নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কুকরা

একজন সতর্ক কুকরা।

কুকরা › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস ও ইউসুফ (আঃ) এর শিক্ষায় শহীদ জিয়ার মোকাবেলা~

৩০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:৫৮

১৯৭৮ সাল। বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এমন সময় রাষ্ট্রপতি জিয়ার কাছে খবর এলো ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস। বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘ থেকে খবর আসে- সামনে ভয়াবহ খরা। এমন খরা হবে, যা শতবর্ষে হয়নি। জিয়া বুঝতে পারলেন সামনে মহাবিপদ। মাত্র চার বছর আগে আওয়ামী দুঃশাসনের সময়ে বন্যা ও দুর্ভিক্ষে লাখ লাখ মানুষ মারা যাওয়ার কষ্ট তখনও মানুষ ভোলে নি। সে সময় বন্যা ও খাদ্য সংকটকে মুজিব সরকার যথাযথ গুরুত্ব দেয়নি, কেবল মেঠো বক্তৃতা,আর গলাবাজিই ছিল সম্বল, কিন্তু জরুরীভিত্তিতে পেশাদারী মনোভাব নিয়ে জনগনের খাদ্য সংকটের মোকাবেলা করেনি। যার পরিণতিতে লাখ লাখ মৃত্যু। অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে জিয়া ডাক দিলেন সব উপদেষ্টদের, এবং পরিকল্পনা করে ফেললেন, তার কি করতে হবে। সিদ্ধান্ত হলো, দেশের মানুষ বাচাঁতে যা প্রয়োজন, সবকিছু করা হবে। এর মধ্যেও বিশ্বব্যাংক দুর্ভিক্ষ নিয়ে বার বার হুশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছিল।



হযরত ইউসুফ (আঃ) শিক্ষা থেকে রাষ্ট্রপতি জিয়া নিজে হলেন জাতীয় খাদ্য কমিটির চেয়ারম্যান। জিয়া নিজে চিঠি লিখলেন সারা বিশ্বের ধনী দেশ থেকে শুরু করে ছোটখাট দেশ পর্যন্ত- খাদ্যশস্য চাইলেন। খাদ্যের ভান্ডার তৈরীর কাজ চললো। এডিপি কাটছাট করে খাদ্য কিনলেন। সব মিলিয়ে মোট ২৯ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য এসেছিল সে বছর। বিভিন্ন দেশ থেকে খাদ্যের প্রতিশ্রিুতি মিললো বটে, কিন্তু সেগুলো আনা এবং নামিয়ে গুদামজাত করা ছিল অসম্ভব ব্যাপার ছিল। কারন চট্টগ্রাম বন্দরের ক্ষমতা ছিল ২ থেকে আড়াই লাখ টন মাসে। সে হিসাবে খাদ্য খালাস করতে অন্তত এক বছর লেগে যাবে। ততদিনে না খেয়ে মানুষ মারা যাবে! বাস্তব সমস্যা অনুধাবন করে তিনি কার্যকর পদক্ষেপ নিলেন:



১. বেশ আগে থেকেই আমদানী শুরু করলেন, যাতে করে কিছু জাহাজ পরে পৌছলেও দেশে খাবারের ঘাটতি না হয়।

২. বার্মা, থাইল্যান্ড, ভারত সহ সকল চাল উৎপাদক দেশ থেকে চাল আমদানি ও সহায়তা নিলেন। এমনকি ভারত থেকে ২ লাখ টন খাদ্য নিতে কুন্ঠা বোধ করেন নি।

৩. যুদ্ধের সময়কার জরুরী অবস্থার মত সেনাবাহিনী তলব করে খাদ্যশস্য আনলোড, অভ্যন্তরীণ সরবরাহ ও মজুদের কাজে লাগালেন।

৪. চট্টগ্রাম বন্দরে বাড়তি শেড বানিয়ে মাল খালাস ক্ষমতা দ্বিগুন করে ফেলেন। আড়াই লাখ টন খালাস ক্ষমতা সাড়ে চার লাখ টরনে পৌছায়। ফলে অর্ধেক সময়ে মাল খালাস হয়ে যায়।

৫. রাষ্ট্রপতি হয়েও জিয়া নিজে খাদ্য কমিটির চেয়ারম্যান। উদ্দেশ্য মানুষ বাঁচাতে হবে। এ এক নতুন দৃশ্য যা বাংলার মানুষ কখনো দেখেনি! খরা, দুর্ভিক্ষ ও অভাব শুরু হলে রেশন, কাবিখা এবং বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে জনগনের কাছে সরকারী গুদাম থেকে খাবার পৌছে দিলেন জিয়া। দুর্ভিক্ষ রোধ করলেন, দেশের মানুষ বাঁচালেন। দিন রাত পরিশ্রম করে অসম্ভবকে সম্ভব করে তুললেন।



মনে পড়ে যায় মিশরের কথা। হজরত ইউসুফ (আঃ) যখন মিশরে দুর্ভিক্ষের কথা আগাম জানতে পারলেন বাদশাহর স্বপ্নের তাবির করে। তাকে দায়িত্ব দেয়া হলো বাদশাহর। নিজে বাদশাহ হয়ে ইউসুফ (আঃ) রাজ্যের খাদ্যের দায়িত্ব নিলেন। স্বপ্নের ব্যাখ্যা অনুযায়ী প্রথম সাত বছর সমগ্র দেশে ব্যাপক ফসল উৎপন্ন হলে ইউসুফ (আঃ)-এর নির্দেশক্রমে উদ্বৃত্ত ফসলের একটা অংশ রাষ্ট্রীয়ভাবে মজুদ রাখা হয়। এরপর স্বপ্নের দ্বিতীয় অংশের বাস্তব হয় পরবর্তী ৭ বছর দেশে ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। তাই সংরক্ষিত খাদ্যশস্য ইউসুফ (আঃ) এর নির্দেশে খুব সতর্কতার জনগনের মধ্যে মাথাপিছু নির্দিষ্ট পরিমানে খাদ্য স্বল্পমূল্যে বিতরণ করেন। তাছাড়া দুর্ভিক্ষ নিয়ে সরকারের আগাম হুঁশিয়ারিতে মিশরের জনগণও বাড়িতে খাদ্যশস্য সঞ্চয় রাখে। এভাবে ইউসুফ (আঃ) দক্ষ শাসন ও দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় উপযুক্ত ব্যবস্থাপনায় মিশরবাসী দুর্ভিক্ষের হাত থেকে রক্ষা পায়।



আল্লাহর নবী হযরত ইউসুফ (আঃ) এর কয়েক হাজার বছর আগেকার শিক্ষা নিয়ে রাষ্ট্রপতি জিয়া বাংলার মানুষ বাঁচাতে নিজে দায়িত্ব নিয়ে যে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন, আজ তার শাহাদাত বার্ষিকীতে দেশবাসীর স্মরণ করা প্রয়োজন। মহামানবের মহৎ কাজের স্মরন করাও নেয়ামতের কাজ। আজকের এই দিনে সফল রাষ্ট্রনায়ক ও সমাজ সেবক জিয়াউর রহমানের প্রতি অজস্র শ্রদ্ধা।



কার্টেসি-Shamsul Alam

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:২২

খাটাস বলেছেন: তথ্য মুলক পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। রেখে দিলাম, পরে নিজে ইতিহাসের সাথে মিলিয়ে ভাবসত্যতা যাচাই করে নেব।
শুভ কামনা জানবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.