নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকালে ঘুম থেকে টেনে তুলে বউ বলল, "প্রচণ্ড মাথা যন্ত্রণা করছে, একটা স্যারিডন-ট্যারিডন কিছু এনে দাও না প্লিজ।"
আমি আর একটু ঘুমানোর ধান্দায় বললাম, "এত সকালে ওষুধ দোকান খুলেছে নাকি?"
বউ বালিশে টান দিয়ে বলল, "আর এত সকাল নেই স্যার।"
অগত্যা উঠতে হল। দাঁত ব্রাশ করে, মুখে মাস্ক পরে, গায়ে জামা চড়িয়ে বেরোলাম।
.
বেরোতেই ভজহরিদা খপ করে ধরল, "কিরে কোথায় চললি?"
বললাম, "বউয়ের খুব মাথা যন্ত্রণা করছে। ওষুধ কিনতে যাচ্ছি।"
ভজহরিদা সিগারেটে লম্বা একটা টান দিল। তারপর চোখ বড় বড় করে বলল, "দাঁড়া দাঁড়া! কী বললি, মাথা যন্ত্রণা? এ তো ভাল কথা নয়। করোনা নয় তো? গলায় ব্যথা আছে নাকি জানিস? জ্বর? সবচেয়ে বড় কথা গন্ধ নিয়ে কোনও প্রবলেম নেই তো?"
ভজহরিদার কথায় আমার মাথা ঘুরে গেল! সত্যি এভাবে ভাবিনি তো? বউয়ের করোনা হয়নি তো? আমার হয়নি কারণ আমি ভজহরিদার সিগারেটের গন্ধ ভরপুর পাচ্ছি। কিন্তু বউয়ের?
ভজহরিদা বলল, "ঘরে যা। বৌমাকে কিছু না বলে কায়দা করে গন্ধের সেন্স আছে নাকি টেস্ট কর।"
.
ঘরে গিয়ে আমি মাস্ক পরেই হাতড়াতে লাগলাম। এমন কিছু যার গন্ধ বউকে শুঁকানো যাবে। পেয়েও গেলাম। গোলাপ জল। বাইরের ঘরে রাখা আছে।
এখন কিছু কেনা হলেই সেটা তিনদিনের জন্য বাইরের ঘরে রাখা হয়।
আমি অনেকটা তুলো নিয়ে এসে গোলাপ জলে ভিজিয়ে বউয়ের নাকের কাছে নিয়ে গিয়ে বললাম, "কিছু গন্ধ পাচ্ছ?"
বউ নাক-মুখ কুঁচকে বলল, "ইস্ কী বিচ্ছিরি গন্ধ!"
আমি তুলোটা বউয়ের নাকে গুঁজে বললাম, "কোনও ফুলের গন্ধ পাচ্ছ না?"
বউ এক ঝটকায় আমার হাত সরিয়ে দিয়ে বলল, "না পাচ্ছি না। বদখত একটা গন্ধ পাচ্ছি। এদিকে আমার মাথা যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে। যাও না ওষুধটা নিয়ে এসো না।"
.
আমার বুকে গুড়গুড় করে মেঘ ডেকে উঠল। ভজহরিদা ঠিকই বলেছে। নির্ঘাৎ করোনা হয়েছে! নইলে কেউ গোলাপ জলের গন্ধকে বিচ্ছিরি-বদখত বলে? এটা সম্ভবত সেন্স-অফ-স্মেল চলে যাওয়ার প্রথম ধাপ।
আমি খুব সাবধানে তুলোটা হাতে করে নিয়ে গিয়ে রাস্তার নর্দমায় ফেললাম। বউয়ের করোনা হয়েছে মানে এই গোলাপ জলে ভেজা তুলোটাও এখন করোনা ভাইরাসে থিকথিক করছে।
.
সব শুনে ভজহরিদা গম্ভীর হয়ে বলল, "হুম, এই ভয়টাই আমি পাচ্ছিলাম। এটাকেও গন্ধের সেন্স চলে যাওয়া বলেই ধরে নিতে হবে। শোন এখন তোর বউকে কিছু বলার দরকার নেই। আমি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করছি। প্রাইভেটের ওপর কোনও ভরসা নেই! সোজা মেডিকেল কলেজে নিয়ে চলে যাব। তুই আধার কার্ড সঙ্গে রাখিস। আর হাজার দুয়েক টাকা আছে তোর কাছে?"
ভাগ্যিস ওষুধ কিনব বলে পার্সটা সঙ্গে নিয়েছিলাম। দু হাজার টাকা দিতে ভজহরিদা বলল, "আরও হাজার খানেক দে। এখন তো সব কিছুর রেট আগুন। তুই বৌমার ওষুধ কিনে নিয়ে ঘরে যা। একদম চিন্তা করিস না। আমি এক্ষুনি সব ব্যবস্থা করে ফেলছি।"
.
বউকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে স্যারিডন দিয়ে আধার কার্ড খুঁজতে লাগলাম।
মনের মধ্যে উথালপাথাল চলছে। বউয়ের দিকে আমি তাকাতে পারছি না। অনেক ঝড় এখন অপেক্ষা করে আছে!
বউ আমার আলমারি হাটকানো দেখে অবাক হয়ে বলল, "চা না খেয়ে এসব কী করছ তুমি?"
আমি কিছু উত্তর দিলাম না।
বউ বলল, "শোনো না, চা খেয়ে তোমাকে একটু বেরোতে হবে।"
.
আমি মনে মনে বললাম, শুধু আমাকে কেন তোমাকেও বেরোতে হবে এক্ষুনি।
বউ বলে চলেছে, "তোমাকে একটু ডায়াগোনেস্টিক সেন্টারে যেতে হবে।"
যাহ্ বাবা বউও কিছু সন্দেহ করেছে নাকি?
অবাক হয়ে বললাম, "কেন? আচ্ছা তোমার জ্বর-টর এসেছে নাকি?"
বউ বলল, "না, আমি ঠিক আছি। আরে তোমাকে বলেছিলাম না, বাবার বাথরুম করতে গেলে জ্বালা করছে। তো ডাক্তারকে বলতে ডাক্তার ইউরিন কালচার করাতে বলেছে। বাবা সকালেই একটা ছেলেকে দিয়ে ইউরিনটা পাঠিয়েছে। একটা গোলাপ জলের শিশি ভাল করে ধুয়ে তাতেই বাবা ইউরিনটা পাঠিয়েছে। ওটা বাইরের ঘরে রাখা আছে। চা খেয়ে পরীক্ষার জন্য দিয়ে এসো না..."
.
ইউরিন...গোলাপ জলের শিশি... এসব কী বলছে!
তাহলে....
দূর থেকে একটা অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের আওয়াজ শুনতে পেলাম।
বউ এরপর প্রশ্ন করল, "আচ্ছা তুলোয় করে তখন কী শোঁকাচ্ছিলে? মাথা যন্ত্রণার চোটে জিগ্যেস করতেই ভুলে গিয়েছিলাম..."
সাইরেনের আওয়াজটা বাড়ছে...অ্যাম্বুলেন্সটা এগিয়ে আসছে..
২| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:১৫
আনমোনা বলেছেন: ভজহরিদার ভজঘট।
৩| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:১৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
কলকাতার মানুষ, জীবনটাই হ্যাট্রিক
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৩৭
গেছো দাদা বলেছেন: ক্যামনে ?
৪| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ২:০৯
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি আমার কথাটা মনে রেখেছেন!!!!
খুব খুশি লাগছে। আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৩৯
গেছো দাদা বলেছেন: আপনার মতো পাঠক কে না পেতে চায় ?!
৫| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ২:১২
রাজীব নুর বলেছেন: ভজহরিদার কি বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব আছে?
আমার এক বন্ধু ঈদের আগের দিন আমার সাথে দেখা করলো। জোর করে কোলাকুলি করলো। অনেকক্ষন সময় নিয়ে হ্যান্ডশেক করলো। আমার গলা ধরে অনেকক্ষন হেঁটে বেড়ালো। বলল, দোস্ত ইদের ছুটিতে দেশে যাচ্ছি। নানান কথা বার্তা।
গ্রামে বাড়ি গিয়ে বন্ধু ফোণ করে জানালো। তার করোনা হয়েছে।
হায় হায়----
সে তো গ্রামের যাওয়ার আগের দিন আমার হাত ধরেছে। কোলাকুলি করেছে। কাঁধে হাত রেখে গল্প করেছে।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪২
গেছো দাদা বলেছেন: //ভজহরিদার কি বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব আছে?//..... কাছাকাছি চরিত্রের একজনকে দেখেছি ।
//গ্রামে বাড়ি গিয়ে বন্ধু ফোণ করে জানালো। তার করোনা হয়েছে।//....আমি তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
৬| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:৩১
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: যা বাবা, সব একেবারে গুবলেট হা হা হা
ইউরিন কালচার, গোলাপজলের বোতল এম্বুলেন্সের সাইরেন
গচ্চা হাজার তিনেক টাকা
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৪
গেছো দাদা বলেছেন: ভজহরিদার যত ভজকট ব্যাপার স্যাপার আরকি।
৭| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:৪৭
Zarin286 বলেছেন: হাহাহা। ভালো লাগলো
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৪
গেছো দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৮| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৯:৫৯
সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ভালো লেগেছে।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৫
গেছো দাদা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৯| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:০৪
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: খ্যাক খ্যাক খ্যাক, অবস্থা বেগতিক।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৫
গেছো দাদা বলেছেন: ভজহরিদার যত ভজকট ব্যাপার স্যাপার আরকি।
১০| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ১১:৫৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
দাদা তোমার কপাল ভালো !!
ঈদের আগে পোলাউ কোরমায় যে
তুমি গোলাপ জল ছিটাও নাই তার জন্য
ভগবানকে ধন্যবাদ দাও !!
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৬
গেছো দাদা বলেছেন: হা হা হা ।
১১| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:৫২
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: দাদা ,ফাটিয়ে দিয়েছেন।
শ্বশুর এত কষট করে মেয়ে লালন পালন করে আপনাকে তার মেয়ে দিয়ে দিল ।আর তার সেই মেয়েকেই কিনা আপনি তার গোলাপ জলের ঘ্রান শুকাইলেন!!!! ইয়াক থু গেছো দাদা।আপনি আচছা মানুষ।
আর গোলাপজলের ছিটাফোটা আপনার হাতে কি এখনো লেগে আছে ? শুকে দেখেন।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৯
গেছো দাদা বলেছেন: মনোগ্রাহী মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাই।
১২| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:০৫
শেরজা তপন বলেছেন: ভাল ভাল-হাসলাম বটে
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৫০
গেছো দাদা বলেছেন: হাসলে আয়ু বাড়ে ।ধন্যবাদ ।
১৩| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:২১
রাজীব নুর বলেছেন: আরেকবার পড়লাম। আগের মতোই ভালো লাগলো।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:৪৭
গেছো দাদা বলেছেন: আমি ধন্য হে পাঠকরত্ন !!
১৪| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৩:১৯
অন্তরা রহমান বলেছেন: ইয়াক
১৫| ১৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:০২
Rajibrpsoft বলেছেন: মাইর একটাও মাটিতে পরবে না ......সব দাদার গায়ে .... গেছ দাদা এবার শহুরে দাদা হয়ে জাবেন দিদির মারে
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:১৩
গেছো দাদা বলেছেন: রাজীব নুর দাদা অনুরোধ করেছিলেন একটি হাসির গল্প দেওয়ার জন্য।দাদার মুখে হাসি ফোটাবার জন্য চেষ্টা করলাম ।