নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তুমি একটা খারাপ কাজ করেছো তার মানে তুমি একজন মানুষ; তুমি সেই খারাপ কাজটার জন্য অনুতপ্ত হয়েছো তার মানে তুমি একজন ভাল মানুষ। \n\nwww.facebook.com/bandar.khola

হাফিজ রাহমান

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম আদালত হলো মানুষের বিবেক।

হাফিজ রাহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আস্ত একটা পেশাদার মিথ্যুক !

২৭ শে মে, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৫

২৪.০ ৫. ’১৭। তখন পড়ন্ত দুপুর। তবে প্রচণ্ড দাবদাহে দিবসের তখনো ভরা যৌবন। কদমতলী থেকে স্বাধীন এক্সপ্রেসে চড়ে বসলাম। গন্তব্য মাওয়া হয়ে শিবচর পাঁচ্চর। স্বাধীন এ রোডে নেমেছে খুব বেশি দিন হয় নি। এ রোডে নতুন যে বাসটি নামে শুরুতে কিছু দিন বেশ পারফর্মেন্স দেখায়। এক সময় স্বাভাবিক রূপে ফিরে আসে। স্বাধীনও এর ব্যতিক্রম হলো না। স্বাধীনের আয়েশী গতি দেখে যাত্রীদের মাঝে ইশ ফিশ শুরু হল। এতে অবশ্য তাদের কিছু যায় আসে না। আমার খুব বলতে ইচ্ছে হলো, ভাই ! গাড়ির নাম স্বাধীন। সে তার স্বাধীনতা রক্ষা করেই চলছে। তার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন কেন ? অর্ধ ঘন্টা পর বার তের বছর বয়সী একটা কিশোরী মেয়ের আকস্মিক আবির্ভাব ঘটল। মেয়েটা তার ব্যাগে রক্ষিত চিরকুটগুলো খুব দ্রুত বেগে যাত্রীদের কাছে পৌঁছে দিল। পৌঁছে দেয়ার পদ্ধতিটাও খানিকটা ভীতিকর। চিরকুট আপনাকে নিতেই হবে; নিবেন না কেন ? বোরকা পরা সেই মেয়েগুলোর যৌন চিরকুট ধরিয়ে দেয়ার মত অনেকটা। কেউ চিরকুট না নিতে চাইলে তার দিকে শ্যেন দৃষ্টি আছড়ে পড়ছে। আমাকে চিরকুট দিতে এলে আমি নীরব নিথর বসে থাকি। মেয়েটা আমার ক্ষুদে ব্যাগটিতে কসরত করে চিরকুটটা ঢুকিয়ে দিয়ে দ্রুত সরে পড়ে। বাসের সামনে গিয়ে তার চিরকুটে লেখা বক্তব্যটি মায়াবী ভাষায় তুলে ধরে। এরপর মেয়েটি যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা চেয়ে চিরকুটগুলো ফেরত নেয়ার পর্ব শুরু করলো। কাজগুলো খুব দ্রুত গতির এবং সাজানো গোছানো। আমি পেছনের সিটে বসা। সবার সাথে লেনদেন শেষ এবার আমার পালা। আমি আগে থেকেই চিরকুটটি হাতে নিয়ে বসে আছি। চিরকুট নিতে এলে ছোট খাটো একটি সংলাপের সূচনা হলো,
যাত্রী : এতে যা লেখা আছে তা কি সত্য ?
ভিক্ষুক : (নির্লিপ্ত উত্তর) হ, সত্য।
যাত্রী : কি করে বুঝবো সত্য ? তোমার এলাকার চেয়ারম্যানের নাম কি ?
ভিক্ষুক : আমাগো বাসা মীরপুর।
যাত্রী : আচ্ছা, তোমার এলাকার কমিশনারের নাম কি ?
ভিক্ষুক : মাথায় তর্জনী ঠেকিয়ে কি জানি কি জানি...। এই যেন বলে ফেলবে ভাব। কিন্তু বলা হল না।
যাত্রী : কাল থেকে তোমার এলাকার কমিশনারের সিল সাইনসহ সত্যায়নপত্র নিয়ে আসবে।
ক্ষুদে এ সংলাপে আশ পাশের যাত্রীসকল নড়ে চড়ে বসে। সবাই এক যোগে আমাকে সমর্থন করে। লাইক দিতে কেউ বাদ যায় নি। যারা টাকা দিয়েছে তারাও। এখন সবার মুখে খৈ ফুটছে, ‘এটা একটা শক্তিশালি বিজনেস। শক্তিশালী একটা চক্র এর সাথে জড়িত।’ হাসির রেখা টেনে আরো কত কথার ফুলঝুরি ! মেয়েটা তখনো নিকটে দাঁড়িয়ে। সকলের মুখে বিদ্রূপের হাসি দেখে মেয়েটা তার শেষ কথাটা বলে গেল, হাসতাছেন ক্যান ? আমি কি মিথ্যা কতা ব‌ইল্যা টাকা ‌উডাইতাছি ? আমি বললাম, তুমি আগামী কাল থেকে কমিশনারের সত্যায়ন নিয়ে এসো। পাঁচ টাকা নয়; পাঁচ শ টাকাই দেব তোমাকে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.