![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজে আজাইরা, অন্যরেও আজাইরা থাকতে উৎসাহিত করি।
অনেকদিন থেকেই একটা বিষয়ে লিখবো ভাবছি।
বিদেশ থেকে দেশে ছুটিতে গেলে প্রায়ই পরিচিত লোকজন বলাবলি করে- হাসান,তোমারে মিয়া বিদেশীগো মতন লাগে না। বলা বাহুল্য যে প্রবাসীদের দেশে বিদেশী বলেই ডাকা হয়।
ইয়ার বান্ধবগো জিগাই- ক্যান রে মামা??
কয় আরে বিদেশ থেকে আসা পাব্লিক অন্যরকম থাকে,গলায় সোনার চেইন,হাতে স্বর্ণালী রংয়ের ঘড়ি।পায়ে সাদা কেডস, পরনে নীল রংয়ের জিন্স, চলনে বলনে রাজকীয় ভাব নেয়ার চেষ্টা ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর তারা নাকি মফিজ টাইপ হয়।
আমি তাদের এইসব কথায় আমোদিত হই না।
যদিও আমি জানি আমার দেশের সিংহভাগ মানুষই মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের এই রূপে ভাবতেই অভ্যস্ত।
তবু কিছু কথা বলতেই হয়- নিজ দেশেই গ্রাম থেকে ঢাকা শহরে আসা একজন মানুষকে কতোটা অসুবিধায় পড়তে হয় শহুরে জীবন-যাপনে অভ্যস্ত হতে,সেখানে জীবনে ঢাকা যায় নাই এমন কেউ যখন দুবাই- জিদ্দাহর মতন উন্নত শহরে এসে পড়ে তখন সে স্বাভাবিক ভাবেই খাপছাড়া হয়ে যায়। সে তাদের উন্নত জীবনযাত্রা রপ্ত করার চেষ্টায় দেশীয় কায়দা কানুনও ভুলে যায়।
ফলস্রুতিতে দেশ এবং বিদেশ দুই জায়গাতেই হয় ব্রাত্য
তাদের জন্য ভীষন কষ্ট হয়,কিন্তু সর্বোপরি একজন প্রবাসী হিসেবে আমি গর্ব বোধ করি।আমার পাঠানো রেমিটেন্সের উপর ভিত্তি করে দেশের অর্থনীতি দাঁড়িয়ে।উপরন্তু দেশের মাটি-জল-বায়ু, আমার ভাগের টুকুও সাশ্রয় হচ্ছে।
তবে দু:খ হয় যখন দেখি, কোন প্রবাসীকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়,তাদের নিয়ে কমিক নাটক হয়।প্রবাসী বলতেই মাটি কাটা,জেব্বা পরা কিম্ভুতকিমাকার কোন চরিত্র দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়।রেমিটেন্সের সবটুকু নির্যাস শুষে ফেলে গায়ে গতরে বড় হয়ে, বিশ্ববিদ্যালয় ঘুইরা আংগুল তুইলা প্রবাসীরে মক করে।
বিদ্রুপ কইরা কয়,
ঐ দেখ বিদেশ ফেরত মফিজ!!!
ইচ্ছে করে তখন ঐ শ্রমিকের পাঠানো টাকার তিল পরিমাণ অংশ যদি ঐ ভদ্দরলোক এর শরীরে বহমান থাকে তবে তার বুক চিরে সেটা বের করে আনতে।
বিদেশে হাঁড ভাংগা খাঁটুনির পর যখন কেউ ছুটে আসে দেশে প্রিয়জনের স্বানিধ্যের আশায়,জন্মভুমির টানে, সেই দেশ,সেই প্রিয় মানুষজন তাকে কিভাবে গ্রহণ করে??
দেশের মাটিতে পা দিয়েই সে শ্লেষ বিদ্রুপের মুখোমুখি হতে থাকে। শুরুটা করেন ইমিগ্রেশন পুলিশের কর্মকর্তাগণ।তারপর সেটা নানামূখী ভূমিকায় বিবর্তিত হয়।
খালি কুশিলবের পরিবর্তন ঘটে।সেখানে বন্ধুবান্ধব থাকে।এলাকাবাসী থাকে।পাড়ার দোকানদার থেকে, সমাজের সর্ব -স্তরের মানুষ সেই বিদ্রুপের খেলায় অংশ নেয়।
যেন কার চাইতে কে বেশি তুচ্ছজ্ঞান করতে পারে।
বিয়ে করার জন্য পাত্রী দেখতে গেলে মেয়ের বাবা ঘটা করে জানান দেয় দরকার লাগে মেয়ে রিকশাওয়ালারে দিমু তাও বিদেশী পোলা না।
ক্যান বিদেশী পোলা বউ পিডায় না?? যৌতুক চায় না তাই??
সমস্যা বলা হয় তারা বিদেশ গেলে সহজে ফেরত আসে না।
ক্যান আসে না??
তার খবর কেউ নিতে চায়??
বিয়ে করার পরও নানা মূখী সমস্যা,যেই লোক পায়ের ঘাম মাথায় ফেলে তার পরিবারকে দেখছে,সম্ভব হলে আত্মীয় স্বজনকে সহযোগিতা করছে,কখনো কখনো সমাজের উন্নয়ন কাজেও আর্থিক সাহায্য দিচ্ছে,তার পারিবারিক ছোট খাট সমস্যায় কেউ আগায় না।যে আগায় সে ঘর বাঁচানোর চাইতে ভাংগার কাজে মনোনিবেশ করে!!!
হাজার মাইল দূরে থেকে নানা কান কথায় যখন একটা মানুষ সাময়িক উত্তেজনায় কোন ভুল সিদ্ধান্ত নেয়,সেটারে পুঁজি করে কোন পক্ষ আখের গোছায়।
পরে আবার প্রবাসীদের সার্টিফিকেট মিলে,তারা স্বামী হিসেবে যাচ্ছেতাই!!!
প্রবাসীকল্যান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রেমিটেন্সের প্রবাহ বৃদ্ধির খুশিতে সভা সমাবেশে বগল বাজান,কিন্তু কষ্টার্জিত টাকা যারা পাঠায় তাদের কল্যাণে কি কি কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে তার কথা বলতে ভুলে যান!!!!
বলবে কিভাবে?? এই দেশ প্রবাসীদের থেকে নিতে জানে,বিনিময়ে প্রতিদান দূরে থাকে,তাঁদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে কুন্ঠাবোধ করে।
জানি এরপরও প্রতিদিনই প্রবাসীদের কাছে হাজারটা বায়না থাকবে সবার,
কেউ দামী ফোন পাঠানোর, কারো স্বর্ণ- গয়ণা,কারো মোটা দাগের অর্থ, আরো কতো কি।
আর প্রবাসীরা নিজের ঘামের বিনিময়ে সবার চাহিদার যোগান দিবে।
আবুল হাসানের একটা কবিতা মনে পড়ে গেলো-
ঝিনুক নীরবে সহো,
ভিতরে বিষের বালি,
মুখ বুঝে মুক্তো ফলাও।
সকল প্রবাসীদের জন্য শুভকামনা।
১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
হাসান িজয়াউল বলেছেন:
২| ১১ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:১৬
প্রবাসী পাঠক বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন প্রবাসীদের কথা। দেশের বাইরে কাজ করতে আসা এই মানুষগুলোর কষ্ট অনেকেই বুঝে না কিংবা বুঝতে চায় না। পরিবারের একজন নতুন সদস্যের জন্মের সময় কাছে থেকে আনন্দ উদযাপন করা অথবা কারো মৃত্যুতে তার মৃত দেহের সামনে দাড়িয়ে দু ফোঁটা চোখের জল ফেলারও সৌভাগ্য হয় না এই মানুষগুলোর। কিন্তু দেশের বাইরে হাড় ভাঙা পরিশ্রম করা এই মানুষগুলো দেশে গেলে প্রাপ্য সম্মানটুকুও পায় না।
পোস্টে ++++++++++
৩| ১১ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:২২
ক্যপ্রিসিয়াস বলেছেন: প্রবাসীদের নিয়ে আমার ব্লগে লেখা এক বড়ভাই এর লেখার মত করে বলি-
নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যের আশায় কেউ বা পরিবার পরিজনের মুখে হাঁসি ফোটাবার জন্য নিজের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময় বিক্রি করে উপার্জন করছে রেমিটেন্স ।
এতকিছুর পরও যখন আমরা দেখি একমাত্র মা ছাড়া অন্য সবার কাছে আমাদের চেয়ে আমাদের উপার্জন বেশী গুরুত্বপূর্ন তখন মনে হয় আমরা প্রবাসীরাই পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী অবহেলিত আর দুর্ভাগা ।
ধন্যবাদ ভাই. ভাল থাকবেন ।
৪| ১১ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৬:৪৫
পংবাড়ী বলেছেন: ভালো
৫| ১১ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৮:৩০
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন: ভালো বলেছেন।
ঝিনুক নীরবে সহো,
ভিতরে বিষের বালি,
মুখ বুঝে মুক্তো ফলাও।
সকল প্রবাসীদের জন্য শুভকামনা।++
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জুন, ২০১৪ ভোর ৫:৫৮
খেয়া ঘাট বলেছেন: ইচ্ছে করে তখন ঐ শ্রমিকের পাঠানো টাকার তিল পরিমাণ অংশ যদি ঐ ভদ্দরলোক এর শরীরে বহমান থাকে তবে তার বুক চিরে সেটা বের করে আনতে।
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++