![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি হাফিজুর রহমান, শিক্ষার্থী , জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখি করি আর চেষ্টা করব আপনাদেরকে ভালো কিছু লেখা উপহার দেওয়ার
বিশ্বজুড়ে ফেক নিউজ বা মিথ্যা খবর একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যপ্রযুক্তির সহজলভ্যতা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতার কারণে ফেক নিউজ বা ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া এখন আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় সহজ হয়েছে। এই প্রবণতা বিশেষত পোস্ট-ট্রুথ যুগে আরও গভীরভাবে অনুভূত হচ্ছে। পোস্ট-ট্রুথ যুগ বলতে এমন একটি সময়কে বোঝানো হয় যেখানে আবেগ এবং ব্যক্তিগত বিশ্বাস সত্য এবং বাস্তব তথ্যের চেয়ে বেশি প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। ফেক নিউজের মাধ্যমে রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সহজেই প্রভাবিত হতে পারে এবং এটি সমাজের জন্য গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে।
বাংলাদেশও এই ফেক নিউজ সমস্যার বাইরে নয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক নিউজের প্রভাব ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় ইস্যু, এবং সামাজিক আন্দোলনগুলোতে ফেক নিউজ একটি বিশাল প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। এই অবস্থায় ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলো মূলত তথ্য যাচাই করে সত্যতা প্রমাণ করে এবং ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফেক নিউজ এবং ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থার ভূমিকা নিয়ে এই ব্লগটি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবে।
**ফেক নিউজের উত্থান**
ফেক নিউজের উত্থান বিশেষত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, এবং অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমগুলোর মাধ্যমে ভুয়া তথ্য মুহূর্তের মধ্যে লাখো মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। এটি কেবল তথ্যের দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সমস্যা নয়, বরং একধরনের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যাও বটে, যেখানে মানুষ বিশ্বাস করে যে তারা সত্য তথ্য পাচ্ছে, অথচ তা ভুয়া বা বিকৃত।
বিশ্বব্যাপী এই ফেক নিউজের সমস্যা এতটাই গুরুতর হয়ে দাঁড়িয়েছে যে রাজনৈতিক নির্বাচন, সামাজিক আন্দোলন, এবং জনমত প্রভাবিত করার জন্য ভুয়া তথ্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৬ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় এই ফেক নিউজের প্রভাব স্পষ্টভাবে দেখা গেছে, যেখানে বিভিন্ন ভুয়া খবর ভোটারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাব ফেলেছিল। পোস্ট-ট্রুথ যুগে এই ফেক নিউজের বিস্তার এবং এর প্রভাব এতটাই গভীর যে এটি শুধুমাত্র একটি সাংবাদিকতা বা তথ্যপ্রযুক্তি সমস্যা নয়, বরং একটি সামাজিক, রাজনৈতিক, এবং সাংস্কৃতিক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
**বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফেক নিউজের প্রভাব**
বাংলাদেশে ফেক নিউজের প্রভাব ক্রমবর্ধমান। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ধর্মীয় অনুভূতি, এবং সামাজিক ইস্যু নিয়ে ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ছে এবং তা দ্রুত জনমনে প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিস্তার এবং মোবাইল ফোনের সহজলভ্যতা ফেক নিউজ ছড়ানোর একটি বড় মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনার সময় ফেক নিউজের প্রভাব দেখা গেছে, যেমন: রাজনৈতিক আন্দোলন, ধর্মীয় উত্তেজনা, এবং সামাজিক অস্থিরতার সময়।
বাংলাদেশে ফেক নিউজ ছড়ানোর বড় একটি মাধ্যম হলো ফেসবুক। দেশটির মানুষের একটি বড় অংশ ফেসবুক ব্যবহার করে, এবং এর মাধ্যমে খবর এবং বিভিন্ন ধরণের তথ্য শেয়ার করা হচ্ছে। তবে এই মাধ্যমে ভুয়া খবরও খুব সহজে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা অনেক সময় সহিংসতা এবং অস্থিরতা তৈরি করছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালের শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনের সময় বেশ কিছু ভুয়া খবর এবং বিকৃত তথ্য ছড়িয়ে পড়েছিল, যা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল এবং সহিংসতার জন্ম দিয়েছিল।
ধর্মীয় ইস্যুতে ফেক নিউজের প্রভাব বাংলাদেশে খুবই স্পর্শকাতর। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে এমন যেকোনো ভুয়া খবর দ্রুত জনমনে ছড়িয়ে পড়ে এবং এর ফলে অনেক সময় সহিংসতা এবং দাঙ্গা সৃষ্টি হয়। কিছু অসাধু গোষ্ঠী ফেক নিউজ ব্যবহার করে ধর্মীয় ইস্যুতে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে জনগণকে উস্কানি দেয়।
ফেক নিউজ শুধু রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় ইস্যুতে সীমাবদ্ধ নয়, এটি সামাজিক ইস্যুতেও প্রভাব ফেলছে। বিশেষত, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত মানহানি, গুজব এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অনেক সময় ব্যক্তিগত এবং সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে। এর ফলে ব্যক্তি, পরিবার, এবং সমাজের মধ্যে ভাঙন দেখা দিচ্ছে।
**ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থার ভূমিকা**
ফেক নিউজ এবং ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা বলতে বোঝায় এমন একটি প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠী যা তথ্যের সঠিকতা যাচাই করে এবং সেই তথ্যের সত্যতা যাচাই করে জনসাধারণের সামনে প্রকাশ করে। এসব সংস্থা মূলত বিভিন্ন অনলাইন কনটেন্ট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্ট, সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট এবং অন্যান্য তথ্যের সত্যতা যাচাই করে থাকে।
ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলোর কাজ হলো ফেক নিউজের বিরুদ্ধে লড়াই করা এবং জনগণকে সঠিক তথ্য সরবরাহ করা। এই সংস্থাগুলো তথ্য যাচাই করে কেবলমাত্র ভুয়া খবরকে চিহ্নিত করেই ক্ষান্ত হয় না, বরং সেই খবরের পেছনের সঠিক তথ্যও জনসাধারণের সামনে তুলে ধরে। এভাবে তারা জনগণকে মিথ্যা থেকে সঠিক তথ্যের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে সহায়তা করে।
বিশ্বব্যাপী বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা রয়েছে, যেমন: PolitiFact, FactCheck.org (http://FactCheck.org), এবং Snopes। এসব সংস্থা রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক ইস্যুতে ফেক নিউজের সত্যতা যাচাই করে। এই সংস্থাগুলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতেও কাজ করছে এবং তাদের বিশ্লেষণ সাধারণ জনগণকে সচেতন করতে সহায়ক হচ্ছে।
বাংলাদেশে ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রমের গুরুত্ব ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদিও ফ্যাক্ট-চেকিং সেবা এখনো ব্যাপকভাবে বিস্তৃত নয়, তবে কিছু উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান এই কাজ শুরু করেছে এবং জনগণকে সঠিক তথ্য সরবরাহে সহায়তা করছে।
**বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থার কার্যক্রম**
বাংলাদেশে ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে বেশ কিছু বছর আগে, তবে এটি এখনো তার শুরুর পর্যায়ে রয়েছে। দেশের গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া তথ্য এবং গুজবের ব্যাপকতা বাড়ায় ফ্যাক্ট-চেকিং সেবা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হয়ে উঠেছে। বর্তমানে কয়েকটি সংস্থা এবং মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং তাদের কাজের মাধ্যমে সমাজে একটি ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো **বুম বাংলাদেশ** এবং **ফ্যাক্টওয়াচ**। এই দুটি সংস্থা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রচারিত বিভিন্ন ভুয়া খবর এবং গুজবের সত্যতা যাচাই করে।
**বুম বাংলাদেশ** মূলত ভারতের ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা **বুম**-এর একটি শাখা, যা বাংলাদেশে ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে কাজ করছে। বুম বাংলাদেশ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় ইস্যুতে প্রচারিত ভুয়া তথ্য যাচাই করে এবং সেই তথ্যের সঠিকতা জনসাধারণের সামনে প্রকাশ করে। তাদের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজের মাধ্যমে ভুয়া খবরের সত্যতা যাচাই করে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে।
**ফ্যাক্টওয়াচ** ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত একটি ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা। এই সংস্থাটি বিভিন্ন সামাজিক এবং রাজনৈতিক ইস্যুতে প্রচারিত ভুয়া তথ্য যাচাই করে এবং সত্যতা যাচাই করে জনগণকে অবহিত করে। বিশেষ করে, দেশের রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় ইস্যুতে প্রচারিত ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে ফ্যাক্টওয়াচ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে।
বাংলাদেশে ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রমের উন্নয়নের জন্য এই সংস্থাগুলো বিশেষভাবে কাজ করছে এবং তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে সমাজে একটি সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। তবে এখনো অনেক মানুষ ফ্যাক্ট-চেকিং সম্পর্কে সচেতন নয় এবং ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে এই সচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন।
**সত্যমিত্র (ShotoMitro)**
সত্যমিত্র বাংলাদেশের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা, যা ২০২০ সালে গঠিত হয়। সংস্থাটি মূলত ভুয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই এবং সেই তথ্যের বিপরীতে সঠিক তথ্য প্রচারের জন্য কাজ করে। সত্যমিত্র বিভিন্ন ধর্মীয়, সামাজিক, এবং রাজনৈতিক ইস্যুতে ছড়ানো ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে কাজ করে এবং জনগণকে সচেতন করার জন্য তাদের কনটেন্ট অনলাইনে শেয়ার করে। সত্যমিত্রের কাজের মূল লক্ষ্য হলো ভুয়া তথ্যের প্রচার রোধ করা এবং জনগণকে সঠিক তথ্য প্রদান করা।
**ট্রুথ ওয়াচ বাংলাদেশ (Truth Watch Bangladesh)**
ট্রুথ ওয়াচ বাংলাদেশ একটি নিরপেক্ষ ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা, যা দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে ছড়ানো ভুয়া তথ্যের সত্যতা যাচাই করে এবং জনসাধারণের সামনে সেই তথ্যের সঠিকতা প্রকাশ করে। ট্রুথ ওয়াচ বাংলাদেশ মূলত রাজনৈতিক, সামাজিক, এবং অর্থনৈতিক ইস্যুতে প্রচারিত ভুয়া তথ্য যাচাই করে এবং সেই তথ্যের বিপরীতে সঠিক তথ্য সরবরাহ করে। সংস্থাটি নিয়মিতভাবে ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে কাজ করে
**সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফ্যাক্ট-চেকিং**
বাংলাদেশে ফেক নিউজের প্রধান মাধ্যম হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিশেষ করে ফেসবুক। ফেসবুকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের ভুয়া খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং এর ফলে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম পরিচালনা করা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশে কিছু ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা এবং সংবাদমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে ভুয়া খবরের সত্যতা যাচাই করছে এবং সেই খবরের বিপরীতে সঠিক তথ্য জনসাধারণের সামনে তুলে ধরছে। ফেসবুকের ফ্যাক্ট-চেকিং টুল ব্যবহার করে কিছু সংস্থা ফেক নিউজ চিহ্নিত করছে এবং সেই খবরের ভিত্তিতে ফেসবুক পোস্ট বা ভিডিওগুলোকে সতর্কীকরণ ট্যাগ দিচ্ছে।
তবে ফেসবুকের মাধ্যমে ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রমের ব্যাপ্তি এখনো অনেক সীমিত। ভুয়া তথ্যের ব্যাপকতা এত বেশি যে ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম সবসময় এর সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে ফেসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আরও কার্যকর ফ্যাক্ট-চেকিং টুল তৈরি করতে হবে, যাতে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়া ফেক নিউজ চিহ্নিত করা সম্ভব হয়।
**ফেক নিউজের বিরুদ্ধে লড়াই: করণীয় এবং চ্যালেঞ্জ**
ফেক নিউজের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে শুধুমাত্র ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রম পরিচালনা করলেই চলবে না, বরং একটি সামগ্রিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ফেক নিউজ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে, তরুণ প্রজন্ম যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বেশি ব্যবহার করে, তাদের মধ্যে ফেক নিউজ চিহ্নিত করার এবং তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানানোর দক্ষতা বাড়াতে হবে।
এছাড়াও, গণমাধ্যম এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ফ্যাক্ট-চেকিং এবং ডিজিটাল মিডিয়া লিটারেসি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। গণমাধ্যমে সঠিক তথ্য প্রকাশ এবং ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মানসিকতা গড়ে তোলা গেলে ফেক নিউজের বিরুদ্ধে লড়াই আরও কার্যকর হবে।
ফেক নিউজের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো ভুয়া তথ্যের বিস্তৃতি। ডিজিটাল যুগে মানুষ দ্রুত এবং সহজেই ভুয়া তথ্যের শিকার হতে পারে। এর ফলে ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রমের কার্যকারিতা অনেক সময় কমে যেতে পারে, কারণ ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সেটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়।
ফেক নিউজ এবং ভুয়া তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ফেক নিউজ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় ইস্যুতে বিভ্রান্তি এবং অস্থিরতা তৈরি করতে সক্ষম। ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলো এই ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তবে ফেক নিউজের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি সামগ্রিক সচেতনতা তৈরি করতে হবে, যা শুধুমাত্র ফ্যাক্ট-চেকিং কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। গণমাধ্যম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে এবং জনগণের মধ্যে একটি শক্তিশালী তথ্য সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।
এই যুগে সঠিক তথ্য এবং সত্যতা যাচাই করার ক্ষমতা ছাড়া একটি সমাজ টিকে থাকতে পারে না, কারণ ভুল তথ্য এবং ফেক নিউজ সমাজে বিভাজন এবং অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। তাই ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থাগুলোর পাশাপাশি জনগণকেও সচেতন হতে হবে এবং সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে শিখতে হবে।
©somewhere in net ltd.