নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দশদিক

হাঁটা পথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে হে সভ্যতা। আমরা সাত ভাই চম্পা মাতৃকাচিহ্ন কপালে দঁড়িয়েছি এসে _এই বিপাকে, পরিণামে। আমরা কথা বলি আর আমাদের মা আজো লতাপাতা খায়।

ফারুক ওয়াসিফ

ফারুক ওয়াসিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাস্কর্য বিবাদ: লালন উৎখাতের মচ্ছব বসিয়ে হাওয়ার ওপর তাওয়া গরম করে কার জন্য পিঠা ভাজা হচ্ছে?

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:১৭

বিমান বন্দর চত্বরে লালন ভাস্কর্য ভাঙ্গায় কিছু একটা প্রমাণ হয়। কিন্তু তা কীসের আলামত তা নিয়ে চটজলদি মতামতের বাজারে হাজির হলেও, ভাববার প্রয়োজন ফুরায়নি। ভাবনার সুতাটা এলোমেলো ঘুরছে। আপাতত হাতের কাছে ভাস্কর্য নিয়ে টানাটানি করতে থাকা খতমে নব্যুয়তের কর্মীদের ছবিটাকে নেয়া যাক।



ঐ ছবি প্রমাণ করে যে, ভাস্কর্যটি ভেঙ্গেছে একটি ধর্মবাদী উগ্র সংগঠন। এদেরকে আমরা বিভিন্ন সময় জনগণের গণতান্ত্রিক-সাংস্কৃতিক জাগরণ এবং বাস্তব স্বার্থের বিপে কাজ করতে দেখেছি। এই দফায় তাদের হোতা হিসেবে নাজিল হয়েছেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি আমিনী। সুতরাং দুয়ে দুয়ে চার, একটি ‘মৌলবাদী’ শক্তিই এই শিল্প-নাশকতার হোতা। কিন্তু ঘটনাটা যখন প্রধানত রাজনৈতিক, এবং আমাদের রাজনীতি যখন শুভঙ্করের গণিতের খেলা তখন সরলাঙ্কের হিসেবে জটিলতার হদিস মিলবে না। সম্ভবত বিএনপি-জামাতের সঙ্গে সরকারের একটা সমেঝাতা হয়ে গেলেই এবং মুজাহিদ জামিন বা দায়মুক্ত হলেই আমিনী ও খতমে গংদের আষ্ফালন থেমে যাবে।



যারা ভাস্কর্য ভাঙ্গায় হাত লাগিয়েছে এবং যারা এর সমর্থনে আওয়াজ তুলছেন, তারা বড়জোর কারিগর ও প্রচারক। কিন্তু নকশাটি কার গায়ের জোরের মতার উৎসটি কোথায়, তার বিচারই আজ প্রধান। যখন নির্বাচন নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে, যখন চোখে ঠুলি পরা পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে দুর্নীতি মামলার ফেরারি আসামি জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করছেন, আদালতে যাচ্ছেন আসছেন, সভাসমিতি করছেন; কেন ঠিক তখনই খতমে নব্যুয়তের ঈমানি জোশ জাগলো এবং তাতে হাওয়ার ওপর তাওয়া গরম করে কার জন্য পিঠা ভাজা হচ্ছে, সেইসব প্রশ্নের জবাব জানা ফরজ বৈকি! সেই কাজ গোয়েন্দার নয়,

কাজটা রাজনৈতিক এবং রাজনীতি নিয়ে আগ্রহীদেরই তা করা উচিত।



ভাস্কর্যটি তৈরির পরিকল্পনা করা এবং সে মোতাবেক মাটি থেকে আপাদমস্তক ভাস্কর্যটি দাঁড়াতে লম্বা সময় লেগেছে। এত বিরাট সময় জুড়ে এ নিয়ে যে কারো কোনো আপত্তি আছে তা দেশবাসী জানতে পাননি। জানা গেল দেশের ইতিহাসের এক ভয়ঙ্কর সন্ধিণে। সুতরাং এটা যতটা না ধর্মীয় প্রশ্ন তার থেকে বেশি রাজনৈতিক বিষয়। তার প্রমাণ পাওয়া যায় সরকারি হুকুমবলে তড়িঘড়ি করে ভাস্কর্যটি সরিয়ে নেয়ার মধ্যে। খতমে নব্যুয়ত এর আগে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে রাস্তাঘাট গরম করে তুলেও কিছু করতে পারেনি সরকারি বাধার জন্য। এবং এটাই সত্য যে, সরকার না চাইলে এবং জনগণের বিরাট অংশ নিজের গরজে রাস্তায় না নামলে এই কাজ করবার শক্তি কারো থাকবার কথা নয়। এই বেলা তাদের আপাত সাফল্যে তাহলে সরকারের কোনো অংশের লাভ রয়েছে কি? তাই তারা এটা হতে দিয়েছে!

[এই ঘটনায় 'জেহাদিরা' ইঙ্গিত পেল যে, সরকার সিভিল সোসাইটির বদলে ইসলামওয়ালাদেরই এখন তার রাজনৈতিক ভিত্তি হিসেবে পেতে চায়। একে কেউ পঞ্চম বাহিনী নিয়োগের ক্ষেত্রবদলও ভাবতে পারেন। কিন্তু মূলগতভাবে আমি একে জরুরি অবস্থা প্রলম্বিত করা এবং নির্বাচন ভণ্ডুলের মওকা হিসেবেই ব্যবহৃত হতে দেখছি। ]



এ জন্য কথাটা বলছি যে, ১/১১ এর পর এ পর্যন্ত নিয়মিতভাবে যারা জরুরি আইন ভঙ্গ করে নানান ইস্যুতে গোলোযোগ সৃষ্টি করেছে, সহিংসতার পরিবেশ তাতিয়েছে, তারাই আমাদের পরিচিত ‘ইসলামপন্থি’ রাজনৈতিক গোষ্ঠী। তাদের নামের সঙ্গে ‘ইসলামপন্থি’ তকমাটি তাঁরা লাগান বটে, কিন্তু এজন্যই তাঁদের যেকোনো কর্মকাণ্ডই যে ইসলামসম্মত, তা বলার কোনো ভিত্তি নেই। আর যখন তাঁরা সেটা করেন রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর ব্যানারে তখন তাদের আর দশটা রাজনৈতিক দলের চাইতে উঁচু আসন দেয়ারও কোনো যুক্তি থাকতে পারে না। কিন্তু রাজনৈতিক ও গোষ্ঠীগত স্বার্থে বা অন্য কারো স্বার্থের পুতুল হয়ে তাদের উত্তেজনা সৃষ্টির খেলাকে ‘ইসলামী’ বললে এদেশের কোটি কোটি মানুষের প্রাণের বিশ্বাসেরই অবমাননা হয়। সেই বিচার একদিন জনগণ করবেন। এবং জনগণ জেনে রাখবেন যে, সরকারের ভেতরের কোনো একটি মহল পাকিস্তানী কায়দায় দেশের ইসলামী স্ট্যাবলিশমেন্টকে তাদের মতার খেলার পাটাতন হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। উগ্রবাদী এই দৈত্যের প্রাণভোমরা তাই তার দেহে নাই, তা রতি আছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরের কোনো অপশক্তির হাতের কৌটায়। তারা সুতা ছাড়লে এরা নড়ে, নতুবা গর্তবাসী থাকে। উভয়ের সম্পর্কটি দেয়া ও নেয়ার। এরা প্রচণ্ড মতাবান অপশক্তির নীলনকশা বাস্তবায়নের ঘুঁটি ও খুঁটি হিসেবে কাজ করবে। বিনিময়ে পাবে ক্ষমতার হিস্যা এবং যা খুশি তা করার ছাড়পত্র। এরা রাষ্ট্রযন্ত্রের নিরাপদ কোটরে বসা সেই অপশক্তিরই পঞ্চম বাহিনী। একসময় ৭৫-এর খুনী ফারুক-রশীদ গং ছিল এই ভূমিকায়, আজ দাঁড়াচ্ছে কতিপয় মোল্লা ও তাদের অনুসারীরা। দেশের অধিকাংশ ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও ইসলামী চিন্তাবিদগণ যে তাদের সঙ্গে আছেন এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। এরা দেশেরও শত্রু ধর্মের ভেতরে ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী। এবং ইসলামে হত্যার চাইতে ফ্যাসাদ সৃষ্টি বেশি ক্ষতিকর বলে গণ্য হয়।



ইসলাম তার আদিযুগে নারীদের অবমাননা ও দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছে, এরা চাইছে আবার তাদের আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে, অর্থাৎ পুরুষের ভোগের সামগ্রী করে তুলতে। নারীর বিরুদ্ধে তারা যত সোচ্চার, পুঁজির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তার কনামাত্রও নয়। ইসলাম আল্লাহ ও মানুষের মধ্যে কোনো মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা তথা খ্রিস্টিয় চার্চের মতো কোনো প্রতিষ্ঠানকে মুসলমানদের মধ্যে নিষিদ্ধ করেছে, অথচ এরা হয়ে উঠতে চাইছে পোপের মতো মতাবান। সেই পোপ যার কথা আল্লাহ শুনবেন, শাসক মানবেন এবং জনগণ থাকবে বাধ্য। ইসলাম মানুষে মানুষে ভেদাভেদের বিপে দাঁড়ায়, আর আমাদের এঁরা সমাজকে ভাগ করছে এবং নিজেরাই যে কত ফেরকায় বিভক্ত তার কোনো শুমার নাই। এ বিষয়ে পাকিস্তানী চিন্তাবিদ একবাল আহমদের একটি পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করতে চাই। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মোরারজি দেশাই তাঁকে এক সাক্ষাতকারে বলেন, বিজেপি ভারতে হিন্দুধর্মের মধ্যে ইসলামী উপাদান প্রবেশ করাচ্ছে। দেশাই মনে করেন, হিন্দু ধর্মে একেশ্বরবাদ না থাকলেও বিজেপি অন্য সব দেবতার চেয়ে রামকে কেন্দ্র করে একেশ্বরবাদ কায়েম করতে চাইছে। হিন্দু ফ্যাসিবাদী বিজেপি যা করছে, আরেক অর্থে সেই কাজ করছে আমাদের এই স্বঘোষিত ‘ইসলামপন্থিরা’।



ব্রিটিশ আমলে জমিদারের বিরুদ্ধে তেভাগা আন্দোলনকে তছনছ করে সেখানে পাকিস্তানের দাবি ঢোকায়। তারা ইসলামের নামে ১৯৫২ সালে মাতৃভাষার অধিকারকে খর্ব করার কোশেশ করে। চূড়ান্তভাবে তারা একাত্তরে পাকিস্তানি সেনাদের দোসর হয়ে বাংলার মাটিতে নৃশংস গণহত্যা ও গণধর্ষণের উৎসব বসায়। সুতরাং তারা যে বারবার নিপীড়িতের হক কেড়ে নেবে, জনগণের চিত্তের বিকাশে আমাদের যে পির্তৃপুরুষ ও মার্তৃনারীরা সংগ্রাম করে গেছেন সেই লালন ও রোকেয়াদের নাম-নিশানা মুছে ফেলতে চাইবে, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নয়। আচানক তারা এই কাজে নামেনি। এটাই তাদের সিলসিলা। অথচ এই বাংলায় ইসলাম এসেছিল নিপীড়িতের বঞ্চনার প্রতিবাদ হিসেবে। তরবারি দিয়ে নয় অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে বাংলায় কৃষি সমাজের ভিত রচনা করে ইসলাম জনপ্রিয় হয়েছিল। সুফি-দরবেশ থেকে শুরু করে সেই আদি যুগের মুসলিম সুলতানদের সময়টাই ছিল বাংলার ইতিহাসের স্বর্ণযুগ। যে নদিয়ায় শ্রী চৈতন্যদেবের আবির্ভাব ঘটেছিল সেটা কিন্তু সুলতানদের রাজ্যভুক্ত ছিল। কই মুসলিম রাজশক্তি তো কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াননি। তাঁদের গুণেই মতাশালী ব্রাক্ষ্মণ্য দাপটের এপারে কৃষক সমাজের এক দেশ গড়ে উঠেছিল। সেই দেশ আজ স্বাধীন। লালন হলেন সেই কৃষকদেরই বুদ্ধিজীবী ও দার্শনিক গুরু। নিজ জীবদ্দশায় তিনি যেমন জাত-পাত, শ্রেণী-বর্ণের বিরোধিতায় কাজ করেছেন, তেমনি লাঠি হাতে দাঁড়িয়েছেন জমিদারের অত্যাচারের বিরুদ্ধে। সেই লুঙ্গি পরা শুশ্রুমণ্ডিত লালন আজো কৃষকর-কারিগরদেরই প্রতিনিধি_ উচ্চবর্গের দরবারে। সে যুগের কুসংস্কারাচ্ছন্ন পুরোহিত ও কাঠমোল্লারা যেমন তাঁর ধারাকে মুছে দিতে চেয়েছিল, আজকের এনারাও সেই কাজে নেমেছেন। দিনের পর দিন ধরে এটা হয়ে আসছে।



সরকারি উদ্যোগে আজ লালনের সমাধি ঘিরে বিশাল মেলা বসে। মন্ত্রী-এমপি প্রভৃতিরা অঢেল জাঁকজমকের সঙ্গে তা উদ্বোধন করেন। কিন্তু পৌরাণিক কাহিনীতে যেমন দশচক্রে ভগবান ভুত হন, তেমনি পর্যটন বাণিজ্য আর সরকারি দাপটের চক্রে লালনের সাধুসঙ্গ এখন অ-সাধুদের খপ্পরে জারবার। লালনের সমাধি ও আখড়ার দায়িত্ব থেকে ভক্তদের তাড়িয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে লালন একাডেমি। তাতে লালনের ধারার কোনো অনুসারি যেমন নাই তেমনি লালনের আদর্শ বা চর্চার সঙ্গেও তার সম্পর্ক অতি নাজুক। এমনকি লালনের শিষ্যদের হাতে রোপিত শতবর্ষবয়সী মহীরূহও আমলাদের নির্দেশে কাটা পড়েছে। এবং আহাম্মকি এই যে, সেখানে বিদেশী বৃও রোপিত হয়েছে! এইভাবে বাণিজ্যিক পর্যটনকেন্দ্র গড়বার পুঁজিবাদী ভোগবাদী খায়েশে সাধকদের তীর্থস্থানের যে বিনষ্টি ঘটেছে, কতিপয় ‘উগ্রবাদীদের’ উস্কানিতে সরকারি নির্দেশে লালনের ভাস্কর্য নিয়ে কুৎসিত নাটক সেই অনুযায়ীই ঘটছে। এই কাজে আধুনিক শিতি লোকজন (যার মধ্যে সিভিল এভিয়েশনের উচ্চশিতি চেয়ারম্যানও রয়েছেন, তিনিও ভাস্কর্যবিরোধীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বলছেন, ‘কেবল ওরাই মুসলমান নয়, আমরাও মুসলমান’, সমকাল ১৮ অক্টোবর)



এবং এঁদের হৃদয় এতই শুষ্ক যে, ঐতিহ্যের কথা বললে এদের মনে পড়ে তা নিয়ে ব্যবসার কথা। আর ইসলামের ইতিহাসের কথা বললে তিন মহাদেশ জুড়ে দেড় হাজার বছর ধরে অজস্র জাতির মধ্যে বিরাজ করা সমৃদ্ধ মুসলিম শিল্প-সংষ্কৃতি-দর্শনের কথা মনে পড়ে না, মনে পড়ে কেবল তরবারির কথা। আর তাদের সেই তরবারির নিশানায় বারবার পড়ে তারাই, যারা মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করেছেন। এদের নিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসা শিক্ষায় সেই গৌরবের ইতিহাস ও সেই চেতনার দীক্ষা কমই লক্ষ্য করা যায়। কেননা, মাদ্রাসা পড়ুয়া গরিব ঘরের কৃষক সন্তানেরা যদি তা জানতে পারে, তাহলে এইসব ‘নব্য-পোপদের’ জারিজুরি ফাঁস হয়ে যেতে পারে। তাই মাদ্রাসা শিক্ষার মধ্যে আধুনিক জ্ঞান ও চিন্তা আনায় তাঁরা ভীত। মাদ্রাসার সচেতন তরুণ-তরুণীরা যদি নৈতিক ও জাগতিক শক্তিতে বলীয়ান হয়ে তাদের খপ্পর ফুঁড়ে বেরিয়ে আসে!



লালনের ভাস্কর্য ধ্বংসে যেভাবে তারা হাত লাগিয়েছে, তারা আবার একাত্তরের ঘটনার পুনরাবৃত্তির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এভাবে বারবার তারা সেই ইসলামের ভাবমূর্তির তি করে, যে ইসলাম সর্বদা জনগণের মুনের মুকুরে ঠাঁই করে নিয়েছে। সব ধর্মের মধ্যেই দেখা যায়, কিছু লোক ধর্মকে পুঁজি করে নিজেদের বিত্ত-বাসনা ও ক্ষমতার ক্ষুধা মেটাতে বলি করছে নিজ ধর্মের লোককেই। এদের সহযোগিতা করে একশ্রেণীর রাজনীতিবিদ-ব্যবসায়ি এবং ফৌজি লোকজন। ভারতে যেমন বিজেপি’র উদীয়মান ফ্যাসিবাদকে মদদ যোগাচ্ছে সেদেশের কর্পোরেট পুঁজিপতিরা। বাংলাদেশেও তেমন মদদের আলামত স্পষ্ট। খতমে নব্যুয়তের নেতা জানিয়েছেন, কোনো একজন ‘সব অর্থ দিচ্ছেন; কিন্তু তিনি নাম প্রকাশ করতে রাজি নন’ (সমকাল, ১৮ অক্টোবর)।



এইভাবে নতুন পাওয়া অর্থের জোরে তারা আজ ধরাকে সরা মনে করছে। এজন্য ধর্মকেও তারা সুবিধা মতো বদলে নিচ্ছে। বেশি দূরে যাওয়ার দরকার নাই, পাকিস্তানের পারভেজ মোশাররফ আর বাংলাদেশের জেনারেল এরশাদ যতই ‘ইসলাম ইসলাম’ বলে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন, ততই দেশের মানুষের জীবন ও ধর্ম দুটোরই সর্বনাশ করেছেন। এদের অপকর্মকে পুণ্য বলে ফতোয়া দিয়েছেন অনেক ‘আলেম’! এই দুই ধারার লোকদের কার্যকলাপের জন্যই পশ্চিমা দেশে আজ একদল ইসলাম বিদ্বেষী প্রচারক দাঁড়িয়ে গেছেন, যারা প্রমাণ করতে চাই ইসলাম ‘সন্ত্রাসী ধর্ম’ বা ইত্যাদি। দেখা যায়, এই সাম্প্রদায়িক ইসলাম বিদ্বেষীরা আর আমাদের সাম্প্রদায়িক ও গণবিদ্বেষী ধর্মীয় এজেন্সিধারীরা একে অন্যকে দিয়ে করে-কর্মে খাচ্ছে। একদলের ‘ওয়ার অন টেরর’ আরেক দলের ‘জেহাদি জোশ’ আখেরে সব ধর্মের সাধারণ মানুষকেই শেষ পর্যন্ত পরস্পরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়ায় একমত। কায়া ও ছায়ার মতোই তারা অবিচ্ছেদ্য।

তাই কায়ারূপ সরকারের ভেতরের একটি অংশ এবং তাদের ছায়ারূপ ধর্মের লেবাসে থাকা গডফাদারদের কাণ্ডকারখানাকে সরল চোখে দেখার কোনো সুযোগ নাই।



বাংলাদেশ এখন জরুরি অবস্থার পুলসিরাত পার হয়ে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের পথে এগতে চায়। সবাই স্বীকার করবেন যে, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান ছাড়া সেই পুলসিরাতের সরু সাঁকো পার হবার আর কোনো উপায় নাই। সেরকম একটি জটিল সময়ে হুঁশিয়ার থাকা দরকার যাতে কোনোভাবেই আমরা ভুল কাজিয়া বা ভুল উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে সেই সাঁকো ভেঙ্গে না ফেলি বা মাঝপথেই কারো ধাক্কায় অতল খাদে পড়ে না যাই। তবে একইসঙ্গে এই ঘটনার বৈশ্বিক ও দীর্ঘমেয়াদী তাৎপর্যটির বিষয়েও সজাগ থাকা চাই। বিশ্বব্যাপী ‘বুশ এন্ড গং’ যাকে-তাকে সন্ত্রাসী বলে চড়াও হতে মুখিয়ে আছে। বাংলাদেশেও তারা সক্রিয়। লালনের ভাস্কর্য ভাঙ্গার দৃশ্য প্রচার করে তারা প্রমাণ করতে চাইবে, বাংলাদেশ তালেবানদের হাতে যেতে মাত্র কয়েক কদম বাকি। তারা এও বোঝাবে যে, এদের জন্যই জরুরি অবস্থা বা ১/১১ জাতীয় ঘটনা ‘চিরস্থায়ি’ হওয়া দরকার। আফগানিস্তানে বামিয়ানের বুদ্ধ ধ্বংস কিংবা বাংলাদেশে এ জাতীয় কার্যকলাপ তাদের জন্য বিরাট উসিলা। আগে জেএমবি সেই উসিলা যুগিয়েছে, এখন কারা সেই কাজ করছে, বাঁচতে হলে জনগণকে তাদের চিনে নিতে হবে। শিকারি যেমন পাখির পুরো দেহ নয়, কেবল তার মাথাটাকে নিশানা করে, আমাদের এখন তেমনই প্রখর চক্ষু চাই।

















মন্তব্য ৪৫ টি রেটিং +১৪/-৫

মন্তব্য (৪৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:২২

সততার আলো বলেছেন: আমিতো দেখলাম, পুলিশ প্রহরায়, শিল্পীর তত্বাবধানে সাধারন শ্রমিকরা মূর্তিটা ভাঙল। এরকম বাজে জিনিস ভেঙে ফেলাই উত্তম হয়েছে। আগে এ জায়গা আরো সুন্দর ছিল।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৪৪

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: তাহলে শ্রমিকদেরই সব দোষ, নাকি? আপনার জন্য সুকুমার রায়ের এই ছড়া:
ধেড়েটার বুদ্ধি দ্যাখ
চড় মেরে সে নিজের গালে
কে মেরেছে দেখবে বলে
উঠেছে গিয়ে টিনের চালে।
কেমন ভাল না?

২| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:২৮

আলাউদ্দীন বলেছেন: এত বড় লেখা কেন?
ছোট ছোট করে লেখলে পড়তে সুবিধা হত।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৪৪

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: দু:খিত, এটা অন্য কাজে লেখা হয়েছিল। ভাবলাম শেয়ার করি।

৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৫

জামাল ভাস্কর বলেছেন: মৌলবাদীরা কি মূর্তি সুন্দর হয় নাই বইলা ভাঙছে? @ সততার আলো

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৫০

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: ঠিক ভাস্করদা, কেউ কেউ ভাঙ্গার বিরোধীদের রুচি ও শ্রেণীচরিত্র বিেশ্লষণ করে তার সমালোচনা করে এখানে লিখছেন, যা আসলে ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের গডফাদার জেনারেলদেরই সমর্থনের নামান্তর। এইসব লোক সংগ্রামের মাঠ থেকে দূরে দঁাড়িেয় সবল পক্ষকে মদদ যোগায় আর ছদ্ম জ্ঞানতাত্তিক প্রশ্ন তুলে আমোদ পায়।

৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৫

হুমায়ুন বলেছেন: ভাস্কর্য এবং বড় লেখাকে মাইনাস। এত বেশি পোষ্ট হয়েছে যে পড়তে পড়তে আজ বড় ক্লান্ত।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৬

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: দয়া করে এটা পড়ে শহীদ হয়া যায়েন না।

৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৭

ফাহমিদুল হক বলেছেন: "কেন ঠিক তখনই খতমে নব্যুয়তের ঈমানি জোশ জাগলো এবং তাতে হাওয়ার ওপর তাওয়া গরম করে কার জন্য পিঠা ভাজা হচ্ছে, সেইসব প্রশ্নের জবাব জানা ফরজ বৈকি! সেই কাজ গোয়েন্দার নয়,
কাজটা রাজনৈতিক এবং রাজনীতি নিয়ে আগ্রহীদেরই তা করা উচিত। "

আপনার বিশ্লেষণটি খুব ভালো লাগলো।
সুলতানি আমলের সেই শান্তিপূর্ণ সমতাবাদী স্বর্ণযুগের কথা এরা কখনোই বলেনা।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:১০

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: সুলতানি আমলকে আমি শান্তিপূর্ণ সমতাবাদী স্বর্ণযুগ মনে করি না। তারাও পরদেশী এবং সাংস্কৃতিক হেজিমনি আনবার সামর্থ্য তাদের ছিল না।
তবে আমাদের এনলাইটেনমন্টে বলে কিছু খুঁজতে হয়, সেটা খুঁজতে হবে ঐ সময়ের পরিসরে। ঊনিশ শতকের কলকাতার উপনিবেশিক বাবু কালচারে নয়।
ধন্যবাদ ফাহমিদ ভাই, আপনার সিরিজ লেখাটার জন্য। পড়া শুরু করেছি।

৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৮

জাতিশ্বর বলেছেন: ভাইসাব দেকচি ধান ভানতে শিবের গীত গাই দিলেন।এইটা যে রাজনীতির মাদারির খেল তা ব্যাকতে জানে।কিন্তুক মৌলবাদীগো বিরুদ্দে কইতে গিয়া দেকি এসলামের সাপাই গাইলেন !

"ইসলাম নারীদের অবমাননা ও দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছে," এইডা কি কইলেন ? নাস্তিক শুনার ভয়ে কি বেলানচ কর্তেচাইতাচেন ?

যদদুর মুনে পরে আপনেরে অভিজিতের লগে ফাটাফাটি কর্তে দেকচিলাম মার্কসবাদ লইয়া ! ক্যামতে কি ?

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৫২

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: মার্কসকে আপনি ধর্মনাশী করে নিলেন কীভাবে? মার্কসবাদই তো শেখায় কোনো বিষয়কে তার নিজের বরাতে নয়, তার ঐতিহাসিক সামাজিক ভূমিকা দিয়েই দেখতে হয়। আর নিছক ধর্মের সমালোচনা করতে চাইলে তার সময় স্থান ও পাত্র নিশ্চয় এটা নয়।

৭| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৮

বিবর্তনবাদী বলেছেন: @ জামাল ভাস্কর - সততার আলোর সাথে কথা বলা আর অবুঝ শিশুর সাথে ফোনে কথা বলা সমার্থক।

৮| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৯

মাহবুব সুমন বলেছেন: তথাকথিত ইসলাম পন্থি এই সব মোল্লাদের মুল ব্যবসা ধর্মকে ঘীরেই, এরা বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের চরম বিরোধী হলেও এয়ারপোর্টের সামনের ভাস্কর্য ভাঙার ক্ষেত্রে মোটিভ হিসেবে "রাজনীতিকে" সামনে আনছি এ মুহুর্তে। 'উপরের' নির্দেশ পেলে এদের তথাকথিত ঈমানী জোশ নিভে যাবে সাময়িক ভাবে।
আপনার লেখার সাথে একমত। তবে দেশে ভবিষ্যতে নিয়ে আমি আশংকিত, হাজার হাজার মাদ্রাসা হতে লাখ লাখ পাতি মোল্লা বের হচ্ছে ও হয়েছে যারা এ দেশ - সমাজেরই অংশ। এই ব্রেইন ওয়াশড গোত্র দ্বারা দেশের জন্য এক ভয়ংকর সময় অপেক্ষা করছে।

সুন্দর ও গোছালো লেখা।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৩

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: ধন্যবাদ মাহবুব সুমন।

৯| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৩৯

সৈয়দা তাহমিনা বেগম সীমা বলেছেন: + সহমত

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০৫

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: শুকরিয়া।

১০| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৪১

বিবর্তনবাদী বলেছেন: ভাল লিখলেন। এই বিষয়ে আজকের আমার দেশেও বদরুদ্দিন ওমরের একটা লেখা পড়লাম। উনি এই ঘটনাকে বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কেন্দ্রিক একটি খেলা হিসেবেই দেখছেন।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৫৩

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: তিনি সঠিকই লিখেছেন।

১১| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৪২

মাহবুব মোর্শেদ বলেছেন: ক্ষ গুলা খোয়া গেছে।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৫৪

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: লাগায়া নিয়া পড়েন দয়া করে।

১২| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৪৭

আমার জন্য লেখা বলেছেন: "জাতিশ্বর বলেছেন: কিন্তুক মৌলবাদীগো বিরুদ্দে কইতে গিয়া দেকি এসলামের সাপাই গাইলেন !"

এসলাম কিরে হারামজাদা, ইসলাম লেখতে পারসনা?

১৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:৫৭

জ্বিনের বাদশা বলেছেন: "আর ইসলামের ইতিহাসের কথা বললে তিন মহাদেশ জুড়ে দেড় হাজার বছর ধরে অজস্র জাতির মধ্যে বিরাজ করা সমৃদ্ধ মুসলিম শিল্প-সংষ্কৃতি-দর্শনের কথা মনে পড়ে না, মনে পড়ে কেবল তরবারির কথা। "
কাজের কথা বলছেন। আমাদের স্কুলগুলোতে ইসলামিয়াট বইয়ে ইসলামের ইতইহাস হিসেবে লেখা থাকে বদরের যুদ্ধ, ওহুদের যুদ্ধ, তামুকের যুদ্ধ -- এসব, পড়লে মনে হতো এরা খালি যুদ্ধই করেছে!

এবার পোস্টের মূল প্রসঙ্গে আসি:
লালনের ভাস্কর্য ভাঙার পেছনে কি কি রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি থাকতে পারে বলে মনে করেন সেটার কনক্রিট লিস্ট আপটা জানতে চাচ্ছি। একটা আপাততঃ বুঝতে পারছি,

১. মুজাহিদের গ্রেফতারের ব্যাপারটা থেকে জনগনের মনোযোগ টা সরিয়ে ফেলার জন্য এই হৈ-চৈ

আর কে কে কি কি ধরনের ফায়দা পেতে পারে বলে মনে করেন



মুজাহইদের গ্রেফতারের ব্যাপারেও কিছু জিনিস নিয়ে মাথায় জ্যাম লেগে গেছে, যেমন,
সরকার যদি জামাতের রক্ষকের ভূমিকাতেই আসে, তাহলে এট দ্য ফার্সট প্লেস মুজাহিদের নামে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে কেন? পরোয়ানা জারি করে "নিখোঁজ" যুক্তি দিয়ে লোকসমক্ষে ঘোরাঘুরি করা মুজাহিদকে গ্রেফতার না করে তাকে যেভাবে সরকার রক্ষা করছে, তারচেয়ে পরোয়ানা জারি নাকরে রক্ষা করাটাইতো সহজতর

আবার দেখুন, শেখ হাসিনার ব্যাপারেও একই ঘটনা -- যেখানে বোঝাই যাচ্ছিলো যে যাতে সবগুলো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয় সেজন্য তড়িঘড়ি করে তারেক-খালেদাসহ সব মামলাবাহী রাজনীতিবিদের জামিন দিয়ে দিয়েছিলো সরকার, যেটা এই টেন্ডেন্সী তৈরী করেছিলো যে সরকার তার অন্য সব অভিযান (দূর্ণীতিদমন-টমন) বাদ দিয়ে শুধু ভোট করতে চায় ... আবার দেখা গেলো শেখ হাসিনার জামিন দিচ্ছেনা !!! ...

সরকারের কাজে এরকম বারবার পরস্পরবিরোধীতা আমাকে এরকম একটা ইম্প্রেশন দেয় যে এরা ওয়েল প্ল্যানড না ... ভালো প্ল্যান বা খারাপ প্ল্যান, কোনটাই এদের ঠিকমতো নেই

অথবা আরেকটা যে ইন্টারপ্রিটেশন আমরা করতে পারি সেটা হলো, সরকারে ঐক্যজোটপন্থী আর মহাজোটপন্থী দুটো শক্তি কাজ করছে, এবং এদের মধ্যে সমন্বয় নেই ... যেজন্য পর্সপরবিরোধিতাগুলো দেখা যাচ্ছে

নাকি অন্যকিছু?

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৪৩

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: সরকারের ভেতর আরো সঠিকভাবে বললে সরকারের প্রাণভোমরা যে বাহিনীর মধ্যে তাদের মধ্যে দুটো ধারা যে আছে তার প্রমাণ জরুরি অবস্থার দুই বছরে অনেকবারই দেখা গেছে। এই সরকারের শুরু হয়েছিল সেনাপ্রধানের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের কথা তুলে আর এই পর্বের শেষ হচ্ছে, জামাতী-ঐক্যজোটবাদীদের অভিষেক দিয়ে। দুটো কি একই শক্তির কাজ? তা নয়। তবে এই ঘটনায় 'জেহাদিরা' ইঙ্গিত পেল যে, সরকার সিভিল সোসাইটির বদলে ইসলামওয়ালাদেরই এখন তার রাজনৈতিক ভিত্তি হিসেবে পেতে চায়। একে কেউ পঞ্চম বাহিনী নিয়োগের ক্ষেত্রবদলও ভাবতে পারেন।

কিন্তু মূলগতভাবে আমি একে জরুরি অবস্থা প্রলম্বিত করা এবং নির্বাচন ভণ্ডুলের মওকা হিসেবেই ব্যবহৃত হতে দেখছি।

১৪| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:০০

অরণ্যচারী বলেছেন: সম্ভবত বিএনপি-জামাতের সঙ্গে সরকারের একটা সমেঝাতা হয়ে গেলেই এবং মুজাহিদ জামিন বা দায়মুক্ত হলেই আমিনী ও খতমে গংদের আষ্ফালন থেমে যাবে।

একমত।

১৫| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:০৪

মুনীর উদ্দীন শামীম বলেছেন: লেখক বলেছেন: ঠিক ভাস্করদা, কেউ কেউ ভাঙ্গার বিরোধীদের রুচি ও শ্রেণীচরিত্র বিেশ্লষণ করে তার সমালোচনা করে এখানে লিখছেন, যা আসলে ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের গডফাদার জেনারেলদেরই সমর্থনের নামান্তর। এইসব লোক সংগ্রামের মাঠ থেকে দূরে দঁাড়িেয় সবল পক্ষকে মদদ যোগায় আর ছদ্ম জ্ঞানতাত্তিক প্রশ্ন তুলে আমোদ পায়।

................................................................................................
এ রকম একটি জ্ঞানতাত্ত্বিক পোস্ট পড়ে তাকে এ ধরনের ফতোয়া দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেছিলাম। এবং ফতোয়াটার ভিত্তি ইমপেরিক্যাল কিনা জিজ্ঞেস করেছিলাম।
...........................................................................................
জঙ্গীবাদকে শ্রেণী সংগ্রাম হিসেবে জাযেজ করার অথবা ভাস্কর্যের কোন প্রভাব নেই, সুতরাং ওটি ভাঙ্গা-না ভাঙ্গার মধ্যে কোন ইতর বিশেষ নেই ধরনের সাধারণীকরণ কিন্তু শেষ পর্যন্ত অপকর্মটাকে হালাল করা হয়। কখনও প্রত্যক্ষ কখনও পরোক্ষভাবে।
...........................................................................................
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।

১৬| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:০৮

অন্যআনন বলেছেন: ফারুক ওয়াসিফ, যে কারণেই হোক না কেন আমরা যে এ জাতীয় ঘটনায় আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। ঘরে বসে থাকিনি। সরকার ও সরকারী নাটকের সাম্প্রদায়িক নট-নটীরা অন্তত এটা বুঝেছে আমরা এধরনের ঘটনাকে তীব্র ঘৃণা করি এবং ভবিষ্যতেও করে যাবো।

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:৩৬

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: অভিনন্দন অন্য আনন। এই ব্লগে এমন কিছু প্রাইভেট িব্পলবী দেখা যায়, যারা ঘরের মধ্যে ধানচাষ করবেন বলে স্থির করেছেন। তাদের থেকে সাবধান।

১৭| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:০৯

জাতিশ্বর বলেছেন: @আমার জন্য লেখা।এইছাগু কি কয়?ব্যকরন নুতন কইরা পর

১৮| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:১০

মারুফ মুনজির বলেছেন: কোন মুসলমানই মূর্তি ভাংগার পক্ষে নয় ইসলামে মূর্তি হারাম


মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয় । ইসলামে মূর্তি হারাম ।তাই কোন মুসলমানই মূর্তি সমর্থন করে না । কিন্তু কোন মুসলমানই মূর্তি ভাংগার পক্ষে নয় । দেশে হিন্দুদের একটা মূর্তিও ভাংগার নজির নেই । কিন্তু বিমান বন্দরের মত পাবলিক প্লেসে মূর্তি নির্মান করে সরকার ভুল করেছে বুঝতে পেরে সরকার তা সরিয়ে নিয়ে ভাল করেছে । দুদকের অভিযানে একজন ধার্মিক কিংবা আলেম দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হতে দেখেছেন কি ?বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ন একটি দেশ । এদেশে সাম্প্রদায়িক দাংগায় একজন মানুষও মরেনি । দেশের মানুষ মৌলবাদী নয় । এগুলো স্ব-ঘোষিত সুশীল প্রথম আলোর আবিষ্কার ।আধুনিক বিশ্বে বাস করে অপ্রয়োজনীয় মধ্যযুগীয় মূর্তি পূজা ও অপচয় থেকে আমাদের বাঁচতে হবে । অপ্রয়োজনীয় মধ্যযুগীয় মূর্তি পূজা বা ভাস্কর্য কিছু প্রতিক্রীয়িশীল বির্কত মনের মানুষের আবিষ্কার ।১৪ কোটি মানুষও যদি ভাস্কর্য বা মূর্তি গুলোর সামনে গিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকে , তাহলে আমাদের শহীদেরা কি একটুও টের পাবে বা তাদের কোন সওয়াব হবে ? তাহলে বিজ্ঞানের এই যুগে আমাদের মত গরীব দেশে কোটি কোটি টাকা খরচ করে এত মূর্তি কেন?



২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:০০

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: দ্যাখেন, গোড়াতেই আমি বলেছি আমি বিষয়টার রাজনৈতিক মাত্রা নিয়ে চিন্তিত। এর ধর্মতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা নিয়ে আমার আগ্রহ আছে আপনার কথা শুনবার। তবে আপাতত আমি রাজনৈতিক দিকটা এবং কেন এটা এসময়ে ঘটলো তা নিয়ে ব্যস্ত।

একটা জিনিষ বলতে পারেন. বাংলাদেশের ইসলামওয়ালারা কেন কখনো ক্ষমতার ছায়াতলে ছাড়া দাঁড়াতে পারেন না। ভাস্কর্য ভাঙ্গার থেকে মার্কিন দূতাবাস বা বিশ্বব্যাংক ভাঙ্গা বেশি জরুরি ছিল। বেশি জরুরি ছিল বাজারি মুনাফাখোরদের বিরুদ্ধে লাগা। সেটা তারা কখনো করেননি। কেন ফিলিস্তিনের হামাস বা লেবাননের হিজবুল্লাহর মতো সংগ্রামী ভূমিকায় তাদের দেখা যায় না। ক্ষমতার দুধ-মধু খেতে খেতে তাদের বপু এত ভারি হয়েছে সেটা তারা পারবেন না। তারা পারবেন আবার একাত্তরের মতো হানাদারদের পঞ্চম বাহিনীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে।

এর বাইরে কেউ কেউ হয়তো আছে, যারা গরিব মাদ্রাসা ছাত্র এবং তাদের পিতা-মাতাদের দুঃখ বোঝে। তবে সেই বুঝের লক্ষণ এখনো প্রকাশ পায় নাই।

১৯| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:১৩

ভোরের কুয়াশা...ফয়সাল বলেছেন: যত লিখেন কোন লাভ নেই

২০| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:২০

বিষাক্ত মানুষ বলেছেন: ভালো লিখেছেন । +

২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:১৩

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: ধন্যবাদ্ বিষাক্ত মানুষ।

@ ভোরের কুয়াশা: আমাদের লেখা কাজের অংশ।

২১| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:৪১

আমার জন্য লেখা বলেছেন: @জাতিশ্বর পাঠাগিরি বাদ দে

২২| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:৫৪

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: ক্যালকুলাসে তথা গণিতের সমীকরণে সবসময় একটা ধ্রুব ‘এক্স’ ধরে নেওয়া হয়। নইলে অঙ্ক মেলে না। বাংলাদেশের রাজনীতিতেও সে রকম ‘এক্সের’ আবির্ভাব ঘটতে দেখা যায়। হঠাত বিনা মেঘে বর্জ্রপাতের মতো শেখ মুজিবের সপরিবারে নিহত হওয়া, ক্ষমতার মধ্যগগনে অকস্মাত জিয়াউর রহমানের মৃত্যু ঘটা, কিংবা সাম্প্রতিক ইতিহাসের জেএমবি, ২১ আগস্টের গ্রেনেড ইত্যাদি হলো তেমনই এক একটি ‘এক্স’। যাকে আগে থেকে জানা যায় না, কিন্তু যাকে হিসাবে নিতেই হয়। এ রকম কোনো এক ‘এক্স’-এর উদয় জামায়াতকে এক ধাক্কায় অনেক ওপরে নিয়ে যেতে পারে। আর সেই উঁচু মিনারে দণ্ডায়মান হয়ে সে যা করবে, তা বিশুদ্ধ ‘দেশপ্রেম’ না হোক, ‘মুক্তিযুদ্ধের সমান না হোক, হবে গুরুত্বে তারই প্রতিপক্ষ। আর জনগণ এমনই বিহ্বল থাকবে যে, তৈরি হওয়ার আগেই একটা ওলট-পালট ঘটে যাবে। এবং সেই ‘উল্টানো একাত্তরে’

১১-৩-২০০৭ তারিখে লিখেছিলাম। পাবেন এখানে Click This Link সুতরাং ঘটনা সেই নিয়মেই ঘটছে মনে হচ্ছে।

২৩| ২০ শে অক্টোবর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:১০

অন্যআনন বলেছেন: যোগ দিন ফেসবুকের এই গ্রুপে :

Re-install the Baul sculptures infront of the airport


লিংক : Click This Link

২৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১২:০৯

রাসেল ( ........) বলেছেন: ফারুক ওয়াসিফ, একেবারে প্রাসঙ্গিক না হলেও খুব বেশী অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় না এই মন্তব্য-

ইসলামের সূচনার আগে সভ্যতার কোথাও দাম্পত্য বিরোধের পরিণতিতে বিচ্ছেদের ধারণা ছিলো না। বিবাহ বিচ্ছেদ নামক প্রথার সূচনা করে ইসলাম হিজরী পরবর্তী সময়ে প্রাগ্রসর চিন্তার এবং প্রগতিশীলতার একটা নিদর্শন পেশ করেছিলো। দাম্পত্যসম্পর্ক ঠিকমতো না চললে বরং দুজন পৃথক থেকে নিজস্ব জীবন যাপন করো- এমন প্রগতিশীল সমাধান সেই সময়ের প্রেক্ষিতে অনেক বেশি প্রগতিশীল।


সময়ের তুলনায় অগ্রসর যেকোনো মতবাদ যদি সময়ের ধারাবাহিকতায় নিজেকে পরিবর্তিত না করে, যদি নিজের ভেতরে যুগের স্বরকে ধারণ করতে ব্যর্থ হয় তবে সেই প্রগতিশীল ভাবনাই একদিন প্রাচীন এবং প্রতিক্রিয়াশীল ভাবনায় রূপান্তরিত হয়।

ইসলামের প্রাথমিক সময়ে নেওয়া প্রগতিশীল সিদ্ধান্তগুলোর যুগোপযোগিতা অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এখন এটা প্রতিক্রিয়াশীল ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। এমনটাই স্থির মতবাদের ভবিষ্যত।

২২ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:০৯

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: সাধারণভাবে একমত আপনার সঙ্গে। আজকের প্রসঙ্গ হচ্ছে, ধর্মকে অক্ষত রেখে সমাজের গণতন্ত্রায়ন কতটা সম্ভব? আবার ধর্মকে বলপ্রয়োগের পথে দমিয়ে সেক্যুলারিজম কায়েমে গণতন্ত্র ধ্বংস হয় কিনা। যদিও আপাত ভাবে মনে হচ্ছে, সেক্যুলারিজমের ঊনিশশতকীয় গড়নটা ব্যাখ্যা ও ব্যবস্থায় ব্যর্থ। তবে সবার আগে ইসলামের ভেতর যাজকতন্ত্র দাঁড়ানোকে প্রতিহত করা। এরা ইসলামের ভেতর ব্রাক্ষ্মণ্যশক্তি।
তৃতীয়ত, ধর্মভাব আর ধর্মতন্ত্রকে আলাদা করতে শেখা। জনগণের ধর্মভাব প্রগতির বাধা নয়, ধর্মতান্ত্রিক নব্য এলিট রাজনৈতিক শক্তি বাধা।

২৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:১৩

নুরুজ্জামান মানিক বলেছেন: একমত

২৬| ২১ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৪১

নুরুজ্জামান মানিক বলেছেন: উপরের মন্তব্য
একমত @ফারুক ওয়াসিফ
হবে

২৭| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:১০

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: ধন্যবাদ মানিক।

২৮| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১:৫৬

মাঠশালা বলেছেন: মুফতি নুর হোসাইন নূরানী স্পস্ট করে সাপ্তাহিক ২০০০ এর প্রতিবেদককে বলেছেন যে-"সরকার এবং আমাদের যৌথ উদ্যোগে মূর্তি অপসারিত হয়েছে।"

এর পর আর কিছু অপরিস্কার থাকে না যে আমরা কাদের দ্বারা আমাদের সরকার পরিচালিত করছি। সরকারতো কোন বিমূর্ত কিছু না। বর্তমান সরকার স্পস্টত সামরিক, ব্যাংকার আর কিছু মার্কিন মদদপুস্ট ব্যক্তি ব্যবসায়ী এবং এনজিওদেরকেই দেখতে পাই সাথে কিছু মিডিওকার মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানতে চাই।

২৯| ২২ শে অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:২১

ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন: এই সরকারের পেছনের শক্তির একাংশ গোড়ায় সমর্থন নিচ্ছিল সিভিল-কর্পোরেট মহলের কাছ থেকে। আরেক অংশ খেলছিল ইসলামপন্থিদের কোলে নিয়ে। দুটোই একই খেলার অংশ। যখন যেটা কাজে লাগে। তবে, বাংলাদেশে যে মোল্লা-মিলিটারি-কর্পোরেট বনাম সেক্যুলারিস্ট-মিলিটারি-কর্পোরেট ত্রিভূজ কাজ করছে তা স্পষ্ট। আর এরা রাজনীতিতে একটা কৃত্রিম গৃহযুদ্ধ পরিস্তিতি টেনে এনে মওকা বুঝে কোপ মারতে চায়।

৩০| ০৬ ই এপ্রিল, ২০০৯ রাত ২:৫৯

আথ্যরিক বলেছেন:
আলাউদ্দীন বলেছেন: এত বড় লেখা কেন?
ছোট ছোট করে লেখলে পড়তে সুবিধা হত।

লেখক বলেছেন: দু:খিত, এটা অন্য কাজে লেখা হয়েছিল। ভাবলাম শেয়ার করি।


আথ্যরিক বলে, সৎ সাহস নিয়ে, বুকে হাত দিয়ে, সত্য করে বলেন তো অন্য সে কাজটা কি, যে জন্য লিখা হয়েছিলো..। /

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.