![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দুপুরের দিকে ২৭ নম্বর লোকাল বাসে উঠেছি। পিছন দিকের একটা সিটে বসেছি। গুলশানের সামনে থেকে দুইটা ছেলে উঠলো। আমার এক সিট পেছনে অর্থাৎ বাসের সবচেয়ে পেছনের সিটে বসলো। কিছুক্ষণের মধ্যেই নিজেদের মধ্যে কথা বলা শুরু করলো। বুঝলাম বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কোন প্রোগ্রামে ছিলো তারা। একজনের বয়স বাইশ তেইশ হবে। আরেকজনের হবে সাতাশ অথবা আঠাশ। প্রোগ্রাম, ছাত্রদল সহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলছিলো। এর মধ্যে ছোট ছেলেটা সেন্ট্রালের এক নেতার নাম ধরে বললো, সেই ভাই তাকে টাকা দিতে চেয়েছিলো ডেকে। চা-নাস্তা খাওয়ার জন্য। ছেলেটা টাকা নেয়নি। ছেলেটা বলছিলো, 'ভাই টাকার জন্য তো বিএনপি করি না। তাইলে তো চাই নিজের পকেটের টাকা খরচ কইরা এতদূর আসতাম না।' আমি কথাটা শুনে ঘাড় ঘুরিয়ে ছেলেটার দিকে তাকালাম। অত্যন্ত সাধারণ একটা গেঞ্জি পরা। প্যান্টের পকেটের সাইড দিয়ে ছিঁড়ে যাওয়া অংশ সেলাই করা হয়েছে তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মুখ দেখেই বলে দেয়া যাচ্ছিলো সারাদিনে হয়তো কিছু খায়নি। পাশে বসা বয়সে বড় ছেলেটা হাসছিলো চুপচাপ। আর আমি স্তব্ধ হয়ে ওদের কথা শুনছিলাম।
এর মধ্যে বাসের সামনের অংশে আরেক নাটক। প্রচন্ড ভীড়ের মধ্যে এক লোকের সাথে আরেকজনের ধাক্কা লাগে। এটা নিয়ে কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি। দুইজনের মধ্যে একজন বললো, ঢাকা কলেজ আসুক তারপর সে দেখাবে অপরজনকে। এরকম ফাঁপড় অনেকেই নেয় ভেবে অন্যজন তেমন পাত্তা দিলো না। তাছাড়া সে একটু নিরীহ টাইপ ছিলো। ধানমন্ডি ২৭ এর কাছে বাসে যখন শুধু সিটে বসা যাত্রীরাই আছে তখন সেই লোক ফোন করে কাউকে বললো লাঠি নিয়ে প্রস্তুত থাকতে। এবং এই কথা শেষ হতেই সিট থেকে উঠে এসে নিজের হাতে থাকা খাতা দিয়ে ঐ নিরীহ লোকটার গালে প্রচন্ড জোরে মারলো। এরপর বললো, 'দেখ তোরে আইজকা কি করি।' বাসের সব লোকজন আতঙ্কে চুপ হয়ে আছে। কিন্তু সাথে সাথে লাফ দিয়ে উঠলো ছাত্রদলের সেই ছেলেটা, যে বয়সে একটু বড়। প্রথমে খুব ভদ্রভাবে জানতে চাইলো সে কেন এমন করছে। ঐ লোক উলটা ভাব দেখানোর সাথে সাথে এমনভাবে গর্জন দিলো যে মনে হলো পুরো বাস কেঁপে যাবে। ঐ লোক হতভম্ব। ততক্ষণে বাসের অন্যান্যরা উঠে দাঁড়িয়েছে। আমার পাশে বসা এক নিরীহ দর্শন ভদ্রলোক রাগে কাঁপতে কাঁপতে চিৎকার করে বলছেন, 'শুয়োরের বাচ্চারে লাত্থি মাইরা ফালায় দ্যান বাস থেকে।' সেই শুয়োরের বাচ্চাটাকে লাত্থি মেরেই সায়েন্স ল্যাবের সিগনালে বাস থেকে নামিয়ে দিলো ছাত্রদলের ছেলে দুইটা। এরপর ঐ নিরীহ লোকটাকে অন্য একটা বাসে তুলে দিলো। আর দুইজন গিয়ে দাঁড়ালো বাসের দরজার পাশে। ঢাকা কলেজের সামনে কি হয় তা তারা দেখবে। ঢাকা কলেজের সামনে কিছুই হয়নি।
শুক্রবারে সেই ছেলেদুটোর কথা নিজের কানে শোনার পর, কাজ নিজের চোখে দেখার পর ও নিজের বিশ্বাস হচ্ছিলো না। বিএনপির নেতারা কি জানেন এরকম ছেলেরাই এখনো ছাত্রদল করে? তাদের ঘুম কি ভাংবে?
--- আমি অরণ্য
২| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:৫৬
সাইফুর রহমান পায়েল বলেছেন: হয়তো আওয়ামীলীগ বা জাপাতেও এখনো ভাল ছেলেরা আছে। কিন্তু তাদেরকে মুল্যায়ন করার মত কোন নেতা বাংলাদেশের রাজনীতিতে নেই।
আরেকটা জিনিস, ২৭ নম্বর লোকাল বাসটা গুলশানে যায় না। নিশ্চয়ই বনানী বা এরকম কোথাও থেকে ছেলে ২ টা উঠেছিলো।
লেখাটি পরে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ৯:০১
লেখোয়াড় বলেছেন:
সাধারণ মানুষ, ছাত্র, যাই বলেন না কেন, তারা কিন্তু খারাপ না। খারাপ ওই নেতারা। আর তাদের পাল্লায় পড়ে সাধারণরা যখন নেতা বা ওই গোছের কিছু হয় তখন সেও খারাপ হয়।