নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার জন্য ভালোবাসা।

গেছো দাদা

গেছো দাদা › বিস্তারিত পোস্টঃ

রম্য : আমার বস ও বেড়ালের হাগু

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৩৫

সকালবেলায় আমার অফিসের বস আমার বাড়িতে এসে একটা নরম তুলতুলে বেড়াল আমার কোলে তুলে দিয়ে বললেন, "তিনদিন একে আদর-যত্নে সামলে-সুমলে রাখুন। এটাই আপনার ওয়ার্ক ফ্রম হোম।"
.
আমি একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করি। যা জানা গেল, বেড়ালটা হল আমার বসেরও বস গুপ্তাসাহেবের অত্যন্ত আদরের বেড়াল। তাঁর স্ত্রী ডিভোর্স দিয়ে চলে যাবার পর এই বেড়ালই তাঁর স্ত্রীর শোক ভুলিয়েছে। তো গুপ্তাসাহেব তিনদিনের জন্য বাইরে গেছেন। বেড়ালের দায়িত্ব তিনি আমার বসকে দিয়েছিলেন। বিটলে বস সে দায়িত্ব আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছেন।
.
বেড়ালটা ভারী কিউট আর লক্ষ্মী। এক জায়গায় বসে থাকে আর মাঝে মাঝে মিউ করে ওঠে। বস বলে গিয়েছিলেন ওকে একটু দুধ খাইয়ে পটি করাতে। এইসময় ও দুধ খেয়ে পটি করে। একদম কড়া রুটিন।
ঘরে দুধ ছিল না। বউয়ের জিম্মায় বেড়ালকে দিয়ে বাজারে গেলাম। দুধ কিনলাম। মাছের লাল কানকো কিনলাম। কিনে ঘরে ফিরে বেড়ালকে দুধ খেতে দিলাম। চুকচুক করে খেয়ে নিল পুকু।
অমনি বসের ফোন, "দুধ খাইয়ে পটি করিয়েছেন?"
আমি বললাম, "এই মাত্র দুধ কিনে এনে খাওয়ালাম স্যার। এবার করাবো।"
বস বললেন, "নরম ঘাস আছে এইরকম জায়গায় নিয়ে গিয়ে তিনবার বলবেন, পুকু পটি কর। তাহলেই ও করবে। করলেই আমাকে হোয়াটস অ্যাপ... না না ফোনই করে দেবেন। গুপ্তাসাহেবের প্রচণ্ড প্রিয় বেড়াল, ভীষণ চিন্তায় আছেন।"
আমি 'আচ্ছা স্যার' বলে ফোন রাখলাম।
মাঠে গিয়ে ঘাসের ওপর পুকুকে নামিয়ে দিলাম। একটা মুষমুষে হুলো বেড়াল পুকুকে দেখে গোঁ গোঁ করে উঠল। আমি একটা ইট ছুঁড়ে মারতে ব্যাটা পালাল।
এরপর আমি তিনবার 'পুকু পটি কর' বললাম। পুকু এদিক ওদিক দেখছে। পটি করার নাম নেই। আবার তিনবার বললাম। নো রেসপন্স। আবার। আবার।
এইসময় ফোন বেজে উঠল। বসের ফোন। বললেন, "আপনি কিছু জানালেন না যে? পটি করেছে তো?"
আমি বললাম, "না স্যার করেনি। সাতাশ বার বলা হয়ে গেছে তাও।"
বস বললেন, "কী সাংঘাতিক! গুপ্তাসাহেব জানলে তো কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে! আচ্ছা আপনি ঠিক কী বলেছেন?"
আমি বললাম, "পুকু পটি কর।"
বস ক্ষেপে গেলেন। বললেন, "কর? না না বসের বেড়ালকে আপনার তুই তোকারি করা উচিত হয়নি।"
আমি ভয়ে ভয়ে বললাম, "তাহলে কী স্যার 'পুকু পটি করুন' বলব?"
বস বললেন, "হ্যাঁ তাই বলবেন। বসের বেড়াল তো, খুব সেন্সিটিভ! ওদিকে গুপ্তাসাহেব আবার ফোন করছে! কন্টিনিউ ফোন করেই যাচ্ছে। কী ফেচাংয়ে পড়লাম রে বাবা। আপনি এক্ষুনি আবার ট্রাই করুন।"
আমি বললাম, "আচ্ছা স্যার নাম ধরে পুকু বলব নাকি পুকু-ম্যাডাম বলব?"
বস প্রচণ্ড ব্যস্ত হয়ে বললেন, "তাই বলুন। নিন স্টার্ট, ওয়ান টু থ্রি..."
আমি বসকে শুনিয়ে জোরে জোরে বললাম, "পুকু-ম্যাডাম পটি করুন।"
বস আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন, "আরে অমন ধমক দিয়ে বলছেন কেন? এ কী আমাদের বাড়ির বেড়াল পেয়েছেন? বস গুপ্তাসাহেবের বেড়াল। আপনি খুব মোলায়েম ভাবে বলুন।"
আমি অতীব মোলায়েম হয়ে কোমল স্বরে বললাম, "পুকু-ম্যাডাম পটি করুন।"
তিনবার বলার পর বস বললেন, "এবার ভাল করে দেখুন পেছন থেকে কিছু বেরোচ্ছে কিনা। হে ভগবান রক্ষা করো। এ যাত্রা পুকুর পটি করিয়ে দাও, এক কেজি নকুলদানা দেব..... কিছু রেজাল্ট হল?"
আমি ভাল করে দেখে বললাম, "না স্যার নাথিং, হিসি পর্যন্ত নয়।"
বস চিৎকার করে উঠলেন, "হায় হায় চাকরিটা গেল বোধহয়। তবে আমার চাকরি গেলে আপনারও যাবে এটা জেনে রাখুন। একটা বেড়ালকে হাগাতে পারে না, কেলাস, গুড ফর নাথিং।"
আমি বললাম, "স্যার আমার কাছে ইসবগুলের ভুসি আছে খাইয়ে দেখব?"
বস বললেন, "যা পারেন করুন, যে ভাবে হোক পুকুকে পটি করান। বস বলেছে টাইমে পটি না করলে ডিসিপ্লিন নষ্ট হয়ে যাবে আর তাহলেই সাড়ে সর্বনাশ!"
আমি বললাম, "স্যার আপনি গুপ্তাসাহেবকে বলে দিন না পটি করে নিয়েছে। আরে আমাদেরও তো এক-আধ দিন গ্যাপ যায় নাকি। আমি ঠিক করিয়ে নেব ওকে। আর আজ না হলে কাল তো করবেই। আপনি একদম চাপ নেবেন না স্যার।"
হাঁফ ছাড়লেন বস! বললেন, "বলে দেব বলছেন গুপ্তাসাহেবকে? তাই বলে দিই। চাকরিটা বাঁচুক। আপনি কিন্তু চেষ্টা চালিয়েই যান। আর ইসবগুল, ক্রিমাফিন এইসব দরকার হলে খাইয়ে দেবেন। আচ্ছা আমি বসকে খবরটা দিই।"
.
কয়েক মিনিট পরেই আবার বসের ফোন। বললেন, "আপনার কথা শুনে গুপ্তাসাহেবকে বলতেই উনি বললেন, পটির ছবি পাঠাতে। পটির ছবি দেখে নাকি উনি বুঝতে পারবেন পুকুর হেলথ কেমন আছে। এবার কী হবে? নিন যেমন করে পারেন ছবি দিন। আমি কিছু জানি না।"
আমি বললাম, "আবার ছবি! কিন্তু স্যার পুকু তো হাগুই করেনি। তাহলে ছবি কী করে দেব?"
বস বললেন, "ওখানে আর কোনও বেড়াল নেই। সব বেড়ালের পটি নিশ্চই একই রকমের হয়! আপনি যে কোনও বেড়ালের পটির ছবি দিয়ে পাঠান।"
আমি চারিদিক খোঁজা শুরু করলাম। আমার দৃঢ় বিশ্বাস পৃথিবীতে এর আগে কেউ কখনও এভাবে বেড়ালের হাগু খোঁজেনি। কিন্তু তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোথাও দেখতে পেলাম না। এ তো মহা গেরোয় পড়া গেল! চাকরি বাঁচে কেমনে!
.
আমি ভেবে দেখলাম গুগলদাদা ছাড়া আর কেউ বাঁচাতে পারবে না। গুগল থেকে বেড়ালের হাগুর ছবি ডাউনলোড করলাম। সবুজ ঘাসের ছবি তুলে তার ওপর এডিট করে বসিয়ে দিয়ে বসকে পাঠিয়ে দিলাম...
.
.
পরিশিষ্ট - না চাকরি তো যায়ইনি উল্টে আমি আর আমার বস একটা করে স্পেশাল ইনক্রিমেন্ট পেয়েছি।
গুপ্তাসাহেব বসকে বলেছেন, "আমার কাছে জন্ম থেকে পুকু আছে কিন্তু কোনদিন এত সুন্দর হেলদি পটি করেনি, আপনাদের থ্যানক্স।"
( পটি=হাগু )

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৪০

রাজীব নুর বলেছেন: হেলদি পটি!!!!

হা হা হা----
ইনক্রিমেন্ট!!! বাহ বাহ!!!!

১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১১

গেছো দাদা বলেছেন: হেলদি পটি সুস্থতার প্রমান। সবার হেলদি পটির কামনা করি।

২| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৪২

নেওয়াজ আলি বলেছেন: চরম প্রকাশ

১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:২০

গেছো দাদা বলেছেন: হুমমমম

৩| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৪৩

অগ্নি সারথি বলেছেন: হা হা হা!

১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:২২

গেছো দাদা বলেছেন: এত হাসির কারন কিন্তু আপনার হেলদি পটি !! হাহাহাহা ...

৪| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১২:৫৩

মা.হাসান বলেছেন: যেই ছবি দেখিয়ে ইনক্রিমেন্ট পেলেন সেটা শেয়ার না করা কি ভালো হলো? B-)

১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৫৩

গেছো দাদা বলেছেন: হেলদি পটির ওই ছবি কি দেখতে ভালো লাগবে ? আই ডাউট !!

৫| ১৩ ই জুন, ২০২০ সকাল ১০:১৮

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: ভালো ঝামেলায় পরেছিলেন,বুদ্ধির জোড়ে বেঁচে গেছেন,

১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:৫৯

গেছো দাদা বলেছেন: হুমমম

৬| ১৩ ই জুন, ২০২০ সকাল ১০:২৪

পদ্মপুকুর বলেছেন: ভাগ্যিস বেড়াল কথা বলে না!

৭| ১৩ ই জুন, ২০২০ দুপুর ১:২৮

শেরজা তপন বলেছেন: বেশ মজা পেলাম :)

৮| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:২৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

লকডাউনের কােলে মেহুরের হেলদি পটি!!
দাদা বৈয়ামে ভরে রেখে দাও করোনার দাওয়াই
হিসেবে। যা তোমার ইনক্রিমেন্ট হয়েছে তার ২০গুন
লাভ হবে আমি কইয়া দিলাম।

৯| ০৯ ই জুলাই, ২০২০ রাত ১১:৪৫

Rajibrpsoft বলেছেন: হেলডি পটি ..হাহাহাহা ...দাদা আপনি পারেন ও

১০| ১৩ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ২:২৫

সন্ধ্যা রাতের ঝিঁঝিঁ বলেছেন: অনেক মজা পেলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.