:১৭
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: ৫ নং লাইক কিন্তু আমার -- হুম ----
++++++++++ দিলাম --------
১৯| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৩
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বুঝলাম ৫ নম্বর প্লাসটা আপনার, কিন্তু ৬ নম্বরটা কার?
যাই হোক, প্লাসের জন্য ধন্যবাদ আপু।
২০| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪১
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: পোষ্টের বাইরে থেকে বিশেষ ভাবে প্লাস দেয়া যায় , সেইভাবে দিছি পরে ! ৬ নং টা আমার , গ্রহণ করেন
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিশেষ ব্যবস্থায় ৬ নম্বর প্লাসটা দেয়ার জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ অভি ভাই। ধন্যবাদ। ধন্যবাদ
২১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ওহ ! খুব শীঘ্রই অসম্ভব ভাইয়া , আমার ছোট ভাই এখন ক্লাস সেভেনে পড়ে
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ওহহো, শীঘ্রই তাহলে মনের আশাটা পূরণ হলো না মনে হয়
তবু আশায় থাকলাম
আর ছোটো ভাইয়ের জন্য শুভেচ্ছা।
২২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪২
স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ওহ ! খুব শীঘ্রই অসম্ভব ভাইয়া , আমার ছোট ভাই এখন ক্লাস সেভেনে পড়ে
০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:০১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ‘অসফল’কে নিয়ে লেখা আমার গল্পটার আপনি অনেকগুলো সমাপ্তি টেনেছিলেন। সেই থেকে বুঝি আপনি খুব খুটিয়ে গল্প পড়েন। এ দীর্ঘ গল্পটাও খুটিয়ে পড়েছেন বলেই ঐ লাইনটা তুলে আনতে পেরেছেন আরেকবার ধন্যবাদ সেজন্য।
২৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:০৭
আদনান শাহ্িরয়ার বলেছেন: মজায় মজায় কেমন বিষণ্ণতা । ৭ নাম্বার প্লাস !
০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:২০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: গল্পটা যে থিমের উপর শুরু হয়েছিল সেখানে কোনো রম্য উপাদান ছিল না। কিন্তু লিখতে গিয়ে কেন এবং কীভাবে যেন রম্য ঢুকে পড়লো। এর আরেকটা ভার্সন তৈরি করছি যেখানে রম্য অংশ সমূলে ছেঁটে ফেলা হবে। আলোচনার অংশটুকু আরও সাবলীল ও তথ্যপূর্ণ করার ইচ্ছে রয়েছে।
ধন্যবাদ আদনান ভাই। ভালো থাকবেন।
২৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৩৪
পাকাচুল বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো। শুভ কামনা।
০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:২২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ পাকা চুল। অনেকদিন পর দেখা হলো। আশা করি ভালো ছিলেন/আছেন।
২৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৯:৫৪
সকাল রয় বলেছেন:
আহা! রে
০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:২৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আহা!!!
২৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:৫৭
সাবরিনা সিরাজী তিতির বলেছেন: ফেবুতে পড়েছিলাম ! ++++++++++++++++
০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৩০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ আপু, ফেইসবুকে একটা শর্টেন্ড ভার্সন দিয়েছিলাম, যদিও মূল গল্প থেকে তাতে বেশ পার্থক্য রয়েছে।
ধন্যবাদ আপু।
২৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:১২
সায়েম মুন বলেছেন: ডিটেইল করতে গিয়ে শেষের দিকে গতি স্লো হয়ে ছিল। তবে ওভারঅল গল্পটা খুব ভাল লেগেছে। বেশ কিছুদিন পর একটা লম্বা গল্প সময় নিয়ে পড়া হলো।
০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৪০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শুরুতেই আপনাকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই একটা দীর্ঘ গল্প পড়ার জন্য, যে গল্পটি স্বয়ং আমিই লিখেছি আপনি সচরাচর দীর্ঘ গল্প এড়িয়ে চলেন, কিন্তু আমার গল্পটি আপনি পড়েছেন, এটা আমার জন্য খুব গৌরবের।
ডিটেইলের কথা যা বললেন, তা বিবেচনায় থাকলো। উপরে আদনান ভাইয়ের কমেন্টে লিখেছিও যে, এ গল্পটি যে থিম মাথায় নিয়ে লেখা হয়েছিল তাতে কোনো রম্য উপাদান ছিল না। নতুন ভার্সনে রম্য উপাদান বাদ দেয়া হবে, তবে ডিটেইল কিছু বাড়বে বৈ কমবে না। গল্পের সাইজ হিসাবে এটি ১১-১২ পৃষ্ঠার গল্প, যা ছোটোগল্পের জন্য আদর্শ সাইজ। আমরা ব্লগে ছোটো ছোটো পোস্ট পড়ি বলে দীর্ঘ গল্পগুলো আমাদের ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটায়। কিন্তু আপনি ব্লগ লাইফের আগের জীবনের কথা চিন্তা করে দেখুন, গল্পে এরকম ডিটেইলস থাকাটাই হলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য। এ গল্পটি মে ২০০৫ সালে লেখা, যখন ব্লগ বা ফেইসবুক আমাদের নাগালে ছিল না, তখন লিখতাম গতানুগতিক গল্প। তাই গল্পটা বিভিন্ন ডিটেইলসে ভর্তি। আদতে ডিটেইলস বলতে আলোচনা বিষয়সমূহকেই বলছি।
আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি প্রিয় কবি। ভালো থাকবেন।
২৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৩৪
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
একদম শেষে এসে বুঝলাম কেন 'পাত্র নির্বাচন' হলো। 'জামানের বুকটার মতো হুহু' করার মতো অনুভূতি পাঠককেও দিলেন!
গল্পটি অনেক ভারি বিষয়ে ভরপুর। শিল্প, সাহিত্য, সঙ্গীত, নারী অধিকার, চলচ্চিত্র.... আলোচনাগুলো বেশ উপভোগ্য হয়েছে। লেখায় 'শেষের কবিতা'র মতো একটা স্টাইল অনুভূত হলো, যদিও আপনার নিজস্বতা সেখানে সুস্পষ্টভাবেই উপস্থিত।
সোনাবীজ ভাই, আপনার লেখা পড়তে আমি একটু বেশিই সময় নিই। (অর্থাৎ, সময় না থাকলে পড়তে শুরু করি না। ) ভাষা, বিষয় এবং লেখার আকৃতি সম্পর্কে কিছু বলার থাকলেও সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়।
ভালো লেগেছে। আপনি যে অনেক অনুসন্ধান করেন, সেটি লেখায় বুঝা যায়.... শুভেচ্ছা জানবেন
০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ২:৪৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আহা, কতদিন পর মাঈনউদ্দিন ভাইকে পেলাম- আসুন, ইদের কোলাকুলি করে নিই আগে। আশা করি ভালো আছেন, এবং আপনার ট্যুরটাও খুব এনজয়এবল ছিল।
আমার লেখা একটু বেশি সময় নিয়ে পড়েন, এটা জানতে পেরে আমার যেমন গর্ব হচ্ছে, তেমনি আপনার প্রতি শ্রদ্ধায় মাথা অবনত হচ্ছে। কৃতজ্ঞতা।
এরপর গল্পের ভালো দিকগুলো যেভাবে তুলে ধরলেন, আর নেগেটিভ দিকটার কথা যেভাবে উহ্য রাখলেন, নিজেকে বুঝতে তা আমাকে অনেক সাহায্য করবে।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ প্রিয় মাঈনউদ্দিন ভাই। ভালো থাকবেন।
২৯| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: এ গল্পটি ব্লগে পোস্ট করার পর ১০-১২ বার এডিট করলাম। শুরুতে রম্য উপাদান সমৃদ্ধ ছিল, কিন্তু সর্বশেষ এডিটে রম্য উপাদান বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে।
৩০| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:০৬
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: গল্প ভালো লেগেছে। মজার মধ্যেও কেমন যেন একটা বিষন্ন ব্যাপার ছিল না বুঝতে পারছি না। হয়ত আছে।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: রম্য অংশটুকু বাদ দেয়ার পর সেই মজাটা আর পাওয়ার সুযোগ নেই বিষয়টা সিরিয়াস, তাই রম্য ছেঁটে দিয়েছি।
ধন্যবাদ জাদিদ ভাই। ভালো থাকবেন।
৩১| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:২২
অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন: আসলেই শুরুতেই বলে নেয়া ভাল যে পাত্র আসলে কে। তানাহলে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে।
আমার যখন ৮/৯ বছর বয়স সেই সময় আমার বাবার এক বন্ধুর জন্য পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন বাবা আর তার বন্ধুরা। কনে পক্ষের অনেকেই আমার বাবাকে পাত্র মনে করেছিল প্রথমে।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বিশাল ব্যাপার দেখি। আপনার বাবা নিশ্চয়ই ‘চিরসবুজ’ পাত্র, তাই সহজেই তিনি পাত্র হিসাবে নজর কেড়ে থাকেন তাঁর প্রতি আমার সালাম রইল।
ধন্যবাদ আপু দীর্ঘ গল্পটি পড়ার জন্য।
৩২| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৬
মাহমুদ০০৭ বলেছেন: গল্পকণিকার চেয়ে গল্প হিসেবে ভাল হয়েছে ।
ডিটেলসের কারণে গল্পটা উপভোগ্য হয়েছে ।
ছাই ভাই লেখার কারণে গল্পটা শেষের দিকটা এমন টাচি হয়েছে ।
অনেক ভাল লাগা নিয়ে গেলাম ।
০৯ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:৪০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার সার্টিফিকেট পেয়ে এখন খুব আশ্বস্ত বোধ করছি।
উপন্যাস- টেস্ট ম্যাচ
ছোটোগল্প- ওডিআই
কয়েকটা গল্পকণিকা একত্রে- টি-টুয়েন্টি
ব্লগের জন্য গল্পকণিকাই উত্তম তবে টেস্ট ক্রিকেটও আমার কাছে সমান প্রিয় তাই সব ম্যাচই বজায় রাখতে আগ্রহী আমি।
অনেক ধন্যবাদ প্রিয় মাহমুদ ভাই। ভালো থাকবেন।
৩৩| ১০ ই আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৫:৩৪
শান্তির দেবদূত বলেছেন: চমৎকার একটা গল্প পড়লাম। পড়া শুরু করার পর আর থামতে পারিনি। এডিট করে রম্য উপাদান কমিয়ে দিয়েছেন তারপরও সুক্ষ্ণ হিউমারে ছড়াছড়ি সম্পূর্ণ গল্প জুড়ে, এডিট করার আগের ভার্সন পড়ার লোভ হচ্ছে। নিশ্চয় আর অনেক হাসির উপদান ছিল।
ফিনিসিংটায় একটা বিষন্নতার ছোঁয়া পেলাম। কি জানি? আসলেই কি ভুল ছিল? মানুষ কি ভুল গুলোকে নিয়ে এভাবে ভাবতে পারে? কি হলে কি হতো সেটা তো পুরাই অদৃষ্টের হাতের খেলা। হয় তো , হয় তো যেখানে এক যুগ টিকেছে সেখানে পাত্র বাছায়ে ভুল না হলে এক যুগও টিকতো না, কে জানে বিধাতা কি রেখেছেন কার কপালে।
আমার কাছে কিন্তু খুবই দুর্দান্ত একটা গল্প লেগেছে সব মিলিয়ে। লেখার স্টাইলটা কেন যে রবীন্দ্র ও শরৎ এর মিশ্রন মনে হয়েছে।
যত ট্রাজিক লেখাই হোক না কেন, ভালো সাহিত্যমান সম্পন্ন লেখা পড়লে মনে এর প্রভাব পড়ে। এই লেখাটা পড়ে তেমন একটা অনুভূতি হয়েছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এমন চমৎকার একটা লেখা পড়ার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। শুভেচ্ছা নিরন্তর।
শুভকামনা রইল প্রিয় লেখক।
১০ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৫৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার কমেন্টের উত্তর দিলাম অনেক পরে। এতক্ষণ এ কমেন্টটি বুকে ধরে সুখ নিচ্ছিলাম।
আমাদের শুরুর দিককার ছোটোগল্প বা উপন্যাসগুলো সংলাপ নির্ভর ছিল। সেই টেনডেন্সি ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে। আজকাল এমনও গল্প বা উপন্যাস পাওয়া যায় যেখানে মোটেও সংলাপ নেই। ‘লেডি চাটালি’স লাভারে দেখা যায় কী গুরু গম্ভীর আলোচনা হচ্ছে। ‘শেষের কবিতা’, ‘ঘরে-বাইরে’তেও তা দেখা যায়। আলাউদ্দিন আল-আজাদ, হুমায়ুন আজাদকেও এরকম সিরিয়াস আলোচনা করতে দেখা যায় উপন্যাসে। শরৎচন্দ্র, হুমায়ূন আহমেদ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদারের গল্পে অবশ্য সংলাপ হলো চরিত্রগুলোর মধ্যকার সাধারণ বা প্রয়োজনীয় কথাবার্তা।
আমি ইউজ্যুয়ালি সংলাপ পছন্দ করি। সংলাপের ভিতর দিয়ে একেকটা চরিত্র সৃষ্টি করার চেষ্টা করি, যদিও হয় না।
আপনার লেখার বৈশিষ্ট্য হলো সংলাপবিহীনভাবে লেখার আবহ সৃষ্টি করা। আপনার কিছু কিছু গল্পের কথা মনে পড়লে ভাবি- কীভাবে পারলেন! আহা, অমন একটা গল্প যদি জীবনে একটাও লিখতে পারতাম!
উৎসাহ-জাগানিয়া মন্তব্যে আমি আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলাম।
অনেক ধন্যবাদ সাইফুল ভাই।
৩৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ ভোর ৬:০৮
জুন বলেছেন: যার সাথে আমাকে সংসার বাঁধতে হবে, আমি তাকে চিনতে পারি নি।’
এই ভুলটি কিন্ত সেটেল ম্যরেজ না প্রেমের বিয়েতেও খাটে ছাই ভাই ।
খুব ভালোলাগলো গল্প। জাহিদের জন্য খারাপ লাগছে। কিন্ত নির্ঝরকেও আমরা খারাপ বলতে পারি না কারন চক চক করিলেই সোনা হয়না জেনেও আমরা ছেলে মেয়ে উভয়পক্ষই কিন্ত চকমকে জিনিসের প্রতি প্রথম দৃষ্টিতে আকৃষ্ট হই , তাই নয়কি !
+
১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১১:৪৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক সুন্দর কথা বলেছেন আপু। খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।
৩৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:১২
আমি জুহি বলেছেন: ৩৮ অথবা ৪০? বয়স টা একটু কম হয়ে গেলনা!!!!!!!!!!!!!
১৩ ই আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বয়সটা কিছু কম ছিল বৈকি
কনেদের বড় বোন বা মা-খালারা ‘যুবকের’ প্রকৃত বয়সের কথা জানতে পেরে ঠোঁট উলটালেও ‘কচি’ মেয়েরা ‘ওর বয়স নিয়ে আমার কোনো সমস্যা নেই’ বলে তৎক্ষণাৎ ‘কবুল’ বলে ফেলতে রাজি হয়ে যায়।
ধন্যবাদ জুহি আপু।
৩৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:৪৬
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: গল্পে লেখকের উপস্থিতি কম, তিনি পাঠককে ধরে ধরে দেখাচ্ছেন না যে দ্যাখো এই ছোকরা এমন, ওই ছুড়ি তেমন- বরঞ্চ চরিত্রগুলো নিজেই কথা বলছে, হাসছে, জীবন্ত হয়ে উঠছে-- এই ব্যাপারটা ভাল লাগল।
শব্দ নির্বাচনে পরিমিত সতর্কতা গল্প ঝুলে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করেছে অনেকটাই। পুরোটা পড়লাম এবং উপভোগ করলাম ডিটেইলিং, সূক্ষ্ম রসবোধ, খোঁচাগুলো।
গল্পের নাম যথাযথ।
শুভেচ্ছা রইল প্রিয় সোনাবীজ।
২৬ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:৪২
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনার মন্তব্যে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাচ্ছে। অনেক ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:২১
এহসান সাবির বলেছেন: আমি ই ১ম নাকি?