নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাঝে মাঝে তব দেখা পাই.....

গারোপাহাড়

গারোপাহাড় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইতিহাস থেকে বের হয়ে অাসবে যে ইতিহাস............(প্রসঙ্গ ইমাম মাহদি (আঃ) ও তার আর্বিভাব----১)

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:০৩

প্রথমেই কয়েকটি কথা বলে রাখা প্রয়োজন.....

এই ধারাবাহিক পোষ্টগুলো সবগুলোই ইসলামিক বিশ্বাসের সাথে সম্পৃক্ত। কারও একথাগুলো বিশ্বাস হতে পারে আবার নাও হতে পারে।
ব্যক্তিগত পঠন পছন্দের ক্ষেত্রেও ব্যাপারগুলো একই রকম। এ পোষ্টগুলোর অধিকাংশই সংগৃহিত। কিন্তু দু-একটি ছাড়া অন্যগুলোতে রেফারেন্স রাখা হয়নি ভুলে। তাই যাদের লিখা তাদের প্রতি আগেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাখছি।পোষ্ট গুলো দেয়ার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো বিষয়টি নিয়ে অামার জ্ঞান আরও পরিষ্কার করা। তাই যদি কেউ এ বিষয়ে অধিকতর জ্ঞানের অধিকারী হন দয়া করে জানাবেন। যদি কেউ বিরুপ মনোভাব পোষন করেন তাহলে তার পোষ্টগুলো না পরাই ভালো।

ও...আরেকটি কথা...এ পোষ্টগুলো সংক্রান্ত কোন প্রশ্নের জবাব দেয়া অামার পক্ষে কঠিন। এ বিষয়ে আমার জ্ঞানও এ পোষ্টগুলো পর্যন্তই।
ধন্যবাদ.....



প্রসঙ্গ ইমাম মাহদি (আঃ) ও তার আর্বিভাব----১




الم [٢:١] ذَٰلِكَ الْكِتَابُ لَا رَيْبَۛ فِيهِۛ هُدًى لِّلْمُتَّقِينَ [٢:٢]الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ [٢:٣]
“আলিফ লাম মীম। এ সেই কিতাব যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য,যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।”- সূরা বাকারাঃ ১-৩

ধর্ম, দর্শনও নয়; বিজ্ঞানও নয়- ধর্ম- এক সুগভীর বিশ্বাস - অদেখা বিষয়ের উপর। ধর্ম, পথ-প্রদর্শনকারী-তবে শুধুমাত্র বিশ্বাসী আর পরহেযগারদের জন্য। সুতরাং, অদেখা বিষয়ের বিশ্বাসী হিসেবে আমি কার্যত কোন কারামত, অলৌকিকত্ব বা দৈব খোজার প্রয়াস করব না- কেননা আমি বিশ্বাস করি “হও” বা “হয়ে যাও” এর আদেশদাতার কার্যত আর কোন কারামত প্রকাশ করার দরকার নেই, বরঞ্চ কায়মনোবাক্যে কামনা করি আল্লাহ্‌ তায়ালা যেন আমাকে এবং আমাদের সকলকে সরল বিশ্বাসে বিশ্বাসী হওয়ার তৌফিক দান করেন।

তাই, আমার সকল জ্ঞানী ভাই ও বোনদের অনুনয় করছি দয়া করে আমাদের মত অদেখায় বিশ্বাসীদের কোন কিছু দেখিয়ে/ বুঝিয়ে বিশ্বাস করানোর কষ্ট করবেন না-আপনাদের সময়, জ্ঞান-বিজ্ঞান, যুক্তি-তত্ত এই দুনিয়ার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান-দয়া করে তা আমার বা আমাদের মত কূপমণ্ডূকদের (বিশ্বাসের বাইরে যারা আর কিছুই দেখে না) পিছনে ব্যয় করবেন না।

ইমাম মেহেদী’র অপেক্ষায়.........
ইমাম মেহেদী এই নামটি সারা পৃথিবীতে সুপরিচিত এবং সমাদৃত। সারা পৃথিবীর নির্যাতিত ও হতভাগ্য মুসলমান জনতা অধীর আগ্রহে এই মহামানবের জন্য অপেক্ষা করছে, পৃথিবীব্যাপী এই মহান আশীর্বাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি সম্পর্কে জল্পনা-কল্পনা চলছে, চলবে।

সারা পৃথিবীর মসুলমানদের বিশ্বাস, ইমাম মেহেদীহবেন মহানবী (সঃ) এর বংশধর, যিনি কোরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে পৃথিবী আলকিত করবেন এবং কেয়ামত সংঘটিত হওার পূর্বে পৃথিবীতে ন্যায় এবং শান্তির বার্তা নিয়ে আসবেন। তার সম্পর্কে হাদীসে উল্লেখ আছে যে-

হযরত আলী (রাঃ)হতে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন,
“এই পৃথিবীর যদি মাত্র একদিন বাকি থাকে আল্লাহ্‌ সেই দিনটিকে প্রলম্বিত করে দিবেন যতক্ষন না আমার বংশধরের থেকে একজন প্রেরিত হয়।”- (সুনান আবু দাউদ, ৫/৯২)

উপরে বলা কথাগুলো অনেকের কাছেই নতুন কিছু নয়। আমিও আসলে নতুন কিছু বলতে আসিনি, আমাদের জানা ব্যাপারগুলিই একটু ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব, মাত্র। মেহেদী কেন আসবেন, কবে আসবেন, কিভাবে তাকে চেনা যাবে এই সব বিষয় সম্পর্কে রেফারেন্স সমৃদ্ধ এবংযুক্তিভিত্তিকতথ্য উপস্থাপন করার চেষ্টা করব, ইনশাআল্লাহ্‌।
আজ এই পোস্টটিতে ইমাম মেহেদী’র আগমনের কিছু আলামত সম্পর্কে বলব এবং পরবর্তী পোস্ট গুলতে এই সব আলামতের তথ্যভিত্তিক ও যুক্তিভিত্তিকব্যাখ্যা দেওয়ার চেষ্টা করব।নিচে এইসব আলামতের একটা তালিকা দেওয়া হল এবং পরবর্তী পোস্টগুলোতে প্রত্যেকটি আলামতের ব্যাখ্যা দেওয়া হবে। আলোচনার শুরুতে কিছু ব্যাপার পরিস্কার করে নেবার দরকার-
১. “আলামত” শব্দের প্রতিশব্দ “লক্ষণ”।
২. “লক্ষণ” গুলোর বিষয়বস্তু কখনো সমস্টিক, কখনো ব্যাস্টিক, কখনোবা সুনির্দিষ্ট।
আলামত সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ

ধর্মীয়
• আল্লাহ্‌ কে প্রকাশ্যে অস্বীকার করা।
• মসজিদের ধ্বংসসাধন।
• পবিত্র কাবা শরীফে রক্তপাত।
• মুসলিমদের উপর ক্রমবর্ধমান অত্যাচার।
• ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া।
• ব্যক্তি স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার।
• ভণ্ড নবীদের উদ্ভব।

প্রাকৃতিক
• বজ্রপাতের সংখ্যা বৃদ্ধি।
• ভুমিকম্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া।
• ভয়াবহ বন্যা।
• বার্ড এবং সোয়াইন ফ্লুর উদ্ভব।

মহাজাগতিক
• রমজান মাসে চন্দ্র এবং সূর্য গ্রহন হওয়া।
• ধূমকেতুর উদ্ভব।
• পূর্ব দিগন্তে আলোক ঝলকানি।
• দুই লেজ বিশিষ্ট ধূমকেতুর আগমন।
• মহাকাশে হাতের আকৃতির উদ্ভব।
• সূর্যে আলামতের প্রকাশ।

বৈশ্বিক
• পৃথিবীব্যাপী অনিয়ম ও সংঘর্ষের পরিব্যাপ্তি।
• দুর্নীতির ব্যাপক বিস্তার।
• ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ।
• অর্থনৈতিক সংকট।
• বড় বড় শহরের ধ্বংসসাধন।
• নির্দোষ শিশু হত্যা।
• একটি বড় ঘটনার উদ্ভব।
• আশ্চর্যজনক বিভিন্ন ঘটনার উদ্ভব।

ইরাক ও মধ্যপ্রাচ্য
• ইরাক-ইরান যুদ্ধ।
• আফগানিস্তানে দখলদারিত্ব।
• ইউফ্রেতিস নদীর প্রবাহ বন্ধ হওয়া।
• ইস্তামবুলে তেলবাহী জাহাজের বিস্ফোরণ।
• বাগদাদ শহরের ধ্বংসসাধন।
• মরুর বুকে ইরাকী সৈন্যদলের বিলুপ্তি সাধন।
• ইরাকীদের নিঃস্ব অবস্থায় পতিত হওয়া।
• ইরাক এবং শামদেশের উপর অবরোধ আরোপ।
• ইরাকের পুনর্গঠন।
• শামদেশে দুর্নীতির বিস্তার।
• ইরাকী লোকজনের উত্তরমুখী হয়ে শামদেশে পলায়ন।
• শামদেশ, ইরাক এবং সমগ্র আরবজুড়ে অনিয়মের বিস্তার লাভ।
• ইরাকের তিন ভাগে বিভক্তি।
• টাইগ্রিস এবং ইউফ্রেতিসের মধ্যে যুদ্ধ।
ইমাম মেহেদীর আগমনের কয়েকটি আলামত দেওয়া হল। ইনশাআল্লাহ্‌, পরবর্তী পোস্টগুলোতে আলামতগুলো রেফারেন্সসহ ব্যাখ্যা করা হবে।




2….

ইমাম মেহেদী আসার আলামতঃ ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ।
নিম্নোক্ত হাদীসগুলো দিয়ে এটা প্রমাণিত হয় যে, শেষ সময়ে বিশ্বের সিংহভাগ মানুষ নির্যাতন এবং গোলযোগের শিকার হবে এবং প্রচুর পরিমাণে রক্তপাত হবে যা ইমাম মেহেদী আসার লক্ষণগুলোর মধ্যে অন্যতম।

বিচার দিবস ততক্ষন আসবে না যতক্ষন না এইসমস্ত জিনিস প্রকাশিত হয়............ মৃত্যু এবং গণহত্যা ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়বে.........(জালালুদ্দিন আস-সুয়ুতি, আল জামি আস সগির, ৩:২১১, আহমাদ ইবনে হানবাল , মুসনাদ, ২:৪৯২, ৪:৩৯১,৩৯২)
শাওয়াল মাসে যুদ্ধের ঘোষণা আসবে, জিলহাজ্জ মাসে যুদ্ধ ও ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত হবে। আবার জিলহাজ্জ মাসে তীর্থযাত্রীরা (হজ্জযাত্রী) লুণ্ঠনের শিকার হবে এবং রাস্তাসমূহ রক্তস্নাত হবে...... রক্তপাত চলতে থাকবে এবং বাড়তে থাকবে। (আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ৩৭)
মানুষ তীর্থযাত্রায় যাবে কিন্তু তাদের কোন পথপ্রদর্শক(ইমাম) থাকবে না। যখন তারা মিনাতে আসবে তখন সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়বে এবং যে ভাবে কুকুর বেধে রাখা হয় তাদেরকে সেভাবে বেধে রাখা হবে এবং গোত্রসমূহ একে অপরের উপর চড়াও হবে। এই দ্বন্দ্ব এত পরিব্যাপ্ত হবে যে পা রক্তের নদীতে ডুবে যাবে।
(আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ৩৫)
ব্যাপক যুদ্ধ শুরু হবে এবং মনে হবে তা চিরদিন চলবে............ (ইবনে হাযার আল হাইতামী, আল- কাওয়াল আল মুখতাসার ফি আলামাত আল মেহদী আল মুন্তাধার, পৃঃ ৫৫)
এমন যুদ্ধ শুরু হবে যা থেকে কেউ বাঁচতে পারবে না। কোন স্থানে শেষ হলে তৎক্ষণাৎ আরেকটি স্থানে শুরু হবে...... (ইবনে হাযার আল হাইতামী, আল- কাওয়াল আল মুখতাসার ফি আলামাত আল মেহদী আল মুন্তাধার, পৃঃ ২১-২২)

শেষযুগে প্রযুক্তির সহায়তায় এসব ধ্বংসযজ্ঞ এবং অনাচার সম্পর্কে সবাই জানতে পারবে। যদিও দৃশ্যপটে অল্প সংখ্যক লোক থাকবে কিন্তু ঘরে বসে প্রযুক্তির কল্যাণে সবাই সেতা সম্পর্কে মুহূর্তেই জানতে পারবে।

ধর্মীয় আলামতসমূহ
1. আল্লাহ্ কে প্রকাশ্যে অস্বীকার করা।
2. মসজিদের ধ্বংসসাধন।
3. মুসলিমদের উপর ক্রমবর্ধমান অত্যাচার।
4. ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া।
5. পবিত্র কাবা শরীফে রক্তপাত।
6. ব্যক্তি স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার।
7. ভণ্ড নবীদের উদ্ভব।

1. ইমাম মেহেদীর অপেক্ষায়ঃ আল্লাহ্‌ কে প্রকাশ্যে অস্বীকার করা (নিশ্চয় আল্লাহ্‌ এসব থেকে মুক্ত)
“এমন একটা সময় আসবে যখন আল্লাহ্‌কে প্রকাশ্যে ও কুৎসিতভাবে অস্বীকার করা একটা সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়াবে; এমন সময়ে ইমাম মেহেদীর আগমন ঘটবে।
(আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ২৭)
এই হাদীস থেকে বোঝা যায় যে, অনেকেই নাস্তিকতা ও অজ্ঞেয়বাদের চর্চা করবে এবং তাদের এইসকল অবাস্তব মতামত বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে প্রচার করবে এবং প্রকাশ্যে আল্লাহ্‌কে অস্বীকার করবে। আমার আমাদের চারপাশে নজর দিলে দেখতে পাবো যে এই অবস্থা এখন বিরাজ করছে; নাস্তিক্যবাদিদের তথাকথিত “আধুনিক” ও “সমসাময়িক” দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারা সমাদৃত হয়ে থাকে। দুঃখজনকভাবে তারা প্রকৃত সত্যের অনুসন্ধান না করে মিথ্যা মোহে ডুবে থাকে। তাদের কাছে যতভাবেই সত্য উপস্থাপন করা হোক না কেন তারা একরোখার মত তাদের ভ্রান্তবিশ্বাস আঁকড়ে থাকে। এদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনের সুরা বাকারার ৬ ও ৭ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে
“ যারা অস্বীকার করে, তাদের তুমি সাবধান করো আর না করো, উভয়টাই সমান, এরা কখন ঈমান আনবে না” “ (ক্রমাগত কুফরি করারা কারণে) আল্লাহ্‌ তাদের মন মগজ ও কানের উপর মোহর মেরে দিয়েছেন, এদের দেখার উপরও আবরণ পড়ে আছে এবং তাদের জন্য কষ্টদায়ক শাস্তি রয়েছে”।


2. ইমাম মেহেদীর অপেক্ষায়ঃ মসজিদের ধ্বংসসাধন
“এক শুষ্ক উপত্যকা থেকে সুফিয়ানিদের উদ্ভব ঘটবে এবং তাঁরা কালব গোত্রের ভাবলেশহীন ও শক্ত হৃদয় মানুষদের নিয়ে সৈন্যদল গঠন করবে যারা সকল মানুষদের উপর অত্যাচার করবে। সে মাদ্রাসা ও মসজিদ ধ্বংস করবে এবং সকল রুকু-সিজদাকারীদের উপর অত্যাচার চালাবে।”
(আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ৩৫)

আমার আমাদের চোখের সামনে দেখলাম কিভাবে ঐতিহ্যবাহী বাবরি মসজিদ গুড়িয়ে দেওয়া হল, এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে মায়ানমারে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে কিভাবে মসজিদগুলো ধ্বংস করা হল আর ফিলিস্তিনেতো প্রতিদিন ইসরায়েলি হামলায় কত ধ্বংসসাধন হচ্ছে তার কোন ইয়াত্তা নাই।

3. ইমাম মেহেদীর অপেক্ষায়ঃ মুসলিমদের উপর ক্রমবর্ধমান অত্যাচার

হাদীসে বর্ণিত আছে শেষ সময়ে মুসলিম সমাজের উপর সংঘর্ষ, যুদ্ধ এবং অন্যায় চাপিয়ে দেওয়া হবে।
“রুকু ও সিজদাকারীদের শাস্তি দেওয়া হবে। নির্দয়তা, অপবাদ, এবং অনাচার প্রসার লাভ করবে; পণ্ডিত এবং সাধু ব্যক্তিদের হত্যা করা হবে; এবং অনেক শহর বিজিত হবে। নবী (সঃ) এর বিরুদ্ধে বৈরিতা প্রদর্শিত হবে, রক্তপাত ও ধ্বংস বৈধতা পাবে।”
(আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ৩৭)
“আমার পরে খলিফারা আসবে, খলিফাদের পরে আসবে আমির, আমিরদের পরে আসবে অত্যাচারী শাসক। অবশেষে আহলে বাইয়াত থেকে একজন আবির্ভূত হবে।”
(আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ৮৪)।
আমরা প্রতিদিন সংবাদপত্রের পাতায় দেখতে পায় কিভাবে ফিলিস্তিনে মুসলিমরা অত্যাচারের শিকার হচ্ছে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের গুজরাটে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলিম নিহত হয়েছে, সম্প্রতি বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা মায়ানমারে মুসলিমদের কিভাবে ভয়াবহভাবে হত্যা করেছে শুধুমাত্র তাদের ধরম বিশ্বাসের কারণে।


4. ইমাম মেহেদীর অপেক্ষায়ঃ ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া
যদিও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মদ্যপান, পতিতাবৃত্তি, সুদ, ঘুষ, সমকামিতা প্রভৃতি ক্ষতিকর কাজগুলো বেআইনি ও ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ তারপরও মানুষ এই সমস্ত কাজগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে যারা এই সমস্ত অন্যায় কাজে জড়িত তারা প্রশংসিত ও উৎসাহিত হচ্ছেন অন্যদিকে যারা নিজেদেরকে এসব থেকে দূরে রাখছেন তাঁরা হেয় প্রতিপন্ন ও হাসির পাত্রে পরিণীত হচ্ছেন। সবাই অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে, কেউ ধর্মীয় বিধি-নিষেধের পরোয়া না করে বল্গাহীনভাবে চলছে এবং আমরা খেয়াল করলে দেখতে পাব গত কয়েক দশকে সব বিষয়ে বাড়াবাড়ি করাই নিয়মে পরিণীত হয়েছে।
“অনিয়ম অনাচার পৃথিবীময় দেখা দেবে তখন নিষিদ্ধ বিষয়গুলোই আইনসিদ্ধ হবে। তখন হযরত মেহেদীর আবির্ভাব ঘটবে।”
(আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ২৬)।
“যখন অবিশ্বাস সর্বত্র হানা দেবে এবং নিষিদ্ধ কাজসমূহ জনসম্মুখে করা হবে তখন এক আশীর্বাদপ্রাপ্ত ব্যক্তির (ইমাম মেহেদী) আগমন হবে।”
(ইমাম রাব্বানী, লেটারস অব রাব্বানী, ২:২৫৯)
“এমন জঘন্য অনাচার দেখা দেবে যখন সব নিষিদ্ধ বিষয়গুলোই আইনসিদ্ধ হবে; এমন সময়েই ইমাম মেহেদীর আগমন ঘটবে।“
(ইবনে হাযার আল হাইতামী, আল- কাওয়াল আল মুখতাসার ফি আলামাত আল মেহদী আল মুন্তাধার, পৃঃ ২৩।




ধর্মীয় আলামতসমূহ
1. আল্লাহ্ কে প্রকাশ্যে অস্বীকার করা।
2. মসজিদের ধ্বংসসাধন।
3. মুসলিমদের উপর ক্রমবর্ধমান অত্যাচার।
4. ধর্মীয়ভাবে নিষিদ্ধ বিষয়গুলোর জনপ্রিয়তা এবং গ্রহণযোগ্যতা পাওয়া।
5. পবিত্র কাবা শরীফে রক্তপাত।
6. ব্যক্তি স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার।
7. ভণ্ড নবীদের উদ্ভব।


ইমাম মেহেদীর অপেক্ষায়ঃপবিত্র কাবা শরীফে রক্তপাত

যে বছর ইমাম মেহেদী আবির্ভূত হবেন, লোকজন সবাই মিলে হজ্জ করবে এবং ইমাম(নেতা) বিহীন ভাবে একত্রিত হবে। হাজীরা লুটতরাজের শিকার হবেন এবং মিনাতে সংঘর্ষ সংগঠিত হবে যেখানে অনেকে মৃত্যুবরণ করবেন এবং জামর-আল-আকাবা পর্যন্ত রক্তস্নাত হবে। [জামরঃ একটি মিনার যাতে শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। ] (আমর ইবন শু’ইয়াব, আল হাকিম এবং নুয়া’ইয়ম ইবন হাম্মাদ কতৃক বর্ণিত, রাসুল বারযানজি, আল – ইশাআহ লি আসরাত আস সা’আহ, পৃঃ ১৬৯)
মানুষ ইমাম ছাড়া হজ্জ যাত্রা করবে। যখন তারা মিনাতে আসবে তখন বড় যুদ্ধ সংঘটিত হবে এবং কুকুর বেঁধে রাখার মত করে তাদেরকে বেঁধে রাখা হবে এবং এক গোত্র আরেক গোত্রের উপর আক্রমণ করবে। দ্বন্দ্ব এতটাই প্রকট হবে যে পা রক্তের নদীর মধ্যে গেঁথে যাবে। (আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ৩৫)

প্রথম বর্ণনাতে উল্লেখিত “যে বছর ইমাম মেহদী আবির্ভূত হবেন” কথাটি একটি ধ্বংসযজ্ঞের ঘটনার দিকে ইঙ্গিত প্রদান করে যা ইমাম মেহদীর আবির্ভাবের বছর সংঘটিত হবে। ২০শে নভেম্বর ১৯৭৯ সাল যেটি ঘটনাক্রমে ১৪০০ হিজরির হজ্জ মৌসুমের প্রথম দিন, সেদিন হাদিসের বর্ণনা মত একটি রক্তাত্ত ধ্বংসযজ্ঞ সূচিত হয় কাবা শরীফের ভেতর। মিলিশিয়া এবং সৌদি বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে ৩০ জনের মত মানুষের প্রানহানী হয় এবং হাদিসের বর্ণনা মত রক্তের নদী প্রবাহিত হয়।এই আক্রমনের ৭ বছর পরে আরও রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটে কাবা শরীফের পার্শ্ববর্তী এলাকায়। ১৪০৭ হিজরি সনে প্রায় ৪০২ জনের মত মানুষের প্রানহানী ঘটে। যা হাদিসের বর্ণনার সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।
http://en.wikipedia.org/wiki/Grand_Mosque_Seizure
http://en.wikipedia.org/wiki/1987_Mecca_incident
http://www.nytimes.com/1987/08/02/world/400-die-iranian-marchers-battle-saudi-police-mecca-embassies-smashed-teheran.html?pagewanted=all&src=pm

ইমাম মেহেদীর অপেক্ষায়ঃব্যক্তি স্বার্থে ধর্মের ব্যবহার।

যখন জ্ঞানী ব্যক্তিরা তাদের জ্ঞান ধনসম্পদের সাথে বিনিময় করবে......... যখন তারা ধর্মকে পার্থিব লাভের জন্য বিক্রয় করবে ............ যখন তারা আইন কানুন বিক্রয় করে............ তখন শেষ দিবস আসন্ন হবে (আশ-শারানি, মুখতাসার তাযকিরাহ আল কুরতুবি পৃঃ ৪৮০)

শেষ সময়ে এমন ব্যক্তিদের উদ্ভব ঘটবে যারা পার্থিব মুনাফার জন্য ধর্মকে পণ্য বানাবে। (তিরমিযি, যুধ,পৃঃ৬০)

এর উদাহরণের জন্য আমাদের খুব বেশি দূর যেতে হবে না। আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে এই শ্রেণীর মানুষের কোন কমতি নেই যারা সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় আবেগকে পূঁজি করে সম্পদের পাহাড় গড়ছে।



ইমাম মেহেদীর অপেক্ষায়ঃভণ্ড নবীদের উদ্ভব

ইমাম মেহেদীর আত্মপ্রকাশের পূর্বে নবী দাবীকারী ভণ্ডদের প্রকোপ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু পবিত্র কোরআনের সুরা আযহাবের ৪০ নম্বর আয়াতে হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) শেষ নবী এই ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে।

শেষ দিবস ততক্ষণ আসবেনা যতক্ষণ না পর্যন্ত ত্রিশজনের মত মিথ্যুকের আবির্ভাব হবে যারা সকলেই নিজেদেরকে আল্লাহ্‌র বার্তাবাহক হিসাবে দাবী করবে (মুসলিম, কিতাবুল ফিতনা পৃঃ ৪৩; সুনান আবু দাউদ)
নিচের লিংকে এর উদাহরণ আছে। এছাড়া আমাদের উপমহাদেশে একজন বিখ্যাত নবী দাবীকারী ব্যক্তি আমাদের সবার পরিচিত গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী।



হযরত আবু হুরায়রাহ(রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে রাসুলুল্লাহ(সঃ) বলেছেন “মহান আল্লাহ্‌ এই উম্মতের জন্য প্রতি শতাব্দীর শুরুতে একজন মুজাদ্দিদ পাঠাবেন যিনি ঐ সময়ে ইসলামের প্রকৃত শিক্ষাকে সঞ্চারিত করবেন” (সুনান আবু দাউদ ৫/১০০)
ইমাম মেহেদী যে শেষ সময়ের মুজাদ্দিদ এই বিষয়ে সুস্পষ্ট হাদিস বর্ণিত আছে ।
হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসুল (সঃ) বলেছেন,
“এই পৃথিবীর যদি মাত্র একদিন বাকি থাকে আল্লাহ্‌ সেই দিনটিকে প্রলম্বিত করে দিবেন যতক্ষন না আমার বংশধরের থেকে একজন প্রেরিত হয়।”
(সুনান আবু দাউদ, ৫/৯২)
ইমাম মেহেদীর আগমন সংক্রান্ত যেসব আলামত হাদিসে বর্ণিত আছে তা এই হিজরি শতাব্দীতে (১৪০০) এমনভাবে প্রকাশিত হচ্ছে যেমনভাবে একটি পুঁথির মালা ছিড়ে গেলে পুঁথিগুলো পরপর পড়তে থাকে। সেই হিসাবে এটা বলাই যায় যে ইমাম মেহেদী এই এই হিজরি শতকে আত্মপ্রকাশ করবেন। বর্তমান সময়ে তুরুস্কের লেখক হারুন ইয়াহিয়া এই বিষয়টিকে পবিত্র কোরআন এবং সহীহ হাদিসের আলোকে তুলে ধরেছেন। তার লেখার বাংলা অনুবাদ সেভাবে করা হয়নি। সম্মানিত পাঠকদেরকে এই বিষয়ে জানাবার প্রয়াস থেকে এই উদ্যোগ। আমরা ইতিপূর্বে আমাদের আগের পোস্টগুলোতে ইমাম মেহেদী আসার ব্যাপারে ধর্মীয় আলামতগুলো প্রকাশ করেছি যা নিচের লিংকে পাওয়া যাবে। এই পোস্টে ইমাম মেহেদী আসা বিষয়ক মহাজাগতিক আলামতগুলোর মধ্যে দুটি তুলে ধরেছি প্রয়োজনীয় রেফারেন্সসহ। পরবর্তীতে বাকিগুলো দেওয়া হবে ইনশাআল্লাহ্‌।

মহাজাগতিক আলামত
1.রমজান মাসে চন্দ্র এ বংসূর্য গ্রহনহওয়া।
2.ধূমকেতুর উদ্ভব।
3.পূর্ব দিগন্তে আলোক ঝলকানি।
4.দুই লেজ বিশিষ্ট ধূমকেতুর আগমন।
5.মহাকাশে হাতের আকৃতির উদ্ভব।
6.সূর্যে আলামতের প্রকাশ।

ইমাম মেহেদীর অপেক্ষায়ঃ রমজান মাসে চন্দ্র এবং সূর্য গ্রহন হওয়া।
“ইমাম মেহেদী আসার দুইটা নিদর্শন...... রমজানের প্রথম রাতে চন্দ্রগ্রহন এবং দ্বিতীয়টা হোলো এই মাসের মধ্যবর্তী সময়ে সূর্যগ্রহন।”
(ইবনে হাযার আল হাইতামী, আল- কাওয়াল আল মুখতাসার ফি আলামাত আল মেহদী আল মুন্তাধার, পৃঃ ৪৯)
(মুহাম্মাদ ইবনে আবদ আল – রাসুল বারযানজি, আল – ইশাআহ লি আসরাত আস সা’আহ, পৃঃ ১৯৯)
“ইমাম মেহেদীর আমলে রমজানের মধ্যবর্তী সময়ে সূর্যগ্রহন হবে এবং মাসের শুরুতে চন্দ্র অন্ধকারাচ্ছন্ন হবে।”
(ইমাম রাব্বানী, লেটারস অব রাব্বানী, ২:১১৬৩)।
“রমজান মাসের মধ্যে হবে সূর্যগ্রহন এবং শেষে হবে চন্দ্রগ্রহন।”
(আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ৩৮)।
“হযরত মেহেদী আসার পূর্বে রমজান মাসে দুইটি চন্দ্রগ্রহন হবে।”
(মুহাম্মাদ ইবনে আবদ আল – রাসুল বারযানজি, আল – ইশাআহ লি আসরাত আস সা’আহ, পৃঃ ২০০)
“ইমাম মেহেদীর আগমনের আগে রমজান মাসে দুইটি সূর্যগ্রহন হবে।”
(আস-সারানী, মুখতাসার তাযকিরাহ আল-কুরতুবি, পৃঃ ৪৪০)
এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল রমজান মাসের মধ্যবর্তী সময়ে সূর্যগ্রহন এবং একই মাসে দুইবারকরেচন্দ্রগ্রহন ও সূর্যগ্রহন; যা স্বাভাবিক অবস্থায় হয় না।যাইহোক অন্যান্য আলামতগুলো কিছু নির্দিষ্ট কারণে হয় এবং সেগুলোর ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব।

একটু মনোযোগ দিয়ে খেয়াল করলে দেখা যায় উপরোক্ত ঘটনার ব্যাপারে হাদিসগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন বর্ণনা আছে। প্রথম দুইটি হাদিসের বর্ণনা অনুসারে রমজান মাসের প্রথম দিনে চন্দ্রগ্রহন হবে এবং তৃতীয়টি অনুসারে মাসের শেষে চন্দ্রগ্রহন হবে। এক্ষেত্রে ব্যাখ্যার সঠিক পথটি হোলো এই হাদিসগুলো থেকে সাদৃশ্যগুলো অনুধাবন করা।
উপরে বর্ণিত হাদিসগুলো থেকে যে বিষয়গুলো পরিস্কার হয় সেগুলো হচ্ছে
রমজান মাসে চন্দ্র এবং সূর্য গ্রহন হবে।
এই গ্রহনগুলোর মধ্যবর্তী সময় সমান হবে (১৪-১৫ দিনের ব্যবধান)।
এই গ্রহনগুলো দুইবার পুনরাবৃত্তি হবে।

এই হিসাবের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করলে দেখা যায়.........
১৫ রমজান শুক্রবার ১৪০১ হিজরি ইংরেজি ১৭ জুলাই ১৯৮১ সালে চন্দ্রগ্রহন হয়েছিল।
http://en.wikipedia.org/wiki/July_1981_lunar_eclipse
http://habibur.com/hijri/1401/9/
২৯ রমজান শুক্রবার ১৪০১ হিজরি ইংরেজি ৩১ জুলাই ১৯৮১ সালে সূর্যগ্রহন হয়েছিল।
http://en.wikipedia.org/wiki/Solar_eclipse_of_July_31,_1981
http://habibur.com/hijri/1401/9/
১৫ রমজান মঙ্গলবার ১৪০২ হিজরি ইংরেজি ৬ জুলাই ১৯৮২ সালে আবার চন্দ্রগ্রহন হয়েছিল।
http://en.wikipedia.org/wiki/July_1982_lunar_eclipse
http://habibur.com/hijri/1402/9/
২৯ রমজান মঙ্গলবার ১৪০২ হিজরি ইংরেজি ২০ জুলাই ১৯৮২ সালে পুনরায় সূর্যগ্রহন হয়েছিল।
http://en.wikipedia.org/wiki/Solar_eclipse_of_July_20,_1982
http://habibur.com/hijri/1402/9/
হাদিসে বর্ণিত অন্যান্য আলামতের মত উপরোক্ত ঘটনাগুলোও অলৌকিকভাবে হিজরি ১৪০০ সালের শুরুর দিকে পরপর ২ বৎসর (১৪০১, ১৪০২) সংগঠিত হয় যা ইমাম মেহেদীর আগমনের ব্যাপারে ইঙ্গিতপূর্ণ।

ধূমকেতুর উদ্ভব।
“উজ্জ্বল লেজ সমৃদ্ধ এক তারকার উদ্ভব ঘটবে ইমাম মেহেদীর আগমনের পূর্বে।”
(মুহাম্মাদ ইবনে আবদ আল – রাসুল বারযানজি, আল – ইশাআহ লি আসরাত আস সা’আহ, পৃঃ ২০০)
“তার আগমনের ক্ষণ আসন্ন হলে পূর্বাকাশে একটি আলোকবর্তিকা সদৃশ্য ধুমকেতুর আবির্ভাব হবে।”
(ইবনে হাযার আল হাইতামী, আল- কাওয়াল আল মুখতাসার ফি আলামাত আল মেহদী আল মুন্তাধার, পৃঃ ৫৩।)
“চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ শেষে ঐ তারাসদৃশ্য বস্তুর উদ্ভব হবে।”
(আল-মুত্তাকী আল হিন্দি, আল বুরহান ফি আলামাত আল মেহদী আখির আল জামানা, পৃঃ৩২)।

হাদিসের বর্ণনামত হ্যালীর ধুমকেতু হিজরি ১৪০০ সালের শুরুর দশক অর্থাৎ ১৪০৬ হিজরি ইংরেজি ১৯৮৬ সালে পৃথিবীর কাছ দিয়ে যায় এবং ঐ সালেই অন্তরীক্ষ থেকে ধুমকেতুটির খুঁটিনাটি প্রথমবারের মত পর্যবেক্ষণ করা হয়।

http://en.wikipedia.org/wiki/Halley's_Comet

হাদিসের বর্ণনানুসারে ধূমকেতুটি হবে............
উজ্জ্বল তারকাসদৃশ্য।
গমনপথ ছিল পূর্ব থেকে পশ্চিম।
চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ সংক্রান্ত আলামতটি(১৯৮১-১৯৮২) প্রকাশিতহবার পর হ্যালীর ধুমকেতুর আগমন।

ইমাম মেহেদীর আগমনের অন্যান্য আলামতের মত ১৪০০ হিজরির শুরুতে হ্যালীর ধুমকেতুর আগমন তাৎপর্যপূর্ণ। যেহেতু হাদিসের বর্ণনা অনুসারে আলামতসমূহ ১৪০০ হিজরির থেকে প্রকাশ পেতে শুরু করেছে একের পর এক যা অন্যকোন শতাব্দীতে এভাবে সংঘটিত হয়নি সেহেতু বলা যায় হাদিসে উল্লেখিত মহাজাগতিক বস্তুটি বস্তুতুই হ্যালীর ধুমকেতু এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

এখন প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে হ্যালীর ধুমকেতু প্রতি ৭৬ বছর পর পর আসে এতে অসাধারণত্বের কি আছে?
এই সিরিজের শুরুতেই বলা হয়েছিল আল্লাহর আসলে চোখে আঙ্গুল দিয়ে নিদর্শন প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই, আমাদের নিত্যদিনের স্বাভাবিক ঘটনাবলীর মধ্যেই নিদর্শন আছে শুধু প্রয়োজন মনোযোগ দিয়ে খোঁজ করা। যারা বিশ্বাস নিয়ে নিদর্শনসমুহের খোঁজ করে তাদের সামনে নিদর্শনসমূহ প্রতীয়মান হয় কিন্তু যারা সন্দেহবাদী তারা সব সময়ই গোমরাহির মধ্যে থাকে। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত আছে
“নিশ্চয়, এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।”
সুরাঃ আশ-শুয়াআরা, আয়াতঃ ১০৩
“বিশ্বাসকারীদের জন্যে পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে,”
সুরাঃ আদ-দারিয়াত, আয়াতঃ ২০


হ্যালীর ধুমকেতু সম্পর্কিত কিছু চমক জাগানিয়া তথ্য
• আশ্চর্যজনকভাবে হ্যালীর ধুমকেতুর সাথে সম্পর্কিত কিছু সংখ্যা ১৯ এর গুনিতক। যেমন হ্যালীর ধুমকেতু প্রতি ৭৬ বছর পর পর আসে, (১৯x ৪=৭৬)।
• এটা শেষবার দেখা গিয়েছে ১৪০৬ হিজরিতে, (১৯ x ৭৪=১৪০৬)।
• নবী (সঃ) নবুয়াত লাভের পর এটা হ্যালীর ধুমকেতুর ১৯ তম বার আগমন।
১৯ সংখ্যার বিশেষত্বের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনের সুরা মুদাসসের (সুরা নং-৭৪) ৩০ নং আয়াতে বর্ণিত আছে।



মূলঃ হারুন ইয়াহিয়া
পোষ্টটি সংবদ্ধ করেছেন মেহেদী হাসান নামে একজন। কিন্তু আমি উনার ইউআরএল টা হারিয়ে ফেলেছি। উনার কাছে তাই আগ থেকেই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে রাখছি।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৪৪

আশ্রাফ বাংলা বলেছেন: সুন্দর বিশ্লেষণ !

২| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৫০

কলাবাগান১ বলেছেন: এটা ২০১৬ সাল!!!!!

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৭

গারোপাহাড় বলেছেন: সামনে আরো কিছু লিখবো। আরো কিছু রহস্য রয়ে গেছে!!

৩| ১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:১২

সাহরাব বলেছেন: ভাই ! অবিস্বাসীদের কথা কানে না নিয়ে আপনি চালিয়ে যান ! ভালোর শত্রু সবসময় থাকবেই, তাই বলে থেমে থাকা যাবেনা। আল্লাহ আপনাকে শত্রুদের বাজে উক্তি সহ্য করার শক্তি দান করুক। আমিন। .

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.