নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঘরে ইঁদুরের বিপুল বাড়বাড়ন্ত দেখে বউ কাল ইঁদুর মারা বিষ দিয়েছিল। আজ ঘুম থেকে উঠে দেখলাম চারটা বৃহদাকার ধেড়ে ইঁদুর মরে পড়ে আছে।
এখন এই মৃতদেহগুলোর একটা বন্দোবস্ত করতে হবে।
বউ বলল, "একটু দূরে নিয়ে গিয়ে একটা ডাস্টবিন দেখে ফেলে দাও। কাছে ফেললে পাড়ার লোকে গাল দেবে।"
কিন্তু নিয়ে যাব কীভাবে?
সেও ব্যবস্থা হয়ে গেল। বউয়ের একটা সুদৃশ্য বড়সড় হ্যান্ড ব্যাগ আছে। দেখতে বেহদ্ সুন্দর! দেখলে নতুনই মনে হবে কিন্তু ওর ভেতরের চামড়া পচে এমন মারাত্মক পচা গন্ধ ছাড়ছে যে ব্যবহার তো দূর, ঘরেই রাখা যাচ্ছে না।
বউ ওই ব্যাগের মধ্যে চারটা মরা ইঁদুর ঢুকিয়ে তার ওপর বেশ কটা পুরনো খবরের কাগজ রেখে চেন টেনে দিয়ে ব্যাগের সারা অঙ্গে পারফিউম লাগিয়ে বলল, "একটু দূরে গিয়ে ফেলে দিয়ে এসো। পচা ইঁদুর আর পচা ব্যাগ সবই বিদেয় হোক।"
আমি চা খেয়ে বেরোলাম ইঁদুরের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে।
.
ঘর থেকে বেরোতেই বগলাকাকুর সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। বগলাকাকু মুখে মাস্ক না পরেই রাস্তায় ঘুরছেন।
আমাকে দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়ে বললেন, "বাহ্ ব্যাগটা দেখতে চমৎকার তো! তা এখন এই সক্কালে ব্যাগ নিয়ে কোথায় চললে?"
ব্যাগে করে মরা ইঁদুর নিয়ে যাচ্ছি এটা কী আর বলা যায়!
বললাম, "ওই মোড়ের মাথায় মুচিটা বসে ওর কাছেই যাচ্ছি। ব্যাগের ভেতরে সেলাই দিতে হবে।"
বগলাকাকু বললেন, "বুঝেছি ভেতরের আঠা খুলে গেছে!"
আমি হেসে বললাম, "হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন।"
বগলাকাকু খপ্ করে আমার হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে বললেন,"আমার কাছে ডেনড্রাইটের থেকেও দশগুণ ভাল একটা আঠা আছে। একবার লাগিয়ে দিলেই আর দেখতে হবে না। আমি লাগিয়ে দিয়ে যাচ্ছি।"
আমি লাফিয়ে উঠলাম, "না না আপনাকে কিচ্ছু করতে হবে না। আপনি ব্যাগ দিন।"
.
ঠিক এমন সময় একটা পুলিশের জিপ যেতে যেতে আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে গেল। জিপ থেকে একজন পুলিশ অফিসার নেমে বগলাকাকুকে বললেন, "জিপে উঠুন। মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরোনর জন্য আপনাকে অ্যারেস্ট করলাম।"
বলেই বগলাকাকুকে কিছু বলতে না দিয়ে ঠেলে জিপে তুলে দিলেন। সাঁ করে জিপ চলে গেল।
সম্বিত ফিরে পেতে খেয়াল হল ব্যাগটা বগলাকাকুর হাতেই রয়ে গেছে! হে ভগবান! ওই ব্যাগ গেল থানায়! কেলেঙ্কারির একশেষ!
.
ঘরে এসে বউকে সব বলতে বউ মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। বলল, "কী কাণ্ড! এবার কী হবে?"
আমার ভয়ে বুক ধড়ফড় করতে লাগল।
.
আবার আমি বাইরে বেরোলাম। একবার থানায় চলে যাব নাকি ভাবতে ভাবতে দেখলাম বগলাকাকু ফিরে আসছেন।
কাছে এসে বললেন, "ছেড়ে দিল। বলল আর মাস্ক ছাড়া বাইরে বেরোবেন না।"
আমি বললাম, "আমার ব্যাগটা?"
বগলাকাকু বললেন, "ব্যাগটা রেখে দিয়েছে। বলল আপনি বয়স্ক মানুষ আপনাকে তো আর কান-ফান ধরে ওঠবোস করাতে পারি না। ব্যাগটা রইল। আপনি কাল মাস্ক পরে ব্যাগটা নিয়ে যাবেন। এই আপনার শাস্তি।"
আমি বললাম, "আপনি ব্যাগটা রেখে দিয়ে চলে এলেন?"
বগলাকাকু বললেন, "আরে তুমি তো সারাতে নিয়ে যাচ্ছিলে। আমাকে পুলিশ অফিসার জিগ্যেস করেছিলেন, ব্যাগে দামি কিছু নেই তো? আমি বলেছি নেই। উনি খুলে দেখলেন, পুরানো খবরের কাগজ ভরা। তখন আবার বন্ধ করে রেখে দিলেন।"
সর্বনাশ! কাল তো পচা দুর্গন্ধ বেরোবে ব্যাগ থেকে! একটা যাচ্ছেতাই ব্যাপার হবে!
আমি বললাম, "আমি আপনাকে মাস্ক দিচ্ছি। পরে এখনই চলুন থানায়। ব্যাগটা নিয়ে আসি।"
অনিচ্ছা সত্ত্বেও বগলাকাকু যেতে রাজি হলেন।
.
থানার মেজবাবু বগলাকাকুকে গ্রেপ্তার করে ছিলেন। আমরা সোজা তাঁর কাছেই গেলাম।
কাছে গিয়ে মাস্ক নামাতেই বগলাকাকুকে চিনতে পেরে বললেন, "কাল আসতে বলেছিলাম না?"
বগলাকাকু বিনীত কন্ঠে বললেন, "না মানে ওই ব্যাগটা, যেটা আপনারা রাখলেন ওটা আসলে আমার নয়, এই ভাইপোর। ওটা ওর বউয়ের খুব প্রিয় ব্যাগ তাই যদি ওটা দিয়ে দেন..."
মেজবাবু আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, "আচ্ছা বুঝলাম। থানার ওপর ভরসা করতে পারলেন না। একটা ব্যাগ তাতে পুরনো খবরের কাগজ ছাড়া কিছু নেই, তাও দৌড়ে চলে এলেন। ট্রাস্টই নেই, তাই তো?
আমি বললাম, "না না তা নয়। আসলে আমার মিসেস এর কাছে ব্যাগটা খুব স্পেশাল। যদি মিসপ্লেসড হয়ে যায়, তাই ভাবলাম নিয়েই আসি!"
মেজবাবু গোঁফে আঙুল বুলাতে বুলাতে বললেন, "আসলে ভাবলেন থানা যদি ব্যাগটা ঝেঁপে দেয়! আচ্ছা থানা-পুলিশ সম্পর্কে এত খারাপ ধারণা কেন?"
বগলাকাকু বললেন, "না না স্যার তা নয়। আচ্ছা কালই নিয়ে যাব।"
কাল তো পচা গন্ধ বেরোতে শুরু করবে! আমি শেষ চেষ্টা হিসেবে বানিয়ে বানিয়ে বললাম, "আমার শ্বশুরমশাই গতবছর বউয়ের জন্মদিনে ওই ব্যাগটা উপহার দিয়ে ছিলেন। তাই বুঝতেই পারছেন ব্যাগটা কতটা প্রিয় আমার বউয়ের। তাই যদি দিয়ে দিতেন..."
মেজবাবু গম্ভীর গলা আরও গম্ভীর করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, "ভেবেছিলাম কালই দেব, কিন্তু না। থানা সম্পর্কে আপনার ধারণা পাল্টানোর জন্য এক সপ্তাহ পরে দেব। আর আপনিই আসবেন নিতে। দেখবেন আপনার ব্যাগ অক্ষত আছে। তখন বুঝবেন আপনার ধারণা ভুল। ব্যাস আর কোনও কথা নয়, আপনারা এখন আসুন।"
আমি আর বগলাকাকু থানা থেকে বেরিয়ে এলাম...
.
আচ্ছা, করোনা পজিটিভ কি করে হওয়া যায় বলুন তো? যে করেই হোক গুষ্টিশুদ্ধু চোদ্দ দিন কোয়ারান্টাইন হতেই হবে। মানে, মাসখানেক কেউ যেন বাড়ির ত্রিসীমানায় না আসে তার একটা ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন,আমার প্রিয় পাঠক বন্ধুরা ??
২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:২৯
গেছো দাদা বলেছেন: গুড আইডিয়া। শুকরিয়া।
২| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৭
নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: নূরু সাহেবের পরামর্শটাই ভাল।এই মুহূর্তে এর থেকে ভাল কোন চিন্তা মাথায় আসছেনা
নিজের বুদ্ধি বাদদিয়ে বৌয়ের বুদ্ধি নিতে গেলেন কেন? ঠিক হয়েছে,এইবার ঠেলা সামলান।
৩| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:২৫
শেরজা তপন বলেছেন: কেন আপনাদের ওখানে কি ভুয়া সার্টিফিকেট বিক্রি হয় না? পজেটিভ তো সস্তা দরেই পাবেন
২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ৩:১৯
গেছো দাদা বলেছেন: হায় হায়। এরকমও হয় নাকি ।
৪| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০২
রাজীব নুর বলেছেন: করোনা ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছে। আপনি তাকে বিদায় দিন। আর কত? ছয় মাস তো হয়ে গেল!!!!!
২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:২৫
গেছো দাদা বলেছেন: আমার দেশে ডেইলি প্রায় ৭০ হাজার করে পজিটিভ রোগী পাওয়া যাচ্ছে। মোট সংখ্যা ৩১ লাখের দিকে যাচ্ছে। তাই আমি বিদায় দিলে চাইলেও করোনা তো কিছুতেই বিদায় নিতে চাচ্ছে না আমার দেশ থেকে। ভেরি স্যাড লাইফ।
৫| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১:৪৫
মা.হাসান বলেছেন: আপনার করোনা হবার দরকার নেই। থানায় যাবেন না; থানা থেকে লোক আসলে ভাবিকে দরজা খুলতে বলবেন। আশা করো সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
একটু টোটকা বুদ্ধি শেয়ার করি। পুলিশের কাছে কখনো নাম-ঠিকানা দেয়ার প্রয়োজন হলে- নিজের নাম-ঠিকানা না দিয়ে পাওনাদার কারো নাম ঠিকানা দিয়ে দেবেন।
২২ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ২:২৪
গেছো দাদা বলেছেন: হা হা হা ।
৬| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ সকাল ১০:২০
শেরজা তপন বলেছেন: বেশ ক'বছর আগে আপনি 'ধর্ম নিয়ে গুতোগুতি- ... ' নিয়ে একটা সংগ্রহীত পোষ্ট দিয়েছিলেন। ব্লগের এই সাময়িক অস্থিরতায় সেই পোষ্টটা ফের দেবার অনুরোধ করছি।
৭| ২২ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৫০
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: "যেখানে বাঘের ভয় ,সেখানে রাত হ্য়" - প্রমাণিত।
আর আপনার থানায় যাওয়ারই দরকার নেই।তারা ত আর আপনার নাম ঠিকানা লিখে রাখেনি।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:১১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বাসার দরজায় বড় বড় অক্ষরে লিখে দিন
বাসায় করোণা রোগী আছে, দয়া করে
বাসায় নক করবেন না!!