নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
সচ্ছল ব্যক্তিদের জন্য কোরবানি একটা ওয়াজিব। এতে রয়েছে গরীব মিসকিন ও আপনার (গরীব) আত্মীয়দের হক। আপনি যদি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন যে, এবার কোরবানি না দিয়ে সেই অর্থ বন্যার্তদের সাহায্য্যার্থে দান করবেন, তবে ব্যাপারটা খুব যৌক্তিক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। এতে তিনটি ব্যত্যয় ঘটবেঃ
১। আপনি গরীব-মিসকিন ও আত্মীয়দেরকে তাঁদের প্রাপ্য হক থেকে বঞ্চিত করলেন।
২। ওয়াজিব আদায় না করায় শাস্তির ভাগী হলেন।
৩। গুরুত্বপূর্ণ দিকটা হলো- আপনার কোরবানির পশুটি দরিদ্র একজন কৃষক অনেক আদরযত্ন করে, টাকাপয়সা খরচ করে লালন-পালন করে মোটাতাজা করেছেন এবং এই কোরবানির সামনে বিক্রি করবেন বলে একবুক আশা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রতীক্ষা করছেন। আপনি সেই পশুটি না কিনলে ঐ কৃষকদের পরিণতি খুবই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। আমাদের অনেকেরই গ্রাসরুট লেভেলের জ্ঞান না থাকায় আমরা মনে করি যে, গরুছাগল-উৎপাদনকারীগণ খুব অবস্থাপন্ন মানুষ। এটা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। দরিদ্র বিধবাদের সারা বছরের সম্বল থাকে একটা-দুটা ছাগল বা খাসি, বা একটা গরু। দরিদ্র কৃষকেরা ধণাঢ্য ব্যক্তিদের কিনে দেয়া পশু বর্গা হিসাবে লালন-পালন করেন, বিক্রির পর মূলধন সরাসরি মালিকের কাছে চলে যায়, মূলধনের অতিরিক্ত টাকাটাই হলো লাভ, যেটি দুই ভাগে ভাগ করে একভাগ গরুর মালিক, অন্যভাগ বর্গাচাষী পেয়ে থাকেন। কেউ কেউ সুদে টাকা ধার এনে পশু কিনেন। কেউ কেউ হয়ত সঞ্চিত টাকা থেকেই পশু কিনে থাকেন। একটু অবস্থাপন্ন চাষীরা পশুপালন-প্রজেক্টের মাধ্যমে পশু চাষ করেন, এবং তাঁদেরও থাকে মোটা অংকের ব্যাঙ্ক ঋণ বা ব্যক্তি-ঋণ, অথবা নিজেদের সঞ্চিত টাকা। এসব অজপাড়াগাঁয়ের কৃষকদের দৈনন্দিন জীবনে আমাদের মতো আলোকোজ্জ্বল বিলাসিতা নেই; তাঁদের মোটামুটি সারাবছরই মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় এবং বছর শেষে কোরবানি ইদের মরসুমে তাঁরা পালিত পশু বিক্রি করে একটু সুখের মুখ দেখতে চান। এবারের এই দুর্যোগে তাঁদের ঘরেও হয়ত চালডাল ফুরিয়ে এসেছে। এই কৃষকদের একটা অংশ বন্যাদুর্গত এলাকারও হতে পারেন, যাঁদের পশুগুলো বিক্রি না হলে খাবারের অভাবে বা রোগেশোকে একসময় ঐ পশুগুলো হয়ত মারাই যাবে; কৃষকগণকেও তখন সপরিবারে অনাহারে থাকতে হবে, দেনার দায়ে কেউ গলায় ফাঁস দেবেন, কেউ কেউ না খেতে পেয়ে হয়ত নিজেরাই শেষমেষ মারা যাবেন। আমরা একদল বন্যাদুর্গতদের বাঁচাতে গিয়ে যেন আরেকদল দরিদ্র কৃষকের দুর্গতি ডেকে না আনি, সেটি খেয়াল রাখা খুব জরুরি।
এটা আমার একান্তই ব্যক্তিগত মতামত এই যে, (কোরআন বা হাদিস থেকে কোনো সূত্র দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়, এবং এ ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে কী লেখা আছে, বা কিছু আছে কিনা আমার জানা নেই), কোরবানি (ওয়াজিব) আদায়ের ফজিলত এক বিষয়, দান-খয়রাতের ফজিলত অন্য এক বিষয় এবং এ দুটি পরস্পর বিনিময়যোগ্য নয়। অর্থাৎ আমি দান করলে দানের সওয়াব পাব, কোরবানি দিলে কোরবানির সওয়াব পাব; কোরবানির আদেশ বরখেলাপ করলে তার জন্য প্রাপ্য শাস্তিও আমার ভাগেই জুটবে। কোরবানি আদায় না করে সেই অর্থ বন্যার্তদের দান করলে আমার কোরবানি আদায় হবে বলে আমার মনে হয় না। তবে, এই মহৎ দানের একটা প্রতিদান আল্লাহর তরফ থেকে আমি যে পাবই, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত; কারণ, দান-খয়রাতের ব্যাপারে কোরআন-হাদিসে অনেক তাগিদ দেয়া হয়েছে (নীচে এর উপর কিছু সংযুক্তি আছে)। একই সঙ্গে আমি এটাও বলতে চাই, আমি কোরবানি না দিয়ে সেই অর্থ যদি বন্যার্তদের দান করতে চাই, সেটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছে এবং উদ্যোগ; অন্যদেরকেও আমি যদি এ কাজটি করতে আহবান/অনুরোধ জানাই বা উৎসাহিত করি, সেটা কোনো নৈতিক ও মহৎ কাজ হবে বলে মনে হয় না, কারণ, এ দ্বারা কোরবানি করাকে নিরুৎসাহিত করা বোঝানো হবে, যা করা সঙ্গত নয় বলেই আমি মনে করি। এর ফলে, ধর্মপ্রাণ মুমিন ব্যক্তিগণ উপরোল্লিখিত ১, ২ ও ৩ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনটি ব্যত্যয় ঘটিয়ে ফেলবেন; পরিণতিতে আমাদের দরিদ্র পশুচাষীগণ সমূহ বিপদের সম্মুখীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হবে।
আপনি যদি প্রতি বছর কোরবানি দিয়ে থাকেন, এবং যদি সেটি লোকদেখানো কোরবানি না হয়ে থাকে, ৫০ হাজার টাকায় গরু কিনে যদি দেড় লাখ টাকায় গরু কিনেছেন এটা প্রচার না করে থাকেন, আর কোরবানির মাংসের গরীব-মিসকিন ও আত্মীয়দের অংশ, এমনকি নিজের অংশও অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে থাকেন, আপনি নিঃসন্দেহে একজন ভালো লোক। অতএব, এবারও আপনার কোরবানি দেয়া অতি সঙ্গত কাজ হবে। এমনকি, আপনার পশুটি ন্যায্য দামে কেনার পর বকশিস হিসাবে বিক্রেতার হাতে আরো ৫ হাজার টাকা গুঁজে দিন। কারণ, বন্যার কারণে এবার এমনিতেই পশুর দাম একটু কমে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে; কারণ, বন্যাকবলিত এলাকার অনেক মানুষ প্রাকৃতিক কারণেই কোরবানি দিতে পারবেন না, ফলে পশুর চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমে যাবে। এজন্য, দরিদ্র কৃষকদের লোকসানের অংকটা আপনি কমিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে সেটা একটা মহৎ কাজ হবে। এমনও হতে পারে, বন্যাদুর্গত এলাকার পশুগুলো বন্যার কারণেই বিক্রি করে ফেলতে চাইবেন কৃষকেরা। তাঁদের পশুগুলো না কেনা হলে তাঁদেরকে ভয়াবহ সংকটে পড়তে হবে বৈকি; এই পশুগুলো তাঁরা পানির মধ্যে খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখতে ব্যর্থ হবেন, এগুলো মারা যাবে, কৃষকের মূল্যবান সম্পদ বন্যার পানিতে ভেসে যাবে।
আপনি প্রচারসর্বস্ব ভণ্ডলোক নন বলেই আপনাকে বলছি। যেহেতু আপনি প্রতিবছর কোরবানি দিয়ে থাকেন, তার মানে আপনি বেশ সচ্ছল ব্যক্তি। এবারের বন্যা উপলক্ষে বন্যার্তদের জন্য আপনার দু হাত প্রসারিত করুন। কিন্তু পশু কোরবানি বাদ দিয়ে নয়। কোরবানি না দিয়ে সেই অর্থ বন্যার্তদের দিলে আপনি অতিরিক্ত কিছু করছেন বলে মনে করি না। আপনি যেহেতু সচ্ছল ব্যক্তি, কোরবানি দিয়ে গরীবমিসকিনদের হক আদায় করুন, দরিদ্র কৃষকদেরকে পশু বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি করে দিন, ওয়াজিব আদায় করুন, এবং একই সঙ্গে আপনি বন্যার্তদের জন্যও সমপরিমাণ অর্থ দান করুন। অর্থাৎ, আপনি আপনার পরিকল্পিত বাজেট অনুযায়ী কোরবানির পশু কিনুন। আপনার সঞ্চিত খাত থেকে কোরবানির সমপরিমাণ অর্থ, নিদেনপক্ষে একমুঠো সম্পদ বন্যার্তদের জন্য বয়ে নিয়ে যান। অথবা, আপনার বাজেটের অংক এমনভাবে ভাগ করুন, যাতে একভাগ দিয়ে অনায়াসে একটা পশু কেনা যায়, আরেকভাগ বন্যার্তদের জন্য খরচ করা যায়। আপনার মতো মহৎ লোক আর কে আছেন?
আর যেটা করতে পারেন, আপনি কোরবানির মাংস থেকে গরীব-মিসকিন ও আত্মীয়দের অংশ বিতরণের পর আপনার নিজের অংশের পুরোটা দিয়ে কয়েক ডেকচি খিঁচুড়ি রান্না করুন। আত্মীয়দের মধ্যে যাঁরা সচ্ছল, তাঁদের ভাগটা এই বন্যাদুর্গতদের জন্য দিয়ে দিন। একটা গাড়ি ভাড়া করুন। এগুলো নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় চলে যান। আপনার এই রেডিমেড খিঁচুড়ি দুর্গতদের মধ্য বিলিয়ে দিন। তাঁরা এগুলো পেয়ে মনে করবেন আপনি বেহেশত থেকে নেমে এসেছেন তাঁদের জন্য খাবার নিয়ে। আপনি যদি ৮০ হাজার টাকা খরচ করতে পারেন, তার সাথে আরো ১০-১৫ হাজার টাকা অনায়াসেই খরচ করে ফেলতে পারেন বলে আমি মনে করি। মানব-সেবার সুযোগ আপনার জীবনে বার বার আসবে না। আপনি কতখানি মানবদরদি, নিজের কাছেই নিজের প্রমাণ পেশ করার এটাই হলো আদর্শ সময়। দান করুন দু হাত খুলে। দানের ফজিলত দেখুন নীচে দেয়া আছে।
উত্তম হয় এটাই, যদি আপনি বন্যাকবলিত কৃষকদের কাছ থেকে, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের কৃষকদের কাছ থেকে গরু কিনতে পারেন। আপনি সরাসরি বন্যাকবলিত স্থানে গিয়েও কোরবানি আদায় করতে পারেন; ঐ জায়গার পশু কিনুন, ঐ জায়গায় কোরবানি দিন, ঐ জায়গার মানুষের মাঝে সমুদয় মাংস বিলিয়ে দিন। এতে আপনার কোরবানিও হলো, বন্যার্তদের জন্য সাহায্য করাও হলো। আরেকটু প্রস্তুতি নিলে, প্রয়োজনে স্থানীয় লোকদের সাহায্য নিয়ে আপনি ওখানেই মাংসের খিঁচুড়ি রান্না করে বিতরণ করতে পারেন। এ কাজে বন্যাদুর্গত মানুষরাই এগিয়ে আসবে, দেখবেন।
বোনাস সহায়তা হিসাবে আরো যেটি করতে পারেন তা হলো, আপনার ঘরের পুরোনো/অপ্রয়োজনীয়/ফেলনা কাপড়চোপড়গুলো নিয়ে যান। পুরান মার্কেট থেকেও কিছু কাপড় কিনে নিয়ে যেতে পারেন। কিছু চিড়া/গুঁড়/ডাল/চাল নিয়ে যেতে পারেন। আপনি দান করতে চাইলে নিজের মাথা থেকেই দেখবেন হাজারটা দানের জিনিস বের হয়ে আসছে।
কেউ কেউ একাধিক পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন, এমনকি ইদের পরের দিন বা তার পরের দিনও কেউ কেউ কোরবানি দিয়ে থাকেন। তাঁরা কেবল একটি পশু কোরবানি দিয়ে বাকি অর্থ বন্যার্তদের জন্য দান করতে পারেন।
কিছু কিছু টকশোজীবী, সেলিব্রেটি ও সাধারণ মানুষ ফেইসবুকে স্টেটাস দিয়ে ঘোষণা করছেন- এবারে তাঁরা কোরবানি না দিয়ে সেই অর্থ বন্যার্তদের মধ্যে বিলিয়ে দেবেন। আপাত দৃষ্টিতে এটা অনেক মহৎ কাজ বলেই মনে হয়। কিন্তু একটু গভীরভাবে ধ্যান করলেই বোঝা যাবে, এবং আমার সবসময়ই মনে হয়েছে যে, এতে এক বিরাট ভণ্ডামি নিহিত রয়েছে। কারণ, মুমিন ব্যক্তি, যিনি লোকদেখানো কোরবানি আদায় করেন না, যিনি সত্যিকারেই ওয়াজিব আদায় না করে সেই অর্থ বন্যার্তদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে চান, তিনি কখনোই নাম ফুটানোর জন্য এভাবে ফেইসবুকে স্টেটাস দেবেন না। তিনি কেঁদেকেটে আল্লাহর কাছে ওয়াজিব ভঙ্গের জন্য আগে মাফ চেয়ে নেবেন, অতঃপর গোপনে এই কাজ সম্পন্ন করবেন, হয়ত একটি পশু নয়, একাধিক পশুর দামই তিনি বিতরণ করে থাকবেন (এমন কেউ করে থাকলে আল্লাহ তাঁকে হাজার বরকত দিন। ওয়াজিব ভঙ্গের পাপ থেকে নিস্কৃতি দিন)। এসব লোকের কিছু চাটুকারও থাকে, যাঁরা বাহবা দিয়ে এঁদের মাহাত্ম্যকে আকাশে উঠিয়ে দিচ্ছেন। খোঁজ নিলে হয়ত এটাও জানা যাবে, এঁরা কোরবানিও দেবেন না, বন্যার্তদের সাহায্যও পাঠাবেন না; অথবা পাঠালেও এমন হতে পারে, বাজেট ছিল ৮০ হাজার, বন্যার্তদের ৮০ হাজারের জায়গায় ৫-১০ হাজার দিয়েই খালাস, অর্থাৎ নিজের টাকা নিজেই আত্মসাৎ করলেন আর কী। এরপর টকশোতে এরা টিভির পর্দা ফাটাবেন, যাঁরা কোরবানি দিলেন তাঁদের গোষ্ঠী উদ্ধার করবেন, নিজেদের পত্রিকায় বড়ো বড়ো কলাম লিখবেন এ নিয়ে, ফেইসবুকে সগোত্র ও সচিত্র স্টেটাস দিতেও কসুর করবেন না। এরকম স্টান্টবাজ ও ভণ্ডদের চিনে রাখুন। আমি এঁদের দেখামাত্র আনফ্রেন্ড করে দিচ্ছি। আমি ভণ্ডদের বন্ধু হয়ে থাকতে রাজি নই।
আরেকটা বিষয় হলো, ইদের আগে বন্যা হওয়ায় এই এঁরা এরূপ ঘোষণা দিচ্ছেন। তাঁদের এই ঘোষণা থেকে এটা মনে হওয়া খুবই স্বাভাবিক যে, ইদ পার হয়ে যাওয়ার পর বন্যা হলে বন্যার্তদের জন্য তাঁদের পকেট থেকে একটা কানাকড়িও বের হতো না। কারণ, কোরবানিতে টাকা খরচ হয়ে গেছে যে! আর যদি তাঁদের জবাব এমন হয় যে তখনো তাঁরা বন্যার্তদের জন্য মুক্ত হস্তে দান করতেন, তাহলে এখনই সেটা করছেন না কেন? কোরবানির টাকা বন্যার্তদের জন্য কেন? প্রকৃত মুমিনদার ব্যক্তি কোরবানিও দেবেন, বন্যার্তদের জন্য সাহায্যও দেবেন। আর যাঁদের মধ্যে ভণ্ডামি আছে, তাঁরা নাম ফুটানোর জন্য এরকম চমকপ্রদ ঘোষণা দিতেই থাকবেন।
মূল কথা হলো, সত্যিকারের দানকারী প্রচারে বিশ্বাসী নন, দানেই তাঁর আনন্দ- কোরবানি হোক, বা অন্য যে-কোনো উপায়েই হোক না কেন।
কোরবানি দিন। দান করুন। দানে কী আনন্দ, তা একমাত্র সত্যিকারের দানশীলই জানেন। এবং মন খুলে দান করার পর দেখবেন, এক স্বর্গীয় আনন্দে আপনার মনপ্রাণ ভরে উঠেছে।
***
এবার দান-খয়রাতের উপর ইন্টারনেটে পাওয়া কিছু বয়ান লেখকের নামসহ নীচে তুলে দিলাম। উপরের অংশটুকুর লেখক ব্লগার সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই।
***
লেখক: মুহাঃ আবদুল্লাহ আল কাফী বিন আব্দুল জলীল
সম্পাদনা : আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়া এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সঊদী আরব।
***
“দান-ছাদকা গুনাহ মিটিয়ে ফেলে যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে ফেলে।” (সহীহুল জামে/৫১৩৬)
ধন-সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ তা’আলা। তিনি যাকে ইচ্ছা উহা প্রদান করে থাকেন। এজন্য এ সম্পদ অর্জন ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে তাঁর বিধি-নিষেধ মেনে চলা আবশ্যক। সৎ পন্থায় সম্পদ উপার্জন ও সৎ পথে উহা ব্যয় করা হলেই তার হিসাব প্রদান করা সহজ হবে। কিয়ামতের দিন যে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোন মানুষ সামনে যেতে পারবে না, তম্মধ্যে দু’টি প্রশ্নই ধন-সম্পদ বিষয়ক। প্রশ্ন করা হবে, কোন পথে সম্পদ উপার্জন করেছ এবং কোন পথে উহা ব্যয় করেছ।
সন্দেহ নেই ধন-সম্পদ নিজের আরাম-আয়েশ এবং পরিবারের ভরণ-পোষণের ক্ষেত্রে ব্যয় করার অনুমতি ইসলামে আছে এবং অনাগত সন্তানদের জন্য সঞ্চিত করে রাখাও পাপের কিছু নয়। কিন্তু পাপ ও অন্যায় হচ্ছে, সম্পদে গরীব-দুঃখীর হক আদায় না করা। অভাবী মানুষের দুঃখ দূর করার প্রতি ভ্রুক্ষেপ না করা। অথচ আল্লাহ বলেন:
وَالَّذِينَ فِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ مَعْلُومٌ، لِلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ
“এবং তাদের সম্পদে নির্দিষ্ট হক রয়েছে। ভিক্ষুক এবং বঞ্চিত (অভাবী অথচ লজ্জায় কারো কাছে হাত পাতে না) সকলের হক রয়েছে।” (মাআরেজ- ২৪-২৫)
অধিকাংশ মানুষ দান-খয়রাত করতে চায় না। মনে করে এতে সম্পদ কমে যাবে। তাই সম্পদ সঞ্চিত করে রাখতেই সর্বদা সচেষ্ট থাকে, এমনকি নিজের প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেও খরচ করতে কৃপণতা করে।
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“মানুষ বলে আমার সম্পদ আমার সম্পদ অথচ তিনটি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত সম্পদই শুধু তার। যা খেয়ে শেষ করেছে, যা পরিধান করে নষ্ট করেছে এবং যা দান করে জমা করেছে- তাই শুধু তার। আর অবশিষ্ট সম্পদ সে ছেড়ে যাবে, মানুষ তা নিয়ে যাবে।” (মুসলিম)
• দান-ছাদকা করার ফযীলতঃ
দান-ছাদকা করলে সম্পদ কমে না: আবু কাবশা আল আনমারী (রা থেকে বর্ণিত, তিনি শুনেছেন রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
” مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ
“ছাদকা করলে কোন মানুষের সম্পদ কমে না।” (তিরমিযী, ইবনে মাজাহ)
ক) দান সম্পদকে বৃদ্ধি করে: পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক এরশাদ করেন:
مَثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنْبُلَةٍ مِائَةُ حَبَّةٍ وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ
“যারা আল্লাহর রাস্তায় সম্পদ ব্যয় করে তার উদাহরণ হচ্ছে সেই বীজের মত যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। আর প্রতিটি শীষে একশতটি করে দানা থাকে। আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা অতিরিক্ত দান করেন। আল্লাহ সুপ্রশস্ত সুবিজ্ঞ।” (সূরা বাকারা-২৬১)
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
مَنْ أَنْفَقَ نَفَقَةً فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَانَتْ لَهُ بِسَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ
“যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে কোন কিছু ব্যয় করবে তাকে সাতশত গুণ ছওয়াব প্রদান করা হবে।” (আহমাদ, সনদ ছহীহ)
রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরও বলেন:
“যে ব্যক্তি নিজের হালাল কামাই থেকে- আল্লাহ হালাল কামাই ছাড়া দান কবুল করেন না- একটি খেজুর ছাদকা করে, আল্লাহ উহা ডান হাতে কবুল করেন অতঃপর তা বৃদ্ধি করতে থাকেন- যেমন তোমরা ঘোড়ার বাচ্চাকে প্রতিপালন করে থাক- এমনকি উহা একটি পাহাড় পরিমাণ হয়ে যায়।” (বুখারী ও মুসলিম)
খ) দানকারীর জন্য ফেরেশতা দু’আ করে: আবু হুরায়রা (রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন দানকারীর জন্য দু’আ করে বল, اللَّهُمَّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا “হে আল্লাহ দানকারীর মালে বিনিময় দান কর। (বিনিময় সম্পদ বৃদ্ধি কর)” আর দ্বিতীয়জন কৃপণের জন্য বদ দু’আ করে বলেন, اللَّهُمَّ أَعْطِ مُمْسِكًا تَلَفًا “ ” “হে আল্লাহ কৃপণের মালে ধ্বংস দাও।” (বুখারী ও মুসলিম)
গ) দানকারীর দুনিয়া আখিরাতের সকল বিষয় সহজ করে দেয়া হয়:
আবু হুরায়রা (রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
مَنْ يَسَّرَ عَلَى مُعْسِرٍ يَسَّرَ اللَّهُ عَلَيْهِ فِي الدُّنْيَا وَالْآخِرَةِ
”যে ব্যক্তি কোন অভাব গ্রস্তের অভাব দূর করবে, আল্লাহ তার দু’নিয়া ও আখিরাতের সকল বিষয় সহজ করে দিবেন।” (মুসলিম)
ঙ) গোপনে দান করার ফযীলতঃ গোপন-প্রকাশ্যে যে কোনভাবে দান করা যায়। সকল দানেই ছওয়াব রয়েছে। আল্লাহ বলেন:
إِنْ تُبْدُوا الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَ وَإِنْ تُخْفُوهَا وَتُؤْتُوهَا الْفُقَرَاءَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ وَيُكَفِّرُ عَنْكُمْ مِنْ سَيِّئَاتِكُمْ
”যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি গোপনে ফকীর-মিসকিনকে দান করে দাও, তবে এটা বেশী উত্তম। আর তিনি তোমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন।” (সূরা বকারা- ২৭১)
চ) গোপনে দানকারী কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নীচে ছায়া লাভ করবে: নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “কিয়ামত দিবসে সাত শ্রেণীর মানুষ আরশের নীচে ছায়া লাভ করবে।… তম্মধ্যে এক শ্রেণী হচ্ছে:
وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لَا تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ
“এক ব্যক্তি এত গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কি দান করে বাম হাত জানতেই পারে না।” (বুখারী ও মুসলিম)
ছ) দান-ছাদকা গুনাহ মাফ করে ও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচায়:
নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“হে কা‘ব বিন উজরা! ছালাত (আল্লাহর) নৈকট্য দানকারী, ছিয়াম ঢাল স্বরূপ এবং দান-ছাদকা গুনাহ মিটিয়ে ফেলে যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে ফেলে।” (আবু ইয়ালা, সনদ ছহীহ) রাসূলুল্লাহ (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
اتَّقُوا النَّارَ وَلَوْ بِشِقِّ تَمْرَةٍ
“খেজুরের একটি অংশ দান করে হলেও তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা কর।” (বুখারী ও মুসলিম)
জ) মানুষ কিয়ামতে দান-ছাদকার ছায়াতলে থাকবে: উক্ববা বিন আমের (রা থেকে বর্ণিত। নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “নিশ্চয় দান-ছাদকা দানকারী থেকে কবরের গরম নিভিয়ে দিবে। আর মু’মিন কিয়ামত দিবসে নিজের ছাদকার ছায়াতলে অবস্থান করবে।” (ত্ববরানী, বাইহাক্বী, সনদ ছহীহ)
• লোক দেখানোর জন্য দান: কিন্তু বর্তমান যুগে অনেক মানুষ এমন আছে, যারা অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রকাশ্যে দান করে এবং তা মানুষকে দেখানোর জন্য। মানুষের ভালবাসা নেয়ার জন্য। মানুষের প্রশংসা কুড়ানোর জন্য। মানুষের মাঝে গর্ব অহংকার প্রকাশ করার জন্য। অনেকে দুনিয়াবি স্বার্থ সিদ্ধির জন্যও দান করে থাকে। যেমন, চেয়ারম্যান বা এমপি নির্বাচনে জেতার উদ্দেশ্য দান করে। কিন্তু দান যদি একনিষ্ঠ ভাবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য না হয় তা দ্বারা হয়ত দুনিয়াবি কিছু স্বার্থ হাসিল হতে পারে কিন্তু আখেরাতে তার কোন প্রতিদান পাওয়া যাবে না। হাদীছে কুদসীতে নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন আল্লাহ বলেন:
أَنَا أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ مَنْ عَمِلَ عَمَلًا أَشْرَكَ فِيهِ مَعِي غَيْرِي تَرَكْتُهُ وَشِرْكَهُ “
“আমি শির্ক কারীদের শিরক থেকে মুক্ত। যে ব্যক্তি কোন আমল করে তাতে আমার সাথে অন্যকে শরীক করবে, তাকে এবং তার শির্কী আমলকে আমি পরিত্যাগ করব।” (মুসলিম)
বরং যারা মানুষের প্রশংসা নেয়ার উদ্দেশ্যে দান করবে, তাদের দ্বারাই জাহান্নামের আগুনকে সর্বপ্রথম প্রজ্বলিত করা হবে।
রাসূল (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“সর্বপ্রথম তিন ব্যক্তিকে দিয়ে জাহান্নামের আগুনকে প্রজ্বলিত করা হবে।… তম্মধ্যে (সর্ব প্রথম বিচার করা হবে) সেই ব্যক্তির, আল্লাহ যাকে প্রশস্ততা দান করেছিলেন, দান করেছিলেন বিভিন্ন ধরনের অর্থ-সম্পদ। তাকে সম্মুখে নিয়ে আসা হবে। অতঃপর (আল্লাহ) তাকে প্রদত্ত নেয়ামত রাজীর পরিচয় করাবেন। সে উহা চিনতে পারবে। তখন তিনি প্রশ্ন করবেন, কি কাজ করেছ এই নেয়ামত সমূহ দ্বারা? সে জবাব দিবে, যে পথে অর্থ ব্যয় করলে আপনি খুশি হবেন এ ধরনের সকল পথে আপনার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে অর্থ-সম্পদ ব্যয় করেছি। তিনি বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এরূপ করেছ এই উদ্দেশ্যে যে, তোমাকে বলা হবে, সে দানবীর। আর তা তো বলাই হয়েছে। অতঃপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হবে। তখন তাকে মুখের উপর উপুড় করে টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।” (মুসলিম)
• আত্মীয়-স্বজনকে দান করা: সালমান বিন আমের (রা থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
“মিসকিনকে দান করলে তা শুধু একটি দান হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু গরীব নিকটাত্মীয়কে দান করলে তাতে দ্বিগুণ ছওয়াব হয়। একটি ছাদকার; অন্যটি আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার।” (নাসাঈ, তিরমিযী)
• দান-ছাদকা করে খোঁটা দেয়া:
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُبْطِلُوا صَدَقَاتِكُمْ بِالْمَنِّ وَالْأَذَى
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা খোঁটা দিয়ে ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান-খায়রাতকে বরবাদ করে দিও না।” (সূরা বকারা- ২৬৪)
আবু যর (রা থেকে বর্ণিত, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
“কিয়ামত দিবসে আল্লাহ পাক তিন ব্যক্তির সাথে কথা বলবেন না, তাদের দিকে তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণা দায়ক শাস্তি। কথাটি তিনি তিনবার বললেন। আবু যার (রা বললেন, ওরা ধ্বংস হোক ক্ষতিগ্রস্ত হোক- কারা তারা হে আল্লাহর রাসূল? তিনি বললেন, “টাখনুর নীচে ঝুলিয়ে যে কাপড় পরিধান করে, দান করে যে খোঁটা দেয় এবং মিথ্যা শপথ করে যে ব্যবসায়ী পণ্য বিক্রয় করে।” (মুসলিম)
• কৃপণের পরিণতি: কৃপণতা একটি নিকৃষ্ট বিষয়। কৃপণতা থেকে মনের মাঝে হিংসা সৃষ্টি হয়। এ কারণে মানুষ লোভী হয়। ফলে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করে এবং সম্পদের লোভে যে কোন ধরণের অন্যায় ও অবৈধ কাজে পা বাড়ায়। এজন্য নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবিষয়ে উম্মতকে সতর্ক করেছেন।
তিনি বলেছেন:
“তোমরা কৃপণতা ও লোভ থেকে সাবধান। কেননা পূর্ব যুগে এই কারণে মানুষ রক্তের সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, মানুষকে খুন করেছে এবং নানা প্রকার পাপাচার ও হারাম কাজে লিপ্ত হয়েছে।” (আবু দাউদ, হাকেম) এজন্য নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কৃপণতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তিনি দু’আয় বলতেন, “হে আল্লাহ তোমার কাছে কৃপণতা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।..” (মুসলিম)
গোপনে দান করার ফযীলতঃ গোপন-প্রকাশ্যে যে কোনভাবে দান করা যায়। সকল দানেই ছওয়াব রয়েছে। আল্লাহ বলেন:
إِنْ تُبْدُوا الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَ وَإِنْ تُخْفُوهَا وَتُؤْتُوهَا الْفُقَرَاءَ فَهُوَ خَيْرٌ لَكُمْ وَيُكَفِّرُ عَنْكُمْ مِنْ سَيِّئَاتِكُمْ
”যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতই না উত্তম। আর যদি গোপনে ফকীর-মিসকিনকে দান করে দাও, তবে এটা বেশী উত্তম। আর তিনি তোমাদের পাপ সমূহ ক্ষমা করে দিবেন।” (সূরা বকারা- ২৭১)
গোপনে দানকারী কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নীচে ছায়া লাভ করবে: নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “কিয়ামত দিবসে সাত শ্রেণীর মানুষ আরশের নীচে ছায়া লাভ করবে।… তম্মধ্যে এক শ্রেণী হচ্ছে:
وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ بِصَدَقَةٍ فَأَخْفَاهَا حَتَّى لَا تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ
“এক ব্যক্তি এত গোপনে দান করে যে, তার ডান হাত কি দান করে বাম হাত জানতেই পারে না।” (বুখারী ও মুসলিম)
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ মোঃ তানজিল আলম।
২| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০৮
ওমেরা বলেছেন: উত্তম পন্থায় উত্তম আহ্বান জানিয়েছেন । অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ।
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই ,
একটি মানবিক আবেদন .................
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয় আহমেদ জী এস ভাই।
৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৩
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৫| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:৩৭
Mdbadshah বলেছেন: মাশা'আল্লাহ! অনেক ভাল লাগছে
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:০৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
৬| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৩৯
নাবিক সিনবাদ বলেছেন: চমৎকার ভাবনা, ধন্যবাদ।
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ।
৭| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৯:৪৩
মিঃ আতিক বলেছেন: অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় অসাধারণ ভাবে উপস্থাপন করেছেন, আন্তরিক ধন্যবাদ।
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
৮| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৩৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
দেখছি, এটা আপনার নিজের লেখা নয়; আপনি নিজে লিখলে ভালো হতো
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:৫০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: দান-খয়রাতের উপর সংযুক্ত অংশটা সংগৃহীত, যা লেখকের নামসহ দেয়া আছে। উপরের অংশ তো আমারই, এটা ক্লিয়ার হয় নি?
৯| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪২
চাঁদগাজী বলেছেন:
আগে কোন বন্যার সময়, দুর্যোগের সময় মানুষ কি এসব নিয়ে বিতর্কে জড়ায়েছিল?
২০ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৫৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আগে সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এতটা অ্যাক্টিভ ছিল না, ১৯৮৮, ২০০৩/২০০৭/২০০৮-এর কথা বলছি। তবে, গত কয়েক বছর অন্য একটা বিষয় খুব আলোচিত হতো - কোরবানিতে প্রচুর পরিমাণে নিরীহ ও উপকারী পশু গরু হত্যা করা হচ্ছে। ফেইসবুকে একটা গ্রুপ এ ব্যাপারে খুব সোচ্চার ছিল।
১০| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:৪৪
বারিধারা বলেছেন: এর আগে ইফতেখার আহমেদ ফাহমী নামের এক তরুণ পরিচালকের নাটকে কোরবানির টাকা নিয়ে গরু না কিনে তা এক অসুস্থ বন্ধুর মায়ের চিকিৎসায় ব্যয় করায় যে কতটা মহত্ব, তা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু দর্শক এই মেসেজ ভালোভাবে নেয়নি।
আমাদের প্রধানমন্ত্রীও কয়েক বছর আগে ইফতার পার্টি না করে সেই টাকা দুস্থ অসহায় মহিলাদের ভাগ্য উন্নয়নে ব্যয় করার ট্রেন্ড চালু করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু দলীয় কর্মীরাই এটাকে পাত্তা দেয়নি বলে কয়েক বছর যাবত আবার ইফতার পার্টি করা শুরু করেছেন।
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কোরবানি দেয়া ও বন্যার্তদের বা অসহায়দের দান করা, দুটোই মহৎ কাজ; দুটোই করা হয় গরীবদের সাহায্যার্থে। কিন্তু কোরবানিকে আমরা করে ফেলি লোকদেখানো আর নিজেদের ভোগবিলাসিতার বস্তু, এর ফলে যিনি কোরবানি দেন তিনি মনে করেন যে, একটি বাদ দিয়ে অন্যটি করা যায়। আমি মনে করি এটা করা যেতে পারে, কিন্তু কোরবানি অন্য কিছুর সাথে বিনিময়যোগ্য নয়- আপনি কোরবানির টাকা দান করলে আপনি দানের ফজিলত পাচ্ছেন, কিন্তু কোরবানি ওয়াজিব হওয়া সত্ত্বেও তা আদায় না করলে এটা বরখেলাপের জন্য দায়ী থাকবেন। যিনি মনে করেন যে, লাখ তিনেক টাকা দিয়ে এক বা একাধিক পশু কিনে কোরবানি দেবেন, আর সেই মাংস সারা বছর খাবেন, সেখানে তাঁর নিয়্যত ঠিক আছে বলে আমি মনে করি না। যাঁদের কোরবানির তাৎপর্য সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখেন না, তাঁরা তথাকথিত 'মানবতা'র নামে মুখে ফেনা তুলে ফেলেন। এই বন্যায় আমাদের উচিত আরো বেশি করে কোরবানি দেয়া এবং এর মাংস অসহায় মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া। বন্যার্তরা টাকা দিয়ে এখন কী করবেন? তাঁদের দরকার খাদ্যের। কোরবানি দিন, তাঁদের জন্য খাদ্য তৈরি করুন। তাঁদের মুমুর্ষু পশুগুলো কিনুন। প্রকৃত মানবতা হবে এটাই।
ইফতার পার্টি কাদের জন্য? যাঁরা রোজার মাসে ইফতারের নামে খাদ্যবিলাসিতা করেন, তাঁদের জন্য ইফতার পার্টি না দিয়ে ঐ টাকা বরং অসহায়দের মধ্যে দান করাই উত্তম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এটা একটা মহৎ উদ্যোগই ছিল। কিন্তু দরিদ্র-অসহায়দের জন্য একবেলা ইফতার পার্টির আয়োজন করা হলে সেটা আরেকটা মহৎ নিদর্শন হতে পারে।
ধন্যবাদ আপনাকে।
১১| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২২
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: সময়োপযোগী চমৎকার আলোচনা।
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ গিয়াস ভাই।
১২| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৮
ডার্ক ম্যান বলেছেন: ঐ বদমাশ গুলো মূলত ২০১২ সাল থেকে কোরবানি বিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু পাঁঠা বলির কথা এলে কবি এখানেই নীরব থাকে।
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ঠিক বলেছেন।
১৩| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:০৪
সোহানী বলেছেন: সহমত.....
প্রতিটি যুক্তিতে সহমত...
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:১১
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ধন্যবাদ আপু। শুভেচ্ছা।
১৪| ২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:১৬
কানিজ রিনা বলেছেন: বিস্তারিত আলোচনা পাঠকের জন্য ভাল
হয়েছে। কেউ কেউ কুরবানী না করে
সম্পুর্ন টাকাই বন্যার্ত মানুষের দিতে
চেয়েছে। আসলে সব দিক বিবেচনা
করে দেখতে হবে। গরীব কৃষক গরু
পালে এই কুরবানী উপলক্ষে বেচে
কিছুটা লাভবান হবে। এদিকেও নজর
রাখা জরুরী।
আমার লেখায় আমি বলেছি কুরবানীর
টাকা থেকে ৫০০/১০০০ বাঁচিয়ে বন্যার্ত
দুর্গতদের দান করুন। অসংখ্য ধন্যবাদ।
২১ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ৮:১৮
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: হ্যাঁ, সবদিক বিবেচনা করে একটা সিদ্ধান্ত নিলে সেটাই সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ধন্যবাদ আপনাকে।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫০
মোঃ তানজিল আলম বলেছেন: যৌক্তিক আলোচনা।
অনেকেই বলেন কোরবানী না দিয়ে সেই টাকা বন্যার্তদের দান করা উচিত। এটা আসলেই ভুল ধারনা।
দান খয়রাত এমন একটা ইবাদত , দুনিয়াতে যার নিশ্চিত প্রতিদান পাওয়া যায়।