নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জার্মান প্রবাসে

জার্মানির বুকে এক টুকরো বাংলাদেশ! http://www.GermanProbashe.com/

জার্মান প্রবাসে › বিস্তারিত পোস্টঃ

"কেমন আছে বাংলাদেশ" লিখেছেন জাহিদ কবীর হিমন (হ্যানোভার, জার্মানি থেকে)

২৯ শে নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৯

আজ হপ্তাখানেক হয়ে গেল বাংলাদেশ থেকে ঘুরে এসেছি। আর জার্মানিতে পা রাখার আজকে এক বছর দশদিন। এরই মাঝে এক মাসের জন্য দেশ থেকে ঘুরে আসলাম। এই এক বছরে দেশের আহামরি কোন পরিবর্তন চোখে পড়ার কথা নয়। সবই আগের মতই আছে। চার পাশের মানুষজন, দেশ সমাজ রাষ্ট্র রাজনীতি, তাদের আচার-অনুষ্ঠান কোনকিছুই মাত্র এক বছরে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হবে না। এরই মাঝে আমি যা দেখলাম, যা বুঝলাম তাই নিয়ে আজকের এই লেখা। ঢাকায় যখন নামলাম তখন পুরো দেশ কোরবানি ঈদের প্রস্তুতি নিচ্ছে। যেখানে সেখানে গরুর হাট। ট্রাক ভরে গরু আনা নেওয়া হচ্ছে। চোনা-গোবরের পুঁতি গন্ধময় পরিচিত পরিবেশ। কিছু কিছু এলাকায় যানজট নেই যেসব এলাকায় বিরাট বিরাট উড়ালসেতু হয়েছে। যেমন যাত্রাবাড়ী, কুড়িল-বিশ্বরোড ইত্যাদি। দশ মিনিটে বিশ্বরোড থেকে মিরপুর দশ, ইশ্বরও কোনদিন কল্পনা করতে পেরেছিল কিনা জানিনা! পত্রিকা জুড়ে সারা দেশের ভাঙ্গা রাস্তা আর গ্রামে ফেরা মানুষের ভোগান্তির আগাম খবরাখবর। আমরা জানি, ঢাকা এতটাই জনবহুল যে একসাথে লাখ লাখ লোক যখন গ্রামে যায় তখন তাদের জন্য নিরাপদ যাত্রা সহজ কথা নয়। যানজট খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার, প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার মৃত্যুও ঠেকানো যায় না। কিন্তু প্রশাসনের স্বদিচ্ছা থাকলে এই যাত্রাকে ন্যুনতম স্বস্তিদায়ক করা একেবারে দূরহ কাজ নয়। এবার তাই দেখলাম। ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার পথে দৃশ্যত বা বাঞ্চিত সেই জট নেই। সারা রাস্তায় পুলিশ টহল দিচ্ছে লাঠি হাতে। ড্রাইভারদের দাঁড়ানোর উপায় তো নাই।

অঞ্চলের বন্ধুবান্ধবের সাথে মিলিত হতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলাম। এক বছরে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীতে বহু জল বয়ে গেছে কিন্তু বন্ধুত্বগুলো আগের মতই আছে। দুই একজন বিয়েথা করেছে। স্কুলের মাঠে বসে বহুকাল ধরে যে আড্ডা দিয়ে আসছি এবারও তার ব্যতিক্রম করিনি। তবুও স্বল্প সময়ে সবার সাথে মনভরে আড্ডা দেয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। হিন্দু বন্ধু যারা তারা আগেই পূজার নিমন্ত্রণ করে রেখেছিল। গত পনেরো বছরে তাদের বাড়ি পূজোর নাড়ু মোয়া খেতে যাইনি এমনটা মনেই পড়েনা। এবারও গিয়েছি। বিসর্জন দেখেছি।

ঈদের দিনও সেই পরিচিত সামাজিক পরিবেশ। কিন্তু দিনকে দিন কোরবানীর মাহাত্ম হৃদয়ে ধারণের চেয়ে লোকদেখানো আনুষ্ঠানিকতার যে ঢেউ তা যেন আরো বেড়েছে। ঈদের দিন মানেই আমাদের দুই মাননীয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়। শেষে সংবাদ সম্মেলন, একে অপরের চৌদ্দগুষ্ঠী উদ্ধার। ন্যূনতম বিনয়বোধ আর সহনশীলতার যে পুরনো অভাব তাই দেখলাম এবারও। তবে মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ছে, দেশপ্রেমও বাড়ছে এই হল আশার কথা। যে ব্যাপারটি হতাশ করেছে তা হল মালালার নোবেল জয়ের পর বাঙ্গালির প্রতিক্রিয়া দেশে। মালালা নোবেল পাওয়ায় যেকারো দ্বিমত থাকতেই পারে, কিন্তু তা নিয়ে যে কদর্য বিরুপ প্রচারণা তা দেখে শুভবুদ্ধিসম্পন্ন যে কেউ আহত হতে বাধ্য। একটি কিশোরী যে কিনা বন্ধুকের নলের মুখে দাঁড়িয়েও স্কুলে যাওয়া বন্ধ করেনি, তালেবানের নিষেধাজ্ঞার কারণে ঘরে বসে বসে স্কুলে যেতে না পারার যাতনার কথা লিখে বিশ্ববিবেক নাড়িয়ে দিয়েছে এবং তৎপরবর্তীকালে আবারও স্কুলে যাওয়ার সময় হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছে তাকে যদি সম্মানিত না করা যায় তবে যুগে যুগে মহান মানুষের আবির্ভাবের যে প্রার্থনা আমরা ঘরে বসে করি তা অকালে আকাশে মিলিয়ে যেতে বাধ্য। অধ্যাপক পিয়াস করিমের মৃত্য হল আমি দেশে থাকাকালীন। এক পক্ষ তাকে জাতির ক্রান্তিকালের ত্রাতা-বুদ্ধিজীবী উল্লেখ

করে মাতম করল। এতে বোঝা গেল বুদ্ধিজীবীর কাগুজে সজ্ঞা পরিবর্তনের সময় এসেছে। অপরদিকে তাকে ঘিরে প্রগতিশীল নামধারী তরুণেরা যে অশ্লীল কর্ম করলো শহীদ মিনার ঘিরে তাতে করে এদের নিয়ে যথেষ্ট ভাবভার বিষয় আছে। পরমতসহিষ্ণুতা, একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি, গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিদারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়, এই তরুণদের পথভ্রষ্টতা দেখে আমার সেই পরিস্থিতির কথাই বারবার মনে এসেছে। এর মাঝেও অনেক আশার কথা আছে। দেশে বিদ্যুতের পরিস্থিতি যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা একেবারেই নাই। যা আছে তা শুধু সংবাদ সম্মেলন করে একে অপরের প্রতি হুমকি প্রদর্শন। এটা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। হরতাল মারামারি গাড়ি ভাঙ্গা, রাস্তাঘাট আটকে জনজীবন অস্থিতিশীল করা ইত্যাদি না থাকায় জনজীবন শান্ত। কে ক্ষমতায় গেল আর কে থাকল জনগণ এটা নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয়। শহরের শিল্প সংস্কৃতির চর্চা সমূহ বৃদ্ধি পাওয়ায় ধারণা করা যায় এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। পরিশ্রমী মানুষেরা নিজেদের ঘাম দিয়ে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আরো ভালো থাকুক আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ।
***************************************************
ম্যাগাজিন লিংকঃ জার্মান প্রবাসে - নভেম্বর - যেমন খুশি তেমন - http://www.germanprobashe.com/archives/2149

লেখা/ছবি পাঠানঃ [email protected]
অথবা পেজের ইনবক্সে পাঠানঃ Click This Link
-------------------------------------------
# কারা লিখতে পারবেনঃ শুধু জার্মানি বা বাংলাদেশ থেকেই নয়, যেকোন দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাদর আমন্ত্রন আমাদের ম্যাগাজিনে! তাই আমাদের ম্যাগাজিনে লিখতে হলে আপনাকে বাংলাদেশ বা জার্মানিতেই থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই!

ছবির জন্য বিস্তারিতঃ http://goo.gl/90IVlk

জার্মান প্রবাসে আড্ডা দিতে চাইলেঃ https://www.facebook.com/groups/BSAAG/ (৩৭,০০০+ মেম্বার্স)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.