![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[এই লেখাটি লিখেছে জনপ্রিয় ব্লগার, মাইক্রো ব্লগার ও অনলাইন গবেষক সানাউল হুদা ]
পিয়াস করিম স্যারের আকস্মিক প্রয়াণে দেশবাসী যেমন শোকের সাগরে নিমজ্জিত হয়েছিল, তেমনি কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ডে গোটা জাতী হয়েছিল ক্ষুব্ধ, নির্বাক। এমনি একটি ঘটনা হচ্ছে পিয়াস করিম স্যারের মৃতদেহকে শহীদ মিনারে নিয়ে যেতে পুলিশ প্রহরায় ‘সিপি গ্যাং’ কর্তৃক বাঁধা প্রদান। সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের মনে ক্ষোভের পাশাপাশি কৌতূহলের জন্ম নিয়েছে, কারা এই সিপি গ্যাং? কার প্রশ্রয়ে এই সংগঠনটি এমন বাড়াবাড়ি করার প্রয়াস পেল??
সচেতন অনলাইন এক্টিভিস্টদের মতে সিপি একটি পশুত্বের নাম, বাংলাদেশের ইতিহাসে এরকম নোংরা, বর্বর সংগঠনের কখনোই জন্ম হয়নি। জামাত-শিবির দমনের নামে এদের উচ্চারণ অযোগ্য গালাগালি হতে জামাত, বিএনপি, হেফাজত, বামপন্থী এমন কি খোদ আওয়ামী লীগও রক্ষা পায়নি। ফেসবুক ভিত্তিক সংগঠন সিপি গ্যাং এর জন্ম ২০১৩ সালের মে মাসের শুরুতে। ‘সিপি(CP)’ অক্ষর দুটোর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে, ‘C=ছাগু; P=পুন্দানি’। শাহাবাগ আন্দোলনের সময়কালে জনসাধারণের জামায়াতে ইসলামি এবং রাজাকার বিদ্বেষকে উপজীব্য করে জন্ম নেয় অশ্লীল নামধারী এই সংগঠনটি। এর সদস্যরা অনলাইনে আগে থেকেই ছিল কিন্তু ৫ই মে হেফাজতের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অনলাইনে সংঘবদ্ধ গালাগালি, ভীতি প্রদর্শন এবং আল্লামা শফিসহ অন্যদের নামে কুৎসা রটানোর উদ্দেশ্যেই গড়ে তোলা হয় এই অনলাইন সংগঠনটি। শুরু থেকেই এর এডমিন ছিল রাসেল রহমান ওরফে আব্দুল হান্নান। পৈত্রিক নিবাস নোয়াখালি হলেও পুরান ঢাকায় বসবাসের সুবাদে নিজেকে আদি ঢাকাইয়া দাবী করে থাকে সে। তার সাথে এডমিন হিসেবে ছিল সরকার তাপস, বেলের কাঁটা, রতন মজুমদার, দলকানা বিলি নামক কিছু অনলাইন এক্টিভিস্ট।
01
সেই সময় অনলাইন আওয়ামী লীগের একক নেতা বলে গণ্য হতো অমি রহমান পিয়াল। সরাসরি সিপিতে নাম না লিখালেও পিয়ালের আশীর্বাদপুষ্ট হয়েই যাত্রা শুরু করে সিপি গ্যাং। পাশাপাশি প্রবাসী ডাক্তার আইজু ওরফে শরীফ আজাদ এবং সুশান্ত দাস গুপ্তসহ আরিফ জেবতিক, মহামান্য কহেন, সিডাটিভ হিপনোটিক্স, সেলিনা মওলা, নিঝুম মজুমদার প্রমুখ আওয়ামী সেলিব্রেটিদের সমর্থনও অর্জন করে। ফলে অনলাইনে প্রাথমিক আধিপত্য বিস্তারে কোন সমস্যাই হয়নি সিপি গ্যাং এর।
02
সিপি গ্যাং এর একটি ঘরোয়া সভা- বাম থেকে সুশান্ত দাশ গুপ্ত, পার্থ সারথি, রাসেল রহমান, সেলিনা মওলা, সিডাটিভ হিপনোটিক্স। -ফেসবুক
03
সিপি গ্যাং এর বর্তমান শত্রু মহামান্য কহেন ওরফে আজমের সিপি গ্যাং এর পক্ষে দেওয়া গালাগালি- ইস্টিশান ব্লগ।
অনলাইনে সিপি গ্যাং এর ভূমিকা ছিল মূলত অমি পিয়াল, আরিফ জেবতিক, নিঝুম মজুমদারদের পোষ্টগুলো বিরুদ্ধমতের হাত থেকে রক্ষা করা। কিন্তু এই গ্যাং কখনোই যুক্তিতর্কের ধার ধারেনি, শুরু হতেই ঝুলি ভরা গালি নিয়ে আওয়ামী বিরোধীদের উপর চড়াও হতে থাকে তারা। ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে তাদের অশ্লীল, যৌননির্ভর গালির বদৌলতে অনলাইনের সুন্দর, সুস্থ, স্বাভাবিক পরিবেশ লজ্জা পেয়ে চিরতরে বিদায় নেয়। দিনে দিনে এই গ্যাং বোঝার উপর শাকের আঁটিতে পরিণত হয় আওয়ামী সেলিব্রেটিদের উপর। এক সময় যেসকল সুলেখকগণ তাদের সমর্থন দিয়েছিল, তারাই এদের অকথ্য, অসভ্য আচরণের দরুন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় বন্ধু, আত্মীয় এমন কি সুস্থ্য ধারার আওয়ামী রাজনীতি চর্চাকারীদের কাছে।
04
নারী-পুরুষে অবাধ মেলামেশা, অশ্লীল শব্দ এবং অঙ্গভঙ্গিতে সিপি গ্যাং এর ২০১৩ সালে ইফতার পার্টি আয়োজন- ফেসবুক
তবে এই অবস্থা হতে পরিত্রাণের সুযোগ সিপি গ্যাং নিজেই এনে দেয় তাদের সামনে। ইমরান সরকারের নেতৃত্বে গণজাগরণ মঞ্চ ততোদিনে ফুলে ফেঁপে একাকার। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে প্রচারণা ইত্যাদি নানা ইস্যুতে দেশী বিদেশী ডোনারদের তরফ থেকে কয়েক কোটি টাকা সংগ্রহীত হয় মঞ্চের ফান্ডে। ইমরান সরকারের পড়নে দামী পাঞ্জাবী দিনে কয়েক দফা পরিবর্তন হলেও সিপি গ্যাং রয়ে যায় মুনাফাবঞ্চিত, প্রচারণার আড়ালে। মুক্তিযুদ্ধের গবেষণার নামে অমি পিয়াল নিত্য নতুন আইফোন, আইপ্যাডের ছবি ফেসবুকে আপলোড করলেও, সিপি গ্যাং এর গালিবাজেরা নেটের পয়সা যোগাতেই হিমশিম খায়। পরিণামে শাহবাগের গণ জাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে প্রথম বিদ্রোহ করে বসে সিপি গ্যাং, এর ফলে অনলাইন আওয়ামী লীগ প্ল্যাটফর্মেও চিড় ধরে। দীর্ঘদিনের সুবিধাপ্রাপ্ত অমি পিয়াল, আরিফ জেবতিকরা সমর্থন দেয় মঞ্চকে; সিপি গ্যাং এর নোংরামিতে অনেকেই ত্যক্তবিরক্ত হলেও মুখ ফুটে বলার সাহস করতো না কেউই। কারণ সিপিকে কেউ সামান্য খোঁচা দিলেই, শুধু সেই ব্যক্তিকেই নয়, তার পারিবারিক আত্মীয়-স্বজনের ফেসবুকেও আক্রমণ করা হতো। একবার সাজিদ নামে চট্টগ্রাম নিবাসী এক ছেলে অমি পিয়ালের পক্ষ হয়ে সিপি গ্যাং এর বিরুদ্ধে বলায়, সেই ছেলের ফেসবুক এলবাম হতে তার বড় দুই বোনের ছবি খুঁজে বের করে, সেই ছবি নোংরা ফটোশপ করে অনলাইনে ছাড়ে সিপি গ্যাং।
মূলত পিয়ালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার মাধ্যমেই সিপি গ্যাং অনলাইনে আওয়ামী গ্রহণযোগ্যতা হারায়। একসময় যারা নিজেদের স্বার্থে, অনলাইন প্রতিপত্তি দেখাতে সিপি গ্যাংকে গালি দিতে উৎসাহিত করতো, তারাই সিপিকে অনলাইনের পরিবেশ নষ্টকারী হিসেবে অভিহিত করে। এই সময় সিপির পাশে এসে দাঁড়ায় ডাক্তার আইজূ এবং ‘আমার ব্লগের’ মালিক লন্ডন প্রবাসী সুশান্ত দাস গুপ্ত। আর সিপির প্রধান শত্রুতে পরিণত হয় একদা রাসেলসহ সকল সিপি মেম্বারের গুরু বলে পরিচিত অমি রহমান পিয়াল। পিয়ালকে বহিষ্কার করা হয় আমার ব্লগ থেকে এবং ফেন্সিডিল, ইয়াবা খোর, ধান্দাবাজ, গণজাগরণ মঞ্চের টাকা মেরে দেওয়া, নারী-লোলুপ ইত্যাদি নানা অভিযোগে অভিযুক্ত করে সিপি গ্যাং।
05
রাসেল-পিয়ালের একত্র থাকার সময়ের কিছু স্মৃতি- ফেসবুক বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের অশ্লীল ফটোশপড ছবি বানানোর সংস্কৃতি চালু হয় সিপি গ্যাং এর হাত ধরে। ডঃ ইউনুস, বেগম খালেদা জিয়া থেকে আল্লামা শফি সবাইকে নিয়েই নোংরামি করেছে এই নষ্ট মানসিকতার মানুষগুলো। এদের সরাসরি আক্রমণের শিকার হয় আনিসুল হক, ফারুক ওয়াসিফসহ অসংখ্য প্রগতিশীল লেখকেরা। সিপি গ্রুপে ঢুকা মেয়েদের সাথে সেক্স চ্যাট করে সেইসব দিয়ে ব্ল্যাক মেইল করার অভিযোগও আছে রাসেলসহ অন্য মেম্বারদের বিরুদ্ধে। সুশান্ত দাস গুপ্তের সাথে থেকে দোয়েল ল্যাপটপ প্রজেক্টের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আছে তাদের বিরুদ্ধে। অর্থের বিনিময়ে তারা বিভিন্ন জেলা শহরের ছাত্রনেতাদের পক্ষে প্রচারণা চালায়। শেখ আসমান নামক এক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সেন্ট্রাল ছাত্রলীগের সাথে সিপি গ্যাং এর লিয়াজো বজায় রাখে, পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মীদের দিয়ে বিরুদ্ধ পক্ষকে শারীরিক আক্রমণের ভয় ভীতি দেখায়। সর্বশেষ গাজীপুর আইটি ভিলেজ প্রজেক্টের টেন্ডার সুশান্ত-আইজূদের পছন্দের ফার্মকে না দেওয়ায় সিপি গ্যাং এর আক্রমণের স্বীকার হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
06
সুশান্ত দাস গুপ্ত এবং ডাক্তার আইজু সামগ্রিকভাবেই সিপি গ্যাং এখন অনলাইনের বিষফোঁড়া। অসংখ্য ছেলে-মেয়ের সুন্দর মন মানসিকতা নষ্টের জন্য দায়ী এই সিপি গ্যাং। আইজু, রাসেল, সুশান্তরা শুধুই নিজের স্বার্থের জন্য একদল ছেলে মেয়েকে উস্কে দিচ্ছে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করার জন্য। একসময় পিয়াল, মহামান্যরাও উৎসাহ দিয়েছিল কিন্তু নিজের স্বার্থে লাগায় বয়কট করে সিপি গ্যাংকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দেশ প্রেম ইত্যাদি মিথ্যা কথায় প্ররোচিত হয়ে এই সকল ছেলে মেয়েরা গালি দিচ্ছে দেশের সম্মানিত নাগরিক থেকে শুরু করে সাধারণ ফেসবুক ইউজারদের। অনলাইনে মুক্তবুদ্ধি চর্চার সবচেয়ে বড় বাঁধা এই সিপি গ্যাং। আসল নামে নিজের মা-বোনের ছবি নিয়ে নোংরামি হবে ভেবে কেউই তাদের কিছু বলার সাহস পায় না। কিন্তু সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই নোংরামির সমূল উৎপাটন করা এখন সময়ের দাবী।
মূল লেখা: Click This Link
২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৮
দীঘল গঁাােয়র েছেল বলেছেন: ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করছে আরও অনেকেই। এদের বয়কট করা উচিত।
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১১:৩১
রিফাত ২০১০ বলেছেন: সি পি গ্যাং শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ট বেয়াদবদের একটা গ্যাং যারা প্রকাশ্যে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া বাংলাদেশের মানুষগুলোর হৃদয়ের ভাষা বাংলা ভাষাকে বিকৃত করে নোংরা গালাগালির চর্চা করে।
মতের বিরুদ্ধে গেলেই যখন তখন যাকে তাকে ছাগু বলে নোংরা ভাষায় গালাগালি করা ও ভারতের দালালি করা এদের প্রধান কাজ।
এদের সাথে আছে কিছু অনলাইন পতিতা সমতুল্য নারী যারা নিজেরা নারী হয়ে মতের বিরুদ্ধে যাওয়া মানুষ গুলোর মা-বাবাকে নোংরা ভাষায় গালাগালি করে।
এরা এতো নোংরা ভাষায় কথা বলে যা উচ্ছারণের অযোগ্য।