নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\'আপনারে দীপ করে জ্বালো\' (\'অত্তদীপ ভব\')

গৌতমী সাময়িকী

নীড় ছাড়ার গন্ধ শরীরে যার!

গৌতমী সাময়িকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভিক্ষুণীসঙ্ঘের জয় হউক: সুমা বড়ুয়া

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:৪১



অনেক বাধাবিঘ্ন পার হয়ে বাংলাদেশ শ্রামণীসঙ্ঘ ভিক্ষুণীসঙ্ঘে রুপ লাভ করেছে। পূজনীয় ভিক্ষুণী গৌতমী’র সাহসী পদক্ষেপ তথা ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এটা সম্ভবপর হয়েছে। ভিক্ষুণীসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠায় কেমন আমার অনুভূতি তা শব্দের মধ্যে প্রতিফলন ঘটানো সম্ভব নয়। হাজার বছরের বাঙলার ইতিহাসে বৌদ্ধ ধর্ম রয়েছে বটে। কিন্তু প্রকৃত বৌদ্ধ ধর্মের চর্চা আমরা কতটুকু করতে পেরেছি তা নিজের কাছেই প্রশ্নাতীত। আমি মনে করি ভিক্ষুণীসঙ্ঘ বাংলাদেশে শুধু নাম সর্বস্ব সংঘ প্রতিষ্ঠা নয়। বাংলাদেশে ভিক্ষুণীসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রেক্ষিতে পুর্ণাঙ্গ ও প্রকৃত বৌদ্ধ ধর্মের চর্চা বেগবান হবে।

বর্তমান শ্রামণী এবং ভিক্ষুণীরা আবেগে বশবর্তী হয়ে নয় বরং ওনাদের মুক্তচিন্তা ও প্রকৃত জ্ঞান এমন সাহসী পদক্ষেপের ভিত্তি। মুক্তমনা আমরা কথায় কথায় বলে থাকি। কিন্তু আমাদের আচরণ বা কার্যাদির বাস্তব প্রয়োগই প্রমান করে আমরা স্ব-অবস্থানে থেকে কতটুকু মুক্তমনা। আমাদের প্রতক্ষ্য অভিজ্ঞতা বলে- সংঘের এই নারীরা মানব সমাজের সামগ্রিক মঙ্গলের জন্যই এসেছেন। আর কেউ কেউ বলছেন ওনারা ধর্ম শেষ করতে এসেছেন। আমার বোধগম্য হয় না ধর্ম কিভাবে শেষ করে?

প্রতীত্যসমুৎপাদনীতি কি শেষ করা যায়, না আর্য অষ্টাঙ্গিকমার্গ শেষ করা যায়? ভিক্ষুণী বা শ্রামণীসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠায় ওনাদের বলিষ্ঠ পদক্ষেপকে আরো জোড়ালো ও শক্ত ভিত্তি দিতে যেখানে আমাদের হাতে হাত রেখে ওনাদের পাশে থাকা উচিৎ সেখানে কেউ কেউ খুবই উৎসাহ ও আন্তরিকতার সাথে চেষ্টা করছেন বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরিতে। কোথায় আমাদের মৈত্রী, করুণা, মুদিতা, উপেক্ষা নির্ভর ধর্ম মানবিকতা? নিজেদের প্রতি নুন্যতম লজ্জ্বাবোধ কি আসে না?

সত্যি বলতে আমরা ‘নারীতে’ অবরুদ্ধ হয়ে যাই। পুরুষ-নারীতে আমাদের সকল চিন্তা রোধ হয়ে যায়। আমরা শুধু লৈঙ্গিক-চিহ্ন বিবেচনা করি। কিন্তু বুদ্ধজ্ঞানে নরনারী আলাদা বিবেচিত হয় না, মানুষ কোন লৈঙ্গিক শব্দ নয়, বুদ্ধ সবাইকে পঞ্চস্কন্ধের মানুষজ্ঞানই করতেন। সে কথা কেনো ভুলে যাই?

শ্রামণী ও ভিক্ষুণীরা মানবতাবাদী মুক্তচিন্তার অধিকারী। বুদ্ধকে এবং তার প্রচারিত ধর্মকে বিভিন্ন কালের মানুষ তাদের ইচ্ছেমত কল্পনা করে মনগড়া কল্পকাহিনী তৈরি করেছে- এসব কল্পকাহিনীকে অনেকে বুদ্ধের শিক্ষা মনে করে ভ্রান্ত হচ্ছে। প্রাজ্ঞ ভিক্ষু-ভিক্ষুণী সমাজে বিদ্যমান থাকলে এমনটা হতো না, তাদের মাধ্যমে আমরা অলোভ-অদ্বেষ-অমোহের শিক্ষা যথাযথভাবে পেতে পারতাম।

আমি মনে করি বুদ্ধের প্রচারিত ধর্মের অধিকার পাবার জন্য ধর্ম-দেশ-ভাষা-লিঙ্গ-কাল অন্তরায় নয়। তাই মানবতাকে প্রথম ও প্রধানতম স্থান দিয়ে আমাদের এগিয়ে চলা উচিৎ। বুদ্ধ এভাবেই মানুষ থেকে মানুষে বেঁচে থাকবেন- অন্যথায় জিজ্ঞাসু মনে প্রশ্ন থেকে যাবে আমরা সকল প্রানীর হিত সাধনে আন্তরিক হয়ে বুদ্ধের নীতি প্রতিপালন করছি কিনা।

নরনারী নির্বিশেষে মাঙ্গলিক মানব সমাজ প্রতিষ্ঠা হউক
ভিক্ষুণী সংঘের জয় হউক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.