নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার এই দেশটাকে অনেক ভালবাসি

মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে অনেক ভালবাসি

ফররুখ আহমেদ রািজব

আমি শুধু আমার না । আমার ভালভাবে বেঁচে থাকার উপর নির্ভর করে অনেকের ভালভাবে বেঁচে থাকা। তাই সৎ ভাবে বেঁচে থাকতে চাই, আমার প্রিয় মানুষ গুলোকে সারা জীবন প্রিয় রাখতে চাই ।

ফররুখ আহমেদ রািজব › বিস্তারিত পোস্টঃ

রহস্য গল্পঃ যেখানে কলমের কালি শেষ হয়ে যায় ......

২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৩০

সাঈদ, আজকে কি ক্লাশ হবে?

"হ্যা ক্লাশ হবে, তুই তাড়াতাড়ি চলে আয় ।"

আমিঃ আজকে কি ক্লাশ হবে?

সাঈদঃ জেনারেল সাইন্স। (৩৫ তম বিসিএস এর প্রিলিমিনারি কোচিং)

আসছি, বলে ফোনের লাইন টা কেটে দিলাম । ওর মুখে "তুই" শব্দটা শুনে যেমন চমকে গেলাম, তেমনি আনন্দও পেলাম ।



চমকে গেলাম এই জন্য যে, সাঈদ আর আমার বন্ধুত্বের সম্পর্কটা এখনো আপনি থেকে তুমি'তে আসেনি এবং ও কখনো আমাকে তুমি বলেও ডাকেনি । আর আনন্দ পেলাম এই জন্য যে ওর মুখ থেকে 'তুই' ডাকটা শুনে মনে হল আমাদের বন্ধুত্ব বোধহয় অনেক গভীর হয়ে গেছে । আমার মধ্যে কেমন যেন একটা আনন্দের ঢেউ বয়ে গেল । বুঝতে পারছি না কেন এমন হল ।



একটু আগেও ক্লাশে যাব কি যাব না এই দ্বিধা-দ্বন্ধে ছিলাম । সারা সপ্তাহ অফিস এর পর একটা লম্বা জার্নি শেষে শরীর একটু বিশ্রাম চাচ্ছিল কিন্তু মন তা মানতে নারাজ । রিমঝিম বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাটও কর্দমাক্ত আবার রাজনৈতিক কারণে শহরের আবহাওয়াও খুব একটা ভাল না । সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ক্লাশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে শেষ মূহুর্তে যখন আয়নার সামনে গেলাম তখন একটু অবাক হয়ে গেলাম । আমাকে যে বুড়া বুড়া লাগছে । ব্যস্থতার কারণে গত দুই দিন ধরে সেভ করতে পারিনা ।



আমার আবার সেভ করতে বেশি সময় লাগে না । মুখে দাঁড়ি-গোফ কমতো । ১-২ মিনিটের মধ্যে হয়ে হয়ে যায় । একসময় চাপ (মুখ ভর্তি) দাঁড়ির জন্য আফসোস করতাম । এখন আর আফসোস হয় না । দাঁড়ি-গোফ কম থাকাতে সুবিধায় হয়েছে, সেভ করতে বেশি সময় লাগে না।



যখন ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি তখন আমার আড়াই বৎসরের ভাগ্নিটার কথা শুনে না হেসে পারলাম না । ও বলছে "মামা তুমি আমাকে কিছু বলে গেলা না?" । আসলে আমি সব সময় ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ওকে 'আসি মামা' বা 'আল্লাহ হাফেজ' জাতীয় কিছু একটা বলে বের হয় । আজকে সময় কম তাই কিছু না বলেই বের হচ্ছিলাম ।



রাস্তায় বের হয়ে হাটছি । ২০-২২ মিনিটের রাস্তা আমি প্রায় দিনই হেটে যায় । আজকেও হেটেও রওনা হলাম । আর না হেটে উপায় নেই । মাসের শেষ হলে পকেটও শূন্য হয়ে আসতে থাকে। এই হলো ব্যচেলর লাইফের একটা বড় জ্বালা।



আজকের পরিবেশটা কেমন যেন অন্য রকম লাগছে । রাস্তায় কিন্তু খুব একটা মানুষজন বা গাড়ি ঘোড়া দেখছি না। শুনেছি রাজনৈতিক সমাবেশ আছে তাই হয়তো এমন হবে । রাস্তাঘাট ফাঁকা ফাঁকা। ঢাকা শহরের যানজট কমাবার এর চেয়ে সহজ কোন পন্থা আছে বলে আমার মনে হয় না।



ক্লাশ শুরু হওয়ার কথা ঠিক তিনটায়। আমিও কাঁটায় কাঁটায় তিনটায় উপস্থিত হলাম । নিজের সময়জ্ঞান দেখে নিজেই অবাক হলাম। ক্লাশরুমে ঢুকে দেখলাম ক্লাশ শুরু হয়নি। সবচেয়ে অবাক হলাম আমাকে সেই "তুই" সম্বোধন কারী বন্ধুটিও আসেনি । যাই হোক সবার সাথে এক পশলা হায়-হ্যালো হয়ে গেল। প্রায় একমাস ঈদের ছুটি কাটিয়ে অনেকদিন পর সবার সাথে দেখা। ক্লাশটাও কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগছে । অনেকেই ক্লাশে অনুপস্থিত।



একটু পরেই সাঈদ এলো । কিন্তু একা । ওকে একা দেখে অবাক হলাম । কারণ ওর সাথে সুপ্তি নেই (ছদ্মনাম, সাঈদ এর প্রেমিকা) ।

জিঙ্গেস করলাম একা কেন ?

সাঈদ এর মিষ্টি হাসি বুঝিয়ে দিল আজকে সুপ্তি আসবে না ।



আমার সামনের তিনটা ফাঁকা চেয়ারের মাঝখানটাতে ও বসে আমাকে ডাকছে ওর পাশে গিয়ে বসার জন্য । আমি বলছি 'ওটা তো সব সময় রিজার্ভ থাকে।

সাঈদঃ আজকে রিজার্ভ লাগবে না। আসেন সামনে আসেন।

ওমা ও যে আবার আপনি করে বলছে? ব্যাপার কি?

সামনের চেয়ারে ওর পাশে গিয়ে বসতেই সাঈদ বলছে 'আপনার ফোন নাম্বার না আরেকটা ছিল?

আমিঃ আরেকটা ছিল ? হতে পারে এই নাম্বারটা আপনাকে দেওয়া হয়নি।

আমিঃ সুপ্তি কোথায়?

সাঈদঃ বাড়ি থেকে এখনো আসেনি।

আমিঃ তাহলে আমার কলমের কালি শেষ হয়ে গেলে কি হবে?

সাঈদঃ চিন্তা করবেন না, আমি আছি না।

আমার খুব খারাপ লাগল। জানি ওর ও খুব খারাপ লাগছে। যতদিন ধরে ক্লাশ করছি দেখছি ওরা দু'জন একসাথেই থাকে। ওদের কেমেস্ট্রিটা আমার কাছে অসম্ভব ভাল লাগে। আমিও অনেক দুষ্টামি করি।



ক্লাশে আমরা তিনজন প্রায় সময়ই পাশাপাশি বসি। লিখতে লিখতে আমার কলমের কালি প্রায়দিনই শেষ হয়ে যায়। সাঈদ আর সুপ্তি হাসে। সুপ্তি ব্যাগ থেকে কলম বের করে দেয় । সাঈদ প্রায় দিনই সু্প্তিকে বলে কলমটা আমাকে দিয়ে দিতে। সুপ্তিও দিতে চায় কিন্তু আমি নেই না। কারণ আরেকদিন কলমের কালি শেষ হলে ও আর কলম থাকলেও আমাকে দিবে না।



আজও লিখছি । হঠাৎ করে দেখলাম আমার লেখা গুলো অস্পষ্ট হয়ে আসছে। আমি সাঈদের দিকে থাকাতেই সাঈদ ব্যাপারটা বুঝতে পেরে হাসছে । ও ব্যাগ থেকে একটা কলম বের করে দিল। আমিও হাসছি......। জানিনা কেন এমন হয় ? ব্যাপারটা আমার কাছে রহস্যই রয়ে গেল।



(জীবনে ঘটে যাওয়া অনেকগুলো ঘটনার ভিড়ে ছোট্ট একটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা একটি গল্প। সাঈদকে কথা দিয়েছিলাম এটি নিয়ে সামুতে একটি গল্প লিখব। জানিনা সাঈদ পড়বে কিনা? পড়লে আমি নিশ্চিত আজ থেকেই ও আমাকে 'তুই' বলে ডাকবে। সাঈদ, আমি তোর মুখ থেকে 'তুই' ডাক শুনার অপেক্ষায় রইলাম.......)

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৪০

শুঁটকি মাছ বলেছেন: রহস্য খুজে পেলাম না যে!!!!!!

২| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:০২

ফররুখ আহমেদ রািজব বলেছেন: কেন প্রায়ই কলমের কালি শেষ হয়ে যাওয়াটা কি রহস্যময় নয়?

৩| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:০২

মাসুম আহমদ ১৪ বলেছেন: হুমম, কলমের কালি শেষ হওয়াটা রহস্য --------
আপনার কলমের কালি কি সব সময় শেষ হয়ে যেত?

৪| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১১:২৬

ফররুখ আহমেদ রািজব বলেছেন: যেত কি? এখনো শেষ হয়ে যায়......

৫| ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১১:১৮

সুমন কর বলেছেন: আপনার দুর্ভাগ্য বলতে পারেন!! শেষের বন্ধনীর কথাগুলো ভাল লাগল।

৬| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ১০:৩০

ফররুখ আহমেদ রািজব বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ

৭| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৩ রাত ৮:২২

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: গল্পে ভালোলাগা রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.