নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গেটওয়ে হলিডেজ লিমিটেড

গেটওয়ে হলিডেজ লিমিটেড › বিস্তারিত পোস্টঃ

সোনা দিয়ে ঢাকা সোনামার্গের পথে পথে

২১ শে আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:২০


সোনামার্গে পৌঁছে অন্যদের কী অনুভূতি হয়েছে আমি জানি না, সেই খবর নেবার সময় বা মানসিকতা আমার ছিল না। কারণ আমি ছিলাম দিশেহারা, বাকরুদ্ধ আর উন্মাদ প্রায়! কেননা গাড়ি থেকে আমি বুঝতে পারছিলাম না যে কোন দিকে যাবো আর কোন দিকে তাকাবো? হাঁটবো, বসবো নাকি ছবি তুলবো? অদ্ভুত প্রাকৃতিক সাজে সেজে আছে সোনামার্গ। চারদিক যেন সোনা দিয়ে মোড়ানো!



এতটাই দুর্লভ আর দুর্দান্ত তার সবকিছু। সোনামার্গের অদ্ভুত সুন্দর সব কটেজগুলো। কটেজের দারুণ নান্দনিক সব পাইন কাঠের বারান্দা, সব কটেজের সবগুলো রুম বা বারান্দা দিয়ে আপনি অপলক তাকিয়ে থাকতে পারবে সামনে ঠাঁই দাড়িয়ে থাকা পাহাড়গুলোর দিকে। অথবা কান না পেতেও অবিরত শুনতে পারবেন নিজের সুরে গেয়ে যাওয়া আর পথ চলা সিন্ধুর গান, কলকল ধ্বনি বা উচ্ছ্বসিত মূর্ছনা।



কোথায় তাকাবেন আপনি? আপনার কটেজের পিছনে সবুজ পাহাড়ে? ভালো লাগছে না সবুজ পাহাড়? তবে সামনে তাকান। সেখানে সারাক্ষণ আপনাকে সঙ্গ দেবে বরফে মোড়া পাহাড়। একটি নয়, দুটি, তিনটি, চারটি? আসলে আপনি কয়টি চান? সামনে থেকে পেছনে যতদূর চোখ দেবেন দেখবেন শুধু পাহাড় আর পাহাড়! খোলা চত্বর থেকে যতদুর চোখ যাবে শুধু পাহাড়, পাহাড় আর পাহাড়। যেন পাহাড়ের হাট বসে সোনামার্গে।

একদম চারপাশে নানা আকার আকৃতি আর এক-এক সময় এক এক রঙে সেজে থাকা পাহাড়ের মাঝে এক সমতল ভ্যালীতে আছেন আপনি। ছোট, বড়, মাঝারি নানা ধরনের, রঙের, মানের আর দামের অনেক অনেক কটেজ আছে এখানে আপনার সাধ আর সাধ্যের মধ্যে। ৮০০ থেকে শুরু করে ৮,০০০ রূপি পর্যন্ত দিন প্রতি।



আর বিকেল বা সন্ধ্যার সোনামার্গ তো সত্যি সত্যি সোনায় মোড়ানো থাকে। সবুজ পাহাড়ে শেষ সূর্যের আলো পড়ে হলুদ একটা রঙ ধারণ করে। মেঘ আর কুয়াশার মাঝ দিয়ে উঁকিঝুঁকি দেয়া রোদের ঝিলিক নানা রঙের খেলায় যেন মেতে ওঠে পাহাড়ে, পানিতে, ঘাসে আর দূরের অরণ্যে। ঘোড়ারা আনমনে হেঁটে বেড়ায়, ঘাস খায়, এখানে-ওখানে ছুটে বেড়ায় কাউকে সওয়ারি করে।



আর একটু দূরে তাকালেই মিলবে বরফ পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায় সূর্যের সাথে আলোর লুকোচুরি খেলা! একের পর এক আর অনবরত রঙ বদলের এক পাগলামি খেলায় যেন মেতে ওঠে বরফ চূড়া আর সূর্যের মায়াবী বন্ধন! সৃষ্টি করে পার্থিবতায় এক অপার্থিব জগৎ। কখনো তারা লাল হয়, কখনো গোলাপি, এক পাশে বেশি আলোতে হলুদ হয়তো অন্য পাশে মৃদু আলোতে বেগুনী! আর সূর্য ডুবে যাবার আগে আগে পুরো বরফ পাহাড়গুলো যেন হয়ে ওঠে এক একটা সোনালি বা সোনার পাহাড়! পুরো ভ্যালী জুড়ে একটা সোনালি আভা খেলা করে যায়, আঁধারে ঢেকে যাবার পূর্ব পর্যন্ত!

সে এক অদ্ভুত সময়, অদ্ভুত পৃথিবীর মাঝে যে আমাদের ক্ষণিকের আশ্রয়। এই সময়টুকু শুধু চুপচাপ বসে বসে উপভোগেই যেন সঠিক তৃপ্তি মেলে। তবে চাইলেই সেই তৃপ্তি আপনাকে তৃপ্তি দিতে পারবে না, এক দিকে তাকিয়ে থাকবেন তো আর একদিক আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকবে ওদিকে তাকাতে। ভ্যালীর সবুজ গালিচায় বসে আছেন? ইচ্ছে হবে একটু নিচের কটেজগুলোর ফোয়ারার কাছে যেতে। বেতের চেয়ারে বসে আছেন? ইচ্ছে হবে খালি পায়ে একটু শিশির ভেজা ঘাসে হেঁটে বেড়াতে!



সোনামার্গে আপনার ইচ্ছেগুলোর কোনো শেষ হবে না। একটা পূরণ করবেন তো আর একটা করতে ইচ্ছা করবে। একটা পাবেন তো আর একটা পেতে চাইবেন। একটা দেখে খুশি হয়েছেন, তো আর একটা দেখে আর একটু বেশি খুশি হতে চাইবেন! এখানে চাওয়া-পাওয়া, ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা, সাধ পূরণের কোনো সীমারেখা নেই, আপনি করতে পারবেন না চাইলেও।

ঠিক যেমন সাধ্য থাকুক বা নাই থাকুক, আমাদের রমণীদের যেমন সোনার সাধ কখনো মেটে না, ঠিক তেমনি। আজ ছোট চুড়ি তো কাল অনন্ত বালা। কালকে চিকন চেন? তো পরশু জড়োয়া। তারপর টিকলি তো আর কিছুদিন পর সোনার চাবির ছড়া। একদিন বাজু তো অন্যদিন কোমর বন্ধ! আমাদের যেমন সোনার ক্ষেত্রে চাওয়া-পাওয়ার কোনো শেষ বা সীমারেখা নেই, ঠিক তেমনই সোনামার্গেও আপনার চাওয়া-পাওয়া আর ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষার কোনো শেষ থাকবে না। হবে কী করে? সোনামার্গ যে সত্যি সত্যি সোনায় মোড়ানো!



আর সোনা চাওয়ার কি কোনো শেষ আছে বলুন? তাই সোনামার্গের কাছেও পাওয়ার কোনো শেষ নেই! সোনামার্গ সত্যিই সোনায় মোড়ানো।



কতটা সত্য বা মিথ্যা বললাম সেটা নিজে না গিয়ে, না দেখে, অনুভব না করে কিছুতেই প্রমাণ করতে পারবেন না। তাই সময়, সুযোগ আর সাধ্য মিলে গেলে একবার না হয় ঘুরেই আসুন, ভূস্বর্গ কাশ্মীরের সোনায় মোড়ানো সেই সোনামার্গে।

ওয়েবসাইট
ওয়েবাইট


সুত্র- ট্রিপ জোন

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.