![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজনীতির কবি-শেখ মুজিবুর রহমান
গত সপ্তাহে শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করলে তার বেশ ক'জন সমালোচক মন্তব্য করেন, শেখ মুজিব তার চরমপন্থি সমর্থকদের কাছে প্রায় নতি স্বীকার করেছেন এবং যে গণজোয়ারে তিনি পরিবেষ্টিত সেই জোয়ারের চূড়ায় তিনি চড়তে চাইছেন। তবে এ নতুন বাঙালি 'জাতির' লড়াইরত নেতা হিসেবে শেখ মুজিবের আবির্ভাব সারাজীবন ধরে বাঙালি জাতীয়তাবাদের জন্য তার সংগ্রামেরই যৌক্তিক ফলাফল। শেখ যদি জোয়ারের চূড়ায়ও চড়তে চেয়ে থাকেন, তবুও সেখানে তার অবস্থানটা মোটেও আকস্মিক নয়! ঢাকার কাছাকাছি একটি গ্রামের সম্পন্ন কৃষকের ঘরে তিনি ঠিক ৫১ বছর আগে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে পাঠশালা ও বিদ্যালয়ে শেখ মুজিব বুদ্ধিবৃত্তিক অভিব্যক্তির পরাকাষ্ঠা অভিব্যক্ত না করেই কাটিয়ে দেন। তবে বালক বয়সেই তিনি বহির্মুখী এবং জনপ্রিয় ছিলেন, জনসাধারণের সঙ্গে খেলাধুলা আর কথাবার্তা বলতে খুব পছন্দ করতেন। পরবর্তী সময়ে কলা ও মানবীয় বিষয়াদিতে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন। সেখানে মুসলিম লীগের একজন কর্মী হিসেবে তিনি তার অগ্রজদের নজর কাড়েন। সে সময় তার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন ব্রিটিশ শাসনাধীন বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। পরবর্তী সময়ে সোহরাওয়ার্দী এক বছরের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। মুজিব আইন অধ্যয়ন করেন। তিনি সোহরাওয়ার্দীর মতো উদারপন্থি নন। অচিরেই তিনি ডাইরেক্ট অ্যাকশনের পক্ষে নিজস্ব প্রবণতা দেখাতে থাকেন। চলি্লশের দশকের শেষদিকে শেখ মুজিব ও সোহরাওয়ার্দী দু'জনই উপলব্ধি করেন, তাদের আদিবাস বাংলা রাজ্যটি নবগঠিত পাকিস্তানে তার প্রাপ্যের চেয়ে কম পাচ্ছে। ১৯৪৯ সালে সোহরাওয়ার্দী আওয়ামী লীগ নামে নতুন দল গঠন করে 'বাঙালিদের জন্য বাঙলা' সংগঠিত করতে আত্মনিয়োগ করেন। শেখ মুজিব রাস্তায় নেমে পড়েন আর অবৈধ ধর্মঘট ও বিক্ষোভ সমাবেশ সংগঠনের জন্য গ্রেফতার হন ও কারাবরণ করেন।
জেল থেকে বেরিয়ে আসার পর শেখ মুজিব আওয়ামী লীগের মধ্যে সোহরাওয়ার্দীর ডান হাতে পরিণত হন। তবে তিনি তার নেতার আপস করার উদ্যোগ নস্যাৎ করে দেন এবং অন্য দলগুলোর সঙ্গে মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। মুজিবের সাফল্যে ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে নতুন প্রাদেশিক সরকার গঠন করে এবং তিনি সাত মাসের জন্য সে সরকারের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৩ সালে সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর দৃশ্যত শেখ মুজিবের ওপর থেকে বয়োবৃদ্ধ সোহরাওয়ার্দীর উদারপন্থা অনুসরণের বাধা দূর হয়ে যায়। তিনি আওয়ামী লীগের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়ে তার 'সহজাত' রাজনৈতিক স্টাইল অনুসরণ করেন এবং অভ্যন্তরীণ স্বশাসনের দাবি জানান। ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আইয়ুব খান পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে আবার গ্রেফতার করলে পূর্ব পাকিস্তান প্রায় প্রকাশ্য বিদ্রোহের পথে অগ্রসর হয়। এ রাজনৈতিক গোলযোগের কারণে আইয়ুব খান মুজিবকে মুক্তি দিতে এবং নিজে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। শেখ মুজিব তার জনসাধারণের কাছে নায়কে পরিণত হন।
গড়পড়তা বাঙালির চেয়ে বেশি লম্বা (উচ্চতা ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি) মাথাভর্তি কাঁচা-পাকা চুল, ঠোঁটের ওপর পুরু গোঁফ এবং সতর্ক কালো চোখজোড়া তার। এই দেহ গড়নের মুজিব তার সভা-সমাবেশে লাখ লাখ লোককে আকর্ষণ করতে পারেন। আর সভা-সমাবেশে আবেগপূর্ণ ভাষায় দেওয়া তার ভাষণ জনসাধারণকে মন্ত্রমুগ্ধ করে ফেলে। জনৈক কূটনীতিকের ভাষ্য, 'তার সঙ্গে একাকী আলোচনা করতে গেলেও তিনি এমনভাবে কথাবার্তা বলেন, যেন তিনি প্রায় ৬০ হাজার লোকের উদ্দেশে বক্তৃতা করছেন।' শেখ মুজিব পাকিস্তানের প্রধান তিনটি ভাষা_ উর্দু, বাংলা এবং ইংরেজিতে স্বচ্ছন্দ। তবে তিনি কখনই একজন মৌলিক তত্ত্বকারের ভান করেননি। তিনি রাজনীতির একজন কবি, প্রকৌশলী নন আর বাঙালিদের মধ্যে কারিগরি দিকের চেয়ে শিল্পকলার প্রতি অধিকতর ঝোঁক রয়েছে। সে কারণে মুজিবের নিজস্ব স্টাইল ঠিক তাই, যা ওই এলাকার সব শ্রেণী ও আদর্শের লোককে সংগঠিত করার জন্য দরকার।
এখন থেকে ঠিক এক মাস আগে শেখ মুজিব প্রকাশ্যে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়া থেকে বিরত থাকলেও একান্তে নিউজউইকের লোরেন জেঙ্কিন্সকে বলেন, 'পরিস্থিতি উত্তরণের কোনো আশাই আর নেই। দেশের অবস্থা সম্পর্কে আমরা যতটা অবগত তাতে বলতে হয়, পাকিস্তান ধ্বংস হয়ে গেছে।' তবে দেশের ভাঙনটা যাতে মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের মাধ্যমে ঘটে, তার জন্য তিনি অপেক্ষায় আছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'আমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, সে কারণে আমরা বিচ্ছিন্ন হতে পারি না। পশ্চিমারা যেহেতু সংখ্যালঘু সে কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াটা তাদেরই ওপর নির্ভর করে।' দুই সপ্তাহ পর সংকট ঘনীভূত হলে ঢাকার শহরতলিতে মুজিবের বাসভবনের উঠান ও রাস্তায় শত শত বাঙালি সমবেত হতে থাকলে তিনি পাইপে তামাক টানতে টানতে (শেখ মুজিবের ভাষায়_ 'একমাত্র বিদেশি জিনিস যা আমি ব্যবহার করি') তাদের সবার সঙ্গে উৎফুল্লভাবে মোলাকাত করতে থাকেন। উৎসুক জনতার এ ধরনেরই একটি স্বতঃস্ফূর্ত সমাবেশে বক্তৃতা দেওয়ার পর তিনি পশ্চিমা সাংবাদিকদের বলেন, 'ভোর ৫টা থেকে আমাকে এ ধরনের সমাবেশ করতে হচ্ছে। এ চেতনাকে মেশিনগান দিয়ে দমানো সম্ভব বলে কি আপনাদের ধারণা? অথচ দিন কয়েক পরই কেউ কেউ তা করার চেষ্টা করে।
-নিউজউইক, ৫ এপ্রিল, ১৯৭১
Click This Link
শেখ মুজিবুর রহমান : বন্দি থেকে বাদশা / বিশ্বখ্যাত টাইম সাময়িকী USA
১২ জানুয়ারি ১৯৭২
Click This Link
মুজিব।। স্থপতির মৃত্যু বিশ্বখ্যাত Time Magizine USA আগষ্ট ২৫,১৯৭৫
Click This Link
বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক ৫ এপ্রিল, ১৯৭১ -- রাজনীতির কবি-শেখ মুজিবুর রহমান ;
Click This Link
২| ২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১২
রাতুলবিডি২ বলেছেন: জনৈক কূটনীতিকের ভাষ্য, 'তার সঙ্গে একাকী আলোচনা করতে গেলেও তিনি এমনভাবে কথাবার্তা বলেন, যেন তিনি প্রায় ৬০ হাজার লোকের উদ্দেশে বক্তৃতা করছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:১৭
াহো বলেছেন: শেখ মুজিবুর রহমান : বন্দি থেকে বাদশা / বিশ্বখ্যাত টাইম সাময়িকী USA
১২ জানুয়ারি ১৯৭২
Click This Link
মুজিব।। স্থপতির মৃত্যু বিশ্বখ্যাত Time Magizine USA আগষ্ট ২৫,১৯৭৫
Click This Link
বিশ্বখ্যাত মার্কিন সাময়িকী নিউজউইক ৫ এপ্রিল, ১৯৭১ -- রাজনীতির কবি-শেখ মুজিবুর রহমান ;
Click This Link