![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুঃখের কবিতাই শ্রেষ্ঠ কবিতা। ভালোবাসা হলো দুঃখ, এক ঘরে কবিতা ও নারী।
হেডনোট
কবিতার ভাবার্থ যদি কবিতালেখক প্রকাশ করে দেন, তাহলে লেখাটার বহুমাত্রিকতা আর থাকে না, অর্থ এক জায়গাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে যায়। তবু এই লেখাটার সামান্য ক্লু দিচ্ছি, কারণ, ব্লগে এর আগে দু'বার প্রকাশ করা হয়েছে, পাঠক যে এর অর্থ পুরোপুরি ধরতে পেরেছিলেন তা মনে হয় নি। একটু ক্লু দিলেই আশা করি পাঠক মূল অর্থ বুঝতে পারবেন এবং পাঠের আনন্দও অনেক গুণ বেড়ে যাবে। প্রথমত, এটা একটা রূপকধর্মী এবং স্যাটায়ারিক কবিতা। বাংলাদেশের সাবেক প্রধান মন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ ছিলেন, তাকে চিকিৎসা নিতে বিদেশে যাওয়ার জন্য অনুমতি দেয়া হয় নি। একবার ওবায়দুল কাদের গুরুতর অসুস্থ হলেন। চিকিৎসার জন্য তাকে সিংগাপুরে নেয়া হলো। একটা দল বা দলের মানুষের প্রতি মানুষের ঘৃণা ও ক্ষোভ কোন পর্যায়ে পৌঁছুতে পারে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া থেকেই প্রমাণ পাওয়া গেল। কোথায় দেশের মানুষ এ মন্ত্রী ও নেতার জন্য দোয়া করবে, তা না করে সোশ্যায় মিডিয়ায় স্টেটাস ভাসতে থাকলো - ওপারে ভালো থাকবেন, এবং আরো অনেক হাসাহাসি, কৌতুকরস তৈরি হতে থাকলো তাকে নিয়ে। আর ঐ যে আমাদের একজন অবৈধ প্রধান মন্ত্রী ছিলেন, শেখ হাসিনা, যিনি ৩বার অবৈধ নির্বাচন দিয়ে অবৈধভাবে বন্দুকের মুখে ক্ষমতা দখলে রেখেছিলেন দেড় দশক ধরে, তিনি মিথ্যা বলতে বলতে মিথ্যাকে নিয়ে গিয়েছিলেন শিল্পের পর্যায়ে (এ নিয়েও আমার কবিতা আছে)। এবার এ লাইনে চিন্তা করুন, আর কবিতাটি পড়ুন।
--
এক যে এক পাখিরাজ্য ছিল, কোনো এক সত্যযুগে -
খুব দয়াবান আর প্রজাবৎসল ছিলেন পাখিরাজ্যের রাজা
আর তার সমগ্র পারিষদ।
তাদের মনে একবিন্দু ক্রোধ বা নিষ্ঠুরতা ছিল না,
এতটুকু প্রতিহিংসা বা জিঘাংসা ছিল না,
একফোঁটা নৈরাজ্য ছিল না পাখিরাজ্যের কোথাও,
তারা খুব ন্যায়পরায়ণ শাসক ছিলেন;
প্রজাপাখিদের সুখের জন্য তাদের চিন্তার অন্ত ছিল না,
ছিল না চেষ্টার কোনো ত্রুটি;
নিজেরা না খেয়ে, সব তারা বিলিয়ে দিতেন প্রজাদের।
তাদের বাণী আর বচন ছিল গানের চেয়েও অমিয়-মধুর,
যা শুনে প্রজাদের প্রাণ জুড়িয়ে যেত
আর বেঘোরে সুখমগ্ন হতো তারা।
প্রজাদের কখনো কামড়ায় নি, ঠোকরায়ে শরীর ঘা করে
মেরে ফেলে নি রাজা বা তার অমাত্যগণ,
গাছের বুকে গোপন গর্ত খুঁড়ে
কোনো পাখিকে লুকিয়ে ফেলে নি চিরদিনের জন্য,
এমনকি কাউকে ঝাঁটিয়ে পরদেশেও পাঠায় নি,
তাই, প্রজাপাখিদের মনে কোনো ভয় বা আতঙ্কের চিহ্নমাত্র ছিল না;
তারা পরম সুখে বারোমাস নিঃশঙ্ক বিলাসী জীবন কাটাতো
বনময় উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে।
গুণমুগ্ধ সুখী প্রজারা প্রাণের চাইতেও
বেশি ভালোবাসতো রাজ-রাজড়াদের।
কোনো পাখিরাজা বা জনৈক সভাসদ পটল তুললে,
কিংবা দৈবাৎ গুরুতর অসুস্থ হলে, মৃত্যু হয় নি জেনেও
'ওপারে ভালো থাকবেন' বলে কোনোরূপ হাসিঠাট্টা করে নি,
কোনো ধরনের আনন্দ-উল্লাসও করে নি প্রজাপাখিরা,
বরঞ্চ সারা রাজ্য শোকে মোহ্যমান হতো।
দুঃখাকুল আপামর প্রজারা সারে সারে
গলাগলি ধরে প্রভুদের ‘বেহেশ্ত নসিব' কিংবা আশু-সুস্থতার জন্য
সৃষ্টিকর্তার দরবারে প্রার্থনায় কেঁদে কেঁদে
চোখ ক্ষয় করে ফেলতো।
আহা, আকাশ-বাতাস-মেঘ গলে গলে পড়তো প্রজাদের কান্নায়,
আর,
কান্নার আবহে মৃতদের আত্মা আনন্দ ও তৃপ্তিতে বিভোর হতো।
আহা, সেই রাজ্যে কোনো তেলবাজ ছিল না। চাটুকার ছিল না।
ধান্ধাবাজ ছিল না। রাজারাও ছিলেন অতিশয় অমায়িক,
ভান ও ভনিতাবিমুখ - তৈল পছন্দ করতেন না বিলকুল।
সেকালে কোনো কোনো রাজ্যে তো নিয়মই ছিল – কারো বক্তৃতা মানেই
রাজাদের নামে প্রশংসা, সংবাদ সম্মেলন মানেই রাজাদের নামে
বানোয়াট সুনামের ফিরিস্তি - এর বাইরে কিচ্ছু বলা যাবে না
অথচ, বিদিত সেই পাখিরাজ্যে কেউ সাহসই পেতেন না
রাজাদের নামে একপ্রস্থ স্তুতি বর্ষণের, বরং তারা উন্নয়নের
ধারাবিবরণী পড়তে পড়তেই প্রাণান্ত হতেন।
আহা, সে-রাজ্যের রাজা ও তার সভ্যরা ছিলেন খুবই সত্যবাদী
তারা কখনোই বিশ্বাস করতেন না যে, ‘রাজনীতি’ মানেই
কেবল বিরোধী দলের নামে বিষোদগার করা, জনসেবা নয়
এজন্য, বাস্তবিকই বিরোধীপক্ষের নামে কুৎসা গাইতে গাইতে
কখনোই মুখে ফেনা তুলে ফেলতেন না,
কাউকে গালিও দিতে জানতেন না
এবং দিনের পর দিন মিথ্যা প্রচার করে প্রজাদের কাছে
তা সত্যে পরিণত করতেন না
তারা কোনোদিনই নিজে চুরি করে অন্যকে বলতেন না ‘তুই চোর’
কস্মিনকালেও তারা সাজানো ও পাতানো নির্বাচন করতেন না
নির্বাচনের ফলাফলও নির্বাচনের আগেই স্থির করে রাখতেন না
‘স্বৈরাচার’ কথাটা তো তাদের অভিধানেই ছিল না
আহা, তারা কত যে ভালো রাজা ছিলেন, তা লিখতে গেলে
সব সাগরের সমগ্র পানিকে হতে হবে দোয়াতের কালি
মুখে মুখে বর্ণনা করতে গেলে মানব-পৃথিবীর সবাইকে একযোগে
এক শতাব্দীকাল কীর্তন করতে হবে
সেই যে এক স্বপ্নরাজ্য ছিল, রূপকথার সত্যযুগে,
তার জন্য প্রজাপাখিরা এখনো ব্যাকুল হয়ে কাঁদে।
১৩ জুন ২০২০
আগের দুটি পোস্ট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:১৫
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ কিরকুট সাহেব।
২| ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৫৭
শেরজা তপন বলেছেন: @ কিরকুট -পণ্ডশ্রম কি অর্থে?
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:১৬
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: শেরজা তপন ভাই, শুভ সন্ধ্যা। আশা করি ভালো আছেন। শুভেচ্ছা রইল।
৩| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১০:৪৫
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সুন্দর।
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ৮:৫১
কিরকুট বলেছেন: পন্ডশ্রম