নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মোদি ভক্ত ! এটা জেনে আপনি দুঃখ পেলে আমি আনন্দিত হব।

গেছো দাদা

গেছো দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্যরচনা :চুল ও আমার বৌ

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:১৮

চুল উঠে টাক পড়ে যাওয়ার মতো দুঃখের কিছু নেই। আমার এক ফান্টুস পিসতুতো দাদার যুবা বয়েসেই হঠাৎ করে খুব চুল ওঠা শুরু হল। দাদা প্রতিদিন চিরুনিতে বিচ্যুত চুলের গুচ্ছ দেখে আর স্টেশনারি দোকানে দৌড়ায়। হেয়ার টনিক, হেয়ার ভাইটালাইজার, হেয়ার সেরাম ইত্যাদি কিনে আনে। শেষে এমন হল, দাদা মেঝেতে শুতো আর সারা বিছানা টেবিল সর্বত্র অ্যান্টি হেয়ারফল প্রোডাক্টে ভর্তি হয়ে থাকত। তবুও চুল পড়া আটকানো যায়নি। দাদার শেষ চুলটা যেদিন পড়ে গেল, খবরটা পেয়ে পাড়ার কোনও কোনও স্টেশনারি-কসমেটিক্স দোকানদাররা নাকি কান্নাকাটিও করেছিল। কে আর কিনবে ডজন ডজন হেয়ার প্রোডাক্ট!
.
কথা হল চুল পড়ে যাওয়া টেকো রূপ আয়নায় দেখা যেমন কষ্ট, আবার সেই চুল খাবারে দেখতে পাওয়াও কম কষ্টের না। আর ভাগ্যের পরিহাসে খাবারে চুল থাকার ঘটনা আমার সঙ্গেই সবচেয়ে বেশি ঘটে যদিও আমি অনেক ভেবেও তার যুক্তিগ্রাহ্য কারণ বের করতে পারিনি।
ভাল বড় হোটেল থেকে শুরু করে ঘর, নেমন্তন্ন-বাড়ি, সর্বত্র আমার খাবারে চুল থাকাটা অতি স্বাভাবিক ঘটনা বলে সবাই এখন মেনে নিয়েছে।
.
কলকাতায় এক বড় হোটেলেও বিস্মিত হয়ে দেখেছি আমার চিকেন কষায় একটি সুদীর্ঘ চুল। হোটেলের বয়কে ডেকে বলতে সে উত্তর দিল, "তাহলে এই মাত্র পড়েছে। আমাদের খাবারে কখনও চুল পড়ার কমপ্লেন কেউ করেনি।"
বলে খুব অর্থপূর্ণ দৃষ্টিতে আমার বউয়ের চুলের দিকে তাকাল।
আমি বললাম, "ভাই মাংসের দু-পিস পুরো চুল দিয়ে সাত পাকে না হলেও তিন পাকে বাঁধা আছে। এটা এইমাত্রর গল্প নয়।"
বয় ভাল করে দেখে বলল, "আচ্ছা পাল্টে দিচ্ছি।"
.
ধুলাগড়ের এক হোটেলে পনিরের তরকারিতে চুল পেলাম। এক ম্যানেজার গোছের কাউকে বললাম। তিনি চুলটা তুলে দেখাতে বললেন এবং অতীব সুক্ষ্ণ ভাবে নিরীক্ষণ করলেন(মাঝে এদিক-ওদিক এমন ভাবে তাকালেন, আমার মনে হল একটা ম্যাগনিফাইং গ্লাস খুঁজছেন)। যাইহোক শেষপর্যন্ত তিনি এই সিদ্ধান্তে এলেন, "সাইজে লম্বা আছে, এ লেডিজ চুল না হয়ে যায় না। লেডিজ চুল মানে কোনও কাস্টমারের। কারণ আমাদের সব জেন্টস স্টাফ।"
আমি কোনও উত্তর দিতে পারলাম না। সত্যি তো কাস্টমারের চুল হলে হোটেল কেন দায়িত্ব নেবে! আর চুলের আয়তন (দৈর্ঘ্য ও ঘনত্ব) নিয়ে আলোচনা করলে সেটা অশ্লীলতার দিকে চলে যেতে পারে ভেবে পনির বাদ দিয়েই খেয়ে নিলাম।
.
আগেকার দিনে খাদ্যে চুল থাকা জঘন্য অপরাধ বলে গণ্য হত। তখনকার দিনের পুরুষ মানে এক এক পিস কেশর ফোলানো সিংহ। সে সময় খাবারে চুল পাওয়া গেলে পুরো থালার খাবার মায় বাটির তরকারি পর্যন্ত বদলাতে হতো। শুনেছি একবার ভাতে একসাথে দুটো চুল পাওয়া গেছিল বলে আমার মেজো জ্যাঠামশাই, একটা জলের গ্লাস, দুটো ফুলদানি, একটা টেবিল ল্যাম্প ও একটা ট্রানজিস্টার রেডিও ভেঙেছিলেন। চারজন মিলে জ্যাঠাকে থামিয়েছিল। না থামালে উনি কাঁচের আলমারিটাই উল্টে দিতেন, যার মধ্যে প্রচুর কাঁচের প্লেট-টেট ছিল। ওটাই ছিল আমার বাড়ির ইতিহাসে খাবারে চুল থাকার জন্য ভাঙা-ভাঙির রেকর্ড। অ্যাকশানের সময় উনি নাকি গর্জন করছিলেন, এই বলে, "শালা হেয়ার অ্যান্ড দেয়ার অনলি হেয়ার অ্যান্ড হেয়ার!"
.
এখন দিনকাল অন্যরকম।
ঘরে খেতে বসে প্রায়শই চুল পাওয়া যায় খাবারে। এই আজই যেমন। লাবড়া বা ঘ্যাঁটে (যাকে আজকাল বিয়ে বাড়ির মেনু কার্ডে নবরত্ন কারি লেখা হয়) চুল পেলাম, যেটা কুঁদরি হয়ে পটলকে জড়িয়ে কুমড়োতে পাক খেয়ে আলুকে গিয়ে আলিঙ্গন করছে।
চুলের দৈর্ঘ্যের দিকে ইঙ্গিত করে বউকে বলতে বউ উত্তর দিল, "আমার একটা চুল যদি তরকারিতে পড়েই থাকে তাতে অত তুলে দেখানোর কী আছে? ফেলে দিয়ে খেয়ে নাও। আমার চুলে তোমার চুলের মতো খুশকি নেই। রীতিমতো পরিষ্কার থাকে, তিনদিন ছাড়া শ্যাম্পু দিই, কন্ডিশনার দিই, বাজাজ অ্যামন্ড মাখি রোজ, বুঝলে?"
আমি বুঝে যাই... !!!

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৪৬

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: চুল না থাকলে জীবনটাই ষোলো আনা মিছে দাদা | তন্বী সুন্দরীরা কোনো টাকলুর দিকে ফিরেও তাকায় না | =p~

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:২৯

গেছো দাদা বলেছেন: হুমম

২| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:০১

রাজীব নুর বলেছেন: মাথার সৈনিক হলো চুল।
সৈনিকের পতন কেউ চায় না।

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:৫০

গেছো দাদা বলেছেন: কিন্তু লোকে যে বলে.... "টাক পরলে টাকা হয়" !!

৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:১৮

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অনিন্দ্য সুন্দর লেখনী ।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫৩

গেছো দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ। ভালো থাকুন।

৪| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ ভোর ৫:৫৫

মা.হাসান বলেছেন: যারা বিয়ে করেন নি তাদের জন্য উপদেশ- বউয়ের হাতের রান্না খাবার শখ থাকলে টেকো মেয়ে বিয়ে করুন।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৩৩

গেছো দাদা বলেছেন: কাম সারসে !!

৫| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৫৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বুদ্ধিমান ভদ্রলোক কখনোই বউয়ের
বিপক্ষে দাড়ায় না।।।
চোখ আছে বলেই সব কিছু
চোখে পড়তে হবে? চোখ বুজে
খেয়ে নিন, স্যাম্পু করা চুল
অ-সাস্থ্যকর হবে না!!

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ২:২৫

গেছো দাদা বলেছেন: হক কতা, ভাইজান !!

৬| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

দাদা এটা আপনার বউ !!! :P
অনুমতি দিলে তার সব চুল
নাক বুজে খেযে নিবো টু-শব্দটিও
করবোনা !! =p~

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:০৫

গেছো দাদা বলেছেন: শুধু চুল ? আর কিছু নয়তো ??

৭| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:১২

সুপারডুপার বলেছেন:



হুজুরের কী লালসা ! হুজুর আরো একটা বিয়ে করে তার সব চুল নাক বুজে খেযে নিয়েন। ইসলাম যেহেতু না করে নাই , লাগলে যত গুলো ইচ্ছা বিয়ে করেন, তাও অন্যের বউয়ের দিকে নজর দিয়েন না। একাধিক বিয়ে করার টেকা না থাকলে, কলিজু হুজুর ওরফে দেইল্যা রাজাকারের কাছে থেকে টিপস ও নিতে পারেন।

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:১৩

গেছো দাদা বলেছেন: হা হা হা । লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু ।

৮| ১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৮:২৬

ক্ষুদ্র খাদেম বলেছেন: দাদা জব্বর লেখা B-) B-))

আপনার সাথে আমার বাপজানের কিঞ্চিত মিল-মহাব্বত আছে বৈকি! উনার পাতেও সবসময়েই আমাদের অন্য সকলের ভাগের চুলসহ গিয়ে পড়ে /:)

১৪ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১২:৫১

গেছো দাদা বলেছেন: হুমম

৯| ১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৩:৪১

এইচ তালুকদার বলেছেন: নস্টালজিক করে দিলেন ভাই।কলেজে থাকতে কেউ একজন আমার জন্য প্রায়ই নুডুলস,আলুভাজি সহ বিবিধ হাবিজাবি রান্না করে নিয়ে আসতো,কালো চুল সেই রান্নার বিশেষ মসলা বলেই ভাবতাম তখন।

১৩ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:৫০

গেছো দাদা বলেছেন: হা হা হা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.