![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন মানুষ একজন মুসলমান একজন বাঙ্গালী
" দুনিয়াবিমুখ দ্বীনি শিক্ষা আর দ্বীনবিমুখ দুনিয়াবি শিক্ষা উভয়টিই ক্ষতিকর "
আজকের আধুনিক পৃথিবী বিস্ময়কর আর অবিশ্বাস্যকর ভাবে প্রতি মূহুর্তে প্রতিদিনই এগিয়ে যাচ্ছে। মানুষ এক আবিষ্কার শেষ করতে না করতেই আরেক আবিষ্কারের পিছু ছুটছে। তার সাথে সাথে মানুষও যেন দিন দিন অতি আধুনিকতার পিছে ছুটছে। কি মানুষের চলাফেরা, জীবনযাপন, পোষাক সবকিছুই যেন আধুনিকতার ছোঁয়ায় আমূল পরিবর্তিত। আজকের পৃথিবীতে ভোগবিলাসী জীবন কাটানো আর শত বছর বেঁচে থাকাতেই মনে করা হয় সব সার্থকথা। পোষাক যত ছোট হয় ততই আধুনিক। আজকের মানুষ "নিজে বাঁচলে নিজের নাম নীতিতে বিশ্বাসী "। তাইতো দেখা যায় উচ্চ শিক্ষিত অতি আধুনিকতায় বিশ্বাসী লোকের ঘরের কাজের মেয়েটি সামান্য ভুলে নির্যাতিত হয়। বুড়ো মাতা-পিতার জায়গা হয় বৃদ্ধনিবাসে। এর সাথে নতুন সমস্যা ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের সংঘাত। ধর্মের তত্বের সাথে বিজ্ঞানের অমিল। ফলে ধর্মহীন মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলা। এসব অবস্থার জন্য দায়ী আজকের পৃথিবীর দ্বীনি শিক্ষা বিহীন শিক্ষাব্যবস্থা। যে দ্বীনি শিক্ষা মানুষকে নৈতিকভাবে চরিত্রবান করে তোলে, মানুষকে আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত করে তোলে, মাতাপিতার হক আদায়ে তাগিদ দেয় সে শিক্ষাই অনুপস্থিত। অনেকে বলতে পারেন স্কুলগুলোতে কি ধর্ম বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়না?? তবে আমি বলব স্কুলগুলোতে যে ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়া হয় তা প্রয়জনের তুলনায় নিতান্তই সামান্য। তাইতো এসব শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানের সামান্য মতবাদেই ধর্মের ব্যাপারে সন্দীহান হয়ে পড়ে।
যেমনঃ (১) ডারউইনের বানর থেকে মানুষ বিবর্তনের সূত্র।
(২)রাসূল (সাঃ) এর উক্তি,সূর্য আরশের নিচে সেজদা দেয় এবং প্রতিবার নতুন করে উদিত হওয়ার অনুমতি চায়। অথচ বিজ্ঞান সম্মতসূত্র হল, সূর্য কখনোই ডুবে না আর কখনোই অস্ত যায় না।
(৩) বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলে মানুষ লাখো লাখো বছর পূর্বে পৃথিবীতে এসেছে আর কুরআন বলে মানুষ ১০ হাজার বছর আগে পৃথিবীতে এসেছে।
(৪) রাসূল (সাঃ) এর উক্তি, জাহান্নাম সূর্যের বরাবর শ্বাস ফেলে তাই সূর্য উত্যপ্ত হয়। ফলে পৃথিবীর আবহাওয়া গরম হয়ে যায় ফলে গ্রীষ্মকাল আসে আর জাহান্নাম শ্বাস ভেতরের দিকে টানলে সূর্যের তাপ কমে তাই শীতকাল আসে। অথচ পৃথিবীর একই সময়ে একদিকে গ্রীষ্মকাল অন্যদিকে শীতকাল।
#(কোরআন যে বিজ্ঞানের বিপরীত কিছু নয় তা জানতে পড়ুন "কোরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান " বইটি। গুগল প্লে স্টোর থেকে)#
ইত্যাদি নানা মতবাদে এসব স্কুলকলেজ শিক্ষার্থীরা কুরআন হাদিস সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়ে। জান্নাত জাহান্নামের অস্তিত্ব সম্পর্কে সন্দিহান হয়ে পড়ে। ফলে তাদের কাছে কুরআনের জ্ঞানের তুলনায় স্টিফেন হকিংয়ের জ্ঞান অধিক বিশুদ্ধ মনে হয়। অনেকে পরলৌকিক জীবন অস্বীকার করে বসে। ফলে স্কুল কলেজের এইসব ধর্মজ্ঞানহীন শিক্ষার্থীরা নিজ কর্মক্ষেত্রে বড় দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হয়। কারণ এরা জানে কোন স্রষ্টা নেই, পরকালীন জীবন নেই। দুনিয়ার জীবনই একমাত্র জীবন। ফলে এরা "যা পার উপভোগ কর" এই নীতিতে বিশ্বাসী।এসব শিক্ষার্থীরা পতিতালয়ে রাত কাটায়। ঘুষখোর, চাঁদাবাজ হয়। হালাল হারামের ধার ধারে না। অবৈধ সম্পর্ক গড়ে লিভ টুগেদার জীবন কাঁটায়। আর ইচ্ছামত ধর্মকে আর ধার্মিক মানুষকে গালাগাল করে।অথচ এরা জানে না, এসব বিতর্কিত বিষয়ে ইসলামি বিশেষজ্ঞরা অনেক গবেষণা করেছেন। অথচ বিজ্ঞান বিরোধী কোন তথ্য পাননি। আর তারা এসব বিষয়ের জবাবও দিয়ে গেছেন।
অন্যদিকে মাদ্রাসাগুলোতে দিন-রাত দ্বীনি শিক্ষা দেওয়া হয়। আল্লাহর কালাম শিখার জন্য মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা কি মেহনত করছে তা সচক্ষে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। ছোট ছোট বাচ্চারাও পবিত্র কোরআন মুখস্ত করে ফেলছে। আর কোরআন মেহনত ছাড়া মোটেই অর্জিত হওয়ার নয়। কিতাব বিভাগে গেলে দেখবেন শিক্ষার্থীদের কিভাবে দিন-রাত কোরআন হাদিসের দরস দেওয়া হচ্ছে। একজন খাঁটি, আদর্শ ও সচ্চরিতবান মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে দ্বীনি শিক্ষার কোন কোন বিকল্প নেই। কিন্তু এসব ধার্মিক মানুষরা দুনিয়াবি শিক্ষার অভাবে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে পারে না। তারা পারে না ক্যান্সারের ঔষধ আবিষ্কার করতে। পারে না ক্ষেপনাস্ত্র আবিষ্কার করতে। তারা জানে না রাষ্ট্র কিভাবে চলে। অর্থনীতি কি?? ফলে অনেক মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা বলে, " সরকার অধিক পরিমাণে টাকা ছাপালেই তো মানুষ ধনী হয়ে যায়"। পৌরনীতি জোতির্বিজ্ঞান চিকিৎসাবিজ্ঞান ভূবিজ্ঞান সম্পর্কে এসব মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা ধারণাও রাখে না। তাই পৃথিবীর এগিয়ে যাওয়াতে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কোন ভূমিকা নেই। ফলে চারিত্রিক দিক থেকে এসব মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা অনেক সৎ হলেও দেশ পরিচালনার সুযোগ না থাকায় দেশ চালায় দূর্নীতিবাজরা। অন্যদিকে কর্মসংস্থানের সল্পতায় এসব মাদ্রাসাশিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জিনের চাকরিই করে। আর মানুষের খতম আর দোয়ার হাদীয়াই তাদের আয়ের উৎস।
আসলে ধর্মীয় জ্ঞান ছাড়া ধর্মকে অবাস্তব আর কঠিন মনে হয়। আর পার্থিব শিক্ষা ছাড়া পার্থিব জ্ঞানকে জটিল মনে হয়।
তাই এখনি সময় মাদ্রাসার ছাত্ররা কিভাবে ভালোভাবে দ্বীনী শিক্ষার পাশাপাশি দুনিয়াবি শিক্ষায় ও পারদর্শী হয়ে উঠে তার উপায় খুঁজে বের করা। তবে এক্ষেত্রে মাদ্রাসা শিক্ষায় কাটছাঁট করে নয় বরং মাদ্রাসায় পড়েও কিভাবে দুনিয়াবি শিক্ষায়ও এগিয়ে যাওয়া যার তার উপায় খুঁজে বের করা। আর স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা কিভাবে দুনিয়াবি শিক্ষার পাশাপাশি দ্বীনি শিক্ষায়ও পারদর্শী হয়ে উঠে তার উপায় বের করা। তারা যেন শুধু ওয়াজ মাহফিল আর তাবলীগ থেকে সামান্য দ্বীনি জ্ঞান অর্জন না করে। বরং স্কুল শিক্ষার্থীরাও যেন দ্বীনী জ্ঞানে পারদর্শী হয়ে এসব বৈজ্ঞানিক সূত্র মোকাবিলা করতে পারে তার উপায় বের করতে হবে।
©somewhere in net ltd.