![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
উইং কমান্ডার (অবঃ) এম হামিদুল্লাহ খান বীর প্রতীকের ভাষায় ''এই দিনে বাংলাদেশের ওপর আল্লাহর বিশেষ রহমত নাজিল হয়েছিল। এই দেশ যতদিন টিকে থাকবে ৭ই নভেম্বর ততদিন আমাদের কাছে আলোকবর্তিকা হিসাবে পথ নির্দেশনা দিয়ে যাবে। সে দিন যে বিপ্লব হয়েছিল গুটিকতেক স্বার্থান্বেষী লোকের ব্যক্তিগত প্রাপ্তির আশায় নয়।
সেদিন এই দেশের সর্বস্তরের জনতা এবং সিপাহী এক হয়ে গিয়েছিল কোন ব্যক্তির জন্য নয় কিংবা কোন কোন ব্যক্তির পক্ষে-বিপক্ষে নয় বা কোন গোষ্ঠীর স্বার্থকে চরিতার্থে করার জন্য নয়। তারা এক হয়েছিল এই জন্যে যে বাংলাদেশের ঈশান কোনে আবিভূর্ত হয়েছিল এক মহা অশনি সংকেত। যে সিপাহী-জনতা যুদ্ধ করে মাত্র দেশটিকে স্বাধীন করেছে সে স্বাধীনতার ওপর কোন হিংস্র থাবা তারা সইবে কেন?''
১৯৭৫ সালের ২৫শে জানুয়ারী শেখ মুজিব বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রকে গলা টিপে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে দূঃখজনক রক্তক্ষয়ী পট পরিবর্তন ঘটে আওয়ামীলীগের এক বড় অংশের নেপথ্য প্ররোচনায়, যারা আওয়ামীলীগ নেতাদের ভোটে জিতানোর জন্য ভোটের বাক্স ডাকাতি করে হেলিকপ্টারে ঢাকা নিয়ে এসেছিল। তারাই ছিল সেদিনের ঘটনার মুলহোতা।
আর নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন তৎকালীন সেনাবাহিনীর প্রধান, বিমান বাহিনীর প্রধান, রক্ষীবাহিনীর প্রধান এবং সর্বোপরি যিনি ৩ নভেম্বরের ঘটনার নায়ক ( সিজিএস) যার নির্দেশ ছাড়া কোন অস্র, গোলা, ট্যাংক মুভ করে না। ক্ষমতার শুন্যস্থান পুরন করেন প্রেসিডেন্ট হন শেখ মুজিবের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ তৎকালিন আওয়ামীলীগ নেতা খন্দকার মুশতাক আহমদ।
৩ নভেম্বর খালেদ মোশারফ চেইন কব কমান্ড ফিরিয়ে আনার বাহানা করে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ''র'' (RAW) এর উদ্যোগে তার অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য পাল্টা অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেন ( খালেদ মোশারফের সামরিক অভ্যুত্থানে ভারতের পত্র পত্রিকায় "ঐতিহাসিক ঘটনা" বলে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছিল)। ৩ নভেম্বরের নায়ক খালেদ মোশারফ ঢাকা বিগ্রেডের কমান্ডার শাফায়েত জামিলের সহযোগীতায় বঙ্গভবন ছাড়া অন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিজেদের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা করেন।
জিয়াউর রহমানকে বন্দী করে নিজেকে মেজন জেনারেল পদে উন্নীত করেন এবং সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসাবে নিয়োগ দান করেন। তিনি মন্ত্রিসভা এবং জাতীয় সংসদ বাতিল করেন। এই ৩ নভেম্বর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত দেশ ছিল অন্ধকারে, কারো পক্ষে দেশের প্রকৃত ঘটনা বুঝে উঠা সম্ভব হচ্ছিল না। এরই মধ্যে জেলের মধ্যে ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা, চারজন জাতীয় নেতাকে হত্যা করা হয়।
জিয়াউর রহমানকে বন্দিত্ব অবস্থায় রেখে খালেদ মোশারফ ১৫ই আগষ্টের অভ্যুত্থানকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেন। দুটি শর্তে তিনি তাদের সঙ্গে বোঝাপড়া করেন। এক-বাংলাদেশ বিমানের ফকার ফ্রেন্ডশীপ বিমানে তাদের দেশের বাইরে নিরাপদে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দুই- তারা তার পরিবর্তে খালেদ মোশারফের কাছে অস্র সমর্পন করবেন। এই ভাবে খালেদ মোশারফ অত্যন্ত সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন বটে; কিন্তু সে নিয়ন্ত্রন ৯০ ঘন্টার বেশী স্থায়ি হয়নি।৭ নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি এবং তার সঙ্গী সাথীরা সিপাহীদের দ্বারা পরাস্ত হন এবং অবশেষে নিহত হন।
গণ বাহিনীর কর্নেল আবু তাহের অত্যন্ত ধূর্ততার সাথেই প্রতিরক্ষা বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে গণবাহিনীর কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তার আল্টিমেট উদ্দেশ্য অর্জনের জন্যেই কাজ করে যাচ্ছিলেন। এখানে উল্লেখ্য যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সামরিক শাখা গণবাহিনীর উদ্যোগে ১৯৭৩ সালের প্রথম থেকে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীতে যে অসংখ্য বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা গড়ে তুলেছিলেন বিশেষ করে ৭ নভেম্বরের ১২ দফা চার্টারে উল্লেখিত দাবি নামা নিয়ে যে ভাবে অগ্রসর হচ্ছিলেন তাতে করে দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া ছিল সুনিশ্চিত।
কর্নেল তাহের জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে তাকে গৃহ বন্দিত্ব থেকে মুক্ত করেননি বরং এই প্রেক্ষাপটে কর্নেল তাহেরের মাথায় ছিল সৈনিকদের কাছে জেনারেল জিয়ার আকাশ চুম্বি জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতার কথা আর সেটাকে সে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যেই জেনারেল জিয়াকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করেন। জিয়ার বন্দিত্ব হতে মুক্ত হওয়ার সাথে সাথে সিপাহী-জনতার বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছাসে ভেসে যায় তাহের সহ সকল পক্ষের ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, জেনারেল জিয়া মুক্ত হয়েই পরিনত হন সিপাহী-জনতার বিপ্লবের মহানায়কে।
চরম বিশৃঙ্খল পরিবেশে দেশ প্রেমিক, মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার ঘোষক, তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও দুরদর্শী সম্পন্ন জেনারেল জিয়া সেনাবাহিনী ও সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায়, জনগণকে চরম অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি দিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রথমেই শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন বাংলাদেশ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে। অঙ্গিকার করেন দেশ রক্ষার এবং এই দেশের মানুষের আশা আকাঙ্খা পুরনের গুরুভার বহনের। ইতিহাসের আরেক সন্ধিক্ষনে '৭১ এর ২৬শে মার্চের মত পুর্নবার মাথা উঁচু করে দেশ ও জাতির পথ প্রদর্শনের ভূমিকায় আবতীর্ন হন...
___ UP-set Anchorite এর স্ট্যাটাস থেকে...
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:১৭
আল-শাহ্রিয়ার বলেছেন: চারজন জাতীয় নেতাকে হত্যায় কার ভুমিকা ছিল খালেদ মোসারফ নাকি মোস্তাকের একটু পরিস্কার করলে ভালো হত।