![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরম করুণাময় পরম দয়াময় আল্লাহর নামে
||১||
১. লোকে তোমাকে আনফাল (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বলো, ‘যুদ্ধলব্ধ সম্পদ আল্লাহ্ ও রসুলের। সুতরাং আল্লাহ্কে ভয় করো এবং নিজেদের মধ্যে সদ্ভাব রক্ষা করো। যদি তোমরা বিশ্বাসী হও তবে আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করো ’। ২. বিশ্বাসী তো তারাই যাদের হৃদয় আল্লাহ্কে স্মরণ করার সময় করার কাঁপে ও যখন তাঁর আয়াত তাদের কাছে পাঠ করা হয় তখন তাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। আর তারা তো তাদের প্রতিপালকের ওপরই নির্ভর করে। ৩. যারা নামাজ কায়েম করে ও আমি যা দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে, ৪. তারাই প্রকৃত বিশ্বাসী। তাদের প্রতিপালকের কাছে তাদেরই জন্য মর্যাদা, ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা রয়েছে। ৫. যেমনটা তোমার প্রতিপালক তোমাকে ন্যায়ের জন্য তোমার ঘর থেকে বের করেছিলেন অথচ বিশ্বাসীদের একদল এ পছন্দ করে নি। ৬. সত্য স্পষ্টভাবে প্রকাশিত হওয়ার পরও তারা তোমার সাথে তর্কে লিপ্ত হয়; মনে হচ্ছিল যেন তারা মৃত্যুর দিকে চালিত হচ্ছে আর তারা তা প্রত্যক্ষ করছে। ৭. আর স্মরণ করো, আল্লাহ্ তোমাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেন যে, দুই দলের এক দল তোমাদের আয়ত্তে আসবে। অথচ তোমরা চাচ্ছিলে যে, নিরস্ত্র দলটি তোমাদের আয়ত্তে আসুক, আর আল্লাহ্ চাচ্ছিলেন সত্যকে তাঁর বাণী দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে আর অবিশ্বাসীদেরকে নির্মূল করতে। ৮. এ এজন্য যে তিনি সত্যকে সত্য ও অসত্যকে অসত্য প্রতিপন্ন করেন, যদিও পাপীরা এ পছন্দ করে না। ৯. স্মরণ করো, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কাছে কাতর প্রার্থনা করেছিলে, তিনি তা গ্রহণ করেছিলেন (ও বলেছিলেন), ‘আমি তোমাকে সাহায্য করব এক সহস্র ফেরেশতা দিয়ে যারা একের পর এক আসবে’। ১০. আর আল্লাহ্ এ করেন কেবল সুখবর দেওয়ার জন্য, আর এ-উদ্দেশ্যে যাতে তোমাদের মন ভরসা পায়; আর সাহায্য তো শুধু আল্লাহ্র কাছ থেকেই আসে। আল্লাহ্ তো শক্তিমান তত্ত্বজ্ঞানী।
||২||
১১. স্মরণ করো, তিনি তাঁর পক্ষ থেকে নিরাপত্তার জন্য তোমাদেরকে তন্দ্রায় আচ্ছন্ন করেন ও আকাশ থেকে তোমাদের ওপর বৃষ্টি ঝরান তা দিয়ে তোমাদেরকে পবিত্র করার জন্য, তোমাদের কাছ থেকে শয়তানের কুমন্ত্রণাকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য, তোমাদের বুক শক্ত করার জন্য আর তোমাদের পা স্থির রাখার জন্য। ১২. স্মরণ করো, তোমাদের প্রতিপালক ফেরেশতাদের ওপর প্রত্যাদেশ করেন, ‘আমি তোমাদের সাথে আছি, সুতরাং বিশ্বাসীদেরকে সাহস দাও’। যারা অবিশ্বাস করে আমি তাদের হৃদয়ে ভয় ঢুকিয়ে দেব। সুতরাং তোমরা তাদের ঘাড়ে ও সারা অঙ্গে আঘাত করো। ১৩. এ এজন্য যে তারা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের বিরোধিতা করে, আর কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের বিরোধিতা করলে আল্লাহ্ তাদের শাস্তিদানে কঠোর। ১৪. তাই এর স্বাদ নাও, আর অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে আগুনের শাস্তি। ১৫. হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যখন অবিশ্বাসীদের সম্মুখীন হবে তখন পালিয়ে যাবে না। ১৬. সেদিন কৌশলের জন্য বা নিজের দলে জায়গা নেওয়ার জন্য কেউ পালিয়ে গেলে সে তো আল্লাহ্র বিরাগভাজন হবে ও তার আশ্রয় হবে জাহান্নাম, আর সে কত খারাপ জায়গা! ১৭. তোমরা তাদেরকে হত্যা কর নি, আল্লাহ্ তাদেরকে মেরেছিলেন, আর তুমি যখন (কাঁকর) ছুড়েছিলে তখন তুমি ছোড় নি আল্লাহ্ই তা ছুড়েছিলেন; আর তা ছিল বিশ্বাসীদেরকে ভালো পুরস্কার দেওয়ার জন্য। নিশ্চয় আল্লাহ্ সব শোনেন সব দেখেন। ১৮. এভাবে আল্লাহ্ অবিশ্বাসীদের ষড়যন্ত্র দুর্বল করেন। ১৯. (হে কুরাইশরা!) তোমরা মীমাংসা চেয়েছিলে, তা তো তোমাদের কাছে এসেছে। যদি তোমরা বিরত হও, তবে তা তোমাদের জন্য ভালো, যদি তোমরা আবার যুদ্ধ কর তবে আমিও আবার শাস্তি দেব আর তোমাদের দল সংখ্যায় বড় হলেও তা তোমাদের কোনো কাজে আসবে না, আর আল্লাহ্ তো বিশ্বাসীদের সাথে রয়েছেন।
||৩||
২০. হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করো। তোমরা যখন তাঁর কথা শুনছ তখন তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ো না। ২১. আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা বলে, ‘শুনলাম তো’; আসলে তারা শোনে না। ২২. নিশ্চয় আল্লাহ্র কাছে নিকৃষ্টতম জীব সেই বধির ও মূকরা যারা কিছুই বোঝে না। ২৩. আর আল্লাহ্ যদি তাদের মধ্যে ভালো কিছু দেখতেন তবে তিনি তাদেরকেও শোনাতেন; কিন্তু তিনি তাদেরকে শোনালেও তারা উপেক্ষা ক’রে মুখ ফিরিয়ে নিত। ২৪. হে বিশ্বাসীগণ! রসুল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে ডাকে যা তোমাদেরকে উদ্দীপ্ত করে তখন আল্লাহ্ ও রসুলের ডাকে সাড়া দিবে, আর জেনে রাখো যে, মানুষ ও তার হৃদয়ের মাঝখানে আল্লাহ্ অবস্থান করেন ও তাঁরই কাছে তোমাদেরকে একত্র করা হবে। ২৫. তোমরা এমন ফিৎনাকে ভয় করো যা বিশেষ করে তোমাদের মধ্যে যারা সীমালঙ্ঘনকারী কেবল তাদেরকেই কষ্ট দেবে না। আর জেনে রাখো যে, আল্লাহ্ শাস্তিদানে কঠোর। ২৬. স্মরণ করো, তোমরা ছিলে সংখ্যায় অল্প, পৃথিবীতে তোমরা দুর্বল ব’লে পরিগণিত হতে ও তোমরা আশঙ্কা করতে যে (অন্য) লোকেরা তোমাদের হঠাৎ ক’রে পাকড়াও ক’রে নিয়ে যাবে। তারপর তিনি তোমাদেরকে আশ্রয় দেন, নিজ সাহায্যে তোমাদের শক্তিশালী করেন ও তোমাদেরকে ভালো ভালো জিনিস দেন যাতে তোমরা কৃতজ্ঞ হও। ২৭. হে বিশ্বাসীগণ! জেনেশুনে আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করবে না। আর তোমাদের পরস্পরের কাছে গচ্ছিত দ্রব্যের ব্যাপারেও নয়। ২৮. আর জেনে রাখো, তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি তো এক পরীক্ষা; আর আল্লাহ্র কাছেই রয়েছে বড় পুরস্কার।
||৪||
২৯. হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর তবে আল্লাহ্ তোমাদের ফুরকান (ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার শক্তি) দেবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন ও তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ্ বড়ই মঙ্গলময়। ৩০. স্মরণ করো, অবিশ্বাসীরা তোমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল তোমাকে বন্দি, হত্যা বা নির্বাসিত করার জন্য। তারা ষড়যন্ত্র করে, আর আল্লাহ্ পরিকল্পনা করেন। আর পরিকল্পনাকারীদের মধ্যে আল্লাহ্ই শ্রেষ্ঠ। ৩১. আর যখন তাদের কাছে আমার আয়াত আবৃত্তি করা হয় তখন তারা বলে, ‘আমরা তো শুনলাম, ইচ্ছা করলে আমরাও এরকম বলতে পারি, এ তো শুধু সেকালের উপকথা’। ৩২. আরও স্মরণ করো, তারা বলেছিল, ‘হে আল্লাহ্! এ যদি তোমার তরফ থেকে সত্য হয় তবে আমাদের ওপর আকাশ থেকে পাথর ফেলো বা আমাদের যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দাও’। ৩৩. আর আল্লাহ্ তো এমন নন যে, তুমি তাদের মধ্যে থাকবে তবু তিনি তাদেরকে শাস্তু দেবেন, আর তিনি এমন নন যে, তারা ক্ষমা প্রার্থনা করবে তবু তিনি তাদেরকে শাস্তি দেবেন। ৩৪. আর তাদের এমন কীই-বা বলার আছে যার জন্য আল্লাহ্ তাদেরকে শাস্তি দেবেন না, যখন তারা লোকদেরকে মসজিদ-উল-হারাম থেকে নিবৃত্ত করে, যদিও তারা তার তত্ত্বাবধায়ক নয়, সাবধানিরাই তার তত্ত্বাবধায়ক। কিন্তু তাদের অনেকেই এ জানে না। ৩৫. আর কা’বাগৃহের কাছে শুধু শিস ও করতালি দেওয়াই ছিল তাদের নামাজ। তোমরা যে অবিশ্বাস করতে তার জন্য তোমরা শাস্তি ভোগ করো। ৩৬. নিশ্চয়ই যারা অবিশ্বাসী, আল্লাহ্র পথে লোককে বাধা দেওয়ার জন্য তারা তাদের ধনসম্পদ ব্যয় করে। তারা ধনসম্পদ ব্যয় করতেই থাকবে, তারপর তা তাদের মনস্তাপের কারণ হবে। এরপর তারা পরাজিত হবে, আর যারা অবিশ্বাস করে তাদেরকে জাহান্নামে একত্র করা হবে। ৩৭. এ এজন্য যে, আল্লাহ্ দুর্জনকে সুজন থেকে আলাদা করবেন, আর দুর্জনদের এককে অপরের ওপর রাখবেন। তারপর সকলকে জড়ো করে জাহান্নামে ফেলে দেবেন। এরাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।
||৫||
৩৮. যারা অবিশ্বাস করে তাদেরকে বলো, ‘যদি তারা বিরত হয় তবে যা অতীতে হয়েছে তা আল্লাহ্ ক্ষমা করবেন, কিন্ত তারা যদি অন্যায়ের পুনরাবৃত্তি করে তবে তাদের আগে যারা এসেছিল তাদের দৃষ্টান্ত তো রয়েছে’। ৩৯. আর তোমরা তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করবে যতক্ষণ না ফিৎনা দূর হয় ও আল্লাহ্র ধর্ম সামগ্রিকরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়। আর যদি তারা বিরত হয়, তবে তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ্ তা ভালো করেই দেখেন। ৪০. আর যদি তারা মুখ ফেরায় তবে জেনে রাখো যে, আল্লাহ্ই তোমাদের অভিভাবক, আর তিনি কত ভালো অভিভাবক, আর কত ভালো সাহায্যকারী। ৪১. আরও জেনে রাখো যে, তোমাদের গণিমা (যুদ্ধে যা লাভ করা হয় তার এক-পঞ্চমাংশ)-য় আল্লাহ্র, রসুলের, রসুলের স্বজন, পিতৃহীন দরিদ্র ও পথচারীদের জন্য, যদি তোমরা বিশ্বাস কর আল্লাহ্য় ও তার ওপর যা ফুরকানের দিন (বদরের যুদ্ধের দিন) আমি আমার দাসের ওপর অবতীর্ণ করেছিলাম, যখন দুই দল পরস্পরের মোকাবিলা করছিল। আর আল্লাহ্ তো সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। ৪২. যখন তোমরা ছিলে উপত্যকার কাছে এ-প্রান্তে, আর তারা ছিল দূরে ও-প্রান্তে, আর উটবাহিনী ছিল তোমাদের থেকে নিচে, আর (তখন) যদি তোমরা নিজেদের মধ্যে (যুদ্ধ সম্পর্কে) কোনো অঙ্গীকার করতে (তবে) সে-অঙ্গীকার তোমরা তো খেলাপ করতে। কিন্তু আসলে যা ঘটার ছিল আল্লাহ্ তা ঘটালেন দুই দলকে যুদ্ধক্ষেত্রে (একত্র ক’রে), যাতে ক’রে যার ধ্বংস হওয়ার কথা সে যেন (সত্যাসত্যের) প্রমাণ স্পষ্ট প্রকাশের পর ধ্বংস হয় এবং যার জীবিত থাকার কথা সে যেন (সত্যাসত্যের) প্রমাণ স্পষ্ট প্রকাশের পর জীবিত থাকে। আল্লাহ্ তো সব শোনেন, সব জানেন। ৪৩. স্মরণ করো, আল্লাহ্ তোমাকে স্বপ্নে দেখিয়েছিলেন যে তারা সংখ্যায় অল্প, যদি তোমাকে দেখাতেন যে তারা সংখ্যায় বেশি তবে তোমরা সাহস হারাতে ও যুদ্ধের ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করতে। কিন্তু আল্লাহ্ তোমাদেরকে রক্ষা করেছেন; আর অন্তরে যা আছে সে-সম্বন্ধে তিনি ভালো করেই জানেন। ৪৪. আসলে যা ঘটার ছিল তা সম্পন্ন করার জন্য, তোমরা যখন পরস্পরের সম্মুখীন হয়েছিলে, তখন তিনি তাদেরকে তোমাদের চোখে স্বল্পসংখ্যক দেখিয়েছিলেন। আর সব ব্যাপারই তো ফিরে যায় আল্লাহ্র কাছে।
||৬||
৪৫. হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যখন কোনো দলের মোকাবিলা করবে তখন অবিচলিত থাকবে ও আল্লাহ্কে বেশি ক’রে মনে করবে, যাতে তোমরা সফল হও। ৪৬. আর আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করবে ও নিজেদের মধ্যে বিবাদ করবে না; করলে তোমরা সাহস হারাবে ও তোমাদের মনের জোর চলে যাবে। তোমরা ধৈর্য ধরবে, আল্লাহ্ তো ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন। ৪৭. আর তোমরা তাদের মতো হয়ো না যারা গর্বভরে ও লোক-দেখানোর জন্য নিজ ঘর থেকে বের হয় এবং (লোককে) আল্লাহ্র পথে বাধা দেয়। তারা যা করে আল্লাহ্ তা ঘিরে রয়েছেন। ৪৮. স্মরণ করো, শয়তান তাদের কাজকর্ম তাদের দৃষ্টিতে শোভন করেছিল ও বলেছিল, ‘আজ মানুষের মধ্যে কেউই তোমাদের ওপর বিজয়ী হবে না, সাহায্য করার জন্য আমিই তোমাদের কাছে থাকব’। তারপর দুই দল যখন পরস্পরের সম্মুখীন হল তখন সে স’রে পড়ল ও বলল, ‘তোমাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক রইল না, তোমরা যা দেখতে পাও না আমি তা দেখি। আমি আল্লাহ্কে ভয় করি, আর আল্লাহ্ তো শাস্তিদানে কঠোর’।
||৭||
৪৯. স্মরণ করো, মুনাফিক ও যাদের অন্তরে ব্যাধি আছে তারা বলে, ‘এদের ধর্ম এদেরকে প্রতারিত করেছে’। আর কেউ আল্লাহ্র ওপর নির্ভর করলে আল্লাহ্ তো শক্তিমান তত্ত্বজ্ঞানী। ৫০. তুমি দেখতে পেলে দেখতে ফেরেশতারা অবিশ্বাসীদের মুখে ও পিঠে আঘাত ক’রে তাদের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে আর বলছে, ‘তোমরা দহনযন্ত্রণা ভোগ করো’। ৫১. এ তাদের কর্মফল, আর আল্লাহ্ তাঁর দাসদের ওপর জুলুম করেন না। ৫২. ফেরাউনের স্বজনদের ও তাদের পূর্ববর্তীদের মতো এরা আল্লাহ্র নিদর্শনগুলোকে প্রত্যাখান করে। তাই আল্লাহ্ এদের পাপের জন্য এদেরকে শাস্তি দেন। আল্লাহ্ তো শক্তিমান, কঠোর শাস্তিদাতা। ৫৩. এ এজন্য যে, যদি কোনো সম্প্রদায় নিজের অবস্থার পরিবর্তন না করে তবে আল্লাহ্ এমন নন যে, তিনি তাদেরকে যে-ধনসম্পদ দান করেছেন তা তিনি পরিবর্তন করবেন; আর আল্লাহ্ তো সব শোনেন, সব জানেন। ৫৪. ফেরাউনের স্বজনদের ও তাদের পূর্ববর্তীদের মতো এরা এদের প্রতিপালকের নিদর্শনসমূহকে অবিশ্বাস করে। তাদের পাপের জন্য আমি তাদেরকে ধ্বংস করেছি; আর ফেরাউনের স্বজনদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছি; আর তারা সকলেই ছিল সীমালঙ্ঘনকারী। ৫৫. নিশ্চয়ই আল্লাহ্র কাছে নিকৃষ্ট জীব তারাই যারা অবিশ্বাস করে ও বিশ্বাস আনে না। ৫৬. ওদের মধ্যে তুমি যাদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ তারা প্রত্যেকবার তাদের চুক্তি ভঙ্গ করে, আর তারা সাবধান হয় না। ৫৭. যুদ্ধে তোমরা যদি তাদেরকে তোমাদের আয়ত্তে পাও তবে ওদের পেছনে যারা আছে তাদের থেকে ওদেরকে বিচ্ছিন্ন ক’রে এমনভাবে ধ্বংস করো যাতে ওরা শিক্ষা পেয়ে যায়। ৫৮. যদি তুমি কোনো সম্প্রদায়ের বিশ্বাসভঙ্গের আশঙ্কা করো তবে তুমিও একইভাবে ছুড়ে ফেলে দাও তাদের অঙ্গীকারকে। আল্লাহ্ তো বিশ্বাসভঙ্গকারীদেরকে ভালোবাসেন না।
||৮||
৫৯. আর অবিশ্বাসীরা যেন কখনও মনে না করে যে তারা পরিত্রাণ পেয়েছে। (বিশ্বাসীদেরকে) তারা পরিশ্রান্ত করতে পারবে না। ৬০. আর তোমরা তাদেরকে মোকাবিলার জন্য সাধ্যমতো শক্তি ও ঘোড়া প্রস্তুত রাখবে। এ দিয়ে তোমরা সন্ত্রস্ত করবে আল্লাহ্র শত্রু কে, তোমাদের শত্রু কে আর অন্যদেরকেও যাদের কথা আল্লাহ্ জানেন কিন্তু তোমরা জান না। আর আল্লাহ্র পথে তোমরা যা-কিছু কর ব্যয় করবে তার পুরো প্রতিদান দেওয়া হবে এবং তোমাদের ওপর জুলুম করা হবে না। ৬১. আর যদি তারা সন্ধির দিকে ঝুঁকে পড়ে তবে তুমিও সন্ধির দিকে ঝুঁকবে ও আল্লাহ্র অপর নির্ভর করবে। নিশ্চয়ই তিনি সব দেখেন, সব জানেন। ৬২. আর যদি তারা তোমাকে ঠকাতে চায়, তবে তোমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট – তিনি তোমাকে তাঁর সাহায্যে ও বিশ্বাসীদের দিয়ে শক্তিশালী করেছেন। ৬৩. আর তিনি তাদের পরস্পরের হৃদয়ের মধ্যে সম্প্রীতির সঞ্ঝার করেছেন। পৃথিবীর যাবতীয় সম্পদ ব্যয় করলেও তুমি তাদের হৃদয়ে সম্প্রীতির সঞ্ঝার করতে পারতে না, কিন্তু আল্লাহ্ তাদের মধ্যে প্রীতিসঞ্ঝার করেছেন। নিশ্চয়ই তিনি শক্তিমান তত্ত্বজ্ঞানী। ৬৪. হে নবি! তোমার জন্য ও তোমার অনুসারী বিশ্বাসীদের জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট।
||৯||
৬৫. হে নবি! বিশ্বাসীদেরকে সংগ্রামে উদ্ধুদ্ধ করো। তোমাদের মধ্যে কুড়িজন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুইশত জনের ওপর বিজয়ী হবে আর যদি থাকে একশো জন তবে হাজার অবিশ্বাসীর ওপর বিজয়ী হবে, কারণ ওরা এমন এক সম্প্রদায় যারা অবোধ। ৬৬. আল্লাহ্ এখন তোমাদের ভার হালকা করবেন। তিনি তো জানেন তোমাদের মধ্যে দুর্বলতা আছে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে একশো জন ধৈর্যশীল থাকলে তারা দুশো জনের ওপর বিজয়ী হবে। আর তোমাদের মধ্যে এক হাজার জন থাকলে আল্লাহ্র আদেশে তারা দুহাজারের ওপর বিজয়ী হবে। আল্লাহ্ ধৈর্যশীলদের সাথেই আছেন। ৬৭. দেশে সম্পূর্ণভাবে শত্রু নিপাত না করা পর্যন্ত বন্দি রাখা কোনো নবির পক্ষে সমীচীন নয়। তোমরা চাও পার্থিব সম্পদ আর আল্লাহ্ চান পরলোকের কল্যাণ। আল্লাহ্ তো শক্তিমান তত্ত্বজ্ঞানী। ৬৮. আল্লাহ্র পূর্ববিধান না থাকলে তোমরা যা গ্রহণ করেছ তার জন্য তোমাদের ওপর মহাশাস্তি পতিত হ’ত। ৬৯. যুদ্ধে তোমরা যা লাভ করেছ তা বৈধ ও উত্তম ভেবে উপভোগ করো। আর ভয় করো আল্লাহ্কে। আল্লাহ্ তো ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।
||১০||
৭০. হে নবি! তোমাদের হাতে ধৃত যুদ্ধবন্দিদেরকে বলো, ‘আল্লাহ্ যদি তোমাদের হৃদয়ে ভালো কিছু দেখেন, তবে তোমাদের কাছ থেকে যা নেওয়া হয়েছে তার চেয়ে ভালো কিছু তিনি তোমাদেরকে দেবেন ও তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ্ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু’। ৭১. তারা যদি তোমার সাথে বিশ্বাসভঙ্গ করতে চায়, (তুমি জান) তারা তো পূর্বেও আল্লাহ্র সাথে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছিল, তা হলে তিনি তোমাদেরকে তাদের ওপর শক্তিশালী করবেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ তত্ত্বজ্ঞানী। ৭২. নিশ্চয় যারা বিশ্বাস করেছে, হিজরত করেছে, ধনপ্রাণ দিয়ে আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করেছে ও যারা আশ্রয় দিয়েছে এবং সাহায্য করেছে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। আর যারা বিশ্বাস করেছে কিন্তু ধর্মের জন্য হিজরত করে নি, হিজরত না করা পর্যন্ত তাদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব তোমার নেই। আর ধর্ম সম্বন্ধে যদি তারা তোমাদের সাহায্য প্রার্থনা করে তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের কর্তব্য, অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে নয় যে-সম্প্রদায়ের সাথে তোমাদের চুক্তি রয়েছে। তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা ভালো করেই দেখেন। ৭৩. যারা অবিশ্বাস করেছে তারা পরস্পর পরস্পরের বন্ধু। যদি তোমরা তা (তোমাদের পরস্পরের মধ্যে তেমন বন্ধুত্ব) না কর তবে দেশে ফিৎনা ও মহাবিপর্যয় দেখা দেবে। ৭৪. যারা বিশ্বাস করেছে, হিজরত করেছে ও আল্লাহ্র পথে সংগ্রাম করেছে এবং যারা আশ্রয় দান করেছে তারাই প্রকৃত বিশ্বাসী, তাদের জন্য ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা রয়েছে। ৭৫. আর যারা পরে বিশ্বাস করেছে, হিজরত করেছে ও তোমাদের সঙ্গে থেকে সংগ্রাম করেছে তারাও তোমাদের অন্তর্ভুক্ত। আর আল্লাহ্র বিধানে আত্মীয়রা একে অন্যের চেয়ে বেশি হকদার। আল্লাহ্ সব বিষয়ই ভালো করে জানেন।
©somewhere in net ltd.