নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
প্রমীলার চোখে বুড়িত্বের ভাঁজ। ওর সমগ্র শরীরে ঝরে পড়ে দুঃখ। ওর মন নেই, শুধু খাঁচাটুকু পড়ে আছে।
প্রমীলার কলেজ-পড়ুয়া এক ছেলে। পিতৃহারা দুঃখিনী মেয়েটা অকালে স্বামীর ঘরে। প্রমীলার জামাই একজন স্বর্ণকার ছিলেন। প্রমীলার সংসারে প্রচুর সুখ ছিল।
একদিন জ্বলন্ত মধ্যাহ্ন। দোকানের সামনে ওর জামাইর বুক বরাবর গুলি ছুঁড়লো আধুনিক দস্যুরা। সেই থেকে প্রমীলা বিধবা।
আমরা কয়েকজন ক্লাসমেট একদিন প্রমীলার মুখোমুখি হলাম। কয়েকটা নিরুত্তাপ কথায় প্রমীলা ওর দিন যাপনের কথা বলছিল। আমরা কাঁদছিলাম। প্রমীলার স্বর নির্লিপ্ত। প্রমীলার অনেক দুঃখ। ওর দুঃখ মোচনের সাধ্য আমাদের নেই। আমরা কাঁদছিলাম।
অবশেষে প্রমীলাও কেঁদেছিল। কেঁদে কেঁদে বলছিল- তোরা আমার ভাই, তোদের কাছে আমার দাবিআমার ছেলেটাকে তোরা মানুষ করে দে।
প্রমীলা আর কেউ নয়- প্রমীলা আমাদের বোন।
একটা মেয়ে প্রায়ই আসে। প্রায়শ নয়, সর্বদা। তারও নাম ‘প্রমীলা’। অবশ্য কবিতার ‘প্রমীলা’ আর বাস্তবের ক্লাসমেট- ভিন্ন দুই সত্তা।
প্রমীলা বুড়ি হয়ে যাচ্ছে। বুড়ি হয়ে যাচ্ছে শাহনাজ, পারুল, পারভিন। আমাদের যৌবনে যারা সর্বগ্রাসী তুফান ছিল, কেমন নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে তারা।
জাহিদের কথা কত অল্প দিনেই ভুলে গেলাম, তাই না? চিরদুরন্ত, অফুরন্ত প্রাণময় জাহিদ দু হাজার এগারো’র ৯ সেপ্টেম্বরে ব্রাজিলের রাজপথে ঝড়োগতিতে বাইক চালিয়ে অ্যাক্সিডেন্টে পড়লো, এর দুদিন পর ওর মৃত্যুর খবর পাই। আমি অনেকদিন মর্মে মর্মে ছটফট করেছি- আচমকা জাহিদের মুখ ভেসে উঠতো চোখে; এখনো স্বপ্নের ভেতর হু হু করে বুক; কেঁদে উঠি। হায় অলঙ্ঘ্য মৃত্যু- স্ত্রীর অবাধ্য যৌবন, তিন মাস বয়সী মেয়ের হাসিমুখ- নির্দ্বিধায় পেছনে ফেলে জাহিদকে টেনে নিয়ে গেলো গহিন সুদূরে। ... খায়ের- যে ছেলেটি হাডুডু’র মাঠে ছিল ত্রাস- এক থাবায় গোটা ছয়েক পালোয়ানকে দাবড়ে, থাপড়ে, টেনে-হেঁচড়ে করে দিত ‘মার’- আর মেয়েরা ওর জন্য পাগল ছিল, সতীর্থ প্রেমিকেরা হিংসায় জ্বলেপুড়ে ছাই হতোখায়েরকে এখন পথ দেখায় নিঃস্বপ্ন ছড়ি; হৃৎপিণ্ডে ‘ভাল্ভ’ লাগিয়ে কোনোরূপে টেনে যাচ্ছে জীবন।
নিজেদের বয়স ভুলে আদিম আনন্দে উন্মত্ত হই স্কুলের আড্ডায়- সন্ধ্যায় ম্লান চোখে বাড়ি ফেরার পথে মনে পড়ে- এই পথ আমার ৪০ বছরের সাক্ষী। হায় পথ- সেও তার যৌবন হারিয়ে জীর্ণ হয়েছে। আমরা? আমরাও কি হারিয়ে ফেলেছি ঝড়ের যৌবন? হায় যৌবন, মাটিতে কান পাতলেই শুনি- নিভৃত মাটির ডাক। এ মাটির কী যে মায়া- মায়াবতী মাটি শুধু ডাকে।
প্রাণের সহেলিরা, দুরন্ত সহচর, তোদের দেখলেই মুহূর্তে জ্বলে উঠি- মনে হয়, একটুও বয়স বাড়ে নি, এখনো স্কুলের ১৬ বছর বয়সেই থির দাঁড়িয়ে আছে আমাদের উন্মাতাল কৈশোর।
২০ নভেম্বর ২০১২
১৪ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:২৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আমারও আফসোস হচ্ছে যে এখনকার লেখাগুলো আর আগের মতো হচ্ছে না। ডিজিটালাইজেশনের প্রভাব হতে পারে।
আপনার ভালো লাগলো জেনে আমারও ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ নিন। শুভেচ্ছা নিন।
২| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৯
ঢুকিচেপা বলেছেন: “সেই সাতজন নেই আজ টেবিলটা তবু আছে, সাতটা পেয়ালা আজও খালি নেই
একই সে বাগানে আজ এসেছে নতুন কুঁড়ি শুধু সেই সেদিনের মালী নেই”
এর চাইতে ভালো কিছু আর মনে পড়ছে না।
১৪ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৭
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ভালো কিছু দেয়ার জন্য আপনাকেও কিছু দিলাম।
৩| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১২:২৮
জটিল ভাই বলেছেন:
সোনা সোনা সোনা। লোকে বলে সোনা। সোনা নয় ততো খাঁটি!
১৪ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৯
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: তারও চেয়ে বলো খাঁটি আমাদের জটিল ভাইয়ের কথাটি
আমার বাংলাদেশের মাটি
৪| ০৯ ই জুলাই, ২০২১ ভোর ৪:৪৫
সোহানী বলেছেন: আপনার অনেকগুলো লিখা পেন্ডিং আছে পড়া । একটু ফ্রি হয়ে ফিরে আসবো। খুবই ঝামেলার মাঝে যাচ্ছি। কোনভাবেই সময় ম্যানেজ করতে পারছি না।
১৪ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৪০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: আর পেছনে যাইয়েন না আপু। সামনে তাকান। আমিও ভি অনেক পেছনে পড়ে যাছি
৫| ১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:১১
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সময়ের সাথে প্রমীলার বুড়িয়ে যায় ফুরিয়ে যায় তারি অভিব্যক্তি কতটা প্রাঞ্জল । মায়া আর আবেগ মিশে। আমার ব্লগিং এ আপনার অবদান আছে । বড়রা এভাবে ঋদ্ধ করে আমাদের ।
সুন্দর ।+
১৪ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৪৪
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: প্রিয় কবি সেলিম আনোয়ার ভাই, আপনার সুদীর্ঘ কমেন্টে আপ্লুত বোধ করছি। লাস্ট কথাগুলো বলে নিজের বিনয় ও মাহাত্ম্যের পরিচয় দিলেন, যা আমাকে আরো বেশি মুগ্ধ করলো। ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা।
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:২২
কল্পদ্রুম বলেছেন: আপনার পুরানো লেখাগুলো খুবই মায়াময়। ভালো লাগলো পড়ে।